সিঙ্গেল মাদার পর্ব ১

#সিঙ্গেল_মাদার
#ফারিন
পর্ব: ০১

জামান হোসেন আর শাহানা বেগমের আদরের দুই মেয়ের নাম ইরিন আর ইপ্সিতা ।
ইরিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর নাট্যকলা ডিপার্টমেন্ট এর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী । আর ইপ্সিতা ক্লাস এইটে পড়ে ।
বাবা মা এর আদরের দুই মেয়ে । ইরিন চট্টগ্রাম থাকে আর ওর ফ্যামিলি ঢাকাতে সবাই । বাবা মা বলেছিল চাকরি ট্রান্সফার নিয়ে চট্টগ্রাম সেটেল হওয়ার কথা কিন্তু রাজি হয় নি , ইরিন বলেছিল ওর এবার একটু স্বাধীনতা চাই একটু সাধারণ ভাবে আর পাঁচটা মেয়ের মতোই হলে থাকবে ।
মা আপত্তি জানালেও বাবা আর অমত দিলো না এবার একটু স্বাধীনতা দিয়েই বসলেন মেয়েকে ।
আর ইরিন শুরু করলো এক আকাশ স্বাধীনতা নিয়ে তার মুক্ত বিহঙ্গের মতো জীবন ।

– বাবা আমাকে আগামী কালের টিকিট কেটে এনে দাও
– কেন মা কালকেই চলে যাবি নাকি ??
– হুম বাবা ছুটি শেষ ।
– ইরিন আর কয়েকটা দিন থেকে যা না মা –
– মা আমার ক্লাস শুরু হবে দুই দিন পর থেকে আমি কিভাবে থাকবো বলো তাছাড়া তুমি কি চাও তোমার মেয়ে ক্লাস মিস দিক ?
– শাহনা বেগমের মন খারাপ হয়ে গেল তবুও বললো “কতো বার বললাম আমরা ওখানে শিফট হয়ে যায় , না মেয়ে কথা শোনে আর না বাবা” আমার হয়েছে যতো জ্বালা , কিসের এতো স্বাধীনতা লাগবে বুঝি না ।
– মা কি শুরু করলে তুমি ? এমন করলে তো আমার যেতে কষ্ট হবে বোঝো না তুমি ।
– ইপ্সিতা এবার বলে উঠলো আমাকে কেউ ভালোবাসে না আপু তুমিই থেকে যাও আর আমি চলে যাচ্ছি !

ইপ্সিতার কথায় সবাই হেসে উঠল –

ঢাকা ছেড়ে চলে আসতে ইরিনের ও ভালো লাগে না কিন্তু কিছু করার নেই । সে মুক্ত বিহঙ্গের মতো জীবন টা খুব উপভোগ করে । তার মুক্ত জীবনে ডাল পালা ছড়িয়ে বসে আছে মাস্টার্সের শেষ বর্ষের ছাত্র সৌমিক ।

ইরিন বাসে বসে কানে হেডফোন গুঁজে দিল চোখ বন্ধ করে আছে হঠাৎ ফোন বেজে উঠল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখলো সৌমিকের ফোন হাসি মুখে ফোন রিসিভ করলো
– আসসালামু আলাইকুম
– ওয়ালাইকুমুস সালাম‌ বাসে কি উঠেছো ?
– হুম এখনো বাস ছাড়েনি
– পাশের সিটে কে আছে ??
– এখনো কেউ আসেনি তো
– আচ্ছা সাবধানে এসো , আমি কি নিতে আসবো‌ ??
– না তার আর দরকার হবে না আমি চলে আসবো
– আচ্ছা তাহলে এসো কাল দেখ হবে
– হুম আল্লাহ হাফেজ ।
– আল্লাহ হাফেজ।
ফোন কেটে দিয়ে ইরিন আবার গান প্লে করে চোখ বন্ধ করে সৌমিকের কথা মনে করছে
মনে পড়ছে ভার্সিটির প্রথম দিকের দিন গুলোর কথা ,
সৌমিকের সাথে সম্পর্কের কথা ।
ইরিন যখন ভার্সিটি তে পা রেখেছে সৌমিক তখন দুই বছরের সিনিয়র বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বড় নেতা হয়ে দাঁড়িয়েছে , ক্যাম্পাসে দেখলে কেউ সালাম ঠুকতে ভুল করতো না ।

একদিন ইরিন , মিথি, আলো সবে ডিপার্টমেন্টের দিকে এগোচ্ছে
হঠাৎ শিস বাজানোর আওয়াজ ওরা ঘার ঘুরিয়ে দেখলো সিনিয়র কিছু ভাই ওদের উদ্দ্যেশে শিস দিচ্ছে

– এই যে সাদা ড্রেস এই দিকে!

