হৃদয় নিবাসে তুই পর্ব -৩০+৩১

#হৃদয়_নিবাসে_তুই
#পর্ব_৩০
লেখনীতেঃভূমি

আয়নায় স্পষ্ট হয়ে ফুটল লাবণ্যময়ী শরীরটার প্রতিবিম্ব।মোমের মতো সাদা ধবধবে কোমল শরীরটায় আজ গাঢ় সবুজ রংয়ের শাড়ি মোড়ানো।সদ্য ভেজা লম্বা চুলগুলো কাঁধের একপাশ দিয়ে এনে সামনে রাখা।কোমড় পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে পানির ঝাপটায় শাড়ির একাংশ ভিজিয়ে তুলল মুহুর্তেই সেই ভেজা চুল।পেটের দিকে আঁচলটা ভিজে গিয়েই লেপ্টে বসল কোমল ত্বকে।অদ্রিজা ভ্রু কুঁচকে চাইল।চুলগুলো তৎক্ষনাৎ হাত দিয়ে সরিয়ে পেঁছনে ফেলেই পেটের আঁচলটা তুলে ঝাড়া দিতেই কেউ একজন নিঃশব্দে হাসল।অদ্রিজা বুঝল না।হাত দিয়ে আঁচলটা হালকা ঝেড়েই তোয়ালে নিয়ে ভেজা চুলগুলো মুঁছড়ে নিবে ঠিক তখনই কেউ এসে তার পেছনে দাঁড়াল।হাতজোড়া বুকে ভাজ করেই মোহনীয় চাহনিতে তাকিয়ে রইল সামনের লাবন্যময়ী মেয়েটির দিকে।ভেজা কালো চুলে চোখমুখে স্নিগ্ধতার আভাস যেন তার ভেতরটা মাতাল করে তুলল মুহুর্তেই।ফর্সা দুধে আলতা সাদা রংয়ের মুখশ্রীতে ঘন পাঁপড়ি ওয়ালা কালো চোখ।চিকন পাতলা খয়েরী ঠোঁটে আদ্র ভাব।রক্তিম মৃদু হাসল।অদ্রিজার হাত থেকে তোয়ালেটা নিয়ে নিয়েই ঘোর লাগানো কন্ঠে ফিসফিসিয়ে বলে উঠল,

‘ এভাবে নিজের রূপে ঘায়েল করার বুদ্ধিটা কিন্তু চমৎকার আপনার!একটা মানুষকে এভাবে কন্ট্রোললেস করে দেওয়ার প্ল্যান কিন্তু একেবারেই করা উচিত হয়নি আপনার।’

অদ্রিজা চমকে তাকাল।কথাগুলো শুনেই পেছন ফিরে রক্তিমের চোখের দিকে তাকাতে গিয়েই নড়েচড়ে উঠল ভেতরটা।চোখাচোখি চোখ রাখতে না পেরে অস্বস্তিতে দ্রুত চোখ সরিয়ে নিল সে।কন্ঠটা কঠিন রাখার চেষ্টা করেই ঠোঁট চেপে বলে উঠল,

‘ আশ্চর্য!একটা মেয়ে রুমের ভেতর কি করছে না করছে না জেনে, নক না করেই ভেতরে ডুকে গেলেন কেন?অদ্ভুত!’

রক্তিম গা জ্বালানো হাসি হাসল।মৃদু শ্বাস ফেলেই চোখ টিপে বলল,

‘ রুমের ভেতর অতিশয় লাবণ্যময়ী, রূপবতী কেউ থাকলে তাকে দেখার লোভ সংবরন করা বড্ড দায়। ধরে নিন আমিও সেই কারণেই নক না করে ডুকে পড়লাম।তাছাড়া অন্য কারো রুমে তো ডুকিনি।তাই না?’

অদ্রিজা রাগল।রাগে হাঁসফাঁস করেই তীর্যক চাহনিতে তাকিয়ে রইল রক্তিমের দিকে। বিরক্তি নিয়ে বলল,

‘ ফ্লার্টিং করবেন না একদম!’

রক্তিম আওয়াজ করে হাসল।ফর্সা ধবধবে রং, খাড়া নাক, বড়বড় চোখ আর খোঁচা দাড়িওয়ালা মুখে সেই হাসিটা চমৎকার মানাল।ট্যারাব্যাঁকা দাঁত গুলো অবাক রকম সুন্দর!অদ্রিজা আড়চোখে সেই হাসিটা পরখ করতেই ধরা খেয়ে বসল রক্তিমের চোখের দৃষ্টিতে। মুহুর্তেই দৃষ্টি সরিয়ে ইতস্থত বোধ করে এদিক ওদিক তাকাল।মৃদু শ্বাস ফেলে কিছু বলবে তার আগেই রক্তিম বলে উঠল,

