হিংস্রতায় ভালোবাসা পর্ব ১৩

#হিংস্রতায়_ভালবাসা
#পর্ব_১৩
#রীমা_শারমিন

চোখ মেলে নিজেকে আবিষ্কার করলাম একটা অপরিচিত রুমে।। চারপাশে চোখ বুলিয়ে বুঝতে পারলাম এটা কোন হাসপাতালের বেড।।কাল রাতের কথা মনে পরতেই উঠে বসলাম।। আমাকে উঠতে দেখে নার্স এগিয়ে এলেন।।নার্স আর আমার কথার আওয়াজে সিনহা আংকেল ভেতরে এলেন।। আংকেলকে দেখে আমি প্রায় দৌড়ে ওনার কাছে গেলাম।।

— আংকেল আহিল?? আহিল কোথায়??
— তুমি একটু শান্ত হও, আহিল আছে!!
— আমি ওকে দেখতে চাই আংকেল,আমাকে প্লিজ নিয়ে যান ওর কাছে।।

আংকেল আমাকে এই হাস্পাতালেরই ইমারজেন্সি ওয়ার্ডের সামনে নিয়ে গেলেন।। আমার হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে যতই সামনের দিকে আগাচ্ছি।।কাচ দিয়ে আহিলের নিধর দেহটা দেখা যাচ্ছে।। অক্সিজেন মাস্ক লাগানো রয়েছে আহিলের মুখে। ডাক্তাররা অপারেশনে ব্যস্ত। আহিলকে এভাবে দেখে চোখের পানি আপনাআপনি গাল বেয়ে পড়ছে।।চোখ মুছতেই আবার চোখ ভরে যাচ্ছে পানিতে। আমি আহিলকে এভাবে দেখে অভ্যস্ত নই,কখনো ভাবিওনি ওকে এভাবে দেখবো।। যে মানুষটা এত স্ট্রং, কখনো কোন হতাশায় ভেঙে পড়েনি।। আর আজ সে এভাবে পড়ে আছে সহ্য করতে পারলাম না পিছিয়ে এলাম অপারেশন থিয়েটারের সামনে থেকে।। কাল যখন আংকেল বললেন আহিল কার এক্সিডেন্ট করেছে একমুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল আমার পুরো পৃথিবী থমকে গেছে পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছিল আমার।। আংকেল এসে মাথায় হাত রাখলেন, ওনার চোখেও পানি।। নিজের ছেলের মতো ভালবাসে কি না আহিলকে।। তাই কষ্ট লাগা টাই স্বাভাবিক।।

!
— কেঁদোনা মা,,কি থেকে কি হয়ে গেল। আহিল গাড়ি নিয়ে ফিরছিল হঠাৎ করে সামনে থেকে আসা একটা ট্রাক ধাক্কা মারে আর ওর গাড়ি উলটে যায়।।
— ও ঠিক হয়ে যাবে তো আংকেল, ওর কিছু হবে নাতো??
— আল্লাহ আছেন, সব ঠিক হয়ে যাবে মা।।

তিনঘন্টা পরে ডাক্তার অপারেশন শেষ করে বের হোন।।ডাক্তার জানান আহিল মাথায় আর পায়ে বেশ অনেকটা আঘাত পেয়েছে।। যার জন্য আপাতত আহিল বেড রেস্টে তো থাকবে অবশ্যই কিন্তু আহিল হাঁটতে পারবে কি না সেটা ওনারা এখনো নিশ্চিত নয়।।

