স্বপ্নের প্রেয়সী ২ পর্ব ২৯+৩০

#স্বপ্নের_প্রেয়সী_সিজন_2
#ফাতেমা_তুজ
#part_29

থমথমে গুমোট পরিবেশ। কারো মুখে কোনো রা নেই। ফারাবির চোখ থেকে নিঃশব্দে পানি পরছে। ফারহান ফারাবির দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছে। মেয়ে টার চোখের পানি সুচের মতো এসে ওর গায়ে বিধছে।
সবাই কপালে সূক্ষ্ম ভাঁজ নিয়ে দাড়িয়ে আছে। রিকের চোখে মুখে খুশি রা খেলা করছে।
ফারাবিদের ডয়িং রুম টার বর্তমান পরিস্থিতি কোনো এক নিস্তব্ধ পুরীর থেকে কম নয়।
পোকা মাঁকড়ের মৃদু ডাক টা ও কানে এসে বারি খাচ্ছে।
ফারাবির কান্না ফারহানের আর সহ্য হলো না। ফারাবি কে বেশ বড় সড় ধমক মেরে দিলো। যার দরুন চারপাশের সবাই কেঁপে উঠলো। ফারাবি ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো।

ফারাবির বাবা ফারাবি কে উদ্দেশ্যে করে প্রশ্ন ছুঁড়লেন
_ ফারহান কে রাস্তার মাঝে জড়িয়ে ধরে ছিলে ?
_,,,,

_ কোনো উত্তর নেই কেন ফারাবি ?

_ আঙ্কেল তুমি আমার কথা টা শোনো।

ফারাবির বাবা হাত দিয়ে ফারহান কে থামিয়ে দিলেন।

কিছুক্ষণ আগের ঘটনা। ফারাবি কলেজ শেষে রিক্সা করে ফিরছিলো।
হঠাৎ করে ফারহান এসে পথ আটকায়। রিক্সা ভাড়া মিটিয়ে ফারাবি কে নিয়ে যায় এক রেসট্রন এ।
দুজনে লাঞ্চ কমপ্লিট করে এতিম খানায় গিয়ে বাচ্চা দের গিফ্ট দিয়ে আসে।
বাচ্চা দের সাথে সুন্দর এক সময় কাঁটায় ফারাবি।
এতিমখানা থেকে বেরিয়ে ফারহান কে জড়িয়ে ধরে।
এতো সুন্দর সময় উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানায়।
আর তখনি ফারাবির মামা মামি দেখে ফেলেন।
ওনারা সেই পথ দিয়ে কোথাও থেকে ফিরছিলেন।
তারপর ই বাসায় এসে এই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়।

ফারাবির বাবা মেয়ের হেয়ালি পানা তে বিরক্ত হলেন।
সবাই নানান প্রশ্ন করে যাচ্ছে, ফারাবি শুধু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।
সবাই এতো এতো প্রশ্ন করলে ও ফারাবির মা একটা কথা ও বলেন নি।
ফরহাদ চৌধুরী চিন্তাগস্ত , তার মাথা তে অনেক প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ফারহান সবার প্রশ্নে বিরক্ত হচ্ছে। কিন্তু কিছু বলছে না কারন তিনটে মেয়ে এখানে জড়িয়ে আছে।
রিকের কথা টা কাউ কে এখন জানানো যাবে না।
ফারাবির মা ধীর পায়ে ফারাবির দিকে এগুতে এগুতে বললেন
_ ফারহানকে জড়িয়ে ধরেছিলি কেন ?

_ আম্মু

_ কিসের আম্মু ? উত্তর দিচ্ছিস না কেন ?

ওনার কথা কাঁপছে, চেহারা বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে। ফারাবি মাথা টা হাল্কা উঁচু করে কিছু বলতে যাবে তার আগেই নিজের সর্বশক্তি দিয়ে ফারাবির গালে চড় মেরে দিলেন।
আচমকা এমন করাতে সবাই চমকে উঠলো।
সবাই ওনার উপর রেগে গেলেন , কিন্তু কিছু না বলে নিরবে তা প্রকাশ করলেন।
এতো বড় মেয়ের গালে চড় দেওয়া উচিত হয় নি ওনার ।
ফারহানের শরীর কেঁপে গেছে, কপালের রগ ফুলে ফেঁপে উঠেছে।
ফারাবি কোনো দিকে না তাকিয়ে ফারহানের দিকে তাকালো।
ফারহানের দিকে ইশারা করে বোঝালো রাগ কন্ট্রোল করতে।
ফারহান চোখ খিচে বন্ধ করে রইলো। ফারাবির মা আরেক টা চর দিতে যাবে তার আগেই ফারহান বাঁধা দিয়ে দিলো।
ফারাবি ফারহানের শার্টের হাতা খামচে ধরলো। ফারহান এক পলক তাকিয়ে সে দিকে পাত্তা দিলো না।
ফারহান চিৎকার করে বলল
_ পাগল হয়ে গেছো তোমরা ? ওর গায়ে হাত তুলছো ?
ওর দোষ টা কি ? একটা বিষয় নিয়ে ওর উপর রাগ দেখাচ্ছো ?

