হিয়ার মাঝে পর্ব ৫৯+৫০+৫১

#হিয়ার_মাঝে
৪৯.
#WriterঃMousumi_Akter

স্বামীর লাশ নিয়ে দেশে ফেরার মতো বেদনা আর যন্ত্রণা কোন কিছুতে নেই।মেয়েরা বিয়ের পরে স্বামির বাড়িতে থাকে ওই একজন মাত্র মানুষের ভরসায় সে হলো তার স্বামি।একমাত্র স্বামির ভালবাসার জন্য মা বাবার বাড়ি ছেড়ে থাকাটা সম্ভব হয়।আজ বাবার মৃত্যুতে মায়ের জীবনের সব থেকে ভরসা আর স্ট্রং জায়গা টা নড়ে গিয়েছে।এয়ারপোর্টে মামা,নিরবের আত্মীয় রা সবাই এগিয়ে গিয়েছিলো।এম্বুলেন্স এ বাবার লাশ নিয়ে বাসায় এলো।মা শুধু হাত পা ছোড়াছুড়ি করছিলো গাড়ির ভেতর। মায়ের একটা করূন কন্ঠ ভেষে আসছিলো,তোমার ছেলেকে আমি কি জবাব দিবো তোমার ছেলে যখন আমার কাছে তোমাকে ফেরতে চাইবে কি বলবো।আমি তো জীবীত ই নিয়ে গেছিলাম।তোমার ছেলের তুমি আর আমি ছাড়া তো আর কেউ নেই।আমি তোমার ছেলের মুখোমুখি হতে পারবো না।

আজ চার বছর পরে মা বাবার সাথে দেখা নিরবের।এই দেখা সাধারণ কোনো দেখা ছিলো না।এই দেখাতে তার বাবা এগিয়ে আসে নি তার কাছে তার মায়ের মুখেও হাসি নেই।গাড়ি থেকে বাবার কফিন টা বের করা হলো।মা বেরোলো বিধবা হয়ে।

নিরব ওর আম্মুকে দেখেই গিয়ে জড়িয়ে ধরে ভীষণ কাঁন্নায় ভেঙে পড়লো।মা ছেলের এমন বেদনাদায়ক দৃশ্য সহ্যসীমার বাইরে ছিলো।

নিরব শুধু ওর আম্মুকে বলছিলো, আম্মু বাবাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না।বাবা আমাকে এভাবে রেখে চলে গেলো কেনো?আই লাভ মাই বাবা।আম্মু আমাকে কেনো কিছু জানালে না।বাবার থেকে শেষ কথাটা জানতে পারলাম না।

বাবার মুখ টা দেখে সহ্য করার মতো ছিলো না।খুব বেশী বয়স হয়েছিলো বাবার এমন টাও না।

মা আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদছিলো।মা কে শান্তনা দেওয়ার মতো ভাষা আমার জানা ছিলো না।

বাবার লাশ দাফন পাশের গোরস্হানেই হলো।বাবার শেষ কাজ ও মিটে গেলো।কেটে গেলো বেশ কয়েক দিন।মায়ের পাশে সারাক্ষণ আমি আর নিরব আছি এতদিন নানা,মামি, মামা, নিরবের আত্মীয়রাও ছিলো।

একটা কথা আছে মানুষ খুব সেল্ফিস প্রয়োজন ফুরালে কেউ আর কাউকে মনে রাখে না।এতদিন নিরবের সব আত্মীয়রা খুব ভেবে চিন্তে কথা বলতো হঠাত তাদের ব্যবহার বদলে গিয়েছে।নিরবের আরো দুইটা কাকা আছে ফুফু রা আছে।নিরবের বাবা ভাল মানুষ ছিলেন তাই নিজের সব সম্পত্তি নিরবের দাদুর নামেই করেছিলেন।এমন কি ঢাকার যে ফ্লাট সেটাও নিরবের দাদুর নামে করেছিলেন।নিরবের বাবার মৃত্যু তে আত্মীয়রা এসে রোজ ঝামেলা করতে শুরু করলো তারা সব সম্পত্তি ভাগ করে নিয়ে যাবে।যেহেতু নিরবের দাদুর নামে সব সেহেতু ভাগ সবাই ই পাবে।নিরবের বাবার যে এমন অকাল মৃত্যু হবে সেটা উনি জানতেন না।উনার ইচ্ছা ছিলো বাড়িটা ছেলের নামেই করে দিবে বা অন্য আরেক টা বাড়ি কিনবে।আসলে উনার ইচ্ছা ছিলো ছেলেকে বিদেশে সেটেল করে দেওয়ার তাই ঢাকার বাড়ি কার নামে এত কিছুই ভাবতেই পারেন না।বিদেশ থেকে আসার সময় মা পাগলের মতো হয়ে গেছিলো কোনো কিছু গুছিয়ে সেভাবে আনতে পারে নি।এমন একটা সিসুয়েশন যে হবে সেটা কল্পনার বাইরে ছিলো।
নিরব জাস্ট অবাক হয়ে যাচ্ছিলো ওর আত্মীয়দের ব্যবহারে।এতদিন নিরবের বাবার টাকাতে চলেছে সবাই আজ মারা যাওয়ার সাথেই তার সম্পত্তি নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে।নিরব খুব অসহায় হয়ে পড়েছিলো।বাধ্য হয়েই সবাই কে সব ভাগ করে দিয়ে দিলো।বাড়ির বিনিময়ে ব্যাংক থেকে টাকা দিয়ে দিলো সবাই কে।অন্যান্য যা ছিলো সব ভাগ করে নিয়ে গেলো।আমাদের সময় টা বেশ খারাপ হয়ে গেলো।তবুও অভাব ছিলো না।