আহিলের অপারেশনের দুইদিন পরে জ্ঞান ফিরে।। আরও সাতদিন হাস্পাতালে থাকার পরে রিলিজ দেয়া হয় ওকে।আহিলকে বাসায় নিয়ে এলাম ।আহিল ওর নিজের কোন কাজে কখনো আমার হেল্প নেয়নি। কিন্তু এখন থেকে ওকে আমার ওপরই নির্ভর করতে হবে প্রত্যেকটা কাজে।। আহিলের দৃষ্টি বলে দেয় ও এভাবে কতটা কষ্ট পাচ্ছে।। কিন্তু কিছুই করার নেই।। তবে আমার কাছে এটা একটা বিরাট সুযোগ।ওই যে,মানুষ বলে না আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্য করেন!! বিষয়টা ঠিক ওইরকম।। আহিল সবসময় এটা ভাবতো হয়তো আমি ওকে ছেড়ে চলে যাব। ঠকাবো ওকে,ওর মায়ের মতো।। আমি আমার ভালবাসা আর সেবা দিয়ে আহিলের সেই হারানো বিশ্বাস আর ভরসা ফিরিয়ে আনতে চাই। আর আমার বিশ্বাস আমি অবশ্যই পারবো।।

আহিলের জন্য খাবার তৈরি করছিলাম রান্না ঘরে এমন সময় কিছু একটা ভাঙার শব্দ এলো।। আর শব্দটা মনে হলো আমাদের রুম থেকেই এসেছে।। দৌড়ে গেলাম রুমে গিয়ে দেখলাম আহিল অনেকটা চেষ্টা করেও পানির গ্লাস নিতে পারেনি উল্টো সেটা পড়ে গিয়ে ভেঙে গেছে।।

— আপনি পানি খাবেন??
— হুম।
— তো আমাকে ডাকলেন না কেন??
— যে কাজ আমি করতে পারি সেটার জন্য তোমাকে কেন ডাকবো?
— তা করতে পেরেছেন কি??

— কি হলো কিছু বলছেন না যে!!

এক গ্লাস পানি আহিলকে এগিয়ে দিলাম।। ওর পানি খাওয়া শেষে ওর পাশে গিয়ে বসলাম হাতটা ধরে।।

আহিলকে খাবার আর ওষুধ খাইয়ে দিলাম।।আহিল ঘুমাচ্ছে কিন্তু আমার চোখে কোন ঘুম নেই।। মাথায় শুধু একটা চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে কিভাবে আহিলকে আগের মতো সুস্থরুপে দেখতে পাব।।

ডাক্তারের কাছে গেলাম আহিলকে নিয়ে চেকাপ করানোর জন্য।।ডাক্তার কিছু ব্যায়াম আর মালিশের কথা বলে দিলেন। যেগুলো নিয়মিত করলে আহিল আগের মতো হাটতে পারবে।।

একটানা দুইমাস আহিলের পাশে ছায়ার মতো লেগে আছি।।ওর কখন কি প্রয়োজন সবকিছুর খেয়াল রেখেছি।।আহিল এখন স্ক্র‍্যাচ ছাড়া অল্প অল্প হাটতে শুরু করেছে।।এতদিন আমি ধরে ধরে হাটানোর প্র‍্যাক্টিস করিয়েছি।।

আহিলের এক্সিডেন্টের তিনমাস হতে চললো।। আহিল এখন ক্রাচ ছাড়াই হাটতে পারে।। অফিসে যাওয়াও শুরু করেছে।।আমি জানিনা আহিল আমাকে এখন ভরসা করতে পেরেছে কি না। আমি ওর হারানো বিশ্বাস আর সেই ভয় দূর করতে কতটা স্বার্থক হয়েছি এখনো বুঝতে পারছি না।।

সকালবেলা একটা হালকা আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গে।। ঘুম থেকে উঠে দেখি আহিল চলে গেছে অফিসে।।আমাকে একবার ডাকলোও না চলে গেল।। সারাদিন মন মরা হয়ে ঘরের এককোনায় বসে রইলাম।। আহিলের আচার আচরন অনেক বদলে গেছে।। আমার সাথে আর আগের মতো কথা বলে না। কেমন জানি এড়িয়ে এড়িয়ে চলে।।এই পরিবর্তন আমার মেনে নিতে কেন জানি খুব কষ্ট হচ্ছে।।

আহিলের পয়েন্ট অফ ভিউ :

কেবিনে বসে ল্যাপটপে কাজ করছিল আহিল। এমন সময় দরজায় নক পরল,, ল্যাপটপ থেকে চোখ না সরিয়েই ভেতরে আসার পারমিশন দিয়ে দিল।।

— তো বলুন মিস নয়না নাকি রিয়া? কোনটা বলে ডাকবো??

