হিয়ার মাঝে পর্ব ৫৮+৫৯+৬০

#হিয়ার_মাঝে
৫৮.
#WriterঃMousumi_Akter

জানালার খয়েরী কালারের পর্দা ভেদ করে করে সূর্যের হালকা কীরণ মুখে এসে পড়তেই ঘুম ভেঙে গেলো আমার।কম্বলের নিচে গরম হয়েছে বেশ,আরামদায়ক লাগছে খুব বিছানা ছেড়ে উঠতেই মন চাইছে না।চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি হিয়া রিমোট কন্ট্রোল প্লেন চালাচ্ছে রুমের মাঝ দিয়ে আর হেসে কুটি কুটি হচ্ছে।রুম দিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে আর প্লেন উড়াচ্ছে।মাঝে মাঝে বলে উঠছে পাপ্পা তুমি এইবার উঠবে আমার প্লেনে। আমি রিমুট দিয়ে তোমাকে উড়াবো।নিরব মেয়ের প্রতিটা কথার ইশারা করছে। মেয়ের তো নাম ধরেই ডাকে না সে যত সোহাগী ডাক আছে সেগুলাই দিবে সে।

নিরব এই প্রচন্ড শীতে জাস্ট একটা টাওয়াল পরে দাঁড়িয়ে আছে ড্রেসিন টেবিলের সামনে।হাত,পা বডিতে লোশন লাগাচ্ছে।মাত্রই বোধহয় সাওয়ার নিয়েছে চুলে ভেজা পানি।সকাল সকাল বরকে দেখে হাই ভোল্টেজ ক্রাশ না খেলেও পারতাম।এই ছেলে টা এত সুন্দর কেনো?যত দেখি ততই প্রেমে পড়ি আমি।ঠান্ডায় হাত পায়ের পশম দেখি খাড়া হয়ে আছে।মেদহীন পেট এ হালকা পশমের আবরণ, ফর্সা দেহে হালকা কালো পশমে দেখতে চমৎকার লাগছে।ওর সাওয়ার নেওয়া দেখেই গত রাতের কথা মনে পড়ে ভীষণ লজ্জা লাগছে।ও আমার দিকে তাকিয়ে দুষ্টুদের মতো হেসে আমার কাছে এসে খানিক টা ঝুঁকে ভেজা চুলের পানির ঝাকুনি দিয়ে মুখে পানির ফোঁটা লাগিয়ে দিয়ে বললো,” গুড মর্নিং বউ”এটা ওর রোজকার অভ্যাস রাতে বুকের সাথে আগলে নিয়ে কপালে চুমু দিয়ে বলবে গুড নাইট আবার ঘুম থেকে উঠে বলবে,গুড মর্ণিং।ওর অনেক গুলা অভ্যাসে জড়িয়ে গিয়েছি আমি।

“শীত লাগছে না আপনার এইভাবে খালি গায়ে কিভাবে আছে।ঠান্ডা লেগে যাবে তো।”

“তুমি একটু হাগ দিলে ঠান্ডা লাগতো না।বউ এর হাগে ভীষণ উষ্ণতা শীত বলে কিছুই ফিল হয় না।”

“তাইনা শ্বাশুড়ির নিষ্পাপ ছেলেটা।”

“জ্বী! সাওয়ারে যান আপনিও।দেখুন গরম পানি রেখে এসছি। কফি বানাচ্ছি দ্রুত ওঠো।আজ মা মেয়েকে কফি বানিয়ে খাওয়াবো।”

হিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি কোমরে হাত বেধে দাঁড়িয়ে আমাদের দুজনের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।নিরব কে ইশারা দিয়ে মেয়েকে দেখালাম।

নিরব হিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে বললো,কি হয়েছে প্রিন্সেস।প্লেন কি ঠিক ভাবে উড়ছে না।বলেই মেয়ের গালে কিউট ক্রিম মাখাচ্ছিলো।শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে আছে প্রায়।

“পাপ্পা আকাশের প্লেন কি এইভাবে রিমুট এ উড়ে।তাহলে আমাকে ওই বড় প্লেন কিনে দাও।আমি ওই বড় প্লেন চালাতে চাই পাপ্পা।প্লিজ পাপ্পা দাও এনে আমাকে ওই প্লেন।”

“মেয়ের গালে কয়েক টা চুমু দিয়ে বললো ইয়েস কলিজা তুমি বড় হয়ে ওই বড় প্লেন ই চালাবে।আমি বলবো আমার রাজকণ্যা একটা পাইলট।”

“পাপ্পা তুমি শুধু ভুল বলো কেনো?ওটা পাইলট নয় ওটা ড্রাইভার হবে পাপ্পা।যারা গাড়ি চালায় তাদের ড্রাইভার বলে দাদু বলেছে আমাকে।”

