হৃদমাঝারে রাখবো পর্ব -০৪

#হৃদমাঝারে_রাখবো
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ৪
ফিহা আদ্রিবের ফ্রেন্ডদের কাছে গিয়ে ওদের হাতে থাকা মোবাইলটা নিয়ে ভেঙে ফেললো। আদ্রিবের ফ্রেন্ডরা ফিহার এমন রিয়্যাকশনে অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ওরা এরকমটা একদমই আশা করেনি।

কিয়াম ফিহাকে বললো, এটা আইফোন ছিলো! এরকমটা করার মানেটা কি? তুমি কি পাগল হয়ে গেছো নাকি?

ফিহার রাগ এবার আরও বেড়ে গেলো। ওদেরকে বললো, আপনাদের ভিতর তো নূন্যতম ভদ্রতা বলতে কিছু নেই। তাই ফোনটা ভেঙেছি। এখন সেটা আইফোন হউক বা অন্য কোন ফোন হউক তাতে আমার কিছু যায় আসেনা।

‘ আজব তো! তুমি আমাদের আইফোন ভেঙে ফেলেছো আবার এমন কথা বলছো

‘ আপনাদের দে থা’প্প’ড় দেইনি সেটা ভাবুন। আমাকে কেন ভিডিও করতে ছিলেন? অনেকখন থেকে লক্ষ্য করে যাচ্ছি আপনারা আমার ভিডিও করে যাচ্ছেন

‘ আজব তো! তুমি দেখছো আমরা তোমার ভিডিও করেছি? না জেনে শুনে বোকার মত কাজ করলে একটা

‘ অনেকখন থেকে আপনার আমার আশেপাশে ঘুরঘুর করছেন৷ আপনাদের মোবাইলটাও আমার দিকেই ফোকাস করা ছিলো। আমরা সবাই এটা অনেকখন খেকে লক্ষ্য করেছি।

‘ তুমি বললেই তো আর হবেনা। মোবাইলটা তোমার দিকে ছিলো মানে এই না যে আমরা তোমার ভিডিও করেছি। তারপরও তোমার যখন মনে হয়েছে আমরা তোমার ভিডিও করছি তাহলে তুমি এসে চেক করতে। তা না করে মোবাইলটা ভেঙে ফেলেছো। এটা কোন ভদ্রতা না।

‘ আপনাদের মত অভদ্রদের কাছ থেকে আর ভদ্রতা শিখতে হবেনা। আপনার ফ্রেন্ড যেরকম আপনারা তো সেরকমই হবেন। আমি খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছি আপনারা আদ্রিবের জন্য ভিডিও করেছিলেন। ওকে বলে দিবেন আমি কখনই ওর সাথে কথা বলবো না৷ অযথা আমার পিছু ঘুরে ওর কোন লাভ হবেনা৷ আর কখনও যদি আমাকে এরকম বিরক্ত করে তাহলে স্যারদের কাছে বলতে বাধ্য হবো।

ফিহা চলে গেলো আর কিয়াম আর ওর বন্ধুরা বোকার মত দাঁড়িয়ে আছে। কিয়াম কিছু বুঝে উঠার আগেই ওর আইফোনটা ভেঙে ফেললো। কিয়ামের যা রাগ হচ্ছে বলার মত না। ফিহা যা বলেছে তা সবই আদ্রিব ভিডিও কলে শুনেছে৷ ওর সব ফ্রেন্ডরাই ভিডিও কলে ছিলো আদ্রিবের সাথে । ফিহা শুধু কিয়ামের আর রিহানের মোবাইল ভেঙেছে। তখনও বাকিরা ভিডিও কলে ছিলো।

রিহান বললো, ওর কত বড় সাহস আমাদের আইফোন ভেঙে ফেললো

কিয়াম বললো, এখন রাগ দেখাচ্ছিস কেন? ফিহা যখন সামনে ছিলো তখন কিছু বললি না কেন?

