My vampire lover comes again part 18+19

#My vampire lover comes again

#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স

#লেখিকা_তামান্না
#পর্ব_18

রেনা শুনে রাজি হয়ে বলে—“ওকে রাখবো এখন পাঁচ টাকা দেন।
সে দুষ্টুমি হেসে সিরাতকে জ্বালানো শুরু করে।

সিরাত রেনার আবুলমার্কা কথা শুনে বলে—“কি টাকা কেনো দেবো?

রেনা ভ্রু বাঁকিয়ে বলে—“উহ তোমার জন্যে কারো উপর নজরদারি চালাবো আর তুমি আমাকে আমার মূল্য দেবে না তা তো হবে না মিয়া! এখন যদি তুমি আমার কথা না মানো তাহলে ত নো রাজি নো নজরদারি। দাতঁ কেলিয়ে হাসতে থাকে।

সিরাত ব্যবলাকান্তের মতো হয়ে বলে—“তুই কি বোন নাকি? যে ভাইয়ের বিপদে সাহায্যও করবে বলে রাজি হয়ে ব্লেকমেইল করছিস। চোখজোড়া সরু করে ঠোঁট উল্টিয়ে বলল।

রেনা একজটে বলে—“না না না আমি মানি না। তুমি টাকা দিবে তাহলেই আমি কাজ করবো। না হলে বিনা পয়সায় ভাত দিবো না উহ।

সিরাত ভাবতে লাগে—“এই শাকচুন্নী এভাবে মানবে না আঙুল বাঁকাতে হবে।

সে বণীতার সুরে বলে—“আচ্ছা কি আর করার তুই না রাখলে ভাবিটা পাবি না।…..সিরাত জিহ্বে কামড় দিয়ে চুপ হয়ে কাশতে থাকে।

রেনা হুট করে বলে—“কি বললে ভাবি? সত্যি কে সে আমি দেখবো।

সিরাত কথা ঘুরানোর চেষ্টা করে আমতা আমতা করতে থাকে। সে হালকা গলা ঝেড়ে বলে—“কি ভাবি কিসের ভাবি কার ভাবি?

তার কথা শুনে রেনা অবাক হয়ে বলে—“এখনই ত বললে ভাবি?

—“আমি ভাবির কথা বলি নি আবাল। আমি বলছি যার উপর নজর রাখবি সে আর কেউ না ইরিন। এক নিশ্বাসে সে কথাটা রেনাকে বললো।

রেনা শুনে দুষ্টুমির ভাব করে মুচকি হেসে বলে—“আজকাল দেখছি তুমি বেশি তোমার পিএ এর কথা ভাবো। আইমিন ইরিন আপুর কথা। উনার উপর এতো কিসের কেয়ার রে ভাইয়া??
চোখজোড়া সরু করে সে দাঁত কেলাতে থাকে।

সিরাত কিছুটা লজ্জা পেলো। সে ডোন্ট কেয়ার ভাব করে বলে—“তেমন কিছুই না। শুধু আমার পিএ তাই বলছি নইতো সে যাই করুক আমার কিছু যাই আসে না।

হঠাৎ তার হাতের নখ বড় হয়ে গেলো। হাত থেকে ফোনটা বেড থেকে নিচে পড়ে সুইচঅফ হয়ে যায়। সে আয়নার সামনে এসে দেখলো আচমকা তার রুপ কেমন যেনো হতে লাগছে। সে নিজেকে দেখছে ঐ সময় আয়নার সামনে মায়াবিনী ভেসে আসলো। সে সিরাত কে দেখে তার হাতের মুঠোয় করে শান্ত করে দিলো কাল রাত পর্যন্ত।

সিরাত মায়াবিনীকে দেখে নি সে আয়নার ভেতরে পরের জগতে ছিলো। সে ধীরে ধীরে ঘুমে নেতিয়ে পড়লো বেডে।

মায়াবিনী এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে—“কাল রাত হবে কালো অম্যাবসার রাত। পিশাচদের শক্তি দ্বিগুণ হওয়ার এক প্রাপ্ত সময়। সে রাত এক পিশাচ আর এক পিশাচীনি একে অপরকে ভালোবেসে এক হলে। মুনস্টোন আসার সম্ভাবনা খুব বেশি। কিন্তু পিশাচ ত সিরাত পিশাচীনি ইরিন কি পারবে?