“তোমার দাদু ঠিক ই বলেছে কিন্তু আকাশযান এর গাড়ি তেলে চলে না বাবা।আর একটু বড় হলে বুঝবা।”

“আচ্ছা পাপ্পা আমি আকাশে গেলে কিভাবে বুঝবো রাস্তা আছে ওখানে।”

“ম্যাপ থাকে সোনা, আর একটু বড় হলে সব বুঝবা।”

“আই লাভ ইউ পাপ্পা! মাই সুপার হিরো।”

“আমি তোমার সুপার হিরো এটা কে বলেছে সোনা তোমাকে।”

“মাম্মা বলেছে।”

“কি বলেছে।”

“বলেছে তোমার আমার মতো হতে হবে না।তুমি তোমার পাপ্পার মতো হবা।আমিও তোমার পাপ্পার মতোই হয়েছি।তোমার পাপ্পাকে ফলো করবা।তোমার পাপ্পা ই হলো তোমার সুপার হিরো।”

সাওয়ার নিয়ে এসে দেখি বাবা মেয়ে গল্প করেই যাচ্ছে।আমি নিরব কে শীতের জন্য আনা ট্রাউজার আর জ্যাকেট দিলাম পরে নিতে।নিরব জ্যাকেট পরে রান্না ঘরে গেলো।সে নাকি আজ আমাদের রান্না করে খাওয়াবে।

হিয়া ওর দাদুর রুমে গেলো।মা নামাজ পড়ে আবার সুয়েছেন হয়তো আজ।আমার ফ্যামিলিতে আজ ও এমন কখনো হয় নি কেউ কারো সাথে আড়ি করেছে।মা আজ ও ছেলের বৌ এর চোখে আমায় দেখে নি।মা যদি নিজের মায়ের মতো রান্না করে খাইয়ে আমাকে ভার্সিটি না পাঠাতো কিছুই পারতাম না আমি।আবার দেখেছি আমি আসার আগে রান্না করে রেখেছে।এই যে মেয়ে নিয়ে পারি না যাবতীয় যা আছে মা করে।হিয়া গিয়ে দাদুর কোলের মাঝে সুয়ে রূপকথার গল্প করছে।আমি গিয়ে মায়ের পায়ে তেল মালিশ করতে করতে বললাম,মা তোমার হিয়া এত দুষ্টু হয়েছে।মা হেসে বললো বাচ্চারা দুষ্টুমি না করলে কে করবে বল তো মিথু।বড় হলে তো আর করবে না।মায়ের পায়ের তালু হঠাত হঠাত অনেক ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে যার জন্য আমি রোজ সরিষার তেল মালিশ করে মোজা পরিয়ে দেই।মা আমাকে এগুলা কিছুই বলে না।আমার নিজের ই ভাল লাগে করতে।

হিয়া আবার ও উঠে কোথায় চলে গেলো।সারাদিন টই টই করে পুরা বাড়িতে।আমি ভাবছি ঘরে কোথাও আছে। কোথাও নেই টিভি তে নিক্স চলছে অথচ মেয়ে নেই।তাকিয়ে দেখি বাগানে ফুল কুড়াচ্ছে।শিউলি গাছের তলা ফুলে ফুলে ছেয়ে আছে।হিয়া ঘর থেকে একটা শপিং ব্যাগ নিয়ে ফুল কুড়াচ্ছে।মেয়েটার এই কাজ গুলো ভীষণ ভাল লাগে আমার।ফুল গুলো এনে দেখি পাকা বুড়িদের মতো হাঁপাতে হাঁপাতে বলছে মাম্মা অনেক ক্লান্ত আমি।আমি ভ্রু কুচকে বললাম কি কাজ করা হয়েছে শুনি।ফুল এনেছি মালা বানিয়ে আমরা চারজন পরবো মাম্মা।বলেই ওর দাদুর কাছে গেলো।মা ফুল দিয়ে মালা বানিয়ে পরিয়ে দিলো।ফুলের গহনা পরে বলছে পাপ্পা আমাকে শাড়ি কিনে দাও। আমিও শাড়ি পরতে চাই। ওর কথা শুনে এক গাল হেসে দিলাম আমি।এইদিকে আমরা আবার আজ বাইরে বেরোবো।আয়রার স্কুল আর আমার সুপ্তির সাথে দেখা করতএ হবে।মা আয়রার পিছ পিছ ঘুরছে আর খাবার খাওয়াচ্ছে।

