💞 তোমার আড়ালে 💞
Urme prema (sajiana monir)
পার্ট :১২
এভাবে বেশ কয়েকদিন চলে গেল আরোশ আর তার পরিবারের লোক বেশ কয়েকবার সুবাহকে ফিরিয়ে নিতে এসেছে কিন্তু সুবাহ প্রত্যেকবারই তাদের না করেছে ফিরিয়ে দিয়েছে ।
এভাবে বারে বারে তাদের ফিরিয়ে দিতে দিতে সুবাহ ও বেশ ভেঙ্গে পড়েছে সে চায়না আরোশের পরিবারকে মুখোমুখি হতে কারন তাদের সামনে সে বারে বারে ভেঙ্গে পড়ে !
বার বার তাদের ফিরিয়ে দিতে সুবাহর ও ভালো লাগেনা তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় সে এ শহর ছেড়ে চলে যাবে তার ছোট খালামনির কাছে চিটাগাং চলে যাবে ।
তাই তার বাবা মাকে বাড়ির সবাইকে বুঝিয়ে তার খালামনি বাড়িতে যাওয়ার জন্য রাতে রওনা দেয় যাতে কেউ জানতে না পারে সে কোথায় আছে !
রাতের সুবাহর বাবা তাকে বাসে উঠিয়ে দেয় চিটাগাংয়র জন্য সুবাহর বাবা বেশ কয়েকবার সুবাহর সাথে যাওয়ার জন্য কিন্তু সুবাহ সাফ মানা করে দেয় ।সুবাহ বলে সে একাই যাবে !
সুবাহ বাসে উঠে বসে কিছুক্ষন পরই সুবাহর পাশে কেউ একজন চাদর মোড় দিয়ে সুবাহ পাশে বসে সুবাহর পাশে বেশ লেগে বসে সুবাহ তাকে দেখে কিছুটা দূরে সরে বসে পাশের লোকটা আরো কাছে ঘেষে বসে ।
সুবাহ কিছুটা বিরক্ত নিয়ে জানালার কাছে ঘেসে বসে জানালা খুলে চোখ বন্ধ করে রাতের প্রকৃতিকে অনুভব করতে লাগে ।আরোশের সাথে কাটানো সুন্দর মূহুর্তগুলোর কথা ভাবতে লাগে ।
কিছু কিছু মূহুর্ত গুলো বেশ সুন্দর হয় যা না চাইলেও তা নিয়ে ভাবনা মাথায় আসে আরোশের সাথে কাটানো সয়য়গুলো তেমন নি সুবাহর কাছে ।সুবাহ চোখ বন্ধ করে রাতের পরিবেশের ঠান্ডা হাওয়া অনুভব করছে বাসে প্রায় সবাই ঘুম !
সুবাহর বাতাতে উড়ন্ত চুল গুলো বারে বারে তার পাশে বসা ব্যক্তি র উপর পড়ছে সে ও বেশ ভালোভাবে চুলের সুবাস নিচ্ছে যেন এই সুবাস নেওয়াটা তার নেশা !
সুবাহ বেশ কিছু সময় পর চোখ খুলে পিছনে ঘুরতেই দেখে লোকটি তার বেশ কাছাকাছি সুবাহ বেশ ভয় পেয়ে যায় সুবাহ কিছু বলতে নিবে চিৎকার দিবে তার আগেই পাশে থাকা লোকটি তার নাকে রুমাল ধরে !
সুবাহ অজ্ঞান হয়ে যায় পাশে লোকটির গায়েঁর উপর হেলে পড়ে ।
সুবাহ নিজের আদো আদো চোখ খুলে চারদিকে তাকায় কোথায় আছে সে তা দেখার জন্য ।মাত্রই ঘুম থেকে উঠার কারনে সব ঝাপসা ঝাপসা মনে হচ্ছে ।সুবাহ চোখ চোখ ডলতে ডলতে ভালোভাবে তাকিয়ে দেখে হাতে ভর দিয়ে আরোশ তার দিকে কিছুটা ঝুকেঁ রয়েছে আরোশের মুখটা সুবাহর মুখের থেকে বেশ কাছে !
তার চোখের নজর সুবাহর উপর ঠোটেঁ মৃদ্যু হাসি ।সুবাহ আরোশকে এত কাছে দেখে ভূত দেখার মত চমকিয়ে গেল ।জোরে চিৎকার দিতে নিবে তার আগেই সুবাহ মুখের কাছে আরোশ হাত রেখে চেপে ধরে !
