সীমাহীন শেষ পর্ব

সীমাহীন
#Meherika_Ayat_(আরাধ্যা)
#পর্ব ২৪_ও_শেষ_পর্ব
বাড়ি টাকে আজ বউয়ের মতো করে সাজানো হয়েছে। ঠিক ১ বছর আগে আরু ও আরিয়ানের বিয়ের দিন যেমন করে সাজানো হয়েছিল।
সবাই বেশ খুশি।
রিধি আর রেশমি আজ এক সাথে শশুর বাড়ি থেকে এসেছে।
.
আরাধ্যা নীল কালারের গাউন পরেছে, আর আরিয়ান ওর সাথে ম্যাচিং করে অফ হোয়াট কালারের শার্ট উপরে ব্লু কোট ও ব্লু জিন্স।
.
আরিয়ান খেয়াল করছে যে আরাধ্যার কল আসাতে ও বারান্দায় চলে গেছে।
আরাধ্যা কি বলছে শুনার জন্য আরাধ্যার থেকে একটু দূরে পিছনে দাঁড়িয়ে আছে আরিয়ান।
আবছা আবছা শুন যাচ্ছে আরাধ্যা বলছে যে,
স্যার যাতে কোনো মতেই বুঝতে না পারে আমি এসব করছি ।
এক সাথেই সব জানতে পারবে আর তখন বুঝবে।
তুমি এই জায়গায় আসো, আমরা ওখানেই দেখা করবো। আরাধ্যা ফোন টা কাটতেই আরিয়ান আস্তে সরে পড়লো।
আরাধ্যা কাউকে কিছু না বলেই বেরিয়ে গেল বাসা থেকে।
আরিয়ানের এবার আর বুঝতে বাকি রইলো না আরাধ্যা কি করবে।
না এটা হতে দিব না আমি কখনোই,
আরু তুমি হয় আমার নয়তো কারো না।
রাগে ফুসতে ফুসতে কথা টা বলে আরিয়ান,
সিক্রেট রুম থেকে বন্দুক টা পকেটে নিয়ে আরাধ্যার পিছু নিল।
.
কিছু দূর যাওয়ার পর আরাধ্যা দাঁড়িয়ে পড়লো।
আরিয়ান ও কাছে এক জায়গায় লুকিয়ে দেখতে থাকলো, কি করে আরাধ্যা।
২ মিনিট পর একটা ছেলে আসলো,
দুপুরে যে ছেলে টা আরাধ্যাকে বাসায় ছেড়ে গেছে সেই ছেলেটাই তো।
ছেলেটার হাতে বড় কিছু একটা।
জিনিস টা কি দেখা যাচ্ছে না আরাধ্যার জন্য।
ছেলে টা যখনই এক হাত দিয়ে আরাধ্যাকে জড়িয়ে ধরলো,
আরিয়ান আর ঠিক থাকতে পারলো না।
আড়াল থেকে বেরিয়ে এসেই আরাধ্যাকে গুলি করলো।
আরাধ্যা পিছন ফিরে বলল,
আরিয়ায়ান!
প্রথম আরাধ্যা আরিয়ানকে নাম ধরে ডাকলো।
এদিকে ছেলে টা দৌড়ে পালিয়ে গেল,
কারণ সে জানতো এখানে আর ১ মিনিট থাকলে সে ও আর বাঁচতে পারবে না।
আরিয়ান আরাধ্যার কাছে গিয়ে বলল,
কই তোমার প্রেমিক তো তোমাকে রেখে চলে গেছে বউ!
আরাধ্যাঃ প্রেমিক? কে প্রেমিক?
অর্নব তো আমার কলেজ ফ্রেন্ড, আর্টিস্ট ও।
এতো বছরে তুমি আমাকে এই চিনলে?
আমি বলেছিল না একদিন তোমার রাগই আমাদের আলাদা করে দিবে।
আজ ওই দিন টা চলেই এলো।
( হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে)
জানো আমি আজকে হসপিটালে গেছিলাম,
যখনও থেকে বুঝতে পেরেছি আমার ভিতর তোমার অংশ বেড়ে উঠছে,
তখন থেকে একটু দূরে দূরে থাকছি তোমার।
আজ সিউর হলাম যে সত্যি আমি মা হবো।
তোমাকে সারপ্রাইজ দিব বলে কাউকে কিচ্ছু জানতে দেইনি।
আর এই যে গিফট টা এটা অর্নবের হাতে আঁকিয়েছি তোমার আমার আর আমাদের বাবুর ছবি।
আরিয়ানঃ সরি কলিজা আমি বুঝতে পারিনি।
চল আগে তোমাকে হসপিটালে নিয়ে যাই।
(কেঁদে কেঁদে)
আরাধ্যাঃ না আর সময় নেই আরিয়ান।
মন তো চাইছে ফিরে তাকাই তোমার দিকে, ভুলে যাই সব।
আর আবার নতুন করে শুরু করি।
কিন্তু না এখন থেকে যখন তুমি আমার চোখের দিকে তাকাবে, তোমার কষ্ট হবে।
জীবনের রাস্তায় একা একা হেটে যাওয়া,
কঠিন কাজ নয়।
কিন্তু কারো হাত ধরে অনেক টা পথ এগিয়ে যাওয়ার পর,
সেখান থেকে একা ফিরে আসা অনেক কঠিন।
তবু চলতে হয়, বাঁচতে হয়।
কাছে আসার জন্য কখনো কখনো দূরে যেতেই হয়।
এখন থেকে তুমি আমাকে আরো বেশি করে ভালোবাসবে আরিয়ান। বুঝবে ভুল টা তোমার ছিল। তোমার রাগও আজ আমার সাথে মরে যাবে।
ভীষণ ভালোবেসেছি তোমায়, ভিষণ ভালোবাসি, আর ভিষণ ভালোবাসবো।
আরিয়ান দেখলো আরাধ্যা আর নিশ্বাস নিচ্ছে না।
আরাধ্যায়ায়ায়ায়ায়া বলে এক চিৎকার করে উঠলো আরিয়ান। কিন্তু না অনেক দেরি হয়ে গেছে। আজ আর কিচ্ছু করার নেই আরিয়ানের।
.
৫ বছর পর….
আজও আরিয়ান বেঁচে আছে। তবে সুস্থ মস্তিষ্কে নয়।
আরাধ্যার মৃত্যুর সাথে সাথে আরিয়ানের জীবন থেমে যায়নি। তবে মন থেমে গেছিলো।
তার সাথে সাথে মস্তিষ্কও।
কারণ জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না,
তবে মন থেমে যায় মাঝে মাঝে।
প্রিয়জনের জন্যে।
………..সমাপ্ত……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here