এক সন্ধায় ছাদে দাঁড়িয়ে ছিলাম নিরব আমার পাশে গিয়ে বললো মৃথিলা আজ আমি গরীব হয়ে গিয়েছি ভীষণ গরীব হয়ে গিয়েছি।তুমি মন খারাপ করো না মৃথিলা।সবাই সব নিয়ে গিয়েছে এটা ভেবে কষ্ট পেও না। তোমার নিরব দূর্বল নয় মৃথিলা।আমি এর থেকে বেশী সম্পত্তি আবার বানাতে পারবো। তুমি আর মা আমার পাশে থাকলে আমি গরীব হবো না। আমি ভীক্ষা করলেও তোমার কোনদিন অভাব হবে না কোনোকিছুর।নিরবের চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ভীষণ কষ্ট ওর চোখে।আজ আমার জন্যই তো ওর এ অবস্থা। আমার জন্য বিদেশ ব্যাক যায় নি ও।নিরব কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম আমার তুমি থাকলেই আমি ধনী।স্বামির থেকে বড় সম্পত্তি আর কোনো কিছুতে নেই নিরব।আমরা আজ ও ধনী আছি।তুমি কষ্ট পেও না নিরব তুমি আমি মিলেই আমাদের আবার সব হবে।
নিরব আমাকে বললো,,তুমি আর মা ছাড়া কাছের সবাই ছেড়ে গিয়েছে মৃথিলা।
আমি নিরব কে বললাম,সবাই ছেড়ে যাবার জন্য আসে না নিরব।
মা আর স্ত্রী এই দুজন নারী ঠিক থাকলে সে পুরুষের জীবনে কোনো সমস্যায় আসে না।নিরব কপালে চুমু দিয়ে বললো তুমি আমার শক্তি এখন।

মুনতাহা আপুর লেবার পেইন উঠেছে হঠাত করে।রিফাত ভাইয়া নিউজ টা দিতেই হসপিটালে গেলাম মা আমি আর নিরব।হসপিটালে মামা,মামি,নানা ও এসছে।রিফাত ভাইয়া দের ফ্যামিলির সবাই ও এসছে।আজ রিক ভাইয়া কে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে।ওটিতে প্রবেশ এর আগে রিক ভাইয়া আপুর হাত ধরে বলে চিন্তা করো না মুন।আমার ভালবাসা কে পৃথিবীতে আনতে চলেছো তুমি। দেখো আমরা সবাই আছি।তোমার কিছুই হবে না। রিক ভাইয়ার চোখে মুখে কি ভীষণ চিন্ত দেখছিলাম।রিক ভাইয়া আপুর কপালে চুমু দিয়ে ওটি তে পাঠালো।ওটির বাইরে অপেক্ষা করছি আমরা আধাঘন্টা পরে বাচ্চার কাঁন্নার আওয়াজ ভেসে এলো।ডাক্তার ফুটফুটে একটা ছেলে কে এনে রিক ভাইয়ার কোলে দিলেন।নানা মুনতাহা আপুর ছেলে কে কোলে নিয়ে কেঁদে দিলেন।আমি নানাকে বললাম এত খুশির দিনে কাঁদছো কেনো নানা।নানা বললেন তোর মা মুনতাহার থেকে কম বয়সে মারা গেছিলো।মাত্র আঠারো বছর বয়সে বাড়ি ছেড়েছিলো তোর মা।নানার কথা শুনে আমার চোখে পানি চলে এলো।নানা কে বললাম এত খুশির দিনে কেঁদোনা তুমি।নিরবের আম্মু আমার কাঁধে হাত দিয়ে বললেন,মা মিথু মন খারাপ করিস না সোনা আমি আছি তো।আর শোন এবার আমার ও একটা নাতি নাতনি চাই বুঝলি।আর সেটা খুব শিঘ্রই।

মায়ের কথা টা শুনে বেশ লজ্জা পেয়ে গেলাম।বেবি আমার ও ভাল লাগে ইদানিং।কিন্তু নিরব বলেছে আমার লেখাপড়া শেষ হলেই এগুলো নিয়ে ভাববে।এই মুহুর্তে নিরব কে বলা কি ঠিক হবে।
#হিয়ার_মাঝে
৫০.
#WriterঃMousumi_Akter

