সে কি জানে পর্ব ৭

#সে_কি_জানে🍁
#Writter_Ishanur_Tasmia[Mira]
#Part : { 07 }

বাগান জাতীয় কোনো জায়গায় আছি আমি আর রেয়ান।।চারপাশে ফুলের ঘ্রাণ ছঁড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।। বিরাট বড় গাছের নিচে বসে আছি আমি,,,আর আমার পাশেই বসে আছে রেয়ান।।সে বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছে।। হয়তো উত্তরের আশায়।।কিন্তু তা বুঝতে পেরেও কোনো কথা বলছি না আমি।। চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে আছি।।এবার কিছুটা অস্থির হয়েই রেয়ান জিজ্ঞেস করে……

—” মিরা,,,তুমি কি আমাকে তোমার অতীতটা বলবে না?? ”

—” কি ব্যাপার মিস্টার রেয়ান।। আজ প্রথম আমার নাম ডেকেছেন আপনি ”

—” না প্রথমবার না,,, ২বার।। ”

—” ও ”

—” কথা পেঁচিও না।।যা জানতে চাই তা তাড়াতাড়ি বলো।। নাহলে…. ”

তার কথা শেষ হওয়ার আগেই আমি বলতে শুরু করলাম…….

—” আপনাকে তো বলেছিলাম আমরা অনেক গরিব।।বাবা লালনপালন করতে পারতেন না আমার।।তাই ১৬ বছর বয়সেই বিয়ে করিয়ে দেন আমাকে।। যার সাথে আমার বিয়ে হয় বিয়ের আগ পর্যন্ত তার কোনো কিছু সম্পর্কেই জানতাম না আমি।। শুধু শুনেছিলাম সে অনেক বড়লোক।। আমাকে অনেক সুখে রাখবে।। আমিও মেনে নিলাম।।এছাড়া যে কোনো উপায় ছিল না আমার।।না খেয়ে থাকা থেকে তো বিয়েটা করে ফেলাই উত্তম মনে করেছিলাম।।যা কিছুই হোক না কেন?? ২মুঠো ভাত তো খেতে পারবো!! আপনি কালকে একটা কথা বলেছিলেন,,,হয়তো আমার স্বামী বুড়ো হবে অথবা তার নারীর নেশা আছে।। বিয়ের আগে আমার সেটাই মনে হয়েছিল।।নাহলে আমার মতো একটা গরিব মেয়েকে একজন বড়লোক ছেলে বিয়ে করবে কেন?? কিন্তু আমি ভুল ছিলাম,,,বিয়ের রাতে যখন তাকে দেখলাম,,তখন আমি পুরো অবাক!! একজন সুপুরুষ আমার সামনে বসে ছিল।।সত্যি বলতে এত সুন্দর পুরুষ আমি কখনও দেখি নি।।তখনই তার প্রেমে পরে গিয়েছিলাম আমি।।সে রাতে অনেক কথা বলি আমি তার সাথে।। কথায় কথায় জানতে পারি তার নাম শুভ।। সে নাকি আমাকে একটা পার্কে দেখেছিলো।।তখনই আমাকে পছন্দ হয় তার।।আর আমার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন।।

উনি অনেক ভালো ছিলেন ।।আমার অনেক খেয়াল রাখতেন।।শুভর পরিবার বলতে আমি আর তার ছোট বোন রিহাই ।।এছাড়া আর কেউই ছিল না।। ছোট বেলাই তার বাবা-মা মারা যান।।আত্বীয়-সজনরাও সব দেশের বাইরে থাকেন,,,,

শুভ চেয়েছিলেন আমি যেন কলেজে ভর্তি হই।।ভর্তি হয়ই-ও।।কিন্তু কিছুদিন পরেই জানতে পারি আমি প্রেগন্যান্ট।।জানেন যেদিন উনাকে এ কথা বলি তখন তিনি অনেক কেঁদে ছিলেন,,,এজন্য না যে আমাদের বেবি হবে।। কেঁদে ছিলেন কারন আমার কম বয়স।। এত কম বয়সে আমার বেবি হবে কিভাবে?? আমি কিভাবে পড়ালেখা করব।।অনেকবার চেয়েছিলেন বেবি টা নষ্ট করে ফেলতে।।আমি একটু বড় হই।।তখন বেবি নিবেন।।কিন্তু আমি মানা করি।।কেন যেন মনে হচ্ছিল বেবিটা আমার প্রয়োজন।। দেখুন না আসলেই ও আমার প্রয়োজন।।এখন তো ওকে আমার লাগে তাই না?? ওকে ছাঁড়া যে আমি বাঁচতে পারতাম না।।

