স্বপ্নময়_ভালোবাসা ❤ পর্ব ২৩+২৪

স্বপ্নময় ভালোবাসা
রোকসানা আক্তার
পর্ব-২৩

সকালে ঘুম থেকে উঠার পর আকাশের মাঝে কিছুটা পরিবর্তন দেখি।সে আমার সাথে ঠিকমতো কথা বলে না।আর বলতে চাইলেও ধীরস্থির দাড়িয়ে কথার ফোঁড়ন কাঁটে না।কিছু জিজ্ঞেস করলে এর উত্তর বিরবির করে দিয়ে নিজেকে পাশ কাঁটার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে।আজ নাস্তাটা করতে বসলেও আমাকে তারসাথে নাস্তা করতে একটি বারও ডাকে না!নিজেই কোনোমতে নাস্তাটা সেরে হাসপাতালে চলে যায়!তার এসব ভাবভঙ্গিতে মনে হলো সে যেন আমার থেকে নিজেকে লুকাতে চাইছে!

বিকেলে ক্লান্তিমাখা শরীর নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে!আবারো সেই একই কান্ড করে!আমার সাথে দেখা না করে সোঁজা অন্য একটা রুমে গিয়ে ঢুকে পড়ে।তার এহেন কান্ডে আমি এবার বরাবরই অবাক হলাম!কাল রাতে ত সবই স্বাভাবিক ছিল আর দিনের আলো ফুটতে বিহেভিয়ারে এমন পরিবর্তন! কেন এমন করছে ও?এমন করার কারণ কী?জিজ্ঞেস করতে হবে আকাশকে!

ভেবেই ওর রুমের দিকে এগিয়ে যাই!দরজা ভেতর থেকে খোলা ছিল তাই ঢুকতে সমস্যা হয়নি।ঢুকার সাথে সাথেই আকাশ আমাকে দেখে দাঁড়িয়ে যায়!কিছুটা সংকোচ এবং অপরাধ বোধ গলায় বললো,
“আই’ম স্যরি,সানা!”

আমি ভ্রু কুঁচকে ওর দিকে তাকাই।আকাশ পিটপিট চোখ করে আবার বললো,
“কাল রাতে আসলে আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি নি!কী থেকে কী হয়ে গেল উফস! নিজেই জানি না!”

এবার আমার কুঁচকানো ভাবটা মসৃণ হয়।আর মাথা নুইয়ে করে মিটিমিটি হাসতে থাকি।ব্যাপার তাহলে ওটা?তাইতো বলি সেই সকাল থেকে কেন ও আমার সাথে ওমন বিহেভিয়ার করলো! ছেলেটার এখনো বিশ্বাস হয়না আমি ওকে আমার স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছি!ও এত অবুঝ কেন!?
আমি এক সপাটে ওর একদম কাছাকাছি এসে দাঁড়াই!এতটাই কাছাকাছি ওর নাকের নিঃশ্বাসটা আমার কপালে এসে বিঁধছে!আমি জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিঁজে নিয়ে বললাম,

“এখনো সেই অবুঝ রয়ে থাকলি?

আকাশ আমার চোখের দিকে ফের তাঁকায়।কিছু বলতে ঠোঁট নাড়বে ওমনি আমি ওর ঠোঁটের উপর আমার তর্জনী আঙ্গুলটা রাখি!উষ্ণতা জড়ানো গলায় বললাম,
“আমি তোর বান্ধবী নয়,আমি তোর স্ত্রী!এখন থেকে আমাকে বউ মনে করবি!সংকোচ বোধ করবি না।যত ইচ্ছে আদর দিবি!ইচ্ছে হলো তুমি বলবি!এতে ভালোবাসাটা আমাদের আরো গভীর হবে।”

বলেই ছোট ছোট চোখ করে ওর মুখের দিকে তাকাই।আকাশও তার ধীরস্থির চাহনি গেঁথে রাখে আমার চোখের উপর।তারপর বার দুয়েক চোখবুঁজে দৃঢ় নিঃশ্বাস টেনে নিয়ে বললো,
“সত্যি সানা আমাকে মন থেকে মেনে নিয়েছিস ত?”
“এখনো সন্দেহ হয়?”
আকাশ এ’কথার পিঠে আর কিছু না বলে আমাকে টেনে এনে তার বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।বললো,
“এতটাই ভালোবাসা দিব যে ভালোবাসার আজও পৃথিবীতে জন্ম হয়নি!!”
বলেই আরো শক্ত করে চেপে ধরে!আমি কিঞ্চিৎ ব্যথা বোধ করি সাথে খানিকটা লজ্জা!এভাবে আরো খানিকটা জড়িয়ে রাখলে আমার একদম মাটির সাথেই মিশে যেতে হবে!তাই ছাড়িয়ে নিতে প্রসঙ্গ পাল্টাই!বললাম,

“আকাশ?টোয়াকে কল করেছিস?”
আকাশ ছাড়ে নি!ঘোরের মাঝে ভালোবাসা মাখছে!এবার গলার স্বরে কিছুটা জোড় আনি।বললাম,
“কী শুনতে পারছিস আমার কথা?”

