শূন্যতায় পূর্ণতা পর্ব – ১৯+২০ ও শেষ

#শূন্যতায়_পূর্ণতা
#হীর_এহতেশাম

||পর্ব-১৯||

★রাত ১২টা। গাড়ির হর্ণের শব্দ শুনতেই দৌড় দিলো আরশ। এতক্ষণ অনেক কষ্টে আটকে রেখেছিলো আরশকে সালমা। অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে ধরে রেখেছিলো। গাড়ির হর্ণের শব্দ কানে আসতেই ‘ফারহিন এসেছে’ বলে আরশ দৌড় দিলো। সালমা ও পিছু পিছু বেরিয়ে গেল। আরশ গেইটের কাছে এসে কোনো গাড়ি দেখতে পেল না। দারোয়ান কে বেচয়েন কন্ঠে প্রশ্ন করলো-
“-ফারহিন আসেনি?
“-না স্যার।
“-হর্ণের শব্দ শুনলাম মনে হলো..?
“-না স্যার, ওটা অন্য গাড়ির।
আরশ আর কথা বাড়ালো না। পিছু ফিরতেই সালমা কে দেখে বলল-
“-মা অনেক্ষণ হলো আমি আর বসে থাকতে পারবোনা। জানিনা কোথায় গেছে।
“-কিন্তু আরশ..
সালমা কিছু বলার আগেই বাজি ফোটার শব্দ কানে এলো। আরশ ত্রস্তনয়নে তাকালো। বাগানের দিক থেকেই এসেছে আওয়াজ। আরশ আর সালমা দুজনেই বাগানের দিকে অগ্রসর হলো। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে আছে বাগান। আরশ কয়েক পা এগোতেই আরো একটি বাজির শব্দ কানে এলো সাথে সাথেই বাগানের চারপাশ আলোকিত হয়ে গেল। রঙবেরঙের লাইটের আলোয় ঝলমল করছে বাগান। আরশ চারপাশ দেখে অবাক হয়ে গেল। চারপাশে চোখ বুলিয়ে সামনে তাকাতেই দেখলো একটা গোল টেবিলে অনেক গুলো গিফট বক্স, বেলুন দিয়ে ডেকোরেশন করা হয়েছে। আরশ ব্যাপারটার গভীরতা বোঝার জন্য একটু এগিয়ে গেল। সমস্ত লাইট হুট করেই বন্ধ হয়ে গেল। আরশ থমকে গেল। হঠাৎ একটি মৃদুস্বর কানে এসে পৌঁছালো।
“-হ্যাপি বার্থডে টু ইউ! হ্যাপি বার্থডে টু ইউ..
আরশ ত্রস্তপদে ঘুরে দাঁড়াতেই দেখলো ঘুটঘুটে অন্ধকারের মাঝে মোমবাতির আলোয় আবছা দৃশ্যমান ফারহিন। ফারহিনের মুখে মোহময়ী হাসি। সাথে সাথেই লাইট জ্বলে উঠলো। চারপাশ দেখে আরশ আবারো চমকালো, থমকালো। সামনেই কেক হাতে ফারহিন দাঁড়িয়ে। ফারহিন কে দেখে আরশ রাজ্যের স্বস্তি ফিরে পেল। মৃদু হেসে এগিয়ে এসে আরশের সামনে দাঁড়ালো ফারহিন-
“-হ্যাপি বার্থডে বাবুর আব্বু।
আরশ চারপাশ দেখে হেসে দিলো। এই প্রথম কেউ তাকে এত ঘটা করে উইশ করেছে। আরশ হাসি আটকাতে ঠোঁট চেপে রইলো। ফারহিন বলল-
“-একটু চিন্তায় ফেলেছি তার জন্য সরি। আমি আসলে চেয়েছিলাম ১২টায় উইশ করতে, তাই..!
“-কীভাবে জানলে?
“-কাবিননামায় লেখা ছিলো।
আরশ হাসলো।
“-হ্যাপি বার্থডে ভাইয়া।
এগিয়ে এসে বলল ফারহানা। হাতে একটা গিফট বক্স।
“-থ্যাংক ইউ।
ফারহানা আর ফারহিন কেক টেবিলে রাখতে চলে গেল। আরশ গিয়ে সালমা কে সালাম করলো। সালমা মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। আরশের কপালে চুমু দিতেই আরশ সালমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো, নিষ্পলক সেই চাহনি। সালমা বলল-
“-সমস্ত দুঃখ, দুর্দশা দূর হয়ে যাক। আমার আব্বু আজীবন হাসি খুশি থাকুক এই দোয়াই করি।
“-থ্যাংক ইউ মা।
সালমাকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিলো আরশ।