সুবাহ বার বার অস্বাভীবিক ভাবে চোখ খুলছে আর বুঝছে যেন আরোশেকে সে স্বপ্ন দেখছে ।সুবাহ আরোশের দিকে বড় বড় অবাক চোখে তাকিয়ে আছে !
আরোশ মুচকি হেসে সুবাহর মুখের উপর পড়ন্ত চুল গুলো কানের নিচে গুজেঁ দিতে দিতে বলতে লাগে
“এত ভয় পাবার কিছু নেই !
আমি ভূত ভাল্লুক না আমি তোমার হাসভেন্ড ।”
সুবাহ আরোশের কাছ থেকে ছাড়া পাবার জন্য হাত পা নাড়াতে লাগে ।আরোশ মুখের উপর থেকে হাত সরিয়ে বলে
“উপসসসসস সরি !”
সুবাহ লাফ দিয়ে উঠে বড় বড় শ্বাস নিতে লাগে তারপর আরোশের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আপনার সমস্যা কি ?
আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন !
আপনি কেন এমন করছেন এসব করে কি প্রমান করতে চান ।
যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন ?
কি ভেবেছেন আমি আপনার কাছে ফিরে যাবো ?
কখনই না !
আমি এখনই বাসায় চলে যাবো ।”
বলেই বেডে থেকে রেগে তারাতারি করে নামতে লাগে ।আরোশ চুপ করে নিরব দর্শকের মত এতসময় ধরে সুবাহর সব অভিযোগ শুনছিল কিন্তু এখন সুবাহকে উঠতে দেখে তারাতারি করে হাত টান দিয়ে তাকে বেডে বসিয়ে তার হাত গুলো নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে করুন ভাবে বলে
“সরি জান আ’ম সো সরি !
আমি জানি আমি অনেক বড় অপরাধ করেছি আর আমার অপরাধের এতো সহজে ক্ষমা নেই তাও জানি !
কিন্তু আমাকে একটা সুযোগ দেও আমি এবার তোমাকে কোন অভিযোগের সুযোগ দিবোনা ।
প্লিজ আমাকে আর একটি বার সুযোগ দেও !”
সুবাহ আরোশের এমন করুন চাহনিতে নিজে আরো দূর্বল হয়ে যাচ্ছে ।সুবাহ আরোশের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে
“সব কিছু মেনে নেওয়াটা কি এতই সহজ !
আমি আপনাকে কি করে আবার আগের মত মেনে নিবো ।
কি করে আপনার করা প্রত্যেকটা ব্যবহার ভুলে যাবো ?
আমি ভেঙ্গে গেছি আরোশ পুরোপুরি ভেঙ্গে গেছি আপনাকে মেনে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না !
আমাকে যেতে দিন ।”
আরোশের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে উঠতে নেয় পিছন থেকে আরোশ সুবাহর হাত আটকিয়ে বলতে লাগে “তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবেনা আমি তোমাকে যেতে দিবোনা !”
সুবাহ পিছন ফিরে আরোশের দিকে তাকিয়ে বলে
“আরোশ কি বাচ্চাদের মত কথা বলছেন !
আপনি কি সত্যি পাগল হয়ে গেছেন ?
আমি আপনার সাথে থাকতে চাইনা তাই বলে কি আপনি আমার সাথে জোর করবেন ?
আপনি কি ভেবেছেন আপনি যা খুশি তাই করবেন আর আমি চুপচাপ সব কিছু মেনে নিবো ?
না তা কখনই হবে না !
আমি এখন চলে যাবো ।”
আরোশ সুবাহ কে টান দিয়ে নিজের কাছে এনে নিজের কোলে বসিয়ে পিছন থেকে সুবাহকে নিজের সাথে জরিয়ে ধরে সুবাহ র কানের কাছে মুখ এনে স্লো ভয়েসে বলে
“হ্যা আমি পাগল হয়ে গেছি !
তোমার প্রেমে পাগল হয়ে গেছি আর এই পাগল কে সুস্থ করতে প্রভা কে প্রয়োজন আমার প্রভাকে ।
তোমাকে প্রয়োজন !
তাইতো তোমাকে কিডন্যাপ করে এনেছি নিজের কাছে রাখার জন্যে ।
নিজের বুকের মাঝে সারাজীবনের জন্য বন্ধি করতে !”
সুবাহ হালকা ঘাড় ঘুরিয়ে আরোশের দিকে ফিরে রেগে বলতে লাগে
“আপনার না কিডন্যপার হওয়া দরকার ছিলো !
