স্নিগ্ধ_ছোঁয়া🌼🌼 পর্ব ২+৩

গল্পের নামঃ-#স্নিগ্ধ_ছোঁয়া🌼🌼
Writer:-||আইদা ইসলাম কনিকা||
পর্বঃ০২ + ০৩

আফিয়া বকতে বকতে তার ফ্রেন্ডদের কাছে চলে আসে।সবাই দেখে আফিয়া রেগেমেগে বম হয়ে আসছে,আর বকবক করছে কি জানি। পিংকি বলে

—-কিরে আফু আফা আন্নের কিতা হইছে? আফিয়া বলে

—-আমার দুইটা ভাগিনী হইছে,বুঝতে পারছিস মানে তোর দুইটা মেয়ে। দৃষ্টি বলে

—-কি হয়েছে এমন রেগে আছিস কেনো? আফিয়া বলে
—- আর বলিস না একটা এটিটিউড এর বাসের সাথে ধাক্কা লাগছে, আর নিচে পরে ব্যাথা পেয়েছি। দৃষ্টি বলে

—কেউ প্রেমে পরে,কেউ টেবিলে পড়ে,কেউ খাটে পড়ে,কেউ শুয়েশুয়ে পড়ে,আর তুই- পরছ ভেজালে, বাথরুমে পিছলা খাইয়া , প্লাজুর সাথে উষ্ঠা খাইয়া প, শুকনা রাস্তা ঠুস ঠাস পরছ,আর তুই মরলি না কেন? মরলে তোর ৪০শা খাইতে পারতাম। দৃষ্টির কথা শুনে, সুনালী আর পিংকি, হেসে দেয় আফিয়া বলে

—-কুদৃষ্টিরে তোকে আমার ভাইয়ার বউ বানাবো তারপর ইচ্ছে মতো খাটাবো। দৃষ্টি এক চোখ মেরে বলে

—-তোর কি মনে হয় আমি বসে বসে তোকে দেখব?তোর ভাইয়ের সাথে বিয়ে করে তোকে আগে বাসা থেকে বিদায় করব শাঁকচুন্নি। পিংকি বলে

—-হয়েছে হয়েছে, থাম এবার তোরা। চল এবার বাসায় যাওয়া যাক। আফিয়া বলে

—-আমি কিছু খাইনি আমি এখন খাবো তোরা চেয়ে দেখবি,আর দৃষ্টি তুই তোর কুদৃষ্টি আমার খাবার থেকে দূরে সরিয়ে রাখবি, নয়তো আবার আমার পেট ব্যথা করবে। দৃষ্টি ভেংচি দিয়ে আফিয়ার প্লেট থেকে পাস্তা নিয়ে খেতে শুরু করলো, আফিয়া প্রথম দিকে আপত্তি করলেও পরে আর কিছু বলেনা।

অপর দিকে

এরিশ রেগে আছে এতো ছোট একটা মেয়ে, হয়তো তার কাঁধ অব্দিও হবে না, কিন্তু চড়ে বসে উঠে তার মাথায়,কি ঝগড়াটে। একটা কথা মাটিতে পরতে দেয় না। আর কি কি বললো তাকে,এটিটিউড এর কিংডম,এনা কন্ডার তাল গাছ, ফ্রান্সের প্যারিস। তাও আবার তার ক্লাইন্ট দের সামনে। আর আফিয়ার রাগ সে ঢালছে অফিসের কর্মচারি তার পিএ আকাশদের ওপর। আর সবাই চুপচাপ মনে নিচ্ছে তা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ০৩ঃ৩০ নাগাত আফিয়া ওরা একে অপরকে বিদায় দিয়ে বাসায় চলে আসে যে যার মতো শুধু আফিয়া আর পিংকি আসে একসাথে। আফিয়াদের পরের বাসাটাতে সে থাকে। আফিয়া বাসায় ঢুকে দেখে সোফায় অধির বসে আছে,আর ফোনে কে যেনো করছে।অধির কাজের জন্য প্রায় বাসায় আসতে পারে না, অফিসটা কেই সে তার সব মেনে নিয়েছে আফিয়ার মতে। আফিয়া অধিরকে দেখে না দেখার ভাঙ করে চলে যেতে চাইলে আফিয়ার মা বলে

