হিয়ার মাঝে পর্ব ৪০+৪১+৪২

#হিয়ার_মাঝে
40.
#WriterঃMousumi_Akter

“প্রিয় তুমি কেনো এতটা বদলে গেলে।তোমার বদলে যাওয়ায় বদলে যাবে অনেক কিছু।বদলে যাবে ভালবাসাময় এই পৃথিবী।এই পৃথিবীর মাঝেই আরেক টা ভালবাসার পৃথিবীতে তোমাকে নিয়ে বসবাস আমার।কেয়ামত সৃষ্টি হলে এই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে তুমি বদলে গেলে ধ্বংস হয়ে যাবে আমাদের ভালবাসার পৃথিবী ।আমার মনে উঠেছে তোমাকে হারানোর তুফান।যে তুফানে ভেঙে চুরে চূর্ণ হয়ে যাবে মনের মাঝে তুমিময় ভালবাসার বাড়ি।যে তুফানের ভয়ংকর স্রোতে হারিয়ে যাবে এই তুমিপাগলী মেয়েটা।জানোতো প্রিয় তুমি আসার পরে আমি কখনো কাঁদি নি।কাঁন্না আমাকে দেখে লুকিয়ে পালিয়েছে তোমার ভালবাসার দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে বাঁধা প্রাপ্ত হয়ে ফিরে গিয়েছে বারবার।তুমি তো নিয়ম করে আমায় ভালবাসো।তবে আজ কেনো এতটা অনিয়ম বলতে পারো।তোমাকে যে অনিয়মে মানায় না।তুমি যে আমাকে ভালবাসার নিয়মে বন্ধি। অনিয়মে তোমাকে একটুও মানাচ্ছে না।সবাইকে যে সব কিছুতে মানায় না।তুমি কি ভালবাসার এই বন্ধিদশা থেকে কি মুক্তি পেতে চাও।চাও কি পরিবর্তন হয়ে আমার জীবন থেকে হারিয়ে যেতে।সবাই তো হারিয়েই যায় তুমি না হয় থেকেই যাও।আজ প্রথম বার খুব কাঁদতে ইচ্ছা করছে।কেনো আজ এমন করলে। অনেক কষ্ট পেয়েছি আমি।

~~~~~~~~ইতি তোমার অভিমানী বউ”

চিরকুট টা লিখে চিরকুটের উপর কলম রাখলাম।একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে টেবিলে মাথা ঠেকিয়ে সুয়ে পড়লাম।চিরকুটের উপর কয়েক ফোঁটা পানি ও পড়েছে।পায়ের নূপুর খুলে চিরকুটের উপর রেখে দিয়েছি।

হঠাত টেবিলের উপর কিছু একটা রাখার আওয়াজ পেলাম আমি।চোখ মেলে তাকিয়ে জাস্ট অবাক হয়ে গেলাম আমি।আমার শাড়ি পড়া পিকচার উনি কখন তুললেন। আমি রিতীমত অবাক হলাম।যে আমার শাড়ির দিকে তাকাই নি পর্যন্ত সে পিকচার তুললো কখন।তার মানে উনি শাড়ি পরা খেয়াল করেছিলেন।আমাকে হাসানোর জন্য এত সময় তাহলে এইগুলা করছিলো।আমার পিকচার দিয়ে ভিডিও বানিয়েছেন সেখানে গান সেট করেছেন “এক জীবনে এত দুঃখ আমায় কেনো দিলি।তুইতো এমন ছিলি নারে এমন কেনো হলি।”

ভিডিও টা দেখেই হেসে দিলাম আমি।আমার পেছনে বুকে হাত বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে নিরব।আমি তাকাতেই ভ্রু উঁচু করে বলেন কি ম্যাম এত সময় এগুলাই ভাবা হচ্ছিলো তাইতো।মনে মনে এই দুঃখের গান ই বাজছিলো তাইতো।

ঘড়িতে রাত বাজে ১১.৫৯ মিনিট।নিরব আমার গলা জড়িয়ে ধরে গালে চোখে ঠোঁটে নিজের ইচ্ছামতো কতগুলো চুমু দিয়ে দিলো।আমি অভিমানী মন নিয়ে নিরব কে দূরে সরানোর চেষ্টা করলাম।নিরব আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন্স ডে মাই ভ্যালেন্টাইন্স। আমি বললাম ছাড়ুন আমায় ছাড়ুন বলছি।এত সময় কাঁদিয়ে এখন ভালবাসা দিবসের শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে।নিরব বললো,আচ্ছা কাঁদিয়েছি তাই বলে কি জড়িয়ে ধরা যাবে না।

ক্যানো ধরবেন আপনি আমাকে দিন দিন ভুলে যাচ্ছেন।

