হঠাৎ ভালোবেসে ফেলেছি পর্ব ২৫+২৬

#হঠাৎ_ভালোবেসে_ফেলেছি💕
The_unexpected_love
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন
Part-25

আকাশে ঘেম জমেছে।সাদা সাদা তুলোর মতো মেঘ।অনেক ঘেম।সেই মেঘের ফাকেও যেনো কোথাও রোদের এতোটুকু কমতি নেই। উত্তাপ রোদেলা দুপুরে আহসান বাড়িতে ছোটাছুটি সবার।ঘড়ির কাটা এগারোর ঘরে।

প্রীতির ঘর ফাকা।একদম ফাকা। শুধু ও ছাড়া আর কেউ নেই।কনের ঘরেতে সাধারণত অনেক মানুষই এসে ভিড় জমায় কিন্তু প্রীতির তাতে কড়া নিষেধ।

জানালায় পাশে দাঁড়িয়ে এক মনে বাইরে বাচ্চাদের ছোটাছুটি দেখছে প্রীতি। এই বাচ্চাদের ছোটাছুটি ই যেনো পরিবেশ টাকে হৈ চৈ ও উৎসবমুখর করে তুলেছে।

আজ প্রীতির গায়ে হলুদ।একটু পরেই হয়তো এসে নিয়ে যাবে ওকে হলুদ দেওয়ার জন্য।রমনী সবার হাতেই মেহেদী আর পড়নে হলুদ জামা নয়তো শাড়ি।শুধু প্রীতির হাতেই মেহেদী নেই। হলুদ শাড়ি বা জামা সে কোনোটাই পড়ে নি।ওই যে মানুষ বলে না,’যার বিয়ে তার হুস নেই। পাড়া পড়শির ঘুম নেই’।ব্যাপারটা ঠিক ওইরকম।

প্রীতি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিছানায় গিয়ে বসলো।পড়নে একটা নরমাল জামা সাদা কালারের।মুখটা শুকনো হয়ে আছে।ওকে দেখলেই বুঝা যায় ও খুব কেদেছে খুব….প্রীতি হাটুতে মাথা ঠেকিয়ে একদৃষ্টিতে কিছুক্ষন অন্যদিকে তাকিয়ে থাকলো।এর মাঝেই রুমে প্রবেশ করলো রাফিয়া আহসান আর স্নেহা।স্নেহার হাতে নানান রকমের হলুদ শাড়ি আর গয়নাগাটি।

প্রীতি একবার সেদিকে তাকিয়ে আবার অন্যদিকে চেয়ে রইল।রাফিয়া আহসান একবার স্নেহার দিকে তাকিয়ে ইশারায় ওগুলো রাখতে বলল।স্নেহাও শাশুড়ী মায়ের কথা শুনে বিছানার এক কোণায় জিনিসপত্র গুলো রেখে এসে প্রীতির পাশে বসলো।

রাফিয়া আহসান মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠলেন,

-মা,একটু পর তোমার গায়ে হলুদ এই হলুদ শাড়ি টা পড়বে?

প্রীতি একবার মুখ তুলে মায়ের দিকে তাকালো।তারপর আবার শাড়িগুলোর দিকে তাকালো।

রাফিয়া আহসান মেয়ের সামনে শাড়ি গুলো ধরে বলে উঠলো,

-দেখো, এখানে হলুদ রঙের মধ্যে অনেক রকমের শাড়ি আছে তোমার যেটা পছন্দ হয় সেটাই পড়ো।একটু পর তোমার গায়ে হলুদ।হলুদ লাগাতে হবে যে।

প্রীতি নিজের মুখের সামনে থেকে শাড়ি গুলো সরিয়ে দিলো।আর বলে উঠলো,

-আমি এখন যেটা পড়ে আছি সেটাই পড়ে থাকবো।আর আমি কোনো গায়ে হলুদ টলুদ করবো না।এসব আমার ভালো লাগে না।

স্নেহা এবার মুখ খুলল,

-এটা নিয়ম । এসব করতে হয়।

প্রীতি কঠোর ভাবে জবাব দিলো,

-আমি করবো না।

রাফিয়া আহসান মেয়ের কথায় কিছু বললেন না।এমনিতেই তার মেয়ে কাল বিয়ে করে শশুড় বাড়ি চলে যাবে ভাবলেই তার বুকটা কেপে উঠে।এর মধ্যে মেয়েকে ধমক দেওয়ার বা কথা শুনানোর তো প্রশ্নই আসে না।
রাফিয়া আহসান মেয়েকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসলেন। বুকে টেনে নিলেন মেয়েকে ।প্রীতি মায়ের বুকে চুপটি করে বসে থাকলো।কান্না গুলো বাধ ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাইছে।বার বার বলতে চাইছে ও, “মা আমি এই বিয়ে করবো না মা।” কিন্তু বাবা মায়ের সম্মানের দিকে তাকিয়ে সে কিচ্ছু বলতে পারছে না।

