স্নিগ্ধ_ছোঁয়া🌼🌼 পর্ব ৪

গল্পের নামঃ-#স্নিগ্ধ_ছোঁয়া ❤️❤️
Writer:|| আইদা ইসলাম কনিকা ||
পর্বঃ-০৪

আফিয়া তার বাবার সাথে কথা বলছে, তখনই অধির বলে
—-মাফিয়ার বাচ্চি যা আগে ফ্রেশ হয়ে আয়,বাবা কোথাও চলে যাবে না। আফিয়া অসহায় ভাব নিয়ে তার বাবার দিকে তাকিয়ে বলে।
—-বাবা তোমার ছেলেকে ভালো হয়ে যেতে বলো, ভালো হতে টাকা লাগেনা আর লাগলে ২০টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে ওকে তাও ভালো হয়ে যেতে বলো।কত দিন পর তোমাকে পেলাম, আর তুমি আমাকে আদর কর দেখে ওর হিংসে হয়, বুঝি বুঝি।
আফিয়ার কথা শুনে তার বাবার অনেক হাসি পায়, সে তার ওয়ালেট বের করে সেখানে খুঁজে অধির কে উদ্দেশ্য করে বলে

—-বিশ টাকায় ভালো হয়ে যাবি তো? অধির বলে

—বাবা তুমিও ওর কথার সাথে তালমিলাচ্ছো,ভাবা যায় এগুলা? আমি তো শিহরিত। আফিয়া একটা ভেংচি কেটে বলে

—-তো ভলো হচ্ছিস না কেন? অধির বলে

—-আমি তো ভালানা, ভালোলইয়াই থাইকো,আমি গেলুম বাপু। অধির উঠে গেলে আফিয়া বলে

—-বাবা তোমার ছেলেকে বিজনেস ম্যান না বানিয়ে যদি অভিনেতা বানিয়ে দিতা তাহলে আজ কতো ভালো হতো। অধির বলে

—আমাকে নিয়ে তের ভাবতে হবে না নিজেকে নিয়ে ভাব নয়তো কোনো রিক্সাওয়ালার সাথে তোকে বিয়ে দিয়ে দিবো। আফিয়া অধির এর কথা শুনে গান ধরলো

—-ভাইয়া ও ভাইয়ারে তুই অপরাধীরে, তোর এতো কিউট বোনরে তুই কিভাবে বিয়ে দিবিরে। আমাকে বিয়ের দেয়ার অধিকার দিলেকে,ভাইয়া তুই বড় অপরাধী তোর সাথে কথা নাইরে। আফিয়ার বাবা হাত তালি দিয়ে বলে

—-বাহ বাহ মামুনি তুমি গানও গাইতে পারো। আফিয়া ভাবনিয়ে বলে

—-আবার জিগায় 😎। অধির বলে

—-তোর যে সামনের সপ্তাহে পরীক্ষা তোর তো কোনো টেনশনই আমি দেখছি না, তো কি করব । আফিয়া বলে

— ১ সপ্তাহ মানে ৭ দিন, আর ১ দিনে ২৪ ঘন্টা । সুতরাং ২৪×৭=১৬৮ ঘন্টা আমরা জানি ৬০ মিনিটে
এক ঘান্টা তো ১৬৮×৬০=১০,০৮০ মিনিট আবার, ১০,০৮০×৬০= ৬০৪,৮০০ সেকেন্ড। বুঝলি এখনো অনেক সময়। অধির তো হা হয়ে তাকিয়ে আছে, কিভাবে সম্ভব? তখনই আফিয়ার আম্মু আসে দেখে আফিয়া চলে এসেছে এবং সে ফ্রেশ না হয়েই গল্প করতে বসে গেছে, আফিয়ার আম্মু গিয়ে আমি আফিয়ার কানে ধরে দাঁড় করায় আর বলে

—-তোকে না বলছি,আগে ফ্রেশ হবি ভার্সিটি থেকে আসার পর। পরে সব কাজ, কথা কানে যায়না তোর? আফিয়া বলে