কারন আপনাকে এই পেশায়ই ভালো মানাবে
গুন্ডা দের মত একদম !”
আরোশ দাতঁ বের করে হেসে বলতে লাগে
“আমার প্রসংসা করার জন্য ধন্যবাদ !”
সুবাহ নাক ফুলিয়ে সামনে ঘাড় ঘুরিয়ে ফেলে কাদোঁ কাদোঁ ফেস করে বির বির করে বলতে লাগে
“না জানি আব্বু আম্মু খালামনি সবাই কত টেনশন করছে আব্বু বার বার বলেছে পৌছিয়ে ফোন দিতে !
কিন্তু আমি কোথায় আছি তাই জানিনা !”
আরোশ সুবাহর ঘাড়ে নিজের থুতনি রেখে মুচকি হেসে সুবাহর গালের সাথে গাল লাগিয়ে বলে
“তা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবেনা জান আমি সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি আমরা হানিমুনে এসেছি !
শ্বশুর আব্বু শুনে একটু রেগে গিয়েছিলো কিন্তু জানি খুব তারাতারি উনার রাগ ভেঙ্গে যাবে !”
সুবাহ ভ্রু কুচঁকিয়ে আরোশের দিকে তাকায় তারপর বলতে লাগে
“আমরা কোথায় আছি !”
আরোশ হেসে উত্তর দেয়
“চিটাগাং আমার বন্ধুর গেস্ট হাউসে ।”
সুবাহ আবার বলে
“আমার ফোন কোথায় ?”
আরোশ উত্তরে বলে
“আমার কাছে আর আমার কাছেই থাকবে !
কারন আপনার কাছে থাকলেই আমার থেকে পালানোর চেষ্টা করবেন ।
যা আমি চাইনা !”
সুবাহ বির বির করে বলতে লাগে
“পন্ডিত !”
আরোশ হেসে বলতে লাগে
“তোমার হাসবেন্ড হই !”
সুবাহ নিজেকে আরোশের বাহুডোর থেকে ছাড়িয়ে ব্যাগ থেকে কাপড় বের করে বির বির করতে করতে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে !
সুবাহ ওয়াশরুমে যেতেই আরোশ কাউকে ফোন করে বলতে লাগে
“ঐ নিদ্রা জানো কঠিন শাস্তি পায় আর যা যা করছে তা সব কিছুর শাস্তি যে সে পায় ।
আর তার নানু কোন ঝামেলা করলে আমাকে জানাবে সব প্রমান নিদ্রার বিরুদ্ধে !”
সুবাহ ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে চুল মুছতে মুছতে রুমের বাহিরে যায় হঠাৎ নিচে কোন কিছুর নিচে পড়ার শব্দ শুনতে পায় সুবাহ তারাতারি করে সেদিকে যায় গিয়ে দেখে আরোশ রান্না করছে !
রান্না করছে বললে ভুল হবে যুদ্ধ করছে কিচেনে !
সুবাহ কমোড়ে দু হাত কেখে অবাক চোখে আরোশের দিকে তাকিয়ে বলে
“আপনি কি করছেন ?”
আরোশ টেডি হাসি দিয়ে বলে
“রান্না করছি !
আসলে এ বাড়ির কুক অসুস্থ তাই আজ আসতে পারেনি তাই ভাবলাম আমি রান্না করি !”
সুবাহ ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আপনি রান্না করতে পারেন ?”
আরোশ আগের মত টেডি হাসি দিয়ে বলতে লাগে
“না পারিনা কিন্তু চেষ্টা করলে সব পারা যায় দেখবে ঠিক পাড়বো !”
সুবাহ ফিক করে হেসে উড়না কমোড়ে বাধতে বাধতে বলতে লাগে
“থাক আর চেষ্টা করতে হবেনা !
আমি করছি ।”
আরোশ সুবাহর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“আরে না না তোমাকে করতে হবেনা আমি পারবো ।”
সুবাহ আরোশ কে কিচেন রুম থেকে বের করে দিয়ে বলতে লাগে
“আমি করছি !
আপনি বের হন গিয়ে ফ্রেশ হন আমি রান্না করছি ! ”
আরোশ যেতে চায়না সুবাহ টেনে কিচেন থেকে বের করে আরোশ আবার সুবাহর কাছে এসে কপালে চুমু দিয়ে মুচকি হেসে “আই লাভ ইউ “ বলে চলে যায় ।সুবাহ ঠাই সে ভাবে দাড়িয়ে থাকে ।
চলবে …….
❤️❤️❤️❤️
Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন 😊😊😊