এবার আকাশের টনক নড়ে।তরহর আমাকে ছাড়িয়ে এনে নাকের ঢগা থেকে চশমটা ঠিক করে আবার চোখে এঁটে নেয়।বললো,
“কী বললি বুঝি নি।প্লিজ আবার বল!”
আমি কুটিল হাসলাম।তারপর বললাম,
“টোয়াকে সকাল থেকেই ট্রাই করতেছি কিন্তু কিছুতেই ওকে ফোনে পাচ্ছি না।”
“ফোন বন্ধ?”
“হ্যাঁ।”
“হয়তো ফোনে চার্জ নেই অথবা ফোনে কোনো প্রবলেম হয়েছে তাই।”
“জানি না!এমন একটা মুহূর্ত যাচ্ছে ওকে গুড নিউজটা জানাতে পাচ্ছি না।কেমন যে লাগছে!”

আকাশ আমার মাথাটা তার বুকের দিকে আলতো টেনে ম হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,
“টেনশন নিস না।ফোন অন করলে ও নিজেই তোকে কল করবে।”
আমি কিছু বলি হি,শুধু নৈঃশব্দ্যে একটা শ্বাস ছাড়ি।

তার পাঁচদিন পর আমাকে নিরীক্ষা ও হিসাব কেডারে সিলেক্ট করে।ওখানে আল্লাহর নাম নিয়ে সহকারী হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক পদে কাজ শুরু করি।বেড়ে যায় ব্যস্ততা।সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন,ট্রেনিং বিল,পেনশন,জ্বালানি খরচ, ক্রয়বিল সহ আরো নানান কাজের সূত্রে প্রতিনিয়ত নানান অফিসে যাতায়াত শুরু হয়!তবে সবগুলো অফিস ঢাকার ভেতরে হওয়ায় আমার পোস্টিং ঢাকায়ই থাকে!আমি খুব মনোযোগ এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে কাজগুলো সম্পাদন করার চেষ্টা করি।এভাবে দিনেক দিন আমার কাজের গতি বাড়ে সাথে সাথে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়!আমার কাজের দক্ষতা দেখে আমার বিভিন্ন স্থানে যেতে অসুবিধে যাতে না হয় খুশি হয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমাকে একটা দামী গাড়ি গ্রিফট করা হয়।আকাশের সামনে গাড়ি নিয়ে হাজির হলে আকাশ তামাশা করে ঠ্যাঁটম দেখিয়ে বললো,

“আমার বিসিএস বউ!আজ আমার থেকেও উপরে চলে গেল!দুইবছর ধরে ডাক্তারি করে আসছি অথচ আজ পর্যন্ত কপালে একটা গাড়ি জুটাতে পারি নি আর আমার বিসিএস বউ সবে সাত মাসের মাথায় একটা গাড়ি এচিভ করে ফেললো!হায়রে এত দুঃখ কই রাখি!এই তোমরা লেডিসরা এত ফার্স্ট হও কীভাবে?একটা নিঞ্জা টেকনিক কও ত!আমি দেখিয়ে দিতে চাই যে লেডিস ফার্স্ট নয়,জেন্টলম্যান ইজ ফার্স্ট!”

আকাশের কথা শুনে খিলখিল হেসে দিই।বললাম,
“লেডি ফার্স্ট ঠিক আছে!কিন্তু আমি মোটেও ফার্স্ট হই নি।জানো কেন?”
“কেন?”
“যোগ্যবান হওয়ার পেছনে যার অবদান সেই ত ফার্স্ট ম্যান।”
“আমিতো মাত্র উছিলা।কিন্তু কষ্টটা ত করেছ তুমি!”
“হয়েছো রাখো এত্ত ন্যাঁকা!এবার আমি গ্রামে যেতে চাই!কবে যাবা বলো?”
“এ সপ্তাহ পর ছুটি পাবো।তখন তোমাকে নিয়ে গো ব্যাক আমাদের কুমিল্লা।ঠিক আছে?”