—-আহহহহহহ্ আম্মু, লাগছে। তুমি আর তোমার ছেলে মিলে আমার কান ছিড়ে ফেলবে। তোমাদের আমার কানের সাথে এতো কিসের শত্রুতা ? আফিয়ার আম্মু বলে

—-তুই আদেও আমার মেয়ে? আফিয়ার কানটা ছেড়ে দিয়ে। আফিয়া বলে

—-নাহ আমারও তাই মনে হয়, বাবা এই আশিয়া খাতুন কি আমার শৎ মা নাকি, যে আমাকে এতো বকে, মানে কি বুঝতে চাচ্ছি। আফিয়ার আম্মু বলে

—-তবে রে। আফিয়া তো দৌড় আফিয়ার আম্মু অধির আর আফিয়ার বাবাকে বলে

—-তোমাদের আদরে আদরে এমন হয়েছে, কখন কি বলতে হয় ভেবে বলে না মুখে যা আসে বলে দেয়। তোমাদের জন্য কিছু বলতেও পারি না। অধির এসে তার মা কে জড়িয়ে ধরে বলে

—-আম্মু ছাড়াতো ও এভাবেই ঠিক আছে, ও চুপচাপ থাকলে আমার ভালো লাগেনা। অধিরের মাও মুচকি হাসলো সত্যি আফিয়াই পুরো বাড়ি মাথায় করে রাখে।

আফিয়া নিজের রুমে গিয়ে বেগটা রেখে দৌড় দেয় ওয়াশরুমের দিকে লম্বা শাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে আসে সে, চুল দিয়ে টুপটুপ পানি পরছে, আর সে DDlJ মুভির গান ছেড়ে তোয়ালে পড়ে ডান্স করছে

—-meri khabo main jo aye…. Ake cher jaye হাঠাৎই আফিয়া থেমে বলে,

—-আমার স্বপ্নে তো ভূত,আসে কখনো গুরু তারা করছে কখনো দেখি ১০ তালা থেকে পরে যাচ্ছি ধ্যাত। এই সব গান আমার জন্য না। যাই জলদি নিচে যাই নয়তো আমার আম্মাজান আবার শুরু হয়ে যাবে একুশের সংবাদ নিয়ে। বলেই সে তৈরি হয়ে নিচে গেলো দেখে ডাইনিং টেবিলে বসে সবাই তার জন্য অপেক্ষা করছে। আফিয়া গিয়ে চেয়ার টেনে বসে পরলো তার বাবার পাশে। আফিয়ার আম্মু আর একটা সার্ভেন্ট খাবার সার্ভ করে থাকতে। আফিয়া তার আম্মুকে বলে

—– আম্মাজান আপনি বসবেন না,। আফিয়ার আম্মু বলে

—-তোরা খা। আফিয়া বলে,

—জানিতো আমাদের এই ঘাস পাতা খাওয়াবা পরে নিজে, খাবা পোলাও রোস্ট জানি জানি । আফিয়া কথাটা ইচ্ছে করে বলে যেন তার আম্মও তাদের সাথে খেতে বসে। আফিয়ার বাবা বলে

—-তুমিও বস। অধির বলে

—-আম্মু তুমিও বস, আর তুই চুপচাপ খা কথা কম বল। আফিয়ার আম্মুও বসলো তারা একসাথে লান্ঞ্চ করে নিলো। কিছুসময় পর যখন রোদ্দুরটা কমে যায় আর আফিয়া যায় বাগানে। দোলনায় বসে বসে কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনছিল, আর ফেসবুকিং করছিল। তখনই অধির জলদি এসে আফিয়াকে জড়িয়ে ধরে আর বলে