‘ উহ!আমি জানি আমার হাসিটা মেয়েদের ভীষণ প্রিয়।আপনি চাইলে সরাসরিই তাকিয়ে থাকতে পারেন অদ্রিজা।নো প্রবলেম।’

অদ্রিজা চোখ বড়বড় করে চাইল।চোখেমুখে ফুটে উঠল তীব্র হতাশা।এইভাবে ধরা খেয়ে বসবে জানলে তাকাতই না সে রক্তিমের হাসির দিকে।ইশশ!অদ্রিজা চোখজোড়া একবার বন্ধ করেই আবার খুলল। বার কয়েক নিঃশ্বাস ফেলেই বিরক্তি নিয়ে বলল,

‘ আমি কেন তাকাতে যাব?আশ্চর্য! ‘

রক্তিম মুচকি হাসল।অদ্রিজাকে আয়নার দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে ঝুকে দাঁড়াল।থুতনিটা অদ্রিজার কাঁধে রেখেই আয়নায় পরখ করল অদ্রিজা নামক রমণীটিকে।সৌন্দর্যে নুইয়ে থাকা রমণীটির চোখেমুখে মিশ্র রকম অনুভূতির প্রতিচ্ছবি।সেই অনুভূতিতে যেমন রাগ, তেমনই লজ্জ্বা, আবার তেমনই বিরক্তি উপস্থিত।কৈাতুহল ও আছে বোধ হয়।ঠোঁট চেপে হেসেই অদ্রিজার ভেজা চুলে নাক ডুবাল রক্তিম।চোখমুখ সেই ভেজা চুলের ধাপটে ভিজে উঠতেই নেশাময় হয়ে উঠল তার ভেতরটা।ঠোঁট দিয়ে অদ্রিজার কাঁধে স্লাইড করতে করতেই নাক ঘষল।শ্বাস প্রশ্বাস গুলো উষ্ণ ছোঁয়া উপছে দিল অদ্রিজার পাতলা চামড়ার উপর।সেই ছোঁয়া, স্পর্ষ, শ্বাস প্রশ্বাসের তাড়নায় ভীষণরকম কেঁপে উঠল অদ্রিজা।পুরুষটাকে ফিরিয়ে না দিতে পেরেই ব্যর্থ মন ক্ষনে ক্ষনে শিউরে উঠল।হাত জোড়া খামচে নিল শাড়ির আঁচল।পায়ের আঙ্গুল গুলো খামচে ধরলো ফ্লোর।পুরো শরীর অদ্ভুত শিহরনে কাঁপতে লাগল। রক্তিম মুচকি হাসল। ফিসফিসিয়ে বলল,

‘ এত সহজেই নুঁইয়ে যাচ্ছেন? লজ্জ্বায় লাল হয়ে যাচ্ছেন?উফফস!আমি তো এবার সত্যিই কন্ট্রোল করতে পারব না নিজেকে।’

অদ্রিজা চমকাল।আয়নায় তাকিয়ে পরখ করল লজ্জ্বায় লাল হয়ে উঠেছে তার মুখ চোখ। চোখেমুখে রাগ ক্ষোভের সেই রেশ না দেখেই হতাশ হলো সে।মুখ চেখে কঠিন কঠিন ভাব এনেই দাঁতে দাঁত চেপেই জড়ানো গলায় বলে উঠল,

‘ ক্ কি হচ্ছে কি এসব?ছাড়ুন আমায় রক্তিম।আমি আপনাকে নিষেধ করেছিলাম এভাবে অনুমতি না নিয়ে আমাকে ছুঁতে।’

অদ্রিজার সেই কথাকে বিন্দুমাত্রও পাত্তা দিল বলে মনে হলো না রক্তিম।মুখে তার বাঁকা হাসি স্থির।আয়নায় সেই বাঁকা হাসিটা দেখেই শরীর জ্বলে উঠল অদ্রিজার।চোখে মুখে তীব্র বিদ্বেষ নিয়ে রক্তিমের দিকে তাকিয়ে থাকার মাঝেই রক্তিম আয়নায় তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়েই ঠোঁট কাঁমড়ে অদ্ভুত রকম হাসল।হাতজোড়া অদ্রিজার ভেজা চুলের ধাপটে ভিজে উঠা আদ্র শাড়ির ভাজে ডুকিয়েই পেটের ভেজা পাতলা চামড়ায় ছুঁয়ে দিতেই অদ্রিজার শরীরের কম্পন আকস্মিক ভাবে বাড়ল।তার ছোট্ট কোমল শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছুঁয়ে গেল শীতল চামড়ায় উষ্ণ হাতের সেই ছোঁয়া।দাঁতে দাঁতে চেপে চোখজোড়া বন্ধ করেই রক্তিমের হাতজোড়া নিজের হাতজোড়া দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরল সে। ঘন ঘন নিঃশ্বাস আর বুকের ভেতর দ্বিগুণ স্পন্দনে কেঁপে উঠা হৃদপিন্ডকে শান্ত করতে ব্যস্ত হয়েই রক্তিমের হাতজোড়া ছাড়িয়ে দ্রুত সরে দাঁড়াল।যুদ্ধ থেকে লড়ে আসা সৈনিকের ন্যায় চোখেমুখে তীব্র ক্লান্তি ফুটিয়েই চোখ ছোট ছোট করে চাইল রক্তিমের দিকে।রক্তিমের মুখে তখনও দুষ্টুমিমাখা হাসির রেশ।অদ্রিজা সেই হাসি দেখে চটাফট কঠিন কন্ঠে কিছু বলে উঠতে পারল না।হাত পা এখন ও মৃদু কাঁপছে।হৃদপিন্ডের স্পন্দন এখনও দ্রুত গতিতে চলছে।রক্ত গুলো এখনও দ্বিগুণ বেগে শিরায় উপশিরায় বয়ে চলছে।নিজেকে স্থির করার চেষ্টায় বেশ কিছুটা সময় চুপ রইল অদ্রিজা।রক্তিম মুখে হাসির রেশটা দ্বিগুণ করেই বলে উঠল,

