#My vampire lover comes again
#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স
#লেখিকা_তামান্না
#পর্ব_21
শ্রেয় অরিন এর ঠোঁটে ডিপলি স্পর্শ করে কিস করল। কিছুক্ষণ ভালোবাসার ছোঁয়া অরিনকে দিচ্ছিল। হঠাৎ সে ঠোঁট সরিয়ে নে। অরিন দেখে বলে—“কি হলো?
—“কিছু না তবে হবে। চলো তাড়াতাড়ি। শ্রেয় জট করে অরিনকে কুল থেকে নামিয়ে তার শাড়ির আচঁল তার কোমরের সাথে বেঁধে দিল।
অরিন অবাক হয়ে বলে —“কি হলো করছো কি?
কিন্তু শ্রেয় তার মনমত কাজ করতে লাগে। সে নিজের শেয়ওয়ানি পরিদানটা কুলে শার্ট পড়ে ফেলে।
সে ঠিকঠাক রেডি হয়ে আলমারি থেকে নিজের তলোয়ার বের করে। অরিন শ্রেয়কে তলোয়ার বের করতে দেখেই বলে—“এখন কি কিছু হবে যে তুমি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছো? চিন্তিত হয়ে কিছুটা ভয়ার্ত কণ্ঠে বলল।
শ্রেয় অরিন এর কাছে এসে তার কোমর চেপে নিজের সাথে লাগিয়ে তার ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট মিশিয়ে দিল। অরিনের ঠোঁট এর স্বাদ নিয়ে নিয়ে সে তার গাল অরিনের সাথে মিশিয়ে কপাল ঠেকে বলে—“তুমি ঠিক বারোটায় একুশ বছর হবে। তোমার শরীরে মুনস্টোন আসবে। তোমাকে রক্ষা করতে হবে। ঠিক কিছুক্ষণের মধ্যে ঘরের মধ্যে হামলাও হবে। কেনেল এর দল তোমাকে নিতে আসবে।
অরিন কথাগুলো শুনে নিজের কানে বিশ্বাস করতে পারছে না সে বলে—“কি কিন্তু সে তো হেরে গিয়েছিল। তাই তাকে পরাজয় হলেও সম্মান দিয়ে বিদায় করানো হয়েছে। আর যত দূর আমি জানি মুনস্টোন আমার শরীরে আমি পিশাচদের রক্ষা করব। কিন্তু আমি ত পিশাচিনী হতেই পারলাম না। চিন্তিত হয়ে সে উওেজিত হয়ে উঠে।
শ্রেয় তার ঘাড়ে হাত রেখে বলে—“মুনস্টোন পবিএ আত্নার মধ্যে আছে। আর সেটা তুমি। তুমাকে রক্ষার্থে নিজের জীবন দিতেও দ্বিধাবোধ করব না।
অরিন উওরে শুধু মুচকি হাসল। হঠাৎ ঘরের মধ্যে প্রচুর শব্দ হতে শুরু করে সবখানে হৈচৈ হতে লাগে। অনেক পিশাচ তরুনীর চিৎকার ভেসে আসতে লাগে। শ্রেয় অরিন এর দিকে তাকায়। অরিন নিজের মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানায়। অরিন আলমারি খুলে নিজের অলৌকিক শক্তি দিয়ে ঘেরা বক্স এর থেকে নিজের তলোয়ার বের করে।
শ্রেয় অরিন দরজা খুলে বের হয়ে নিচতলায় দেখে পিশাচদলের সাথে তাদের বংশের বিষপাতার দল লড়াই করছে। এতে তার বাবা আর আবরাহাম ও আছে।
শ্রেয় আর অরিন এসেও যোগ দিল। সবাই নিজেদের মধ্যে লড়াই ব্যস্ত হয়ে পড়ল। তখনই অপর পাশ থেকে এক বড় আগুনের গোলা নিয়ে আসে শ্রেয় যা দিয়ে সে কেনেল এর পিশাচদল এর উপর আক্রমণ করা শুরু করে।
