স্বপ্নময়_ভালোবাসা ❤পর্ব ২৫+শেষ

স্বপ্নময় ভালোবাসা
রোকসানা আক্তার
পর্ব-২৫

মানুষ দুই মুহূর্তে শত চেষ্টা করলেও চোখের পাতা এক করতে পারে না।যখন সে তার সবথেকে কাঙ্খিত কিছু হাতে পেয়ে যায়, আবার যখন সে তার চিরশত্রুর পতন দেখতে পায়।তখন এই দুটো মুহূর্ত তারজন্যে এত বেশিই আনন্দের হয় যা সে নিজের মাঝে ধারণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে!ঠিক আমারও আজ তাই হয়েছে।অনেকটা আনন্দের মতন।যদিও খালামণির বিপদ সংকেতটা আকাশের মুখে শোনা তারপরও মনের কোণে একটা শান্তি শান্তি বোধ হচ্ছে!এটিই দেখার জন্যে যেন এতদিন অপেক্ষা ছিলাম!রাতে এর ঢের খুশির তোড়ে একছিটেও ঘুম হয়নি!পরে শেষরাতে অনেক কষ্টে চোখের পাতা এক করি।ঘুম থেকে জাগতে জাগতে অনেকটা দেরী হয়ে যায়।আর হ্যাঁ আরেকটা কথা আমার প্রেগন্যান্টবস্থা এখন ছ’মাস শেষ হয়ে সাত মাসে পা রেখেছে।তাই অফিস থেকে গত পাঁচদিন আগে টানা ছ’মাসের ছুটি কেঁটেছি।তাছাড়া,ছুটি নিলেও কিছু কিছু আউটপুট কাজ তা এখন অনলাইনেই সেড়ে ফেলবো ভাবছি।

ঘুম থেকে জেগে দেখি আকাশ হাসপাতালে চলে গেছে।ব্রেকফাস্টটা হয়তো নিজ হাতেই করে নিয়েই খেয়ে চলে গেছে!এ কাজটা ও শুধু আজকে নয়,রোজই করে!সেই প্রথম থেকে।যবে থেকে তারসাথে আমার বিয়ে হয়েছে।আমার ঘুমে ডিস্টার্ব ফিল হবে ভেবে ও কোনোদিন আমাকে ঘুম থেকে জাগায় নি।মাঝে মাঝে নিজেই খুব কেঁদে দিই আকাশের এহেন কান্ডে!এমন মানুষ আজও পৃথিবীতে আছে? তা নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করি কিন্তু কোনো উত্তর মেলেনি।

তারপর হাটি হাটি পায়ে বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে নিয়ে আয়নার সামনে দাড়াই।বিম্রতা চোখে নিজের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে তারপর অধোমুখে একটা মুঁচকি হাসি দিয়ে ফেলি। কিছু ভালোলাগা,ভালোবাসা, আবেশ মুহূর্তে আমার মন ছুঁয়ে যায়।তারপর পেঁটে আলতো হাত বুলাতে বুলাতে নিজে নিজেকেই বলতে থাকি-এই বেবী,তোমার আব্বুটা একদম পঁচা!খুবই পঁচা!জানো?আমাকে একটুও আদর দেয়না।সারাক্ষণ শুধু তোমার কথাই ভাবে।বাসায় আসলে সর্বপ্রথম পেঁট বরাবর মাথাটা নিয়ে তোমাকেই চুমু এঁটে দেয়।আমাকে একটাও দেয় না!খুব রাগ হয়,খুব!তুমি যখন আসবে তখন তোমার বাবাকে আমার হয়ে আচ্ছামত বকবে।ঠিক আছে?শোন বাবু?তোমার মাম্মাটকে এখন কে যেন ডাকছে।পরে এসে তোমার সাথে কথা বলবো,হ্যাঁ।আমাদের আবার কথা হবে,বায়!

রুম থেকে বেরিয়ে আমি অবাক!আমার শাশুড়ী মা,আফিয়া এবং আসাফ মিষ্টি,দই,মাছ,ফ্রুটস নিয়ে হাজির।আমি তড়িৎ হেঁটে যেয়ে মাকে জড়িয়ে ধরি।বললাম,