‘ এটুকুতেই আমার কাছে হার মেনে গেলেন?লজ্জ্বায় লাল হয়ে বুঝিয়ে দিলেন আপনি আমায় ভালোবাসেন?চমৎকার!এমনটা জানলে আরো আগেই এসব টেকনিক খাটাতাম।সুন্দর না? ‘

অদ্রিজা মিনমিনিয়ে চাইল।জোরে জোরে শ্বাস ফেলেই হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,

‘ সমস্যা কি আপনার?সকাল সকাল আমার সাথে কি শুরু করে দিয়েছেন?আপনার কাছে তো এক মুহুর্তও নিরাপদ থাকব বলে বোধ হচ্ছে না। আমি এক্ষুনিই আম্মুদের কাছে যাব।’

‘ সুইটহার্ট বলে দিয়েছে আপনি এখানে থাকবেন।সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমি ডিসাইড করেছি আমার ওয়াইফ আমার সাথে থাকবে।এবার আমি শতবার চান নয়তো হাজার বার চান এখানে থেকে পালানো আপনার জন্য রিস্কি।আমার থেকে পালানো আপনার জন্য আরো রিস্কি! চরম রকম ডেঞ্জারাস।মাইন্ড ইট!’

অদ্রিজা কপাল কুঁচকাল।রক্তিমের কথা গুলো শুনেই বিরক্তে রি রি করে উঠল শরীর মন।হাতজোড়া মাথায় নিয়ে তোয়ালে দিয়ে চুল পেঁচিয়েই রক্তিমের দিকে তাকাল সে।তাচ্ছিল্য নিয়ে কৃত্রিম হেসেই বলে উঠল,

‘পালাব কেন আমি? আমি কি আসামী?আমি সসম্মানে এই বাসা ছেড়ে দিয়ে চলে যাব।আজই!কি করবেন?’

‘আগে গিয়ে তো দেখান। তারপর না হয় বুঝা যাবে কি করা যায়, কি করা উচিত।তবে যাই করি, শাস্তিটা আপনার জন্য খুব একটা ভালো হবে না অদ্রিজা।’

কথাটা বলেই ঠোঁট টেনে হেসে বেরিয়ে গেল রক্তিম। অদ্রিজা স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।চোখমুখ কুঁচকে রক্তিমের যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে থেকে বিরক্তি নিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়ল।ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে দরজাটা ধপ করে লাগাতে নিতেই রক্তিমের মুখটা আবারও ভেসে উঠল মুখের সামনে।মুখে চমৎকার হাসি ফুটিয়েই হালকা ঝুকে চোখ টিপে বলল,

‘ ভয় নেই!শাস্তিগুলো আজকের মতোই হবে।আজকের শাস্তিটা কি জন্য দেওয়া হলো জানেন?সকাল সকাল শাড়ি পরে নিজের সৌন্দর্যে বিমোহিত করার ফাঁদ পাতার জন্য এই শাস্তি।পরবর্তীতেও ভুল করবেন তো এমন শাস্তি গুলোই কপালে আছে ভেবে নিবেন।আর ভদ্র মেয়ে হয়ে থাকলে তো নো প্রবলেম।’

অদ্রিজা বিরক্তে চোখ মুখ লাল করল। রক্তিমের কথা গুলোতে চরম বিরক্তি দেখিয়েই মুখের উপর আওয়াজ করে দরজা লাগাল।রাগে ফোঁসফাসঁ করে দরজা লাগিয়ে হেলান দিতেই ওপাশ থেকে ভেসে আসল রক্তিমের হাসির আওয়াজ!অদ্ভুত!এই লোকটা এত কেন হাসে? এত কেন হাসিখুশি!

.