—-এই আফিয়া, অধির আসছে। আফিয়া বলে

—-আমি কোনো অধির, বধির কে চিনি না, তা উনি কে? অধির কে উদ্দেশ্য করে। অধির নিজের ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে বলে

—-আমি কে তাই না? আমাকে চিনিস না তুই? আফিয়া বলে

—-আমি আফিয়ার এত সময় নেই, যে সবার খুঁজ নিবো,হুহ মেহমান হয়ে আসছেন চা খেয়ে বিদায় হন। অধির গিয়ে আফিয়ার কান ধরে বলে

—-তুই আফিয়া না মাফিয়া, ডায়নি একটা এতো দিন তো বলছিলি ভাইয়া বাসায় কবে আসবি, আর আজ তুমি আমাকে চিনো না,কানটা হালকে মুচড়ে ধরে। আফিয়া বলে

—-ঐ হারামি,তোকে এক সপ্তাহ আগে আসতে বলছিলাম,বলেছিলি আসবি তাহলে আজ এক সপ্তাহ পর কোন দিক থেকে উদয় হয়েছিস বলিউডের নায়কদের মতো। অধির বলে

—-মাফিয়ার বাচ্চি, আফিয়া তার আম্মু কে বলে

—-আম্মাজান আপনার ছেলেকে ভালো হইয়া যাইতে কন, কইয়া দিলমা, আর কানটাও ছাড়তে কন, নয়তো খবর আচে কইয়া দিলাম। আফিয়া মুখে এমন কথা শুনে হাসছে তার আম্মু আর অধিরও। অধির হালকা হেসে আফিয়াকে ছেড়ে দিয়ে বলে

—-সরি আর হবে না, রাগ করিসন না লক্ষ্মী বোন আমার। আফিয়াও নিজের ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে, আর ভাই বোনের কাহিনি দেখছে তাদের মা, তারপর আফিয়ার আম্মু বলে

—-আফরা যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয় খাবি। আফিয়া বলে

—আম্মু আমিতো বলে গিয়েছিলাম আজ দৃষ্টির বার্থডে খেয়ে বাসায় ফিরব। আম্মু বলে

—-তাই বলে কিছুই খাবি না? আফিয়া ওপরে উঠতে উঠতে বলে

—-খাবোতো তোমার ছেলের মাথাটা খাবো,দাঁড়াও আসছি। অধির বলে

—নিচে আয় আগে,রাতে তোকে পড়াতে বসাবো আমি। আফিয়া বলে

—-দূর হয়ে যা, যেখান থেকে উদয় হয়েছিলি সেখানে চলে যা,তুই আমার ভাই না শত্রু লাগিস,তোর সাথে কথা নাই,হ্যালারি ধূমকেতু একটা ৭৬ বছর পর পর উদয় হয় লম্বা লেজ নিয়ে আর তুই আমাকে জ্বলাতে। বলেই নিজ রুমে চলে যায়, আর এইদিকে আফিয়ার কথা শুনে হাসছে অধির আর আফিয়ার আম্মু।

দৃষ্টি বাসায় যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে যায় কারণ জেম ঢাকার শহরের জেম একদম সুপার গ্লু এর মতো লাগলে আর সহজে ছাড়তে চায় না। দৃষ্টি বাসায় গিয়ে দেখে বাসা সম্পূর্ণ অন্ধকার কোনো সার্ভেন্টর ও আওয়াজ নাই তাই সে নিজের ফোনটা বের করে ফ্লাসলাইটা ওন করে দৃষ্টি ড্রয়িং রুমে লাইট টা অন করার সাথে সাথে সম্পূর্ণ অন্ধকার আলোর আলোতে মিলিয়ে যায়। দৃষ্টি দেখে বেস সুন্দর আর ফুল আর বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে ড্রয়িং রুমটা, তখনই পাশের রুম থেকে সবাই একসাথে এসে আফিয়াকে হ্যাপি বার্থডে বলে। তারপর কেক কাটে। এহসান বলে