সপ্তাহ খানেক পর আমি এবং আকাশ কুমিল্লায় রওনা করি।সাথে করে কিছু জামাকাপড় এবং খাবার পানীয় নিয়ে আসি গ্রামের গরীব মানুষদের এবং এতিমখানায় দান করার জন্যে।গাড়ি বাড়ির ত্রিসীমানায় এসে থামতেই আকাশ বললো,
“তুমি বাড়ির ভেতরে যেয়ে একটা লিস্ট করো কাকে কাকে সার্ভ করবা।আর আমি এদিকটায় দেখছি কোনো কুলি খুঁজে পাওয়া যায় কি না মালপত্র ভেতরে নেওয়ার।”

বলেই আকাশ ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

আমি আকাশের কথায় সায় দিয়ে গুঁটি গুঁটি পায়ে বাড়ির ভেতরের আসি ।উঠোন বরাবর বরাবর পা রাখতেই আমার ভেতরে একটা অন্যরকম টান অনুভব হয় ।চারপাশটায় খুব মায়াময় চোখে তাকাতেই হঠাৎ আমার চোখজোড়া বসে আছে!কত্ত স্মৃতি এখানে আমার!আমার শৈশব,কৈশোর,যৌবনের অর্ধাংশ !এখানের প্রতিটি মানুষ,প্রতিটি বাড়ি,প্রতিটি গাছ এবং প্রতিটি সব আমার মুখস্ত আর ক’টা মাসের ব্যবধানেই আজ হঠাৎ মনে হলো-কতটা বছর যেন এই জায়গাটাকে দেখি নি!
আচ্ছা,এখানের সব মানুষ কি ঠিক সেই আগের মতোই রয়ে গেল?নাকি পরিবর্তন হয়ে গেছে!

ভাবতে ভাবতে চোখের কার্ণিশ ঘেঁষে দু’ফোঁটা অশ্রু বেরিয়ে আসে।
“আরেহ,এ সানা বু যে!কতদিন পর!”
কারো কথার শব্দে ভাবনা গোচর কাঁটে।সামনে তাকিয়ে দেখি প্রিয়া!প্রিয়া আমাদের পাশের বাসার মমতাজ মামীর মেয়ে।বয়স বেশি নয়।এই দশ/এগারো বৈ-কি।ওকে দেখে তাড়াতাড়ি চোখের কোণে লেগে থাকা পানিটুকু মুছে নিই।তারপর নিজেকে স্বাভাবিক মুখে হাসি টেনে বললাম,

“কেমন আছিস প্রিয়া?”
প্রিয়া দু’পাশে মাথা নেড়ে ইঙ্গিত করে “খুব ভালো”।
” তোর মা কেমন আছে রে?”
“মা ভালা না সানা বু!মার শরীর ক’দিন ধরে খুব খারাপ যাচ্ছে!”
“ঠিকমতো ওষুধ খাওয়াচ্ছিস?”
“খাওয়াই!আর খাওয়াইও কী লাভ রে বু! পুরো ডোজ ওষুধ খাওয়াতে পারলেই মা ভালো হত!”
“পুরো ডোজ খাওয়াস না?”
প্রিয়া দু’পাশে মাথা নেড়ে “না” ইঙ্গিত করে।
“কেন?মামা কাজে যায় না?”
“কাজ যায়!কিন্তু কাজ পায় না।সংসারে ক’দিন ধরে আমাদের অভাব যাচ্ছে বু।”

আমি দৃঢ় শ্বাস ছাড়ি।ওর গালে আলতো হাত রেখে বললাম,
“ওষুধের টাকা আমি দিয়ে দিব পুরো ডোজ কিনে নিস!আর তোরজন্যে কিছু জামাকাপড় এবং খাবারও এনেছি।”
“সত্যি,বু?”
“হু।”
“কই দেখি?”

এরমাঝে আকাশ চলে আসে।সঙ্গে দুজন কুলি।আকাশ তাদের মালপত্রগুলো নিচে রাখতে বলে।তারা তা রাখে।তারপর আকাশ তােদর কিছু টাকা দিয়ে বিদেয় করে।আমি ওখান থেকে প্রিয়ার জন্যে একটা ড্রেস আর একটা খাবারের প্যাকেট নিয়ে তা ওর হাতে তুলে দিই।মুহূর্তে প্রিয়ার দু’চোখ খুশিতে ছলছল করে উঠে।খুশির তোজ ধরে রাখতে আর না পেরে জোর গলায় চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে বলতে থাকে,
“ও মা তুমি কই?এসে দেখে যাও সানা বু আমার জন্যে কী নিয়ে আসছে!।মাগো মা তাড়াতাড়ি বাইরে আসো না!”

প্রিয়ার চিৎকারের আওয়াজে মমতাজ মামী ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং আশপাশে থাকা অন্যান্যরাও।সবাই আমাকে দেখামাত্রই চমকে যায়। সাথে আকাশ আছে,আবার একগাদা মালপত্রও!একজন উৎসুক এবং প্রশ্নমুখরা হয়ে বললো,
“সানা?এগুলা কী?
“চাচা, কিছু খাবার আর জামাকাপড়।আর এসব আপনাদের জন্যেই নিয়ে এসেছি।”

কথাটি শুনে একে-অপরের দিকে অবাক চোখে চাওয়াচাওয়ি করে।আমি হেসে দিই।বললাম,
“আরেহ অবাক হওয়ার কিছু নেই।আমি এখন চাকরি করছি তাই সেই বেতন থেকে আপনাদের জন্যে কিছু টুকটাক নিয়ে আসলাম আর কি।”

হাজেরা দাদী বলে উঠলেন,
“কী চাকরি?”
“সহকারী হিসাব নিরীক্ষক এবং নিয়ন্ত্রক কেডারে।”
পাশ থেকে শিক্ষিত একজন বলে উঠেন,
“এটা ত বিসিএস কেডার হলে হওয়া যায়!”
“জ্বী,আঙ্কেল বিসিএস কেডার হয়েই এই চাকরিতে সিলেক্ট হয়েছি!”
“তুমি বিসিএস কেডার হয়েছো?!