রেলিংয়ে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আরশ। একটু আগে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা তার চোখের সামনে ভাসছে। ঘুরে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকালো। দু হাত রেলিংয়ে রেখে ভর দিলো। জীবনে কখনো কেউ তাকে এভাবে উইশ করেনি। তার জন্মদিনের কথা তো কারো মাথায় থাকতো না। আর মনে থাকলেও ছোট্ট একটা উইশেই সব শেষ। আরশ মৃদু হাসছিলো। ফারহিন নেই, ফারহানা আজ রাত থাকবে বলে ফারহানা কে রুম দেখিয়ে দিতে গেছে। হয়তো ওখানে আড্ডাতেও বসেছে। মেয়েটা কখনো আরশ কে বলেনি সে আরশকে ভালোবাসে। অথচ তার প্রতিটা কাজেই ভালোবাসা প্রকাশ পায়। আরশ কি করে থাকবে তাকে ছাড়া? অস্ফুটস্বরে নিজেই নিজেকে বলে উঠল,’তাকে ছাড়া থাকার কথা কল্পনাও করতে পারিনা, অসম্ভব।’
হঠাৎই কেউ পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। আরশ দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতেই দেখলো ফারহিন। বিস্ময় নিয়ে ভ্রু কুঁচকাতেই ফারহিন মৃদুহেসে বলল-
“-চমকে গেলেন নাকি?
“-না হঠাৎ এভাবে…
“-কেন ধরতে পারি না?
“-কোনোদিন তো ধরোনি..
“-কোনোদিন ধরিনি বলে সামনেও কখনো ধরবোনা এটা ভাবলেন কি করে?
“-না আমি ভেবেছি..
“-কি ভেবেছেন? অন্য কেউ ধরেছে? অন্য কেউ কেন ধরবে? কি কারণে ধরবে? আমি কি যথেষ্ট নই।
ফারহিনের একসাথে করে বসা এতগুলো প্রশ্ন শুনে লম্বা শ্বাস নিলো আরশ। তারপর বলল-
“-তুমি ছাড়া কেউ নেই, কারো অধিকার নেই। সব তোমার।
আরশের কথা শুনে ফারহিন মৃদু হাসলো। দু হাতে আরশের গলা জড়িয়ে বলল-
“-হ্যাপি বার্থডে, কিছু কথা বলার ছিলো।
“-বলো..
ফারহিনকে দু’হাতে জড়িয়ে বলল আরশ।
“-আপনাকে কখনো বলা হয়নি, বলতে চেয়েও পারিনি। এত তাড়াতাড়ি সব কিছু হয়ে গেল বুঝতেই পারিনি।
ফারহিন থামলো। নেত্রমনি নত করে নিলো। আরশ অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে সেই মায়াভরা মুখটির দিকে। হুট করেই ফারহিন তাকালো। বলল-
“-আমি আপনাকে ভালোবাসি। প্রথমটা আমার আবেগ ছিলো, কিন্তু আপনি? আপনি আমার ভালোবাসা আরশ। আমি আপনাকে আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। বাবা মারা যাওয়ার পর আমি আপনাকে না পেলে হয়তো মরেই যেতাম। আমি কখনো চাইনা আপনি আমার কাছ থেকে হারিয়ে যান। সবাইকে হারিয়ে বেঁচে থাকা গেলেও আপনাকে হারিয়ে বেঁচে থাকা সম্ভব হবেনা। আমি কি বলছি বুঝতে পারছেন তো আপনি? আমার কথাগুলো অনেকটা এলোমেলো তবে আপনি চাইলে বুঝে নিতে পারবেন। আমার এলোমেলো কথাগুলো প্লিজ বুঝে নিয়েন। আমাকে আজীবন এভাবেই আগলে রাখার অনুরোধ রইলো। আমি আপনাকে ছাড়া মরেও শান্তি পাবো না। কারণ আপনি যখন থেকে এসেছেন আমি একা থাকিনি, একা থাকার একটুও অভ্যাস নেই আমার। আপনি সেটা আমাকে অভ্যাস করতেই দেন নি।

আরশ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। ফারহিনের চোখ ভর্তি পানি। কথা বলার সময় ঠোঁট আর স্বর দুটোই কাঁপছে। আরশ নিজের হাতের বাধন শক্ত করলো। ফারহিনকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। ফারহিনের কানের পাশে চুল গুজে বলল-
“-বাহ্! আমার বোবা পাখির মুখে বুলি ফুটেছে তাহলে।
বলেই হেসে দিলো। আরশের সাথে ফারহিন ও হেসে দিলো। দুজনেই একে অপরের সাথে কপাল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো। স্নিগ্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়লো প্রেমের সুভাস।