প্রায় এক সপ্তাহ হয়েছে শরীর প্রচন্ড সিক।ঠিক ভাবে বই পড়তে পারছি না সারাক্ষণ সুয়ে থাকতে ইচ্ছা করে।খাবারে প্রচন্ড অরুচি হয়েছে।আমার শ্বাশুড়ির মাঝে কখনো মায়ের অভাব পায় নি আমি।নিরবের আম্মু আমাকে বললেন মা মিথু তোর বাবা চলে গিয়েছে তার সাথে অনেক কিছু হারিয়েছি সব হারানোর মাঝেও বেঁচে আছি আমার দুই ছেলে মেয়ে তুই আর নিরবের জন্য।তোদের শরীর খারাপ দেখলে মন টা বড্ড আনচান করে।।চল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় মা।মা কে বললাম,মা রাত জেগে বই পড়ার জন্য এমন হচ্ছে এটা সিম্পল ব্যাপার।তুমি একদম ই ভেবো না।তাছাড়া এখন অহেতুক টাকা খরচ করে লাভ নেই। তোমার ছেলেকে আমি টাকা পয়সা নিয়ে প্রেসার দিতে পারবো না।ওর হাতে এখন তেমন টাকা নেই।মা হেসে দিয়ে বললেন,নেই তার মানে এমন অভাব হয় নি আমাদের মোটেও চলবে না।মা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বললেন,তুই এতটুক একটা মেয়ে সংসারের কথা ভেবে মুখ ফুটে কিছুই বলিস না নিজের কিছু লাগলেও বলিস না।তোর জায়গা অন্য কেউ থাকলে যে কি করতো।মা কে বললাম আহা মা এখানে আমার ই থাকার কথা ছিলো তাই আমি ই আছি।

সেদিন ই আবার নিরবের ফুফু,কাকিরা এসছে আমাদের বাসায় সব কিছু নেওয়ার পরেও তারা আসে কি অদ্ভুত মানুষ জন।নিরব কে একটু গুছিয়ে নেওয়ার ও টাইম দেয় নি তারা।

আমার শরীর ভাল না বলে মা রান্না করছিলো।মানুষের কটু কথা বলার অভ্যাস সেটা বলবেই।তারা বলতে শুরু করলো কি ব্যাপার ভাবি তোমার ছেলের বউ শুনেছিলাম কত্ত ভালো বাড়িতে আত্মীয় এসছে ভাল মন্দ শুনেই গিয়ে সুয়ে পড়লো আবার।আর বউ থাকতে তুমি রান্না করছো কেনো?এত আস্করা দিও না।শ্বশুর টা নেই শ্বাশুড়ি কে দিয়ে রান্না করাচ্ছে।মেয়েটা তো খুব বেয়াদব। আগে তো ভাল মনে করতাম।আবার শুনছি সে অনেক মেধাবী ছাত্রী।আচ্ছা বাড়ির বউ এত লেখাপড়া করিয়ে লাভ কি?বিয়ে হয়েছে দুই চার টা বাচ্চা কাচ্চা হবে বাড়ির কাজ করবে ব্যাস।তা না তোমাদের যত্ত ঢং বাড়ির বউ এম এ পাস করাবা।ওই বউ চাকরি করে তোমাদের লাথি মেরে আরেক জনের সাথে ভাগবে। সে চেহারা যে কোনো পুরুষ ই বিয়ে করতে চাইবে।

আমি রুমে সুয়ে সুয়ে তাদের এই জঘন্য মান মানসিকতার কথা শুনছিলাম।মা প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে গেলেন।মা রেগে বললেন,আমার ছেলের বউ নিয়ে একটা বাজে কথা ও বলবা না।আমার বউমা কেমন সেটা আমি জানি।আমি গোসলের পর আমার কাপড় টাও ও ধুয়ে দেয়।আবার শুকিয়ে গেলে ভাজ করে আমাএ রুমে রেখে যায়।তাছাড়া ওর শরীর ভাল না।তা না হলে মিথু সুয়ে থাকা মেয়ে না।

নিরবের ফুফু বলে উঠলো,আমার ছেলে নিরবের কত পরে বিয়ে করেছে তার ছেলে হয়েছে।আর নিরবের বউ কি বন্ধ্যা এতদিন হয়ে গিয়েছে বাচ্চা হচ্ছে না।বাচ্চা না হলে বাড়িতে সে বউ পুষে রেখে লাভ কি?