আমি শাড়ি পরে টি টেবিলে পা রেখে বসেছি পায়ের নখ কাটবো।নিরব এসে ফ্লোরে বসে হাত থেকে নেইল কাটার টা নিয়ে বললো দাও আমি সুন্দর ভাবে কেটে দিচ্ছি। এত সুন্দর পায়ের মালিকের নখ কাটার সুযোগ হাত ছাড়া করতে পারি না আমি।আমি ওর চুল ধরে একটু ঝাকুনি নিয়ে বললাম সব সময় মজা করা তাইনা।নিরব আমার পায়ের নখ কাটছে আর আমি মুগ্ধ নয়নে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।এমন সময় হিয়া এসে বললো, পাপ্পা আমার ও নখ কেটে দাও।নিরব বললো তুমি নখ এভাবে দাঁত দিয়ে কাটো কেনো বেবি।এভাবে আর কাটবা না ঠিক আছে।

“ছত্তি আর কাটবো না পাপ্পা। ”
________________________________

গায়ে কালো টি-শার্ট, পরণে কালো জিন্স,পায়ে কালো বুট, রাবার দিয়ে চুল বেধেঁ দেওয়া হিয়ার, চুল গুলো পিঠের উপর পড়েছে। জন্ম থেকেই একটু কটা কটা হয়েছে হিয়ার চুল।উপরের দিকে একটু কালো হলেও নিচের দিকে একদম ই বাদামি হয়েছে।নিরব মেয়ের সাথে ম্যাচ করে কালো জিন্স,কালো টি-শার্ট, কালো বুট পরেছে।মেয়ের হাতের আঙুল ধরে বাইরে যাচ্ছে নিরব।হিয়াকে প্লে তে ভর্তি করা হয়েছে। ওর দাদু না হলে নিরব যে কেউ নিয়ে যায়।কারণ আমার বেশী সময় থাকে না।বাপ মেয়েকে দেখতে পুরাই সেইম সেইম লাগছে।যে কারো চোখ লেগে যাবে।

বেরোনোর সময় হিয়া বললো মাম্মি তুমিও আমি আর পাপ্পার মতো কালো জিন্স আর কালো টি-শার্ট পরতে পারো না।তাহলে আমরা হ্যাপি ফ্যামিলি হতে পারি।সরি মাম্মি ভুল হয়েছে সাথে দাদুকেও পরিয়ে দিতে হবে।ওর মিষ্টি কথা শুনে মা আর আমি দুজনেই হাসছি।হিয়ার ঠোঁটের উপরে একটা কালো তিল হয়েছে যেটাতে হিয়ার সৌন্দর্য আরো বহুগুন বেড়ে গিয়েছে।

নিরব বেরিয়ে গেলে আমি গাড়ি নিয়ে বেরোলাম।আজ সুপ্তির রিপোর্ট দিবে।সুপ্তি আমার জন্য বাইরে অপেক্ষা করছে, ওর একটা প্রাইভেট ব্যাংকে জব হয়েছে।কোনো কিছুর অভাব না থাকার পরেও একটা বাচ্চার অভাবে মনে অনেক অশান্তি ওর।হিয়া সুপ্তি কে মিষ্টি মা বলে ডাকে।সুপ্তির মন ভালো করতে পারে হিয়া।সুপ্তি অনেক কাঁদে, এই কষ্ট টা আমিও বুঝি কিন্তু সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কোনো ভাষা নেই।

সুপ্তি ওর বাসার নিচে আকাশি কালারের একটা শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে আছে সাথে আছে রিফাত ভাইয়া।এমন সুন্দর দুজন দম্পতি শুধু একটা বাচ্চার অভাবে সংসার ই গোছানো হচ্ছে না।রিফাত ভাইয়ার ফ্যামিলির লোক রিফাত ভাইয়াকে বিয়ে করার জন্য প্রেসার দিচ্ছে।কিন্তু রিফাত ভাইয়া সেদিকে কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না।ফ্যামিলির সাথে এ নিয়ে ঝামেলা হয়েছে অনেকবার তার।এখন আর বাড়িতেও তেমন যান না।রিফাত ভাইয়ার কথা বাচ্চা না হলে কি যায় আসে সুপ্তি থাকলেই তার হবে।

গাড়িটা থামাতেই রিফাত ভাইয়া আর সুপ্তি গাড়িতে উঠলো।রিফাত ভাইয়া আমাকে বলেন,মৃথিলা প্লিজ সুপ্তিকে বোঝাও আল্লাহ চাইলে আমাদের বাচ্চা হবে।ও যেনো দিন দিন এভাবে ভেঙে না পড়ে।আমি সব সহ্য করতে পারি কিন্তু সুপ্তিকে এভাবে দেখে সহ্য করতে পারি না।সুপ্তিকে সারাপথ বোঝাতে থাকলাম।কিন্তু সুপ্তির মনের কোনো পরিবর্তন নেই।
#হিয়ার_মাঝে
৫৯.
#WriterঃMousumi_Akter

“তুমি আবার বিয়ে করো রিফাত।সুপ্তির এমন কথায় আশ্চর্যজনক ভাবে তাকালো রিফাত ভাইয়া।”

