কথা দিয়েছিলে ফিরবে পর্ব ১০

#কথা_দিয়েছিলে_ফিরবে
#পর্ব_১০
লেখিকা : আফরোজা আক্তার

সময় তার সঠিক গতিতে বেয়ে যাচ্ছে । কথায় আছে বয়স এবং কাহারো জন্যে বসে থাকে না । এমনকি কার হায়াত কতটুকু তাও কেউ বলতে পারে না । জীবনটা খুব বেশি বড় নয় । এই অল্প সময়ে জীবনকে উপভোগ করাই উত্তম । কিন্তু কিছু কিছু সময়ে কিছু কিছু জীবন এমন ভাবে শেষ হয়ে যায় যেখানে সব কিছু ঠিক করতেও বহু সময় লেগে যায় । এখানেও ঠিক তেমন । নাফিস এবং জুঁইয়ের সম্পর্কে কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় নি । জীবন যখন নতুন করে জুঁইয়ের দুয়ারে কড়া নাড়তে থাকে তখন জুঁই নিজ হাতে সেই দুয়ারে খিল দিয়ে দিয়েছে কারণ জীবন তাকে ততদিনে বিষিয়ে তুলেছে । সব কিছু এক এক করে হারাতে হারাতে সে জীবনের কাছে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে । এখন আর জীবনকে উপভোগ করতে ইচ্ছে করে না তার । এখন আর ভালোবাসতে ইচ্ছে করে না তার । তার ধারণা তার ভালোবাসার মাঝে ঘাটতি এতটাই ছিল যে সে তার ভালোবাসাকে পায় নি আর যাকে পরিস্থিতি ভালোবাসতে বাধ্য করেছিল তাকে সে এই পৃথিবীতে ধরে রাখতে পারলো না । ভালোবাসা নামক ছোট শব্দটার উপর থেকে বিশ্বাস , ভরসা , চাওয়া-পাওয়া সব শেষ হয়ে গেছে । এখন আর জীবন থেকে কিছুই নেয়ার মত নেই তার ।

অন্যদিকে নাফিস জীবনকে আরও একবার সুযোগ দিয়ে জুঁইকে আপন করে কাছে টেনে নিতে চায় । ইফসিকে আপন করে নিতে চায় । ভালোবাসার ভিক্ষা করতে বার বার উপস্থিত হয় জুঁইয়ের দুয়ারে । আর প্রতিবারই প্রত্যাখ্যাত হয়ে শূন্য এবং ব্যাথিত মনে ফিরে আসতে হয় তাকে । সে জানে এইসব জুঁইয়ের অভিমান । হাজারো অভিযোগ জমা জুঁইয়ের মনে । জুঁইও এখন আর আগের মত নেই , শোক সন্তাপে কষ্ট দুঃখ প্রত্যায়িত হয়ে নিজেই নিজেকে পাথর বানিয়ে ফেলেছে আর এমন ভাবেই পাথর বানিয়েছে যে সেই পাথরে নাফিসের মনের আকুলতার চোখের পানি পড়েও পাথর গলে নাই । প্রতি রাত জুঁইয়ের কেমন কাটে তা নাফিসের জানা নেই তবে প্রতি রাতে নাফিসের কলিজা ফালা ফালা হয় মনের ছুরিতে ।

রাত বাড়ার সাথে সাথে যন্ত্রণা তখন জুঁইয়ের বুকে দ্বিগুণ ভাবে জায়গা করে নেয় । কেন যেন মন বার বার দুর্বল হয়ে যাচ্ছে । কেন জানি নাফিসকে পাওয়ার পূর্ণ বাসনা নিজের মনেও চেপে বসে এক এক বার । শরীরটা যেন একটু হলেও কারো স্পর্শ পেতে চায় । কিন্তু ভাবনার মাঝে মনে পড়ে যায় সেই সব দিনের কথা যে সব দিনে আস্তে আস্তে নাফিস তাকে তার জীবন থেকে দূরে সরে দিয়েছে । অনেক কেঁদেও কূল করতে পারে নি সেদিন জুঁই । অসহায় অবস্থায় দিক বিক না ভেবে ছেলে মানুষের মত নাফিসের দুই পা জড়িয়ে বসে পড়েছিল সে । এইসব ভাবতে গিয়ে বুকের ব্যাথা গাঢ় হয়ে যায় তার । মেয়ের পাশ থেকে উঠে গিয়ে জানালার পাশে দাঁড়ায় জুঁই । ভাবতে থাকে পার্কের সেই রুদ্ধশ্বাস করা এক ঘন্টার কথা । প্রায় ৫০+ বার ফোন দেয়ার পর নাফিস সেদিন ফোন রিসিভ করে ।