ফারাবির মা চোখের পানি মুছে আবার তেড়ে গেলেন।
রিফাত এসে ফারাবির মাকে দূরে নিয়ে গেলেন।
রিফাতের মা এসে ফারাবির মাকে চেপে ধরলেন।
ইচ্ছে মতো বকে যাচ্ছেন মেয়েটাকে মারার জন্য।
কিন্তু সে দিকে কোন খেয়াল ই নেই ওনার।
কেমন যেন উম্মাদ লাগছে ওনাকে। ফারাবির বাবা আর রিফাতের বাবা দুজনেই নিজেদের রাগ সংবরন করে রেখেছেন।
ফারাবির গায়ে কেউ ফুলের টোকা ও দেয় নি আর আজ মেয়েটার গালে চড় মারলেন ওনি তা কেউ ই মেনে নিতে পারছেন না।
ফারাবি কেঁদে যাচ্ছে , ফারহান সাত পাঁচ না ভেবেই ফারাবি কে জড়িয়ে ধরলো।
ফারাবির খুব কষ্ট হচ্ছে , যেই মা ওর হাত কেঁটে যাওয়া তে কেঁদে জ্ঞান হারিয়ে ছিলেন।
আজ সেই মা ওকে চড় মারলেন। এই সহজ কথা টা হজম হচ্ছে না ওর।
ফারহান নিজের হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রাগ নিয়ন্ত্রণ করছে।

ফরহাদ চৌধুরী ক্ষীন গলাতে বললেন
_ ফারহান ওকে ছেড়ে দাও। কি হচ্ছে কি এসব ?

ফারহান কোনো উত্তর দিলো না। ফারাবি কে বুকে জড়িয়ে রেখেছে ওহ।
রিফাতের মস্তিষ্ক বুঝে গেছে সব, ওহ তাতে বেশ খুশি হয়েছে।
ফারহানের মতো একজন ওর বোনের জন্য বেস্ট।
ফারহানের কোনো প্রতিউত্তর না পেয়ে রেগে গেলেন ফরহাদ চৌধুরী।
রোমা চৌধুরী ছেলের আচারনে খুশি ই হয়েছেন।
ফারাবি কে আগে থেকেই পছন্দ ওনার।

ফরহাদ চৌধুরী ফারহানের কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই ফারাবি কে ছেড়ে দিলো ফারহান।

ফারহাদ চৌধুরী কঠিন গলায় প্রশ্ন ছুড়লেন
_ তোমার আচারনের মানে কি ?
ফারহানের সহজ উত্তর
_ যা ভাবছো তাই।
_ তুমি কি জানো না ফারাবির বিয়ে ঠিক হয়ে আছে?

_ আই ডোন্ট কেয়ার।

রিফাতের বাবা মুখ খুললেন
_ ফারহান তুই যদি ফারাবি কে পছন্দ করেই থাকিস তাহলে আগে কেন বলিস নি। আর তুই তো জানিস রিকের সাথে কিছুদিন পর ওর বিয়ে।
আর ফারাবি ও তো দ্বিমত প্রকাশ করে নি।
এখন এসব

ফারহান দারুন হাসলো। ধীর পায়ে ফারাবির দিকে এগিয়ে গিয়ে ফারাবির দু গালে হাত রাখলো। ফারহানের এমন কান্ডে সবাই চমকালো। রিকের মা বাবা ভ্রু কুঁচকে নিলেন।
ফারহান এক গাল হেসে ফারাবি কে বলল
_ রিক কে বিয়ে করতে রাজি তুই ? বিয়ে দিয়ে দেই ওর সাথে ?

ফারহানের এমন কথা তে ফারাবি চমকে তাকালো। ফারহানের দিকে অসহায় দৃষ্টি তে তাকিয়ে রইলো।
ফারহান রহস্য হেসে বলল
_ ফারাবির বিয়ে রিকের সাথে হচ্ছে না।

সবাই চোখ ছোট ছোট করে তাকালেন। কেউ কিছু বলছে না দেখে রিক রেগে গেল।
ফারহানের দিকে তেড়ে গেল । ফারহান হাত বাড়িয়ে আটকে দিলো।
রিক রাগি কন্ঠে বলল
_ হাউ ডেয়ার ইউ ? ফারাবির সাথে আমার বিয়ে টা হবেই। তুই কিচ্ছু করতে পারবি না।

_ তোর কোনো কথা শুনতে চাই না আমি। গেট লস্ট

_ তুই না শুনতে চাইলে ও শুনতে হবে তোকে।

ফারহান বাঁকা হেসে বলল
_ স্টপ দ্যা ড্রামা।

রিক রেগে গেল। ফারহানের দিকে না গিয়ে ফারাবির হাত চেপে ধরে বলল
_ ওহ আমার হবু স্ত্রী। আর ওর সাথে আমার বিয়ে হবেই।