সবাই আমার ওমন এ্যাচিভমেন্টে বরাবরই প্রশংসায় পঞ্চমুখ!মুহূর্তের জন্যে সবাই ভুলেই যায় একদিন তারা আমাদের নিয়ে কুৎসা কথা রটিয়ে ছিল।তারপরও আমি কথাটা চাপা রাখি নি।কথাটা সবার সামনে তুলি। আর সত্যটা বলি।সবাই এক নিমিষে মনের অচিন্তে বিশ্বাস করে ফেলে,অথচ সেদিন তারা আমাদের কথা বলার সুযোগই দিলো না!তারপর কিছুক্ষণ সময় সবার সাথে এভাবে কাঁটানোর পর এতিম খানার দিকে রওনা করি।সেখানে সব ছেলে-মেয়েদের হাতে জিনিসগুলো তুলে দিয়ে টোয়ার বাসায় যেতে মনস্থির করি।আকাশকে টোয়ার বাসায় যাওয়ার কথা বলতেই আকাশ অদম্য রাগে ফুঁসে উঠে।বললো,

” ওকে যেয়ে আগে কয়েক দফ মার দিবি!তারপর জিজ্ঞেস করবি ফোন অফ রেখেছিল কেন!টোঁটকা কোথাকার!যোগাযোগ করার ওয়েই রাখলে না!”

আমি ছলছল মুখ করে আকাশের দিকপ তাকিয়ে থাকি।টোয়ার উপর আমার যে শুধু রাগ তা নয়। মনে মনে আকাশেরও যে এর কমতি ছিলনা এখন তার বেশ বুঝতে পারলাম।সেই ফোন অফ,আজও ওর সাথে আমার যোগাযোগ হয়নি!আজও সে জানতে পারে নি তার সেই হতভাগী বান্ধবীটা আজ বিসিএস ক্যাডার!”

টোয়াদের বাসায় আসার পর তাদের কাউকে এখানে দেখতে পাইনি।গত আটমাস আগে তারা এখান থেকে কোথায় নাকি চলে যায়।এখন তাদের বাসায় অন্য ভাড়াটিয়ারা থাকে।কোথায় গেছে তার সন্ধান পার্শ্বস্ত অনেকের থেকে জানতে জিজ্ঞেস করি তারা কেউই কিছু বলতে পারে নি।আমি খুবই আশাহত হয়ে যাই।টোয়া যে শব্দটার সাথে জড়িয়ে আছে আমার কতশত অপ্রাপ্তির প্রাপ্তরেখা!সুখ-দুঃখ, বেদনা ভরা জীবনে পাশে এসে দাঁড়িয়ে অদম্য মনে সাহস যোগানোর অনুপ্রেরণা!কষ্টের মুহূর্তগুলোকে হাসিতে উড়িয়ে দিয়ে স্বপ্ন দেখানোর শক্তি কণা! সে আজ কোথায়?আজ কেন তাকে পাচ্ছি না!আজ কেন তাকে মুখ খুলে বলতে পারছি না “টোয়ারে বোন আমার আমি আজ তোদের দোয়ায় বিসিএস ক্যাডার হয়েছি”!

কিন্তু আজ নাই টোয়া!সারাটা পথ মন খারাপ থাকে আমার।আকাশ এটাওটা বলেও আমাকে স্বাভাবিক করতে পারে নি!
স্বপ্নময় ভালোবাসা
রোকসানা আক্তার
পর্ব-২৪

অফিস থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রায় সন্ধে হয়ে যায়!অফিসে আজ প্রচুর চাপ ছিল তারসাথে বাসায় ফিরতি যানযটের ঘাপলায় অবস্থা পুরো কাহিল! ক্লান্তি আর অবসাদ মাখা শরীরটা নিয়ে সোফায় পিঠ ঠেকাতেই রুম থেকে আকাশ বেরিয়ে আসে।সে আজস হাসপাতাল থেকে খুব তাড়াতাড়িই ফিরেছে!সেই দুপুর দু’টোর দিকেই তার ডিউটি শেষ হয়।
আকাশ আমার কাছে এসে বসে।কপালে আলতো হাত রেখে নরম গলায় বললো,

“সানা?খুব ক্লান্ত লাগছে?’