★ফারহানার হাত থেকে কফির কাপ মাটিত্র পড়ে ঝংকার তুললো। ফারহানা থরথর করে কাঁপছে। সামনেই বসে থাকা তীব্র ফারহানার ভয় কাটাতে বলল-
“-রিল্যাক্স। আমি জানি এটা মেনে নিতে কষ্ট হবে তোমার, কিন্তু আমি যা বলেছি তা সবই সত্যি।
“-ফারহিন জানে?
কাঁপা স্বরে প্রশ্ন করলো ফারহানা। তীব্র নাবোধক মাথা নাড়ালো। ফারহানা কি বলবে বুঝতে পারছেনা। তীব্র বলল-
“-আমি ফারহিনের ক্ষতি চাইনা। আমি ভেবেছিলাম আরশ ওকে ভালো রাখবে, আর আরশ যেহেতু ছোট থেকেই একা তাই আমি ভেবেছিলাম ও ওর মর্ম বুঝবে। কিন্তু ও তো ওকে এতিমই করে দিলো। তুমিই ভাবো যে ছেলে নিজের বাবাকে খুন করার মত জঘন্য কাজ করতে পারে ও ফারহিন কে আঘাত করতে দুবার ভাববে না। আমি যে ভুল করেছি আমি তা শুধরে নিতে চাই ফারহানা। তুমি ওর বেস্ট ফ্রেন্ড তুমি প্লিজ আমাকে হেল্প করো। আমি খালামনি কে বলেছি কিন্তু আরশ খালামনিরও ব্রেইন ওয়াশ করে দিয়েছে যার কারণে তিনি আমার কথা শুনছেই না। এখন তুমি ছাড়া আমার আর কোনো পথ খোলা নেই। তুমি চাইলে পারবে ফারহিন কে সেভ করতে।
“-একটা জায়গায় খটকা আছে।
“-কি?
“-আমার মনে হয়না আরশ ভাইয়া সুস্থ!
তীব্র ভ্রু কুঁচকালো।
“-কেন? এটা কেন মনে হলো তোমার?
“-বিহেভিয়ার এ। একটা কথা আমি আপনাকে বলি আরশ ভাইয়া ফারহিনের সাথে বিয়ের আগে প্রায়ই মিট করতো। আর পূর্বপরিকল্পিত কখনোই ছিলো না। হুট করেই রাস্তায় দেখা হয়ে যেত আর উনি সারাদিন ফারহিন কে সময় দিত। যেকোনো বাহানায়। আপনি জানলে অবাক হবেন বিয়ের পর উনি ফারহিনকে কখনো কোনো রান্নাবান্না, বা তরকারি কাটাকাটি করায়নি। কারণ ফারহিন রক্ত ভয় পায়। আর সবচেয়ে বড় কথা উনি ফারহিনকে নিয়ে অনেক সেনসেটিভ ও পজেসিভ। বিয়ের এই কয়েক মাস উনি ফারহিন কে যেমন সময় দিয়েছে, যেমন যত্ন করেছে ঠিক তেমনই উনি ফারহিনের উপর পূর্ণ অধিকার ফলিয়েছে। আর ফারহিনকে কখনোই কিছুতে জোর করেনি। আমার মনে হয় না উনি ফারহিন কে কোনো আঘাত করবে।