ফারহানের চোখ দুটো মুহূর্তেই লালচে বর্ন ধারন করেছে। হাতের রগ জেগে উঠেছে। ফারাবি নিজের হাত মুচরাতে লাগলো।

ফারহান ধীর কন্ঠে রাগী স্বরে বলল
_ হাত টা ছাড়।

_ ছাড়বো না। কি করবি তুই? আমি আমার হবু স্ত্রীর হাত ধরেছি।

ফারহান চেঁচিয়ে বলল
_ আব্বে ,তুই আমার বউয়ের হাত ধরেছিস। তোকে যে মেরে মাটিতে পুঁতে ফেলি নি তাই তোর শত জনমের ভাগ্য।

ফারহানের কথা টা সবার মস্তিষ্কে ধরা দিলো না। সকলের কপাল কুঁচকে গেছে। সবাই বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো। ফারহানের ছোট্ট কথা টা সবাই কে ভাবাচ্ছে।
রিক ফারহানের কলার চেপে ধরে বলল
_ মশকরা করা বন্ধ কর। তোর অনেক মজা দেখেছি আমি।
এবার ফারাবি কে তোর সামনে দিয়ে বিয়ে করবো। দেখি তুই কি করতে পারিস।

ফারহান তাচ্ছিল্য হেসে বলল
_ পারলে আমার বউ রে নিয়ে যাহ। আই প্রমিস ওহহ যদি ইচ্ছে করে ও যেতে চায় আমি তাও যেতে দিবো না।
আমার প্রেয়সী ওহহ , ওহ ডানা মেলে উরবে ঠিক তবে শুধু মাত্র আমার দুনিয়াতে।
তাই ভালোই ভালোই বলছি চলে যাহহ।

রিক আর ফারহানের তর্ক লেগে গেল। সবাই নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
রাফাজ দুজন কে ছাড়িয়ে বলল
_ কি হচ্ছে কি এসব ? ফারহান তুই কি বলছিস কোনো আইডিয়া আছে ?
ফারাবির সাথে তো প্রায় তিন বছর ধরে রিকের বিয়ের কথা চলছে।
তুই কি আদৌ জ্ঞানে আছিস ?

_ ভাইয়া তুই ভালো করেই জানিস যে আমি বাজে কথা বলার মানুষ না।

রিক তাচ্ছিল্যর স্বরে বলল
_ বাজেই তো বকে যাচ্ছিস।

ফারহান চোখ বন্ধ করে নিজেকে শান্ত করলো। রিকের দিকে না তাকিয়েই আঙুল দিয়ে তুরি বাজিয়ে বলল
_ আমি আর আমার ভাই কথা বলছি , তোর এখানে কোনো দরকার নেই।
চুপচাপ থাক

রিক কিছু বলতে গেলে রিকের বাবা চোখ দিয়ে ইশারা করেন। রিক থেমে যায় , খানিকটা ভাবনাতে পরে যায় ওহ।

ফারহান প্রশস্ত হেসে ফারাবির কাছে যায়। ফারাবির কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে
_ এই যে দেখছিস , এই হলো আমার পিচ্ছি বউ।
মাত্র পনের বছরের পিচ্ছি তখন এই মেয়েটা। তখন থেকেই একে আমি পুরোপুরি নিজের করে নিয়েছি।
এই পিচ্ছি টা শুধু আমার নামের দলিলে আবদ্ধ।

ফারাবির চোখ দুটো চকচক করছে। ওর চেঁচিয়ে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে হ্যাঁ আমি শুধু এই মানুষটার নামে আবদ্ধ।
যে আমার স্বামী, আমার অর্ধেক অংশ নয় , যে আমার পুরো জীবন।
আমার অতীত বর্তমান ভবিষ্যত সব এই মানুষ টা।

ফারহানের কথা তে সবাই অবাকের চরম পর্যায়।
ফারহান আলতো হেসে বলল
_ তিন বছর আগে সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে আমি ফারাবি কে বিয়ে করেছি।
আইনত কিংবা ধর্মমতে দুটো নিয়মে ই ফারাবি আমার বউ , আমার প্রেয়সী।

রিক চেঁচিয়ে বলল
_ তোর জ্বালিয়াতি আমি বিশ্বাস করি না।

ফারহান তাচ্ছিল্য হেসে বলল
_ ফারাবি কেই জিজ্ঞেস কর।

রিক ফারাবির দিকে তাকিয়ে বলল
_ ওর কথা সব মিথ্যে তাই না ?