কেনেল আবরাহাম এর রাজপ্রসাদের বাইরে দাঁড়িয়ে আপেল খাচ্ছে। সে খেয়াল করল তার দলের অর্ধেক পিশাচকেই শ্রেয় মেরে ফেলছে। এ দেখে সে রাগে পুরো আপেল একনাগাড়ে খেয়ে ফেলে। সে সামনে আগাতেই থেমে যায়। সে আবরাহাম এর প্রসাদের জানালা দেখতে পাই। সে সেখানে গিয়ে ভেতরে তাকিয়ে দেখে। জানালার ঠিক সামনে অরিন দাঁড়ানো। সে তার দলের সাহায্য করছে।
এ দেখে সে আগুনের গোলা বর্ষণ করার অস্ত্র দেখতে পাই যার মধ্যে শ্রেয় বসে আক্রমণ করছিল। কিন্তু এখন শ্রেয় অন্য দিকে লড়াই করছে। সে শয়তানি হেসে বলে—“শ্রেয় তোর মরণ হবেই দেখ তোর বিষপাতা বংশধরদের কিভাবে মৃত্যু দেখায়। সে গিয়ে আক্রমণের প্রস্তুতি নে।
শ্রেয় এর পাশেই বিষপাতা নিজের শক্তি দিয়ে পিশাচদের শরীরে বিষ পুশে দিয়ে মেরে ফেলছে। শ্রেয় আর সে একে অপরকে দেখে মুচকি হাসি দে। শ্রেয় তার পাশ থেকে সরে এসে আগুনের গোলার বর্ষণ করতে যাবে। তার আগেই সেখান থেকেই বড় বড় গোলা বর্ষণ হতে শুরু হয়।
সব গোলা বিষপাতার দলদের উপর পড়ল। এ দেখে বিষপাতা মন্ত্রী যে কিনা শ্রেয়র বিশ্বস্ত বন্ধু সে গোলা আক্রমণ এর দিকে তাকাতেই অবাক। শ্রেয় সেই আগুনের চক্রে বসা।
কিন্তু সে খেয়াল করলো না যে শ্রেয় আগুনের বর্ষণের চাবিটা খুলে ফেলল। তখনই নিস্তেজ হয়ে গেল বর্ষণ হওয়া।
শ্রেয় সেখান থেকে নামতেই তার পিঠে কে যেনো তলোয়ার ডুকিয়ে দে। যা শ্রেয় এর সামনের দিক পেট থেকে বের হলো।
অরিন শ্রেয় এর কণ্ঠ শুনে পিছে ফিরে তাকিয়ে দেখে তার পেটে তলোয়ার। জোরে চিৎকার দিয়ে শ্রেয় কে ডাক দিল।
সে তড়িঘড়ি শ্রেয় এর কাছে আসতেই কেনেল তার হাত ধরে কুলে উঠিয়ে নে। আর বলে—“এভাবেই না শ্রেয় তোমাকে নিয়েছিল? শ্রেয়কে ভুলে যাও কেমন! আমি তোমাকে রাণীর মতো সাজিয়ে রাখব। চলো তোমাকে নিয়ে যায়!
অরিন কেনেল এর কুল থেকে নামার জন্যে ছুটাছুটি করতে লাগে। শ্রেয় অরিন এর দিকে নিজের হাত বাড়ানো চেষ্টা করে।
কেনেল হেসে হেসে অরিন কে নিয়ে যেতে লাগে তখনই হঠাৎ তার বুকে অরিন ধারালো ছুড়ি ডুকিয়ে দে আর বলে—“আমি শুধু শ্রেয় র আর কারো না। রাগে সে জোরে ছুড়ি বের করে আবারো ডুকিয়ে নিজেকে তার থেকে দূরে ঠেলে ফ্লোরে ধাক্কা দিল। সে এসেই শ্রেয়োর পাশে বসে তার মাথা নিজের কুলে রাখল। শ্রেয়োর কিছু বলতে পারছে না। তার প্রচন্ড ব্যথা করতেছে। সে অরিন এর গালে হাত রেখে বলে—“আসবো ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স।
তার চোখজোড়া নিস্তব্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে যায়। কেনেল হু হা করে উঠে বুকে ধরে বলে—“আর আসবে না তোমার শ্রেয় এবার কই যাবে?