ইস রে আমার বউ টা। এত সুন্দর করে চিঠী লিখেছে।আই লাভ ইউ বউ আই রিয়েলি লাভ ইউ।এত অভিমান হয়েছে তোমার।আমার বউ টা এত ভালবাসে ক্যানো আমাকে।আমি নিরবের থেকে ছোটাছুটির ট্রাই করছিলাম কিন্তু কোনোই লাভ হলো না।ও ওর বুকের সাথে শক্ত ভাবে জড়িয়ে ধরে রাখলো।মাথায় চুমু দিয়ে বললো,,

কি ভেবেছিলে আমি তোমায় দেখি নি শাড়ি পরেছো।এমনি তে সারাদিন চোখ ফেরাতে পারি না।তারপর আবার মাঝরাতে এমন শাড়ি পরে পরী সেজে আসলে মাথা ঠিক থাকে কারো।আমি তখন ই দেখেছি তোমার থেকে চোখ ই সরাতে পারছিলাম না।আমি শুধু দেখছিলাম তুমি কি করো।আমি একটু অবহেলা করলে তুমি বুঝতে পারো কিনা চেক করছিলাম।এখন থেকে আরো বেশী করে ভালবাসতে হবে সেটা বুঝতে পেরেছি আমি।আমার সামান্য অবহেলা বুঝতে শিখে গেছে আমার পিচ্চি টা।তাছাড়া আমার ইচ্ছা ছিলো আজ ভীষণ একটা সারপ্রাইজ দেওয়ার।সারপ্রাইজ টা দেওয়ার আগে একটু এক্টিং না করলে সারপ্রাইজ তো আর সারপ্রাইজ থাকতো না বউ পাখি টা।

কি সারপ্রাইজ।

আজ ভ্যালেন্টাইন ডে।আমার জীবনে তুমি যেদিন থেকে এসছো সেদিন থেকে আমার জীবনের প্রতিটা দিন ই ভ্যালেন্টাইন্স জানেমান।এর জন্য আলাদা দিনের প্রয়োজন নেই তবুও তোমাকে বিশেষ খুশি দেওয়ার জন্য আমার এই আয়োজন।না হলে বলবে আমার বর ভীষণ আনরোমান্টিক।তারপর আমায় ছেড়ে রোমান্টিক বর খুজতে চাইবে।তাই বিশেষ দিনে বউ কে একটু বিশেষত্ব না দিলে ভারী অন্যায় হয়ে যাবে।

আমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছি।

সরি! ভেরী সরি বাবুই পাখি।আর এমন মজা করবো না।এই যে দেখো কান ধরে উঠবস করছি।প্লিজ ফরগিভ মি।বলেই নিরব কান ধরে উঠবস শুরু করলো।আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে।মানুষ টার আমাকে খুশি কত আয়োজন।

কয়েকবার কান ধরে উঠ বস করতেই আমি গিয়ে নিরব কে ভীষণ শক্ত ভাবে জড়িয়ে ধরে বললাম,আর কখনো এমন করবেন না প্লিজ।আমার আপনি ছাড়া কেউ নেই পৃথিবীতে। আপনি আমাকে ভুলে গেলে আমি মরে যাবো।নিরব আমার মুখ চেপে ধরে বললো এসব ভুলেও বলতে নেই।

নিরব একটা প্যাকেট বের করে নতুন একটা বের করলো।শাড়িটা বের করে বললো,আজ আমি নিজ হাতে তোমায় শাড়ি পরিয়ে দিবো।আমি শাড়ি পরাবো বলেই ওই শাড়িটা খুলিয়েছি।নাও ড্রেস টা খোলো তো শাড়ি টা পরিয়ে দেই।

ছেলেটা কি পাগল আমাকে বললো ড্রেস খুলতে।এটা যেনো সামান্য একতা ব্যাপার।

দিন আমি পরে আসছি।

নো আমি পরাবো।

আমার লজ্জা লাগবে আপনি পরালে।

আমার বউ আমি দেখবো লজ্জার কি আছে তোমার শুনি।

না আমি পারবো না।

আচ্ছা আমি দেখবো না।তোমার মুখের দিকে তাকিয়েই শাড়ি পরাবো বিলিভ মি।

নিরব আমাকে শাড়ি পরিয়ে দিলো চোখের দিকে তাকিয়েই।আমার লজ্জায় মরি মরি অবস্থা। শড়ি পরিয়ে দিয়ে বললো চলো বাইরে যায়।

এত রাতে।

হুম এত রাতেই।

কেনো?

সাইডে লেক আছে ওখানে চলো দেখবে কত কাপল এসেছে আজ।তুমি আর আমি একা না বুঝলে চলো।

ঢাকা শহর ভালবাসা দিবসে ম্যারেড আনম্যারেড সব কাপল ই বাইরে থাকে।চারদিকে মানুষের ছড়াছড়ি।আমি আর নিরব লেকের পাড়ে গিয়ে বসলাম।
নিরব যে এমন সুন্দর সারপ্রাইজ দিবে ভাবতে পারি নি আমি।কখনো ফানুশ উড়ায় নি আমি।নিরবের হাত দিয়ে এই প্রথম ফানুশ উড়িয়ে দিলাম আকাশে।

ফানুশ উড়িয়ে দিলাম দুজনে হাতে ধরে।
আসলেই তো আমার নিরব কখনো চেঞ্জ হতে পারে না।ও যেটুকু করেছে আমাকে আরো বেশী ভালবাসা দিতেই।এমন স্বামি পাওয়া মনে হয় অনেক বড় ভাগ্যর ব্যাপার।
#হিয়ার_মাঝে
৪১.
