হৃদমাঝারে রাখবো পর্ব -০৫

#হৃদমাঝারে_রাখবো
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ৫
আহান অবাক হয়ে ফিহাকে বললো, তোমরা রিলেশনে নাই?

‘ আরে না! কি বলছেন ভাইয়া। আদ্রিব ভাইয়া আমাকে অনেক আগে থেকেই বিরক্ত করতো। ইদানিং অনেক বেশি বিরক্ত করছে তাই আপনাকে বললাম।

‘ আমি হয়তো ভেবেছিলাম তোমরা রিলেশনে আছো। কিছু মাস তো দেখেছিলাম তোমরা সবসময় একসাথে আড্ডা দিতা,ঘুরতা

‘ হ্যা, একসময় ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক ছিলো। তারপর সে যখন আমাকে ভালোবাসার প্রস্তাব দেয় তখন আমি তাকে না বলি কিন্তু আদ্রিব ভাইয়া কিছুতেই মানছিলো না। তাই আমি তার থেকে দূরে চলে আসি৷ তারপরই আদ্রিব ভাইয়া আমাকে প্রতিনিয়ত বিরক্ত করা শুরু করে। আপনার হয়তো ফ্রেন্ড আদ্রিব ভাইয়া তাই আপনি হয়তো তাকে বুঝাতে পারবেন৷

‘ আদ্রিব আমার ফ্রেন্ড না। ওকে আমার পছন্দ না। সবসময় ঝামেলার ভিতরে থাকে৷ পড়ালেখার প্রতি কোন মন নেই ওর। এমন ছেলে আমার ফ্রেন্ড হতে পারেনা৷ আমি স্যারকে বলে রাখবো৷ আদ্রিবকেও বলবো তোমাকে যাতে আর বিরক্ত না করে। এরপরও যদি তোমাকে বিরক্ত করে তাহলে বলবা আমাকে৷

‘ ঠিক আছে ভাইয়া।

ফিহা চলে আসলে রাইসা ওকে বললো, আহান ভাইয়াকে কি বললি?

‘ আদ্রিবের ব্যাপারে বলেছি

‘ মানে?

‘ আদ্রিব আমাকে বিরক্ত করে এটা বলেছি। ভাইয়া স্যারদের বলে রাখবো আর আদ্রিবকেও বলবে৷ আবার আমাকে বিরক্ত করলে ভাইয়ার কাছে বলতে বলেছে

‘ এটা কি তুই ঠিক করলি?

‘ কেন ঠিক করিনি?

‘ শুধু শুধু এরকম করতে গেলি কেন?

‘ শুধু শুধু কোথায় করলাম। তোরা দেখলি না ওর ফ্রেন্ডরা কি আচরন করলো৷ আদ্রিবকে বলে দিয়েছি আমি ওর সাথে আর কথা বলবো না। তারপরও বেহায়ার মত আমার সাথে কথা বলতে আসে

‘ এগুলা কি বিরক্তি করা?

‘ আমার কাছে তেমনই৷ দিন দিন সে আরও বিরক্ত করবে৷ তাই আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া ভালো।

‘ তুই হঠাৎ ওইদিন তাকে বলে দিলি আর কখনও তার সাথে কথা বলবি না৷ অনেক খারাপ আচরন ও করলি৷ আদ্রিব ভাইয়া সেটা নিতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়লো। তারপর আবার এরকমটা কিভাবে করতে পারলি। একসময় যে মানুৃষটা এতটা প্রিয় ছিলো সে হঠাৎ করে এতটা অপ্রিয় হলো কি করে

‘ মানুষের মন কি সবসময় একরকম থাকে নাকি৷ তখন ভালো লাগতো কথা বলতাম। আবেগের ভিতরে ছিলাম তখন৷ এখন সেই আবেগটা আর কাজ করেনা

‘ কতটা সহজ ভাবে বলে দিলি। মানে তোর যখন ভালো লাগবে তখন কথা বলবি আবার যখন ভালো লাগবেনা তখন দূরে সরে আসবি৷ এটা মোটেই ঠিক না ফিহা৷ কারও ইমোশন নিয়ে এভাবে খেলা উচিত না। এটা ক্রাইম। তোর কাছে টাইমপাস মনে হলেও আদ্রিব ভাইয়ার কাছে সিরিয়াস ছিলি৷ ভাইয়া তোকে সত্যিই অনেক ভালোবাসে৷

‘ আমার তাকে পছন্দ না

‘ আগে যখন কথা বলতি তখন পছন্দ অপছন্দের কথা ভাবা উচিত ছিলো

‘ আর কত বার বলবো তোকে তখন আবেগে পরে সবকিছু ভালো লাগতো। এখন বুঝতে পারছি তাই তার কাছ থেকে চলে আসছি। আমার লাইফ আমি যেভাবে ইচ্ছে ইনজয় করবো৷ আমি শুধু জাস্ট ওর সাথে ফান করেছি,টাইমপাস করেছি, ফ্লার্ট করেছি। এখন ও সিরিয়াসলি নিলে আমার কিছু করার নেই। তুই ওকে বুঝিয়ে বল ও যাতে আমাকে ভুলে যায়। নিজেে মত করে থাকে৷