সামনে দাড়িয়ে থাকা নয়না চুপ করে রইল।।

— পেপারস রেডি??
— ই ইয়েস স্যার!!
— গুড,,ভেরি গুড।। এখন আপনি যেতে পারেন।
— আ আমার ভাই??
— আমি তোর মতো বিশ্বাসঘাতক নই!! কারও বিশ্বাসের সুযোগ নেই না।।তোর ভাই সেফ আছে।। নাউ গেট লস্ট ফ্রম মাই অফিস।আর দ্বিতীয়বার আমার চোখের সামনে পড়ার মতো ভুলও করিস না।

নয়না চলে যাওয়ার পরে আহিল টেবিল থেকে ফাইলটা হাতে তুলে নেয় আর একটা পৈশাচিক হাসি দেয় । মোবাইলটা নিয়ে রাশেদ চৌধুরীর নাম্বারে কল করে।। রাশেদ চৌধুরী কল রিসিভ করে,,

— কি ব্যাপার মিস্টার আহিল খান যে?? আমার তো সৌভাগ্য!!

রাশেদ চৌধুরী অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল।। আহিল শান্ত গলায় বলল,,

— হেসে যদি মন না ভরে তাহলে আরও হেসে নে মন ভরে।। নয়তো তোকে আমি এখন এমন কিছু শোনাবো যেটা শোনার পরে তোর এমন ঝাটকা লাগবে যে,তুই হাসতেই ভুলে যাবি।
— মানে কি বলতে চাইছিস তুই আহিল খান?? যার নিজের বাড়ি, ফ্যাক্টরি কয়দিন পরে নিলামে উঠবে সে এত বড় বড় কথা বলে কি করে আমার মাথায় আসে না।মনে হয় টাকার শোকে তুই পাগল হয়ে গেছিস হা হা হা হা !!
— সেটা তোর এই ছোট্ট মাথায় ঢুকবে না রাশেদ চৌধুরী।।তুই কি ভেবেছিলি আমার পিএ সাজিয়ে যে কাউকে আমার অফিসে পাঠাবি আর আমার ডকুমেন্টস চুরি করবি, আমি টেরই পাবো না, হা হা হা হা হা হা হা!!!!
তোকে একটা স্যাম্পল পাঠিয়েছি একটু দেখে নে,তাহলেই বুঝতে পারবি কে পাগল হয়ে গেছে আর কে ভিক্ষারী।।

একটা ফাইল রাশেদ চৌধুরীর কাছে দিয়ে গেল।। ফাইলটা দেখা মাত্রই চিৎকার করে উঠলো রাশেদ।

— তুই কি করেছিস আহিল খান,,আমার সমস্ত সম্পত্তির মালিক তুই কিভাবে সম্ভব?? কিভাবে??এই উইলে আমার সাইন কি করে গেল? আমি এই উইল ছিড়ে ফেলব।
— ছিড়ে ফেলে কোন লাভ নেই রাশেদ চৌধুরী।। ওইটা জাস্ট একটা কপি হাহাহাহা !!
— তুই কিভাবে করলি এটা, কিভাবে??আমি তোকে ছাড়বো না আহিল খান। এর জবাব তোকে আমি দেবই!!
— জবাব পরে দিস,, এখন তোকে তিনদিনের সময় দিলাম, অফিস আর বাড়ি খালি করে দেয়ার জন্য,মাইন্ড ইট!! আর এটা কিভাবে করলাম সেটা নাহয় তোর রিয়ার কাছ থেকে জেনে নিস।।

ফোন রেখে দিয়েই ফোনটা এক আছাড়ে ভেঙে ফেলল রাশেদ চৌধুরী।সামনের টেবিলে থাকা সবকিছু ছুড়ে ফেলে দিল। রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়ল প্রতিহিংসার আগুনে।।