—-লক্ষ্মী বোন ভালো থাকিস, একটা আর্জেন্ট মিটিং চলে এসেছে তাই দার্জিলিং যেতে হবে। ১ সপ্তাহ পর ফিরব। উমমমমাহ। বলেই চলে যায় গাড়ি নিয়ে চলে যায় আফিয়ার মনটাও খারাপ হয়ে যায়। অধির তো এখন তাদের সময়ও দেয়না। সে একটা লম্বা শ্বাস ফেলে, আর কালকে সকালে তার বাবাও চলে যাবে সেটা ভাবে আরো মন খারাপ করে ফেলে সে। যাইহোক কালকে থেকে আবার সে আর তার মা একা থাকবে। রাতের বেলা অধির আফিয়াকে কল দেয় কিন্তু আফিয়া ইচ্ছে করেই ধরেনা। আফিয়ার এখন ইচ্ছে নেই আর কথা বলার। সে তার আম্মুর কাছে গিয়ে দেখে সে কাজ করছে তাই সে রুমে এসে কল দেয় দৃষ্টিকে। অনেকটা সময় পার হাওয়ার পরই ওপাশ থেকে ফোন রিসিভ করে। আর আফিয়া বলে

—–ঐ ফোন ধরতে লেট হইলো কেন। কই মরছিলি? ওপাশ থেকে চুপ। আফিয়া বলে

—-কথা বলিসনা কেন, বোবা হয়ে গেলি? নাকি তোর ঐ এটিটিউড এর ভাইরাস নামক ভাইয়ের মতো এটিটিউড কুইন হয়ে গিলো?ঐ কোথা বলছ না কেন। ঐপাশ থেকে বলে

—-ইউ ইস্টুপিট। আফিয়া ফোনের ওপাশের কন্ঠ শুনে চমকে যায়, এটা তো অনেকটা এরিশের কন্ঠের মতো। আফিয়া বলে

—–কে? এরিশ বলে

—–এতোটা সময় যাকে এটিটিউড এর ভাইরাস বলছিলে সে। আফিয়া বলে

—–ওহহহহহ প্যারিস কাকু আপনি আগে বলবেন তো? এরিশ বলে

—–আমাকে কাকু বলবানা বলে দিলাম। আফিয়া বলে তো
—-তাহলে আপনি আমাকে ইস্টুপিট ইস্টুপি বলেন কেনো? এরিশ বলে

—-যে যেটা তাকে সেটাই বলা উচিত। আফিয়া বলে তো আপানারও একটা নিউ নেম দেওয়া উচিত।
কি দেওয়া যায়? উমমমম সাদা ভাল্লুক ঠিক আছে। এরিশ বলে

—–ইউ রাবিস, আফিয়া বলে

—–আমি রাবিস হলে আপনি কেটফিশ, দৃষ্টি কোথায় ওকে ফোন দিন কথা আছে। এরিশ বলে

—-দিবো না আমি,। আফিয়া বলে

—ঐ মিয়া দেখুন আমার, আপনার সাথে এমন ফাউল পেঁচাল পারার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা নেই সো প্লিজ দৃষ্টিকে ফোন দিন। এরিশ বলে

—–কি মুখের ভাষা, কি বলছো এই সব? আফিয়া বলে

—-বাংলা ইংরেজি মিলিয়ে বলছি হইছে। ফোন দিন দৃষ্টিকে। দৃষ্টি তখন রুমে আসে দেখে এরিশ তার ফোনে কারো সাথে কথা বলছে, এরিশ দৃষ্টিকে দেখে বলে
—–নে তোর তাড়ছিড়া বান্ধবী কল দিয়েছে মাথা গরম করে দিয়েছে। আফিয়া ফোনের ওপাশ থেকে বলে

—–মাথা কেটে ফ্রিজে রেখে দিন ঠান্ডা হয়ে গেলে, সুপার গ্লু দিয়ে লাগিয়ে নিয়েন। এরিশ বলে

—-ইউ ফুল। আফিয়া বলে

—-আমি অনেক কুল আপনি ফুল, ফুলের নানা কাকা দাদা সব এখন দৃষ্টিকে ফোন দিন, নয়তো হিরো আলমের গান শুনাবো।