“হ্যাঁ রিফাত বিয়ে করো তুমি আবার।আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো না রিফাত।ডিভোর্স ও দিবো না।এখন যেমন আছি এভাবেই থাকবো।”

“এসব কি বলছো সুপ্তি।মাথা ঠিক আছে তোমার।”

“মাথা ঠিক আছে আমার রিফাত।আমি ভেবে চিন্তে ই বলছি।তুমি কেনো আমার জন্য নিজের জীবন থেকে সন্তান সুখ নষ্ট করবা।আমি একটু ও কষ্ট পাবো না রিফাত।”

“তুমি এই সন্তান ব্যাপার টা এত সিরিয়াসলি নিচ্ছো ক্যানো সুপ্তি।”

“কারণ চারদিক থেকে সবাই আমাকে বন্ধ্যা বলে। আমার জন্য তোমার জীবন নষ্ট হচ্ছে।তাই আমার অনুরোধ তুমি বিয়ে করো।”

“বিয়ে করলেই কি সন্তান হবে সুপ্তি।কেউ কাউকে ভীষণ ভালবাসলে অন্য কাউকে স্পর্শ করতে পারে না।যখন ভালবাসা নড়বড়ে হয়ে যায় তখন পারে।আমার ভালবাসা স্ট্রং সুপ্তি।তোমার জন্য আজীবন এমন ই থাকবে।আমরা প্রয়োজনে বাচ্চা দত্তক নিবো। একটা অনাথ এতিম বাচ্চাকে যদি একটা পরিবার দিতে পারি সেটা কি কম সুখের হবে বলো।জন্ম না দিলে যে মা হওয়া যায় না এমন কেনো ভাবছো।আল্লাহ দিলে নিশ্চয় ই হবে সুপ্তি।”

সুপ্তির মুখে কোনো উত্তর নেই।চুপ হয়ে বসে আছে।

হসপিটালে বসে রিফাত ভাইয়া আর সুপ্তির কথা শুনে মনের মাঝে ভীষণ খারাপ লাগছিলো আমার।ওদের দুজনের মাঝে আর গেলাম না আমি।ওদের এই আবেগ ঘন মুহুর্তে আমার না ঢোকাটায় বেটার।ডাক্তার শায়লা রহমানের অপেক্ষা করছি।না জানি কি জানাবেন উনি।যেনো ভালো কিছুই জানতে পারি।

এমন সময় ডাক্তার শায়লা রহমান এলেন।ডাক্তার কি বলবেন না বলবেন ভেবে মুখটা চুপসে এলো।ডাক্তার জানালেন, কোনো সমস্যা নেই আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন।নিশ্চয়ই একদিন সন্তান হবে।অনেকের হয় দেরিতে হলেও।তাই হাসি খুশি থাকুন।জীবন সৃষ্টিকর্তার একবারের উপহার।মরার পরে কেউ আর ফিরে আসবো না আমরা।তাই ছোট্ট জীবনে এতটা প্যারা নিবেন না।বাচ্চা না হলে দত্তক নিন।ভাল থাকার অনেক অপশন আছে।চাইলেই ভাল থাকতে পারেন আপনারা।

ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরিয়ে আমি আর রিফাত ভাইয়া সুপ্তিকে অনেক বোঝাবুঝি করলাম।সুপ্তি এখব কিছুটা মন হালকা করতে পেরেছে।

“অনেক দিন পর দুই বান্ধবী মিলে ফুচকা খাচ্ছি।সুপ্তি কে বললাম, মনে আছে সুপ্তি আমাদের আগের কথা।তুই কত্ত আমাকে আগে ফুসকা খাইয়েছিস।সেদিন আমার কাছে টাকা থাকতো না তাই তোকে খাওয়াতে পারতাম না।আজ টাকা আছে তাও খাওয়াবোনা।আজ ও তোর টাকাতেই খাবো সুপ্তি।”

“সুপ্তি বললো,,মিথু আমার কিন্তু মনে হচ্ছে আমরা সেই কলেজে লাইফেই আছি।এই ফুসকার সাথে কত আবেগ জড়িয়ে আছে আমাদের।সংসারের ব্যাস্ততায় আজ আমরা কত ব্যাস্ত হয়ে পড়েছি রে।আগে সেই বন্ধু বান্ধবী গুলো সবাই এখন ঘর সংসারে ব্যাস্ত।চাইলেও কেউ আর আগের মতো সময় বার করে আড্ডা দিতে পারবে না।বয়সের সাথে সাথে সব কিছু বদলে যায় তাই না মিথু।”

“সুপ্তি এটাই জগতের নিয়ম বুঝলি।সংসারের মায়াজালে সবাইকে ব্যাস্ত হয়ে পড়তে হয়।এভাবে চলতে চলতে চুলে পাক ধরবে চামড়ায় ভাজ পড়বে পরপারে পাড়ি জমাবো।”