“আরেহ মা,আপনারা হঠাৎ!আসার আগে আমাকে একটি বার কল করে বলবেন না?”
“আকাশকে কল করে কালরাত বলেছি সানা।”
” মা আপনি যে আসবেন আকাশ ত এ ব্যাপারে কিছুই বলে নি।”
“আচ্ছা, বলেনি বেশ করেছে।এখনতো আসলাম।”
বলেই হেসে দেন।তারপর আবার বলেন,
“তা শুনো?আমি কিন্তু এসেছি আমার বউমাকে দেখতে।”
“আমি খুব খুশি হয়েছি মা আপনি যে এসছেন।আমি আকাশকে কত্তদিন জিজ্ঞেস করলাম মা কবে আসবে কবে আসবে!সে শুধু আশাই দিয়ে রাখলো আমাকে।”
“আকাশের দোষ নাই।আকাশ আমাকে অনেক বারই বলেছে।কিন্তু শুনলেই ত আফিয়ার পরসু পরিক্ষা শেষ হলো।তারউপর আবার আসাফের দুইমাস পর পরিক্ষা শুরু হবে।মারে সংসারের কত্ত ভেঁজাল একটা সামলালে আরেকটা সামলাতে কষ্ট হয়ে যায়।তাই এবার মোটামুটি সব ভেঁজাল শেষ করে এসেছি।তা যেটা বলতাম..মা এতদিন তোমার সমস্যা হয়নি ত কাজ করতে?”
“নাহ মা,সমস্যা হয়নি।”

“চিন্তাই ছিলাম অনেক।যাক এবার ত আমি আসলাম।আর শুনো পরে সবকথা বলবো।আগে একটু রেস্ট নিই। খুব ক্লান্তি লাগছে।”
“আচ্ছা মা আপনি সোফায় গিয়ে বসুন।আমি সবকিছু ঠিকঠাক করছি।”

বলেই শ্যামা আপাকে ডাক দিয়ে মার আনা জিনিসপত্র গুলো কিচেনে নিয়ে যাই।তারপর রান্নায় হাত লাগাই।আফিয়াও আসে রান্নায় কাজে হ্যাল্প করতে আসে।এটা নিয়ে প্রচন্ড নিষেধ করা সত্ত্বেও মেয়েটা আমাকে ধামাচাপা দিয়ে চুপ করিয়ে রাখে।
“এ সময় বেশি চালাক চালাক হতে যেও না ত!এই সময় তোমার সুস্থ থাকা দরকার!তুমি অসুস্থ হলে বেবী কিছু হবে!আর আমার ভাইপো/ভাইঝির যদি কিছু হয় তাহলে আমি তোমাকে গুম করে দিব,হু!”

কি তেঁজি মেয়ে!পারলাম বা তার সাথে কথা বলে উঠতে।

এভাবে আমাদের হাসি-আনন্দের মুহূর্তগুলো কাঁটতে থাকে।একদিন দুপুরে আকাশ খুব অস্থির মনে বাসা ফিরে।এসেই হাতে থাকা ব্যাগটা টি-টেবিলের উপর রেখে সোফায় ধপ্পাস করে বসে পড়ে।অস্থির অস্থির মনে মাথার চুলগুলোয় হাত বুলিয়ে আমাকে ডাকতে থাকে।আমি তখন রুমে জামাকাপড় গোছাচ্ছিলাম।ওর ডাকার শব্দ শুনে ডাইনিং এ আসি।তখন মা নামাজে ছিল।আফিয়া গোসলে ছিল।আর আসাফ বোধহয় শুয়েছিল!
আমি আকাশের কাছে যেতেই আকায় উঠে দাঁড়ায়।বললো,

“সানা আজ তোমার খালামণি এসেছে।অনেক কথা হলো।উনি সাংসারিক ভোগান্তিতে আছেন।ছেলেকে বিয়ে করিয়ে বউকে নিয়ে সন্তুষ্ট নয়!তোমার সাথে একটু দেখা করবে এবং অনেক নাকি কথা আছে তা তোমাকে বলবে। কিন্তু লজ্জায় আসতে পারছে না!”

“তো আমি কি করবো?”
“সানা তোমার খালামণিকে আগে যেমন ফুরফুরে দেখলাম এখন তার একবিন্দুও নাই।মুখটা কেমন শীর্ণ, মুখে হাসি নেই।বলতে গেলে অনেকটা অসহায় অসহায় দেখাচ্ছে!”
“তা তোমার মায়া হলো বুঝি?”
“মায়া নয়।বয়সে বড়। আর কি খারাপ লাগলো একটু ।”
“একটা হিংস্র পশুর জন্যেও মায়া করা যায়।হিংস্র মানুষের জন্যে নয়!মনে রাখবে।
বলেই খানিক থামি।আকাশ চুপ করে থাকে।কিছু বলেনি।তারপর আমি আবার বললাম,
“তা খেতে আসো।ভাত বেড়ে দিচ্ছি।”

“মা খেয়েছে?”
“হুম।সবার খাওয়া শেষ।তুমি বাকি।”
বলেই ডাইনিং এ চলে আসি।আকাশ খেতে আসে।
খাওয়া শেষ করে আকাশ আমার একদম কাছে এসে বাহুতে আলতোভাবে হাত রাখে একটা উষ্ণ নিঃশ্বাস ছাড়ে।তারপর নরম কন্ঠে বললো,

“সানা,আমি জানি তোমার খালামণি খুব অন্যায় করেছে যেটা কখনো ক্ষমার যোগ্য নয়।কিন্তু আমি ভাবছি আমাদের সন্তানের কথা!তুমি এখন খুবই রিস্কি একটা সময় পার করছো।আরো একটা বিপদ সংকেত সামনে আমাদের সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার সময়।এসময়টা উচিত আমাদের অনেক সেম্পেথি থাকা।আমি একেবারে বলছি না তুমি তোমার খালামণিকে ক্ষমা করে দাও।আমি বলছি অন্তত তুমি উনার সাথে একটি বার দেখা করো যেহেতু উনি খুব করে চাইছেন।পরে ক্ষমা করো কি করো না ওটা তোমার সিদ্ধান্ত!অন্তত আমি আমার সন্তানের কথা ভেবে বলেছি!”