রাফিয়া আহসান মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

-একটু হলুদ মাখো, মা।বেশি না একটু। শুধু আমিই আর স্নেহাই তোমায় হলুদ মাখাবো আর কেউ না।একটু গালে ছোয়া লাগাবো শুধু।

প্রীতি মায়ের এমন অনুরোধের সুরে কথা শুনে ঠোঁট চেপে কান্না আটকিয়ে মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো।আর বলে উঠলো,

-একটুই কিন্তু। শুধু দু গালে লাগাবা।আর যদি শরীরের কোথাও লাগে তাহলে কিন্তু আমি বিয়েটাই করবো না।

রাফিয়া আহসান মেয়ের এমন কথায় হেসে বলে উঠলেন,

-আচ্ছা। আমার পাগলী মাটা।

প্রীতির কপালে চুমু দিয়ে স্নেহাকে ইশারায় কিছু বুঝিয়ে তিনি চলে গেলেন।

শাশুড়ী মা যেতেই স্নেহা হামলে পড়লো প্রীতির উপর।তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে বলে উঠলো,

-তোর কি হয়েছে বল তো?কাল মেহেদী ও দিলি না।আজ গায়ে হলুদ ও করতে চাইছিস না।তুই কি কাউকে ভালোবাসিস?

সেনার ভ্রু কুচকানো প্রশ্নে প্রীতি মাথা নাড়ালো যার অর্থ না।স্নেহা বলে উঠলো,

-কাউকে ভালোবাসিস না তাহলে তনয় ভাইয়াকে বিয়ে করতে তোর কি সমস্যা?

প্রীতি ছলছল দৃষ্টিতে স্নেহার দিকে তাকালো।স্নেহার আত্মা ধুক করে উঠলো।স্নেহা প্রীতিকে অনেক ভালোবাসে।স্নেহা প্রীতিকে কাছে টেনে নিয়ে বলল,

-কি হয়েছে বল আমায়।

প্রীতি ধরা গলায় বলে উঠলো,

-আমি জানি না…আমি কিচ্ছু জানি না। আমি কেনো এই বিয়ে ভাঙতে চাই তাও জানি না।কিন্তু আমার না বুকে অসম্ভব জ্বালা করছে।যেই জ্বালা পুরো শরীর জুড়ে ঘুরে বেরাচ্ছে।আমার তনয়কে ভালো লাগে না, স্নেহা।আমি এই বিয়েটা করতে চাই।

স্নেহা প্রীতির দু কাধ ধরে উপরের দিকে তুলে বলল,

-আমি আগেই তোকে বলেছিলাম প্রীতি। তুই তখন বলেছিলি যে বিয়ে ভাঙলে বাবা মা কষ্ট পাবে।তখন যেহেতু এটা ভেবে বিয়েটাকে মানতে পেরেছিস।তাহলে আজ কেনো মানতে পারছিস না?আজ এই গায়ে হলুদের দিন তুই কেনো নিজের মন কে বুঝাতে পারছিস না?কেনো বাবা মায়ের সম্মানের কথা ভাবছিস না?তুই কি কাউকে ভালোবাসিস প্রীতি? ঠিক করে বল।আমি তোর চোখে অন্যকিছুর কষ্ট দেখতে পারছি।

প্রীতি ঠোঁট টিপে কান্না আটকানোর চেষ্টা করলো তবুও অগত্যা চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো।কাপা কাপা গলায় ও বলে উঠলো,

-আমি জানি না স্নেহা।আর আমি কাকে ভালোবাসবো?এমন কোনো মানুষ তো নেই।কিন্তু হ্যা,কোনো কিছুর জন্য অজানা কারনেই আমার খুব কষ্ট হচ্ছে খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে রে স্নেহা।

বলেই প্রীতি বাধ ভাঙা কান্নায় ভেঙে পড়লো।প্রীতিকে বুকে জড়িয়ে ধরে স্নেহা বলল,

-আমার আর তোর ভাইয়ার বিয়েও কিন্তু ভালোবাসার প্রীতি।আমি বুঝতে পারছি তুই কারোর প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছিস।অনেক আগেই হয়ে পড়েছিস।কিন্তু সেটা আজ উপলব্ধি করতে পারছিস।কিন্তু বুঝতে পারছিস না।