তীব্রের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ার মত অবস্থা হলো, সে উচ্চস্বরে বলে উঠল-
“-আরে ও মেন্টালি এভনরমাল। ও সবার জন্য হার্মফুল।।যেকোনো মুহুর্তে ফারহিন কেও আঘাত করে বসবে যদি ফারহিন তার কথা একটু অমান্য করে। আঙ্কেলরা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে ছিলো বলে অনেক শত্রু ছিলো তাদের মধ্যেই একজন ফারহিনের উপর অ্যাটাক করে আর সে কারণেই ও তাদের মেরে ফেলে৷ এটা কোনো লজিক নাকি?
“-ভাইয়া! আপনি চাইছেন ফারহিন ওনার সত্যিটা জানুক। ফারহিন কে সত্যি জানাতে হলে এটাও জানাতে হবে ওর বাবা একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী ছিলো। এটা শুনলে ফারহিন কি আসলেই মনের দিক থেকে আস্ত থাকবে? আঙ্কেল ফারহিনের ইমোশন। অনেকটা জুড়ে তিনি আছে, যাকে ও নিজের আদর্শ, বেস্ট বাবা ভেবেছে তার বিরুদ্ধে এসব শুনলে ফারহিন ততটাই ভেঙ্গে পড়বে যতটা না সে আরশ ভাইয়ার কথা শুনে ভেঙ্গে পড়বে। আরশ ভাইয়া তাদের মার্ডার করেছে কারণ তাদের কারণেই ওর উপর অ্যাটাক হচ্ছিলো, আর এর আগেও ফারহিনের উপর অনেক অ্যাটাক হয়েছে। যার কারণে আঙ্কেল ফারহিনকে প্রায় ঘর বন্ধি করে রাখতো। আর নানান মিথ্যে-বানোয়াট ওকে বলে বুঝ দিতো। এসব যখন ফারহিন এই এক কথায় বুঝবে তখন ফারহিন নিজেই ভেতর ভেতর মরে যাবে। ঘৃণা করবে ওর মৃত বাবাকে। কেঁচো তুলতে গিয়ে কেউটে বেরিয়ে আসবে। আর ফারহিনের এখন প্রেগন্যান্সি চলছে ওর অনেক কম্পলিকেশ আছে। প্রেগন্যান্সির এই সময়ে ফারহিনের এতটা প্রেশার নেওয়া ঠিক হবেনা। তাই আমি চাইনা ফারহিন এই মুহুর্তে এসব জানুক। আমি পারবোনা ভাইয়া সরি।
বলেই ফারহানা উঠে দাঁড়ালো, যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই তীব্র আটকালো-
“-ফারহানা প্লিজ আমার কথা শোনো দরকার পরলে আমরা ওকে আঙ্কেলের ম্যাটারটা বলবোনা। ওটা হাইড করবো।
ফারহানা ভ্রু কুঁচকে নিল-
“-প্রত্যেকটা ঘটনার এপিটওপিট হয়। আপনি একটা পিঠ দেখিয়েই আরশ ভাইয়াকে দোষী করতে পারেন না। আর তাছাড়া ফারহিনের সম্পূর্ণ অধিকার আছে হক আছে সবটা জানার।
“-তুমিও আরশের সাইড নিচ্ছো?
বিস্ময় নিয়ে বলল তীব্র।
“-আপনি ভুল বুঝছেন। আমি কারো সাইড নিচ্ছি না। আমি শুধু ফারহিনের কথা ভাবছি। আর আপনি যেটা বলছেন সেটা অন্যায়। এভাবে আঙ্কেলের দোষ হাইড করে আরশ ভাইয়ার ঘাড়ে সম্পুর্ন দোষ চাপাতে পারিনা। কারণ আরশ ভাইয়ার সাথে তাদের আশাকরি কোনো পার্সোনাল শত্রুতা ছিলো না। নাকি এটাও আপনি বানিয়ে দেবেন কোনো একটা বানোয়াট কথা বলে?

তীব্র কিছু বলতে চাওয়ার আগেই ফারহানা বলল-
“-আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে। আমি আসছি…
ফারহানা ক্যাফে ছেড়ে বেরিয়ে যেতেই তীব্র টেবিলে ঘুষি বসালো।
“-এত অন্যায়! এত অন্যায় করার পরও কেন সবাই ওর সাইড নিচ্ছে? কি আছে যেটা আমি শো করতে পারছিনা..

