#এই_রাত_তোমার_আমার
#সানজিদা_ইসলাম
#১০ম_পর্ব
হঠাৎ বারান্দায় অন্ধকারে কারো অস্তিত্ব টের পেয়ে ফিমা ঘাবড়ে গেলো।এই সময় সাধারণত কেউ বারান্দায় আসে না আর আজমীন বেগমও তার বোনের বাড়ি গেছেন মাহিয়াত এখনো ফেরেনি বাড়িতে সে সম্পূর্ণ একা।
হঠাৎ ঘাড়ে কেউ হাত রাখতেই ফিমা পিছনে ঘুরে আশ্চর্য হয়ে গেল একটা ট্রাউজার আর ব্লাক টিশার্ট পরে এলোমেলো চুলে আর মুখে মন ভুলানো হাঁসি নিয়ে মাহিয়াত দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু এটা মাহিয়াত হতেই পারেনা কারণ সে নিজে সদর দরজা বন্ধ করে দিয়ে এসেছে কলিং বেল বাজানো ছাড়া তো সে বাড়িতে ঢুকতেই পারবেনা আর যদি তার কাছে এক্ট্রা চাবি থাকে তাহলে বাড়িতে ঢোকা সম্ভব হলেও বারান্দায় আসা সম্ভব না কারন সে ঘরের দরজায় লক না করে ছিটকিনি দিয়ে এসেছে তাহলে সে ঘরেই ঢুকলো কখন? আর কাপড়ই চেঞ্জ করলোই কখন?তাই সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে অবশ্যই মাহিয়াত না আর সোজা কথা বলতে গেলে মাহিয়াত কখনো এত রাতে তার কাছে আসবে না, তাহলে ভুত টুত নয়তো ভাবতেই ফিমা চিৎকার দিয়ে বারান্দার অপর প্রান্তে চলে গেলো আর বিরবির করে সুরা পড়তে আরম্ভ করলো,
ফিমার এমন হঠাৎ চিৎকারে মাহিয়াত ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো ফিমার হঠাৎ এমন করার কারণ সে খুঁজে পাচ্ছে না তাই আশেপাশে খোঁজার চেষ্টা করলো কিছু দেখে ভয় টয় পেয়েছে কিনা কিন্তু সন্দেহজনক তেমন কিছু দেখলো না তাই সে তার কাছে যেতে নিলেই ফিমা আবার চিৎকার করে উঠল,
— এই একবারে কাছে আসবি না একটু ও আসবি না।আমি আমি কিন্তু অনেক সূরা পারি আয়াতুল কুরসি পারি আর এক কদম সামনে আসলেই তোকে ধ্বংস করে দেবো, বলে আবার জোরে জোরে সূরা পড়া শুরু করলো।
মাহিয়াত ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল,
—কি বলছো এই সব সূরা পারো, ধ্বংস করে দিবে?আর তুমি তুকারি করছো কেনো? এদিকে এসো।
মাহিয়াতের কথা শুনে ফিমা মুখ ব্যাঙ্গ করে বললো, —হুম তুই মাহিয়াত বাবুর ভেস ধরে আমার সাথে কথা বলবি,তোর কাছে যেতে বলবি আর আমি তোর কথা শুনে ধেই ধেই করে চলে যাই আর তুই সুযোগ বুঝে আমার ঘাড় মটকে দে।দূর হ সয়তান দূর হ।আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা…
এতক্ষণে মাহিয়াতকে বোধগম্য হলো ফিমার অদ্ভুত আচরণের পেছনে কারণ।সে মাহিয়াতকে ভুত ভেবে বসে আছে ফিমার বোকামি দেখে মাহিয়াতের খুব হাঁসি পেলো, কিন্তু সে নিজেকে সামলে ভাবলো একটু মজা করা যাক,
তাই সে ফিমার থেকে একটু দূরে সরে গিয়ে অভিনয় শুরু করলো,
—দয়া করে আর সূরা পড়বেন না আমি সহ্য করতে পারছি না আমাকে মাফ করে দিন বেগাম আর কোনো দিন আপনার সামনে আসবো না এই ছোট খাট ভুতকে দয়া করে মুক্তি দিন।আমি এখনি চলে যাচ্ছি শুধু একটা কথার উত্তর দিন আপনি কিভাবে জানলেন আমি আপনার মাহিয়াত বাবু না অন্য কেউ?