স্নেহা কিছুক্ষন চুপ থেকে ধরা গলায় বলে উঠলো,

-তোর ভাইয়া আমার সাথে কথা বলে না প্রীতি।

প্রীতি মুখ তুলে তাকালো স্নেহার দিকে।চোখে প্রশ্নবোধক চিহ্ন। স্নেহা একটু হেসে বলে উঠলো,

-তার মতে,এতো তাড়াতাড়ি কেনো তার বোনকে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে?তার বোন এখনো অনেক ছোটো। এতো তাড়াতাড়ি তার বোনকে কেনো বিদায় করা হচ্ছে?বাবা মাকেও তোর ভাইয়া বলেছে কিন্তু এই সময়ে বাবা মা কি করতে পারবে বল?কিছু করতে না পেরে ঘরে এসে আমি কিছু বলতে না বলতে রাগারাগি শুরু করে দিয়েছে।কাল রাতেও আমরা আলাদা থেকেছি।

স্নেহা এবার প্রীতির দিকে ঘুরে তাকিয়ে চোখে পানি নিয়ে বলে উঠলো,

-আচ্ছা এখানে কি আমার কোনো ভূমিকা আছে বল তো?আমি কি করেছি?

প্রীতি কেদে উঠলো। স্নেহাকে জড়িয়ে ধরে বলে,

-স্যরি রে আমার জন্য তোদের এতো সমস্যা হচ্ছে আমি ভাইয়ার সাথে আজ ই কথা বলবো।তুই কষ্ট পাস না।

স্নেহা প্রীতিকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে চোখের পানি মুছে বলল,

-তুই আমার ও বোন।বোনের থেকে কোনো অংশেই তুই আমার কম না বুঝেছিস?তোর জন্য আমি সব কিছুই করতে পারবো।তোর ভাইয়াকে কিছু বলতে হবে না।এখানে তোর কোনো দোষ নেই।যাই হোক,আয় তুই এখন আমার সাথে।কাপড় তো বদলাবি না?

প্রীতি মাথা নাড়ালো। স্নেহা বলে উঠলো,

-তাহলে আয়।

প্রীতি -তুই যাহ..আমি আসছি।

স্নেহা যেতেই প্রীতি হাটুতে মুখ গুজলো।চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। এতো কেনো কষ্ট হচ্ছে আমার?আমি তো জানতাম আমার বিয়ে তনয়ের সাথে হবে।এতোদিন যখন কষ্ট হয় নি।আজ কেনো এতো কষ্ট হচ্ছে?

ভেবেই প্রীতির চোখের জল আরো মোটা মোটা হয়ে পড়তে শুরু করলো।চাপা কান্নার স্বর ভাসতে লাগলো সারা ঘরময়।প্রীতি ঠোঁট টিপে কান্না আটকানোর বৃথা চেষ্টা করলো।প্রীতির গাঢ় বাদামি চোখজোড়া পানিতে টইটুম্বুর।কেউ একজন একদিন বলেছিলো প্রীতিকে,”এই গাঢ় বাদামি চোখ জোড়ায় পানি একদমই মানায় না শুধুই হাসি মানায়।তুমি সবসময় হাসবে।”

প্রীতি আবারো ডুকরে কেদে উঠলো।চোখ জোড়া বন্ধ করলো। সাথে সাথে চোখের সামনে এক জোড়া নীল চোখ ভেসে উঠলো।

প্রীতি চোখ টা খুলে ফেলল।বুকে হাত দিলো।হার্ট অস্বাভাবিক গতিতে ছুটছে।প্রীতি সামনের দিকে তাকিয়ে একটা কথাই ভাবছে,

-কি হলো এটা?কার চোখ দেখলাম আমি?কেনো দেখলাম?এই চোখ আমার চেনা।অনেক চেনা।কিন্তু কার চোখ এটা?

__________________________________

নীলা চৌধুরী নীলাভের ঘরে এসে বলে উঠলো,

-রেডি হ।প্রীতির গায়ে হলুদ আমাদের যেতে হবে।

আচমকা হঠাৎ করেই এমন কথা শুনে নীলাভ চমকে তাকালো।চোখে তার অবাকতা।তার মা কি করে এটা বলছে ভেবে পাচ্ছে না নীলাভ।

নীলাভ মায়ের থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে শক্ত গলায় বলে উঠলো,

-আমি যাবো না। তুমি যাও মা।

নীলা চৌধুরী এমন কিছুই আশা করেছিলেন নীলাভের থেকে।তিনি নিজেও যেতে চান নি কিন্তু সকাল থেকে রাফিয়া আহসান আর প্রনয় চৌধুরী বহুবার ফোন করে তাদের আসতে বলেছে।এবার না গেলে বিষয়টি বেশি খারাপ হবে এর জন্যই নীলা চৌধুরী নীলাভকে ডাকতে এসেছিলেন।ছেলের এমন উত্তর শুনে নীলা চৌধুরী বলে উঠলেন,

-কেনো? কেনো যাবি না?ভয় পাচ্ছিস?

