হৃদয়ের প্রতিশ্রুতি পর্ব ৭

🌸#হৃদয়ের_প্রতিশ্রুতি🌸

#লেখিকাঃআদিলা
#পর্বঃ৭
__________________🌸
আমির হাতের বাধন আরও শক্ত হয়ে আসে।ইয়ামিনার অস্থিরতা যেন একটু একটু করে বেড়ে চলচ্ছে । আমিরের হাতের রক্ত ইয়ামিনার গলা ঘাড় পেটে রক্তের দাগ শুকিয়ে গেছে।
অ..অ..আপনার হাত অনেকক্ষানি কেটে গেছে আপনি ব..ব..বসুন আ…….
আমির জরিয়ে ধরা অবস্থাতে বলে… জানো আজও আমি সহজ আজও আমার মনটা সরল আজও আমার ভালাবাসা অবুঝ…. আজও আমি নিষ্পাপ কিন্তু কি যেন নেই কে যেন নেই কিছু একটার অভাব অনুভূতি অ.. অ..অনুভব করছি আমার অনুভুতিতে একটা অভাব আছে একটা বড় কষ্ট আছে একটা বড় পাথর আছে আমি ফিল করতে পারি আমি বলতে পারি না।। আমি আমি বুঝাতে পারি না।। আমি শুনতে পাই না। আজ আমি আমার আমিকে খুজে পায় না। আজ আমি আমার আমিকে বুঝাতে পারি না। আমি….. কতটুকু ভালবাসি আমার আ…আমি কে শোনাতে পারি না যে আমি একজনকে ভালবাসি ওহ আমি তো ভালবাসতাম। ওতো আমাকে কখনও ভালইবাসেই নি। শুধু আমার সাথে ভালবাসার অভিনয় করেছে। বিশ্বাস করো সেদিন নিজের সব কিছু ত্যাগ করে ওকে বাচিয়ে ছিলাম। নিজের বাচা মরা চিন্তাটুকু করিনি।।

সেদিন……..

আমির বুঝতে পারছিলনা কি করবে গাড়ির ব্রেক হটাৎ করেই কাজ করচ্ছে না কিছুতেই ব্রেক করা যাচ্ছে না। তার মধ্যে ড্রিংক করার কারনে আমিরের মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। আমিরের চোখ জোড়া ক্রমশ বন্ধ হয়ে আসচ্ছে। কিন্তু চোখ কিছুইতেই সে বন্ধ করতে চায় না ইশিতার যদি কিছু হয়ে যায়।আমির সামনের দিকে তাকিয়ে ইশিতার দিকে তাকায় একটু ঘাবড়ে যায়। ইশিতা কান্না করতে করতে চিল্লিয়ে বার বার বলচ্ছে গাড়ি থামাতে। ওদিক দিয়ে একটা গাড়ি অনবরত তেড়ে আসচ্ছে। আমির শেষ বারের মত অসহাত দৃষ্টিতে ইশিতার দিকে তাকায়। নিজের সিট বেল্টা খুলে ইশিতাকে নিজের বাহুতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।

বিধস্ত অবস্থায় গাড়িটি ছিটকে একপাশে পড়ে আছে। গাড়ির এক সাইডের অংশ খন্ড খন্ড রাস্তায় ছড়িয়ে আছে। আমির শেষ বারের মত ইশিতার দিকে আধো আধো তাকিয়ে অস্পষ্ট কণ্ঠে বলে….আমি থাকতে তোমার কিছু হবেনা ইশু।।তারপর আমিরের আর কিছুই মনে নেই।।

আমিরের হাতের বাধন কিছুটা আলগা হতে ইয়ামিনা আমিরের মুখ দুহাত দিয়ে আকড়ে ধরে… আপনি একটু বসুন আমি আসচ্ছি ইয়ামিনা আমিরকে ছেড়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।আমির ইয়ামিনার যাওয়ার পথে চেয়ে আছে। কিছুক্ষন পর ইয়ামিয়া রুমে এসে আমিরের পাশে বসে। হাতে তার ফাস্ট এড বক্স।আমির এখনো ইয়ামিনার দিকে চেয়ে আছে। ইয়ামিনা আমিরের হাতটা নিজের কাছে নিয়ে বেন্ডিজ করে দেয়। আমিরকে ধরে হুইল চেয়ারে বসিয়ে রুমে নিয়ে যায়। ধরে বেডে শুয়ে দেয়।

ইয়ামিনা শুধু একবার আমিরের দিকে তাকিয়ে বলে…. আপনার ঘুমের প্রয়োজন । ঘুমিয়ে নিন।
আমির শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। কখন যে ঘুমিয়ে গেছে খেয়ালি নেই।