এরিশ দৃষ্টির হাতে ফোন দিয়ে বেরিয়ে গেলো। কিছু সময় আগে দৃষ্টি নিজের ফোনটা রেখে নিচে যায় পানি আনতে, আর তখনই আফিয়া কল দেয় আর সেখান দিয়ে যাচ্ছিল এরিশ, দৃষ্টির ফোনটাকে কান্না করতে দেখে সেটা তুলে দেখে মিস কথার রানি কল দিয়েছে সে রিসিভ করে আর তারপর তো আপনারা জানেনই। দৃষ্টি ফোন হাতে নিয়ে বলে

—-হ্যালো। আফিয়া বলে

—–ঐ হারামি ফোন কই রাখোছ ফোন দেই তোরে ধরে তোর ভাইরাস নামক ভাইয়ে। দৃষ্টি হাহাহা করে হাসি দিয়ে বলে

—-তোর পারিসও বটে। আফিয়া বলে

—-আমি না প্যারিস কাকু পারে। দৃষ্টি বলে

—-কি পারে? আফিয়া বলে

—-প্যারিস কাকু কথায় কথায় ইস্টুপিট বলতে পারে।ঐ আন্টিকি উনার জন্মের পর মুখে মুধুর বদলে নিম পাতার রস দিয়েছিল নাকি?

—-তুই যাকে কাকু বলিস তার জন্য মেয়েরা পাগল। আফিয়া বলে

—-তো ঐগুলাকে পাবান পাঠানো দরকার, আর সাথে তোর ভাইরাস নামক ভাইয়কে ও। দাঁড়া কালকে পুলিশের কাছে যায় জিডি করমু ফ্রান্সের প্যারিস কাকু মানে তোর ভাইয় মেয়েদের পাগল বানায় এর জন্য । দৃষ্টি হাসতেই আছে তারপর বলে

—-তুই না পাগল হয়ে যাস। আফিয়া বলে

—-পাগল হলে আমি হবো না তোর ভাইয়া হবে। দৃষ্টি বলে

—–ইম্পসিবল। আফিয়া বলে

—-ইম্পসিবল কে পসিবল করাই আমার উফফফ অনন্ত জলিল এর কাজ আমার না সো তোর ভাইয়ার পেচাল বাদদে।আয় অন্য পেচাল পারি। তারপর দুই বান্ধবী ইচ্ছে মতো গল্প করে। তারপর রাতে খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পরে, সকালে উঠে আফিয়া দেখে

চলবে….

অক্সিজেনর এর অভাবে শত শত ভারতীয় নাগরিক প্রাণ হারাচ্ছে, থেমে গেছে একটা বিশাল আবাদি, থমকে গেছে ভারতের মানুষের জীবন যাত্রা, চারিদকে হাহাকার আর আপনজন হারানোর কান্না। এতো কিছু হওয়ার পরও বাংলাদেশের কিছু মানুষ যাচ্ছে ঈদের সপিং করতে, আচ্ছা বিশ্বের সবচেরে বড় বড় দেশ গুলো যখন করোনা প্রতিরোধ করতে অক্ষম সেখানে আমার মতে বাংলাদেশের কথা বলাটা বোকামি ছাড়া কিছু হবে না। একবার আমাদের প্রতিবেশি দেশটার দিকে তাকালেই বুঝা যায়। অক্সিজেনর অভাবে প্রাণ হারাচ্ছে দিন ২০জন করে। চিতা আর কবর দেওয়ার জন্য জয়াগার অভাব, এত বড় বিশাল আবাদি আজ নীরহ। থেমে গেছে অনেক পরিবারের রোজগার, একবার চিন্তা করে দেখুন যে মানুষ গুলো দিন এনে দিন খেতো তাদের অবস্থা, করোনার কারণে অনেকে হারিয়েছে অনেক আপনজন, সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলছি, ঘরে থাকুন মাস্ক ব্যবহার করুন আর প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে না বেরহন। হয়তো বেশি সময় লাগবেনা ভারতের মতো বাংলাদেশর অবস্থা হতে। ভালো থাকুক সবাই,আর দোয়া করি খুব জলদি পৃথিবী তার আগের পর্যায়ে ফিরে আসুক। আল্লাহ হাফেজ ❤️❤️❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here