নীলাভ চোখ তুলে মায়ের দিকে তাকালো।না..তার মায়ের দৃষ্টি অনেক কঠিন।এই দৃষ্টিতে সে তাকিয়ে থাকতে পারবে না।

নীলা চৌধুরী আবার বলে উঠলেন,

-ভালোবাসা নিজের থেকে হারানোর ভয় পাচ্ছিস?অন্যকারো হয়ে যাবে তা নিজের চোখে কীভাবে দেখবি সেই ভয় পাচ্ছিস?তুই কবে এমন ভিতু হলি রে। নিজের ভালোবাসা যখন অন্যের কাছে বিলিয়েই দিচ্ছিস তখন এতো ভয় কেনো পাচ্ছিস।ভালোবাসাকে ছেড়ে দেওয়ার সময় এই কথাগুলো মনে ছিলো না?তুই বলতে পারবি তুই কীভাবে প্রীতির মুখোমুখি হবি?বহুবছর পর হঠাৎ কোনো একদিন যদি তোর সাথে ওর দেখা হয় নিজেকে সামলাতে পারবি?

নীলাভ মায়ের দিকে তাকালো।নীলা চৌধুরী ছেলের চোখের দিকে তাকিয়ে আর কিছু বলতে পারলেন না।এই চোখে যে তিনি অনেক কষ্ট দেখতে পারছেন। অনেক মায়া এই চোখে।অনেক অনুরোধ।এই নিল বর্নের চোখজোড়া যেনো বলছে,”মা,আর বলো না।এবার থামো।আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে, মা।”

নীলা চৌধুরী অন্যদিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন,

-তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিচে নেমে এসো। আমি আর কোনো কথাই শুনতে চাই না।সারাটা জীবন তো তোমার আর তোমার বাবার কথাই শুনে এলাম।এবার থেকে আর তা হবে না।আমি যা বলবো তাই শেষ কথা।পাচ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে নিচে নেমে আসবা।এক মিনিট দেরি হলে আজ এই চৌধুরী বাড়ি ভেঙে আমি গুড়িয়ে দেবো।এরপর দেখি কি হয়?চুলোয় যাক সব।

নীলা চৌধুরী ঘর ছাড়লেন।

নীলাভ এখনো মায়ের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইল।এতোবছরে এই প্রথম নীলাভ তার মাকে এতো কঠিন হতে দেখলো।এতো শক্ত গলায় শক্ত ভাষায় কথা বলতে দেখলো।দু দিন ধরে নীলাভের মনে হচ্ছে এই মাকে সে চিনে না।কথায় কথায় ধমক দেয় শক্ত গলায় কথা বলে এই মাকে সে চেনে না।তার মা তো ছিলো একদম নরম সহজ সরল। কর্পূরের মতো ছিলো তার মা। কিন্তু হাওয়ায় মিলতো না।তাদের সাথেই থাকতো।
#হঠাৎ_ভালোবেসে_ফেলেছি💕
The_unexpected_love
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন
Part-26

চারিদিকে মানুষের ছোটাছুটি। হলুদে হলুদে ভরে উঠেছে আহসান বাড়ির বাগান।

হলুদ ফুল দিয়ে স্টেজ ডেকোরেশন করা।সারা বাগান হলুদ কাপড় দিয়ে ঘেরাও করা।উপরে গাদা ফুল লাল গোলাপ আরও নানানধরনের নাম না জানা হলুদ ফুলে ছাউনির মতো করে বাধাই করা।নারীদের গায়ে হলুদ শাড়ি জড়ানো।ছোট বাচ্চাদের গায়েও হলুদ জামা-কাপড়।বাড়ির ছেলেদের গায়েও হলুদ পাঞ্জাবি।

এতো হলুদের মাঝে প্রীতিই শুধু সাদা রঙের একটা সিম্পল জামা পড়া।কনেকে এমন ভাবে দেখে সবাই আশ্চর্য। কিন্তু মুখে কেউ কিছু বলার সাহস জুগাচ্ছে না।

প্রীতির চোখ সামনে স্থির।একদম নিস্তেজ হয়ে আছে ও।সব কিছু ছেড়ে দিয়েছে।যেদিকে যায় এখন জীবন গড়িয়ে।সামনের শূন্যের পানে দৃষ্টিতে হঠাৎ ই নীলাভের মুখ ধরা দিলো ।প্রীতি সেদিকে মাথা ঘামালো না।ভ্রম ভেবে উড়িয়ে দিলো।কিন্তু না, ক্রমাগত মুখটা ওর দিকেই এগিয়ে আসছে।প্রীতি এবার ভালো করে তাকালো।হ্যা,নীলাভ এসেছে তার পাশে নীলা চৌধুরী।