#WriterঃMousumi_Akter

একটা স্নিগ্ধ রাতে আকাশে ফানুশ উড়িয়ে নিরবের কাঁধে মাথা দিয়ে ফানুশের দিকে তাকিয়ে রইলাম দুজনে।ফানুশ আকাশে উড়তে উড়তে প্রকৃতি কে জানান দিচ্ছে আমাদের ভালবাসার কথা।তার আলোর রক্তিম আভাতে ছড়িয়ে পড়েছে নিরব মৃথিলার নাম।বুকের পাশ দিয়ে কত বসন্ত এসেছে গিয়েছে কিন্তু কখনো আমার মনে দোলা দিতে পারে নি।আজ এই দিনে আমার মনে সর্বদ্বায় বসন্তের ছড়াছড়ি।আস্তে আস্তে নিরবের বুকে মাথা দিয়ে দুই হাত দিয়ে ওর গলা জড়িয়ে ধরে রইলাম।

“বেশ কিছুক্ষণের নিরবতার পর নিরব কে প্রশ্ন করলাম,আপনি আমায় এত ভালবাসেন কেনো নিরব?খুব ভালবাসেন তাইনা”

“ভালবাসি তার তো কারণ অবশ্যই আছে।আর খুব থেকেও খুব ভালবাসি”

“তাই?”

“কি কারণ জানতে চাইবে না মিথু?”

“উহু!ইচ্ছা করছে না এখন।শুধু ভালবাসেন এটুকু জেনেই খুশি আমি।পরে না হয় জেনে নিবো।”

“নিশ্চয় ই ভাবছো তুমি অনেক সুন্দর দেখতে এ কারণে ভালবাসি তাইনা।প্রথমত তুমি সুন্দর এটা সত্য।তবে আমার চোখে তুমি ভীষণ সুন্দর। তোমার সৌন্দর্য আমি ভীষণ সুন্দর ভাবে উপস্হাপন করার চেষ্টা করি।যদি একটু কমতি হয়ে যায় প্রশংসা করা তাহলে আমার নিজের ভেতর আমাকে কষ্ট দিবে।কারণ আমার বউ আমার কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুন্দরী নারী।তুমি যদি কালো ও হতে আমি তোমাকে ভালবাসলে এভাবেই প্রশংসা করতাম।অনেকে বলে কালো মেয়েদের কেউ ভালবাসে না তাদের রুপ এর প্রশংসা কেউ করে না।তুমি কি জানো গায়ের চামড়া তে শুধু সাদা আর কালো থাকে।আর সৌন্দর্য থাকে মানুষ এর চোখে আর মনে।যে যাকে ভালবাসে তার চোখে সেই শ্রেষ্ঠ সুন্দরী। যে যাকে ভালবাসে তার মনের মাঝে শুধু তার ই প্রতিচ্ছবি থাকে।আমরা যখন কাউকে ভালবাসি আমাদের চিন্তা ভাবনা ধ্যান জ্ঞাণ এ শুধু তার চিন্তায় থাকে।বলতে পারো সে রক্তের সাথে মিশে যায়।রক্ত চলাচল এর সাথে সে সারা অঙ্গে চলাফেরা করে।তাই অনেক কালো মেয়ে তার ভালবাসার মানুষের কাছে শ্রেষ্ঠ সুন্দরী। তার অনেক প্রমাণ আছে।শুধুই যে কালো মানুষ ই ভালবাসার ক্ষেত্রে কষ্ট পায় বা ঠকে যায় সেটা না মিথু।আমার ভার্সিটির আমার অনেক শ্রেষ্ঠ সুন্দরী বান্দবী কে দেখেছি একটা অযোগ্য বা তার সাথে মানায় না এমন টাইপ ছেলের কাছে অবহেলিত।তার রূপের কদরে চারদিক থেকে হাজার টা বিয়ের প্রস্তাব বা প্রেমের প্রস্তাব আসলেও সে চাইলেই পারছে না কাঙ্ক্ষিত মানুষ টিকে ছেড়ে অন্য কাউকে এক নিমিষেই গ্রহন করতে।ভালবাসা জিনিস টাই এমন এখানে সবাই পরাজিত।এই ভালবাসা দিবসের দিনে সবাইকে বলতে ইচ্ছা করছে যে তোমাকে চাইছে না তার জন্য কেঁদে কষ্ট পেও না।যে তোমার জন্য কাঁদছে তাকে তোমার জীবনে আমন্ত্রণ জানাও।জীবন টা খুব ছোট এটা ওয়ান টাইমের অফার।একবার মরে গেলে আর ফিরে আসবো না।তাই এই ছোট্ট জীবনে নির্দিষ্ট একটা মানুষের ভালবাসা নিয়ে বেঁচে থাকো।ক্যানো ভালবাসাহীন জীবন কাটাবে।একবার কাউকে ভালবেসে দেখো মন থেকে দেখবে পৃথিবীটা অভিশপ্ত লাগবে না। বরং এই সুন্দর পৃথিবীতে ভালবাসার মানুষের সাথে বাঁচার জন্য বার বার এই প্রথিবীতে আসতে ইচ্ছা করবে”

“এত সময় নিরবের কথার সাগ ম্রে হারিয়ে গেছিলাম। ওর বুকে মাথা দিয়ে বললাম,,আপনি ভালবাসার এত সুন্দর সঙ্গা কিভাবে দেন আমি বারেবার মুগ্ধ হয়ে যায়।আচ্ছা আপনি তো আমার থেকেও সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করতে পারতেন।অনেক স্মার্ট মেয়ে পেতেন।তাহলে এসব ছেড়ে আমাকে কেনো?”