ছিঃসমাজে কত বিকৃত মানসিকতার মানুষ আছে।ভাবতেই গা রিরি করছে।

এমন সময় নিরব এসে তাদের কথা বার্তা শুনে ভীষণ ভাবে রেগে গেলো।নিরব সোজা বলে দিলো, আপনারা আমাদের বাসায় কেনো?আপনারা কি কোনো সম্পর্ক রেখেছেন।আমাদের বাসায় এসে এ ধরনের বাজে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন আর বেরিয়ে যান বাসা থেকে।নিরবের সাথে তাদের একটু কথা কাটাকাটি হওয়াতে তারা রাগ করে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো।

নিরব কে ভীষণ রাগান্বিত লাগছে কিন্তু কেনো?খুব জোরে নাম ধরে ধরে ডাকছে আমার।নিরব তো কখনো এমন করে না।এত জোরে কেনো ডাকছে।

মা নিরবের পেছন পেছন আমার রুমে প্রবেশ করতে করতে বললেন,নিরব কি হয়েছে?এভাবে ডাকছিস কেনো মিথুকে?কি হয়েছে বল।

নিরব হাত কপালে চালাতে চালাতে বললো,আম্মু ওর কাছে জিজ্ঞেস করো প্লিজ।আমি জাস্ট আর এগুলা নিতে পারছি না আম্মু।

আমি ভয় ভয় মন নিয়ে বললাম কি হয়েছে নিরব।রাগ করছো কেনো?

নিরব একটা ধমক দিয়ে বললো,হোয়াট ডু ইউ ওয়ান্ট মৃথিলা।তুমি কি ভেবেছো তোমার শরীর খারাপের কারণ আমি জানিনা।আম্মু ও গত এক মাস হেঁটে ভার্সিটি যায়। ক্যান্টিনে খাবার খায় না।আমি ওকে যে টাকা দিয়েছি আলমারি খুলে দেখো সব টাকা রয়েছে।গত দু’মাস ধরে এমন করে ও।আমি একটু অন্য দিকে বিজি ওকে আর এখন এগিয়ে দিয়ে আসতে পারি না,নিয়েও আসতে পারি না। ওর অসুস্থতার কারণ খুজতে গিয়ে এগুলো জানতে পারেছি।মৃথিলা আমাকে তুমি এসব করে অপমান করছো।তুমি এগুলা করে এটাই বোঝাচ্ছো যে আমি অক্ষম। আমার ক্ষমতা নেই তোমাকে চালানোর।তোমার এসব কাজে আমি অনেক বিরক্ত হয়েছি।এমনি মাথায় এত প্রেসার তার উপর তুমি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি সামলাবো কিভাবে।নিরব গায়ের শার্ট খুলে বেডে ফেলে দিয়ে শাওয়ার নিতে চলে গেলো।

মা আমাকে বলেন,রাগ করিস না মা।তোর অসুস্থতার জন্য ওর মাথা ঠিক নেই।

নিরব আধাঘন্টা পরে সাওয়ার থেকে বেরোলো পরনে সাদা টাওয়াল।আমার দিকে তাকাচ্ছেও না।আমি যে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছি সে খেয়াল ই করছে না এগুলা নিয়ে।সাওয়ার শেষ করে এসেই ল্যাপটপ নিয়ে বসলো।আমার দিকে খেয়াল ই নেই তার।

সে আমাকে ভীষণ ইগনোর শুরু করলো কোনো কথা ই বলছে না।তার মুড ও ভয়ানক অফ।দেখি যে বিকালে সুপ্তি আর রিফাত ভাইয়া এক গাদা ফল নিয়ে হাজির। তাদের ডেকে আনা হয়েছে আমার বিচারের জন্য।নিরব এর মুড একটুও কমে নি।সুপ্তি আর রিফাত ভাইয়া আমাকে নিরব কে দুজন কেই বুঝালো।কিন্তু নিরবের রাগ ই কমে না।

সুপ্তি আমায় বললো,মৃথিলা ভালবাসার পৃথিবীতে তোর থেকে ভাগ্যবতি কেউ নেই।রিফাত ও আমায় খুব ভালবাসে।কিন্তু নিরব ভাইয়ার তুলনা নেই কারো সাথেই।উনার প্রতিটা রাগের মাঝেই তোর প্রতি ভীষণ ভালবাসা প্রকাশ পাচ্ছে।আচ্ছা মানুষ মানুষ কে এতটা ভাল বাসতে পারে কিভাবে।

রিফাত ভাইয়ারা চলে যাওয়ার পর নিরব কে বললাম শুনুন না,সে তো শুনলোই না উলটা বললো ডোন্ট টক টু মি।

এবার আমার ভীষণ কাঁন্না পাচ্ছে।নিরব আমার অক্সিজেন।ও আমার সাথে কথা না বললে আমার ভেতরে অক্সিজেন ঠিক ভাবে প্রবেশ করে না।কেমন যেনো শ্বাস কষ্ট হচ্ছে।
বেডে বসে বসে দুষ্টুমি করছিলাম নিরবের রাগ ভাঙানোর জন্য। নিরব কে মেসেজ করছি জানেন আপনাকে না ভীষণ হট লাগছে।আমি কখনো ওকে এগুলা বলি না।আমার মুখে ভালবাসা বা রোমান্টিক কথা শোনার জন্য ভীষণ পাগল থাকে নিরব।কিন্তু আজ কোনো ফিলিংস দেখছি না।