ওদের মধ্যে সাদা ড্রেস পড়ে মিথি আছে
মিথি ভয়ে ভয়ে ইরিনের দিকে তাকালো
ইরিন চোখ ইশারায় বোঝালো কিচ্ছু হবে না

মিথি এগিয়ে গেল ছেলেগুলোর দিকে
– আসসালামু আলাইকুম বলুন কি বলবেন ?
– এতো তাড়া কিসের সুন্দরী দাড়াও সবে তো এলে ।
– ভাইয়া আমার ক্লাস আছে আমাকে যেতে হবে ।
– এবার ছেলেটা রেগে বলে উঠলো “এই মেয়ে তোমার সাহস তো কম নয় তুমি আমাদের ক্লাস দেখাচ্ছো , তুমি জানো না আমরা সিনিয়র” ।

মিথি ভয়ে এবার একদম জড়োসড়ো হয়ে গেছে
ভয়ে ভয়ে বলল “সরি ভাইয়া”
– আচ্ছা আচ্ছা নাচ পারো ??

মিথি তো অবাক এবার ওকে সারা ক্যাম্পাস ভর্তি ছেলে মেয়েদের সামনে নাচতে হবে সং সেজে
– “না ভাইয়া ” ।
– না পারলেও এখন নাচ করে দেখাতে হবে , অনিক গান দে-
– মিথি এবার কান্না করে বললো ভাইয়া আমি পারবো না প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন
– প্যান প্যান না করে শুরু করো , নয়তো আর ও বড় কোনো টাস্ক দিব ।
– প্লিজ ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দিন আমি এসব পারবো না।

এদিকে ইরিন মিথির কান্নাকাটি দেখে আর সহ্য করতে পারছে না অনেকক্ষন ধরে ওদের অসভ্যতামি দেখছে

– আলো তুই এখানে দাঁড়া আমি ওখানে যায়
– পাগল হয়েছিস ওখানে গেলে তোকে আর আমাকেও ফাসিয়ে দেবে দোস্ত যাওয়ার দরকার নেই
– না আলো আমার আর সহ্য করা পসিবল না মিথিকে একলা পেয়ে মজা নিচ্ছে আমি যা বলছি তুই শোন , আমি ওখানে গিয়ে ওদের হ্যান্ডেল করবো আর তুই এই সুযোগে গিয়ে জাফর স্যার কে ডেকে আনবি যখন আমি ইশারা করবো তোকে, বাকিটা আমি ম্যানেজ দেব ।

আলো চলে গেল ডিপার্টমেন্টের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো আর ইরিন এদিকে চলে আসলো

– আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া আমি ইরিন জামান , আমরা নাট্যকলা ডিপার্টমেন্ট এর স্টুডেন্ট ।

– তোমার নাম , ডিপার্টমেন্ট দিয়ে কি হবে তুমিও বরং তোমার বান্ধবী কে কম্পানি দাও কেমন‌ , দুজন ই শুরু করো , অনিক দিলবার দিলবার গান টা দে ।

– “জ্বি ভাই দিতাছি” বলেই অনিক গান দিল ফোনে , বাকি সবাই মজা নিচ্ছে , টিপ্পনী কাটছে ।
ইরিন প্রথমে শুনে নিল চুপচাপ এরপর শুরু করলো

ইরিন হুট করে অনিকের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে সুইচড অফ করে দিল ।

– রাহাত রেগে বললো তোমার সাহস তো কম নয় তুমি অনিকের হাত থেকে ফোন নিয়ে নিলে !

ইরিন ভয় না পেয়ে সহজ গলায় বলল
– ভুল করছেন ভাইয়া কারোর ফোন নিতে সাহস লাগে না , অনুমতির প্রয়োজন হয় আমি অনুমতি টা নেওয়ার প্রয়োজন বোধ মনে করি নি ।

– জানো আমি তোমার কি করতে পারি ?