নীলাভের গায়ে সাদা শার্ট।চোখ সামনের প্রীতির দিকে স্থির।নীলা চৌধুরী আর নীলাভ স্টেজে এসে ওদের কাছে দাড়ালো।নীলাভ এখনো প্রীতির দিকে তাকিয়ে আছে।রাফিয়া আহসান নীলা চৌধুরীর সাথে কুশল বিনিময় করলেন।

এরপর নীলাভের উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন,

-কেমন আছো বাবা?

নীলাভ শুকনো গলায় বলল,

-ভালো আছি আন্টি। আপনি?

রাফিয়া আহসান খুশি হয়ে বললেন,

-আমিও ভালো আছি।

রাফিয়া আহসান কি ভেবে বলে উঠলেন,

-তুমি ই প্রীতিকে আগে হলুদ লাগাও আজ,বাবা।

নীলাভ একবার হলুদের বাটিটার দিকে তাকালো আরেকবার প্রীতির দিকে।মাথা নিচু করে প্রীতির দিকে না তাকিয়ে সে বাটি থেকে হালকা একটু হলুদ নিয়ে নিস্তেজ হাতে অনুভবহীন অনুভূতিহীন ভাবে প্রীতি গালে ছুয়ালো।

প্রীতি কেপে উঠলো।সর্বাঙ্গে বিদ্যুৎ খেলে গেলো তার।চট করে সে তাকালো নীলাভের দিকে।প্রীতির অবাকতার চোখের দিকে নীলাভ একটাবার ও তাকালো না।

প্রীতি কাপা কাপা হাত দিয়ে নিজের গাল থেকে একটু হলুদ নিয়ে নীলাভের গালে মাখিয়ে দিলো।আচমকা এমন হওয়ার নীলাভ চোখ বন্ধ করলো।দু এক কদম পিছিয়ে গেলো।প্রীতির দিকে চোখ মেলে তাকালো।সব যেনো থমকে গেছে।আশেপাশের কোনো কিছুই যেনো দুজনের মাথায় ঢুকছে না।

উপস্থিত সবাই তাকিয়ে আছে ওদের দিকে।দুজনের হলুদ মাখানো টুকুতে যেনো ওরা কোনো কষ্টের সুর পাচ্ছে।

নীলাভ নড়েচড়ে উঠলো।পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হাসি মুখে নীলাভ বলে উঠলো,

-মিস.ঝামেলা কংগ্রাচুলেশন আগামী দিনের জন্য।

প্রীতি ও জোরপূর্বক হেসে বলে উঠলো,

-থ্যাংক ইউ গোমড়ামুখো।

সবটাই যেনো রাফিয়া চৌধুরীর মাথার উপর দিয়ে গেলো।তিনি অবাক কন্ঠে বলে উঠলেন,

-ঝামেলা?গোমড়ামুখো?

প্রীতি মায়ের প্রশ্নের জবাবে আস্তে করে বলে উঠলো,

-মা ইনি সেই। যার কথা আমি তোমাকে বলেছিলাম।

রাফিয়া আহসান -কার কথা?

প্রীতি -ওই যে বান্দরবানের ছেলেটা।এই সেই লোক।

রাফিয়া আহসানের মুখটা মিনিটখানিকের জন্য হা হয়ে গেলো।উৎফুল্ল কন্ঠে বলে উঠলো,

-এই সেই ছেলে!নীলাভই সেই ছেলে।

নীলাভ ছোট করে উত্তর দিলো,

-হু..আন্টি।

রাফিয়া আহসানের নীলাভকে প্রথম দিন থেকেই ভালো লাগে।তিনি যদি পারতেন তাহলে সেই কবেই তনয়ের সাথে বিয়েটা ভেঙে দিয়ে নীলাভের সাথে প্রীতির বিয়ে ঠিক করতেন।তার উপর এই সেই বান্দরবানের ছেলে।
ছেলেটা ভারী সুন্দর!
ভেবেই রাফিয়া আহসানের মনটা খারাপ হয়ে গেলো। আপসোসে ভরে গেলো।

নীলাভ ওদের মাঝে থেকে এক্সকিউজ মি বলে স্টেজ থেকে নেমে পড়লো।নীলা চৌধুরী সবটাই শুধু দেখে গেলেন।কিচ্ছুটি বললেন না।কি বা বলবেন তিনি?