ফিমা মাহিয়াতের কথা অগ্রাহ্য করে তাড়াতাড়ি বলল,
—বলবো না কিছু বলবো না। নিজে বাঁচতে চাইলে তারাতাড়ি পালা এখান থেকে।
ভয়ে ফিমার হাত পা কাঁপছে জীবনে ভুত দেখেনি সে। কিন্তু ভুতে তার ভয় সেই ছোট কাল থেকেই আর আজকে ভুত তার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে প্রশ্ন করছে সে বিশ্বাসই করতে পারছে না।ভাগ্যিস ভুতটা মাহিয়াতের রুপ ধরেছে তাই তো ভয় কম লাগছে যদি নিজের আসল রুপে আসতো তাহলে হয়তো সে মরেই যেত।এখন যে সে কিভাবে দাঁড়িয়ে আছে তা কেবল সেই জানে।
—মাফ করবেন বেগাম উত্তর না নিয়ে তো আমি এক পাও নড়বো না। আপনার যদি আমার সাথে থাকতে আপত্তি না থাকে তাহলে আপনি চুপ থাকুন আর যদি চান আমি চলে যাই তাহলে তারাতাড়ি উত্তর দিয়ে দিন।আসলে আপনার মত বিচক্ষণ মানুষ আমরা খুব কমই দেখেছি তো। কি সুন্দর আপনি ধরে ফেললেন আমি মানুষ না মানুষের রুপ ধরে এসেছি তাই আপনার প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে গেলো। আপনি এত বুদ্ধি কোথা থেকে পান? এবার তো আমি উত্তর না নিয়ে যাচ্ছি না।
ফিমা পরেছে মহা মুশকিলে তার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না আর এদিকে মাহিয়াত অন্ধকারে মিটিমিটি হাসছে ফিমার মুখের এক্সপ্রেশন দেখে, ফিমা কোনরকম তোতলাতে তোতলাতে বললো,
—আসলে তেনারা মানে আপনারা নাকি গর্ভবতী নারী বেশি পছন্দ করেন তারা রাতে ঘর থেকে বেরুলে তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করে। আর আর আআআমি তো এই এতো রাতে খোলা চুলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। তাই আমার ক্ষতি করার জন্য মাহিয়াত বাবুর ভেস ধরে এসেছেন। কিন্তু কোন লাভ হল না কারণ আমি তো জানি মাহিয়াত বাবু এখন ঘরে আসতে পারবেনা আমি সব দরজা লক করে দিয়েছি এর মানে আপনি মাহিয়াত বাবু নন আর এমনিতেও তিনি আমার সাথে এত মিষ্টি করে হেসে হেসে কথা বলে না।তাইতো আমি 100% সিওর হয়ে যাই।
ফিমার প্রথম কথাগুলো শুনে মাইয়াতের হাসি পেলেও শেষের কথাগুলো শুনে কিছুটা বিব্রত বোধ করল আসলেই মেয়েটার সাথে কখনোই স্বাভাবিকভাবে হেসে কথা বলা হয়নি। সব সময় এড়িয়ে চলেছে। তার অবশ্য দুইটা কারণ আছে প্রথমত অপরাধবোধের কারণে কথা বলতে পারে না আর দ্বিতীয়তঃ নুহা ছাড়া অন্য মেয়ের সাথে কথা বলতে তার জড়তা কাজ করে আর এই মেয়ের সাথে যে তার সম্পর্ক অনেকটা গভীরে সেটা যেন মনের দিক থেকেও গভীর না হয় তাই দূরত্ব বজায় রেখেই চলেছে।
মাহিয়া ফোস করে একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে একদম শান্ত স্বরে বলল,