ফারাবি মাথা ঝাঁকিয়ে ছোট করে বলল
_ নাহহ সব সত্যি। আমাদের বিয়ে তিন বছর আগেই হয়ে গেছে।

ফারহান ঝরা হাসলো। কেউ কিছু বোঝার আগেই ফারাবির মা আবার ফারাবি কে চড় মারলেন।
ক্ষুধার্ত বাঘিনীর মতো ঝাঁপিয়ে পরলেন ফারাবির ওপর।
এলোপাথারি থাপ্পড় দিতে লাগলেন।
ফারহান ফারাবি কে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে বলল
_ ব্যাস আর একটা আঘাত করবে না ওকে।
ততক্ষণ পর্যন্ত মারতে পারতে যতক্ষণ না ওহ আমার স্ত্রী ছিলো।
কিন্তু এখন ওহ আমার স্ত্রী, আর আমি আমার স্ত্রীর গায়ে আঘাত সহ্য করবো না।

ফারহানের চিৎকারে সবাই চমকে উঠলো।
সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। রিফাত ফারাবির মাথায় হাত রেখে চোখের পানি মুছে দিতে দিতে বলল
_ কেন ঝামেলা করছো সবাই।
ওরা যেহেতু বিবাহিত, তাহলে কেন ঝটলা পাকাচ্ছো ?

ফারাবির বাবা ক্ষীন গলাতে বললেন
_ আমরা এটা তোমার থেকে আশা করি নি ফারাবি।
আমাদের সম্মান এভাবে ছিইইই ভাবতেই ঘৃনা হচ্ছে তুমি আমার মেয়ে।

ফারাবি অবাক চোখে তাকালো । এটাই কি তার বাবা ?
যে বাবা ওকে নিয়ে গর্ব করতো। ফারাবি ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে বলল
_ আব্বু আমার কথা টা

_ কোনো কথা না ব্যাস তোমাকে নিজের মেয়ে ভাবতে পারছি না আমি।

ওনার গলা ধরে আসছে। ফারাবি ছলছল নয়নে তাকালো। ওর বাবা মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। ফারাবির আকাশে ঝড় বয়ে গেল।
এ যন্ত্রণা ও মেনে নিতে পারছে না।

ফারহান ভ্রু কুঁচকে বলল
_ ওকে কেন বলছো এসব ? ওর কোনো দোষ নেই এতে।

ফারাবির বাবা ক্ষীন গলাতে বললেন
_ তার মানে কি ? তোমাদের বিয়ে এমনি এমনি হয়ে গেল।

ফারহান তপ্ত শ্বাস ফেলে বলল
_ আমি ওকে জোড় করেছি। ইনফেক্ট কবুল বলতে চায় নি বলে চড় ও মেরেছি।

_ ফারহান আপনি

ফারাবি আর বলতে পারলো না। তার আগেই ফরহাদ চৌধুরী ফারহানের গালে সজোড়ে চড় বসিয়ে দিলেন।
ফারহান ছোট করে বলল
_ আব্বু
ফরহাদ চৌধুরীর শরীর কাঁপছে। ছেলের এমন আচারন ওনি ভাবতে ও পারেন নি। ওনার ছেলে একটা মেয়েকে জোড় করে বিয়ে করেছে।
ভাবতেই বিষাক্ততায় ভরে যাচ্ছে মন

রোমা চৌধুরী কেঁদে উঠলেন । ফারহানের দিকে আগাতেই ফরহাদ চৌধুরী বললেন
_ যদি তুমি ওর কাছে যাও তাহলে চৌধুরী মেনশনে তোমার কোনো জায়গা নেই।

ফরহাদ চৌধুরীর এমন কথাতে সবাই চমকে উঠলেন।
রোমা চৌধুরী সেই দিকে পাত্তা দিলেন না। ফারহান দূরে সরে গেল। হাত জোড় করে আসতে বারন করলো।

ফরহাদ চৌধুরী রাগে কটমট করতে করতে বললেন
_ আজ থেকে আমার এক ছেলে মারা গেছে ।
চলে যাও তুমি, তোমার সাথে আমাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই।

ফরহাদ চৌধুরী মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। ওনার শরীর খানিক টা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। ওনি সোফা তে ধপ করে বসে পরলেন।

ফারহান ধরতে গেলেই হাত দিয়ে বাঁধা দিলেন ।
রাফাজ কে বললেন
_ রাফাজ ওকে চলে যেতে বল। কোনো সম্পর্ক নেই আমাদের ।
আর এটা মাথা তে ঢুকিয়ে নে তোর ভাই মৃত।

ফারহান চোখ বন্ধ করে কথা টা হজম করলো। সবার দিকে এক পলক তাকালো। তারপর বিন্যা বাক্যে ফারাবির হাত ধরে চলে গেল।
সবাই বাঁধা দিতে চাইলো শুধু মাত্র ফারাবির মা , বাবা , মামা , মামি রিক আর ফারহানের বাবা বাঁধা দিলেন না।
অবশ্য রিক ফারাবি কে যেতে দিতে চায় নি তবে মায়ের ইশারায় থেমে যায়।
ফারাবি কাঁদতে কাঁদতে সবার দিকে চেয়ে রইলো।
ফারহান ওকে নিয়ে গাড়ি তে বসিয়ে চলে গেল। সবাই স্তব্ধ হয়ে রইলো।
ফারাবি কে নিয়ে যেতে বারন করার অধিকার এখন কারোর নেই।
তাই সবাই হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।
#স্বপ্নের_প্রেয়সী_সিজন_2
#ফাতেমা_তুজ
#part_30