যখন রিহান হয়।।তখন শুভর চেহারা দেখার মতো ছিল।।অনেক খুশি ছিলেন তিনি।।ভেবেছিলাম রিহান হওয়ার পর আমি আর পড়ালেখা করতে পারব না।। কিন্তু জানেন শুভ আমাকে পড়ালেখা করতে দিয়েছিল।।সারাটাদিন আমার সেবা করত।।বলতে গেলে আমার থেকে রিহানকে সেই বেশি দেখাশুনা করত।।তার সাথে আমার পরিবারকেও আগলে রেখেছিল।।বাবাকে একটা চাকরি দেন।।আমরা এখন যে বাসায় আছি।।ওইটাও শুভ বানিয়ে দিয়েছিল বাবাকে।।বেশ ভালোই চলছিল আমাদের।।কিন্ত……”

কথাটা বলেই একটু থেমে যাই।।কয়েকটা জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে আবার বলতে শুরু করি……

—” তখন আমি ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে মাত্র অনার্সে উঠেছিলাম।।বেশ ভালোই কাটছিলো আমাদের সংসার।।আনন্দের শেষ ছিল না।। কিন্তু হঠাৎ একদিন শুভর একটা জরুরি কাজ পড়ে যায়।। তাকে ইমার্জেন্সি আমেরিকা যেতে হবে।।সবার কাছে বিদায় নিয়ে সে ওইদিন রাতে চলে যায় আমেরিকা।।আমার স্পষ্ট মনে আছে,,, যাওয়ার আগে সে বলেছিলো আমেরিকা থেকে খুব জলদিই চলে আসবে আমাদের কাছে।। কিন্তু আসে নি জানেন।।তখন যে গেল এখন পর্যন্ত সে আর আমাদের কাছে ফিরে নি।।আমার দোষ কি ছিল আমি জানি না।। তবে ও আমেরিকা যাওয়ার ২০ দিন পর আমাদের কাছে একটা চিঠি আসে,,,সেখানে লিখা ছিল আমি যেন আমার বাবার বাড়ি চলে যাই।।ও নাকি চায় না আমি ওর বাড়িতে থাকি।।শুভ ওর বোন কেও নাকি বলেছে যেন আমি এ বাসায় না থাকতে পারি।। আমাকে যেন ঘাড় থাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয় ওদের বাড়ি থেকে।। তেমনটাই হয়।।তবে এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।। আমার বাবা যে ওদের কোম্পানিতে চাকরি করত।।সেখান থেকে তাকে ঘাড় থাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়।।বাবা অনেক বুড়ো ছিলেন।।এত কিছু একসাথে নিতে পারেন নি।। তাই হয়তো অসুস্থ হয়ে যান ।।”

কথাগুলো বলতে গিয়ে কথা বারবার আটকে যাচ্ছিল আমার।।তবুও নিজেকে সামলে নিলাম।। তারপর আবার বলতে লাগলাম…..