“পৃথিবীতে মানুষ যদি সব অপরাধীর অপরাধকে ক্ষমা করে দিত তাহলে অপরাধী আরো অপরাধ করার সুযোগ পেত আর দুর্বল মনের মানুষগুলো আরো বেশি আঘাত পেত!”
“আমিতো বলছি না ক্ষমা করার কথা!”
“ক্ষমা করা আর দেখা করা ওই একই কথা!দেখা করতে যাওয়া মানেই ক্ষমা করা!ওকে?”
“তোমার সাথে পেরে উঠা মুশকিল!”
আমি থ চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি।

পরপর আরো দুইদিন কেঁটে যায়।ছোট্ট খালামণি আবারো নাকি আকাশের চেম্বারে আসে।এসেই আকুতি মিনতি ভরা গলায় আবারো কাঁদেকুটে একাকার!লাভ হয়নি।আকাশ আমার কথায় অটুট ছিল,কাজেই পাত্তা পায়নি!

এভাবে দেখতে দেখতে ন’মাসের দরজায় টোকা পড়ে।এরমাঝে আমার শাশুড়ি কুমিল্লায় যেয়ে আসাফের পরিক্ষাটা দিই য়ে আনে।আর আফিয়া ত আমার সাথেই ছিল।বলতে গেলে লাস্ট মাস গুলোতে আমাকে কেউই এক মুহূর্তের জন্যে একা ছাড়ে নি।ডেলিভারি সময়টা খুবই কাছে।এইতো আর পাঁচদিন ফেরুলে ডেলিভারি টাইম।অথবা তার আগেও হতে পারে।ফিক্সড সময় নেই।কিন্তু আমার মনে কেমন যেন একটা ভয় ভয় কাজ করছে!এ প্রথম মা হতে যাচ্ছি।শুনলাম গর্ভপাতের সময় প্রতিটি মার জীবন খুবই রিস্কিতে থাকে।এমনো হয়েছে অনেকে সন্তান জম্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুও হয়েছে!

ভেবেই ফস করে একটা নিঃশ্বাস ছাড়ি!!অস্থিরতার নিঃশ্বাস! বিষণ্ণ মনে আতঙ্কতার নিঃশ্বাস!!তারপর বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়ে বেলকনিতে যাই। দুপুরের ঝাঁ ঝাঁ রোদটা মুহূর্তে চোখমুখে টুংটাং করে উঠে।গা জ্বলে যাওয়া অবস্থা। বেশিক্ষণ আর দাড়িয়ে থাকতে পারি নি তাই পেছনে ঘুরে দাঁড়াতেই মুহূর্তের মধ্যে আমার চোখমুখে একটা বিস্ময় রেখা ছুঁয়ে যায়।চরম বিস্ময়!

“সানা রে,সানা…..!”মায়া মাখানো গলা!আকাশ দেয়নি আমার এড্রেস!অবশেষে এই মহিলাই আমার এড্রেসটা টুকে নিয়ে এই বাসায় চলে এলো!শেষ পর্যন্ত প্রতারকের ছায়ার সামনে পড়তেই হলো!

” আমি অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি!খুব বাঁজে বিহেভ করেছি তোদের সাথে।তোর সংসার ভেঙ্গেছি।বোনকে শেষ করে দিছি!পৃথিবীর সবথেকে জঘন্য কাজগুলো করেছি!!আমি পাপী!অনেক বড় পাপী!আজ দেখ আজ আমার সব শেষ হয়ে গেল!আমার ছেলেটার জীবনটা তছনছ হয়ে গেল!জেলের চারদেয়ালে বসে বসে আমার ছেলেটা খুব কাঁদছে! আমি আর সহ্য করতে পারতেছি না সানা!”

বলেই ভাঙ্গা গলায় উনি জোর আর্তনাদ করে উঠেন
উনার কান্নার আওয়াজ শুনে পাশের থেকে আমার শাশুড়ী, আফিয়া,আসাফ এবং শ্যামা আপা আমার রুমে চলে আসে!আমি চুপ হয়ে আগের মতোই দাঁড়িয়ে আছিথ।একফোঁড়ও কথা বলিনি!