– হুম জানি ক্যাম্পাসের সকলের সামনে আমার অবস্থা নাস্তানাবুদ করতে পারেন অথবা রাগ মেটাতে সুযোগ বুঝে তুলে নিয়ে গিয়ে খারাপ কিছু ও করে দিতে পারেন এইতো , আপনার সর্বোচ্চ জোর আপনার পুরুষত্ব পর্যন্ত কিন্তু আমরা কি এখানে আদৌ এমন হ্যারাসমেন্টে পরতে এসেছি ভাইয়া ??
– রাহাত রেগে বললো “সিনিয়র দের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানো না” ??
– ইরিন বললো “আমরা তো ভেবেছিলাম আমাদের সিনিয়র রা আমাদের রক্ষা কবচ হয়ে দাঁড়াবে , আমরা তাদের থেকেই দিক নির্দেশনা পাবো কিন্তু আজ আমার ধারণাটাই পাল্টে দিয়েছেন , আপনার মতো সিনিয়ররা অন্তত এই সম্মান পাওয়ার আশাটা আর রাখবেন না, আর মিথি তুই এমন মানুষদের সামনে আর কখনো হাত জোড় করবি না যারা কি না সম্মান পাওয়ার ই যোগ্য না” ।
বলেই অনিকের হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে ইরিন মিথি কে নিয়ে চলে আসলো একা সেকেন্ড ও দাঁড়িয়ে থেকে সময় নষ্ট করলো না ।
– ভাই মেয়েটার সাহস কতো বড় আপনার মুখের উপর কথা বলে ঐ মেয়েকে নিয়ে গেল !
– ওকে আমি দেখে নেব বলেই ওরা সবাই জায়গা ছেড়ে চলে গেল ।

– ইরিন তোর এতো সাহস হলো কিভাবে , তোর ভয় করছে না এখন বিপদে পড়লে কি হবে ?
– দেখ মিথি ক্যাম্পাস টা যেমন ওদের তেমন আমাদের ও কেউ ভুল করলে তাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে না দিলে সে তো বুঝবে না তাই না , আর সত্য বলতে ভয়ের কিছু নেই বিপদ আসলে সেটা এমনি আসবে আমাদের কিছুই করার থাকবে না কিন্তু আজকের বিপদের হাত থেকে তো রেহাই পেলাম ।

ওরা কথা বলতে বলতে ডিপার্টমেন্টের দিকে এগোতেই আলো কাছে এসে বললো

– কি ব্যাপার আমাকে যেতে বললি না যে স্যারের কাছে ?
– ওসবের আর দরকার হয় নি ইরিন ওদের সাইজ করে দিয়ে চলে এসেছে ।
– ইরিন এতো সাহস ভালো না
– হুম একদম তোদের মতো হবো , কেউ বিপদে পড়লে ধারে কাছেও যাব না তাইতো ।
– ওক্বে বইন আমরাও তোর মতো সাহসী হবো চল এবার ১০:৪৫ এ ক্লাস আর পাঁচ মিনিট বাকি আছে ।

ইরিন , আলো , মিথি সবাই প্রীতিলতা হলে উঠেছে ।
নামটাই যেমন মাধুর্য্য হল টা ও তেমন সুন্দর । খোলামেলা জায়গা নিয়ে এই হল টা অবস্থিত । ওরা তিনজন প্রীতিলতা হলে উঠার জন্যই আবেদন করেছিল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে ভেতরে ডানপাশেই এই হলটা , যাতায়াতের জন্য সব দিকে সুবিধা ভাগ্য ক্রমে সিট টা পেয়ে গেছে ।

রাহাতের প্রতিদ্বন্দী পক্ষ সৌমিক দুজনেই সমান সমানে টক্কর দেয় রাজনীতি তে , কিন্তু রাহাত ক্যাম্পাসে মেয়েদের বিরক্ত করে এটাই ওর খারাপ দিক আর সৌমিকের মেয়েদের প্রতি কোনো ইন্টারেস্ট নেই । সৌমিকের সুনামে ক্যাম্পাস মুখরিত ।