চলমান….
#শূন্যতায়_পূর্ণতা
#হীর_এহতেশাম

||শেষ পর্ব||

★ দোতালার সিড়ি বেয়ে নামার জন্য ঘুরে দাঁড়াতেই পেছন থেকে গম্ভীর কন্ঠস্বর ভেসে এলো। ফারহিন দ্রুত ঘুরে দাঁড়ালো। সামনেই তীব্র কে দেখে ফারহিন অবাক হলো! নিজের বিস্ময় চাপা দিয়ে তীব্র কে প্রশ্ন করলো-
“-আপনি এখানে?
“-আমাকে দেখে অবাক হলে নাকি?
“-অবাক হওয়ারই কথা, বাসায় এলেন কখন? আর আপনি ভেতর থেকে আসছেন কিভাবে?
“-এসেছি আগেই, ফারহানার সাথে কথা বলছিলাম।
“-ওর সাথে আপনার কি কথা?
“-ছিলো কিছু।
বলেই তীব্র ফারহিনের দিকে তাকালো। ঢিলেঢালা ফ্রক পরে আছে মেয়েটি। মুখ ভর্তি ব্রণের দাগ। চুল গুলো হালকা বেনি করা। হাত পা ও খানিকটা ফুলে উঠেছে। আগের চেয়ে হালকা মোটা হয়েছে।
ব্রণের দাগ গুলো চেহারায় ফুটে উঠেছে। ফর্সা মুখটা আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। এই বুঝি প্রেগন্যান্সির হাল!! নিজের অজান্তেই এক পা এগোলো তীব্র। ফারহিন একটু পিছিয়ে বলল-
“-আপনার দরকার শেষ হলে যেতে পারেন।
“-কিছু বলার ছিলো। আজ না বলে যাবো না..
“-কি..?
“-তোমার স্বামীর সবচেয়ে জঘন্য সত্য! যেটা তুমি জানোই না।
ফারহিন ভ্রু কুঁচকালো। তীব্রের এমন ধরনের কথা পছন্দ হলো না তার। চেহারায় কাঠিন্যতার আবরণ এনে বলল-
“-বাজে কথা শোনার মত সময় নেই আমার।
“-আমি বাজে কথা বলছিনা। দিদার আঙ্কেল আর কাদের আঙ্কেলের ডেথ এর জন্য আরশই দায়ী। এটা শুধু আমি না, ফারহানা জানে ইভেন খালামনিও জানে। জানোনা শুধু তুমি। তোমার প্রেগন্যান্সিতে কম্পলিকেশন ছিলো বলেই তোমাকে জানানো হয়নি। আর আশ্চর্য হলেও এটা সত্যি যে, সবাই আরশের এই জঘন্য কাজকে তোমার প্রতি তীব্র ভালোবাসা বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে।
তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে অন্যদিকে তাকালো তীব্র। ফারহিন তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে তার দিকে। যা শুনলো তাতে তার মাথা ঝিমাচ্ছে। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যাকে এতটা বিশ্বাস করেছে সে মানুষটিই বিশ্বাস ভেঙ্গে দিয়েছে। আরশ আসলেই কি এসব করেছে? কিন্তু কেন করেছে? ফারহিনের ভাবনায় ফাটল ধরিয়ে তীব্র বলে উঠলো-
“-তোমায় ভালোবাসি ফারহিন। অনেক! তবে আমাকে দিয়ে সবচেয়ে বড় যে ভুলটা হয়েছে তা হলো তোমাকে বিয়ে না করা। আমি যদি সেদিন তোমায় বিয়ে করে নিতাম তাহলে এত কিছু হতোই না। আজ আঙ্কেল বেঁচে থাকতো। সেদিন বন্ধুত্বের পাল্লা ভারী করতে গিয়ে আমি হেরে গেলাম। নিজের কাছে, নিজের ভালোবাসার কাছে। জঘন্য এক মানুষের হাতে তোমায় তুলে দিলাম। আমি বুঝতে পারিনি আরশ এতটা নীচে নেমে যাবে। আরশ মানসিক ভাবে সুস্থ না। যার কারণে ও যেটা বুঝে সেটা নিয়েই থাকে। আরশ ছোট থেকে একা ছিলো বলেই আমি তোমাকে ছেড়ে দিয়েছিলাম যাতে তুমি ওর জীবনের শূন্যতায় পূর্ণতা হয়ে আসো। কিন্তু হলোনা। সব তছনছ হয়ে গেল। তার রিসেপশনের দিন তোমার উপর অ্যাটাক হওয়ার পরে আরশ আঙ্কেল আর তার নিজের বাবাকে মেরে ফেলে। কারণ তাদেরই কোনো শত্রু তোমার উপর অ্যাটাক করেছিলো। তোমার উপর অ্যাটাক করতে তারা চায়নি, আঙ্কেল এর উপর করতে গিয়ে ভুলবশত হয়ে যায়। যার কারণে তুমি আঘাতপ্রাপ্ত হও। তোমার বাবা ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলো। জড়িত না, ওনার কাজই এটা ছিলো। ওনার কাজ ভুল হলেও উনি যা করেছে তা তোমার জন্য করেছে।