‌___________________________________
বিকালে উত্তরের ঠান্ডা বাতাস ছেড়েছে।শরীর কাঁপুনি দিয়ে ঠান্ডা আসছে।সারাদিন একটুও রোদ ওঠেনি।আজ মনে হয় বেশীর ভাগ মানুষ ই গোসল করে নি।অথচ হিয়া আর ওর বাবার দুইবার গোসল করা হয়ে গিয়েছে।বাবা যা করবে মেয়েও সেটাই করবে।বেলকনিতে বসে নিরব কাজ করছে ল্যাপটপ এ। হিয়া গিয়ে বায়না ধরেছে সে হিন্দি গান শুনবে।নিরব গান চালিয়েছে আর হিয়া নাচছে।হিয়া নিরবের হাত ধরে টানাটানি করছে বাবার সাথে ডান্স করবে।নিরব মেয়ের সাথে তাল দিয়ে ডান্স করছে।বাবা মেয়ের এই খুনসুটি সব সময় চলতেই থাকে।

আমি কফি বানিয়ে মাকে এক কাপ দিয়ে আসলাম।আমার আর নিরবের জন্য নিয়ে গেলাম।হিয়ার জন্য ও ছোট্ট মগে নিয়ে গেলাম।বেলকণিতে দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছি দুজনে।কুয়াশা ঘেরা শহর টা দেখছি দাঁড়িয়ে।হিয়া কফি পেয়ে ওর দাদুর কাছে ছুটে চলে গেলো।ও আবার চামচ দিয়ে ছাড়া খেতে পারে না।আমরা যত বার খাবো হিয়া ও সেম ততবার ই খাবে।না দিলে কাঁন্না করে।

নিরব আমার দিকে অনেক সময় তাকিয়ে বললো,”কি ভাবছো মৃথিলা।”

“ভাবছি কত দিন পার করে এসেছি নিরব।কোথায় ছিলাম কোথায় এসেছি জীবন টা কোথায় ছিলো।”

“নিরব ওর চাদরের মাঝে জড়িয়ে নিলো আমাকে।ওর বুকের সাথে আমার মাথা টা শক্ত ভাবে চেপে ধরে বললো তুমি আগেও এখানে ছিলে, পরেও এখানেই থাকবে।এখন কি আগের মতোই হৃদপিন্ডের স্পন্দন শুনতে পাও জানপাখি।”

ওর বুকে মাথা ঠেকিয়ে স্পষ্ট শুনতেছি সেই ধুকপুক শব্দ।যেখানে অবিরত বলছে ভালবাসি মৃথিলা।এই ঠান্ডা আবহাওয়ায় আরো খানিক টা আদরের সাথে জড়িয়ে ধরলাম নিরব কে।

“নিরব কপালে চুমু দিয়ে বললো,,ভালবাসি জানপাখি।”

নিরব কফির মগ টা রেখে বললো তোমার মগ থেকে কফি দাও মৃথিলা।তোমার ঠোঁটের স্পর্শ যেখানে আছে সেখানে ঠোঁট লাগিয়ে কফি খেতে চাই।এতে ভালবাসা বাড়ে জানো।

ওর দিকে কফিটা এগিয়ে দিয়ে ওর কাপ টা আমি নিয়ে নিলাম।ও সব সময় এমন ই পাগল আমাকে ভালবাসার অজুহাত খোজে শুধু।

হিয়া মায়ের কাছে প্রশ্ন করছে আচ্ছা দাদু আমার মামা বাড়ি নেই কেনো?সবার নানা নানু আছে আমার নেই কেনো?মা হিয়ার এমন কথা শুনে খানিক টা অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন।আসলে কি বলবেন না বলবেন বুঝে উঠতস পারেন নি।

মা বললো আছে তো ওই যে নড়াইলে ওটাই তোমার মাম্মার বাড়ি।

না দাদু ওটা আম্মুর মামাবাড়ি।ওখানে যে নানা নানু আছে ওনাদের মাম্মা মামা আর মামি বলে ডাকে।তাহলে আমার মামা বাড়ি কোথায় গেলো বলো তো।আমার মামা বাড়ি কোথায় বলো দাদু।

এমন সময় আমি গিয়ে বললাম তোমার নানা নানু মারা গেছে সোনা।তাই তোমার মামা বাড়ি নেই।আর এসব ভাববে না ভুলেও।তোমার দাদু আছে না।দাদু ই তোমার সব বুঝলে।

খুলনা বেরোবো সকাল সকাল শাড়ি চুড়ি পরে সাজুগুজু শুরু করলাম।খুলনায় একটা বাচ্চার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।তারা দত্তক দিতেও রাজি।সুপ্তির জন্যই আনতে যাচ্ছি।নিরব কে বললাম শাড়ির কুচি টা ঠিক করে দিতে।