—আমিই মাহিয়াত ফিমা কোনো ভুত টুত নই।আপনি শুধু শুধু ভয় পাবেন না। আসলে সদর দরজার চাবি আমার কাছে ছিলো আর আপনার দরজা বন্ধ থাকলেও আমার বেডরুম কিন্তু খোলাই ছিল আমি সে দিক দিয়ে আপনার ঘরে গিয়েছি।এটা নিশ্চয়ই জানেন এই দুই ঘরের একটাই কমন বারান্দা আর এমনিতেও আপনিতো অন্ধকার দেখতে ব্যস্ত ছিলেন তাই আমার উপস্থিতি টের পাননি।তাই এখান আমাকেই ভুত বানিয়ে দিলেন।যাকগে নিশ্চয়ই রাতে কিছু খাননি জলদি নিচে আসুন খেয়ে মেডিসিন নিতে হবে এমনিতেই আপনার শরীর ভালো না তার ওপর এমন আজগুবি চিন্তাভাবনা করেন সারাদিন। কাজের কাজ তো কিছুই হয় না। ভালো মানুষকে ভুত কিভাবে বানাতে হয় সে বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে গেছেন কিছু দিন পর মানুষ আপনার কাছ থেকে ট্রেনিং নিতে আসবে।
মাহিয়াতের কথা শুনে ফিমার ভয় গুলো গায়েব হয়ে একরাশ লজ্জা আর অসস্থি ভর করল, ছি কি সব বলে ফেলেছে সে মাহিয়াতকে? তুই তুকারিও করছে কিন্তু এখানে তার কি দোষ আছে আকাশের দিকে তাকালেই তার সব ধ্যান জ্ঞান সেদিক চলে যায় আশেপাশের পরিবেশ বেমালুম ভুলে যায়। আর বারান্দায় যে আরও একটি দরজা আছে সে দিক দিয়ে মাহিয়াত যাতায়াত করে সে কথা তো কিছুক্ষণের জন্য সে ভুলেই গিয়েছিল। এখন না জানি তার বোকামির জন্য মাহিয়াত তাকে কত কথা শোনায়? যদিও ভেবেছিলো রাতে খাবে না মিথ্যে কথা দিয়ে চালিয়ে দিবে কিন্তু মাহিয়াতের ভয়ে আর এমন কাজ করার সাহস পেলো না সে। চুপচাপ বাধ্য মেয়ের মত নিচে গিয়ে খাবার খেয়ে নিল।
আর এমনিতেও ইদানীং তার প্রচুর ক্ষুধা লাগে এমনও হয় মাঝরাতে ক্ষুধার জ্বালায় তার ঘুম ভেঙে যায় কিন্তু লজ্জায় মাহিয়াতকে কিছু বলতে পারেনা চুপিচুপি ঘরে রাখা শুকনো খাবার খেয়ে নেয়। তার এই স্বভাবে সে নিজেই বিরক্ত হয়ে যায়।না খেয়েছে থাকবে সেই উপায়ও নেই সামান্য ক্ষুধা লাগলে পেটে ব্যাথা শুরু হয়ে যায় সে মনে মনে ভেবে নিয়েছে তার ছেলে কিংবা মেয়ে এক নাম্বার খাদক হবে যে পেটের ভিতর থেকেই খাবারের জন্য এমন করে বাইরে বেরোলে না জানি কি অবস্থা হয়। অবশ্য খাদক হলেও সমস্যা নেই তার বাবার কাছে কখনোই খাবারের অভাব হবে না নিশ্চয়ই।
।
।
।
।
মাহিয়াত আর ফিমা পাশাপাশি শুয়ে আছে ফিমা প্রেগন্যান্ট জানার পর থেকে মাহিয়াত তার বেডরুমেই ঘুমাতো কিন্তু সেদিন ফিমা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই আবার পাশাপাশি দূরুত্ব বজায় রেখে ঘুমায়। প্রতিদিনের অভ্যাস বসত মধ্য রাতে ফিমার ঘুম ভাঙল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ৩.৩৪ বাজে বা পাশে তাকিয়ে দেখলো মাহিয়াত হা করে ঘুমিয়ে আছে ফিমা ফিক করে হেসে ফেললো আর সাথে সাথে পেটে মৃদু ব্যাথা অনুভব করলো। পেটটা একটু উঁচু হয়েছে ভেতর থেকে ঘড়ির মত টিক টিক আওয়াজ করে। আস্তে আস্তে তার বাচ্চাটা বড় হচ্ছে ছোট ছোট হাত পা সৃষ্টি হচ্ছে কয়েকদিন পর দুনিয়ার আলো দেখবে তাকে মা বলে ডাকবে ভাবতেই যতটুকু খুশি হয় আবার তাকে ছেড়ে যেতে হবে মনে হতেই ঠিক ততটুকুই কষ্ট হয়।