সে অরিন এর কাছে আসতেই অরিন দাঁড়িয়ে ছুড়ি তার দিকে করে বলে—“শ্রেয় নেই তো আমিও নেই। সে কেনেল এর দিকে ছুড়িটা ছুঁড়ে মেরে সে সামনে আগাতেই তার পা পিছলে যায়। তখনই সে আগুনের লাভা চক্সে পড়ে যায়। কেনেল এ দেখে ধপ করে বসে যায়।
কেনেল এর পিতা বাকি সব পিশাচ অনেকেই বেঁচে যায়। কিন্তু যারা বেঁচে যায় তাদের সবাইকে কেনেল নিজের প্রজা গোলাম বানিয়ে ফেলে। সে ঐ দিনই শ্রেয় তার পিতা শ্রেমন আর অরিন এর পিতাকেও আবরাহাম অগ্নিকন্ডে নিক্ষেপ করে দিল।
তখন থেকে সে হলো পুরো পিশাচ বংশের আসল রাজা। সে তার পিতাকেও রাখল না। তার পিতা রাজমুকুটে বসতে চাইলে সেখানেই ভেরুল মানে নিজে পিতার গলায় তলোয়ার চালিয়ে ঘাড় থেকে গলা আলাদা করে দে।
আর নিজে বসে পড়ে সেই রাজমুকুটে।
তখন থেকে আজ পর্যন্ত কেনেল এখনো যবুক রইল। কেননা পিশাচদের বয়স যতোই বাড়ুক না কেন তাদের শরীরের কোনো পরিবর্তন হয় নাহ। সে দেখতে আদৌও নিজের আগের রুপে আছে।
বর্তমান……
সিরাত শেষ পৃষ্ঠা উল্টাতেই দেখে কেনেল এর চিএ। এ দেখে সে জট করে দাঁড়িয়ে বলে—“কেনেল এ তো ঐ দিন পার্টি তে ছিল। সিট এখনোই অরিনকে খুঁজতে হবে।
সিরাত বাইরের দরজা খুলতেই মায়াবিনী আর বাকি সবাইকে দেখল। সে ওদের সামনে এসে বলে—“তোমরা সবাই ঐ সময় কোথায় ছিলে যখন আমার থেকে তোমাদের খুব দরকার ছিল। আর নায়েম তুই তুই ত আমার দোস্ত নিকেল তুইও ছেড়ে কোথায় গিয়েছিলি? কান্না মিশ্রিত কণ্ঠে কিন্তু চোখ দিয়ে অশ্রু ঝড়ছে না। সে নিজেকে শক্ত করে রেখেছে।
নিকেল আর বাকি সবার চোখে পানি এসে ভার করল। নিকেল বলে—“আমি কেনেল এর প্রসাদে কাজে নিয়োজিত ছিলাম। তোদের বিয়ের আগে সে আমাকে তোদের কে মারার চাল চালিয়ে আগেই পাঠিয়ে দে ফ্রান্সে। সেখানে গিয়ে ধাতুশাস্ত্র বিদ্যা শিখতে হল। শুধু আমি নই। মায়াবিনী আর অর্নবকেও মহারাজ শ্রেমন ফ্রান্সে পাঠান।
তখন মায়াবিনী বলে—“হুম আমাকে যাওয়ার আগে বাবা একটা চিরকুট দিয়েছিলেন। সেটা বলেছিলেন ফ্রান্সে গিয়ে ঠিক 22december 1920 এ পড়তে। ঐদিন তোমাদের সবার মৃত্যু হয়েছিল। চিঠিতে তিনি বলে দিয়েছিলেন তোমার ব্যাপারে তুমি তফজ্জাল হোসেন এর ছেলে হয়ে জন্ম নিবে সাথে অরিন এর জন্ম হবে অর্পানেজে। অরিনকে জন্ম দিতে গিয়েই তার মা মারা যান।
তাই সবাই মিলে তোমার রক্ষার্থে চারাদিক ঘেরে ফেলি। নিকেল তোমার সেই দোস্ত হয়েই ছিল। শুধু নামটা পরিবর্তন ছিল।
সব শুনে সিরাত চোখ গরম করে দাঁতে দাতঁ চেপে বলে—“কেনেল ঐ বার তুই পিছন থেকে মূর্খ এর মতো আঘাত করেছিলি। এবার দেখিস মূর্খ এর ফলাফল আমি দেখাব। অরিন আমি আসতেছি। বাঁকা হেসে সে চারজনের দিকে তাকায়।
মায়াবিনী মুচকি হেসে বলে—“দাঁড়াও আগে তোমার প্রসাদে চলো। তোমার প্রজা অপেক্ষা করতেছে। তোমার মুুকুট পড়তে হবে তারপরই তুমি পিশাচরাজ এর শক্তি পরিপূর্ণ ভাবে পেয়ে যাবে।
সবাই সিরাত কে নিয়ে তার পুরুনো প্রসাদে আসে। সবকিছু আগের মতো গোছানো শুধু নেই মহারাজ শ্রেমন। সিরাত তার বাবার ফ্রেমে হাত রেখে বলে—“আমি এসে গেছি বাবা। এবার প্রতিশোধ নিবো। ছাড়বো না। চলো মুকুট সভা প্রস্তুত করো।
বলেই দেওয়ালে এক ঘুষি মারল। সাথে সাথে দেওয়ালটা কেঁপে অর্ধেকটুকরা ভেঙ্গে গেল।
সিরাত দেখে অবাক নয়নে মায়াবিনীর দিকে তাকায়। সে খুশি হয়ে জোরে ঘোষণা করে—“শীগ্রই ব্যবস্থা করো এখনই সভার আয়োজন করতে হবে। তোমাদের পিশাচরাজ আজ মহারাজ হবে তার শক্তি পরিপূর্ণ হওয়ার সময় এসে গেছে।
প্রসাদের প্রজারা কাজে লেগে পড়ে। সিরাত তার বাবার পাশে অরিন এর ফ্রেমের দিকে তাকিয়ে এক দীর্ঘ শ্বাস ফেলল।
এদিকে…….