পার্কে তরতাজা রোদ।কাঠের বেঞ্চিগুলোর একপাশে নেহা। অন্যপাশে দিহান বসা।দিহানের হাতে সাদা কাগজের উপস্থিতি স্পষ্ট।নেহা ভ্রু কুঁচকে সেই কাগজগুলোর দিকে তাকাল।খিলখিলিয়ে হেসেই প্রশ্ন ছুড়ল দ্রুত,

‘ কিরে? কিসের কাগজ ওসব?’

দিহান মাথা তুলে চাইল।মাথার উপর সূর্যের তীর্যক রোদে ঘেমে একাকার হয়ে উঠল পরনের চেইকের শার্টটা।একহাতের তালুতে কপালের ঘামটা মুঁছে নিয়েই ম্লান হাসল দিহান।মৃদু গলায় বলল,

‘ শিট।’

নেহা হাসল।ঠোঁট উল্টে বলল,

‘ আমি আরো ভাবলাম তুই আমার জন্য প্রেমপত্র নিয়ে হাজির হয়েছিস কিনা।ভয় পেয়ে যদি আমার প্রাপ্য প্রেমপত্র আমার হাত পর্যন্ত না পৌঁছে দিস তাই চটফট জিজ্ঞেস করে বসলাম কিন্তু ওটা তো প্রেমপত্র নয় আমার শত্রু পড়ালেখার পত্র।চরম রকম ডস খেলাম!’

দিহান হাসল।রোদের উত্তাপে মুখচোখ কালো করেই বলল,

‘ প্রেমপত্র দেওয়ার সাহস আছে আমার।সময় আসলে ঠিক দিয়ে দিব।’

নেহা ক্লান্ত গলায় বলল,

‘ অপেক্ষায় রইলাম সেইদিনের যেইদিন তুই প্রেমপত্র গুঁজে দিবি আমার হাতে।হাতে হাত ছুঁয়ে বলে দিবি ভালোবাসি।আমি সেইদিনের অপেক্ষায় আছি।খুব বাজে ভাবে অপেক্ষা করছি সেই দিনটার জন্য।তাত্তাড়ি বলে ফেল তো বেইব!’

দিহান ফিক করে হাসল।এই মেয়েটাকে বুঝে উঠা দায়।এই সিরিয়াস আবার এই মজা।এই মনে হয় তার কথায় হাজারটা দুঃখ আবার এই মনে হয় তার কথার মতো প্রানোচ্ছ্বল কথা আর হতেই পারে না।দিহান হেসেই নেহার দিকে চাইল।চুলগুলোতে হাত বুলিয়ে বলে উঠল,

‘ এত কিসের তাড়া?তাড়াহুড়ো করে কোনকিছু করা ভালে নয়।জানিস না?’

নেহা খিলখিলিয়ে হাসল।দিহানের দিকে তাকিয়েই চোখ টিপে বলণ,

‘ ধুররর!তুই জানিস না?শুভ কাজে দেরি করতে নেই?’

দিহান আওয়াজ করে হেসে উঠল এবার।সঙ্গে হাসল নেহাও।পার্কের উজ্জ্বল উত্তপ্ত রোদে কাঠের বেঞ্চিতে একজোড়া ভালোবাসার মানুষ হৃদয় থেকে হেসে উঠল।দুইজন দুইজনের হাসিমুখের দিকে তাকিয়ে।এর থেকে ভালো দৃশ্য আছে কি আর?#হৃদয়_নিবাসে_তুই
#পর্ব_৩১
লেখনীতেঃ ভূমি