দেখতে দেখতে একটা বছর পেরিয়ে গেছে ইরিনের ক্যাম্পাস লাইফ , ইরিনের সাহসীকতার জন্য এরপর আর কোনো ঝামেলায় পড়তে হয় নি , বেশ ভালো মতো দিন গুলো কেটে যাচ্ছিল।
এরই মাঝে ইরিনের জীবনে প্রেম নামক অধ্যায়ের সূচনা ঘটলো ,
প্রেমটা হয়েছিল পহেলা ফাল্গুনের চৈত্র তিথি তে তবে একপক্ষিক ।
ইরিনের ডান্স পারফরমেন্স ছিল –

বছর শেষে পহেলা ফাল্গুনে চারিদিকে অনুষ্ঠানে উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে , এই অনুষ্ঠানের দায়িত্বে আছে সৌমিক, রাহাত, অনিক আরো সবাই, অ্যাঙ্কারিং এর দায়িত্বটা এসে পড়েছে সৌমিক আর রাহাতের কাঁধে ।
ইরিনের ডান্স পারফরমেন্স আছে , হলের সবাই চলে গেছে যার যার মতো , ইরিনের সাজ গোজ করতে লেট হয়ে গেছে শুধু ইরিন আর মিথি রয়ে গেছে ।

– আশা হন্তদন্ত হয়ে হলে ঢুকলো ” ইরিন তোর এতো দেরি কেন হচ্ছে ? আর দুইটা পারফরমেন্স বাদেই তোর নাচ ” !
– আশা আপু হয়ে গেছে আর একটু চুল বাঁধতে সময় লেগে গেল অনেক বেশি
– তাড়াতাড়ি চল আমাকে সৌমিক দিয়ে পাঠালো ।
– ইরিন ব্যাগ গুছিয়ে নিতে নিতে প্রশ্ন করলো “আপু সৌমিক কে” ?
– ইভেন্ট আজকে তো সৌমিক আর রাহাত ই অর্গানাইজ করেছে এমনকি ওরা আজ অ্যাঙ্কারিং এ আছে ।
দুজনই যেমন দুজনকে দেখতে পারে না স্যাররা সব কাজ ওদের একসাথেই দেয়

– আপু রাহাত ভাইয়া কে আমি চিনি ব্যাটা সুবিধের নয় –
– সে আর বলতে আমাদের সেম ব্যাচ দুজনের শুধু ডিপার্টমেন্ট আলাদা , ওদের বন্ধুত্বের কথা সারা ক্যাম্পাস জানতো কিন্তু ঐ যে রাহাতের ছ্যাচড়ামির জন্য দুজন আলাদা হয়ে গেছে এক মেয়ে কে নিয়ে ঝামেলা লাগছিল তারপর থেকে আলাদা দুজনে ।
– লাভ কেস নাকি ?
– অতোটা জানি না তবে সৌমিক পছন্দ করতো মেয়েটাকে আর মেয়েটা বিবাহিত ছিল , রিলেশন টা হয় নি ওদের কিন্তু অজান্তেই রাহাত মেয়েটাকে টিজ করেছিল ঐ নিয়েই ঝামেলা ।
– আচ্ছা আপু চলো হয়ে গেছে আমার ।

সৌমিক অ্যানাউন্সমেন্ট করলো
– এবারে আপনাদের সামনে এক মনোমুগ্ধকর নাচ নিয়ে মঞ্চে আসছে চারুকলা ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ইরিন জামান ।

মঞ্চে হাজির হলো ইরিন হলুদ লাল রঙের শাড়িতে , চুল গুলো উঁচু করে খোঁপা করা চুলে পাহাড়িয়াদের মতো ফুলের স্টিক লম্বা লম্বা করে গেঁথে নিয়েছে , লাল লিপস্টিক , জারবেরা ফুলের মালা দুল এ সাজিয়েছে নিজেকে
একদম যেন এক পাহাড়ি ফুল উঠে এসেছে মঞ্চে ।

