#হয়তো_তোরই_জন্য
#পার্ট_৯
#নিশাত_জাহান_নিশি
—“জায়ান ভাইয়া…. ইউ আর জাস্ট জিনিয়াস।”
জায়ান মলিন হেসে বলল,,,,,
—“আরেকটা জিনিস খেয়াল করেছিস? আমি যখন লোকটাকে জিগ্যেস করেছিলাম, শাফিনের হাত, পা ঠিক আছে কিনা তখন কিন্তু উনি বলেছিলো শাফিনেরর পা ভাঙ্গা সে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে। আমার ধারণা অনুযায়ী এই কথাটা ও উনি আমাদের বিভ্রান্ত করার জন্যই বলেছে। আমি শাফিনকে এতোটা ও জঘন্য ভাবে মারি নি যে সে পা ভেঙ্গে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটবে। এতো দিন আমি আন্দাজের বসে বলেছি শাফিন পঙ্গু অবস্থায় আছে। কিন্তু ব্যাপারটা আজ ডিপলি ভেবে দেখলাম, শাফিন সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। তুই প্রতিরাতে যে স্যাডোটাকে দেখিস সেই স্যাডোটা শাফিনের ই। তুই তো শাফিনকে খুব ভালো করেই চিনিস। তোর আইডিয়া আশা করি ভুল হবে না। আমার মনে হচ্ছে শাফিনকে দিয়ে এই কাজ গুলো কেউ করাচ্ছে। আর শাফিন ও রাজী হয়ে গেছে। কারণ, শাফিন এমনিতে ও তোর আর আমার উপর ক্ষেপে আছে। সাথে আরেকজনের সাপোর্ট পেয়েছে। তাই সে সাহস করছে এসব করার। শাফিনের থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্যই লোকটা বলেছে, শাফিন পঙ্গু আমরা যেনো শাফিনের থেকে আমাদের সন্দেহের তীর ঘুড়িয়ে ফেলি। মোট কথা, এখানে যা কিছু হচ্ছে সব আমাদের বিভ্রান্ত করার জন্য। এর কোনোটাই বিশ্বাসযোগ্য নয়। জানি না কতটুকু গেইস করতে পারছি তবে আশা করছি আমি ভুল দিকে এগুচ্ছি না। বাকিটা শাফিনের মুখোমুখি হলে বুঝা যাবে। আমার মনে হয় না আমরা এতো সহজে শাফিন অব্দি পৌঁছাতে পারব। পথে অনেক ধরনের বাধা আসবে। তাই আমাদের যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে।”
—-“বাপরে বাপ তুমি তো সেই লেবেলের ধূর্ত। কিভাবে পারো এতো মাথা খাটাতে? আমার দ্বারা এসব হবে না বাপু। মাথা কেমন ঝিম ধরে আসে।”
জায়ান হু হা করে হেসে বলল,,,,,
—-“তোর এসব মাথায় ঢুকাতে হবে না। আমি তো আছি এসব ভাবার। আচ্ছা তমু….তোর কি ক্ষিদে পেয়েছে?”
তমা পেটে হাত দিয়ে মুখটা কাচু মাচু করে বলল,,,,,,
—-“কিভাবে বুঝলে?”
—-“ভালোবাসি বলে!”
তমা জায়ানের দিকে তাকিয়ে শান্ত কন্ঠে বলল,,,,,,
—-“আচ্ছা ভাইয়া….. ভালোবাসলে কি সবই বুঝা যায়? কই আমি তো বুঝলাম না আকাশের ছলছাতুরী! সে কি সুন্দর আমাকে গোল খাইয়ে চলে গেলো। আমি ধরতেই পারলাম না।”
জায়ান হুট করে তমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাসিক্ত কন্ঠে বলল,,,,,
—-“চুপ একদম চুপ। আমার সামনে আর কখনো আকাশের নাম নিবি না। আমি একদম সহ্য করতে পারি না। বুকের ভিতরে অসহ্য এক্টা চিনচিনে ব্যাথা হয়। যা আমার সহ্য ক্ষমতার বাইরে।”
তমা জায়ানের শার্ট আঁকড়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলল,,,,,
—“জায়ান ভাইয়া….তুমি আমাকে খুব ভালোবাসো তাই না? এজন্যই তোমার বুকে চিনচিনে ব্যাথা হয়!”