আবার মেসেজ করলাম,এই নিরব একটু কাছে এসো না।তুমি কি বুড়ো হয়ে গিয়েছে কত যুগ একটু আদর ও করো না।তুমি আসবে নাকি আমি আসবো।

তাও সে উত্তর করে না।এতক্ষণ বেলকনিতেই ছিলো। ফোন টা রুমে আমার কাছে ফেলে দিয়ে নিচে চলে গেলো।এবার আমি মেসেজ করবো কাকে তাই ভাবছি।

খানিক টা রাত হয়েও গেলো।দেখি প্লেটে ভাত মাখিয়ে এনে কোনো কথা বলছে না অথচ ভাত খাইয়ে দিচ্ছে।চুপ চাপ খাচ্ছি।এমন সময় দ্রুত উঠে গিয়ে ওয়াশ রুমে বমি করলাম।নিরব রিতীমত অবাক হয়ে গেলো আবার কিছুটা ভয় ও পেয়ে গেলো।আমাকে বমি করতে দেখে আরো রেগে গেলো।ওয়াশ রুম থেকে এসে দেখি মাথা হাত দিয়ে চিন্তিত হয়ে বসে আছে।আমি হাত মুখ ধুয়ে এসে বললাম আবার খাইয়ে দিন।নিরব এবার স্হির হয়ে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে।তবুও কথা বলছে না।আমি নিরবের গলা জড়িয়ে ধরে বললাম তুমি কথা বলছো না কেনো? তুমি জানোনা তুমি কথা না বললে আমার ভীষণ কষ্ট হয়।আর এমন করবো না প্লিজ কথা বলো।নিরব আমাকে শক্ত ভাবে জড়িয়ে ধরে বললো প্লিজ চোখের পানি ফেলো না জানপাখি।তুমি কেনো বোঝোনা তোমার কিছু হলে আমার মাথা ঠিক থাকে না।তোমাকে ভীষণ প্রয়োজন আমার।তুমি পাশে থাকলে আমি আবার উঠে দাঁড়াতে পারবো।তুমি অসুস্থ থাকলে আমার কাজে মন বসবে না আমি কোথাও গিয়ে শান্তি পাবো না।সরি অনেক বকেছি, প্লিজ ক্ষমা করে দাও।আমার মাথা ঠিক ছিলো না।

“নিরব কে বললাম,তুমি বকবে না কে বকবে আমায়।”

“আমি একটু ভয় পাচ্ছিলাম ব্যাগ গুছিয়ে চলে না যাও।”

“তোমার থেকে বেশী ভালবাসে কে আমায় তার কাছে যাবো।তাছাড়া রাগ হলে যাবোই বা ক্যানো?আম্মুর এই নিষ্পাপ ছেলেকে জ্বালাবে,রাগাবো, ভালবাসার জন্য এইখানেই থেকে যাবো।জানো না তোমার এই বুকটায় ভীষণ শান্তি লাগে আমার।”

“আম্মুর নিষ্পাপ ছেলেকে অসভ্য ইশারা করছিলে এখন কি হবে তোমার।”

“কি হবে আমার শুনি।”

“কি মেসেজ করছিলে তখন।”

“ছাড়ো ওসব।”

“ছাড়বো বললেই তো ছাড়া যায় না ময়না পাখি।”

“আচ্ছা তাহলে কি করবা শুনি।”

“ভালবাসার তুফান তুলবো,তোমায় স্পর্শ ভালবাসার ঢেউ তুলবো।তোমার প্রেমে আসক্ত হবো।”

সেদিন গভীর রাতে ওয়াশ রুমে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গেলাম।আমার চিৎকারে নিরব দ্রুত উঠে গেলো।ওয়াশ রুনে সেন্সলেস ছিলাম আমি।গায়ে প্রচন্ড জ্বর ছিলো।নিরব সারারাত বসে বসে জলপট্টি দিয়েছে আমার মাথায়।সারারাত ভীষণ চিন্তা করেছে আমায় নিয়ে।সকাল হতেই জ্বর কিছুটা কমেছে।সত্য কথা বলতে প্রচন্ড কেয়ারিং নিরব আমার প্রতি।জ্বর কমে গিছে আরো সাত দিন কেটে গিয়েছে কিন্তু বমি বমি ভাব ই যায় না।দিনে ৫-৭ বার এমন হচ্ছে। খাবার খাওয়া ও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।নিরব আর আমি দাঁড়িয়ে আছি পাশের ফ্ল্যাটের এক আন্টি বলে উঠলেন নিরব মিষ্টি খাওয়াও বৌমা বমি করছে মনে হয় সুখবর আছে।নিরব আমার দিকে তাকিয়ে একটু বিরক্তি নিয়ে বললো, ইন বাংলাদেশ মেয়েরা বমি করছে তার মানে সে প্রেগন্যান্ট সো ডিজগাস্টিং।
#হিয়ার_মাঝে
৫১.
#WriterঃMousumi_Akter