“ছোট বেলা থেকে আম্মুর কাছে শুনেছি তার এই নিষ্পাপ ছেলেকে আজন্ম কাল নিষ্পাপ থাকতে হবে।কোনো মেয়ের ধারে কাছেও যাওয়া যাবে না।এক না দেখা মেয়ের ছবি একে দিয়েছিলো আম্মু মনের মাঝে।সারাক্ষণ ভাবতাম কে সেই মেয়ে।দেখতে কেমন হবে।আমায় কি মেনে নিবে।আমি কি মেনে নিতে পারবো।আমার মনের মতো কি সে হবে।যদিও প্রথম প্রথম আম্মুকে বলতাম আম্মু এগুলা সিনেমা না। বাস্তবে হিরো হিরোইন কে বাঁচায় না। আম্মুর সোজা কথা তুই এখন প্রেম করতে চাইছিস তাইনা।বিদেশী এত সাদা বিলাই দেখে তোর ভাল লাগছে না। দেখেছো জানপাখি তোমার শ্বাশুড়ি তোমার এই নিষ্পাপ বর টাকে কিভাবে অপবাদ দিচ্ছিলো।”

“তারপর কি হলো”

“আম্মুর জোরাজুরিতে এক প্রকার আমার আসা।আমার বিদেশি লাইফ পছন্দ ছিলো।বিদেশে থাকার ইচ্ছা ছিলো।ভেবেছিলাম দেশে এসে শুনবো তুমি রিলেশন এ আছো অন্য কারো সাথে।কিন্তু না আমার বউ টা আমার অপেক্ষাতেই ছিলো।ছোট বেলার বর কনে খেলা যে এভাবে সত্যি হয়ে যাবে আমি ভাবতেও পারিনি।”

“আপনি কি দেশে এসে আমায় ভালবেসছেন নাকি তার আগেই।”

“দেশে আসার আগে ভেবেছিলাম ১০ দিন পরেই ফিরে যাবো মেবি এখানে এডজাস্ট করতে পারবো না।কিন্তু দেশে আসতেই আমার সর্বনাশ হয়ে গেলো।সে এক ভীষণ সর্বনাশ।ছাদে সেদিন দেখেছিলাম তোমাকে এক সন্ধ্যায়।যেনো সেদিনের সন্ধ্যা তোমার নামেই নেমেছিলো।আমি অবাক হয়ে শুধু তাকিয়ে ছিলাম।প্রথম বার আমি কোনো মেয়ের রুপের থেকে বেশী তার চোখে মায়া আর মলিন মুখে বিশাল সরলতা দেখেছিলাম।ভালবাসার এক অন্তিম পরশ পেয়েছিলাম সেই সন্ধায়।জানো সেদিন থেকে রোজ সন্ধা নামলেই আমার মনে হয় এটা কোনো শুভক্ষণ।সন্ধ্যা মানেই আমার কাছে বিশাল এক অনুভূতি। রোজ সন্ধ্যায় আমি তোমার নাম জপি।সন্ধ্যা মানেই পুরা শহরে ভালবাসার বৃষ্টি নামে।এই সন্ধ্যা আমায় করেছে সর্বনাশ।তার পর থেকে এই সন্ধা নামার শহর ছেড়ে আর যেতেই ইচ্ছা হয় নি।”

“আর এইভাবে আমার ও সর্বনাশ করে দিলেন তাইতো নিরবের বুকে আদর মাখা একতা কিল দিয়ে বললাম।”

“নিরব আমার কপালে একটু চুমু দিয়ে বললো জ্বী।”

হঠাত খেয়াল করি আমার পায়ে নূপুর নেই।

“নিরব কে বললাম,আমার নূপুর টা দেন।”

উনি একটু ভাব নিয়ে বললেন,”যা ছুড়ে ফেলেছো তা আর দেওয়া যাবে না।”

“আপনি দেন বলছি ওটা আমার নূপুর। ”

“খুলে রেখেছিলে কেনো তাহলে?”