—“আমি আমার ভালোবাসা কখনো দাড়ি পাল্লায় মেপে দেখি নি। মাপলে হয়তো আস্ত এক্টা পৃথিবীর সমান হবে। পৃথিবীর সীমা পরিসীমায় যে’মন কোনো নিদিষ্টতা নেই। তেমনি আমার ভালোবাসায় কোনো নির্দিষ্টতা নেই। আমার ভালোবাসা কখনো আকাশের মতো বিশাল তো কখনো সাগরের মতো গভীর।”
তমা এক দৃষ্টিতে জায়ানের দিকে তাকিয়ে আছে। হয়তো ভলোবাসার গভীরতা বুঝার চেষ্টা করছে। জায়ান লুকিং গ্লাসের দিকে তাকিয়ে হুট করে গাড়িটা থামিয়ে দিলো। তমা অবাক হয়ে জায়ানের দিকে তাকালো। জায়ান তাড়াহুড়ো করে গাড়ি থেকে নেমে তমার হাত ধরে রাস্তার অপোজিট পাশের রেস্টরেন্টটা তে ঢুকে গেলো। জায়ান দৌঁড়ে সিঁড়ি বেয়ে রেস্টুরেন্টের দুতলায় উঠে জানালার পাশে বসে পড়ল। জায়ান আর তমা পাশাপাশি বসে আছে। তমা কিছুটা কৌতুহলী দৃষ্টিতে জায়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,
—-“কি হয়েছে জায়ান ভাইয়া? তুমি হঠাৎ এভাবে দৌঁড় ঝাপ শুরু করলে কেনো?”
জায়ান তমাকে হাত দিয়ে ইশারা করে বলল চুপ থাকতে। তমা চুপ হয়ে জানালার দিয়ে নিচে তাকাচ্ছে। জায়ানের দৃষ্টি রাস্তায় পার্ক করা ব্ল্যাক রঙ্গের এক্টা গাড়ির দিকে। গাড়িটা ঠিক জায়ানের গাড়ির পিছনে পার্ক করা। তমা ভালো করে তাকিয়ে দেখল, গাড়ি থেকে কালো রঙ্গের পোষাক পড়া একজন লোক বের হচ্ছে। লোকটা এদিক সেদিক তাকিয়ে হুট করে জায়ানের গাড়ির নিচে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ল। গাড়ির নিচে কিছু এক্টা করে লোকটা আবার গাড়ির নিচ থেকে উঠে হাত দুটো ঝাড়তে ঝাড়তে দৌঁড়ে নিজের গাড়িতে উঠে গাড়িটা স্টার্ট করে শো শো বেগে ছুটে চলল।
জায়ান টেডি স্মাইল দিয়ে তমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,,
—“বুঝেছিস তমা, আমাদের লাক টা অনেক ভালো। জোর বাঁচা বেঁচে গেলাম।”
তমা কপাল কুচকে বলল,,,,
—“জায়ান ভাইয়া আমি কিচ্ছু বুঝছি না। সব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। লোকটা কি করল আমাদের গাড়ির নিচে?”
—-“বোম চিনিস? আমাদের গাড়িতে বোম ফিট করা হয়েছে। কিছুক্ষন পরেই গাড়িটা ব্লাস্ট করবে!”
—-“এ্যা কি বলছ এসব?”
—“ভাগ্যিস রেস্টুরেন্টের সামনে এসে আমার চোখ হঠাৎ লুকিং গ্লাসে গিয়ে আটকেছে তাই তো পিছন থেকে আমাদের ধাওয়া করা গাড়িটাকে দেখতে পেলাম। ওরা সত্যি সত্যি ভেবেছে আমরা রেস্টুরেন্টের সামনে এসে গাড়িটা দাঁড় করাব। তাই তো ওরা আমাদের ধাওয়া করতে করতে এই পর্যন্ত এসে পৌঁছে গেছে। এমন কি ওদের প্ল্যান অনুযায়ী নির্দিষ্ট কাজটা সেরে ও ফেলেছে।”
—“তোমার কথার আগা মাথা বুঝলাম না। ওরা কিভাবে জানল আমরা রেস্টুরেন্টে আসব? তুমি তো ঐ সময় বলেছিলে আমরা বাড়ি যাচ্ছি।”
জায়ান মাথায় হাত দিয়ে কপাল কুচকে বলল,,,,,,
—“আমরা এক্টা বড় ব্ল্যান্ডার করে ফেলেছি তমু। ওরা সব জেনে গেছে আমরা যে ওদের প্ল্যান ধরে ফেলেছি!”