“এই সানা?সানারে?জিজ্ঞেস করবি না কেন জেলে গেল আমার ছেলে?”
চুপ থাকি!বললেন,
“কথা বলবি না তাই ত!তুই না বললেও আমি বলবো! তোর সাথে সংসার ভাঙ্গার পর জেনি নামের একটা মেয়েকে আমার ছেলেকে বিয়ে করাই!ছেলে যদিও প্রথম প্রথম এতে আপত্তি করেছিল কিন্তু ডিভোর্স পেপারে তোর সই দেখে ছেলে নিমিষে রাজি হয়ে যায়।আর বিয়ের পর ওই জেনি মেয়েটার আসল রূপ দেখতে পাই। পরে বুঝতে পারলাম ও আসলে আমার ছেলেকে ভালোবেসে বিয়ে করে নি।বিয়ে করেছে আমাদের সম্পত্তির লোভে!ছেলে বাসায় ফিরলে ঠোঁটের কোণায় দলিলের কথাই লেগে থাকতো।তুরাবের নামে যা যা ওয়ারিশ আছে সব ওর নামে করে দিত।কিন্তু আমার ছেলে এর প্রতিপক্ষ হয়!প্রতিপক্ষ হওয়ার কারণে শুরু হয় তুরাবের উপর মানসিক টর্চার!কারণে-অকারণে আমার ছেলের দোষ ধরা শুরু করে।আমার দোষ ধরা শুরু করে!ভুল করিনি তারপরও বলে ভুল করেছি।এ নিয়ে আশপাশের মানুষদের জড়ো করে।উনাদের সামনে কাঁদে।মিথ্য বাহানা করে নিজেই ব্লাউজ ছিঁড়ে বলে আমরা ওকে মেরেছি।ওর হাত পুঁড়ে দিয়েছি।ওর কথা সবাই বিশ্বাস করে ফেলে । সবাই আমাদেরই খারাপ ভাবতে শুরু করে!!
এভাবে চলতে চলতে আমার ছেলেটা তিতে হয়ে ওঠে!ধৈর্য্যের সীমা হারিয়ে ফেলে।একদিন সত্যি সত্যিই আমার ছেলে রাগে-ক্ষোভে ওর গাঁয়ে হাত তোলে! সেদিন ওর সে কী চিৎকার!চিৎকার দিতে দিতে আবারো আশপাশের সবাইকে জড়ো করে ফেলে!সবাই বলে আমার ছেলের নামে এবার নারী নির্যাতন কেইস করতে!ও তাই করতে উঠে লেগে যায়!অতঃপর নারী নির্যাতন কেইস করেই ফেলে।আইন তা মঞ্জুর করে।আমার ছেলেকে জেলে নিয়ে যায়।আজ সাতদিন হলো তুরাব জেলে!এখন বুঝলাম আমি নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলাম!খুব অনুতপ্ত আমি।মারে মা তোর সাথে করা জঘন্য অন্যায়ের শাস্তি পাচ্ছি!মনকে মানাতে পারছি না।কত চেষ্টা করলাম তোর সাথে যোগাযোগ করতে কিন্তু সাহস হয়নি সরাসরি যোগাযোগ করতে!পরে উপায় আর না পেয়ে আকাশের চেম্বারে আসি।
আকাশও আমায় রিক্ত হাতে ফিরিয়ে দেয়।অতঃপর আজ অনেক কষ্টে আকাশের এসিস্ট্যান্ট থেকে তোর এড্রেসটা টুকে নিই। জানলাম আকাশের সাথে তোর বিয়েও হলো।সব লজ্জা,অভিমান বিসর্জন দিয়ে তোর কাছে ছুটে চলে এলাম!করবি ক্ষমা আমাকে?”

এবার আমি মুখ খুলি।খুব অভিমান গলায় বললাম,
“দোষ আপনার একার নয়!যার সাথে বিয়ে হলো ওই মানুষটাকেই চিনতে পারলাম না!”
“তুরাবের একটাই সমস্যা দিনশেষে ও আমার কথাই রাখে।আর আজ ছেলেটার আমার জীবন….!”

আবারো হাউমাউ কেঁদে উঠেন।আমার শাশুড়ী খালামণির কাছে এসে উনার কাঁধে শক্ত করে চেপে ধরেন।স্বান্তনা গলায় বলেন,
“আপা প্লিজ?মন খারাপ করবেন না।এটা হয়তো কপালে ছিল!”
“কপালে নয়!এটা আমার পাপের ফল!সানা আমাকে ক্ষমা করে দে।এই দু’হাত জোড় করে বলছি!”