—-” এ-র ১ মাস পর আমাদের বাসায় ডিভোর্স লেটার আসে।।সাথে ৬লাখ টাকাও।। এসব দেখে বাবা আর মা ২জনেই আরও অসুস্থ হয়ে যান।।ভাগ্য ক্রমে মার তেমন কোনো বড় অসুখ হয় নি।।কিন্তু বাবার অবস্থা ভালো ছিল না।। এ ৬ লাখ টাকার ৫লাখ টাকাই বাবার চিকিৎসা করতে চলে যায়।।কিন্তু তবুও বাবা সুস্থ হন না।। চলে যান আমাদের ছেঁড়ে।। এ দুনিয়া ছেঁড়ে।।এরপর থেকে শুরু হয় লোকেদের কথা।।তারা কি বলত জানেন।।আমি নাকি এটারই যোগ্য ছিলাম।।সুখ জিনিসটা আমার কপালে নেই।। আমি নাকি আমার স্বামকে আগলে রাখতে পারি নি।।আমি একটা…..।। এসব কথা শুনে ইচ্ছা করত মরে যেতে।। কিন্তু আমার যদি কিছু হয় তাহলে আমার মা আর ছেলে কিভাবে থাকবে।। তাই নিজেকে শক্ত করে নিলাম।।এরপর থেকে লোকেদের কথায় কান দিতাম না।।নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি।।প্রতিদিন ছোট ছোট বাচ্চাদের টিউশনি করাতাম।।এ-র থেকে বেশি তো করতে পারব না।।আমি মাত্র ইন্টার পাশ।।কেই-বা আমাকে ভালো কোনো চাকরিতে নিবে।।কিন্তু তাতেও আমি দমে যাই নি।। যতটুকু পারতাম।।ততটুকু কাজ করতাম।।এভাবে কেটে যায় পুরো ১বছর ৫ মাস।।এখন সব কিছু মানিয়ে নিয়েছি আমি।।কিন্তু কেন যেন শুভর কথা মনে পড়লে নিজেকে আটকে রাখতে পারি না।।”

কথাগুলো বলে চুপ হয়ে যাই।। রেয়ানও চুপ করে আছে।।হঠাৎ সে আমার দিকে ফিরে বলে উঠে…..

—-” আচ্ছা আমার যতটুকু মনে হয় শুভ খারাপ ছিল।।তাহলে তুমি ওকে ভালো বলছিলে কেন?? ”

—-” কেমনে খারাপ বলুন তো।।এতকিছু করেছে সে আমার জন্য তাকে খারাপ কিভাবে বলি আমি।।হ্যাঁ ও যা করেছে তা ওর করা উচিত ছিল না।। আবার হয়তো আমারই কোনো দোষ ছিল।। ”

—” এইতো বাংলাদেশের ডিপিকা মাইয়া,,, যত কিছু হোক না কেন সব দোষ তাদেরই।।স্বামীরা যেন ধোঁয়া তুলসি পাতা ”

—-” মানে?? ”

—-” মানে…দোষ ওর ছিল তোমার না।। ও-ই খারাপ।। ”

—” হয়তো!! ”

—” আবার বলে হয়তো ”

আমি চুপ করে থাকলাম।।আসলেই রেয়ান ঠিক বলছে।। শুভ হয়তো খারাপই ছিল।। কিন্তু এতগুলো বছর থেকেছি তার সাথে।।কই কোনো বাজে দিক তো দেখি নি তার ।।তাহলে হুট করে এত পরিবর্তন কেন??এগুলো ভাবছি হঠাৎ রেয়ান আবার বলে উঠল….

–” আচ্ছা এত কম বয়সে বেবি হয়েছিল তোমার।।কোনো কি খারাপ ইফেক্ট পড়ে নি তোমার উপর??”

—” না,,,হয়তো আমার ভাগ্যে এমন কিছু ছিল না।। ”

—” হুম ”

—” আচ্ছা রেয়ান আপনি আমাকে কোথায় প্রথম দেখেছিলেন??”

কথাটা শুনে রেয়ান আমার দিকে একবার তাকালো।।পরক্ষনে উঠে দাঁড়ায় সে,,প্যান্টের পকেটে হাত রেখে বলে…..

—-” চলো তোমাকে বাসায় দিয়ে আসি।।পরে নাহলে অনেক দেড়ি হয়ে যাবে ”

উনার কথায় বেশ বুঝতে পারছি তিনি আমার কথা এড়িয়ে যাচ্ছেন।। কিন্তু কেন?? তাকে আবার জিজ্ঞেস করলাম…..

—” উত্তরটা কি দিবেন না আমাকে?? ”

—” সময় আসুক,,একদিন না একদিন পেয়ে যাবে ”

বলেই তিনি গাড়ির দিকে হাঁটা ধরলেন……

.
.
.
.

রাতে……🍁🍁

ড্রইংরুমে রিহানকে খাওয়াচ্ছি আমি।।সামনেই টিভি চলছে।। রিহান টিভির রিমোট দিয়ে বারবার চ্যানেল পাল্টাচ্ছে।। হঠাৎ সে আমাকে বলে উঠে…..