নিরব নিচে বসে সুন্দর ভাবে শাড়ির কুচি গুলো ধরছিলো।শাড়ি কুচি ঠিক করা হলে উঠে দাঁড়িয়ে কুচিটা গুজে দিয়ে পেটে হালকা চিমটি কেট্ব দিলো।

বুঝলাম না এই ছেলে এত দুষ্টু কেনো।এর মাথায় কি সারাক্ষণ দুষ্টু পোকারা কিলবিল করে।ওর হাতে একটা চিমটি দিয়ে বললাম শোধ।

হিয়া চোখ হাত দিয়ে আমার গালে চুমু দিয়ে বলে দ্রুত শোধ দাও।হিয়া এক্ষুণি চোখ খুলতে বলবে।ওর গালে একটু চুমু দিয়ে বললাম শোধ।

আমাকে আর হিয়া কে খাটের উপর বসিয়ে বলে দাও তো নেলপালিশ পরিয়ে দেই।হিয়া পা মেলে বসে বলছে আমার পা এত ছোট কেনো পাপ্পা।আর মাম্মার পা এত বড় কেনো?নিরব আমার পায়ে নেলপালিশ পরাতে পরাতে বলে তোমার পা ও বড় হবে সোনা তুমি মাম্মার মতো বড় হলে।নিরব হিয়ার ছোট্ট আঙুলে নেল পালিশ পরিয়ে দিয়ে বলে যাও দাদু কে ডেকে আনো সোনা।এখন বেরোতে হবে।

হিয়া রুম থেকে গেলে বলে,মিথু আমিও একা তুমিও একা।আমাদের আপন কেউ আর নেই।তাই ভাবছি বেবি নিবো বেশী করে।যাতে আমাদের হিয়ার আপন জন থাকে।ভাই বোন থাকলে মা বাবা না থাকলেও একটা ভালবাসার জায়গা থাকে।

নিরব কে বললাম চিন্তা করো না এক হালি সন্তানের বাবা বানাবো তোমাকে।
#হিয়ার_মাঝে
৬০.
#WriterঃMousumi_Akter

আজ সুপ্তির চোখে মুখে প্রাপ্তির হাসি।ওর মাঝে ভীষণ এক্সাইটেড ভাব।মনে হচ্ছে কত কাল পর আজ ও মন খুলে হাসছে।ওর এই হাসিটা মিস করেছি এতগুলা দিন।৬-৭ ঘন্টা জার্নির পর এসে পৌছালাম।খুলনা রুপসা ব্রিজে গাড়িট থামতেই চোখ বুলিয়ে অপরূপ সৌন্দর্য্যের সমাহার উপভোগ করলাম।হিয়া গাড়ি থেকে মুখ বের করে বলে পাপ্পা দেখো কত সুন্দর হাওয়া এখানে আমার একটা পিকচার তুলে দাও।রিফাত ভাইয়া হিয়াকে বলে হিয়া সোনা smile please.. হিয়া গাল ভরে হেসে দিয়ে বলে মিষ্টি বাবা এবার পিকচার উঠাও।হিয়ার দুষ্টুমিতে সবাই মুগ্ধ।গাড়ি থেকে নেমে আমরা সবাই ই পিকচার তুললাম।আমার বাসার কাজের মেয়ে নিতুকেও নিয়ে এসছি।সব জায়গা বাসায় কাজের জন্য একটা মেয়ে রাখা হলে বাড়ির সবাই ঘুরতে গেলে কাজের মেয়েটাকে রেখে যায়।কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সেটা উলটা মেয়টাকে সব জায়গা নিয়ে যায় আমি।আজ ভাগ্যর দোষ এ অন্যর বাড়িতে থাকা লাগে।মা হীন সন্তান দের প্রতি আমার সব সময় আলাদা একটা টান কাজ করে।কারণ আমি জানি এ জীবন টা কত কষ্টের।একটা অনাথ আশ্রম খুলেছি হিয়ার নামে।আমি আর নিরব যখন থাকবো না তখন হিয়া ই এটা পরিচালনা করবে।অনেক গুলা মা বাবা হীন বাচ্চার সাথে রোজ কথা হয় আমার।ওদের মাঝে গেলে ভীষণ তৃপ্তি পাই আমি।ওরা আমাকে দেখলে ওদের মা বাবার কষ্ট টা ভুলে যায়।খুব ভাল লাগে যখন বাচ্চা গুলো এগিয়ে এসে বলে আমাকে একটা ঘড়ি কিনা দিবা মৃথিলা মা,আবার কেউ বলে আমাকে একটা চকলেট দিবা।সকাল বিকাল ওদের নিয়ে ভীষণ ভাল সময় কাটে আমার।