গোধুলির পড়ন্ত বিকালে ছাদের রেলিং ঘেষে দাঁড়িয়ে আছি আমি।বেশ কয়েকদিন মন মরা কারো সাথে খুব একটা কথা বলা হয় না।প্রথমবার শরীরের এমন বাজে অনুভূতি হচ্ছে।এমন সময় পেছন থেকে নিরব এসে গলা জড়িয়ে ধরে বললো বউ টা মন মরা আছো কেনো?নিরব এর দিকে আনমনা হয়ে তাকিয়ে রইলাম কিছুই ভাল লাগছে না।নিরব ছাদে একটা পাটি বিছিয়ে দিয়ে আমাকে বসিয়ে দিলো, ও নিজে আমার পেছনে বসে মাথা ঠান্ডা তেল লাগিয়ে দিচ্ছে।নিরবের দিকে তাকিয়ে বললাম এত ব্যাস্ততার মাঝে এসব মনে থাকে কিভাবে তোমার।

“নিরব হেসে দিয়ে বলে,,আমার জানপাখিটার মাথায় পেইন করে আমি সেটা বুঝবো না।মাথায় তেল লাগিয়ে চুল বেনি করে দিলো সুন্দর করে।”

“বলতে বলতে আবার ও বমির মতো ওয়াক আসলো আমার।উঠে গিয়ে ছাদের কোণায় গিয়ে বমি করলাম।”

“নিরব খুব সন্দিহান দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে থেকে বলে মৃথিলা সবাই তোমার এই সমস্যা টা কে প্রেগ্ন্যাসির কারণ হিসাবে নিচ্ছে।আমার তো ভয় হচ্ছে তোমার অন্য কিছু হয় নিতো। ”

“অন্য আবার কি হবে গো”

“তুমি প্রেগন্যান্ট হলে তো তুমি নিজেই বুঝতে।মেয়েদের শারীরিক সমস্যা থেকে এটা বোঝা যায়।”

“আমি কিভাবে বুঝবো শুনি যে আমি প্রেগন্যান্ট কিনা।।।”

“ওহ গড এই মেয়ে বড় হবে কবে।এইজন্য ই তো আমি এক্ষুণি বেবি নিতে চায় না।তুমি আগে সব বোঝা শিখো তারপর বেবি।”

“নিরব মা আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছিলো ডাক্তার বলেছে এটা প্রেগ্ন্যাসির লক্ষণ হতে পারে।টেস্ট করে দেখতে হবে।”

“তোমার পিরিয়ড ঠিক আছে। না মানে রেগুলার হয়।”

“নিরবের মুখে এমন কথা শুনে ভীষণ লজ্জা পেয়ে গেলাম আমি।কি করবো এখন আমি।লাজুকতা নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম এসব কি বলছো তুমি।”

“দেখো তুমি একটা শিক্ষিত মেয়ে এগুলা নিয়ে লজ্জা পেলে হবে না।পিরিয়ড হয়েছে লাস্ট কবে।”

“মুখ কাজুবাজু করে বললাম আড়াই মাস আগে হয়েছে তারপর আর হয় নি।”

“ওহ মাই গড! এই কথা তুমি এখন বলছো আমায়।বুঝেছি যা হবার তা হয়েছে।”

“কি হয়েছে?”

“মনে হচ্ছে আম্মুর নিষ্পাপ ছেলেকে এবার প্রমাণ করবে ছেলেটা ভারি অসভ্য। অসভ্য রকমের দুষ্টুমি না করলে তো আর সে প্রেগন্যান্ট হয় নি।”

“নিরব তুমি এখন বেবি চাও না আমি জানি।যদি হয় আমায় কি বকবে।”

“আমার মুখ টা ধরে কপালে চুমু খেয়ে মাথাটা ওর বুকের সাথে আলতো করে চেপে ধরে বলে পাগলি একটা।হ্যাঁ বেবি চাইতাম না তার কারণ তুমি।আমি সব সময় চেয়েছি আমার মিথু আগে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যাক।নিজেকে যোগ্য ভাবে গড়ে তুলুক সবার সামনে।আমার মিথুকে যেনো কেউ ছোট করতে না পারে।তার মানে এই না আমি বেবি চাই না।আমি মনে মনে সব সময় বেবি চেয়েছি।এই যে দেখো,এখন তুমি দূর্বল হয়ে পড়েছো, ক্লান্ত এইভাবে তো লেখাপড়া করতে পারছো না।এটা ভেবেই চাইতাম না।তবে হয়ে গেলে আমি ভীষণ ভীষণ খুশি জানপাখি।”

“আমি প্রেগন্যান্ট হলে ভীষণ লজ্জা লাগবে সবাই কি ভাববে আমাকে দেখে।।”

“ভাববে বরের আদরের চিহ্ন ফুটে উঠেছে।”