—-” মা,, মা দেখো।। তোমাকে আর বাবাকে টিভিতে দেখাচ্ছে ”

কথাটা শুনে আমি টিভির দিকে তাকালাম।।সেখানে তাকাতেই আমার চোখ বাইরে আসার উপক্রম।।টিভিতে আসলেই আমাকে আর রেয়ানকে দেখাচ্ছে।।আজকে সকালের ঘটনা।। যেখানে আমাকে রেয়ান কোলে করে গাড়িতে বসাচ্ছে।। ভিডিওটা ২বার দেখিয়ে টিভিতে একজন মহিলার অভির্ভাব ঘটে।।সে তার কাজ অনুযায়ী বলা শুরু করে….

” ব্রেকিং নিউজ,,, বাংলাদেশের টপ বিজনেস ম্যান আজিজ আহমেদের ছেলে রেয়ান আহমেদ একটা মেয়েকে কোলে করে গাড়িতে বসাচ্ছেন।।গোপন সুত্রে জানা গেছে যে মেয়েটি একজন ডিভোর্সি আর তার একটি ছেলেও আছে।। এখন কথা হচ্ছে রেয়ান আহমেদ এমন মেয়ের সাথে কেন?? কোনো কি সম্পর্ক আছে তাদের মাঝে।। তাছাড়া রেয়ান আহমেদ মেয়েটির এলাকারই একজন পুলিশও।।আসলেই কি আছে তাদের মাঝে?? আর কতদিন ধরে চলছে এসব।।আসুন জেনে নি…… ”

বলেই আরও কয়েকটি ভিডিও দেখায় তারা।।যেখানে আমার এলাকার কিছু লোকজন আছে,,, এ-ই লোকগুলো সেই লোক যারা আমাকে আগে কথা শুনাতো।। এখনও আমার নামে মদনাম করতে বাদ রাখে নি তারা,,, একজন তো আমাকে বেশ্যা বলছে।।আরও কত বাজে কথা!! এগুলো শুনে টপটপ করে চোখ থেকে পানি পড়ছে আমার।।এরমাঝে হঠাৎ দরজার কলিংবেল বেজে উঠে।।মা গিয়ে দরজা খুলতেই দেখে রেয়ান।।রেয়ানকে দেখতেই আমার রাগ উঠে যায়,,,সে কাছে আসতেই আমি তার কলার চেপে ধরি।।রাগি কন্ঠে বলি…..

—-” এখন তো খুশি আপনি?? দেখুন টিভিতে কি বলছে সবাই আমার নামে।। আমি নাকি বে,,,বেশ্যা।।সব আপনার জন্য হয়েছে সব।। ”

কথাটা বলতে বলতেই রেয়ানকে মারা শুরু করলাম।।তা দেখে রিহান মায়া ভরা কন্ঠে বলল….

—-” মা বাবাকে মারছো কেন??”

—-” কোনো বাবা না এ লোক তোর।। আর একবার যদি কোনো অচেনা লোককে বাবা ডাকিস তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না বলে দিলাম।।”

কথাটা ধমক দিয়েই বললাম আমি।।এ প্রথম রিহানকে ধমক দিয়েছি। ।পানিতে চোখ ভরে গেছে আমার ছেলেটার।।মায়া ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।। ওর চোখের পানি দেখে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।। কিন্তু তাও নিজেকে শক্ত রাখলাম।। মাকে উদ্দেশ্য করে বললাম….

—” মা রিহানকে নিয়ে যাও এখান থেকে ”

আমার কথা শুনে মা ততক্ষনাত রিহানকে নিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন।।এদিকে রিহানকে বকা দিতে দেখে রেয়ান আমাকে কিছুটা রাগি কন্ঠে বলল….

—-” আমার উপরের রাগ তুমি রিহানের উপর কেন ঝাঁড়ছো??”