******

ফিহা আহানের সাথে কথা বলছিলো এটা আদ্রিব দেখেছিলো। আদ্রিব আহানের সাথে কথা বলতে যাবে তখনই ওর ফ্রেন্ডরা ওকে আটকালো।

কিয়াম বললো, আর কোন ঝামেলায় জড়াস না৷ তোর শরীরের অবস্থা ভালো না৷ আবার অসুস্থ হয়ে পড়তে পারিস

‘ হলে হবো অসুস্থ। তারপরও ফিহা অন্য কারও সাথে কথা বলবে তা সহ্য করতে পারবো না। ওকে নিষেধ করেছিলাম আহানের সাথে কথা না বলতে৷ এখনই আহানকে বলতে হবে ফিহার সাথে আর কথা না বলে

‘ তুই এমনিতেই রেগে আছিস। সেখানে গিয়ে হয়তো কোন ঝামেলা বাঁধাবি। আগে শান্ত হয়ে বস৷ পরে আহানের সাথে কথা বলিস৷

আদ্রিবকে ওর ফ্রেন্ডরা আরও কিছুখন বসিয়ে রাখলো। কিছুখন পর আদ্রিব এখন মোটামুটি শান্ত হলে আহানের সাথে কথা বলতে গেলো। আদ্রিবকে দূর থেকেই আহানকে বললে, তোর সাথে কথা আছে আমার

আহান বললো, ভালোই হলো তোর সাথে দেখা হয়ে গেলো। তোর সাথেও কিছু কথা আছে আমার। আগে তুই বল তারপর আমি বলছি।

‘ তুই আর কখনও ফিহার সাথে কথা বলবি না

‘ কেন? তোরা কি রিলেশনে আছিস?

‘ না

‘ তাহলে আমি ফিহার সাথে কথা বলবো না কেন?

‘ আমি বলেছি তাই বলবি না। আমি ফিহাকে ভালোবাসি। আমি চাইনা ফিহার সাথে অন্য কেও কথা বলুক

‘ আমিও তোর সাথে এর জন্যই কথা বলতে চেয়েছিলাম। ফিহা একটু আমাকে বললো, তুই নাকি ওকে বিরক্ত করিস। এটা নিয়েই তোর সাথে কথা বলতে চেয়েছি। তবে যাইহোক ফিহাকে আর বিরক্ত করিস না

আহানের কথা শুনে আদ্রিবের রাগ হলো৷ আহানকে বললো, আমি ফিহাকে বিরক্ত করবো কিনা তা পরে দেখা যাবে। তোকে বলেছি ফিহার সাথে আর কথা বলবিনা। এটা মা’থায় রাখবি

‘ আমি তোর সাথে তর্ক করতে চাইনা। আমার কথা না শুনলে তুই নিজেই নিজের পায়ে কু’ড়াল মারবি৷ আমি স্যারকেও বলে রেখেছি

‘ তোর যাকে ইচ্ছে বলতে পারিস, যা ইচ্ছে করতে পারিস। শুধু এটা মা’থায় রাখিস ফিহার সাথে আর কথা বলবি না

আদ্রিব রাগ করেই আহানের কাছ থেকে চলে আসলো। আদ্রিবকে কিয়াম বললো, যাক ভালোই হলো কোন ঝামেলা বাঁধাসনি আহানের সাথে।

‘ ওর কত বড় সাহস আমাকে বলে ফিহাকে যাতে বিরক্ত না করি। ও নাকি স্যারের কাছে বলবে

‘ শোন, এটাকে আর বড় কোন সমস্যা বানাস না।

‘ ফিহার সাথে কথা বলতে হবে

‘ এখন বলিস না। কিছুদিন যাক তারপর সময় সুযোগ বুঝে কথা বলিস

‘ তোরা থাক, আমি ফিহার সাথে কথা বলে আসি

ফিহা ওর ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো। হঠাৎ আদ্রিব গিয়ে বললো, আমি একা কথা বলতে চাই ওর সাথে

ফিহার ফ্রেন্ডরা সবাই চলে যেতে চাইলে ফিহা ওদেরকে বললো, কোথাও যাবিনা তোরা। তার যা বলার সবার সামনেই বলবে

আদ্রিব বললো, তুমি আমার সাথে এমন করছো কেন? কি করেছি আমি?

‘ আজব তো! আপনাকে আর কতবার বলবো,আমি আপনার সাথে আর কথা বলতে চাইনা। এখন আমি অনেক কিছুই বুঝতে শিখেছি

‘ সবকিছুই কি ভুলে যাওয়া সম্ভব? আমি তোমার আবেগে জড়িয়ে গেছি। প্লিজ এমন করো না৷

‘ সেটা আপনার ব্যার্থতা আপনি আবেগে জড়িয়ে গেছেন৷ আপনার প্রতি আমার বিন্দুমাত্র আবেগ নেই

‘ তোমাকে নিষেধ করেছিলাম আহানের সাথে কথা না বলতে

‘ আজব তো! আমি কার সাথে কথা বলবো এটা আপনি ঠিক করে দিবেন নাকি। আমার লাইফ আমি যা খুশি করবো৷ আপনি বলার কে?

চলবে—-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here