—-মা টা আমার ধীরে ধীরে কত বড় হয়েগেলো, মনে তো হয় এইতো বছর দুয়েক আগেও সে পিচ্ছি দৃষ্টি ছিল। এরিশ হাসি দিয়ে বলে

—কিরে আসতে লেট হলো কেন? দৃষ্টি বলে

—-আমার বান্ধবী আফিয়া ওরা আজকে আমার বার্থডে সেলেব্রেট করছে তাই, সরি। আফিয়া নামটা শুনার সাথে সাথে এরিশ ভাবতে থাকে সকালের সেই ঝগড়াটে মেয়েটা নাতো? তখনই দৃষ্টি বলে

—-ভাইয়া আমার গিফট কই? এরিশ মুচকি হাসি দিয়ে বলে

—-কি চাই? দৃষ্টি দাঁত কেলিয়ে বলে

—-একটা আইফোন,স্বপ্ন আমার পূর্ণ করার দায়িত্ব তোমার। এরিশ বলে

—-হ্যা কিডনি দুইটাও তোর। ছেলের এমন কথা শুনে হেসে দেয় এহসান চৌধুরী, তখনই এরিশ এর আম্মুর ফোন বেজে ওঠে দেখে আদ্র,এতো বছরে এই প্রথম ফোন দিলো সে তার মার কাছে। এরিশের আম্মু খুশি হয়ে এহসান চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলে

—-দেখো বলেছিলাম না আমাদের ছেলে একদিন নিজ থেকেই ঠিকই আমাদের খবর নিবে। কিন্তু এই খুশি বেশি সময় রইলো না।ফোন ধরার পর আদ্র বলে

—-সরি ভুলে ফোন চলে গেছে,। বলার সাথে সাথে ফোনটা কেটে দেয় তা দেখে এরিশও রেগে যায়,দৃষ্টির মনটা খারাপ হয়ে যায় কারণ সে তো ভেবেছিল হয়তো আবার তাদের ফ্যামেলিটা এক হয়ে যাবে। এহসান চৌধুরী একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে

—-সে তোমার ছোট ছেলে এরিশ না, যে নিজের পরিবারকে নিয়ে ভাববে, সে ব্যস্ত তার জীবন নিয়ে। আমরাতো শুধু মাত্র তার নামের বাবা মা। আদ্রের মা বলে

—-এভাবে বলো না,আদ্রোতো আমাদেরই ছেলে। এহসান চৌধুরী বলে
—-হ্যা কিন্তু সে এখন মিথিলার হাসবেন্ড আগে আর আমাদের কাজ ছিল তাকে বড় করা সেটা আমরা করে দিয়েছি আমাদের কাজ শেষ এই ব্যাপারে আর কোনো কথা হবে না। বলেই চলে যায় দৃষ্টি কান্না করে এরিশকে জড়িয়ে ধরে। এহসানের এই একটা কথায় লুকিয়ে আছে অনেক অভিমান…।অভিমান করাটা কি জায়েজ না যেই মা-বাবা নিজে না খেয়ে বাচ্চাদের খাওয়ায়, কষ্ট কি সেটা বুঝতে দেয়না, সব সময় সব বিপদ থেকে আগলে রাখে আর সেই ছেলে মেয়ে যখন তাদের ছেড়ে চলে যায় তাদের কাছে মা বাবার কোনো মূল্যই থাকে না। দৃষ্টি মন খারাপ করে চলে যায় এরিশও তার মাকে জড়িয়ে ধরে বলে।

—-আম্মু তুমি একটু সোফায় বস,আমি তোমার কোলে মাথা রাখি, আর তুমি আমার মাথায় বিলি কেটে দাও আজ অনেক ধকল গিয়েছে। এরিশের মাও পরম যত্নে নিজের রত্নের মাথায় বিলি কাটতে লাগলো। আর এরিশ বলতে লাগলো আজ তার সাথে ঘটে যাওয়ার কাহিনী সেটা শুনে হেসে এরিশের আম্মু বলে