—-“মানে? কিভাবে?”
—-“ওরা আমাদের গাড়িতে সুযোগ বুঝে চিপ জাতীয় কিছু ফিট করে গেছে। যাতে করে আমাদের বলা প্রত্যেকটা কথা ওদের কানে গিয়ে পৌঁছে গেছে। এজ লাইক ওয়ারলেস অথবা অডিও রেকর্ডার। ওরা ভেবেছে আমরা সত্যি সত্যি রেস্টুরেন্টে খেতে যাবো। এই সুযোগে ওরা আমাদের গাড়িতে বোম ফিট করে দিবে। আমরা যখন খেয়ে দেয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠব ঠিক তখনই গাড়িটা ব্লাস্ট করবে। সাথে সাথে আমাদের অন্তিম সংস্কার হয়ে যাবে। আমরা আর শাফিন অব্দি পৌঁছাতে পারব না। কিন্তু আপসোস ওদের প্ল্যানটা মাঠেই মারা গেলো। আমরা ঠিক ধরে ফেলেছি ওদের প্ল্যান।”
—-“ওহ্ মাই গড। জোর বাঁচা বেঁচে গেলাম। ভাগ্যিস তুমি ওদের প্ল্যানটা ধরতে পেরেছ। না হয় এতক্ষনে আমরা মায়ের ভোগে চলে যেতাম।”
—-“বাদ দে এসব। এখন কি খাবি বল? ওয়েটারকে ডাকব?”
—-“রাখো তো তোমার খাবার। আগে বলো আমরা শাফিন অব্দি কিভাবে পৌঁছাবো? ওরা তো আমাদের প্ল্যানটা ধরে ফেলেছে। নিশ্চয়ই শাফিনকে এখন বাড়ি থেকে সরিয়ে ফেলবে না হয় শাফিনকে শেষ করে ফেলবে।”
জায়ান হাত দুটো উপরে তুলে বড় এক্টা হাই তুলে বলল,,,,,
—-“গাড়িতে বোম ফিট করে ওরা আমাদের জন্য সুবিধেই করে দিলো বুঝলি তমু? এবার শাফিনকে খুঁজতে আরো সুবিধে হবে আমাদের।”
—-“মানে কিভাবে? ওরা হয়তো শাফিনকে এতক্ষনে সরিয়ে ফেলেছে!”
—-“ওরা যদি শাফিনকে সরিয়েই ফেলত তবে আমাদের গাড়িতে বোম ফিট করত না। ওরা ভেবেছে এতো টানা হেছড়া না করে একেবারে বোম দিয়ে উড়িয়ে দিলেই তো হয়। তাই ওরা শর্ট কার্ট পথ টা বেছে নিয়েছে। এতে শাফিনকে ও বার বার লুকাতে হবে না। আর আমাদের কে নিয়ে ও এতো টেনশান করতে হবে না। আমি ডেম সিউর শাফিন এখনো ওর বাড়িতেই আছে। তবে এটা বুঝতে পারছি না, শাফিন আদৌ সুস্থ আছে নাকি অসুস্থ। যার কারণে ওরা পুরো প্ল্যানটা ই চেইন্জ্ঞ করে দিলো? মাথায় অনেক প্রশ্ন ঘুড়ছে। বার বার ওরা আমাদের মাইন্ডকে ঘুড়িয়ে দিচ্ছে। সব জট পাকিয়ে দিচ্ছে। এই জট একমাএ শাফিন ই খুলতে পারবে। তাই যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা খেয়ে দেয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে শাফিনদের বাড়িতে হানা দিবো।”
—-“ওরা যদি আমাদের গাড়িতে অডিও চিপ ফিট করেই রাখে তবে ওরা তো বুঝেই যাবে আমরা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠি নি। কারণ, আমাদের কথার আওয়াজ ওরা পাবে না। নিশ্চয়ই ওরা বুঝে যাবে ওদের প্ল্যানটা ফ্লপ খেয়েছে। আর আমরা অন্য রাস্তা দিয়ে পালিয়েছি।”