আমি অবচেতন চোখ খুলি।তাকিয়ে আকাশ একগ্লাস জোশ হাতে ।বললো,
” এই ঠান্ডা জোশটা খেয়ে নে।ভালো লাগবে।”

আমি আকাশের এ’কথার পিঠে আর কোনো জবাব না করে বাধ্য মেয়ের মতো ওর থেকে জোশের গ্লাসটা হাতে নিই।তারপর তা চপচপ গলায় পুরোটা শেষ করে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ি।এখন শরীরে অনেকটা শান্তি শান্তি লাগছে!খুব হালকা এবং সতেজ অনুভব হচ্ছে ।এই ছেলে আমাকে এত বুঝে কেন,হ্যাঁ?আমার কখন কোন জিনিসটা লাগবে তা যেন এই ছেলের মাথায় আগ থেকেই গাঁথা থাকে!এতটা ভালোবাসে কেন আমাকে?ভাবতে ভাবতে আকাশের বুকে আলতো মাথা রাখি।আকাশ আমার মাথাটা তার দিকে আরো টেনে নিয়ে বললো,

“তোর কষ্ট আমার সহ্য হয় না, সানা।বিশেষ করে যখন অফিস থেকে ফিরিস।।”

আমি আকাশের থেকে মাথা তুলে নিয়ে ওর দিকে ফিরি।বললাম,
“আমাকে নিয়ে চিন্তা করিস না আকাশ।পৃথিবীর সবকিছুতেই কষ্ট থাকে।কষ্ট ছাড়া একটা চুলও নড়ে না।তাই কখনো আশাহত হোস না।আমি ঠিক আছি আকাশ। খুব ঠিক আছি।”
“কখনো তোর ইচ্ছের বিরুদ্ধে যাইনি।এবং সামনেও যাবো না।তোর যা ভালো লাগে তুই কর।আমি সবসময় তোর পাশে আছি সানা।সবসময়!”

আমি গদগদে খুশি হয়ে আকাশের নাকের সাথে নাকটা ঢলে নিই।
“ওহ সানা,শোন?যেটা বলতাম….।”
“হু,বল?”
“আমার চেম্বারে আজ তোর শাহিদা খালামণি এসেছিল!”

মুহূর্তে আমার ভ্রু যুগল কুঁচকে আসে।বললাম
“কেন এসেছে?”
“তা জানি না!আমার সাথে দেখা হয়নি।তখন আমি ব্রেকে ছিলাম।আমার এসিস্ট্যান্ট আমার ব্রেক থেকে ফিরতে লেট হবে বলেছে আর তখন উনি আমার এসিস্ট্যান্টকে তোর কথা বলে,আর উনার নাম বলে যাতে আমি চিনতে পারি।বুঝলাম তোর খালামণিই হবেন!”
“হঠাৎ কী ভেবে এসেছে!”
“সেটা ত আমিও ভাবতেছি।”
“কোথাও থেকে হয়তো শুনেছেতোর সাথে আমার বিয়ে হয়েছে আর এই তোড়ে আমার কিছু বদনাম করতে তোর কাছে তাই!অনেক চালাক উনি!নাহলে তোর চেম্বারে উনার কী?!আচ্ছা, বাদ দে!যে জন্যেই আসুক এখন আর উনাকে আমার মনে নাই।ভুলে গেছি।ফ্রেশ হতে যাচ্ছি। উঠলাম।”

বলেই রুমে চলে আসি।ফ্রেশট্রেশ হয়ে বাইরে আসতেই দেখি আকাশ সোফায় ল্যাপটপ নিয়ে বসছে।ওকে আর ডিস্টার্ব না করে কিচেনে চলে আসি রাতের খাবার ঠিকঠাক করতে। তারপর এভাবে কিছুক্ষণ সময় কাঁটে।খাবার গুলো গরম গরম হলে শ্যামলী আপাকে ডাকি খাবারগুলো ডাইনিং এ নিয়ে যেতে।শ্যামলী আপা খাবার গুলো ডাইনিং নিয়ে যায়।তারপর কিচেন থেকে বেরিয়ে আকাশের সামনে যেয়ে কোমরে হাত রেখে দাঁড়াই।বললাম,

“খাবার রেডি।উঠ এবার।”
“আর একটু বাকি আছে।ওয়েট।ওয়েট।”
“ডিনারের সময় হলেই একইরকম ক্যাঁচর ক্যাঁচর!আর শুনতে ভাল্লাগে না।উঠ ত এবার!?”বলেই আকাশের হাতে একটা ঝাঁকি দিই।

” আহ্ সানা,এইতো আরেকটু।প্লিজ?গেইমটা শুরু করলাম শেষ করি?”
এবার আমি বিরক্ত মনে অন্য সোফায় বসে যেয়ে বির বির মুখ খুলি,
“এই ফ্রী ফায়ার গেইমটা কোন ব্যাঁটা যে বানাইছে ওই ব্যাঁটারে সামনে পাইলে একটা মুরানি দিতাম!ব্যাঁটা টোঁটকা!সময় ওয়েস্ট করে খালি!সময়, সুযোগ কিছুই বোঝে না!”