ব্যাথাটা একটু তিব্র হতেই ফিমা ভাবনার জগৎ থেকে বের হয়ে এলো। চুপিচুপি ঘরের দরজা খুলে রান্নাঘরের দিকে এগোলো। রান্নাঘরের টাইট জালিয়ে উপরের কেবিনেট থেকে চানাচুরের বক্স বের করে দেখলো ডাব্বা খালি তারপর বিস্কিকের ডাব্বা বের করে দেখলো নিচে দুটো বিস্কিট পরে আছে।সে ডাব্বাটা রেখে দিয়ে ফ্রিজ খুলে দেখলো কিছুই নেই।সে হতাশ হয়ে রান্না ঘরে গিয়ে বিস্কিট দুটো একটা বাটিতে নিয়ে সেখানে বসে খেয়ে নিলো। তার মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে ভালো লাগে না একটু ঝাল কিছু খেতে ইচ্ছে করে কিন্তু ভাত একেবারেই মুখে রোচে না। আজকে বাসায় মেহমান এসেছিলো তাদের সব নাস্তা দিয়ে দেয়া হয়েছে তাই বাধ্য হয়েই এইসব খাওয়া।
বহু কষ্টে হাতের খাবার শেষ করে ফিমা দু গ্লাস পানি খেলো পেট ভরেনি তার। কিন্তু কি করবে শাশুড়ি মা বা স্বামী কাউকে তার জন্য বাড়তি খাবার আনতে বলতে তার লজ্জা লাগে।আর তা ছাড়া মাহিয়াত প্রচুর ফলমূল আনে কিন্তু সে সেগুলোর ধারে কাছেও যায় না। এগুলো দেখলেই গা গুলায় তার।
খাওয়া শেষে সব গুছিয়ে লাইট বন্ধ করতেই দেখলো মাহিয়াত দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। দরজা খোলার আওয়াজেই মাহিয়াতের ঘুম হালকা হয়ে এসেছিলো সামনে হাত দিয়ে ফিমাকে না পেয়ে সে কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিলো চোখ খুলে সারাঘরে তাকিয়ে দেখলো ফিমা ঘরের কোথাও নেই ওয়াশরুমের দরজা আর বারান্দার দরজা বাইরে থেকে বন্ধ আর ঘরের দরজা খোলা। মাহিয়াত ভয় পেয়ে গেলো মেয়েটা পালালো না তো? আবার পরক্ষনেই ভাবলো চুরি টুরিও তো করতে পারে বলা তো যায়না। অভাবে স্বভাব নষ্ট হয়ে যেতেই পারে। আর যে টাকার জন্য বিয়ে করছে তার কাছে চুরি কোনো বড় ব্যপার না।সে চাইলেই বিয়েতে না করতে পারতো কিন্তু তা করেনি। কোনো কিছু না ভেবে মাহিয়াত ঘর থেকে বেড়িয়ে আসতেই কিচেনে টুং টাং আওয়াজ পেলো আর এর উৎস খুঁজে পেতেই এখানে আসা আর যা দেখলো তাতে সে নিজের ভাবনার উপর নিজেই লজ্জিত হলো। মেয়েটা এখানে খাবার খেতে এসেছে আর সে কিনা কি ভেবে বসেছিলো?ছি কত জঘন্য তার চিন্তা ভাবনা।
ফিমা মাহিয়াতকে দেখে চুপ চাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।সে এভাবে ধরা পড়বে সে কল্পনাও করেনি।সে চোখ তুলে মাহিয়াতকে কিছু বলতে নিলে মাহিয়াত তাকে উপেক্ষা করে কিচেনে ঢুকে গেলো তারপর ফ্রিজ থেকে দুটো ডিম বের করে চুলোয় সেদ্ধ দিলো।দশমিনিট পর ডিম গুলো নামিয়ে নিলো এই কয়েক মিনিটে কেউ কোনো কথা বললো না আর না নিজের স্থান থেকে নড়লো ফিমা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নখ কাটছিলো আর মাহিয়াত বুকের উপর দুই হাত গুজে দেয়ালে হেলান দিয়ে তাকে দেখছিলো।ডিম গুলো পানিতে রেখে ঠান্ডা করে তার থেকে খোসা ছাড়িয়ে নিলো তারপর ছুরি দিয়ে তা কয়েক টুকরো করে প্লেটে নিয়ে নিলো আর সাথে এক গ্লাস পানি নিয়ে ফিমার দিকে বাড়িয়ে দিলো,
—ধরুন
ফিমা বিনা বাক্যে গ্লাস হাতে নিলো মাহিয়াত এক হাতে প্লেট নিয়ে অন্য হাত দিয়ে ফিমাকে টেনে ড্রইং রুমের সোফায় বসালো তারপর নিজ হাতে একটা একটা করে ডিমের টুকরো মুখে পুরে দিতে দিতে বললো,