সন্ধ্যা থেকে অল্প কিছু পর। সময়টা বোধ হয় আটটা কি নয়টা। বেলকনির হলদেটে আলোয় আকাশ দেখছিল অদ্রিজা ।হালকা ফুলো পেট।পরনে ছাঁই রাঙ্গা কামিজ।চুলগুলো অগোছালভাবে খোঁপা করা।রক্তিমদের বাসাটা তেমন নিশ্চুপতায় ঘেরা থাকে না আগের মতো।সুইটহার্ট সর্বক্ষণ তাকে হাসিখুশি রাখে।তবুও আজ তার মন খারাপ।বিষন্নতার কালো ছায়ায় ছুঁয়ে যাচ্ছে কোমল মন।ইচ্ছে হলো একছুটে বেরিয়ে যাক এই বাসা থেকে। কিন্তু রক্তিম নামক মানুষটার জন্য তাও সম্ভব নয়।চার দেওয়ালের বদ্ধ রুমে এই কয়দিন থাকতে থাকতেই ঝিমিয়ে উঠল মন।নিঃশ্বাস,প্রশ্বাস, হৃদস্পন্দন গুলো নিস্তেজ হয়ে উঠল।নিজের মনে রক্তিমের জন্য ভালোবাসা, রাগ, ক্ষোভ এসবের সাথে লড়তে লড়তেই দিন পার হচ্ছে।তবুও কোন রকম সমাধান খুঁজে পাচ্ছে না সে।রক্তিমের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচ্ছেদ নিয়ে নেওয়া উচিত?নাকি ভালোবেসে আগলে নেওয়া?বারংবার ভেবেও এসব সমীকরণের কোন সমাধান তার মস্তিষ্ক কিংবা মন দিতে পারল না।অদ্রিজা হতাশ হলো।সেসব কঠিন ভাবনার হেরফের ঘটল বাসার সামনে গাড়ি থেকে নামা এক মাঝবয়সী মহিলাকে দেখে।চোখেমুখে তীব্র প্রখরতা।বড়বড় চোখে গম্ভীর স্তম্ভিত চাহনি।পরনে সবুজরাঙ্গা শাড়ি।দেখতে কোন এক মহীয়সী মানবীর মতোই এই মহিলা।কে বলবে এই মহিলা তার সন্তানকে নিঃস্ব করে দিয়ে চলে গিয়েছিল কোন এক সময়?আদৌ কি সত্যি এই কথাটা?অদ্রিজা থমকাল।এই মানবীটিকে এখানে দেখে বিস্মিত হলো।কিন্তু তার বিস্ময়ে কিই বা এসে যায়?ভদ্রমহিলা বেশ গম্ভীর চাহনিতে বার কয়েক বিল্ডিংয়ের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখে নিয়ে গেইট খুলে ভেতরে ডুকলেন।অদ্রিজা চোখ ছোট ছোট করল। বেলকনি থেকে দ্রুত বেরিয়ে এসেই ড্রয়িং রুমে এসে থমকে দাঁড়াল ভারী শরীর নিয়ে।সুইটহার্টকে দেখে নিয়েই বিস্ময নিয়ে বলে উঠল সঙ্গে সঙ্গে,

‘ সুইটহার্ট?রক্তিমের আম্মু আবার দেশে ফিরেছে। জানো তুমি?নেহাকে কল করে বলো তো।ওর বড্ড ইচ্ছে উনার সাথে কথা বলার, দেখা করার।’

সুইটহার্টের হাসিখুশি মুখটা মুহুর্তেই গম্ভীর হলো।চাহনি হলো গমগমে।ভাজ হওয়া চামড়ার ভাজে ভাজে ফুটে উঠল এক চরম কঠোরতা।গম্ভীর দৃষ্টিতে অদ্রিজার দিকে তাকিয়েই শুধালেন তিনি,

‘ তুমি কি করে জানো অদ্রি?আমরা তো জানি ও গতবার যখন এসেছিল, চলে গিয়েছিল।আবার এসেছে? কখন?’

অদ্রিজা নিশ্চল চাহনিতে তাকিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে উঠল,

‘ আমি তো জানি না সুইটহার্ট । বেলকনি দিয়ে দেখলাম মাত্র।উনি এই বাসায়ই আসছেন হয়তো।দেখে নিও।’

অদ্রিজার পুরো কথাটা শেষ হলো কি হলো না তার আগেই বাসার কলিংবেল বাঁজল। ঘাড় ঘুরিয়ে সেইদিক পানেই তাকাল অদ্রিজা।চোখে মুখে উচ্ছ্বলতা ফুটিয়েই বলে উঠল,

‘ এই তো!এই যে উনিই এসেছেন।আমি শিউর!’

সুইটহার্ট হতাশ হলেন।গম্ভীরভাবে দরজার দিকে চোখ জোড়া দিয়ে তাকিয়েই লম্বা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।কপালের চুলগুলো কানে গুঁজে নিয়েই গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন,

‘ আমি দেখছি।তুমি বসো অদ্রি।’

অদ্রিজা বসল না।চোখজোড়া নিয়ে দরজার পানে তাকিয়ে থেকেই চঞ্চলতা নিয়ে উদগ্রীব হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।রুহানা নামক মহিলাটাকে এর আগেও বেশ কয়বার দেখেছে।নেহার চেহারার সাথে পুরোপুরি মিল এই মহিলার চেহারা।চোখ, নাক, ঠোঁট, চুল পুরোটাই।তাই হয়তো উনার প্রতি নেহার এই টান!অদ্রিজা আনমনেই হাসল।আচ্ছা?রক্তিমের আম্মু এই বাসায় এসেছে। এটা শুনে রক্তিমের কি রিয়্যেকশন হবে?খুশি হবে?নাকি রেগে যাবে?অদ্রিজা বুঝল না।অপেক্ষারত চোখজোড়ার অপেক্ষার সমাপ্তি ঘটতেই চোখের সামনে ফুটে উঠল সেই মহিলার ভাসমান চেহারা!বয়স অনুয়ায়ী মহিলার সৌন্দর্যের এটুকুও দফারফা ঘটেনি।বোঝায় দায় তার বয়সের অংক!অদ্রিজা হাসল।ঠোঁট উল্টে সুইটহার্টের কাছে গিয়েই ফিসফিসিয়ে বলল,