একটা ছোট্ট ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে গাড়ি থামালো ফারহান । ফারাবি হেচকি তুলে কেঁদে যাচ্ছে । ফারহানের ভীষন রাগ হচ্ছে। ফারাবি কে জোড়ে ধমক দিয়ে দিলো। ফারাবি কেঁপে উঠলো , ভয় পেয়ে সাথে সাথে খানিকটা দূরে সরে গেল।
ফারহান লম্বা করে শ্বাস নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে ফারাবি কে নামিয়ে নিলো।
ফারাবি নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছে। ফারহানের বেশ খারাপ লাগলো । মেয়েটাকে এভাবে ধমক দেওয়া ঠিক হয় নি ওর।
ফারাবি নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। ফারহান ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে ধুম করে ফারাবি কে কোলে তুলে নিলো।
আচমকা এমন করাতে ফারাবি বোকা বনে গেল।
ফারহান ট্রেডি স্মাইল দিয়ে ফারাবি কে নিয়ে বাসার ভেতরে চলে আসলো।
ফারাবি কে কোলে করে ই সোজা উপরে চলে আসলো।
একটা গোছানো সুন্দর রুমে গিয়ে ফারাবি কে বেডের উপর বসিয়ে দিলো।
ফারাবি এখনো কেঁদেই চলছে। ফারহান হাঁটু গেড়ে বসে ফারাবির কোলে মাথা রেখে ধীর কন্ঠে বলল
_ আম সরি জান । আমি চাই না বকতে কিন্তু তোর চোখের পানি আমি সহ্য করতে পারি না।

ফারাবি মুখ ঘুরিয়ে নিলো। ফারহান ছলছল নয়নে তাকিয়ে রইলো। হয়তো মেয়েটা কিছু টা অভিমান করেছে। কিন্তু এই ছোট্ট অভিমান যে তার বুকে ঝর তুলে যাচ্ছে।
ফারহান চোখ বন্ধ করে লম্বা করে শ্বাস নিলো। ফারাবির হাত দুটো জড়ো করে অধর ছুঁইয়ে দিলো।
ফারাবির কোনো পরিবর্তন না দেখে ফারহান অনুনয়ের স্বরে বলল
_ আম সরি জান। তুই আমাকে একটু সময় দে আমি সব ঠিক করে দিবো।

ফারাবি হিচকি তুলতে তুলতে বলল
_ আপনি রিক ভাইয়ার বিষয়ে কিছু বললেন না কেন ?
সবাই আমাদের ভুল বুঝলো। আর আপনি কেন বললেন আমাকে জোড় করে বিয়ে করেছেন ?
আমি কি কখনো বলেছি আপনি আমাকে জোড় করে বিয়ে করেছেন।

ফারহান থমথমে মুখ করে তাকিয়ে উঠে দাঁড়ালো। ফারাবি হেচকি তুলতে তুলতে ফারহানের বুকে ঝাঁপিয়ে পরলো।
ফারহান অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো। ফারাবি নাক টানতে টানতে বলল
_ আমি আপনাকে ভালোবাসি । খুব ভালোবাসি , আপনি কেন বুঝেন না আমি আপনাকে হারাতে চাই না।
সেই দিন থেকেই ভালোবেসে ফেলেছি । জানি না তিন কবুলে কি শক্তি ছিলো। আমি মন থেকেই ভালোবেসে তিন কবুল উচ্চারন করেছি।
আপনি কেন বুঝলেন না আমাকে। আমি রাগ করি নি , আপনি চলে যাওয়ায় অভিমান করেছি।
আমি সারাক্ষণ ভয়ে থাকতাম আপনি আমাকে ভুলে যাবেন না তো।
যদি ফিরে এসে আমাকে কাছে টেনে না নিয়ে ফিরিয়ে দেন।
আমি এই সবেই পাগল হয়ে গিয়েছিলাম।
আমি ভালোবাসি আপনাকে, খুব ভালোবাসি খুব ভালোবাসি।

ফারাবি কাঁদতে কাঁদতেই ফারহানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
ফারহান হতবুদ্ধি হাড়িয়ে ফেলেছে। যে অপরাধবোধ ওকে কুরে কুরে খাচ্ছিলো আসলে সব ভুল।
মেয়েটা এক মুহুর্তেই ভালোবেসে ফেলেছিলো ওকে।
বিয়ে করেছিলো মন থেকে , ফারহানের দু চোখ অশ্রু তে ভরে উঠলো। সাথে ফুটে উঠলো এক চিলতে হাসি।
ফারাবি কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। ফারহানের বুকে চুমু খেয়ে ফারাবি বলল
_ আমি ভালোবাসি ফারহান। আপনাকে চাই আমার । আমি জানি আপনি সব ঠিক করে দিবেন ।
আমি পরিবার কে ছেড়ে আসাতে কষ্ট পাই নি। আমি কষ্ট পেয়েছি আপনি নিজেকে দোষারোপ করাতে।