_______________________________

ঝলমলে আলোয় চারিদিকে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।শত শত লাইটের আলোয় চারিদিকে ঝিলিক দিয়ে উঠছে। সবার মনে খুশি।সবার উৎফুল্লতায় উৎসব আরো আনন্দমুখর হয়েছে।
আজ প্রীতির বিয়ে।কাল গায়ে হলুদের পর পর ই সবার অগোচরে নীলাভ চলে গেছে।রাফিয়া আহসানের অনেক জোড়াজুড়িতে আর না পেরে নীলা চৌধুরীকেও থাকতে হয়েছে।যেতে পারেন নি তিনি।

,

বারান্দার বড় গোলাকৃতি সিঙ্গেল সোফায় বসে একমনে বাইরে চেয়ে আছে নীলাভ।তার মন খারাপ।মন খারাপ করাটাই স্বাভাবিক।কিন্তু তার ভিষণ রকম মন খারাপ আর কষ্ট। এতো কষ্ট যে চোখ থেকে পানি পড়ছে না।ছেলেদের চোখের পানি অবশ্য অনেক দুর্লভ।তেমনি নীলাভ কাদছে না ঠিকই কিন্তু তার মনটা বড্ড কাদছে।অনেক বেশি কাদছে।রক্তক্ষরণ হচ্ছে।আঘাতে আঘাতে ক্ষত বিক্ষতের পরেও মনে হচ্ছে আরো আরো ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে।এর কোনো শেষ নেই।

ফোনের বিকট অসহ্যকর আওয়াজে নীলাভের ধ্যান ভাঙলো।বুকের চিনচিন ব্যাথাটাকে এক পাশে রেখে সে ফোনের দিকে তাকালো।

ফোনের স্কিনে ‘প্রনয় আহসান’ নামটা দেখেই ভ্রু খানিক কুচকে গেলো।নীলাভ ফোন রিসিভ করে কানে রাখতেই প্রনয় আহসান বলে উঠলো,

-কোথায় তুমি বাবা?

নীলাভ-আংকেল আমি বাসায়।

প্রনয় আহসান-তুমি বাসায় কেনো?কাল না কি এসেছিলে? এতো ব্যস্ত ছিলাম যে খেয়াল ই করি নি।যাই হোক এখন তাড়াতাড়ি এসে পড়ো একটুপর প্রীতির বিয়ে।

নীলাভ অনেক কিছু বলতে চাইছে।অনেক কিছু।কিন্তু কিছু বলতে পারছে না।সব কথা এসে গলায় আটকে গেলো।কাপা কাপা গলায় নীলাভ বলে উঠলো,

-আংকেল আমার একটু কাজ আছে।অফিসের কাজ।আসলে নতুন অফিসে বসেছি তো তাই কাজের প্রেসার অনেক।

নীলাভকে আর কিছু বলতে না দিয়ে প্রনয় আহসান বলে উঠলেন,

-এমন একটু কাজ থাকবেই বাবা।তাই বলে কি সবকিছু বাদ দিবে?আর একদিন একটু অফিসের কাজ বাদ দিলে এতোটাও ক্ষতি হবে না এসে পড়ো তো। তাড়াতাড়ি আসো।

নীলাভ কিছু বলতে চাইলেই।প্রনয় আহসান বলে উঠলেন,

-আর কোনো কথা নয় এসো তাড়াতাড়ি তোমার বাবাও এখানে মাও এখানে তুমি একা একা বাসায় কি করবে?যলদি এসে পড়ো।

নীলাভ ফোন রেখে দিলো।ফোন রেখে দিয়ে দীর্ঘশ্বাস নিলো।চোখটাকে মিনিট পাচেঁক বন্ধ করে রেখে কালকের মায়ের কথাগুলো সে স্মরন করলো।

________________________________

বউ সেজে বসে আছে প্রীতি। বাবা মার মন মতো সেজেছে সে।শাড়ি কাপড় গয়নাগাটি সবকিছু দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে প্রীতিকে।চারিদিকের লাইটের আলোয় প্রীতির শাড়ির পাথর গুলো চিকচিক করে উঠছে।ঘরে অনেক লোকজন। বয়স্ক মহিলা থেকে শুরু করে কিশোরী পর্যন্ত মানুষের অভাব নেই।সবার কতো কথা কত হাসি ঠাট্টা মজা।আর প্রীতি একপাশে জড়োসড়ো হয়ে বসে ভেবে যাচ্ছে,

-সে আর তার বাবা মার কাছে যখন তখন আসতে পারবে না।এরপর থেকে আসতে হলে অন্য কারোর পারমিশন নিয়ে আসতে হবে।যখন তখন যেখানে সেখানে যেতে পারবে না।হুটহাট বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে নীলাভের মতো কারো সাথে আর দেখা হবে না আর কখনো।উঠে দাড়াতেও এখন অন্যজনের পারমিশন নিতে হবে।বসতে হলেও অন্য আরেকজনের পারমিশন নিতে হবে।