কথাগুলো বিরবিরে হলেও দূরত্ব সামান্য থাকায় আকাশ তা শুনতে পায়।আর খিলখিলিয়ে হেসে দেয়।
“ব্যাঁটাকে বকো কেন?আমাকে বকো!দোষ তোমার স্বামীর সে খালি ফ্রী ফায়ার খেলে কেন!?হা হা হা হা হা।”
আমি কথাটাকে পাত্তা না দিয়ে গাল ফুলিয়ে অন্যদিক তাকিয়ে থাকি।তা দেখে আকাশ মিটমিটে হাসতে থাকে।এভাবে কয়েক সেকেন্ড পার হয়।তারপর আলতো হাতে ল্যাপটপটা পাশে রেখে দেয় ধীরস্থির উঠে দাঁড়ায়।আমার কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,

“উঠো খাবো।”

আমি আকাশের দিকে তাকাই।আকাশ আবারো চোখ দিয়ে ইশারা করে ডাইনিং এ।আর রাগটাকে ধরে রাখতে পারিনি।হেসে উঠি।দুজনের ডিনার শেষ হলে রুমে আসি।আমি আকাশকে বাতি অফ করতে বলে বিছানায় এসে একটা বালিশ টেনে নিয়ে কাঁত হয়ে শুয়ে পড়ি।আকাশ বাতি নিভিয়ে বিছানায় এসে শোয়।
এভাবে কিছুক্ষণ সময় অতিবাহিত হয়।আমার চোখে এখনো ঘুম ধরে নি।চোখবুঁজে আছি।আকাশ ঘুমিয়েছে কিনা জানি না।তার কিছুক্ষণ পর হঠাৎ আকাশ আমার হাতে আলতো ধরে বললো,

“ঘুমিয়ে পড়েছিস”
আমি ঘুমা ঘুমা ভাব করে বললাম,
“হু।”

আকাশ এক ঝটাকে ড্রিম লাইট অন করে দেয়।ওর এহেন কান্ডে আমি দু’চোখ খুলে ফেলি।পাশ ফিরে ঘুরে চোখ বড় করে বললাম,
“বাতি অন করছিস যে?”
“কথা আছে তোর সাথে।”
বলেই ঠোঁটে কোণের দুষ্ট হাসির ঝুঁলিয়ে রাখে।আমি বুঝলাম ও এখন আমার থেকে ভালোবাসা চাইছে!কিন্তু এখন ত আমি ঘুমাবো।য়ুহু কিছুতেই ভালোবাসা না।এখন শুধু ঘুম।ভেবেই আবারো ঘুমা চোখে বললাম,

“ঘুম আসছে।ডিস্টার্ব করিস নাতো!যা ঘুমিয়ে পড়!”
বলেই ঘুমের ভাণ করি।ভাবলাম ঝামেলটা এখানেই চুকাবে কিন্তু তা আর হলো না।তার আগেই সে আমার হাত হেঁচকা টান মেরে উঠিয়ে বসায়।

“আজ ত কোনো ঘুম হবে না। ঘুমালে আমি বাবা হবো কবে!”
ইসস!কেমন কথা বললো!ঠোঁটকাটা কোথাকার!লাগাম নাই।একেবারে লজ্জায় আমাকে মিইয়ে দিল!যদি পারতাম এখনই মাটির সাথে মিশে যেতাম!আমার লাজুকতা দেখে আকাশ আরেক কদম উসকে যায়।কাঁধে তার হাতজোড়া জোরে চেপে ধরে আমাকে বিছানায় শোয়াতে শোয়াতে বললো,

“তুমি কি চাও না তুমি মা হবে আর আমি বাবা হবো?আমাদের ফুটফুটে একটা বেবী থাকবে?”

আমি জবাব দিইনি।চোখবুঁজে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা!আকাশ তাতে পাত্তা না দিয়ে শাড়ির আঁচলটা এক ঝটাকে সরিয়ে দিয়ে নাভিতে বড় একটা চুমুক লাগায়!মুহূর্তের জন্যে আমার সারা শিরশির করে উঠে।দু’হাত বিছানার চাঁদরে খামচে নিজেকে আগলো রাখার চেষ্টা করি।তাও আকাশ ছাড়ছে না।একের পর এক চুমুক লাগাতেই থাকে।আমি নিজেকে ছাড়ানোর জন্যে আকাশকে ঘোর মাখা কন্ঠে বলি উঠি,

“প্লিজ, ছাড়!”
আকাশ এ সপাটে তার মুখটা আমার মুখের কাছে এনে বললো,
“শুধু ত বাবা হতে চাই এটুকু আবদারও রাখতে পারবে না?”
এবার আমি লজ্জায় খান খান।এই আকাশটাকে আমার সামনে থেকে যেভাবেই হোক সরাতেই হবে।নাহলে একদম শেষ আমি!এর সামনে কখনোই মুখ দেখাতে পারবো না।ভেবেই সরাতে যাবো ত আর হলো না।তার আগেই গলার ভেতরে মুখটা তার চুবিয়ে দেয়।আমি নিমিষে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি।আর আমাকে তার দখলে আস্তে আস্তে নিয়ে যেতে থাকে!