ফারহান ছলছলে নয়নে তাকিয়ে সরস হাসলো। ফারাবির ঠোঁটের কোনে লজ্জা হাসি। ফারহান ফারাবির গালে অধর ছুঁইয়ে বলল
_ আমি সব ঠিক করে দিবো জান। রিক সবার চোখে যে পর্দা দিয়ে রেখেছে তা আমি টেনে খুলে ফেলবো।
একটু সময় লাগবে জান। এখানে আর ও তিনটে মেয়ের জীবন জড়িয়ে আছে।

ফারাবি চোখ মুছে মাথা ঝাঁকালো । ফারহান বিগলিত হেসে ফারাবির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল
_ তাহলে কিছু দিনের জন্য আমাদের পার্সোনাল একটা সংসার হয়ে যাক ?

ফারাবি এক গাল হেসে সম্মতি জানালো। ফারহান মোহনীয় হেসে ফারাবি গালে চুমু খেয়ে বলল
_ সাথে পূর্নতা ও ?

ফারাবি কেঁপে উঠে বলল
_ এই নাহহ

_ নাহহ মানেই হ্যাঁ জান।

ফারাবি বোকা চোখে তাকিয়ে রইলো। ফারহান রহস্য হেসে বলল
_ বর কে সহ্য করার জন্য তৈরি তো জান। আই নো দ্যাট আমার বউ এখন পিচ্ছি নেইহহ। সে এখন ফারহানের পরিপূর্ন স্ত্রী। যাকে হুটহাট চুমু খাওয়া যাবে , হুটহাট ভালোবাসা যাবে ।
নাক টিপে দিয়ে আদর ও করা যাবে।

ফারাবি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে বলল
_ আপনি
_ অসভ্য । এবার তোর বর কতোটা অসভ্য তা দেখাবো আমি।

বলেই বাঁকা হাসলো। ফারাবি হতবাকের মতো তাকিয়ে রইলো।

*

বাসার একের পর এক জিনিস ভেঙে চলেছে রিক। ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে ফারাবি কে ফারহান নিয়ে গেল।
সহ্য হচ্ছে না ওর , সব কিছু ধ্বংস করে দিতে ইচ্ছে করছে।

রিকের বাবা ছেলেকে আটকাতে চেষ্টা করে ও পারছেন না।
রিকের মা অদূরে চোখের পানি ফেলছেন। ছেলের এই করুন অবস্থা কিছু তেই মেনে নিতে পারছেন না ওনি।
এক মাত্র ছেলে ওনার। ছোট বেলা থেকে রাগি বদমেজাজি । তার জন্য এতো বড় শাস্তি পেতে হবে ওকে ?
মেয়েটাকে এতো ভালোবাসার পর ও কি না ধোঁকা দিলো।
বিয়ে হয়ে গেছে তারপর ও কেন বারন করলো না ওনাদের ?
কোনো দিন ই ক্ষমা করবেন না ওনি ফারাবি কে।

রিক কাউচ এর পাশে থাকা বড় ফ্লাওয়ার ভাস টাকে মিররে ছুঁড়ে মারলো। সঙ্গে সঙ্গে ঝনঝন শব্দ তুলে আয়না ভেঙে পরলো।
রিকের মা আওয়াজ শুনে দৌড়ে গেলেন । ছেলের পাগলামি দেখে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠলেন।

স্বামীর কাছে গিয়ে চিৎকার করে বললেন
_ কেন আমার ছেলের সাথে এমন টা হলো। ফারাবি যদি রাজি নাই থাকে তাহলে কেন তিনটে বছর আমার ছেলে টাকে আশা দিলো।
আমি জানি না কিচ্ছু আমার রিক কে শান্ত করো তুমি। যেভাবে পারো ঐ মেয়ে কে নিয়ে আসো।
আমার ছেলেটা মরে যাবে।

স্ত্রীর কথা তে ভ্রু কুঁচকে নিলেন রিকের বাবা। এটা কি আদৌ সম্ভব?
বিয়ে হয়ে গেছে ফারাবির এখন এই সবের কোনো মানেই নেই।
তিনি গম্ভীর কন্ঠে বললেন
_ দেখো ফারাবির বিয়ে হয়ে গেছে। আর তাছাড়া এভাবে জোড় করে কিছু হয় ?

_ কেন হবে না ? ফারহান ই তো বলল ফারাবি কে জোড় করে বিয়ে করেছে।
তাহলে আমার ছেলের বেলাতে কেন হবে না ?

_ দেখো আগে কি হয়েছে জানি না। তবে ফারাবি তো সব মেনে নিয়েছে।
নিশ্চয়ই ছেলে টাকে ভালোবাসে , আর আমি কি করে কি করবো ?