‘বর এসেছে বর এসেছে’ চিল্লাতে চিল্লাতে বাচ্চারা ছুটাছুটি করছে।প্রীতি তার ভাবনার সুতা এখানেই টানলো।সারা শরীর অজানা ভয়ে কেপে উঠলো।মুহুর্তেই ঘামতে শুরু করলো শরীর।এ মুহুর্তে আর অন্যকোনো কিছু তার মাথায় আসছে না শুধু একটা কথাই মনে হচ্ছে ‘সে কি করে থাকবে তনয়কে বিয়ে করে।আদেও কি তাদের মতের মিল কখনো হবে?’

,

অতিথিদের আসনে বসে একমনে ফোনের স্কিনে প্রীতির ছবির দিকে তাকিয়ে আছে নীলাভ। প্রীতির ছবিতে হাত বুলাতে বুলাতে নীলাভ বিরবির করে বলে উঠলো,

-কিছু ভালোবাসা প্রকাশ করতে নেই বুঝলে?যেমন আমি পারলাম না প্রকাশ করতে।কারন তুমি তো আমায় ভালোই বাসো না।বাসলে কি আর বিয়ে করতে বলো?তোমার হবু বরকে না আমার দেখতে খুব ইচ্ছে করছে জানো?আচ্ছা সে কি আমার থেকেও সুন্দর? অনেক বেশি সুন্দর?

নীলাভ মাথা তুলে তাকালো।আর কিছু বলতে পারছে না সে।মাথাটা ঝিমঝিম করছে।এক গ্লাস পানি হলে ভালো হতো।

নীলাভ এদিক ওদিক তাকাতেই ওর চোখ দরজার দিকে পড়লো।তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো।মুখে বিস্ময়ের ছাপ।

নীলাভ আরেকবার ভালো করে তাকালো।ওর কপালের রগ ফুলে উঠেছে।মুখ রক্তিম লাল আভা ধারন করেছে।নীলাভ হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দাতে দাত চেপে দাঁড়ালো।

মাথায় পাগড়ি পড়ে গোল্ডেন আর লাল কালার শেরওয়ানি পড়ে বর সেজে ভেতরে প্রবেশ করছিলো তনয়।কাউকে দেখে সে থমকে দাড়ালো।চোখ টা মুহুর্তেই ভয়ংকর হয়ে উঠলো।হিংস্রতা ক্রোধ হিংসা সেই চোখে। তনয় দাতে দাত চেপে এগিয়ে গেলো।

নীলাভের সামনে দাঁড়িয়ে বাকা হেসে তনয় চাপা স্বরে বলে উঠলো,

-কি রে তুই এখানে?কখনো আমার পিছ ছাড়বি না তাই না?আমার বিয়ে খেতেও চলে এসেছিস?আই লাইক ইট। যা..খেয়ে যা।এমন অনেক মানুষদের ই আমি খাওয়াচ্ছি।

নীলাভ একটু হেসে তনয়ের কানের কাছে গিয়ে বলল,

-তোদের মতো কুকুরের কাছে থেকে নীলাভ চৌধুরীর খেতে হবে না।এতোটাও খারাপ দিন তার আসে নি।আমার হাতের মারের কথা গুলো বোধ হয় তুই ভুলে গেছিস।আমাকে তো চিনিস না কি?বর বলে যে তোকে খাতির করে ছেড়ে দিবো তা কিন্তু না।এখানে এই মুহুর্তে তোকে মারতেও আমার দ্বিতীয় বার ভাবতে হবে না।

তনয় হাত তুলতেই নীলাভ তনয়ের হাত ধরে ফেলল।এমন ভাবে ধরলো যে তনয় ব্যাথা পাচ্ছে।নীলাভ আশেপাশে তাকিয়ে একটু জোরপূর্বক হাসলো।সবাই ভাবছে ওরা এমনি কথা বলছে।

তনয় নিজের হাত টা ছাড়িয়ে নিয়ে পাগড়িটা ঠিক করে একগুচ্ছ তেজি দৃষ্টি নীলাভের উপর তাক করে চলে গেলো।

তনয়ের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নীলাভ বলে উঠলো,

-তনয় প্রীতির হবু বর?ওর সাথে প্রীতির বিয়ে হচ্ছে?ইম্পসিবল এটা হতে পারে না।এমন একটা ছেলের সাথে প্রীতির বিয়ে হতে পারে না।