—-তোর জন্য এমন করা লংকা মেয়েই দরকার। এরিশ বলে

—-আম্মু আমি এমন মেয়েকে মরে গেলেও বিয়ে করবো না। ভাঙবে তবুও মচকাবে না। এরিশের আম্মু মুচকি হাসলো কারণ এই প্রথম তার ছেলে তার কাছে কোনো মেয়েকে নিয়ে কথা বললো, আর এরিশ বরবরই নিজের আম্মুর সাথে বেশ ফ্রি।

চলবে
যারা বলেছিল #স্নিগ্ধ_ছোঁয়া গল্পটা দিতে তাঁদেরই আজ কোনো সাড়াশব্দ নেই, কেনো??🥴🥴আর যারা গল্প পড়ে চুপিচুপি মন্তব্য না করে চলে যাও তাদের বলছি,বিয়ের পর ১২টা বাচ্চা হবে, ২টা ২টা ৪টা তোমাদের পা ধরে টানাটানি করবে,আরো ৪টা হাত ধরে আর ৪ কোলে উঠে বসে থাকবে,অভিশাপ দিলুম। 😒😒😒 ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে❤️❤️

গল্পের নামঃ- #স্নিগ্ধ_ছোঁয়া 🌼🌼
writer:-||আইদা ইসলাম কনিকা ||
পর্বঃ০৩

রাতের আধার এখনো বিরাজমান ভোরের আকাশে, এই হালকা অন্ধকারটা জানান দিচ্ছে সূর্য মামা এখন পূর্ব দিগন্তে উুকিঁ দেয়নি। ফজরের আজান দিয়েছে আরো মিনিট ৫ আগে, কিন্তু আফিয়া পরে পরে ঘুমাচ্ছে। তখনই অধির এসে আফিয়াকে ডাকতেলাগে

—-ঐ উঠ, নামাজ পরবি না, ঐ ফাজিল মাইয়া। আফিয়া আড়মোড়া হয়ে বলে

—-দেখ ঘুমাতে দে সারারাত ঘুমাইনি। অধির বলে

—-তো কি করেছিস মাফিয়া গিড়ি? তোকে কি সাধে মাফিয়া বলি, এখন জলদি উঠ,আফিয়ার বাচ্চি উঠতে বলছি আমি। আফিয়া অনেক ঘুম কাতার বারবারই ঘুম তার বেশ প্রিয়। আফিয়া উঠে। অধির কে কিছু না বলে ওজু করে আসে, আর নামাজ পড়ে নেয়।অধির আফিয়াকে বলে

—দেখ তোকে ছাড়া আমি জান্নাতে যেতে চাই না বুঝলি, এখন থেকে হিজাব আর ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়বি।

আফিয়া মুচকি হাসি দিয়ে হ্যা বলে। তারপর আফিয়া বসে ফোন নিয়ে। ফেসবুকে ঢুকে নিউসফিডে ঘুরতে লাগে। হঠাৎই এরিশের আইডি তার সামনে চলে আসে। দেখে তার ভাই অধিরও এড। তাতে সে ভাবে ভাইয়াতো বিজনেসম্যান সেটা স্বাভাবিক। আফিয়া এরিশের আইডিতে যায় দেখে সব অফিসিয়াল কাজের আপডেট + তার কিছু ছবি। আফিয়া কিছু না ভেবেই এককের পর এক একটা পিকে হাহা রিয়াক্ট দিতে থেকে। আর মনে মনে বেশ শান্তিও লাগছে। এরিশও নামাজ শেষে ফোনটা হাতে নিয়ে বসেছে আর ফেসবুকে লগিংইন করা মাত্রই টুংটাং আওয়াজে ভরে যাচ্ছে এটা প্রতিবারই হয়। নোটিফিকেশন দেখতে গিয়ে দেখে,কেউ তার পিকে হাহা রিয়াক্ট দিচ্ছে হাঠাৎই অন্য সব নোটিফিকেশনের জন্য আইডির নামটা আর সে দেখতে পায় না। আফিয়া দেখে বেশির ভাগ পিক গুলোই এরিশের অফিসিয়াল কাজের সময়ের তোলা। কিছু সময় পর ফোনটা রেখে সে দিব্যি নাচতে নাচতে চলে যায় ফ্রেশ হতে। আর এরিশ ও ফোনটা রেখে দেয় এইসব ব্যাপার নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যথা নাই।