_ জানি না আমি। তুমি তোমার বোনের কাছে গিয়ে বলো ফারাবি কে নিয়ে আসতে।
তারপর আমার ছেলের সাথে বিয়ে দিতে।

_ এটা কি করে সম্ভব ?

_ সম্ভব সব সম্ভব, যদি জোড় করে বিয়ে মেনে নিতে পারে। তাহলে আমার ছেলে টাকে কেন মেনে নিতে পারবে না ?
তিন তিন টে বছর কেন আশা দিলো ?

_ তুমি বোঝার চেষ্টা করো

_ আমি কিচ্ছু

দরজা লাগানোর শব্দে চমকে উঠলেন ওনারা। রিক দরজা লাগিয়ে দিয়েছে। রিকের মা দৌড়ে গেলেন , দরজা ধাক্কাতে লাগলেন। কিন্তু রিক জোড় গলাতে বলল
_ আব্বু কে বলো ফুপির কাছে বলতে। না হলে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো।
ফারাবি কে আমার চাই ই চাই

রিকের বাবা দরজায় বারি দিতে দিতে বললেন
_ কিন্তু বাবা ওহ তো বিবাহিত। একটা বিবাহিত মেয়ে কে

_ আই ডোন্ট কেয়ার। ওহ বিবাহিত হলে ও আমার ওকে চাই।
ডিভোর্স দিবে ঐ ( ফারহানকে একটা অকথ্য ভাষায় গালি) কে।
আমি কিচ্ছু বুঝতে চাই না। না হলে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো।

ছেলের এমন কান্ডে ভয় পেয়ে গেলেন ওনি। ভারাক্রান্ত মন নিয়েই বললেন
_ আচ্ছা আমি দেখছি কি করা যায়।

দরজার ওপাশ থেকে রিক বাঁকা হাসলো। ফারাবি কে তো ওর চাই ই চাই। ঐ মেয়ের মিষ্টি ঘ্রান না নেওয়া অব্দি ওর শান্তি নেই।
যথাসম্ভব ফারাবি কে চাই ই চাই। তারপর দেখাবে রিক কি জিনিস ।

*

ফারহানের কাঁধে মাথা রেখে আছে ফারাবি। আর ফারহান এক হাতে ফারাবি কে জড়িয়ে আছে। ফারহানের ফোন এসেছিলো রিকের কিছু লোক কে হাত করে নিয়েছে ফারহান।
এখন সমস্ত ইনফর্মেশন কালেক্ট করতে হবে। কতো গুলো কপি আছে সেটাই বের করতে হবে আর তারপর ডিলেট।
ফারহান বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বলল
_ কোথাও ঘুরতে যাবি ?

_ উহুহ এভাবেই ভালো লাগছে।

_ সে যাই হোক। ড্রেস কালেক্ট করতে হবে তো। আমরা তো কিছু নিয়ে আসি নি।

_ অনলাইনে অর্ডার করে দিন।

_ আচ্ছা । ডিনার তো করতে হবে ? রেসট্রন এ যাবো না তাই ভাবছি আমি তোকে রান্না কে খাওয়াবো।

ফারাবি মাথা উঁচু করে বলল
_ আপনি রান্না জানেন ?

ফারহান আলতো হেসে মাথা ঝাকালো ।ফারাবি মুখ টা ছোট করে নিয়ে বলল
_ আমি কিচ্ছু পারি না।

ফারহান ভ্রু কুঁচকে থেকে ফারাবি কে কাছে টেনে বলল
_ উহুমম সমস্যা নেই।
তবে শিখে রাখা উচিত জান। এই ধর মাঝে মাঝে আমার ও তো ইচ্ছে করবে আমার মিষ্টি বউয়ের হাতের স্পেশাল রান্না খেতে।

বউ বলাতে ফারাবির লজ্জা লাগলো। ফারহান ভ্রু নাচিয়ে বলল
_ লজ্জা লাগে?

ফারাবি মাথা ঝাঁকালো। ফারহান এক গাল হেসে বলল
_ তাহলে তো বউ ই বলতে হবে। এই টুকটুকে ঠোঁটের কোনে লজ্জা হাসি আমি তো পাগল ই হয়ে যাবো।

ফারাবি কিছু টা দূরে সরে গেল। ফারহান মোহনীয় হেসে বলল
_ দূরে সরে লাভ নেই জান। কাছে টেনে নিবো আমি।
আমি তোর হবো তুই আমার হবি।

ফারাবি লজ্জায় লাল টুকটুকে হয়ে গেল । ফারহান কিছু না বলে ফারাবির গাঁয়ে গা ঘেঁষিয়ে বসলো।
ফারাবির অস্বস্তি হতে লাগলো। ফারহান মৃদু হেসে বলল
_ তাহলে রান্না টা করি চল ? দুজনে একসাথে রান্না করবো। সাথে আঁটা মাখিয়ে ভুত করে দিবো।

