স্নিগ্ধ_ছোঁয়া🌼🌼 শেষ পর্ব

গল্পের নামঃ-#স্নিগ্ধ_ছোঁয়া ❤️❤️
Writer:- ||আইদা ইসলাম কনিকা||
পর্বঃ০৫ শেষ

আফিয়া সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখে তার মা কান্না করছে, তারপর সে জানতে পারে তার মামা অসুস্থ আর তাই এখন তার মাকে যেতে হবে, আর তার বাবাও সেই সকালে বেড়িয়েছেন আর সমানের সপ্তাহে আফিয়ার পরীক্ষা। তাই আফিয়াকেও সাথে করে নিয়ে যেতে পারছে না। আফিয়া বরাবরই একা থাকতে ভয় পায়। আফিয়া বলে

—-আম্মু তুমি যাও আমি বরং পিংকিদের বাসায় থেকে যাবো। আফিয়ার আম্মু বলে

—-পিংকির মাকে একটু আগে সকালেই দেখলাম, তাদের বাসায় মেহমান আসবে পিংকির শশুড় বাড়ী থেকে। আচ্ছা থাক আমি যাবো। না আফিয়া তার মাকে বলে

—-আরে আম্মু তুমি যাওতো আমি দৃষ্টির সাথে থাকবো ওকে আসতে বলবো। প্যারা নাই। আফিয়ার আম্মু কিছুতেই রাজি হয় না শেষে আফিয়া দৃষ্টিকে কল লাগায়। আর তার বলে

—-দোস্ত তুই আমার সাথে আমার বাসায় থাকতে পারবি? দৃষ্টি বলে

—-কেনো কি হয়েছে? তখনই আফিয়ার আম্মু ফোনটা নিয়ে দৃষ্টিকে সব বলে।দৃষ্টি বলে

*—-আরে,আন্টি টেনশন নেওয়ার কি আছে, আফিয়া নাহয় কয়েকদিন আমাদের বাসায় থাকলো,আম্মু আব্বুও ওকে দেখতে চেয়েছে। আফিয়ার আম্মু শেষে রাজি হয়। আফিয়া তো পরছে ভেজালে কারণ তার এখন সেই এটিটিউড এর কিংডম এর বাসায় থাকতে হবে। কিন্তু কিছু করার নেই,জামা কাপড় পেক করে মাকে বিদায় দিয়ে গাড়িতে উঠে বসে আফিয়া আজ গাড়ি করেই যাবে সে। ভার্সিটিতে যেয়ে দেখে দৃশ্যমান, সুনালী দাঁড়িয়ে আছে আফিয়া গাড়ি থেকে নেমে ড্রাইভার কে বললো

—-তার কাপড়ের ব্যাগটা যেন দৃষ্টির গাড়িতে দিয়ে দেয়। সেও কথা মতো কাজ করে আর গাড়ি নিয়ে চলে যায়। দৃষ্টি বলে

—-দোস্ত মা-বাবা তোর জন্য অপেক্ষা করছে, তুই কখন যাবি। অনেক দিন পর সেই ইন্টারে থাকতে তোর সাথে একবার দেখা হয়েছিল। কিন্তু আফিয়া ভাবছে তার জন্য যমরাজও অপেক্ষা করছে একই বাসায়। যাই হোক ভার্সিটি শেষ করে তারা দৃষ্টিদের বাসার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর আফিয়ার মনের ভয়টা দ্বিগুণ হচ্ছে। বাসায় গিয়ে সে দৃষ্টির মা বাবাক্র সাথে জমিয়ে গল্প করে এরিশ এখনো অফিসে বাসায় ফেরেনি। তাই আফিয়া চুপিচুপি ফ্রেশ হয়ে গোসল করে খেয়ে নেয়। আর দৃষ্টির সাথে শুয়ে শুয়ে পাবজি খেলছে। আফিয়া বলছে

—-ঐ হারামি রিভাইব দে কইলাম। দৃষ্টি বলে

—-দাঁড়া দিচ্ছি আগে এনেমি ত্আর কিছু বলতে যাবে তখনই পাটসে হেডসোট খেয়ে দৃষ্টি বক্স হয়ে যায়। আফিয়া দৃষ্টির দিকে এমন ভাবে তাকিয়েছে মনে হয় গিলে খাবে। দৃষ্টি বোকা হাসি দিয়ে বলে

—সরি। আর উঠে দেয় দৌড় রুমের দরজা খুলে। আফিয়া দেয় পিছন পিছন দৌড়। আর দৃষ্টিও অন্য দিকে তাকিয়ে দৌড়াচ্ছে অসাবধানতার কারণে সিড়ি দিয়ে নামার সময় দৃষ্টি পিছলে পড়ে যায়। নিচে আর এরিশ চিৎকার দিয়ে বলে