ব্রিজের পাশেই ছোট্ট একটা গলিতে প্রবেশ করলাম।এইখানেই সেই বাড়িটা ঠিকানা অনুযায়ী বাড়িতে প্রবেশ করলাম।বাড়িতে প্রবেশ করেই বাচ্চার কাঁন্না শুনতে পেলাম।বাচ্চাটা ভীষণ কাঁদছে।টিন সেটের একটা রান্নাঘর থেকে উনুনের ধোয়া উড়ছে একজন মহিলা চুলায় ভাত তরকারি বসিয়েছে।তিন রুমের ইটের একটা ঘর বারান্দায় এক পাশে একটা রুম আরেক পাশে একটা খাট দেওয়া।খাটের এক পাশে দুইটা বাচ্চা বই পড়ছে আর একটা বাচ্চা কাঁদছে।বুঝতে বাকি রইলো না এই বাচ্চাটায় সেই বাচ্চা।

বাচ্চাটা বাড়িওয়ালার বোনের বাচ্চা।বোনের জামাই মেয়ে পেটে থাকা অবস্থায় এক্সিডেন্ট এ মারা যায়।বাচ্চটা জন্মের সময় উনার বোন ও মারা যায়।এইদিকে উনার ওয়াইফ বাচ্চাটার দায়িত্ব নিতে পারবেন না।তাই বাচ্চাটিকে দত্তক দিয়ে দিবে।বাচ্চাটার দুনিয়াতে আপন বলতে কেউ নেই।আমাদের দেখেই ভদ্রলোক এগিয়ে এলেন।সৌজন্য মূলক কিছু কথা বলে বাচ্চাটা সুপ্তির কোলে তুলে দিলেন।সুপ্তির আনন্দে আত্মহারা সেই সাথে রিফাত ভাইয়া ও।বাড়িওয়ালা মজিদ সাহেব উনার ওয়াইফ কে ডাকলেন এগিয়ে এসো।মহিলা টি এসে বললেন,আপা আপনাদের জন্য রান্না করছি না খেয়ে যাওয়া যাবে না।নিরব বললো না না আজ আর খাবো না।হিয়া ছুটে গিয়ে উনুনে কাঠ এগিয়ে দিয়ে জাল দেওয়া শুরু করলো।মা দ্রুত গিয়ে হিয়া কে ধরলো।দাদু ভাই আগুনে পুড়ে যাবা জলদি উঠে এসো।উনাদের জন্য কিছু পোশাক মিষ্টি ফল নিয়ে গেছিলাম।আমাদের অনেক রিকুয়েষ্ট করেছিলো খেয়ে আসার জন্য শুধু পানি খেয়ে বেরিয়ে গেলাম।

হিয়া বললো মাম্মা এই বাবু টা কে?
হিয়াকে নিরব বললো তোমার বনু হয় বাবা।

আচ্ছা পাপ্পা বনু হয় এইটা আমার।এইটা মিষ্টি মায়ের মেয়ে তাইতো।আচ্ছা পাপ্পা আমাকেও কি এইভাবেই কিনে নিয়ে এসছিলে।হিয়ার কথা শুনে বেশ লজ্জা পেয়ে গেলাম।বললাম,হ্যাঁ তোমাকেও কিনে আনা।।পাপ্পা তাহলে মাম্মি কে বলো এমন আরেক টা ভাই কিনতে।আমার ভাই ও চাই মাম্মা।আমরা সবাই হেসে দিয়ে বললাম আচ্ছা ঠিক আছে সোনা

সুপ্তির মেয়ের নাম রিফাত ভাইয়া ছোঁয়া রাখলেন।ছোঁয়া কে ঘিরে শুরু হলো রিফাত ভাইয়া আর সুপ্তির জীবনের নতুন অধ্যায়।মাঝে মধ্য আমি নিরব আর হিয়া ওদের বাসায় যায়।হিয়া দু পা মেলে ছোয়া কে কোলে রেখে ওওও বুনু কাঁদে না এমন করে।ছোয়ার জন্য সুপ্তির জীবনের সব দুঃখ কষ্ট মুছে গিয়েছে।ছোয়ার জন্য বড় গোল্ডের চেইন বানিয়ে নিলাম।রিফাত ভাইয়ার আম্মু ও ছোয়াকে নাতনি বলে মেনে নিয়েছেন।