ফারহিন কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতে তার নিশ্বাস আটকে আসছে। অনেকদিন পর তার চোখে আবারও বর্ষণের সৃষ্টি হলো। ফারহিন কে কাঁদতে দেখে তীব্র বলল-
“-কেঁদো না ফারহিন। সব কষ্ট ভুলে আমার কাছে ফিরে আসো। আমি তোমাকে তোমার মত করেই ভালো বাসবো।
বলেই তীব্র এগিয়ে এলো। তীব্র এগিয়ে আসতেই ফারহিন হাত উঁচু করে থামালো।
“-আপনি আমার কাছে আসবেন না। আমি আপনার ছায়াও আমার জীবনে চাই না। চলে যান..
তীব্র অবাক হলো, কঠোর কন্ঠে বলল-
“-তুমি এখানে থাকতে পারো না। আমি তোমাকে এখানে রেখে যেতে পারবো না। আরশ তোমাকে যেকোনো সময় আঘাত করে বসবে ও তোমার জন্য ক্ষতিকর।
“-আপনি আমার জন্য ক্ষতিকর। আপনার চেয়ে ওই ঢের ভালো, কেন বলুনতো? অন্তত ভালোবাসার নামে কাঁদায়নি সে আমাকে। কিন্তু আপনি? আপনি কখনোই আমাকে ভালোবাসেন নি। যখন ইচ্ছে হলো আসলেন, বুকে টেনে নিলেন, আবার যখন ইচ্ছে হলো ছুড়ে ফেলে দিলেন নাহয় অন্য কাউকে দিয়ে দিলেন। আপনার কাছে আমি পন্যের মত৷ ইচ্ছে হলে কাছে রাখা যায় ইচ্ছে শেষ তো অন্যকাউকে দিয়ে দেওয়া যায়। আমার জীবনে যা হয়েছে সব আপনার জন্য। কারণ সেদিন আপনি এলে এত কিছু হতো না। কিন্তু আপনি আসেন নি। এক পলকে সব বদলে দিলেন। আর এখন ভালোবাসা দেখাতে এসেছেন?
“-ফারহিন আমি জানতাম না আরশ….
তীব্রকে বলতে না দিয়ে থামিয়ে দিলো ফারহিন,
“-জানতেন না? নিজের এত ক্লোজ বন্ধু সম্পর্কে এইটুকু খোঁজ রাখেন নি? আমিতো ফারহানার আনাচকানাচ সব জানি। আপনি তো ছোট থেকেই ওনার সাথে তাহলে কেন জানতেন না? না জেনেই দয়ার সাগরের ঢেউয়ে ভেসে আমাকে তার কাছে দিয়ে দিলেন? আর আজ এসেছেন নিয়ে যেতে? অদ্ভুত…
“-তুমি আমায় ভুল বুঝছো ফারহিন। আমার কথাটা একবার শোনো..
“-একদম এগোবেন না। একদম না…
কথা বলতে বলতে পেছনে পা রাখতেই সিড়ি থেকে পা পিছলে গেল ফারহিনের। গড়িয়ে গেল নিচের দিকে। তীব্র চিৎকার করে ডাকলো-
“-ফারহিইইন…
তীব্র ছুটে যাওয়ার আগেই গাড়ির হর্ণের শব্দ হলো। হয়তো আরশ এসেছে। তীব্র আর সামনে অগ্রসর হলো না। ঠিক যেভাবে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে এসেছিলো সেভাবেই চলে গেছে।

বাড়ির দরজায় আ রাখতেই ব্যস্ত হয়ে এগিয়ে আসা পা দুটি থেমে গেল। আরশের হাতে থাকা শপিং ব্যাগ গিফট বক্স সব মাটিতে পড়ে গেল। ড্রয়িংরুমে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ফারহিন কে দেখে আরশ যেন বরফের ন্যায় জমে গেল। সালমা দ্রুত এগিয়ে গেল। ৮মাসের অন্তঃসত্ত্বা ফারহিন সিড়ি থেকে পড়ে যাওয়ায় মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে। মাথায় আঘাত দেখে সালমা বুঝে গেল সিড়ি থেকে ফারহিন পড়ে গেছে। দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা আরশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে ডেকে উঠলো সালমা-
“-আরশ! ফারহিনের সেন্স নেই।

আরশের ঘোর কাটলো। আরশ দ্রুত দৌড়ে ফারহিনকে কোলে তুলে নিলো। গাড়ির পেছনের সিটে শুইয়ে দিয়ে দ্রুত ড্রাইভিং সিটে বসে পড়লো। গাড়ি নিয়ে ছুটলো হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।

★দরজা খুলে দিতেই সালমা কে এড়িয়ে ফারহিনের ঘরের উদ্দেশ্যে ছুটলো ফারহানা। ফারহানা কিছুদূর এগিয়ে যেতেই সালমা বলে উঠলো-
“-ফারহিন নেই।
“-নেই মানে! কোথায় গেছে? তীব্র ওকে উল্টো পাল্টা কিছু বলে দেয়নি তো?
তীব্র নামটা শুনেই কলিজা ছ্যাত করে উঠলো সালমার। ভ্রু কুঁচকে বিস্ময় নিয়ে প্রশ্ন করলো-
“-তীব্র???
“-হ্যাঁ আন্টি! তীব্র এসেছিলো। ও আমাকে ঘরে আটকে ফারহিনের কাছে গিয়েছিলো। জানিনা কি বলেছে..
“-তুই চুপ করে কেন ছিলি? ও ভেতরে আসলো কিভাবে?
সালমার ক্ষিপ্ত কন্ঠস্বর শুনে চমকে গেল ফারহানা। বলল-
“-ফারহিন কোথায় আন্টি…
“-হাসপাতালে! আমি এসে দেখলাম ও নিচে পড়ে আছে। আরশ হাসপাতালে নিয়ে গেছে জানিনা কি হবে মেয়েটার।
ফারহানা ধপ করেই ফ্লোরে বসে পড়লো। অস্ফুটস্বরে বলে উঠলো-
“-তীব্র!!

