শ্যামারঙা,পর্ব:৪৬

#শ্যামারঙা
লেখিকাঃ বৃষ্টি সরকার অধরা
পর্বঃ অন্তিম

মন খারাপ থাকায় রাতে খাবার না খেয়েই শুয়ে পড়লাম। বাড়িতে কেউ না থাকায় বাড়িটা বেশ নিস্তব্ধ।
কারণ আমি বাদে সবাই একটা অনুষ্ঠানে গেছে।

রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ফোনে একটি মেসেজ এলো।
মন খারাপ থাকায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম কফির মগ হাতে নিয়ে আর মনের সকল অভিমান খোলা আকাশের মাঝে নালিশ জানাচ্ছিলাম।
মেসেজের শব্দ শুনেও সেটা দেখার তখন বিন্দু মাত্র ইচ্ছে ছিলো না।
তাই দেখা হয়নি।কফি শেষ করে ফোনটা হাতে নিয়ে টাইম দেখার জন্য পাওয়ার বাটন চাপ দিতেই চোখ পড়লো নবুর দেওয়া মেসেজের দিকে
“তাড়াতাড়ি এ বাড়িতে চলে আয়”

মেসেজটি দেখে নিমিষেই মাথা ঘুরে গেল। কোন কিছু চিন্তা না করেই সেই সময়ই ওই বাড়িতে চলে গেলাম।
বাড়ির ভেতর ঢুকেই দেখি পুরো বাড়ি অন্ধকার।

তাড়াতাড়ি নবুকে ফোন দিলাম।
কিন্তু ও ফোন ধরলো না।তবে মেসেজ দিলো
“ছাদে আয় দ্রুত ”

আমিও কোন কিছু চিন্তা না করেই ফোনের ফ্লাস লাইট জালিয়ে ছাদে চলে গেলাম।
সেখানেও অন্ধকার পুরো ছাদ ফাকা।

যখনই আমি ছাদের মাঝ বরাবর গেলাম তখনই কেউ আমার চোখ চেপে ধরলো আর সাথে সাথেই সবাই চিৎকার করে উঠলো ” শুভ বিবাহ বার্ষিকী”

এবং আমার চোখ তখনই ছেড়ে দেওয়া হলো।
সবাই আমার সামনে হাসি মুখে দাড়িয়ে আছে।
আমি পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখি হাস্যউজ্জ্বল নীলাদ্রি আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
তাকে দেখে আমার আমার মন বেজায় খুশি।

তখন সে আমার আমার কানের কাছে মুখ এনে বললো…
— কেমন লাগলো সারপ্রাইজ
একবছর তো হয়ে গেল।
আরেকবার বিয়েটা করবি নাকি?

তার কথায় আমি মিথ্যা রাগ দেখিয়ে বললাম…

— বয়েই গেছে আমার আপনাকে আবার বিয়ে করতে।

আমার কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো।

এর দুইদিন পর আমাদের আবার বিয়ে হলো বেশ বড় অনুষ্ঠান করে।

দুই বছর পর……

সারাদিন এত কি কাজ করিস রে তুই
যে আমার সামান্য ফোনটা ও তুই একটু ধরতে পারিস না।…

ফোনটা রিসিভ করে কানে নেওয়ার সাথে সাথেই নীলাদ্রির বাজখাঁই গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম।

— কিরে কথা বলছিস না কেন?

_– কি বলবো তাই তো ভাবছি।

— কেন? কি ভাবছিস।

— সারাদিন কি কি কাজ করি সেটাই ভাবছি…

— ফাজলামো করিস…

— আমার কি সেই সাহস আছে নাকি সময় আছে।

— আদি কোথায়?

— সে এখন ঘুমাচ্ছে।
তাই তো ফোনটা ধরতে পারলাম।

— কেন রে আমার ছেলেটা কি এমন করে যে তুই ফোন ধরতে পারিস না।

— না না কিছুই করে না।

— আমিও তো তাই জানি।

— যেমন বাপ তার তেমনি বেটা।

— নাম তো রাখবেই তাই না।

— হুম

— তাই তো এক বছর বয়স হতে না হতেই আমার খবর করে দিচ্ছে…

— চিন্তা করিস না।

— কবে আসছেন.

— এটা তো সারপ্রাইজ।।

— ওকে।

আজ আমার আর নীলাদ্রির মানে আমাদের ছেলে আদিদেব এর প্রথম জন্মদিন।
ছেলেটা আমার একদম তার বাবার মত হয়েছে।
বলতে গেলে বাবার নেওটা।
বাবাকে পেলে সারাদিনে তার আর কিছুই লাগে না।

আজ দিদিভাই আর দাদা ভাই ও আসবেন।
আর তাদের সাথে আসবে তাদের ছেলে তৃষান।
যার বয়স মাত্র দেড়বছর।।
নবু এখন এ বাড়িতেই আছে।
কারণ সে এখন প্রেগন্যান্ট।।।

আমরা এখনও সেই আগের মতোই আছি মিলেমিশে।
আর আশাও করি যেন সারাজীবন এভাবেই থাকতে পারি।আপনারা আমাদের জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন….

সমাপ্ত।।।

( আমি অনেক দুঃখিত
এত দেরি করে গল্প দেওয়ার জন্য।

যদিও এত তাড়াতাড়ি গল্পটা শেষ করার ইচ্ছে ছিলো না।
কিন্তু কিছু ব্যস্ততা তার কারণে দিতে দেরি হয়েছে আর সেই সাথে আমার অনার্স ২য় বর্ষের টেস্ট পরিক্ষার রুটিন দিয়ে দিয়েছে।।
যার কারণে আজ শেষ করে দিলাম।

পরিক্ষা পর আবারও কোন এক নতুন গল্প নিয়ে হাজির হবো।

আর একটা রিকুয়েষ্ট কোন ভাইয়া বা আপু যদি আমার আমাকে এই গল্পের সব পার্টের লিংক একসাথে করে দেন তাহলে আমার খুব সুবিধা হতো।

সবাই ভালো থাকবেন
আর আমার জন্য দোয়া করবেন।

ধন্যবাদ)..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here