___________________________________
হিয়া এখন ক্লাস থ্রিতে পড়ে দেখতে দেখতে বেশ বড় হয়েছে হিয়া সোনা টা।হঠাত দেখি আজ স্কুল থেকে ফেরার সময় অনেক গুলা চকলেট আর বড় একটা টেডিবিয়ার নিয়ে এসছে।নিরব কে বললাম তুমি হিয়াকে আজ আবার টেডি কিনে দিয়েছো।এত টেডি কোথায় রাখবে।নিরব বললো টেডি কি এটা গাড়িতে ছিলো না।আমি তো ভেবেছি হয়তো গাড়িতেই ছিলো এটা।নিরব হিয়া কে বললো মামনি এটা কোথায় পেয়েছো।হিয়া হেসে দিয়ে বললো পাপ্পা একটা দাদু দিয়েছে।উনি আমাকে ভীষণ ভালবাসেন পাপ্পা।প্রায় চকলেট কিনে দেন।আজ এই টেডি টা দিয়েছেন।হিয়ার কথা শুনে নিরব আর আমি দুজন দুজনের দিকে তাকালাম।হিয়াকে বললাম একি মা মনি তুমি অন্যর জিনিস নিয়েছো কেনো?তোমাকে না শিখিয়েছি কারো কিছু নিতে নেই।মাম্মা আমি নিতাম না উনি না নিলে খুব কাঁদছিলো।তুমি বলো আমি কি করতাম তাহলে মাম্মা।হিয়াকে বেশী প্রেসার না দিয়ে বললাম আচ্ছা ভেতরে যাও সোনা।

হিয়া ভেতরে গেলে নিরবকে বললাম আচ্ছা কেউ আবার আমার মেয়েকে নিয়ে খারাপ কিছু প্লান করছে নাতো।এইভাবে চকলেট টেডি দেওয়ার কারণ কি?নিরব বললো তুমি কে সেটা সবাই জানে।তোমার মেয়ে নিয়ে কেউ খারাপ কিছু ভাববে এমন সাহস কারো আছে।নিরব কে বললাম, তবুও চিন্তা হয় নিরব।নিরব আমাকে এক ঝটকায় কোলে তুলে নিয়ে বললো আমার ও চিন্তা হয় বউ নিয়ে।নিরব এর গলা জড়িয়ে ধরে বললাম, ক্যানো চিন্তা হয় শুনি?

নিরব আমাকে কোলে তুলে নিয়ে ধীর পায়ে রুমে প্রবেশ করে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো।আমার দিকে ঝুকে এসে বললো,বউ দিন দিন এত সুন্দর হলে চিন্তা হবে না বলছো।

নাকের সাথে নাক মিশিয়ে নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে ওর হাত দিয়ে আমার হাত চেপে ধরে রেখেছে।ঘন ঘন নিঃশ্বাস এর উত্তাপে শরীরে অদ্ভুত শিহরণ বয়ে যাচ্ছে।আস্তে করে বললাম ছাড়ো আগে এই বুড়ো বয়সে ভীমরতি।

নিরব আস্তে করে বললো,আমার বুড়ো হওয়ার অনেক দেরি আছে আর তোমার ও বুড়ি হওয়ার অনেক দেরি আছে।এই বয়সে অনেকে বিয়েই করেই নি।পিচ্চি বয়সে বিয়ে করেছিলাম তোমাকে।বিয়ের বয়স অনেক গুলা বছর হলেই কি তোমার মনের বয়স বেড়ে গিয়েছে জান পাখি।

আহা ছাড়ো না নিরব।কেউ এসে যাবে।এই দিন দুপুরে দরজা দেওয়া ছিঃ।মা,নিতু, হিয়া কি ভাববে।

যে আসবে আসুক,যা ইচ্ছা ভাবুক আই ডোন্ট কেয়ার।তুমি আজ কালো থ্রি পিছ কেনো পরেছো।জানোনা কালোতে কি সুন্দর লাগে তোমাকে।

কালো তো তোমার জন্যই পরি।তোমার ভাল লাগে তাই।

তাহলে আদর করতে দিচ্ছো না কেনো?

উনার যে অন্য জগতে প্রবেশ করেছেন সেটা বুঝতে আর বাকি নেই আমার।এই পাগলটে ছেলেটার ভালবাসা দিন দিন বেড়েই চলেছে।কখনো আমার প্রতি অরুচি দেখি নি তার।গলায় ঠোঁট ডুবিয়ে গভীর ভালবাসায় লিপ্ত হলো পাগল টা।

_____________________

কয়েক দিন ধরেই বেশ চিন্তিত আমি আর নিরব।নিরব আমাকে বলেই যাচ্ছে এত টেনশন নিও না।কিন্ত আমি টেনশন থেকে দূরে যেতে পারছি না চাইলেও না।কয়েক দিন যাবত হিয়া এক দাদুর কথা বলছে।সেই দাদুর প্রতি বেশ ভালবাসা জমে উঠেছে হিয়ার।কিন্তু আমরা একদিন ও তার দেখা পাই নি।অথচ হিয়ার মুখে সারাক্ষণ সেই দাদুর নাম।দাদু ছাড়া হিয়া কিছুই বুঝছে না।কে এই নতুন আগন্তক।বাসা থেকে প্রায় খাবার নিয়ে যাচ্ছে সেই দাদুর জন্য।হিয়া ইদানিং ভীষণ মাতামাতি করছে।

চলবে,,

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here