“তোমার সব সময় আধ্যাতিক চিন্তাভাবনা তাইনা।”

“পরের দিন সকালে ভোরে ইউরিন টেস্ট করার জন্য ওয়াশরুমে প্রবেশ করলাম।নিরব বাইরে পায়চারী করছে।সারারাত সে এই বেবি নিয়েই গবেষণা করে গিয়েছে।ইউরিন টেস্ট এর কিট টা কিছুক্ষণ পরে নিরবের সামনে এনে ধরলে ও খুশিতে লাফিয়ে ওঠে।আমাকে জড়িয়ে ধরে খুশিতে ঠিক কি করবে বুঝে উঠতে পারছিলো না।নিরব আমাকে শক্ত ভাবে জড়িয়ে ধরে বলে আমি খুব খুব খুশী হয়েছি মৃথিলা। আমার ভাবতেই কেমন লাগছে যে আমি বাবা হবো।উফফফ এত্ত ভাল লাগছে মন চাচ্ছে আরো বেশী আদর করি তোমায়।”

এমন সময় মা ঘরে প্রবেশ করে বলে,কি হয়েছে নিরব।
মা প্রবেশ করাতে আমাকে ছেড়ে দিলো নিরব।নিরব কিছু বলছে আমাকে ইশারা করছে আমি যেনো বলি।মা কে বললাম মা তোমার ছেলে বাবা হতে চলেছে।মা আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে আমার সংসারে এখন এই একটা জিনিসের ই অভাব ছিলো।অনেক বড় খুশির খবর এটা মা।একটা নাতি নাতনি হলে তাকে নিয়েই আমার সময় কেটে যাবে।

হঠাত নিরবের মুখটা মলিন হয়ে উঠলো।নিরব বলে উঠলো আজ যদি বাবা বেঁচে থাকতেন তাহলে বাবার থেকে খুশি কেউ হতো না।মা নিরবের কাধে হাত দিয়ে বলেন সবাইকেই যেতে হবে বাবা এটাই নিয়ম।তোর সন্তান তোকে বাবা ডাকলে তবেই তোর বাবার আফসোস মিটবে।মৃথিলার সামনে আর কখনো ইমোশনাল কথা বলিস না।এ টাইম টা অনেক সুখের বাবা।অনেক সতর্ক থাকতে হবে এ সময়ে।মৃথিলা যেনো কোন ভাবেই চিন্তিত হয়ে না পড়ে।মৃথিলাকে কোনো প্রেসার দেওয়া যাবে না বাবা।

নড়াইল থেকে নানা ছুটে এলেন আমার মা হওয়ার খবর শুনে।নড়াইল থেকে নানা চিড়ের মোয়া,খেজুর পাটালি,মুড়ি,নাড়ু,মামির বানিয়ে দেওয়া আচার নিয়ে এসছে।এই বয়স্ক মানুষ টার কত ভালবাসা আমার প্রতি।আজ বাসার সবাই অনেক খুশি।নানাকে আমাদের বাসাতে দেখতে রিক ভাইয়া,মুনতাহা আপু,রিফাত ভাইয়া আর সুপ্তি এসছে।মুনতাহা আপু এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে।আমার বড় বোনের জায়গা টা মুন আপু ই নিয়েছে।আপু তো আমাকে রিতীমতো বলতে থাকতে আমি যেনো এটা করি সেটা করি ইয়া লম্বা এক লিস্ট করে দিয়েছে আপু আমাকে।

সুপ্তির কোলে আপুর বেবি টা খিল খিল করে হাসছে।আপুর শারিরীক একটু সমস্যা থাকায় আপুর বেবিটা সুপ্তি ই সামলায় বেশী।

সুপ্তি আমাকে রিতীমতো বলে দিলো আমার বেবি হলে সে আমাদের বাসায় এসে কয়েক মাস থাকবে।

রিফাত ভাইয়া বললো আশে পাশে সবার ই বেবি হবে আর একজন আজিবন উপোস থাকবে।

সুপ্তি একটু দুষ্টু হেসে বললো আপনার মতো ফাজিল এর বেবি হবে না কখনো।বউ কে টাইম না দিয়ে সারাদিন রাত বাইরে বাইরে।

রিফাত ভাইয়া বললো,, আহা রে ঘরে এলে শাবানার মতো ঘোমটা দিয়ে এক পাশে থাকো তাহলে বেবি হবে কিভাবে সখিনা।

সুপ্তি রেগে গিয়ে বললো,আজ বাড়িতে চলুন সখিনা কে আপনাকে বুঝাবো।

ওদের মিষ্টি ঝগড়া বোধহয় আজন্মকাল চলবে।

“পরের দিন নিরব আমার জন্য কয়েক টা শাড়ি আর অনেক গুলা বেবি পিকচার এনে ঘরে লাগিয়ে দিলো।”

“নিরব কে বললাম,হঠাত এত শাড়ি কেনো শুনি।”