সৌমিক কিছুটা সময় নিয়ে দেখলো ইরিন কে
পাশ থেকে রাহাত বলে উঠলো মেয়ে তো আমি শুধু একাই দেখি আর কেউ তো দেখে না ,
সৌমিক একটু বিচলিত হলো তাই তো ওভাবে মেয়েটাকে দেখার কি আছে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল
– শালা তোর মতো আমি ছ্যাচড়ামি করি না তুই ভালো করেই জানিস
– ঐ মাইয়া কিন্তু আমার বোন লাগে না যে তুই আমারে শালা কইতাছোস
– শালা মাইর কি এখানেই দিমু ?
– স্যার আর আমাদের আস্ত রাখবে না , ভাই ঐ মেয়ে একদম ধানী লঙ্কা
– তুই কি করে জানলি ? আবার ঐ মেয়েরে !
– না দোস্ত আমি ঐ মেয়েরে কিছু কই নাই ওর বান্ধবী মিথি রে কইছিলাম কিন্তু ঐ মেয়ে এসে আমাকে অনেক কিছু বলে চলে গেল
– সৌমিক অবাক হওয়ার ভান করে বললো আর তুই কিছু বললি না ??
– মুখটা কাচুমাচু করেই বললো রাহাত ” না কিছু বলার সুযোগ আর দিলো কই , আমার ঐ দিনের পর থিকা কেমন অপরাধবোধ কাজ করছে ঐ মেয়ে যা যা বলেছে
– বলিস কি তোর মতো ছেলের অপরাধ বোধ !! মেয়েটাকে আল্লাহ ভালো রাখুক যে তোর মতো ছেলের মনে অপরাধবোধ এনে দিয়েছে যেটা আমি পারিনি ।
– আমাকে মাফ করে দে দোস্ত
– অনুষ্ঠান শেষ হোক আগে একদফা মারামারি করে তার পর তোকে মাফ করবো এখন আর কথা বলিস না নাচ দেখ
“ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় আমি বেঁধেছি যে গান”
গানের তালে তালে অপরূপ ভাবে ইরিন নৃত্য করলো ।
মনোমুগ্ধকর ভাবে সবাই তাকিয়ে আছে বাদ যাচ্ছে না সৌমিকও
হঠাৎ কি হলো ইরিন মাথা ঘুরে পড়ে গেল
সৌমিক আর রাহাত দৌড়ে গিয়ে ইরিন কে উঠিয়ে নিয়ে চলে গেল ভেতরে , আলো আর মিথি ও ছুটে এসেছে ততক্ষণে মঞ্চ ফাঁকা
– এই মেয়ে তোমার নাম কি ?
– ওর নাম মিথি
– তোকে জিগ্যেস করেছি ??
– তুমি অ্যাঙ্কারিং করতে পারো ?
– জ্বি ভাইয়া কিন্তু খুব ভালো না
– আচ্ছা ব্যাপার না রাহাত ম্যানেজ করে নেবে , রাহাত তুই আর মিথি মিলে মঞ্চ সামলা আমি আর ঐ মেয়েটা মিলে হসপিটালে যায়
বলেই আলো সৌমিক মিলে ইরিন কে কোনো রকমে ধরে পাশের একটা ক্লিনিকে নিয়ে গেল
বেশ কিছুক্ষণ পরে চোখ খুললো ইরিন , দেখলো অ্যাঙ্কারিং করা ছেলেটা ওর দিকে তাকিয়ে আছে গ্ৰে কালারের পাঞ্জাবীর সাথে ম্যাচিং কালো জিন্স, মোটা ফ্রেমের চশমা পড়া, হাতে বেল্টের ঘড়ি চোখ দুটোতে ম্যাচুয়ারিটি তে ভরপুর ,ভরাট কন্ঠে সৌমিক জিগ্যেস করল
– এখন কেমন লাগছে ?
– জ্বি ভালো
– মাথার মধ্যে কি এখন খারাপ লাগছে ?
– জ্বি না এখন ঠিক আছি ।
– খাওয়া দাওয়া না করে পারফরমেন্স করতে চলে এসেছো
– না আসলে সময় পায়নি
-আজ তো বড় কিছু একটা ক্ষতি হয়ে যেতে পারতো তখন কি হতো ? নিজের প্রতি খেয়াল না রাখলে হবে ?
ইরিন চুপচাপ শুনছে ওর ভালো লাগছে কথাগুলো শুনতে , মনে হচ্ছে ঘোর লাগানো আছে কন্ঠে
– তুমি শুনতে পাচ্ছ আমার কথা ??
– জ্বি জ্বি ভাইয়া শুনছি
-“সময়ের কাজ সময়ে করতে শিখবে” বলেই সৌমিক বেরিয়ে এলো রুম থেকে ।
এর পর ইরিন কে নিয়ে ফিরে এলো ততক্ষণে অনুষ্ঠান শেষের দিকে তাই আর মঞ্চে উঠলো না সৌমিক সবটা শেষ করে হলে চলে গেল ।

চলবে ….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here