– আসসালামু আলাইকুম ,
– এত ফোন কেন দেও ?
– একবার দেখা করো না প্লিজ ।
– কেন ?
– কেন কি নাফিস । এমন করতেছো কেন আমার সাথে । আমার অপরাধ কোথায় নাফিস ।
– আমার ভালো লাগে না ।
– কি ভালো লাগে না ?
– রাখছি , আর ফোন দিও না ।
– বাসা থেকে বিয়ের জন্যে প্রেশার দিচ্ছে নাফিস ।
– বিয়ে করে নেও ,
– মানে কি নাফিস ?
– কিছুই না ।
– নাফিস প্লিজ একবার শুধু একবার দেখা করো ।
– নাহ ,
– আল্লাহর দোহাই লাগে নাফিস । শুধু একবার দেখা করো , প্লিজ নাফিস ।
– ঠিকাছে ৪ টায় আসো ।
– ধন্যবাদ নাফিস অনেজ অনেক ধন্যবাদ ।

নাফিস বিরক্ত হয়ে লাইনটা কেটে দেয় । অন্যদিকে চারদিক থেকে চাপ আসতে থাকা অসহায় মেয়েটা (জুঁই) কিছুটা সময়ের জন্যে একটু শান্তি পেয়েছিল । নাফিসের প্রিয় রঙ হলুদ রঙের শাড়ি পরে সেদিন পার্কে গিয়েছিল
জুঁই । শুধু একটু ভরসা আর বিশ্বাস নিয়ে যে তাকে তার ভালোবাসা কখনও ধোকা দিবে না । সেদিন বিকেলে প্রায় আধা ঘণ্টা পর নাফিস আছে । একদম ভাঙাচোরা অবস্থা তার ।

সেদিন খুব অসহায় ছিল নাফিস অসহায় ছিল
জুঁই । অসহায় ছিল তাদের সময় । ভয়াবহ এক পরিস্থিতি চলছে তখন তাদের মাঝে । এক দৃষ্টিতে প্রায় অনেক্ষন নাফিসে দিকে চেয়ে আছে জুঁই । নাফিসকে কেন জানি অপরাধী মনে হচ্ছিলো সেদিন । সাধারণত নাফিস কখনো মাথা নিচু করে না কিন্তু সেদিন তার মাথা নিচু ছিল । সেদিন তার চোখ জুঁইয়ের দিকে ছিল না ছিল মাটির দিকে ।

– নাফিস এইদিকে দেখো ?
– বলো ,
– আমার দিকে তাকাও ?
– বলো শুনছি , কি বলবে ?
– নাফিস দেখো আজকে হলুদ শাড়ি পরেছি ।
– ভালো করেছো ।
– নাফিস চলো না বিয়ে করে ফেলি ?
– সম্ভব না ।
– কেন সম্ভব না ?
– আমার পরিবার আছে , মা বাবা দুইটা অবিবাহিতা বোন আছে ।
– নাফিস আমি তো বলি নি তাদের ছাড়তে হবে । আমায় সাথে নিয়ে কি চলা যাবে না ?
– নাহ ?
– এমন টাই যদি করবে তাহলে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়েছিলে কেন ?
– জড়ালেই বিয়ে করতে হয় না ।
– তাই ?
– হয়তো ।