‘ সুইটহার্ট?আমার শাশুড়ী আম্মা একেবারে তার ছেলের মতো সুন্দর!এদের এত সৌন্দর্য কোথায় রাখে বলো তো।’

সুইটহার্ট হালকা হাসল।অদ্রিজার গোল গোল ফুলো মুখে হাত রেখেই মুচকি হেসে বলল,

‘ যেমন ভাবে তুমি তোমার সৌন্দর্য রাখো সেভাবেই হয়তো!ইদানিং আরো সুন্দর হয়ে যাচ্ছো তুমি অদ্রি!এজন্যই জান এখন তোমার প্রেমে হাবুডুবু খায়!সুইটহার্টের কথা মনে পড়ে নাকি তার?’

অদ্রিজার হাসিটা এবার মিলিয়ে এল কিছুটা।রক্তিম কি আদৌ তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে?আদৌ ভালোবাসে তাকে?হুট করে এত ভালোবাসার উদ্ভব কি অস্বাভাবিক নয়?নাকি সবটাই বানোয়াট?দুইদিন আগেও যে তাকে বেহায়া, আত্নসম্মানহীন বলে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল, কারো সামনে তাকে স্ত্রী হিসেবে ট
পরিচয় দেয়নি সেই মানুষটার আজ হঠাৎ এত পাগলামি কেন?কি কারণ?অদ্রিজা চোখজোড়া বন্ধ করেই মৃদু তপ্তশ্বাস ফেলল।সুইটহার্টের কথায় মৃদু হাসার চেষ্টা করল।চোখ খুলে ভদ্রমহিলার দিকে তাকাতেই ভদ্রমহিলার উৎসুক দৃষ্টি সর্বপ্রথম চোখে পড়ল।সুইটহার্ট গম্ভীর গমগমে কন্ঠে বলে উঠল দ্রুত,

‘ আবার কেন এসেছো তুমি?নিষেধ করেছিলাম তো আসতে।কেন মানো না প্রতিবার এই কথা?ঘুরেফিরে এই বাসায় কেন আসো বারবার?দাদুভাই রেগে যাবে তুমি এসেছো শুনলে।তার রাগের মুখোমুখি হওয়ার থেকে সোজাসুজি তোমার ভালোর জন্য বলছি, চলে যাও।দ্রুত চলে যাও এখান থেকে।’

ভদ্রমহিলা নিরাশ হলেন।চোখেমুখে হতাশ চাহনি ফুটল মুহুর্তেই।জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলেই অনুনয়ের স্বরে বলে উঠলেন তিনি,

‘ আম্মা!রক্তিম আমার সন্তান।ওকে দেখা, ওর সাথে কথা বলার অধিকার আছে আমার।আমি ওর মা হই।আপনি এভাবে আমায় চলে যেতে বলতে পারেন না আম্মা।’

সুইটহার্ট গুরুগম্ভীর চাহনি নিয়েই ভদ্রমহিলার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন।দাঁতে দাঁত চেপেই বলে উঠলেন,

‘ যখন দাদুভাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে তখন মনে পড়েনি ও তোমার সন্তান?তুমি ওর মা?এখন কেন মনে পড়ে?এখন কেন ওর সাথে কথা বলার এত ইচ্ছা?ছোট্ট বাচ্চাটা যখন মাকে খুঁজত, মা মা বলে কাঁদত তখন আমাকে ওকে আকাশের তারা দেখিয়ে ভুলাতে হয়েছে।কেন?তোমার বোকামির জন্য।তোমার করার কাজের জন্য আজ দাদুভাই ভুগছে।আবার বলছো নিজের সন্তান?তখন কেন মনে পড়েনি ও তোমার সন্তান?’

ভদ্রমহিলা মিনিমিনে চোখে চেয়ে রইলেন।বেশ কিছুটা সময় চুপ থেকেই বলে উঠলেন,

‘ আমি যেমন ছেড়ে গিয়েছি।অন্য একজনের সাথে স্যাটেল করেছি।তেমনটাতো ওর বাবাও করেছে।দ্বিতীয় বিয়ে করে নি ওর বাবা?ওর বাবার সাথে তো এতটা খারাপ ব্যবহার ও করে না।আমার সাথে কেন এত জঘন্য ব্যবহার করে?কেন?’

‘ কারণ তুমি পালিয়ে গিয়েছিলে।প্রথমে তুমিই ছেড়ে গিয়েছিলে।’

ভদ্রমহিলা আক্ষেপ নিয়েই বলে উঠল এবার,

‘ তো? তো কি করব আমি?ওর বাবার সাথে আমার সম্পর্কটা তার অনেক আগেই ভেঙ্গে গিয়েছিল।তবুও সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখা উচিত ছিল?ভাঙ্গা সংসার জোড়া লাগানো উচিত ছিল?’