আমি দু’কদম পিছু হটে দাড়াই।বললাম,
“হাত নামান!ক্ষমা শব্দটা আমার মুখে কখনো উদিত হবে কিনা জানি না।তবে আপনার ছেলেকে জেল থেকে ছাড়ার ব্যবস্থা করবো।কারণ,আমি এতটা অকৃতজ্ঞ নই আপনারা এইভাবে হোক অথবা ওইভাবে হোক একসময় আমাদের সংসারটা চালিয়েছিলেন!”
স্বপ্নময় ভালোবাসা
রোকসানা আক্তার
সমাপ্তি পর্ব

চড়াই উতরাই মানুষের জীবন।এই জীবনে কত সুখদুঃখের খেলা।জীবনে কিছু মুহূর্ত আসে মানুষকে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে ফেলতে আবার কিছু মুহূর্ত আসে ওই মুহূর্তগুলোয় থেকে মানুষকে অসীম শক্তিমান করতে। যখন সে খুব শক্তিমান হয়ে যায় তখন তার জীবনের সফলতার মুখগুলো একের পর এক দরজায় কড়া নাড়তে থাকে।দুঃখের মুহূর্ত গুলোর মুহূর্তে মুছে যে সুখের ছাঁয়ায় মুড়িয়ে যায়।পৃথিবীটা আজ খুব শান্ত সেই সুখানুভূতিতে !সে অধীর ব্যাকুলতায় বসে আছে নতুন শিশুর আগমনী বার্তায় ।চারদিক এক চাঞ্চল্যকর চাঞ্চল্যকর অনুভূতি। ভ্যাপসা কড়া গরমের সূর্যটাও আজ স্নিগ্ধ,মৃদু রোদ ছড়িয়ে পূবকাশে বসে আছে।গাছ,পাতা,ফুল,পাখি সব এক জায়গায় স্থবির ।

সবার অপেক্ষা,আকাঙ্খার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পৃথিবীকে অবাক করে দিয়ে জন্ম হলো এক নবজাতকের!নবজাতকের কান্নার শব্দে দরজা ঠেলে আকাশ দৌড়ে ভেতরে আসে।তারপর এক এক করে মা আফিয়া,
আসাফও আসে। আমি নিঃশক্তি শরীরে অসাড়ভাবে কেবিনে শুয়ে আছি।আকাশ নবজাতককে হাতে নিয়ে মার কোলে তুলে দেয়।মা আনন্দে আত্মহারা হয়ে বলতে থাকেন,
“আলহামদুলিল্লাহ, আমার দাদুভাই হয়েছে।আকাশ এই আকাশ,আমার দাদুভাই ত মনে হয় একেবারেই তার না নানুর অবিকলে হয়েছে!”

শাশুড়ী মা আমার মাকে কখনো সরাসরি দেখে নি।উনাকে আমার মার ফটো একবার মোবাইলে দেখিয়েছিলাম।তাই সেই ছবিটা স্মরণ করে নবজাতকের চেহারার মিলাচ্ছেন!আজ যদি আমার মা উনার নাতনীকে দেখতে পেত কত্ত যে খুশি হত!উনার নাতনী উনার মতে হয়েছে শুনলে ত আরো আরো খুশি!কিন্তু আফসোস আজ আমার মা নেই!আমার বাচ্চা তার নানুকে দেখতে পেল না!

ভাবনার মাঝেই চোখের দু’কোল বেয়ে দুই ফোঁটা অশ্রু বেরিয়ে আসে।চোখের পানি সবাই দেখে ফেলবে ভেবে তড়হড় হাত উঠাই চোখের পানি মুছতে। কিন্তু অসাড় শরীরটা হাত উঠানোর একবিন্দুও শক্তি পায়নি।অসাড়ভাবে হাত বিছানাই পড়ে রইল।জানি না আকাশ কীভাবে বুঝলো!সে টপ করে তার হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে আমার চোখের পানি মুছে দেয়।ভাগ্য ভালো কেউ রুমে ছিল না।মা বাবুকে কোলে তুলে কান্না থামাতে তখনই বাইরে চলে যায়।আমি বিস্ময় চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকি।ও হেসে ফেলে।বললো,

“মার কথা খুব মনে পড়েছে,তাই না?”

আমি এবার মুখ খুলতে ঠোঁট নাড়বো তার আগেই আকাশ আবার বললো,
“তুই মুখে না বললেও আমি তোর চোখের ভাষা বুঝি সানা!”

আমি এবার চোখের চাহনি ছলছলে করে ফেলি!খুশিতে যেন এক্ষুনি কেঁদে ফেলবো।আকাশ চুপিসারে সেই চোখে এসে আলতো চুমু লাগায়।আমি শিউরে উঠি।তারপর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।বললো,

“খুব উয়িক লাগছে?”
আমি আলতো মাথা নাড়ি।

আকাশ কিছুক্ষণ চুপ থেক দৃঢ় একটা শ্বাস ছাড়ে!মিইয়ে গলায় বললো,
“একটা বাবা ডাক শুনানোর জন্যে কত্ত কষ্ট করেছিস,তার প্রতিদান আমার সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়েও শোধ হবে না!আর শোন?তুই আজ আমাকে জীবনের সবথেকে সেরা উপহার দিলি আমিও তোকে আজ সারপ্রাইজড করবো!”