নাফিসের কথা গুলো তীরের মত বিধছে জুঁইয়ের বুকে । পার্কের এই দিকটা নির্জন , জুঁই এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছিল সেদিন। হুট করেই নাফিসের সামনে এসে বসে পড়ে মাটিতে । দুই হাত দিয়ে নাফিসের গাল গুলো ধরে ।

– নাফিস , এই নাফিস তোমার কাদম্বরীর খুব কষ্ট হচ্ছে ।
– কষ্টকে কাবু করতে শিখো ।
– নাফিস আই লাভ ইউ ,
– ভুলে যাও আমায় জুঁই ।
– আমি তোমাকে চাই নাফিস ,
– আমি তোমার হতে পারবো না এখন ।
– বাসায় বিয়ের জন্যে প্রেশার দিচ্ছে নাফিস ,
– বিয়ে করে নেও ।
– এটা কিভাবে বলো তুমি নাফিস ?
-………………………….

নাফিস উঠে চলে যেতে নিলে জুঁই তখন নাফিসের পা জোড়া জড়িয়ে ধরে । আর বেহায়ার মত কেঁদে দেয় ।

– এই নাফিস প্লিজ যেও না । প্লিজ নাফিস আমি বাঁচবো না , যেও না প্লিজ ।
– জুঁই পা ছাড়ো । কি করছো এখানে তুমি ?
– নাফিস আমি না খেয়ে থাকবো , প্রয়োজন হলে আমি মেঝেতে থেকেও যাবো শুধু বিয়ে করে নেও আমায় । প্লিজ নাফিস ।
– আমি তোমাকে কিভাবে বিয়ে করবো ? হ্যাঁ , কিভাবে বিয়ে করবো । আমি তোমাকে ভালোবাসি তা ঠিক কিন্তু আমার দায়িত্ব থেকে কিভাবে সরে যাবো ?
– বিয়ে করলে দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া হয় বুঝি ?
– হ্যাঁ হয় ।
– নাফিস কেন এমন করতেছো ?
– জুঁই বাসায় যাও , ওকে ?
– নাফিস দাড়াও , তাহলে আমার সাথে একদিন থাকো ।

সেদিন ভালোবাসার মোহে এতটাই পাগল ছিল
জুঁই যে নিজেকে বিকিয়ে দিতেও প্রস্তুত ছিল সে । সেদিন পাগল এবং অবুঝের মত কিছু চেয়ে বসেছিল সে নাফিসের কাছে ।

– এই নাফিস , একটা রাত আমায় দিবে ? আমি তোমার সাথে থাকতে চাই ।
– মাথা ঠিকাছে তোমার ?
– হ্যাঁ ঠিকাছে আমার মাথা ।
– নাহ ঠিক নেই , কি সব বলছো ।
– আমি চাই আমায় যদি কেউ ছোয় তাহলে প্রথম তুমিই ছুবে । নাফিস আমায় একটা রাত দেবে ।
– স্যাট আপ , যাও বাসায় যাও ।
– নাফিস,,,,,,,,,,,,,,,,?
– হ্যাঁ , নাফিস । আমি নাফিস বলছি তোমাকে , যাও বাসায় । আর কখনো আসবে না আমার সামনে । বিয়ে করে নেও পরিবারের সবার পছন্দে । আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবো না । আমার অনেক দায়িত্ব ।

এই বলে সেদিন পার্কে জুঁইকে একা ফেলে চলে যায় নাফিস । আর জুঁই নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ।

– এত কিছুর পরেও নাফিস তুমি চলে গেলে আমায় ছেড়ে । এর জন্যউ কি এত ভালোবেসে ছিলাম তোমাকে । দায়িত্বের অজুহাতে এভাবে ছেড়ে চলে যেতে পারলে তুমি ?