___________________🌸🌸
হটাৎ পায়ের কারো ছোয়া পেয়ে আমির আচমকা উঠে বসে। ইয়ামিনা আমিরের পায়ের কাছে বসে পা মালিশ করে দিচ্ছে।
তুমি এখানে আমির একটু অবাক হয় । আর একি পায়ে হাত দিচ্ছো কেন? প্লিজ উঠে বসো।

কে বলেছে পায়ে হাত দিয়েছি। আমি তো মলম লাগিয়ে দিচ্ছিলাম আপনার পায়ে।

এখন উঠে বসো।

ইয়ামিনা কিছু বলতে যাবে তার আগে আরুশির কন্ঠ পেয়ে দুজনে দরজার দিকে তাকায়…..ভাইয়া ভাবি খেতে আসো ভাবি তোমাদের ডাকচ্ছে।

ইয়ামিনা আরশির দিকে তাকিয়ে বলে…. তুমি যাও আসছি আমরা।

খাওয়ার টেবিলে সবাই বসে আছে। ইয়ামিনা সবাই খাবার বেড়ে দিচ্ছে।কিন্তু বিপত্তি হচ্ছে আমিরের দুহাতে ব্যান্ডেজ করা।এদিক ওদিক বার বার আমির তাকাচ্ছে।

হটাৎ আরুশি বলে উঠে….একি ভাই তোমার হাতে ব্যান্ডেজ কেন। এইভাবে কিভাবে কেটেছে। এতক্ষনে জাফরা আর জাবির আমিরের হাতের দিকে তাকায়।
জাফরা ভাবি অস্থির হয়ে বলে…এমা তোমার তো দেখি হাত অনেক খানি কেটেছে। কিভাবে কাটল।

জাবির এক বার তাকিয়ে খাওয়া মনোযোগ দেয়।
তেমন কিছুনা গ্লাস হাত থেকে পরে গিয়েছিল তাই কেটে গেছে। আমি পরে খাব আমার রুমে খাবার পাঠিয়ে দিও।
আমির চলে যেতে নিলে ইয়ামিনা আমিরের হাত শক্ত করে ধরে…..কিছুনা বলে প্লেটে খাবার বেড়ে আমিরকে খাওয়াতে শুরু করে…
কি হলো হা করুন..
আমির অবাক দৃষ্টিতে ইয়ামিনার দিকে তাকিয়ে আছে। আমির হা করতেই ইয়ামিনা আমিরের মুখে খাবার দিচ্ছে। আরুশি জাফরা একের উপরের দিকে চাওয়া চাওয়ি করে মিট মিট করে হাসচ্ছে।

ইয়ামিনা খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমিরকে রুমে নিয়ে আসে।রুমে আসতে আমির রুহানকে ডাক দেয়।
রুহানকে ডাকচ্ছেন কেন?
আমি শাওয়ার নিব।ওর সাহায্য লাগবে।
কেন রুহান আপনার বউ নাকি।
আমির একটু চমকায়। বউ হতে যাবে কেন?

আমি তো আছি এসব করার জন্য। তো রুহানকে কেন ডাকচ্ছেন। আপনি পারমিশন দিন বা না দিন আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাব। তার জন্য আপনার কাছ থেকে পারমিশন নিতে হবে না।
আমিরকে ওয়াশরুমে শাওয়ারের কাছে নিয়ে যেয়ে ঝর্ণা ছেড়ে দেয় ইয়ামিনা। আমির বসে ইয়ামিনার দিকে তাকিয়ে আছে।ঝর্নার পানি আমিরের সাড়া শরীরে বেয়ে পরচ্ছে।ইয়ামিনা আমিরের দিকে একটু ঝুকে আমিরের মাথায় দুহাত দিয়ে আস্তে আস্তে সেম্পু করে দিচ্ছে। আমির চোখ বুঝে নেয় এতদিন পর যেন আমিরের অন্য রকম শান্তি কাজ করচ্ছে। সেটা কি ইয়ামিনার কারনে কিন্তু কেন?
ঝর্নার পানিতে ইয়ামিনার শাড়ি ভিজে পেট থেকে শাড়ি অনেকক্ষানি সরে যায়। সাদা পেটে বিন্দু বিন্দু পানি জমে গড়িয়ে পরচ্ছে। আমির চোখ খুলতে ইয়ামিনার পেটের দিকে চোখ পরে ঠোঁট ছুই ছুই অবস্থা। আমির মুখটা অন্য পাশে করে নেয়।

তুমি যাও বাকিটা আমি পারবো।আমার শেষ হলে আমি তোমাকে ডেকে দিব।
ইয়ামিনা কিছুটা সরে আসে.. আমি বাহিরে আছি কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে ডেকে দিয়েন।

.
.
.
চলবে……..

কেমন হয়েছে জানাবেন। ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিত্র দেখবেন।।।🌸

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here