ইরিন কেনেল এর পাশে বসে আছে। তার মুখখানি শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। সে যেনো অজানা এক জগতে হারিয়ে গেছে। কেনেল ইরিন এর এরকম অবস্থার জন্যেই অপেক্ষা করছিল। যেনো সে তার কাজ আরামছে করতে পারুক।
সে ইরিন এর মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। আর খাওয়ানোর চলে সে ইরিন এর এক হাত ধরে বলে—“ইরিন তোমাকে একটা কথা বলতে চাচ্ছিলাম যদি মাইন্ড না করো বলব? আমতা আমতা করে টেডি স্মাইল দিল।
ইরিন নিজের মাথা নাড়াল। কেনেল বলে—“সিরাত এর কথা তোমার থেকে জানার পর আমার মনে একটা কথায় বার বার আসতেছে।
—“কি কথা? ভ্রু কুঁচকে বলল।
—“সিরাত থেকে তোমাকে বাঁচাতে হবে।
—“মরলেও প্রবলেম নেই।
—“নাহ আমি তোমাকে নিজের বানাতে চাই। যদি তোমার আপওি না থাকে তাহলে আজ রাত বিয়েটা হলে ভালো হয়। আমতা আমতা করে সে নিজের মাথা চুল নাড়ছে আর লজ্জামাখা মুখ করে ইরিন এর দিকে তাকিয়ে বলল।
—“হুম তবে আজ রাতেই কেনো? দশদিন পর করলে কি হয়? ভ্রু কুঁচকে চোখজোড়া সরু করে ইরিন বলল।
কেনেল এক নিশ্বাসে বলে—“না কালকেই করতে হবে নইতো তোমাকে……..চুপ হয়ে যায়। সে নিজেকে শান্ত করে।
ইরিন ঠোঁট বাঁকিয়ে মনে মনে বলে—“এতো তাড়াহুড়ো করছে কেনো? আমি ত বিয়ে করব না। আমি ভালোবেসেছি শুধু সিরাতকে। হোক সে পিশাচ আমার ভালোবাসা দিয়ে তার শক্তিকে থামাবো।
ইরিন হাত মুচড়ামুচড়ি করে ভাবছে সে নিজের মনে সাহস জুটিয়ে কেনেল এর দিকে ফিরে এক জটে আহ্লাদী কণ্ঠে বলে—“আমি বিয়ে করব তবে আপনায় নয় সিরাতকে। সে পিশাচ হোক আমার এতে কিছু যায় আসে না। সে যেমন তেমনই আমি তাকে পছন্দ করি। আমি এখনই তার কাছে ফিরে যাব। সে মনে হয় আমায় খুঁজছে। আমার যেতে হবে।
কেনেল ইরিন এর তাড়াহুড়ো দেখে মনে মনে বলে—“তোমায় আমি হারাবো না অরিন। তোমার সাথে বিয়ে আজ রাত আমার সাথেই হবে। যেভাবেই হোক হবেই। দেখি কিভাবে যাও। আজ তোমার বয়স একুশ হবে ঠিক আগের সময়ের মতো। আজ রাত সব দিক থেকে বিজয় আমার হবে।
সে শয়তানি হাসি দিয়ে মুখখানি উদাস করে ইরিন এর চলে যাওয়ার প্রস্তুতি দেখছে। কিন্তু কিছু বলছে না। ইরিন কেনেল এর সামনে এসে তার দিকে হাত বাড়িয়ে দে। কেনেলও মুচকি হেসে হাত মিলালো।
তখনই…………..
…………চলবে……….