“আমি এবার কেঁদে দিবো কিন্তু না দিলে।”

“আমি এমনি তেও নূপুর এনেছি পাগলি নতুন নূপুর। আজ ভ্যালেন্টাইন্স ডে আরেক বার নূপুর না পরালে হয়।”

আরেক বার ও নিরব আমায় নিজ হাতে নূপুর পরিয়ে দিলো।

—————————–
সুপ্তির বাসার নিচে রিফাত ভাইয়ার আগমন ঘটেছে।এত দিন টম এন্ড জেরির মতো ঝগড়া করে ভালবাসার কাছে পরাজিত দুজনে।মন যখন কাউকে সায় দেয় ভালবাসার জন্য তাহলে কোনো বাঁধায় হার মানে না।হঠাত এত রাতে রিফাত কে নিজের বাসার নিচে দেখে অবাক হয়ে যায় সুপ্তি।সুপ্তির ও মনের মাঝে রিফাত কে না বলা অনেক কথা জমে আছে।রিফাত এর ডাকে আজ আর না করতে পারে নি সুপ্তি।নিজের আম্মুকে লুকিয়ে রাত বারো টায় গেট খুলে রিফাত এর সাথে দেখা করতে গেলো সুপ্তি।সুপ্তির চোখে মুখে আজ জড়তা,লজ্জা, ভয় সব এক সাথে ভর করেছে।রিফাত ভাইয়া ঠিক কিভাবে প্রপোজ করবে বুঝে উঠতে পারছে না।সুপ্তি রিফাত ভাইয়া কে বলে,যা বলার দ্রুত বলুন প্লিজ।আম্মু দেখে ফেলার আগেই আমাকে যেতে হবে।রিফাত ভাইয়া এক গুচ্ছ লাল গোলাপ দিয়ে হাঁটু গেড়ে সুপ্তির সামনে ধরে বলেন আমার সাথে সারাজীবনের জন্য ঝগড়া করার সঙ্গী হবে। প্লিজ ফিরিয়ে দিও না সুপ্তি।আই লাভ ইউ।তুমি রাগ করলে আমি আর জীবনে ঝগড়া করবো না।তুমি যা বলবে তাই হবে।সুপ্তি ফুল টা নিয়ে আই লাভ ইউ টু বলেই লজ্জায় ছুটে পালালো।

রিফাত ভাইয়া নিরব কে মেসেজ করেছে সুপ্তি তার প্রপোজ এক্সেপ্ট করেছে।

রাতে আর সুপ্তি কে ডিস্টার্ব করলাম না।নিরব আমাকে বললো রিফাত আর সুপ্তির বিয়ে টা দ্রুত দিতে হবে আমি নিরব কে বললাম আপনি আগে রিক ভাইয়া আর মুনতাহা আপুর বিয়েটা দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।আমার অনেক খারাপ লাগে।আপুর আপনার প্রতি একটা ভাললাগা বা ভালবাসা ছিলো।আপনার আরেক টা কপি থাকলে আপু কে দিতাম।নিরব আমার নাক টেনে বলে আমার ১০০ কপি বেরোলেও তোমাকেই চাইবে।আর তুমি এসব ভেবো না মুনতাহা তোমায় বেশী ভালবাসে তাই আমার দিকে ওর মন আসবে না বুঝলে বউ।

সেদিন রাতে আরো অনেক্ষণ সময় কাটানোর পর রাতে বাড়িতে ফিরলাম।রাতে বাসায় গিয়ে চেঞ্জ হওয়ার পর দুজনেই ঘুমিয়ে গেলাম।পরের দিন ঘুম থেকে উঠে দেখি নিরব আজ আবার পেটে মুখ ডুবিয়ে সুয়ে আছে।

আস্তে করে ডেকে বললাম,কি ব্যাপার আজ আবার আপনি ওখানে গেলেন কিভাবে।

নিরব খানিক টা আড়মোড়া দিয়ে বলে উঠলো পেটের পরিধি মাপছি কতটুকু।কাল না বেবি চাইলে আমার কাছে।বেবি তো এই পেটেই হবে তাইনা।এই ছোট্ট পেটের অধিকারী বউ টা আবার বেবি ক্যারি করতে চাই।ইস রে ভাবতে গেলেই আদর করতে মন চাইছে।

কাল যে হাইপার হয়ে এগুলা বলেছিলাম আমি তো ভুলেই গিয়েছি।কিন্তু এই মানুষ টা তো আর একদিন ও ভুলবে না।এই সুযোগে রোজ এসব করবে।কাল যে কি ভুল ভাল বলেছিলাম।

নিরব আরেক টু উড়ামুড়া দিয়ে বললো,,
আচ্ছা বেবি নেওয়ার চিন্তা কিভাবে এলো শুনি।

এখন কি লজ্জা লাগছে কি বলতে কি বলবো সেটাই বুঝতে পারছি না।

এর ই মাঝে সাজ সকালে সুপ্তির মায়ের ফোন দেখে অবাক হয়ে গেলাম আমি।কি বলবেন আন্টি কারো কিছু হয় নি তো।
#হিয়ার_মাঝে
৪২.