ফারাবি নাক কুঁচকালো। ফারহান তাড়া দিয়ে বলল
_ আট টা বেজে গেছে তাড়াতাড়ি চল।

ফারহানের পিছু পিছু ফারাবি নিচে চলে আসলো।

কিচেনে গিয়ে ফারহান শর্ট কার্ট করে বিরিয়ানির বসিয়ে দিলো।
ফারাবি হা হয়ে তাকিয়ে রইলো। ফারহান এক গাল হেসে ফারাবি কে নিয়ে ডয়িং রুমে চলে আসলো।
টিভি অন করে টিভি দেখতে লাগলো । ফারাবি চার পাশে চোখ বুলিয়ে নিয়ে বলল
_ এটা কি আপনার বাসা ?
_ উহুহহ
ফারাবি ভ্রু কুঁচকে বলল
_ তাহলে
_ তোর বাসা। এই বাড়ির দলিল তোর নামে।

ফারাবি অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো। ফারহান এক গাল হেসে বলল
_ এই বাড়ি টা শখ করে বানিয়েছিলাম। একদম পিচ্ছি একটা বাসা , যেটায় তুই আর আমি একান্তে সময় কাটাবো।
অবশ্য আমি এটা সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগেই বানিয়েছিলাম।
আব্বুর বিজনেস এ এক বছর ছিলাম আমি। সেখান থেকেই আমি একটা এমাউন্ট সেলারি হিসেবে নিতাম।
আর তারপর একটা বিজন্যাস এ টাকা ইনভেস্ট করেছিলাম ।
প্রফিটের টাকা দিয়েই এই বাসা টা বানিয়েছিলাম।
আর বিয়ের দিন যেই বাসায় নিয়ে গিয়েছিলাম সেটা ও আমার টাকাতেই বানানো।
তুই খেয়াল করিস নি রেজেস্ট্রি পেপারে এই প্রপার্টির পেপার ও ছিলো।

ফারাবি ভ্রু কুঁচকে বলল
_ এটার কি দরকার ছিলো। আমার এসব কিছু চাই না ।

_ কাবিন নামা তে ছিলো জান। আমি এই বাড়ি টা কাবিনে দিয়েছিলাম সাথে সারা জীবন তোর হাত ধরে থাকার প্রতিশ্রুতি।
আর ইউ নো দ্যাট কাবিন সঙ্গে সঙ্গে প্ররিশোধ করা উত্তম।

ফারাবি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। ফারহান লম্বা হেসে বলল
_ বাসা টা ঘুরে দেখবি চল। একদম ই পিচ্ছি একটা বাসা,কিউট পিচ্ছি বাসা । ঠিক তোর ই মতো।

ফারাবি মৃদু হাসলো। এই মানুষ টা পাগল ছাড়া আর কিচ্ছু হতে পারে না।

ফারহানের হাতে হাত রেখে ফারাবি পুরো বাসা টা ঘুরলো। ফারহানের কথা একদম ঠিক। এই বাসা টা একদম ই পিচ্ছি আর একটা কাপল এর জন্য বেস্ট।

বাসায় মাত্র দুটো বেড রুম রয়েছে। একটা উপরে আর একটা নিচে , উপরে বেড রুমের পরে লম্বা করিডোর।
আর করিডোরের সাথে বিশাল খোলা বারান্দা।
যেখানে বিভিন্ন বিদেশী ফুলের গাছ লাগানো সাথে দুটো দোলনা।
বাসার সামনে ছোট্র একটা ফুলের বাগান। আর বাড়ির পেছনে কয়েকটা ফোয়ারা সাথে বেঞ্চ বসানো।
বাসার পেছনে দুটো সোডিয়ামের লাইট লাগানো।
তাতেই চকচক করছে ফোয়ারার স্বচ্ছ পানি।

ফারহানের ফোন বেজে উঠলো। ফারহান কথা বলা শেষ করে লম্বা করে হেসে বলল
_ কাল সন্ধ্যা তে আমরা একটা ফাংশনে যাবো কেমন ?

ফারাবি মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানালো। চাঁদের আলো টা নিভু নিভু , বোধহয় দুই এক দিনের মধ্যে ই অমাবস্যা।
তবে তাঁরা গুলো মুক্তের মতো চকচক করছে।
ফারাবি ফারহানের দিকে তাকালো। কি অপূর্ব দেখতে লাগছে ফারহান কে। এই মানুষ টা সব সময় ই অমায়িক , অসাধারন আর সব থেকে বেশি ভালোবাসায় আর হাসি খুশিতে পূর্ন।
ফারহানের নামের অর্থ যেমন সুখী এই মানুষ টা কে ও সারা জীবন ওহ খুশি দেখতে চায়।
ফারহান ঝরা হেসে চোখ দিয়ে ইশারা করলো।
ফারাবি মাথা ঝাঁকিয়ে বোঝালো কিছু না।
ফারহান প্রানখোলা হাসিতে প্রেয়সী কে জড়িয়ে বুক ভরে শ্বাস নিলো।

**

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here