হিংস্রতার আড়ালে ভালোবাসা পর্ব ৭

#হিংস্রতার আড়ালে ভালোবাসা
#part:7
#writer:Jeba

🌸

নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে রিহান হিয়ার দিকে এগিয়ে গেল।হিয়া সামনের দিকে ফিরে ফোন টা কানে দিয়ে হাসছে তখনই পিছন থেকে রিহান ওর ফোন টা নিয়ে ওর কানে ধরল।ফোনের অপর পাশ থেকে সায়নের গানের সুর শুনতে পেল।মধুর গলায় গান গেয়ে শুনাচ্ছিল ও হিয়া কে।গান শুনেই হিয়া ব্লাশিং করছিল।সায়ন এর কন্ঠ টা শুনে রিহান এর মাথা আরও খারাপ হয়ে গেল।হিয়া রিহানের কাছ থেকে মোবাইল টা টেনে নিয়ে সায়ন কে বলল পরে ফোন দিবে।ফোন টা রেখে হিয়া রিহানের রক্তিম বর্ণ ধারণকারী চোখ দুটো তে চোখ রেখে বলল,,,,,

-সমস্যা কি তোমার? আমার ফোন আমার কান থেকে টেনে নেওয়ার সাহস হলো কিভাবে তোমার? তুমি কি আমাকে বউ মানো যে আমার উপর অধিকার খাটাতে আসো? (চেঁচিয়ে বলল হিয়া)

এই মুহূর্তে হিয়ার একটু ও ভয় লাগছে না।এতোদিন ভয় পেয়েছিল বিধায় ওকে এতোটা অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে রিহানের কাছ থেকে।ভালোবাসার ওপর ভরসা রেখে ও সহ্য করে গেছে এতোদিন রিহান এর কান্ড নিয়ে।কিন্তু রিহান তার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে করতেই থাকে।(মনে মনে বলল হিয়া)

রিহান আচমকা হিয়া কে টেনে এনে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে হিয়ার একদম মুখোমুখি কাছাকাছি দাঁড়াল।বিন্দুমাত্র ফাঁকা নেই তাদের মাঝে।হিয়ার মনে হচ্ছে এই বুঝি রিহান মিশে যাবে তার সাথে।

-তোর সাহস হলো কি করে সায়ন এর সাথে এইভাবে হেসে হেসে কথা বলার?থাপ্পড় এর কথাটা এতো সহজে ভুলে গেলি?(রাগে)

-তোমার সাহস হলো কি করে আমাকে এইসব জিজ্ঞাসা করার?

-আমার সাহস কিভাবে হলো?তুই আমার বউ।নিজের স্বামী কে চোখের সামনে রেখে অন্য ছেলের সাথে ফোনে ইটিশ পিটিশ করছ?

-মাইন্ড ইউর ল্যান্গুয়েজ,,,,,,,,সায়ন আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।ওকে আর আমাকে নিয়ে আর একটা ও বাজে কথা বলবা না।ওর সাথে ছোটো থেকে বড় হয়েছি।যদি আর একটা ও বাজে কথা বলো তাহলে ভুলে যাবো তোমাকে আমি ভালোবাসি।

-তুই কি খারাপ করবি? আমার তো মনে হচ্ছে তুই তো ওই ছেলের সাথে কতো খারাপ মুহূর্ত*********

রিহান এর কথার সাথে সাথেই হিয়া খুব জোরে কষিয়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল রিহান এর গালে।রিহান এক হাত গালে দিয়ে দাঁড়িয়ে রইল সে একটু ও প্রস্তুত ছিল না এইটার জন্য।হিয়া যে এমন কিছু করবে রিহান ভাবে ও নি।রিহান রাগে গাল থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে হিয়া কে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় ফেলে দিল।তারপর হিয়ার উপর নিজের ভর্তি দিয়ে শুয়ে পড়ল।হিয়া এইবার ভয় পেয়ে গেল ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বলতে লাগল,,,,,,,

-রিহান কি করছো তুমি?
-কি করছি তুমি জানো না বউ? (শয়তানি একটা হাসি দিয়ে বলল রিহান )
-প্লিজ এমন করো না।আমি তো তোমার বউ।আর ভালোবেসে স্পর্শ করলে আমার কোনো আপত্তি নেই।কিন্তু হিংস্রতার স্পর্শ দিয়ে আমাকে অপবিত্র করো না প্লিজ।
-ওমা তাই নাকি?
-হু,,,,প্লিজ তোমার সামনে হাত জোর করে বলছি।ভালোবেসে স্পর্শ করো কিন্তু হিংস্রতা দিয়ে নয় ।
-তোকে আমি কখনও ভালোবাসব তোর এমন মনে হয়?
-হুম,,,,
-তাহলে এই ভুল ধারণা টা আর মনের মধ্যে পালিস না।
-তুমি কেনো এমন করছো আমার সাথে?আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি?কেন এইভাবে কষ্ট দিচ্ছ আমাকে?প্লিজ বলো রিহান (হাত জোর করে বলতে লাগল হিয়া)


রিহান হিয়ার উপর থেকে উঠে বিছানার একপাশে বসে পড়ল তারপর বলতে শুরু করল,,,,,,,

তিন বছর আগে,,,,

আমার লাইফ আমার পরিবার সবকিছু জোরে বসবাস ছিলো প্রিয়ার।যেদিন আমার হাত টা ধরে এই বাড়িতে আমার জীবন সঙ্গী আমার সহধর্মিণী হয়ে এসেছিল ঐদিন থেকে আমাদের পরিবারে আর আমার জীবনে শুধু আনন্দ আর সুখ ছিল।নিজেকে একজন পরিপূর্ণ স্বামী আর প্রিয়া কে আমার যোগ্য বউ আর যোগ্য ভালোবাসার মানুষ মনে হতো।খুব ভালোবেসে ফেলেছিলাম আমি মেয়ে টা কে।যতটুকু ভালোবাসলে কাউকে ছাড়া বেঁচে থাকা কষ্টকর ততটাই ভালোবেসেছিলাম আমি ওকে।বিয়ের পাঁচ মানথ পর প্রিয়ার প্রেগনেন্সির খবর আমাদের পরিবারে আরো খুশির মুহূর্ত ভরিয়ে দিলো।তখন বাবা হওয়ার খুশিতে আমার ও নিজেকে খুব বড় বড় মনে হচ্ছিল।আমার মনে হচ্ছিল আমার পরিবারের আর আমার জীবনের প্রতিটা আনাচে কানাচে খুশি এসে বার বার ধরা দিচ্ছিল।কিন্তু সেই খুশি টা সেই সুখ টা হারিয়ে গেল তোমার জন্য ড.হিয়া।।।।।

🌸
চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here