—-দৃষ্টি…. এরিশ মাত্রই ফিরলো অফিস থেকে এসে দেখে আফিয়া আর দৃষ্টি দৌড়া দৌড়ি করছে আর দৃষ্টি নিচে নামার সময় এমনটা হয়। এরিশের চিৎকার শুনে দৃষ্টির মা বাবাও চলে আসে দেখে দৃষ্টি নিচে পরে গিয়ে মাথা ফেটে সেন্সলেস হয়েগেছে। এরিশ গিয়ে দৃষ্টিকে ধরে বলে

—-এই এই দৃষ্টি উঠ। আফিয়া ও জলদি নিচে নামে আর সেও দৃষ্টিকে ডাকতে লাগে। এরিশের মা তো কা্না জুড়ে দিয়েছে আর এরিশের বাবা ফোন দিয়েছে ডক্টর এর কাছে। এরিশ উঠে গিয়ে আফিয়াকে দাঁড় করিয়ে একটা চড় লাগিয়ে দিয়ে আর বলে

—-তোমার জন্য আজ দৃষ্টির এই অবস্থা, ইউ ব্লাডি ফুল এতটুকও সেন্স নেই। এরিশের বাবা ধমকের শুরু বলে

—-এরিশ কি হচ্ছে এখানে আফিয়ার কি দোষ, এখনই সরি বলো তুমি ওকে। এরিশ বলে

—-এই থার্ড ক্লাস মেয়ের জন্য আমার বোনের এই অবস্থা ওর যদি কিছু হয় তাহলে ওকে আমি জানে মেরে ফেলবো। এরিশের বাবা এখন অনেক জোরে ধমক দিয়ে বলে

—-এরিশ তুমি কাকে থার্ড ক্লাস বলছো? জানো ওকে তোমার আইডোল মি,আব্দুল আজিম আহমেদ আর অধির আহমেদ এর বোন। তোমকে নিয়ে আমার গর্ব হত কিন্তু তুমিও আজ আদ্রের পথে হাটছো। আফিয়া এক কোনে দাড়িয়ে চোখের জল ফেলছে। আর এরিশ আশা করেনি আফিয়া আজিম আহমেদ স্যার এর মেয়ে। এরিশ বরাবরই আজিমকে নিজের আইডোল মেনেছে তার মত সৎ থাকতে চেয়েছে। এরিশ দৃষ্টিকে কুলে তুলে নিল আর দৃষ্টির রুমে নিয়ে যায়। তার কিছু সময় পরই ডক্টর আসে চেকাপ করে দৃষ্টিকে আর বলে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু আফিয়ার অনেক খারাপ লাগছে আজ তার বাচ্চামোর জন্যই তার ব্রেস্টফ্রেন্ডের এই অবস্থা। আফিয়া দৃষ্টির আম্মুর কাছে গিয়ে কান্না করে দেয় আর বলে

—আন্টি বিশ্বাস কর আমি ইচ্ছে করে করেনি। দৃষ্টির আম্মু বলে

—-এখানে তোর কোনো দোষ নেই, দৃষ্টির যখন সেন্স আসে তখন সে নিজের মায়ের মুখ থেকে সবটা শুনে এরিশকে বলে

—-ভাইয়া এখানে আফিয়ার কোনো দোষ ছিলো না, আর আমি সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় এমনটা হয়। আফিয়া তারপরের দিন সকালে উঠে নিজের ব্যাগ নিয়ে নামছে। এরিশ সহ সবাই নিচে নাশতা করছিল
দৃষ্টির আম্মু আফিয়াকে দেখে বলে

—কিরে মা তুই ব্যাগ নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস?আফিয়া বলে

—-আন্টি বিকেলে আম্মু চলে আসবে তাই আমি চলে যাই। সবাই ভালো করেই বুঝতে পারছে আফিয়া শাক দওয়া মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। ঐদিনের পর আর আফিয়া বাচ্চামো করেনা আর দৃষ্টির থেকেও অনেক দূরে থাকে আজ ওদের লাস্ট পরীক্ষা আর আফিয়ার পরীক্ষাও বেশ ভালো হয়েছে। কিছু সময় পর দৃষ্টি ও বের হলো। দেখে এরিশ দাঁড়িয়ে আছে। আফিয়া দৃষ্টি ওদের বায় দিয়ে এরিশের পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে এরিশ বলে