আফিয়া ফ্রেশ হয়ে নিচে খেতে গেলো ৯টা নাগাত। একসাথে ব্রেকফাস্ট করে তারা বের হলো আফিয়া দাঁড়িয়ে আছে পিংকির জন্য। অধির বলেছিল সে তাকে ড্রপ করে দিবে কিন্তু আফিয়া তো উন্নত মানের ঘাড়ত্যাড়া (বিদ্রঃ আমার চাইতেও অনেক হাই লেভেলের ঘাড়ত্যাড়া) আফিয়া পিংকি কে আসতে দেখে বলে

—–ঐ ছ্যামড়ি আসতে এতো লেট হইলো কেন,রাস্তার ময়লা টুকাতে টুকাতে আসছিলি নাকি? পিংকি আফিয়ার কথা শুনে কিছু সময় অবাক ছিল তারপর নিজেকে শান্ত করে বলে

—হ্যা অনেক কিছুই তো পেলাম ভাবছিলাম তোর ব্রেনটা ও পাবো। আচ্ছা আল্লাহ যখন ব্রেন বিতরণ করছিল তুই কোথায় ছিলি। স্কুটির হেলমেট এগিয়ে দিতে দিতে। আফিয়া বলে

—-আমি তখন তোদের মতো ব্রেনের জন্য লাইনে না দাঁড়িয়ে, আকাশের হাওয়াই মিঠাই খাচ্ছিলাম। হেলমেট টা পড়ে স্কুটিতে বসতে বসতে। পিংকি আবাক হয়ে বলে
—মানে। আফিয়া বলে
—-আকাশের সাদা মেঘ গুলো খাচ্ছিলাম। পিংকি জানে সে আফিয়ার সাথে কোথায় পারবে না। তাই তারা বকবক করতে করতে ভার্সিটি চলে আসে। দেখে দৃষ্টি আর সুনালী দাঁড়িয়ে আছে । আফিয়া গিয়ে বলে

—-কি খবর জানু তোমাদের? দৃষ্টি বলে
—এতোটা সময়তো ভালোই ছিলাম, কিন্তু মনে হয়না বেশি সময় থাকতে পারবো, আজকে যে ইংরেজি ক্লাস আছে আমিতো ভুলেই গিয়েছিলাম।আফিয়া বলে

—-আরে দোস্ত প্যারা নাই চিল।জিজু লাগে,ঐ পিংকি হারামি তোর উডবি যদি কিছু বলছে আমাদের, উট বানিয়ে সাহারা মরুভূমিতে পাঠামু।৷ পিংকি বলে

—-পাঠা আর আমাকে মুক্তি দে ভালোলাগে না, মন চায় জান টা নিয়া ফালাই ঐখচ্চর টার, জ্বালায় দেয়। ধ্যাত। আফিয়া বলে
—দোস্ত কেমন জ্বালায় একটু বলতি যদি। পিংকি বলে
—থাপ্পড়ামু, চল এখন। নয়তো আবার লেট হলে রাতে ফোন দিয়ে ৩ ঘন্টা লেকচার মারবো । আফিয়া বলে

—-কিন্তু আরিয়ান স্যার কিন্তু বেশ ভালো। পিংকি বলে

—তোরা যাবি কিনা বল? সবাই বলে

—-হ্যা। দৃষ্টি বলে
—-আজ ভাইয়া আমাকে নিতে আসবে, বুঝলি তো চেচামেচি করবি না কেউ ছুটির পর। আফিয়া বলে