ফোন কাটার পরে ম্যানেজার সিনহাকে কেবিনে ডাকে আহিল।।

— হুম আহিল বলো,,কেন ডেকেছো?
— আংকেল আপনাকে যেই দায়িত্বটা দিয়েছিলাম সেটার কি খবর??
— সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে। সব এরেঞ্জমেন্ট কম্পলিট আর সবাইকে ইনভাইটও করা হয়ে গেছে।।
— গুড।আংকেল আমাকে এখন বাসায় যেতে হবে, প্রানো নিশ্চয়ই না খেয়ে বসে আছে।।
— আচ্ছা তুমি যাও। আমি আছি।

প্রানোর পয়েন্ট অফ ভিউ :

আহিল এসে আমার সাথে কোন কথা না বলেই রুমের দিকে চলে গেল। আমি দরজা বন্ধ করে আহিলের পিছনে পিছনে গেলাম।। আহিল ড্রেস চেঞ্জ করে ওয়াশরুমে চলে গেল আর আমি দাঁড়িয়ে রইলাম এক জায়গায়।। আহিল বের হয়ে টাওয়েল দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে সামনে এসে দাড়ালো।।

— খাবার খেয়েছো??
— হুম।
— সত্যি?
— হুম!
— মন খারাপ?
— উহু!
— আমার ভীষণ ক্ষুধা লেগেছে, কিছু খাবার দেয়া যাবে??
— এক্ষুনি দিচ্ছি!

দরজার দিকে পা বাড়াতেই আহিল হাত টেনে ধরল।

— কি হলো?
— কিছু না! তোমাকে দেখতে ইচ্ছে হল ভালো করে!
— হয়েছে ছাড়ুন, আপনার খাবার দিয়ে দেই।
— একটু আমার কাছে বসে কথা বলার সময় নেই??
— আপনার নেই, ছাড়ুন।

আহিলকে ছাড়িয়ে চলে এলাম খাবার দিতে।

বিকেল বেলা ছাদে দাঁড়িয়ে আছি একা। হালকা মিষ্টি বাতাস, সামনে এক ফালি আকাশ। ভালো লাগছে সুন্দর এই পরিবেশ টা কিন্তু মনটা কেন জানি খুব খারাপ লাগছে।হঠাৎ করেই কারও পরিচিত স্পর্শ পেলাম কোমড়ে, শিউরে উঠল পুরো শরীর। আহিলের স্পর্শ চিনতে ওকে দেখা লাগে না আমার। আসলে আপন মানুষের স্পর্শ সবারই পরিচিত। আহিল ঘাড়ে নাক ডোবাল দুই হাতে কোমড় জাপটে ধরে।।
আর আমি ফ্রিজড হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।আমাকে ঘুরিয়ে ওর সামনে দাড় করাল আহিল।।তারপর বলল,,

— কি হলো প্রানো, আমার স্পর্শ কি তোমার কাছে অনেক বেশি অসহ্য লাগছে??
— মানে?
— আমি সেই কখন থেকে খেয়াল করছি তুমি আমাকে ইগনোর করছো। তুমি কি আমার থেকে মুক্তি চাইছো?

“মুক্তি” শব্দটা কেন জানি বারবার কানের কাছে বাজছিল।। অজান্তেই চোখ থেকে গাল বেয়ে টপটপ করে পানি পড়তে লাগলো। কি উত্তর দেব আমি এই প্রশ্নের? আহিল ভাবল কি করে এটা? হ্যাঁ, আমি এতদিন হয়তো এটাই চেয়েছিলাম কিন্তু এখন, এখন যে আমি ওকে অনেক বেশি ভালবাসি!! আহিল কি আমার ভালবাসা বুঝতে পারছে না নাকি আমি ব্যর্থ??