—-“জায়ান এতো কাঁচা কাজ করে না তমু! আমি জানি ওরা আমাদের ভয়েস শুনার সাথে সাথেই রিমোট কন্ট্রোলে প্রেস করে বোমটা ফাটিয়ে দিবে। হয়তো শত্রুরা আমাদের আশে পাশেই উৎ পেতে থাকবে। আমাদের উপর নজর রাখবে। আমার মাথায় দারুন এক্টা আইডিয়া ঘুড়ছে। সে আইডিয়াটাই এপ্লাই করব। আগে কিছু খেয়ে নেই। অনেক ক্ষিদে পেয়েছে।”
কথাগুলো বলেই জায়ান ওয়েটারকে ডাকল। ওয়েটার দৌঁড়ে এসে জায়ানের কাছে হাজির হলো। জায়ান মেনু দেখে দু প্লেইট মাটন বিরিয়ানী অর্ডার করল। অর্ডার পাওয়ার পর পরই ওয়েটার দৌঁড়ে গেলো খাবার আনতে।
জায়ান বসা থেকে উঠে জানালার গ্রীলে হাত দিয়ে রাস্তার ফুটপাতে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ল্যামপোস্টের দিকে তাকালো। সাথে রাস্তার আশেপাশের পরিবেশটা ও ভালো করে চোখ বুলিয়ে দেখলো। জায়ানের গাড়ির এক পাশে রাস্তা, আর অন্য পাশে বড় এক্টা ধান ক্ষেত। মুহূর্তেই জায়ান মৃদ্যু হেসে রাস্তা থেকে চোখ সরিয়ে তমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,
—-“তমা তোর উড়নাটা কিছুক্ষনের জন্য আমাকে দেওয়া যাবে? জাস্ট ফাইভ মিনিটস এর জন্য।”
তমা কিছুটা অবাক হয়ে বলল,,,,,
—-“কেনো?”
—-“আগে দে, পরে কারণটা বলছি।”
তমা আগা মাথা কিছু না বুঝে জায়ানের হাতে ওর উড়নাটা ধরিয়ে দিলো। ভাগ্যিস পুরো রেস্টুরেন্ট টা ফাঁকা। তাই তমা নির্দ্বিধায় উড়নাটা জায়ানের হাতে ধরিয়ে দিতে পারল। জায়ান উড়নাটা হাতে নিয়ে মেয়েদের নিকাবের মতো ওর পুরো মুখে উড়নাটা জড়িয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে সোজা নিচে নেমে গেলো। রাস্তা থেকে কয়েকটা ইটের কণা নিয়ে জায়ান নিজেকে অন্ধকারে লুকিয়ে নিলো। এরপর সে ঠিকভাবে নিশানা লাগিয়ে ল্যাম্প পোস্টের লাইট গুলোতে ইটের বড় বড় কণা গুলো ছুড়ে মারল। সাথে সাথেই লাইট গুলো ভেঙ্গে চৌঁচির হয়ে গেলো। জায়ান আর দেরি না করে দ্রুত পায়ে হেটে রেস্টুরেন্টের দুতলায় ঢুকে গেলো। ওয়েটার এতক্ষনে খাবার সার্ভ করে চলে ও গেছে। জায়ান হম্বিতস্বি হয়ে মুখ থেকে উড়নাটা সরিয়ে তমার পাশে বসে পড়ল। এরপর উড়নাটা তমার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে জায়ান তমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,,,
—-“তাড়াতাড়ি খেয়ে নে। এখান থেকে আমাদের তাড়াতাড়ি পালাতে হবে।”
তমা কিছুটা সিরিয়াস হয়ে বলল,,,,,
—-“তুমি আমার উড়না নিয়ে কি করেছ জায়ান ভাইয়া?”