ফের উৎসুক চোখে আকাশের দিকে তাকাই।আকাশ একটা ডেভিল হাসি দিয়ে বললো,
“বলবো ত বাবা!একটু ধৈর্য্য ধর না!”

আমি ঠোঁট ছড়িয়ে হেসে দিই।আকাশ তার পকেট থেকে একটা সাদা শপিং ব্যাগ বের করে তা আমার সামনে তুলে ধরলো।বললো,
“দ্যাখ ত ব্যাগ টা চিনতে পারছিস কি না?”

আমি ভ্রু কুঁচকে ব্যাগটির দিকে তাকাই।এটা ত সেই ব্যাগ যেটা একদিন আকাশ আমি, রিনতি এবং টোয়া শ্যামলী শপিং মল থেকে আসার সময় আমার হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল!এটার কথা ত এতদিন আমার খেয়ালই ছিল না!ইসস্ কোথায় রাখলাম তাও মনে ছিল না!আকাশ আবার এটা কই থেকে টুকিয়ে নিল!এবার আমি না চাইতেও শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে মুখে ফসরা তুলি।

“আকাশ এটা কোথায় পেয়েছিস?”
“ও কথার এন্সার পরে করছি!আগে আমায় এটা বল সেদিন তোকে এই ব্যাগটা দেওয়ার পর খুলে দেখলি না কেন?ইভেন পরেও আর দেখস নি!এতই উপেক্ষিত ছিল আমার ভালোবাসা?!বুঝলাম!আসলে তুই আমায় মন থেকে ভালোই বাসতে পারস নি!”

“আরেহ নাহ, আকাশ কি বলছিস?আমি তোকে ভালোবাসি!খুব ভালোবাসি!আসলে কতটা ট্রমার মধ্যে ছিলাম সত্যি ব্যাপারটা মাথায়ই আসে নি!”

“যাক যাই হলো অন্তত ভালোবাসি কথাটা ত মুখ দিয়ে শুনতে পেলাম।এটাই বসি।”
বলেই আকাশ মুখে দুষ্ট হাসি টানে।আমি লজ্জা পেয়ে যাই।আকাশ বললো,

“আমি তোর বাসায় যখন পড়াতে গিয়েছি তখন তোর টেবিলের ড্রয়ারে এটা পেয়েছি !তুই যে এটা খুলে দেখিস নি আমি খুব কষ্ট পাই।তারপর এটা নিজের কাছে রেখে দিই।ভাবলাম কোনো একসময় এটা নিয়ে তোর কাছে প্রশ্ন তুলবো আজ তুললাম!”

আমি অপরাধ ভঙ্গিতে,
“আই’ম স্যরি আকাশ।”
“স্যরি বলা লাগবে না বোকা!আমি বুঝতে পেরেছি।”

আমরা হাসপাতালের সিট কেঁটে বাসায় আসার পর দারোয়ান থেকে জানতে পারি টোয়া এখানে এসেছে আমার খোঁজ করতে!কিন্তু আমি হাসপাতালে থাকার কারণে টোয়া আমাদের আর পায়নি ।টোয়া দারোয়ানের থেকে আমার নাম্বার চায় কিন্তু দারোয়ান টোয়াকে অপরিচিত জাস্টিফাই করে আর আমাদলর নাম্বার দেয় নি!এখন প্রচন্ড রাগ হচ্ছে এই দারোয়ানের উপর!এটা কী কাজ করলেন উনি?টোয়া আবার আসবে?টোয়াকে যদি আর না পাই!!দেড়/দুটো বছর পর খোঁজ পেলাম আর এই দারোয়ান!ইচ্ছে হয় এখনই উনার নাকটা ফাঁটিয়ে দিই।।

“সানা এত্ত অস্থির হচ্ছিস কেন?”
আকাশের কথায় ওর দিকে ফিরি!আকাশ বললো,
“ও যেহেতু আমাদের নাম্বার চাইছে হয়তো আমাদের নাম্বার ওর থেকে হারিয়ে গেছে!এখন এটা করা যায় ওর আগের নাম্বারটা আমাদের কাছে যেহেতু আছে ওই নাম্বারে ট্রাই করে দেখতে পারি। যদি ওপেন থাকে!?”

আমি আকাশের কথার পিঠে আর কিছু বললাম না।চুপ করে রইলাম।আকাশ মোবাইল হাতে নেয় টোয়াকে কল লরতে।আমি কৌতূহল দৃষ্টিতে আকাশের ফোনের দিকে তাঁকিয়ে।আকাশ ফোনটা কানের কাছে নেয়।মুহূর্তেই আকাশ বলে উঠলো,

“কল ঢুকতেছে সানা!”
“আলহামদুলিল্লাহ! আমার কাছে দে মোবাইলটা!”