— কি হলো, চুপ করে আছো যে? তাহলে আমি কি তোমার এই চুপ থাকাকেই তোমার উত্তর ধরে নেব??
বুঝতে পেরেছি তুমি আমার কাছ থেকে মুক্তি চাও। ঠিক আছে, আজ থেকে তুমি মুক্ত।। আহিলের বন্দী খাঁচা থেকে মুক্ত তুমি। আমি জানি প্রানো,তুমি আমাকে মন থেকে মেনে নিতে পারোনি। আর না পারারই কথা আমি তোমার স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়েছি, তোমার পছন্দ অপছন্দ, সব খুশি ছিনিয়ে নিয়েছি। আমাকে মাফ করে দাও।আমি বুঝতে পেরেছি সবাই এক নয়। সবাই ছেড়ে যায় না দুঃসময়ে,কেউ কেউ পাশে থেকে দুঃখগুলো ভাগ করেও নেয়। আমি এতদিন ভুল করেছি, অন্যায় করেছি তোমার সাথে। হয়তো তুমি আমাকে ক্ষমা করতেও পারবে না।
— আহিল?
— তোমাকে কিছু বলতে হবে না আমি সব বুঝে গেছি।চল আজ আমি নিজে তোমাকে তোমার বাবা-মায়ের কাছে রেখে আসবো।

খুব করে বলতে চাইছি আমি তোমাকে ছেড়ে যাব না আহিল,কিন্তু গলা থেকে কোন কথা বের হচ্ছে না।
আহিল আমার হাত ধরে নিচে নিয়ে যাচ্ছে। আমার পা যেন অসাড় হয়ে গেছে আর সকল বাকশক্তি হয়তো আমি হারিয়ে ফেলেছি এমন লাগছে,, কলের পুতুলের মতো আহিলের সাথে যেতে লাগলাম। রুমের মধ্যে নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে দিল। আলমারি থেকে কতগুলো শাড়ি বের করে আমার সামনে রাখল।।

— প্রানো তোমার ফেভারিট কালার কোনটা?? দেখেছো আমি কত বাজে হাসবেন্ড, নিজের স্ত্রীর প্রিয় কালার কোনটা জানি না। অথচ এতদিন তুমি আমার সব পছন্দের খেয়াল রেখেছো!!

আসলে আহিল কি করতে চাইছে?কৌতূহল চাপিয়ে রাখতে না পেরে জিজ্ঞেস করেই ফেললাম,,

— এগুলো দিয়ে কি হবে আহিল??
— শেষ বারের মতো নিজের পছন্দে তোমাকে সাজাবো প্রানো,আমার নিজের হাতে!!তুমিতো কাল থেকে মুক্ত নিজের পছন্দে বাঁচবে।

কিছু বলতে চেয়েও পারলাম না কথাগুলো গলায় আটকে আছে যেন।। শুধু অঝোরে বৃষ্টি নামালাম দুচোখে।

আহিল আমাকে সাজাতে লাগলো নিজের হাতে। চোখে কাজল দিয়ে দিল, কপালে টিপ, ঠোঁটে লিপস্টিপ।

— আহা প্রানো, তুমি কি করছো? কাজল দিয়ে দিলাম এতো সুন্দর করে আর তুমি লেপ্টে দিচ্ছ বারবার।। একদম চোখ থেকে একফোঁটা পানি ফেলবে না বলে দিলাম!! আবার, থামতে বললাম না??

আহিলের ধমকে চুপ করে রইলাম।। আহিল একটা মুচকি হাসি দিয়ে আবার সাজাতে ব্যস্ত হয়ে গেল।।

— তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে প্রানো, কারও নজর না লেগে যায় আমার জানের!!
আহিল বরাবরের মতো কপালে একটা গাঢ় চুমু একে দিয়ে কিছুক্ষণ জরিয়ে ধরে রইল। আর এই অনুভূতিটা এক অন্যরকম শিহরণ জাগায় আমার মধ্যে।। ভালবাসার শিহরণ বুঝি এমনই!!

গাড়িতে বসে আছি আহিলের পাশে।।গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে। বাড়ির রাস্তা যত আগাচ্ছে আমার বুকের ওপর মনে হচ্ছে একটা ভারি পাথর রেখে দিয়েছে কেউ যেটা ক্রমশ ভারি থেকে আরও ভারি হয়ে যাচ্ছে।।

চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here