‘ না,বেরিয়ে আসতে।মুক্ত হয়ে রক্তিমকে নিয়ে বাঁচতে পারতে।তাই বলে অন্য এক লোকের সাথে পালিয়ে যাওয়া উচিত নয় তোমার।যায় হোক!তোমারও আজ বয়স হয়েছে। উচিত অনুচিতের সংজ্ঞাটা এখন আমার থেকে শেখা লাগবে না আশা করি।তুমি নিজেই বুঝো,বুঝবে।এখন যাও।দাদুভাই আসলে রেগে যাবে।ইদানিং দাদুভাই বেশ খুশি থাকে।আমি চাই না তোমার কারণে তার সে খুশিটা কষ্টে পরিণত হোক।’

ভদ্রমহিলা ছোট ছোট চোখে তাকালেন।বললেন,

‘আমি থাকতে আসিনি আম্মা।ওকে একবার চোখ ভরে দেখে নিয়েই চলে যাব।কতদিন দেখা হয় নি ওকে।এত বড় একটা অপারেশন হলো অথচ ওর মা হয়ে আমি জানতেই পারলাম না। যদি কিছু হয়ে যেত? যদি ও আর বেঁচে না ফিরত? একজন মা কে না জানিয়েই তার সন্তানের এমন একটা অপারেশনে কি করে মত দিলেন আপনি?যদি কিছু হয়ে যেত?’

সুটটহার্ট চোখ জোড়া বন্ধ করে নিল মুহুর্তেই!সেই অসহনীয়, দুঃস্বপ্নময় দিনগুলো মনে করেই শিউরে উঠল।গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে একনজর অদ্রিজার দিকে তাকাল।অদ্রিজার চোখে মুখে কৌতুহলের স্পষ্ট আভাস।আর সেই কৌতুহলটা সুইটহার্ট তাকানো মাত্রই বেরিয়ে এল মুখ দিয়ে,

‘ সুইটহার্ট?অপারেশন?কিসের অপারেশন?বেঁচে না ফেরার মতো কি এমন অপারেশন হয়েছে উনার?কখন হয়েছে?’

সুইটহার্ট চোখ বন্ধ করলেন।অদ্রিজার উত্তর গুলো না দিয়েই শান্ত গলায় বললেন,

‘ অদ্রি?এতটা অস্থির হওয়ার মতো কিছু নেই বর্তমানে।সহজভাবে ভাবো বিষয়টাকে।আমি তোমায় পরে সবটা খুলে বলব। আপাদত ঐটা নিয়ে হাইপার হওয়ার কিছু নেই। কেমন?রুমে যাও।’

অদ্রিজা লক্ষী মেয়ের মতো মাথা দুলাল।সুইটহার্টের কথার উপর আর কোন কথা না বলে ধীর পায়ে উল্টোদিক ফিরে হাঁটা দিল।পেঁছন থেকে রক্তিমের মা নামক ভদ্রমহিলার মৃদু গলায় ভেসে আসল,” আম্মা?এটা নেহার বান্ধবী না?এই মেয়েটাই রক্তিমের বউ? “অদ্রিজা স্পষ্ট শুনল কথাগুলো।তবুও পেঁছন ফিরে চাইল না।ধীর পায়ে এগিয়ে দ্রুত রুমে গেল।মাথায় ঘুরল অদ্ভুত সব চিন্তা।

.

বিদ্ঘুটে অন্ধকারে টিউশনি শেষে রাস্তা ধরে হাঁটছিল দিহান।পরনে বরাবরের মতো চেইকের শার্ট।গোছালো চুলগুলো কপালে ঝুকে আছে।বাম হাতের ঘড়িটায় একনজর সময় দেখে নিয়েই ছোট্ট শ্বাস ফেলল দিহান।রাত দশটা। অবশেষে সারাদিনের ব্যস্থতার অবসান।তারপর বাসায় গিয়ে চমৎকার ঘুম!দিহান হালকা হাসল।বরাবরের মতো বাসায় ফেরার পথটাতে নেহাদের বাসাটা আজও পড়বে।দিহান দূর হতেই দেখল বাসাটা।চারতালা বিল্ডিংয়ের কোন কোন বাসায় আলো জ্বলছে আবার কোনটায় অন্ধকার।ছাদেও ঘুটঘুটে অন্ধকার।সোডিয়ামের আলোয় দূর হতে বিল্ডিংটার অন্যসব কিছু স্পষ্ট বুঝে উঠা গেল না।শান্ত স্থির চোখজোড়া সেইদিক থেকে নামিয়েই গম্ভীরভাবে পা চালাল দিহান।মিনিট কয়েক জোরে জোরে পা চালানোর পরই আকস্মিক কোন এক নারীর উপস্থিতিতে থামতে হলো তাকে।থমকানো চোখমুখ নিয়ে মেঁপে মেঁপে দেখল সামনের মেয়েটিকে।মুখে হালকা হাসি ফুটিয়েই ভ্রু নাচাল যার অর্থ, “কি হয়েছে?” তার সে ভ্রু নাচানো দেখেই মেয়েটা হাসল খিলখিলিয়ে।দিহানের দিকে কিছুটা সময় তাকিয়ে থেকেই দিহানের শার্টটা আঁকড়ে ধরল।মুচকি হেসেই চোখ টিপে বলে ফেলল,