—খিদে পেয়েছে আমাকে বলতে পারতেন আপনার কি পছন্দ অপছন্দ আমি নিয়ে আসতাম এতে এতো সংকোচ করার কি আছে? প্রেগনেন্সির সময় এরকম হয় অখাদ্য খেতে ইচ্ছে করে, মুড সুইং হয়, খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন হয়, বারবার খুদা লাগে,পেটে পিঠে ব্যাথা হয়, হাতে পায়ে পানি আসে, মেজাজ খিটখিটে হয়, আরো এমন নানান ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়।আর একজন মেয়ের একার জন্য এই পরিবর্তন টুকু খুবই কঠিন। কিন্তু যদি তার পাশে তার পুরো পরিবার থাকে তাকে সাপোর্ট করে তাহলে এই কঠিন সময়টুকু সবচেয়ে সুখকর হয়ে থাকে। কিন্তু আপনি কি করছেন সবার কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন আপনার সমস্যা গুলো কারো সাথে শেয়ার করছেন না। এমনকি আপনার পরিবারের সাথেও না। এর ফলে কি হচ্ছে না আপনি এই সুখকর মুহূর্তকে উপভোগ করতে পারছেন আর না পরিবারের কারো সাথে খোলামেলা আলোচনা করছেন। এতে আপনার যতটুকু সমস্যা না হচ্ছে ততটুকু সমস্যা বাচ্চাটার হচ্ছে। আপনি মা হয়ে কি চাইবেন আপনার বাচ্চার ক্ষতি হোক?তাই নিজেকে গুটিয়ে না রেখে একা একা সময় পার না করে নিজের প্রতি যত্নশীল হোন।আর আপনার প্রয়োজন অপ্রয়োজনের কথা আমাকে বলবেন প্লিজ হেজিটেইড করবেন না।যতদিন আপনি আমার সাথে আছেন আপনার ভালো মন্দ সব কিছু দেখার দায়িত্ব আমার মনে থাকবে কথাটা?
—হুম,
—গুড, নিজেকে সব সময় একা ভাববেন না। আপনার পাশে আমি আছি আমার পরিবার আছে আপনার পরিবারের সবাই আছে।
—হুম আমার পাশে সবাই আছে শুধু নিজ নিজ স্বার্থসিদ্ধি করার জন্য। আপনার আর আপনার পরিবারের সুস্থ সন্তান চাই তাই আমার সাথে নরম ব্যবহার করছেন আমার প্রয়োজনের কথা জিজ্ঞেস করছেন।আর আমার পরিবারের মোটা অংকের টাকা চাই তাই আমার সাথে ভালো ব্যবহারের নাটক করছে।দুনিয়াতে আমার আপন বলতে পরিবার বলতে কেউ নেই যার সাথে আমি সব শেয়ার করবো।আর যে সবচেয়ে আপন হতে চলেছে তাকে আমি নিজ হাতে বিক্রি করে দিচ্ছি।তাই আল্লাহই আমার এক মাত্র ভরসা যার সাথে আমি আমার সব দুঃখ কষ্টের কথা প্রয়োজন অপ্রয়োজনের কথা বলি। একমাত্র তিনিই আছেন যে আমাকে ব্যবহার করে না শুধু আমার ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন কিন্তু আমার বিশ্বাস একদিন তার সব পরীক্ষা শেষ হবে। অবসান ঘটবে সকল কষ্টের আর সবার হিসেব হবে যার যার প্রাপ্য সে ঠিক পাবে। আমাকে খুঁজবে এক পলক দেখার জন্য পাগল হয়ে যাবে কিন্তু কেউ আমাকে পাবে না।
বলে আর অপেক্ষা করলো না মাহিয়াতের হাত থেকে গ্লাস নিয়ে সবটুকু পানি শেষ করে।ঘরে চলে গেল।আর মাহিয়াত এক দৃষ্টিতে তার চলে যাওয়া দেখলো।
চলবে…
(গল্পটা দেড়ি করে দেয়ার জন্য দুঃখিত।এক তো মাথা ব্যথা অন্যদিকে কি লিখবো মাথায় কিছু আসছিলো না। পাঁচ দিনে তিন লাইন লিখতে পারিনি। পাঁচদিন আগে অর্ধেক লিখা ছিল আর আজকে অর্ধেক লিখেছি। আগামী পর্ব শীঘ্রই পাবেন। ধন্যবাদ)