আমি আকাশের থেকে মোবাইলটা হাতে নিই।টোয়া কল রিসিভ করেছে।বললাম,
“হ্যালো,টোয়া?কোথায় তুই?কোথায় রে দোস?প্লিজ তাড়াতাড়ি আমাদের বাসায় আয়!”

ওপাশ থেকে টোয়ার কন্ঠস্বরটা খুব ভারী শুনালো। বললো,
“আজকেই আসবো।”

সন্ধের দিকে টোয়া বাসায় আসে।সাথে তার বোন।টোয়ার দিকে আমি কিছুক্ষণ তাকিয়ে দুই মিনিটের জন্যে থম ধরে দাড়িয়ে থাকি।দুটা বছরে এর এ কেমন পরিবর্তন?চেহারাটা শুকনা।চোখের মণিতে বিরতহীন ক্লান্তির ভাব।চুলগুলো উসকোখুসকো।প্রাণোচ্ছল মুখটা এখন মলীনতায় ভরা!আগের টোয়া আর এই টোয়া খুব যেন তফাৎ!ঠাহরে আসছে না।এগিয়ে টোয়ার গাল দুটো আমার হাতের মুঠোয় কোষ করে ধরি।আবেগ এবং অস্থির জড়ানো গলায় বললাম,

“টোয়া,হঠাৎ কোথায় উধাও হয়ে গেলি?তোর ফোন বন্ধ ছিল কেন?তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন?কি হয়েছে তোর?”

টোয়া আলতো আমার হাতজোড়া সরিয়ে নিয়ে সাবলীল গলায় বললো,
“সানা আমার বাবা মারা গেছেন!”
“আঙ্কেল মারা গেছেন!ইন্নাল ইলাহী ওয়া ইন্না ইলাহী রাজেউন।কবে?”
“সেই দুই বছর আগে!”
“দুই বছর আগে!আমি জানলাম না!”
“তোকে বললাম না?চট্রগ্রাম আমার এক মামার বাড়ি আছে?সেই মামার বাড়ি যাওয়ার পর বাবা ওখানেই মারা যান।আর চট্রগ্রাম যাওয়ার পথেই সেই দিন আমার ফোনটা চুরি হয়ে যায়। সবার নাম্বার হারিয়ে যায়।”

“মানলাম চট্রগ্রাম যেতে ফোন চুরি হয়েছে!তা কুমিল্লায় এসে আবার আমাদের খোঁজ নিস নি কেন?”
একথার পিঠে টোয়ার ভাবভঙ্গিটা কেমন হতাশ হতাশ দেখাচ্ছে।দ্বিধান্বিত গলায় বললো,
“আসলে বাবার মৃত্যুর পর মামার বাসা থেকে মামা আর কোথাও যেতে দেননি।তাই আর কোথাও যাই নি।মামীর সাথে থেকেছি সময় কেটেছে তাই আর কি ভালোই ছিলাম।”
বলেই টোয়া হাসার চেষ্টা করে!টোয়ার কথা বলার ভঙ্গিতে একটুখানি লীনও নেই।খুবই নর্মাল।কিন্তু তার চোখজোড়ার আড়লে লেগে আছে কত অপ্রকাশিত কথা,যা সে আমাকে চক্ষুলজ্জায় বলছে না বা বলতে পারছে না।আমি যতটুকু জানি ওর মামী ভালো না!জঙ্গল টাইপ মহিলা!ঠোঁট পাতলা!না জানি এই দুটা বছরে এই বাবা মরা মেয়ে দুটোকে কতই না কষ্ট দিয়েছে ।নাহলে চেহারা,বেশভূশে এমন কুশ্রী দেখা যেত না!
তবে কষ্ট,ওর বিপদে আমি ওর পাশে থাকতে পারলাম না।আর যেখানে ও আমার খারাপ মুহূর্ত গুলোতে আমাকে আঁকড়ে ধরেছে!
ভেবেই কষ্টমাখা একটা নিঃশ্বাস ছাড়ি।টোয়া হেসে উঠে আমার বাম পাশে শোয়া বাবুর দিকে তাকিয়ে। এগিয়ে যেয়ে বাবুকে মুহূর্তে কোলে তুলে নেয়।বললো,

“মাশাল্লাহ বাবু ত খুব সুন্দর রে!একদম তোর মতো,নাহ নাহ আন্টির মতো!আকাশের চেহারা ত একদমই পায়নি!উম্মা,বাব্বা!উহু বাব্বা কান্না করতেছে!নাম কি রেখেছিস?”
“নাম ঠিক করিনি!”
“তাড়াতাড়ি ঠিক করিস।তোর এবং আকাশের সাথে মিলিয়ে রাখিস।”

আমি টোয়ার কথায় আর মনোযোগ দিই নি।আমার মনোযোগ শীর্ণ দেহের পাংসুটে মুখের স্নেহার(টোয়ার ছোট্টবোন) দিকে।শুষ্ক চোখে উড়ন্ত চুলে ড্রেসিং টেবিলের কার্ণিশ ধরে দাড়িয়ে আছে।তাকে দু’হাতে জড়িয়ে এনে আমার বুকের সাথে লাগিয়ে নিই।স্নেহার হার্টবির্ট দ্রুতগতিতে উঠানামা করছে।খুব ক্লান্তি বোধহয়!আলতো মাথাটা তার মুখের দিকে নামিয়ে মৃদু গলায় বললাম,

“কিছু খেয়েছিস স্নেহা?”