“শোনো মিথু তোমার দল ভারী এখন।তোমার জুনিয়র বলবে পাপ্পা মাম্মি কে কিছুই দেয় না।খুব ই কিপটা।”

“এখন টাকা পয়সার সমস্যা এখন এগুলা আনার কি প্রয়োজন ছিলো শুনি।”

“আমার বউ কে এটুকু দেওয়ার সামর্থ আমার আছে।”

নিরব ওর একটা সমস্যার কথা ও আমাদের বুঝতে দিতে চাই না।কিন্তু আমি বুঝি ওর সমস্যা টা।

হঠাত করে কয়েকজন লোক বাড়িতে এসছে।লোক গুলোকে দেখে বেশ অবাক হয়ে গেলাম।মা আর আমি কেউ ই চিনলাম না। লোক গুলো তাদের পরিচয় দিলে অবাক হয়ে গেলাম আমরা।নিরব ব্যাংক থেকে কিছু লোন নিয়েছিলো নতুন করে বিজনেস দাঁড় করানোর জন্য।বিজনেস এ লস হওয়াতে ব্যাংক থেকে চাপ দিচ্ছে।তাদের এক্ষুণি টাকা ফেরতে দিতে হবে।বেশ অনেক গুলো টাকার লোন।এই মুহুর্তে নিরব কিভাবে লোন এর টাকা শোধ করবে।ওর কাছে এখন কিছুই নেই কিন্তু আমাদের সেটা বুঝতে দিতে চাই না।আমাদের বাড়তি পেইন নিতে দেয় না।ব্যাংকের লোকজন এর সাথে কথা বলে বিদায় দিয়ে দিলাম।

সেদিন রাতে নিরব বাসায় আসলে ভীষণ চিন্তিত দেখাচ্ছিলো। মা আর আমি বুঝতে পারছিলাম ওর চিন্তার কারন।নিরব ফ্রেশ হয়ে এসে বসলে আমি খাবার দিলাম কিন্তু ও খেলো না।মাথায় এত গুলা দেনার দায় অনিশ্চিত ফিউচার নিয়ে খাবার কারো মুখেই যায় না।আমি আর কোনো জোর না করে নিরবের পাশে বসে ওর কাঁধে হাত রেখে বললাম, আজ ব্যাংক থেকে লোক এসছিলো।

-কথাটা শুনেই ও চমকে গেলো।

-আমি একটা হাসি দিয়ে বললাম চিন্তা করোনা।আল্লাহ পরীক্ষা নিচ্ছেন।

-আমি কি করবো মিথু।বাড়ির দলিল ব্যাংকে রেখে টাকা নিয়েছিলাম।এখন কিভাবে বাড়িটা বাঁচাবো বলো।

-আমার তো অনেক গহনা আছে নিরব।এগুলো বিক্রি করে দাও প্লিজ।তুমি ব্যাংকের টাকা শোধ করো।

-এত ছোট কাজ আমি করতে পারবো না মিথু।তোমার গহনা বিক্রি করা পসিবল নয়।প্রয়োজনে যা কিছু করবো তবুও তোমার জিনিস নষ্ট করবো না।

-নিরব স্বামি হলো বড় অলংকার।সেই অলংকারের সাজে আমি সজ্জিত।তোমার থেকে বড় অলংকার আমার কাছে অন্য কিছুতে নেই। তুমি থাকলে বাড়তি গহনা চাইনা আমার।প্লিজ এগুলা নিয়ে নাও।বলেই নিরবের কাঁধে মাথা রাখলাম আমি।

-নিরব বললো আগামিকাল সিলেট যাবো ওখানে কিছু টাকা পাওয়া যাবে।দেখি কিছু করা যায় কিনা।

নিরব আমার পেটে হাত দিয়ে বললো জুনিয়র কাল তোমার মাম্মির খেয়াল রেখো আমি বাসায় থাকবো না।তোমার মাম্মির খুব শাক্তিশালী মহিলা তুমি এবং আমি আমাদের সবাইকে ভাল রাখবে সে।বলেই পেটে আলতো একটা চুমু দিলো নিরব।

পরের দিন খুব ভোরে বেরিয়ে গেলো নিরব।ওকে বিদায় দিয়ে মন টা ভীষণ খারাপ।মনের মাঝে ভীষণ অশান্তি হচ্ছে।বার বার নিরব কে মেসেজ করছি কিন্তু রিপ্লে আসে নি।রুম ময় পায়চারী করছি আমি।মনটা ভীষণ অস্হির লাগছে।দু’ঘন্টা হয়ে গিয়েছে এখনো যোগাযোগ করতে পারলাম না।কতদূর পৌছেছে সেটাও জানিনা।

চলবে,,,,
চলবে,,,,

(অবশ্যই রেসপন্স করবেন।বানানে খেয়াল নেই আজ ভুল আছে অনেক)
চলবে,,,

(কারেন্ট নেই তাই আর বেশী লিখতে পারি নি)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here