#WriterঃMousumi_Akter

সাজ সকালে সুপ্তির আম্মুর ফোনে নিরবের রোমাঞ্চকর মোমেন্ট এ ব্যাঘাত ঘটে গেলো।ফোন দেখেই চিন্তিত হয়ে পড়লাম কি কারণে ফোন দিয়েছে আন্টি তাও এত সকালে।ফোন টা রিসিভ করতেই ফোনের ওপাশ থেকে আন্টি বলে উঠলো হ্যালো মিথু কাল রাতে আর তোকে বিরক্তি করি নি।সারারাত ঘুমোই নি আমি চিন্তায়।এক ঘন্টার মাঝে রিফাত কে নিয়ে আমার বাসায় আয় তো মা বলেই ফোন টা কেটে দিলেন আন্টি।আমি রিতীমত অবাক হয়ে গেলাম।এমন কি হয়েছে।নিরব আর আমি দুজনে মহা সমস্যায় পড়ে গেলাম কি এমন হলো।

“নিরব রিফাত ভাইয়া কে ফোন দিলো,রিফাত কাল রাতে কি সুপ্তির আম্মু তোকে দেখে ফেলছিলো।”

“কই নাতো। আমি তো খেয়াল করি নি।কেনো কিছু হয়েছে নাকি।”

“কিছু তো একটা হয়েছে তোর শ্বাশুড়ি মা হঠাত ফোন দিয়েছেন তোকে উনাদের বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য।”

“ভাই আমি যাবো না।দেখা গেলো পুলিশ ডেকে আমাকে ধরিয়ে দিলো।”

“আরে না আন্টি অত টা খারাপ নন।চল আমার সাথে আমি নিজে আন্টির সাথে কথা বলবো।তোর বিয়ে পাকাপাকি করে আসবো।”

তিনজনে রওনা হলাম সুপ্তির বাসায়।তিনজনে ভীষণ টেনশন নিয়ে রওনা হলাম সুপ্তির বাসায়।সুপ্তিদের বাসায় পৌছে কলিং বেল চাপতেই দরজা খুলে দিলেন আন্টি।আমরা তিনজনে রুমে প্রবেশ করলাম।

আমি আন্টিকে বললাম,,

“আন্টি এত জরুরি তলব কি হয়েছে।”

“তুই কি জানিস সুপ্তি কার সাথে রিলেশন করে।”

“না আন্টি।
ও তো কারো সাথেই করে না।”

“তুই ভুল জানিস ও প্রেম করছে।”

“কার সাথে আন্টি।আর রিফাত ভাইয়া কে ডেকেছেন কেনো?”

“আন্টি রিফাত ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বলেন,রিফাত তোমাকে ডেকেছি কাল তোমাকে দেখেছিলাম আমাদের বাসার সামনে দিয়ে যাচ্ছো।আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম তোমার সাথে কথা বলতে গিয়েছে।পরে দেখি না আমাদের পাশের বাসার এক গাজাখোর এক ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।ইটের কুচিতে পেচিয়ে একটা চিঠি উপরে ছুড়ে মেরেছে।চিঠিতে লেখা একটা গোলাপের তোড়া রেখে গেলাম নিয়ে যাও জান।ওই ছেলেটা কে দেখি প্রায় সুপ্তির সাথে কথা বলার চেষ্টা করে।আমি ভাবতেও পারি নি অমন বাজে এক ছেলের সাথে রিলেশন করবে।রিফাত তুমি কি দেখেছিলে সুপ্তি কে কাল ওই ছেলেটার সাথে।সুপ্তি তো সব অস্বীকার করছে।ওর নাকি ওই ছেলের সাথে কিছুই নেই।”

“রিফাত ভাইয়া কয়েক টা শুকনো কাশি দিয়ে বলেন না আন্টি আমি তেমন কিছুই দেখি নি।”

“আন্টি বললেন আমি ভীষণ চিন্তায় আছি মৃথিলা।বাবা নিরব হাতে কোনো ভাল ছেলে আছে থাকলে সুপ্তির জন্য দেখো।আমি আর এই মেয়ে নিয়ে ভরসা পাচ্ছি না।”

“নিরব একটা অমায়িক হাসি দিয়ে বললো আন্টি আপনি চাইলে রিফাত এর সাথে আপনার মেয়ের বিয়ে দিতে পারেন।রিফাত ভালো জব করে তাছাড়া ফ্যামিলি ও ভালো।আপনার রিফাত কে পছন্দ হলে আমি ওর বাসায় কথা বলবো।”

“আন্টি বললো রিফাত ছেলে হিসাবে খারাপ না।রিফাত এর ফ্যামিলির যদি সুপ্তি কে দেখে পছন্দ হয় আমি আর আপত্তি করবো না।”

“নিরব রিফাত ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বলেন তোর কি সুপ্তিকে পছন্দ।”