‘ কিছু না।তোকে দেখতে মন চাইল।’

দিহান অপ্রস্তুত হলো।আকস্মিক কোন রমণী এতটা কাছে এসে শার্ট আঁকড়ে ধরার মতো কোন ঘটনা এর আগে তার সাথে ঘটেছে কিনা সে জানে না।চারদিকে একবার তাকিয়ে নিয়েই ভাসা গলায় বলে উঠল,

‘ কি করছিস নেহা?এটা তোর বাসা।তোর আব্বু আম্মু কেউ দেখে ফেললে কি রকমের সমস্যা হবে বুঝতে পারছিস তুই?শার্ট ছেড়ে সরে দাঁড়া।’

নেহা ভ্রু কুঁচকাল।জনমানব ভরা রাস্তার মাঝেই দিহানের আরো কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়াল।শার্টটা আরো কিছুটা খামচে ধরেই বলে উঠল,

‘ ছাড়লাম না।সরে দাঁড়ালাম না।কি সমস্যা? ‘

দিহান আরো কিছুটা অপ্রস্তুত হলো।নেহার মুখের দিকে বার কয়েক ড্যাবড্যাব করে তাকিয়েই হতাশ হলো।মেয়েদের নাকি অনেক লজ্জ্বা!এই মেয়ের মুখে এটুকুও লজ্জ্বা নেই।এতগুলো মানুষের সামনে তাকে একটা মেয়ে ধরে রেখেছে ভাবতেই ফ্যাঁকাসে হয়ে উঠল তার মুখ চোখ।শুকনো ঢোক গিলে চারপাশে তাকিয়েই মানুষজনকে এদিক পানে তাকিয়ে হেঁটে চলে যেতে দেখেই আরো ফ্যাঁকাসে হলো চাহনি।নেহার হাতজোড়াকে শক্ত করে নিজের হাতে পুরে নিয়েই শার্ট থেকে ছাড়িয়ে নিল।লম্বা শ্বাস ফেলেই নেহার হাতজোড়া সেভাবেই শক্ত করে ধরে রেখে বলে উঠল,

‘ নেহু?কি করছিস এসব?সবাই দেখছে।কি ভাবছে, কি ভাবতে পারে বুঝিস? ‘

নেহা আবারও ভ্রু জোড়া কুঁচকে নিল বলল,

‘ তো?ভাবলে ভাবুক।আমি কি তোকে কিস করেছি?কিংবা জড়িয়ে ধরেছি?আজব!’

‘ না, তেমন কিছু নয়।’

‘ তো?তাহলে?’

দিহান মাথা চুলকাল।বলল,

‘ মানুষ যেভাবে তাকাচ্ছে মনে হচ্ছিল আমরা প্রেমিক প্রেমিকা।তোর বাবা মা দেখে ফেললে কি হতো? তোর প্রেমিক আছে শুনলে দফারফা হয়ে যেত না আজ?তাছাড়া আমারও অস্বস্তি বোধ হচ্ছিল।’

নেহা খিলখিলিয়ে আওয়াজ করে হেসে উঠল এবার।ঠোঁট চেপে বলল,

‘ ভীতু!তুই একটা ভীতুর ডিম দিহান।প্রথমত তোকে যে ভালোবাসি তা আমার ফ্যামিলি সেইদিন থেকেই জানে যেইদিন তোকে প্রথম দেখেছিলাম, প্রথম ভালো লেগেছিল।বুঝলি?মা বাবা দেখলে কিছু বলত না, বরং আলাদা স্পেস দিয়ে যেত।দ্বিতীয় ব্যাপার হলো, তোর অস্বস্তি হচ্ছিল?সিরিয়াসলি দিহান?তুই ছেলে, আমি মেয়ে।আমি যেখানে কস্ফোরটেবল সেখানে তুই অনাম্ফোর্টেবল ফিল করছিস?মানা যায় ইহা?’

দিহান কপাল কুঁচকাল।নেহার হাতজোড়া ছেড়ে দিয়েই নিরাশ চাহনিতে অন্যদিকে তাকাল।গম্ভীর গলায় বলে উঠল,

‘ মজা নিবি না একদম।আমি কম্ফোর্টেবল হলে তুই ওখানেই শেষ! ‘

#চলবে…..

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here