দেখতে দেখতে একমাসের উপরে চলে যায়।হঠাৎ আমার মাসিক বন্ধ হয়ে যায়।সন্দেহের তীরে আকাশ প্রেগনেন্সি কিট নিয়ে এসে পরিক্ষা করে দেখে আমি গর্ভবতী।তার যে সেকী খুশি!খুশিতে গদগদ হয়ে আমাকে এক্কারে কোলে তুলে নিয়ে ছোট্ট বাচ্চাদের মতো ঘুরাতে থাকে।
“হুররে আমি বাবা হতে যাচ্ছি।হুররে!!মিষ্টি নিয়ে আসছি ওয়েট ওয়েট। ”

বলেই আমাকে নামিয়ে পাগলটা আর একমুহূর্তের জন্যেও দাঁড়ায় নি।ওমনি চার কেজি মিষ্টি নিয়ে এসে ফ্ল্যাটের সবাইকে মিষ্টি মুখ করায়!!এভাবে আরো তিনমাস পার হয়।আমার মাঝে শারিরীক পরিবর্তন হতে থাকে।
আমি অফিসের ফুল শিফটা এখন হাফ শিফটে করি।আকাশও তাই।প্রয়োজন অতিরিক্ত আর একটা সেকেন্ডও হাসপাতালে ব্যয় করে না।ডিউটি শেষ তার বাসায়ও পদচারণ। এখন আমার এতটাই কেয়ার এবং এলার্ট।মাঝে মাঝে এ নিয়ে নিজেকে খুব গর্বিত বোধ হয়।হৃদয়টা হুমধুম বলে উঠে-আকাশকে জীবনসঙ্গী করে আসলে আমার ভুল হয়নি!!

একদিন রাতে আমি এবং আকাশ ডিনার করতে বসি।আকাশের প্লেটে রোস্ট মাংস,স্যুপ দিয় আমি আমার খাবারে মনোযোগী হই।।খাওয়ার মাঝে রান্না কেমন হয়েছে জানতে আগ্রহী চোখে ওর দিকে তাকাই।দেখি ও খাওয়া এখনো শুরু করেনি।অন্য তাঁকিয়ে কিছু একটা ভাবছে!তার এহেন কান্ডে আমি বরাবর অবাক হই।চোখমুখ কুঁচকে এনে বললাম,

“আকাশ?”

আমার কন্ঠস্বরে ওর টনক নড়ে।আমার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করে।বললাম,
“কিছু ভাবছিস তুই?”
“নাহ নাহ কিছু না! কী ভাববো আর।”
“তাহলে খাচ্ছিস না যে?”
“এইতো খাচ্ছি।”

বলেই খাবারে হাত লাগায়।তারপরও ওর চোখমুখে কিছু একটা লুকানোর রেশ লাগে আছে।তবে কী লুকাচ্ছে ও আমার থেকে?আর আমার থেকে কিছু একটা লুকিয়ে ওর কী লাভ হবে!!ভাবতে ভাবতে খাবারটা কোনোমতে শেষ করে রুমে চলে আসি।তার কিছুক্ষণ পর আকাশ আসে।
বিছানা থেকে ল্যাপটপটা তুলে নিয়ে সোফার উপর রাখে।তারপর বিছানা ঝেঁড়েটেড়ে বালিশগুলো ঠিক করতে থাকে।আমি ড্রেসিং টেবিল বরাবর দাঁড়িয়ে ওর দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।
শোয়ার জন্যে বিছানা মোটামুটি প্রস্তুত হলে আকাশ বললো,

“বিছানা ঝেড়েছি।ঘুমাতে আস সানা।”

অন্যদিনের মতো আমি আজ আকাশের কথায় সায় দিয়ে ঘুমাতে যাই নি।সং হয়ে আগের স্থানে দাঁড়িয়ে আছি।পুনর্বার আবারো ডাকে।আমি তাতেও জবাব দিই নি।এবার আকাশ ভ্রু কুঁচকে ফেলে।বিছানা থেকে নেমে আমার কাছে আসে।ধীরস্থির গলায় বললো,