জায়ান চামচ কেটে কেটে তমার মুখে বিরিয়ানী পুড়ে দিচ্ছে আর বলছে,,,,
—-“এক্টু পরেই টের পাবি। এখন ফটাফট খেয়ে নে।”
তমা আর কথা না বাড়িয়ে খাওয়ায় মনযোগ দিলো। দুজনেই গপাগপ খেয়ে দুই প্লেইট বিরিয়ানী দশ মিনিটের মধ্যে শেষ করে ফেলল। জায়ান তমার মুখটা ওর হাত দিয়ে মুছে দিয়ে তমার কানে ফিসফিসিয়ে বলল,,,,,
—-“আমরা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে সোজা গাড়িতে উঠব। গাড়ির দরজা খোলার সাথে সাথেই তুই বলবি,,,,,,
—” জায়ান ভাইয়া প্লিজ তাড়াতাড়ি গাড়িটা ছাড়ো। বেশি লেইট করে ফেললে আমরা শাফিনকে খুঁজে পাবো না।”
কথাটা বলেই তুই ঠাস করে গাড়ির দরজাটা লাগিয়ে দিবি। বুঝেছিস তো কি বলেছি?
তমা কিছুটা ভয় পেয়ে বলল,,,,,,,
—-“এই তুমি কি আমাদের বোম ব্লাস্টে মরার ব্যবস্থা করেছ?”
—-“একদমই না। আমরা কেউই মরব না। আমাদের গাড়ির অপজিট পাশে বিশাল এক ধান ক্ষেত আছে। বোম ব্লাস্ট হওয়ার আগেই আমরা ঐ ধান ক্ষেতে ঝাঁপ দিবো।”
—-“তুমি কি বোকা? ল্যাম্প পোস্টের আলোতে সব দেখা যাবে। ওরা ধরে ফেলবে সব।”
জায়ান হু হা করে হেসে বলল,,,,,
—-“একবার রাস্তার দিকে তাকা।”
তমা জায়ানের থেকে চোখ সরিয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখল, পুরো রাস্তাটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আছে। কোথা ও কোনো আলোর ছিটি ফুটা নেই। তমা রাস্তা থেকে চোখ সরিয়ে চোখ বড় বড় করে জায়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,
—-“তুমি এক্টু আগে এসব করে এসেছ?”
জায়ান টেডি স্মাইল দিয়ে বলল,,,,,
—“হুম ডিয়ার। প্লিজ কথা না বাড়িয়ে এবার চল।”
কথাটা বলেই জায়ান তমার হাত ধরে টানতে টানতে রেস্টুরেন্টের নিচ তলায় নেমে খাবারের বিল মিটিয়ে সোজা রাস্তা পাড় হয়ে জায়ানের গাড়ির কাছে চলে গেলো। রাস্তায় মানুষ দল পাঁকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ল্যাম্প পোস্টের লাইট ভাঙ্গা নিয়ে সবাই চর্চা করছে।
জায়ানের প্ল্যান অনুযায়ী তমা গাড়ির দরজা খুলছে আর ঢং করে বলছে,,,,,
—-“জায়ান ভাইয়া প্লিজ চট জলদি গাড়িটা স্টার্ট করে দাও। আর এক্টু দেরি করলেই হয়তো আমরা শাফিনকে হারিয়ে ফেলব। তাছাড়া চারদিকটা কেমন ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে আছে। আমার বেশ ভয় লাগছে।”
জায়ান ও ঢং করে বলল,,,,
—-“ওকে ওকে তাড়াতাড়ি বস। আসলেই অনেক লেইট হয়ে যাচ্ছে। বেশ ভয় ভয় ও লাগছে। চারিদিকটা অমাবস্যার মতো তলিয়ে আছে।”
কথাটা বলেই জায়ান গাড়ির দরজাটা ঠাস করে লাগিয়ে তমার হাত ধরে ধান ক্ষেতে ঝাপ দিলো। সাথে সাথেই গাড়িটা ব্লাস্ট হয়ে গেলো।
#চলবে,,,,,,,,
(বাড়িতে মেহমান থাকার কারণে খুব ব্যস্ত আছি। তাই হয়তো গুছিয়ে লিখতে পারি নি। আজকের পার্ট টা ও ছোটো হয়ে গেছে। তার জন্য আমি বেশ দুঃখিত।)