—-হেই ইউ ইস্টুপিট। এরিশ ভেবেছিল আফিয়া রেগে যাবে কিন্তু না সে মাথা নিচু করে এসে দাঁড়ায় আর বলে

—জ্বি ভাইয়া বলুন। আফিয়ার এমন পরিবর্তন এরিশ মানতে পারছে না। এভাবে কেটে যায় আর ৩ মাস এই তিন মাসে এরিশের সাথে অনেক দেখা হয়েছে আফিয়ার আর এরিশ বৃথা চেষ্টা করছে আফিয়াকে রাগানোর কিন্তু আফিয়া চুপচাপই ছিল। আফিয়ার পরিবারও আফিয়ার পরিবর্তন দেখে অবাক। আফিয়াকে এরিশ অনেক কল ও দিয়েছে রং নম্বর ভেবে সে ফোন তুলে নেই। আর আফিয়াও অনেক মিস করছে তার আর এরিশের ঝগড়া গুলো কিন্তু সেই অপমানের কথা সে ভুলেনি।বিকেল টাইম তখনই অধির আসে আর বলে

—আফিয়া তোর সাথে কেউ দেখা করতে এসেছে। আফিয়া বলে

—-কে? অধির বলে

—-তোর হাসবেন্ড, শশুড় শাশুড়ী ননদ সবাই। আফিয়া বলে

—-ভাইয়া দেখ দুষ্টামি করিস না। তখনই এরিশ এসে বলে

—-অধির তুমি যাও আমি উনাকে দেখছি। অধির চলে যায়। এরিশ গিয়ে দাড়ায় আফিয়ার পাশে। আফিয়া বলে

—-এই সবের মানে কি? এরিশ বলে

—-খুব সোজা তোমাকে আমার বউ বানিয়ে নিয়ে যাবো তারপর দিন রাত ঝগড়া করবো। আফিয়া বলে

—-পাগল নাকি আপনি। এরিশ বলে

—-নিজে বানিয়ে আবার নিজেই বলছো। প্রথম যখন তোমাকে দেখি থমকে গিয়েছিলাম আমি,থমকে গিয়েছিল আমার পৃথিবী, তোমর হাতের সেই প্রথম #স্নিগ্ধ_ছোঁয়া আমায় তোমার প্রতি দূর্বল করে দিয়েছিল। তোমার এই পরিবর্তন আমি মানতে পারছি না আফিয়া।প্রতিবার তোমার সাথে ঝগড়া আর এর পর এবারও আমি তোমাকে চাই৷। তোমার সেই স্নিগ্ধের ছোঁয়া মন মাতানো ভালোবাসায় নিজেকে রঙাতে চাই । মান অভিমান আর অভিযোগ ভুলে নিবে কি আমায় কাছে টেনে? দিবে কি একটা সুযোগ তোমার #স্নিগ্ধ_ছোঁয়া এর পরশ পেতে? আফিয়াও তো এরিশকে,মনে মনে লাইক করে তারপরও একটু ভাব নিয়ে বলে

—–ভেবে দেখবো। এরিশ বলে

—–ভপবে দেখবো তাই না, যদি না বলছি এই ছাদ থেকে নিচে ফেলে দিবো। আফিয়া বলে

—-ভূত হয়ে আপনার ঘার মটকাবো। এরিশ বলে

—-আমার এই আফিয়াটাকেই চাই। ভালোবাসি। আফিয়া বলে।

—-ও মাগো টুরু লাভ। এরিশ বলে

—- হ্যা, টুরু লাভ।

তার কিছু বছর পর এরিশ আর আফিয়ার বিয়ে হয়ে যায় কিন্তু সে আদ্রের মতো নিজের মা-বাবাকে একা করে যায়নি কোথাও। আর আদ্রের সাথে এখন এরিশও যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। দৃষ্টি আর অধির এর আকাদ হয়েগেছে তারাও বিয়ে করে নিবে 🤍🤍🤍

———–সমাপ্ত———

জানি এত একটা ভালো হয়নি তাও,কমেন্ট করে জানাতে ভুলোনা কেমন হয়েছে ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে। রিচেক করারা সময় হয়নি। ভালো থাকো সবাই। কাল থেকে দেখা হচ্ছে নতুন কোন গল্পে। আল্লাহ হাফেজ
আর সাইলেন্ট রিডার্স তোমরাও একটু সাড়া দাও🤍🤍

1 COMMENT

  1. Ei golpo ta sotti khub sundor ar dustu misti jhograr modhye je ei dujoner prem.. and ei story tar last er dikta ar ektu kichu add korte hoto .. r ektu explain korle valo hoto .. but tar por o golpota valo legeche .. love from India. 🙂🙂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here