ফারহিনের প্রেগন্যান্সির ৮মাস৭ দিন চলছে। প্রেগ্ন্যাসিতে নানানরকম সমস্যা ছিলো বলে আরশকে কিছুই বলতে দেয়নি সালমা। খারাপ প্রভাব পড়বে এই ভেবে ফারহানাও যথেষ্ট বুঝিয়ে শুনিয়ে রেখেছিলো। আরশ বলেনি, নিজের করা কাজ গুলোর স্বীকারোক্তি ফারহিনের সামনে রাখেনি। ভেবেছিলো বাবু চলে আসার পর ঠান্ডা মেজাজে সবটা বলবে। কিন্তু এক মুহুর্তেই বদলে গেল সবটা।

৩ ঘন্টা যাবত পায়চারি করছে ওটির সামনে আরশ। সালমা আর ফারহানা আসতেই ছুটে গিয়ে নিজের মধ্যে দমিয়ে রাখা অস্থিরতা কিছুটা প্রকাশ করলো আরশ। সালমা কিছুতেই কিছু বলে তাকে শান্ত করাতে পারলো না। হুট করেই নার্স বেরিয়ে এলো। আরশ দ্রুত উঠে ওটির সামনে গেল। নার্স একটি ফর্ম এগিয়ে দিয়ে বলল-
“-সাইন করুন।
“-কি.. কিসের সাইন?
“-আপনার মেয়ে হয়েছে, মেয়ে যার হাতে দেব তার একটা স্বাক্ষর আর সম্পর্ক এখানে উল্লেখ করতে হবে।

আরশ পিছিয়ে গেল। অন্য একটি নার্স সাদা তোয়ালেতে প্যাচানো একটি বাচ্চা নিয়ে বের হলো। সালমা দ্রুত এগিয়ে গেল। আরশের কাধে হাত রেখে বলল-
“-সাইন করো আরশ।
আরশ সালমার দিকে তাকাল। কাঁপা হাতে সাইন করতেই নার্স বলে উঠলো-
“-সম্পর্ক?
আরশ অস্ফুটস্বরে বলে উঠল-
“-বাবা!

নার্স এগিয়ে এসে বাচ্চা আরশের দিকে এগিয়ে দিলো। আরশ ঘুমন্ত শিশুটির দিকে তাকিয়েই হেসে দিলো। মাথার এক পাশে খানিকটা লাল দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকালো নার্সের দিকে, নার্স বুঝতে পেরে বলল-
“-আঘাত পাওয়ায় এদিকে একটু রক্তজমাট বেধেছে তবে বাচ্চা সুস্থ আছে হেলদি আছে।
“-আমার ওয়াইফ..? সে কেমন আছে?
“-সরি স্যার! উনি সি সেকশনের মাঝপথেই মারা যান। অতিরিক্ত ব্লিডিংয়ের কারণে ওনাকে আমরা বাঁচাতে পারিনি। উই আর সরি।

নার্সের বলা শেষ কথাটা আরশের কান ঝালাপালা করে দিলো। আরশ ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়তেই সালমা সামলে নিলো। বাচ্চার দিকে তাকিয়ে রইলো আরশ, সালমা বলল-
“-আরশ ফারহিন…
“-নেই মা। তোমার মেয়ে আমাকে ধোকা দিয়ে চলে গেছে। আমাকে সুযোগ দিলো না!
“-আরশ!
“-মা ও ভাবলো না আমি ওকে ছাড়া কিভাবে থাকবো। ও আমার দিক ভাবলো না। ও নিজেরটা ভাবলো শুধু নিজেরটা। আমার হাতে এত বড় দায়িত্ব দিয়ে নিজে দেখোনা কেমনভাবে ফাঁকি দিলো। আস্ত একটা ফাঁকিবাজ ও।