—-তোর ভাই কোন রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট?,,,যে চুপ থাকা লাগবে তার সামনে চিল্লাপাল্লা করা যাবে না। আর আজকে ছুটির পর ফুচকা খাবো আর তুইও খাবি। কথা বলতে বলতে ক্লাসে চলে যায়। কিছু সময় পর পিংকি বলে
—-দোস্ত ঘুম আসতাছে। তার ৩০ মিনিট পর দৃষ্টি বলে

—-দোস্ত কয়টা বাজে দেখনা, সুনালী বলে

—-দোস্ত খুদা লাগছে খামু। আফিয়া বলে
—–স্যারকে বলে তোদের জন্য বালিশ, নতুন ঘড়ি আর চাইনিজ খাবারের ব্যবস্থা করছি। পিংকি বলে

—-আরে কি যে বলিস আমরাতো মজা করছিলাম, তাই না? ওরাও মাথা দোলায় , কারণ এর আগেও আফিয়া এমন করে তাদের ক্লাস রুমের বাইরে পাঠিয়েছে । তারপর ভার্সিটি শেষে। সবাই গেটের কাছে আসলো, আর ফুচকাওয়ালা কে উদ্দেশ্য করে বললো

—-কাকা ৫ প্লেট ফুচকা দাও,২টায় অনেক ঝাল দিবা । ফুচকাওয়ালা কাকা বলে

—আইচ্ছা মা একটু খাড়াও তোমরা। দৃষ্টি বলে

—আমাকে আগে দিবা, আমি আবার একটু পরই চলে যাবো। আফিয়া সেটা মানতে নারাজ তার কথা সবাই একসাথে খাবে। পিংকি বলে

—আমরা তো চারজন কিন্তু পাঁচ প্লেট বলললি কেন? আফিয়া বলে

—২ প্লেট আমার। তারপর ফুচকা বানানো হলে তারা খেতে লাগে। আফিয়ার চোখ মুখ ঝালে লাল হয়েগেছে, মনে হচ্ছে কান দিয়ে গরম ধোঁয়া বেরহবে। তখনই দৃষ্টিকে কেউ পিছন থেকে বলে

—-দৃষ্টি কি হচ্ছে এইসব, তোকে না বাইরের খাবার খেতে নিষেধ করেছি। কন্ঠটা আফিয়ার বেশ পরিচিত মনে হয় তাই সে সামনে তাকিয়ে দেখে আর যাকে দেখে তাকে দেখেই তার মেজজা খারাপ হয়ে যায়। এরিশ যখন দেখে আফিয়াকে সে আরকেক দফা অবাক হয়, এর মানে এই ঝগড়াটে মেয়েটাই দৃষ্টির ফ্রেন্ড, এরিশ আফিয়াকে দেখে বলে

—-হেই ইউ ইস্টুপিট তুমি?তুমি এখানে কি কর? আফিয়ার তো একে ঝাল লাগছে তার উপর এরিশের প্রতি আগের সেই রাগ। আফিয়া বলে

—-আকাশে ডানা মেলে উড়ছি। বলেই হাত দুটা পাখির ডানার মতো ঝাপটাতে লাগল আর গাইতে লাগলো আমি ডানা কাটা সরি আমি ডানা ওয়ালা পরি আমি ডানাওয়ালা পরি । পিংকি ওরা অনেক কষ্টে হাসিটা চেপে ধরে আছে, সাথে দৃষ্টিও এই প্রথম কেউ এরিশের সাথে এভাবে কথা বলছে। এরিশ বলে

—-হুয়াট ননসেন্স, কি বলছো এইসব তুমি কোথায় উড়ছো? আফিয়া বলে

—-যেহেতু দেখতেই পারছেন, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফুচকা খাচ্ছি তাহলে জিজ্ঞেস কেন করছেন?দৃষ্ট তোর এই এটিটিউডের কিংডম কে ডক্টর দেখা।দিন কানা। দৃষ্টি ওদের থামিয়ে দিয়ে বলে

—এই এই থাম তোরা তোরা চিনিস একে অপরকে? আফিয়া বলে

—- সেদিন রেস্টুরেন্টে এই এটিটিউড এর কিংডম, মানে তোর এই এনাকন্ডার মতো লম্বা ভাইরাসের মানে তোর ভাইয়ার সাথেই ধাক্কা লাগে, আর পরে আমাকে নিচে ফেলে দেয়। এরিশ বলে