নীলাভের চোখটা রক্তবর্ণ ধারন করলো।চোখে তার লাল রগ ভেসে উঠেছে।নীলাভ প্রনয় আহসানকে খুজতে লাগলো। কিন্তু কোথাও খুজে পাচ্ছে না প্রনয় আহসান কে।

শেষে প্রনয় আহসানকে নীলাভ ফোন লাগালো।আশেপাশে বিয়ের সানাই আর গান বাজনার শব্দে কিছুই শুনা যাচ্ছে না।প্রনয় আহসান কিছুই শুনতে পারছেন না।শুধু হ্যালো হ্যালো করছেন।

প্রনয় আহসানকে ফোন দিয়েও কোনো লাভ ই হলো না।
নীলাভ এবার রাফিয়া আহসানকে খুজতে শুরু করলো।

রাফিয়া আহসান হন্তদন্ত হয়ে কোথাও যাচ্ছিলেন।নীলাভ ডেকে উঠলো।রাফিয়া আহসান পিছন ফিরে তাকিয়ে বললেন,

-হ্যা বাবা বলো। তাড়াতাড়ি বলো বাবা।আমার অনেক কাজ।

নীলাভ -আন্টি আসলে…

রাফিয়া আহসান -কি বলবে বাবা বলো?

নীলাভ -আন্টি প্রীতির বিয়ে তনয়ের সাথে?

রাফিয়া আহসান-হ্যা কেনো বাবা?

নীলাভ -মানে আপনারা ওর সাথেই ঠিক করেছেন?

রাফিয়া আহসান এবার একটু বেশ অবাক হয়ে বলে উঠলেন,

-হ্যা,আমরা সবাই মিলেই ঠিক করেছি।প্রীতি ও তো ছোটো থেকেই চেনে জানে তনয়কে।প্রীতির ও তো মত আছে এই বিয়েতে।তাছাড়া প্রীতিও ভালোবাসে তনয়কে।

নীলাভের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেলো।গোটা আকাশটা যেনো মাথায় ভেঙে পড়লো।নীলাভ কাপা কাপা গলায় বলে উঠলো,

-প্রীতি ভালোবাসে?

রাফিয়া আহসান অদ্ভুতের মতো ভঙ্গিতে বলে উঠলো,

-হ্যা,তনয় তো নিজের মুখে বলেছে আমাদের, প্রীতি ওকে ভালোবাসে।কাল রাতে তনয় ফোন দিয়েছিল আমাকে।কথা বলতে বলতে অনেক কথাই হয়েছিলো।তখন তনয় এটাও বলে ফেলেছিলো যে,ওদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্কও তৈরি হয়েছে।

নীলাভ বাকরুদ্ধ। নির্বাক। বাকশক্তিহীন ভাবে দাঁড়িয়ে রইল ও।কিছু বলার নেই ওর আর।প্রীতি ভালোবাসে তনয়কে।এরউপর আর কি হতে পারে?ভালোবাসার উপর আর কি হতে পারে?কিচ্ছু না।

নীলাভের গলা শুকিয়ে আসলো।ঠোঁট দুটো শুকিয়ে কাঠ কাঠ হয়ে উঠেছে।ও বার বার জিহবা দিয়ে ঠোঁট ভিজাচ্ছে।নীলাভ চুপচাপ এক জায়গায় গিয়ে বসলো মুখে দু হাত দিয়ে।ভালোবাসার মানুষটি যদি অন্য কাউকে ভালোবাসে এর থেকে যন্ত্রনার আর কিছুই নেই।

,

কাজী মেয়েকে ডাকলো।

প্রীতিকে আনা হলো।প্রীতি চুপচাপ হেটে আসছে।নীলাভ সেদিকে তাকালো।ঘোমটার আড়ালে প্রীতির মুখটা ডাকা পড়েছে।নীলাভ চোখ সরিয়ে নিলো।প্রীতির তাহলে সত্যি এই বিয়েতে মত আছে?

নীলা চৌধুরী একবার ছেলের দিকে অসহায় চোখে তাকালেন।নীলাভ একটা শুকনা হাসি দিলো।কত কষ্ট সেই হাসিতে।নীলা চৌধুরীর বুকটা ছিড়ে গেলো।

বিয়ে পড়ানো শুরু করা হয়েছে।কনেকে বারবার বলা হচ্ছে কবুল বলতে।কিন্তু প্রীতি বলছে না।পাশ থেকে এবার স্নেহা প্রীতিকে ধাক্কা দিয়ে বলে উঠলো ‘কবুল বলতে। ‘

এবার প্রীতি সেই কাঙ্ক্ষিত বাক্যটি বলে উঠলো।

চলবে🙃

তনয় আর প্রীতির বাসরের দাওয়াত দিলাম সবাইকে😁 আইসেন সবাই।

আল্লাহ হাফেজ💕
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here