সেদিন পার্কে শুধু জুঁইয়ের বুকটা ফালা ফালা হয় নি তার সাথে নাফিসিও নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিল । পার্কের গেইট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দুচোখ ভর্তি পানি নিয়ে বের হয় নাফিস ।

ফোনের আওয়াজে তিন বছর আগের এক ভয়াবহ অতীতের স্মৃতি থেকে বেরিয়ে আসে
জুঁই । ঘড়িতে চেয়ে দেখে রাত ৩ টা । এত রাতে কে ফোন দিচ্ছে । মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে একটা অচেনা নাম্বার । সম্পূর্ণ অপরিচিত নাম্বার । অপরিচিত এয়ারটেল নাম্বারটার দিকে তাকিয়ে থেকে মোবাইলের রিসিভ অপশন টা ক্লিক করে জুঁই ।

– আসসালামু আলাইকুম , কে বলছেন ?

ওপাশ থেকে শুধুই নিরবতা ভেসে আসছে । তার কিছুক্ষণ পর জুঁই আবারও বলে উঠে ,

– হ্যালো , কে বলছেন আপনি ?

তখন জবাবের পরিবর্তে শুধুই একটা দীর্ঘশ্বাস ভেসে আসে ফোনের ওপাশ থেকে । দীর্ঘশ্বাসটা এতটাই পরিচিত ছিল যে ওপাশের মানুষটা কে তা আর বুঝতে বাকি ছিলো না জুঁইয়ের ।

– নাফিস,,,,,? এত রাতে ফোন দিয়েছো যে ?
নাম্বার পেলে কোথায় ?

জুঁই যে এইভাবে তাকে চিনে ফেলবে নাফিস বুঝতে পারে নি । একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে কতটা ভালোবাসলে সেই মানুষের একটা দীর্ঘশ্বাসে চিনে ফেলতে পারে । ভালোবাসার পরীক্ষায় জুঁই জিপিএ প্রাপ্ত প্রেমিকা আর সেই একই পরীক্ষায় অউত্তীর্ণ প্রেমিক । নিরবতা ভেঙে তখন নাফিসও উদগ্রীব হয়ে যায় ।

– কেমন আছো তুমি ?
– ভালো থাকার জন্যে যাকে দূরে ঠেলে দেয়া হয় সে কি করে খারাপ থাকে । আমি ভালোই আছি ।
– ওহ ,,
– কেন ফোন দিলে ?
– ইফসি কেমন আছে ?
– ভালোই আছে ।
– কাল আসবে তো ?
– এটা বলার জন্যে রাত ৩ টায় ফোন দিলে ?
-…………………………..
– যে রাস্তা নিজের হাতে বন্ধ করে দিয়েছিলে সেই রাস্তায় আজ আবার ফিরতে চাচ্ছো কেন নাফিস ? আর ফিরতে চাচ্ছো কোন সময়ে যেই সময়ে আমি বিধবা , আমার একটা দেড় বছরের মেয়ে আছে ।
– কাদম্বরী ,,,,,,,,?
– আমি তোমার কাদম্বরী নই নাফিস । আমি ইফসির মা । এটাই এখন আমার পরিচয় ।
– অভিমান যদি থেকে থাকে তাহলে বলো ?
– না আছে অভিমান , না আছে রাগ কিংবা অনুযোগ । আমার রাজ্যে আমি একাই বর্বর ।
– আমি কি সারাজীবনের জন্যে তোমার কাছে অপরাধী হয়ে গেলাম জুঁই ?
– সেদিন আমি কি অপরাধ করেছিলাম ? কোন অপরাধের শাস্তি দিয়েছো আমায় । সব কিছুকে এক সাইডে রেখে সেদিন আমিও গিয়েছিলাম তোমার কাছে । ফিরিয়ে দিয়েছিলে আমায় ।
– সেদিন সত্যিই হাত পা বাঁধা ছিল আমার । চাকরিও ছিল না যে তোমার দায়িত্ব নিতাম ।
– যাক ভালোই হয়েছে , আমিও সরে গেছি চাকরিও হয়ে গেলো । এখন তুমি সাবলীল এবং সুন্দর জীবন কাটাও । আমার শহরে আর পা দিও না , রাখছি । আল্লাহ হাফেজ ।

নাফিসকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে লাইন কেটে মোবাইলের এয়ারপ্লেন মুড টা অন করে দেয় জুঁই । কারণ জুঁই খুব ভালো মতই জানে নাফিস আবারও ফোন দিবে তাকে । আসলেই নাফিস পরবর্তীতে আবারও ফোন দেয় জুঁইকে । কিন্তু তখন নাম্বার অফ পায় জুঁইয়ের । সিগারেটের আগুনের সাথে নাফিসের মন তখন দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টা বেজে ১৫ মিনিট হয়ে গেছে । অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে । কিন্তু জুঁইয়ের আসার খবর নেই । এদিকে অনুষ্ঠানে সবাই বলাবলি করছিল জুঁই কেন আসে নি সেদিন তো বলেছিল আসবে তাহলে আসে নি কেন । অন্যদিকে নাফিসও অধির আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছে জুঁইয়ের জন্যে । প্রায় ১৫ মিনিট পর প্রায় ৭ টা ৩০ মিনিটে জুঁই এসে অনুষ্ঠানে পৌঁছায় ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই তাদের মা মেয়েকে দেখে তাকিয়ে আছে । ইফসিকে একদম পুতুলের মত লাগছিল । হাল্কা পিংক কালারের একটা ফ্লাফি ফ্রক পরা , মাথায় দুটো ঝুটি করা তাও পিংক কালারের রিবোন দিয়ে । ইফসির চোখ গুলো একদম জুঁইয়ের চোখের মত । ইফসির চোখগুলো বড় বড় আর ল্যাশ গুলোও টানা টানা । চোখ গুলো তার মাশা-আল্লাহ অনেক সুন্দর । পায়ে পিংক কালারের সু জুতা । একদম পিংক পরীর মত লাগছিল তাকে । মায়ের পাশে মিষ্টি হাসি দিয়ে দুই হাত এক করে দাঁড়িয়ে আছে পাকনি বুড়ি ইফসি রানী । আর জুঁইয়ের তো জবাব নেই । সে জানে সে বিধবা তাই রঙ চং তার পছন্দের নয় । তাই সাদা আর পিংক কালারের হাল্কা কম্বিনেশনে একটা হাফ সিল্প শাড়ি পরেছে সে আর তার ফুল হাতা ব্লাউজ । হাতে এক জোড়া সিটি গোল্ডের চুড়ি । ঠোঁটে হাল্কা লিপস্টিক । সব মিলিয়ে সাধারণের মাঝেও নাফিসের কাদম্বরী বরাবরই অসাধারণ ।

অনুষ্ঠানে মাহমুদ সাহেবের স্ত্রী এবং তার দুজন সন্তানও উপস্থিত ছিলেন । সবাই জুঁই এবং ইফসির সাথে আলাপ করে । ইফসি তো ফাঁক পেয়ে দৌড়ে নাফিসের কোলে উঠে যায় । নাফিস যেন ইফসির পরিবর্তে এক পরীকে দেখছে । এত কিউট কোন বাচ্চা হতে পারে । নাফিসের দেখা সব থেকে আদরের বাচ্চা সে ।

– কি হয়েছে বুড়ি ? এত সাজুগুজু কে করিয়ে দিয়েছে ?

নাফিসের কথায় ইফসি চোখ গুলো আরও বড় বড় করে খিল খিল করে হেসে দেয় আর বলে ,

– আম্মুন আম্মুন

ইফসির কথায় খুব শান্ত নজরে নাফিস জুঁইয়ের দিকে তাকায় । আর কথার ছলে জুঁইয়ের নজরও নাফিসের দিকে যায় । নাফিসকে অনেক সুন্দর লাগছিল আজ । একটা ফরমাল পরেছে আজ সে তাও আবার ধূসর কালারের । সব মিলিয়ে অফিসের অবিবাহিতা ফিমেইল স্টাফরা তাকে দেখে ক্রাশ খেয়ে গেছে । অথচ নাফিসের নজর সবার থেকে একদম আলাদা ভাবে তার কাদম্বরীকেই গ্রাস করছে । যা বুঝতে তার কাদম্বরীরও বেশি সময় লাগে নি ।

.
.

চলবে…………………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here