“কী হয়েছে সানা তোর?তুই আমার সাথে রাগ?”
এবার আমি আর চুপ থাকতে পারি নি!কথার সবকে জবাব তুলি।বললাম,
“রাগ হওয়ার কারণ তা তো তুই জানিস!তা আবার জিজ্ঞেস করছিস কেন?”
“সত্যি আমি জানি না সানা।প্লিজ বল কেন রাগ করে আছিস?”
বলেই কাঁধে আলতো হাত রাখে।আমি কাঁধ ঝাঁকি দিয়ে ওর হাতদুটো সরিয়ে ফেলি।ওর থেকে দু’কদম এগিয়ে রাগ রাগ গলায় বললাম,

“তুই আর আমার সাথে কথা বলবি না!”
“আজব আমি কি করলাম!কারণ ত বলবি!”
আমি কিছুক্ষণ চুপ থাকি।তারপর জেদটাকে আর চেপে রাখতে না পেরে বলে উঠলাম,

“আমি নাকি তোর অনেক আপন!আমিই তোর কাছে একমাত্র ব্যক্তি যাকে মনের কথাগুলো অনায়সে বলতে পারিস এবং ভরসা করতে পারিস!তাহলে আজ সেই ভরসা কোথায় গেল?”

আকাশ বুঝতে পারলো আসলে তাকে আমি কোন ব্যাপারে বলতে চেয়েছি।সে এবার আর তর্কে গেল না।
চুপচাপ বিছানার দিকে এগিয়ে যেয়ে বসে রইল।চোখমুখে তার খানিকটা দ্বিধা।খানিক্ষন চুপ থাকার পর আমার দিকে তাঁকালো।আমি কৌতূহল চোখে তার দিকে তাঁকিয়ে।!সে এবার চোখের চশমাটা ভালোভাবে এঁটে গলায় একটা খাঁকারি টানলো।বললো,

“ধরো কোনো একজন মানুষ বিপদে আছে।সেই মানুষটা আবার একদিন তোমার সাথে প্রতারণা করেছে!তখন সেই মানুষটির বিপদের কথা শুনলে তোমার মাঝে কেমন অনুভূতি হবে?”

“খুব ভালো অনুভূতি হবে!তখনতো আল্লাহর কাছে আরো চাইবো ওই প্রতারককে আল্লাহ আরো কষ্ট দিক।খুব বেশি কষ্ট!কিন্তু হঠাৎ এরকম প্রসঙ্গ তুলার মানে?”

আকাশ জোরে একটা হাঁক ছাড়ে।আবারো একফোঁড় চুপ থেকে তারপর বললো,
” আজও তোর খালামনি আমার চেম্বারে এসেছে এবং দেখাও করেছে!”

মুহূর্তে আমার ভেতরের চেতনাগুলো দপ করে জ্বলে উঠলো।বললাম,
“কেন এসেছে?কিছু বলেছে?”
“তেমন কিছু বলে নি।তবে যতটা মনে হলো উনি খুব বিপদে আছেন!”
“বিপদ মানে?”
“বিপদ সম্ভবত উনার ছেলে বউকে নিয়েই!”
“তুরাব ভাইয়া বিয়ে করেছেন?”
“মনে হয়!”

বিয়ে হয়েছে আবার বিপদেও পড়েছে!বুঝলাম না এর মানে!আচ্ছা তাহলে বিয়ে ওই জেনি মেয়েটাকে করে নি ত?বললাম,
“আকাশ?তুরাব ভাইয়া কাকে বিয়ে করেছে,এ ব্যাপারে বললেন কিছু?”
“নাহ তেমন কিছু বলে নি!জাস্ট বললো আমি অনেক বিপদে আছি বাবা!ছেলে বউটা আমার…! অনুশোচিত হলাম বাবা!জীবনে কী করলাম!ক্ষমা করবে আমাকে?বলো ক্ষমা করবে?এসব বলেছে।”
“আচ্ছা, কে ক্ষমা করবে?কার কথা বলছে?”
“পরিষ্কার করে আমাকে উনি কিছুই বলেননি।উনার সাথে বেশিক্ষণ আলাপ করার সময় হয়নি।সময় ছিল অল্প!রোগী দেখার ফাঁকে উনার সাথে কথা হলো!পরে বললাম আন্টি ব্রেকের সময় বা ডিউটি শেষ হলে হাসপাতালে আসলে কথা বলা যাবে তখন আমি ফ্রী থাকি।তবে যতটা মনে হচ্ছে ক্ষমার কথাটা সম্ভবত তোমাকেই উদ্দেশ্য করে বলা!”
“আমাকে?”
“আমার মনে হলো!”

চলবে…..
চলবে…

(অনেকে বলেছেন এত সহজে বিসিএস হওয়া যায় না!হুম আমিও মানলাম কয়েক মাসে বিসিএস হওয়ার সফলতা খুবই কম মানুষের হয়!তবে এটা সত্যি বাংলাদেশে মাত্র তিনমাসে প্রিপারেশন নিয়ে অনেকের বিসিএস ক্যাডার হওয়ার গল্প আছে!)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here