—-ইইউ ফুল। আফিয়া বলে

—-নো, আমি অনেক কুল বলেই ভেংচি কেটে। দৃষ্টির তো বেশ লাগছে ওদের ঝগড়া। এরিশ বলে

—-এই ইস্টুপিট টাকি তোর বেস্টফ্রেন্ড? দৃষ্টি মাথা দোলায় যার মানে হ্যা। এরিশ বলে

—-তুই ওকে সহ্য কিভাবে করিস, ঝগড়াটে মেয়ে একটা। তোমাকে তো আমি।আফিয়া বলে

—-দেখুন ফ্রান্সের প্যারিস কাকু আমার একটা সুন্দর নাম আছে, আফিয়া আফরা সেই নামে ডাকবেন নয়তো আমিও আপনার অনেক সুন্দর সুন্দর নাম দিতে বাধ্য হবো।আর আমাকে আপনি কিছু করতে পারবেন না প্যারিস কাকু। এরিশ বলে

—তুমি আফিয়া না মাফিয়া,আর আমি তোমার কোন জন্মেরর কাকু লাগি? {এরিশ বলতে যেখানে মেয়েরা পাগল সেখানে আফিয়া তাকে কাকু বলছে মাইন্ডে তো লাগবেই} আফিয়া বলে

—-আমি মাফিয়া হলে আপনাকে গুলি করে মাথার খুলি উড়িয়ে দিতাম। আপনি আমাকে ইস্টুপিট ডাকলে আমিও আপনাকে কাকু ডাকবে। এরিশ কিছু বলতে যাবে তখনই দৃষ্টি ওদের থামিয়ে দিয়ে বলে

—-তোদের ঝগড়া মনে হয়না আর শেষ হবে, যাই হোক অন্য কোনোদিন আবার ঝগড়া করিস। আফিয়া বলে

—-ঝগড়া আমি না তোর ভাইরাস নামক ভাই শুরু করছে।

আফিয়া ফুচকা ওয়ালা চাচাকে টাকা ধরিয়ে দিয়ে দৃষ্টিকে বিদায় দিয়ে যখন এরিশের পাশ কাটিয়ে চলে যায় তখন এরিশের হাত আফিয়ার হাতের সাথে হালা ছোঁয়া লাগে, সেটা আফিয়া খেয়াল না করলেও এরিশ ঠিকই করে খেয়াল করে আফিয়ার হাতের #স্নিগ্ধ_ছোঁয়া। আর এরিশও দৃষ্টিকে নিয়ে বেরিয়ে পরে তাদের বাসার উদ্দেশ্যে। আফিয়া বাসায় গিয়ে তার বাবা আর ভাইয়া গার্ডেনে বসে বসে গল্প করছে দৌড়ে গিয়ে সে তার বাবার গলা জড়িয়ে ধরে বলে।

—জানো তোমাকে কত মিস করেছি আমি।

চলবে
একটা কমেন্ট দেখলাম সেখানে লেখা গল্পের সাথে গল্পের নামের কোনো মিল নেই,আরে বাবা গল্পতো সবেই শুরু, তো তোমরা কি চাও গল্প শুরু হওয়ার আগেই শেষ করে দেই? এতে আমার কোনো আপত্তি নেই, এক পর্বের মধ্যেই ওদের বিয়ে দিয়ে ওদের বাচ্চাদের বাচ্চার বিয়ে নিয়ে আসতে পারবো। 🙂🙂
❤️❤️ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে ❤️❤️ আর জানাতে ভুলোনা তোমাদের পছন্দের ক্যারেক্টার কে।আল্লাহ হফেজ, কালকে আবার নতুন পর্বে দেখা ততোক্ষণ টাটা বায় বায় টেক কেয়ার।আর বড় করা সম্ভব না কারণ তোমরা জানো হাত আমার বেন্ডেজ দিয়ে পেচানো🌼🌼

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here