স্নেহা দু’পাশে মাথা নাড়ে।
“আজ থেকে আমার এখানে থাকবি।ঠিক আছে?”
স্নেহা উপরে-নিচে মাথা ঝাঁকায়!এবার আমার দু’চোখ দিঘীর মতো ভরে যায়!অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে টোয়ার দিকে ফের তাকাই।বললাম,

“টোয়া?আমি তোরজন্যে ভালো একটা চাকরি খুঁজবো,ঠিক আছে?”
টোয়া মুহূর্তে খুশিতে টগবগিয়ে উঠে।বললো,

“তুই ত এখন বিসিএস ক্যাডার!চাকরি পেতে এখন আমার আর কোনো টেনশন নেই!”

আমি হেসে উঠি।আর মনে মনে ভাবি,যে মেয়ের মুখ থেকে কথা ফসকাতে এক সেকেন্ডও দেরী হত না আজ সেই মেয়েটা এতটা গম্ভীর কেন,হ্যাঁ?বিশ্বাস করা যায়?একদমই না!তবে,হ্যাঁ,মানতে নারাজ থাকলেও অবিশ্বাসের কিছু নয়-কোনো খারাপ পরিস্থিতিও একসময় স্বাভাবিক মানুষটাকে নিমিষে অস্বাভাবিক করে দিতে পারে!!

ভাবনার মাঝেই আকাশ রুমে প্রবেশ করে।টোয়াকে দেখে প্রথমে কিছুটা অবাক হলেও পরে মুখে হাসি ছড়িয়ে দিয়ে বললো,
“আরে টোয়া যে,কেমন আছিস তুই?অনেক দিন পর দেখলাম!”
“আমি ভালো।তুই?”
“ভালো।তবে আজ একটু বেশিই ভালো!”
“কেন?”
“এখন তোর কোলে যে বেবীটা তারজন্যে!”

টোয়া নৈঃশব্দ্যে হাসে।যে হাসিতে কোনে আওয়াজ নেই।একদম শীতল!আকাশ বললো,
“ওহ সানা,শোন?”
“হু?”
“তুরাবের জাবিন হয়েছে!”
“যতটুকু কর্তব্য তা করেছি এবং করবোও।তবে, ক্ষমা শব্দটি মন থেকে কখনোই উদিত হবে না!”

একথার তোড়ে টোয়া আমার ডানহাতটা শক্ত করে চেপে ধরে!অর্থাৎ,নিষ্ঠুর আপন মানুষগুলো কখনোই ক্ষমার যোগ্য নয়!তাহলে টোয়াও তার মামীর দ্বারা খুব কষ্ট পেয়েছে!?হয়তো হ্যাঁ!!!তবে আমি আছি টোয়া!সবসময় তোর পাশে!!!

সমাপ্তি!!!

(এগোরা মানে বাংলাদেশের একটা কোম্পানির নাম।এগোরা মানে এগারো জন বিজনেস ম্যানদের মধ্যে একজন নয়!এটা একটু ঠিক করে নিবেন যারা ভুল ভেবেছেন!

আর গল্পটা একটু অন্যরকমই ছিল!গল্পটিতে হয়তো অনেকে কষ্ট পেয়েছেন তুরাবের সাথে মিল না হওয়াতে!তারজন্যে আমি দুঃখিত!গল্পটা আমি একটু ভিন্নভাবেই সাজিয়েছিলাম!আর বাস্তবিক এমন অহরহই ঘটে থাকে আমাদের সমাজে!মূলত গল্পটায় ফুটিয়ে তুলেছি স্বার্থন্ধেষী কিছু অতি প্রিয় স্বজনদের নিয়ে যারা টাকার গৌরবে নিজের গরীব স্বজনদের ভুলে যেতে দ্বিধা করে না!)
চলবে…
(টোয়ার ব্যাপারটা কালকের পর্বে জানতে পারবেন!ভাবলাম আজকের পর্বে গল্পটা শেষ করে দিব।হলো না।আরো কিছু কাহিনী বাকি আছে তা পুরোপুরি ক্লিয়ার করে কাল শেষ করবো গল্পটি!হ্যাপী রিডিং!)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here