‘ ছেলে হলে তো এখান থেকে যেতে দিতাম না। মেয়ে বলেই তো কিছু বলতে পারলাম না।

‘ আমরাও সেই কারনে কিছু বলতে পারিনি।

‘ এমন ভাবেও কেও ভাঙে। মনে তো হয় আর ঠিকই হবেনা।

‘ তাও ভালো যে স্যারদের কাছে বলে নায়। তখন এটা অনেক বড় ইস্যু হয়ে যেতো।

‘ আগে কিন্তু ফিহা এমন ছিলো না।

‘ আদ্রিবের সাথে যেরকম ব্যবহার করেছে তার তুলনায় এসব কিছুই না।

কিয়াম আদ্রিবকে বলতে লাগলো, দোস্ত সবকিছুই তো দেখলি, শুনলি। ও বুঝতে পেরে গেছে তোর জন্যই আমরা ওর ভিডিও করেছিলাম। তাই আমাদের আইফোন হারাতে হলো। তাতেও কোন দুঃখ নেই৷ কিন্তু ও যা ব্যবহার করলো তাতে কিছু বলার নাই আর

‘ তোরা শুধু ওর ব্যবহার আর আইফোন নিয়ে আছিস। আমি ভাবছি ও কিভাবে আমাকে ভুলে যেতে পারে। ঠিক কি কারনে ও এমন করছে! ভালো লাগছেনা আমার। তোদের সাথে পরে কথা বলবো।

আদ্রিব কল কেঁটে দিলো। ওর চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। আদ্রিব অস্থির হয়ে পড়ছে। ফিহা যখন বললো, আমি আর ওর সাথে কথা বলবো না৷ তখন আদ্রিবের যেনো হৃদয়টা পু’ড়ে যাচ্ছিলো। কত সহজে বলে দিলো। একবারও ওর কথা চিন্তা করলো না। ফিহা তো এরকম ছিলোনা। তাহলে এখন ওর সাথে এরকম করছে কেন?

******

রাইসা বললো, এরকমটা করার কি খুব দরকার ছিলো? ফোন দুটো না ভাঙলেও পারতি৷ আইফোন ছিলো৷ মুখে কিছু বলে দিলেই হত

‘ ওদের অন্যায় ছিলো তাই ভেঙেছি৷ ওরা কেন ভিডিও করবে। আমি বলে দিয়েছি ওর সাথে আর কথা বলবো না। ও ওর মত আর আমি আমার মত৷ তারপরও ও এমন করবে কেন

‘ আদ্রিব ভাইয়া তোকে ভালোবাসে

‘ ও ভালোবাসে বলে কি আমাকেও ভালোবাসতে হবে নাকি। আমি আমার লাইফ নতুনভাবে শুরু করতে চাই। আগে যা হয়েছে সব ভুলে গেছি আমি৷

‘ তোর জন্য ভুলে যাওয়াটা খুব সহজ হলেও আদ্রিব ভাইয়ার জন্য হয়তো ততটাই কঠিন। তাই এমন করছে৷

‘ সেটা ওর ইচ্ছে ও কি করবে। তাতে আমার কি৷ যার যা ইচ্ছে করবে। আমি তো আর ওকে ভুলে যেতে নিষেধ করিনি৷

****

দুই দিন পর

আজকে আদ্রিব ভার্সিটিতে এসেছে। কিয়াম, রিহান আগেই আদ্রিবকে বলে দিয়েছে ওইদিনের মত যাতে না হয়। ওইদিন ভিডিও করাতে ফিহা যেরকম রিয়্যাক্ট করেছে এখন যদি আবার আদ্রিব কথা বলতে যায় তাহলে যে কি ঝামেলা বাঁধাবে তা তো বলার অপেক্ষা রাখেনা।

কিয়াম আদ্রিবকে বললো, আপাতত ফিহার সাথে কথা বলার দরকার নেই। ওইদিন কি হয়েছিলো তা তো জানিসই। এখন আবার কথা বলতে গেলে ঝামেলা হয়ে যেতে পারে। ফিহা যা রাগি তাতে যে কোন কিছু করে ফেলতে পারে

‘ কথা তো ওর সাথে বলতেই হবে। এই দুইদিন যে কিসের ভিতর ছিলাম তা তোদের বলে বুঝাতে পারবো না৷

****

ফিহা ওর ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো। হঠাৎ আহানকে দেখলো। ফিহা ওর ফ্রেন্ডদের বললো, তোরা থাক আমি আহান ভাইয়ার সাথে কথা বলে আসি

রাইসা বললো, আহান ভাইয়ার সাথে আবার কিসের কথা?

‘ আমি আসছি। তোরা থাক

ফিহাকে দেখে আহান বললো, কিছু বলবা?

‘ আসলে ভাইয়া, ভার্সিটির একটা ছেলে আমাকে অনেক বিরক্ত করে

‘ নাম কি ছেলেটার?

‘ আদ্রিব

ফিহার কথা শুনে আহান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ফিহাকে বললো,

চলবে—

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here