“রিফাত ভাইয়া একটু লজ্জা পেয়ে বললো হুম পছন্দ।”

ঝামেলা মিটে গেলো মুখে মুখেই সুপ্তি আর রিফাত ভাইয়ার বিয়ে ঠিক প্রায়।

“আমি সুপ্তির রুমে গেলাম দেখি যে গাল ফুলিয়ে বসে আছে।আমাকে দেখেই বলে উঠল মিথু তুই এসছিস আমাকে বাঁচিয়ে নে প্লিজ।”

“আমি বললাম তার আগে বল কি হয়েছিলো কাল রাতে।”

“আরে বলিস না।রিফাত আমাকে ফুল দিয়ে প্রপোজ করলে খুশি মনে ফুল নিয়ে উপরে নাচতে নাচতে আসছিলাম।দেখি যে রণচন্ডী মুড আর অগ্নিচোখে তাকিয়ে আছে আমার মা জননী।আম্মু যে জেগে আমি সেটা জানতাম ই না।কাল রাতে আম্মু আমাকে ঠাসস করে থাপ্পড় মেরেছে।আর ফুল গুলো পা দিয়ে নষ্ট করে ফেলে দিয়েছে।আম্মু আমাকে বলে যে,বেয়াদব মেয়ে দিন শেষে ওই গাঞ্জাখোর এর সাথে রিলেশন এ গেছিস।আরো আম্মুর ব্লা ব্লা কথা।আমি কাল ই তোর জন্য পাত্র দেখবো।তোকে আর এ বাড়িতে রাখবো না।অবশেষে সাহস নিয়ে বলেই ফেললাম আম্মু ও গাঞ্জা সেবন করে না।আম্মু এ কথা শুনে আরেক থাপ্পড় মেরে দিলো।আম্মু আমাকে বলে তুই কি আমাকে চিনাবি কে কেমন।আম্মু সারারাত পায়চারী করেছে।সে আমাকে বিয়ে না দিয়ে ঘুমোবে না এক কথায়।সে রিফাত কে গাঞ্জাখোর ভাবছে ক্যানো বল তো মিথু।”

“আমি সুপ্তির কথা শুনে এক গাল হেসে বললাম আন্টি রিফাত ভাইয়া কে না চন্নু কে ভেবেছে।”

“কি বললি ওই চন্নু।ইয়াক থু মিথু।”

“আরে হ্যাঁ।ওদিকে নিরব তোর বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে রিফাত ভাইয়ার সাথে।”

“সুপ্তি লাফিয়ে উঠে বললো সত্যি।আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো ওয়াও মিথু আমি ভীষণ হ্যাপি।”

“প্রায় দশ দিন পর রিফাত ভাইয়ার ফ্যামিলিতে কথা বলে ঘরোয়া ভাবে কাবিন হয়ে গেলো রিফাত ভাইয়া আর সুপ্তির।কথা বার্তা ঠিক হলো এইস এস সি পরীক্ষার পরে রিক ভাইয়ার বিয়ে হলে ওদের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হবে।আমাদের৷ পরীক্ষা টা ভালোই ভালোই মিটে গেলো।এ কদিনে নিরব ভীষণ পরিশ্রম করেছে।আমি পড়েছি আমার পাশে বসে থেকেছে।বার বার কফি বানিয়ে এনেছে।আমার ঘুম পেলে বিভিন্ন গল্প বলে ঘুম তাড়িয়েছে।সব সাজেশন কালেক্ট করেছে এক কথায় আমক শুধু পরেছি আর বাকিটা ও করেছে।”

————————————————–
ঘড়িতে রাত নয় টা বাজে বার বার নিরব কে ফোন দিচ্ছি।এখনো বাসায় আসে নি দেখে ভাল লাগছে না।এতদিন পরীক্ষার চাপে নিরব কে তেমন একটা টাইম দিতে পারি নি আমি।নিরবের পছন্দের ইলিশ পোলাও চড়িয়েছি চুলায়।এত দিন পরীক্ষার জন্য ওর হাতের রান্না ই খেয়েছি।আজ অনেক দিন পর ওর জন্য রান্না করছি।অবশেষে মহাশয় হাজির হলেন।আজ আমি কালো শাড়ি পরেছি।জরজেট কালো শাড়ি আর গোল্ডেল কালারের ব্লাউজ আর পেটিকোট। নিরব কালো জিন্স এর কালো শার্ট পরে বাইরে গেছিলো।বাসায় ঢুকেই আমাকে কালো শাড়ি পরা দেখে হা করে তাকিয়ে রইলো।যেনো ভীন্ন কিছু দেখছে।আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম হাই হ্যান্ডসাম এই বয়সে এত স্টাইল ক্যানো হুম।

“এই বয়স মানে মাত্র এক বছর হলো বিয়ে করেছি।আমি বুড়ো হলেও সেই স্টাইলে চলবো।আম্মুর এই পিচ্চি ছেলেকে বুড়ো বলো না বুঝলে পুচকি”