আরশ কাঁদছেনা। চোখ গুলো লাল হয়ে আছে। সালমা ফারহানা কেঁদেই চলেছে। ফারহিন আর কখনো আসবেনা, কখনো মা বলে ডাকবেনা। ফারহানা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুটি হারালো। ফারহানার এক মাত্র আশ্রয়স্থল। কাঁদতে কাঁদতে ফারহানা বলে উঠলো-
“-সব তীব্রের জন্য হয়েছে। উনি আজ না এলে এসব হতোই না। আমার ফারহিন বেঁচে থাকতো..
আরশ ত্রস্তনয়নে তাকালো। ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো-
“-তীব্র??
ফারহানা কাঁদতে কাঁদতে সবটা বলে দিলো৷ আরশ উঠে দাঁড়ালো৷ সামনে পা বাড়াতেই সালমা বলল-
“-যত যাই করো ফারহিন কিন্তু আর ফিরে আসবেনা আরশ। নিজের মেয়ের জন্য হলেও সব বাদ দাও। তোমার মেয়ের তোমাকে প্রয়োজন, তাই ওর কথা ভেবে তুমি আর কারো কোনো ক্ষতি করবেনা। তুমি অসুস্থ নও আরশ! তা তুমি প্রমাণ করবে তোমার মেয়েকে রক্ষা করে।

সালমা থামলো। স্ট্রেচারে ফারহিনের লাশ নিয়ে আসা হলো। আরশ ঘুরে দাঁড়ালো। ধীর পায়ে স্ট্রেচারের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। লাশের মুখ থেকে কাপড় সরিয়ে দিতেই আরশ নিজের দাঁতে দাঁত চেপে নিলো। নিশ্বাস আটকে আসছে তার। সামনেই ঘুমন্ত মানুষটি আর কখনো উঠবেনা এটা ভাবতেই আরশ নিজেকে শূন্যতার শেষ শিখরে দেখতে পেল। হাটু ভাজ করে বসে পড়লো স্ট্রেচারের পাশে।
“-এ কেমন পরিস্থিতিতে ফেলে দিলে আমাকে? আমি মেয়ে আসার আনন্দ উদযাপন করবো নাকি তুমি চলে যাওয়ার শোক? কোনটা করা উচিত আমার? তোমার শোক পালন করলে মেয়ের প্রতি অন্যায় হবে, আর মেয়ে আসার আনন্দ উদযাপন করলে তোমার প্রতি অবিচার! আমি কি করবো? তুমি আমার উপর এত অভিমান করলে? এত অভিমান? চলে গেলে কেন তুমি? আমাকে বলার সুযোগ দিলে না। এক পাক্ষিক কিছু হয়না ফারহিন। আমি যা করেছিলাম তোমাকে ভালো রাখতে তোমার পেতে করেছিলাম! কিন্তু লাভ টা কি হলো? আমি দিনশেষে একাই রয়ে গেলাম। আজীবনের মত তুমি আমায় নিঃস্ব করে দিয়ে চলে গেলে। এত কিছু কেন করলাম আমি? কার জন্য করলাম? আমিতো তাকেও ধরে রাখতে পারিনি। আমি আজীবন এই আক্ষেপ নিয়ে কীভাবে বেঁচে থাকবো ফারহিন? মেয়ের জন্মদিন পালন করবো নাকি তোমার শোক?
তোমার কাছে অনেক প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু উত্তর তো তুমি দিতে পারবেনা ফারহিন। আমি কখনো নিজের অতীতে ফিরে যাবোনা। আমার সবচেয়ে বড় শাস্তি এটাই। তুমি যেতে যেতে আমায় সবচেয়ে বড় শাস্তিটি দিয়ে গেলে বউ। আমার করা সমস্ত কাজের একটাই শাস্তি তোমার শূন্যতা! আমি সব ছেড়ে দেব ফারহিন, কারণ আমি তোমাকে পাইনি। এতকিছু করে যেখানে তোমাকে পাইনি সেখানে আমার এসবের কোনো মানে হয়না। আমি সব ছেড়ে দিয়ে শুধু একজনের বাঁচবো আমার মেয়ের জন্য। তোমায় একটা কথা বলা হয়নি ফারহিন, আমি তোমাকে কখনোই তোমার জন্য ভালোবাসিনি আমার জন্য বেসেছিলাম। অথচ আজ তোমার জন্যই তোমাকে ছেড়ে দিতে হলো। তুমি এভাবে না গেলেও পারতে ফারহিন। অন্তত আমার এত আক্ষেপ থাকতো না।

শান্ত পরিবেশ, সবার নিশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে। কান্নার শব্দও ভেসে আসছে বাতাসের সাথে। আরশ শেষ বারের মত চোখের পানি মুছে নিলো। উঠে দাঁড়িয়ে ঘুমিয়ে থাকা বাচ্চাটির দিকে তাকালো। তারপর হালকা হেসে বলল-
“-ওয়েলকাম প্রিন্সেস!!

সমাপ্ত….

1 COMMENT

  1. গল্পটা দারুণ ছিল। শেষ টা স্যাড হলেও এক কথায় দারুণ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here