—” কেন কষ্ট হচ্ছে বুঝি?? আচ্ছা আপনার কেন কষ্ট হচ্ছে?? কষ্ট তো আমার হওয়ার কথা তাই না?? তাহলে আপনার এত দরদ কেন ওর প্রতি?? আপনি আমাদের কেউ না,,,দূরে থাকবেন আমাদের কাছ থেকে।। ”

—” দেখো মিরা,,শান্ত হও ”

—-” কেন?? শান্ত হবো কেন আমি?? আমি কোনো শান্ত হচ্ছি না।। আমার কি মনে হয় জানেন,,,, টিভিতে যা দেখাচ্ছে সব আপনি ইচ্ছা করে করেছেন।।যাতে আমি আপনাকে বিয়ে করি তাই না।। আরে আপনি এত নিচ যে আমাকে বেশ্যা বানিয়ে দিলেন??”

কথাটা শুনতেই রেয়ান রেগে গেলো।।আমার হাত শক্ত করে ধরে জোড়ে চিল্লিয়ে “মিরা” বলে উঠল।।এতে আমি তার হাত এক ঝটকায় সড়িয়ে দিলাম।।তারপর বললাম….

—” ছুঁবেন না আপনি আমাকে,, আপনার মতো পশু,, জানোয়ার,,অমানুষের হাতের ছোঁয়ায় আমার ঘৃণা হয় বুঝেছেন।।ঘৃণা হয় আমার।।”

কথাটা শেষ হতেই রেয়ান আমার গাল চেপে ধরল।।দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে…..

—-” আমার ছোঁয়ায় ঘৃণা হয় না তোর।। এ ছোঁয়াই তোর সহ্য করতে হবে।। ”

বলেই রেয়ান আমাকে ছেঁড়ে দিলো।।আর এক মুহূর্তও সেখানে না দাঁড়িয়ে চলে যায় বাসা থেকে।। আর আমি,,আমি সেখানেই বসে পড়ি।।কেন যানি আজ চোখের পানি বাঁধা মানছে না!!

.
.
.
.

রাত প্রায় ৩টা।। হঠাৎ-ই আমার ঘুম ভেংগে যায়।।পানির পিপাসা লাগছে খুব।।তাই উঠে রান্না ঘরে গেলাম পানি খেতে।।হঠাৎ দরজা ধাক্কানোর আওয়াজ পাই,,,,দরজার কাছে যেতেই শুনতে পাই কেউ একজন মরুভূমি মরুভূমি বলে ডাকছে।। বুঝতে পারছি সেটা রেয়ান।।তাই সেখান থেকে চলে আসতে নিবো তখনই রেয়ান জোড়ে জোড়ে বলে উঠে….

—-” ওই মরুভূমি দরজা খুল।।নাহলে কিন্তু দরজা ভেংগে ফেলবো ”

বলেই জোড়ে জোড়ে দরজা ধাক্কানো শুরু করলো।। এমন ভাবে ধাক্কাচ্ছে যেন এখনই দরজা ভেংগে ফলবে।। যদি সত্যি সত্যি ভেংগে ফেলে দরজা?? ভেবেই দরজাটা খুললাম আমি।।দরজা খুলতেই দেখি রেয়ান কিছু একটার বোতল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঢুলছে।। আমাকে দরজা খুলতে দেখে সে একটা হাসি দিয়ে বলে……

—-” আই লাভ ইউ মরুভূমি ”

রেয়ান মুখ খুলতেই একটা বাঝে গন্ধ আসে আমার নাকে।। সাথে সাথে চোখ বড় বড় করে রেয়ানের দিকে তাকিয়ে বলি…..

—-” রেয়ান আপনি ড্রাংক?? ”

—-“ইয়াপ”

—-” ড্রাংক হয়ে এখানে কি জন্য এসেছেন।।তামাশা পেয়েছেন নাকি।।বের হোন আমার বাসা থেকে ”

—-” নোপ ”

—-” কি ইয়াপ,,,নোপ লাগিয়ে রেখেছেন।। যান এখান থেকে ”

কথাটা শুনে রেয়ান তেড়ে আসে আমার কাছে।। তারপর কি মনে করে বাসার দরজা লাগিয়ে দেয়।।তা দেখে আমি কিছুটা ভিত কন্ঠে বললাম….

—-” দরজা লাগাচ্ছেন কেন??”

সে আমার কথায় পাত্তা না দিয়ে।। তার হাতের বোতল আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে….

—” মদ খাবা মরুভূমি।।চলো দুজন একসাথে নেশা করি!! ”

.
.
.
.
#চলবে🍁🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here