“মানে বুড়ো কালেও আমাকে ক্রাশ খাইয়ে মারবেন তাইনা।”

“তখন কি করবো জানিনা বাট যা করবো সেটা নিজেই জানিনা।”

“আমি হেসে দিয়ে বললাম কি করবেন।”

“অপরাধ করেছো তার শাস্তি পেতে হবে।”

“কি অপরাধ।”

“কালো শাড়ি পরে মহা অপরাধ করেছো তুমি।জানোনা নিরবের সামনে কালো শাড়ি পরে আসতে নেই।জানোনা সে ব্লাক লাভার।”

“আমি স্পষ্ট দেখছি ওর চোখে মুখে দুষ্টুমি খেলা করছে।থামিয়ে দেওয়ার জন্য বললাম আগে খেয়ে নিন তারপর শাস্তি।”

“কি রান্না হয়েছে।”

“ইলিশ পোলাও”

“ওহ মাই গড একদিনে এত ভাল খাবার সব কিভাবে হজম করবো বউ টা।”

“ইস রে”

“মিথু আমায় খাইয়ে দিতে হবে আজ।”

“পাগল টাকে খাইয়ে দিয়ে রান্নাঘর গুছিয়ে রুমে প্রবেশ করলাম।”

এসে দেখি নিরব ঘুমিয়ে পড়েছে।মনে মনে বললাম যাক বাবা বাঁচলাম।না হলে ফাজিল টার চোখে মুখে যে দুষ্টুমি দেখেছিলাম।আমি রুমের লাইট অফ করে ওর পাশে সুয়ে পড়লাম।নিরব টা এত ফাজিল বলার বাইরে।আমি বিছানায় সোয়ার সাথে আমাকে আষ্টে পিষ্টে জরিয়ে ধরলো।আমি রিতীমত অবাক মানে সে ঘুমোয় নি।আমি আস্তে করে বললাম,

“আপনি ঘুমোন নি।”

“এখন থেকে আর একদিন ও ঘুমোবো না।”

“কেনো?”

বউ এর লেখাপড়ার জন্য বিজি ছিলাম।বউ এর এক্সাম শেষ। এত দিনের দেনা পাওনা উসুল করতে হবে।”

“উহু ঘুমোন তো।”

“নো ঘুম।ঘুমের কি আছে।কোনো ঘুম হবে না।”

“পাগল ছেলে তাহলে কি জেগে থাকবেন।”

“কথাটা বলতেই আমার পেটে মাথা রেখে বললো মাথায় হাত বুলিয়ে দাও।”

“আমি মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে বললাম,আচ্ছা আপনি সব সময় আমার পেটে মাথা দিয়ে ঘুমোন ক্যানো?”

“এত সুন্দর পেট আমার বউ এর।উফফ ভাবলেই সৃষ্টিকর্তার প্রেমে পড়ে যায়।সৃষ্টি কর্তা নারী সৃষ্টি না করলে এত ভালবাসার সঙ্গি পেতাম না।এই পেটে মাথা দিয়ে ঘুমোলে আহা প্রেম প্রেম ফিলিংস আসে প্রচুর বলেই পেটে গভীর ভাবে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলেন।”

সমস্ত শরীর তরঙ্গের ঢেউ খেলে গেলো।আমি ঝাড়ি দিয়ে উঠে পড়লাম কেমন অদ্ভুত ফিল হচ্ছিলো।আমি নিরব কে বললাম দেখুন আপনি বালিশে ঘুমোন।উনি মুখের কাছে এসে বললেন,উহু কোনো বালিশ না ওখানেই ঘুমোবো নেশাক্ত হবো,মাদকতার ছোয়া পাবো তোমার স্পর্শ তে।তোমার ওষ্ঠের মাঝে খুজে পাবো তৃষ্ণা মেটানোর সুখ।

ওর দুষ্টুমি আরো অনেক সময় চললো,,

ঘড়িতে রাত তখন রাত ১২ টা ঠিক ঠিক হঠাত নিরব বলে উঠলো,,

৩৬৫ দিন ৮৭৬০ ঘন্টা ৫২৫৬০০ মিনিট ৩১৫৩৬০০০ সেকেন্ড সময় আমার সাথে কাটানোর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ বউ পাখি।আমার জীবনে এসে জীবন কে রঙধনুর রঙে সজ্জিত করার জন্য শুভেচ্ছা বউ।এইভাবে চুলে পাক ধরা অব্ধি তোমার সাথে কাটাতে চাই বউ।আই লাভ ইউ সো মাস বউ পাখি।হ্যাপি এনিভার্সারী বলেই গালে মুখে চুমু দিলো।আমি ভেবেছিলাম ও ভুলেই গিয়েছে এইভাবে সারপ্রাইজ পাবো ভাবতেই পারি নি আমি।

আমাদের দুজনের পিক দিয়ে কেক আনিয়ে রেখেছে নিরব।আমি যেগুলা জানতাম ও না।বাকি সারপ্রাইজ গুলা আরো সুন্দর ছিলো।

চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here