অর্নব তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলে—“চিন্তা করো না কাল রাত আমরাও ত তার পাশে থাকবো। মায়াবিনীও তার কথায় সম্মতি দিলো।

কেনেল এলেজ আর ড্রেনিক মাঝরাতেই তাদের হোটেলে চলে আসে। তাদের রুমটা সাউন্ড প্রুভ। কেনেল তাদের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে।

—“ধরে নিয়ে আসো। যাকে খাওয়ার জন্যে এতক্ষণ অপেক্ষা করছিলাম।

ড্রেনিক মুচকি হেসে দরজা খুলে বেরিয়ে যায়। এলেজ জানালা দিয়ে বেরিয়ে যায়। নিজের শিকারকে খুঁজতে।

ড্রেনিক এক মেয়েকে নিজের শক্তি দিয়ে অবশ করে তার কাছে এনে বলে—“বেবি তোমার জন্যে সুস্বাদু রক্তের মানব নিয়ে এসেছি। ভোগ যোগ খাও। আমি তাহলে আমার শিকার করতে যায়।

ড্রেনিক নিজের রুমে চলে আসে। কেনেল মেয়েটাকে নিচ থেকে উপর পর্যন্ত তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে নিজের চোখের শক্তির মাধ্যমে তাকে বশ করে তার ঘাড়ে নিজের ধারালো দুই দাঁত ঢুকিয়ে রক্ত চুষে নে। মেয়েটার হুশ আর ফিরে নি রক্ত চুষে নেওয়াতেই তার মৃত্যু হয়ে যায়। কেনেল নিজের মুখ মুছে মেয়েটাকে কোলে নিয়ে বেডে ফেলে নগ্ন কাজে লেগে পড়ে।

__________________

একদিন পর হোসেন ইনড্রাসট্রির মধ্যে ফাংশনের আয়োজন হয়।

সবাই এটেন্ট করলো। বিশেষ বিশেষ অথিতি ও চলে আসলো। কয়েকজন বাকি তাদের আসার অপেক্ষা করছে লামিয়া। সে তেমন সাজে নি শুধু শার্ট পেন্ট গলায় স্কাফ মেসিং করে।

সিরাত নিজের অফিসে এসে গাড়ি থামাতেই রিপোর্টারস এসে ভিড় জমালো। গার্ড দরজা খুলে দিতে সে বের হয় তাকে দেখতেই অফিসের মেয়ে বলতে গেলে যারা ভিড় জমিয়েছে সবাই চোখ দিয়ে গিলতে শুরু করে।

সিরাত নেবি ব্লু কালার এর কোট ভেতরে ওয়াইট শার্ট তার উপর কলারটা ডিলা করা। ব্লাক পেন্ট চুলগুলো স্পাইক করে সামনের চুলগুলো হেলিয়ে দিলো। এতে চোখের পাপড়ির সাথে বার বার চুলগুলো বারি খাচ্ছে। হাতে ব্লেক ঘড়ি। বাম হাতের মধ্যমা আঙুলে সিলভার কালার এর রিং। যা তার আম্মু মিসেস ইয়াসমিন অফিসে ফাংশনে আসার আগে পড়িয়ে দিলো। আর বলল।

—“এই রিংটা তোর আসল আম…..বাকিটা না বলে উনি কথা ঘুরিয়ে দেন।

—“এটা তোর আব্বুর খুব পছন্দের রিং তোর জন্যে এনে ছিলো। কখনো কোনো সময় কাজে আসবে।

সিরাত রিং টা দেখে কথাগুলো মনে করে মুচকি হাসি দে। তার হাসি দেখে অফিসের অর্ধেক মেয়ে ফিদা হয়ে যাওয়ার উপক্রম। সে রিপোর্টারসকে দেখে বলে।

—“Nothing want to say…Just say welcome in my world of industry.

সে বলে ভেতরে ডুকতে যাবে তার আগেই সে থেমে যায়। গার্ডস ভিড় কমাতে সবাইকে আটকায়। সিরাত পিছে তাকিয়ে তার বোনকে রেনাকে ডাক দে। সবাই গাড়ির দিকে তাকায়।

রেনা বের হতে সব ছেলেরা হা করে সিরাত এর বোন এর দিকে তাকায়। সে পিংক কালার লং ফ্রক,,গলায় কানে পিংক কালার এর নেকলেস আর ইয়াররিং,,মুখে হালকা সাজ এমনে তেই ফর্সা সেই দিক থেকে পিশাচের বোন তাহলে ত পিশাচ এর অর্ধেক অংশ সেই। ফর্সা শরীর। ঠোঁটে পিংক কালার লিপবাম দেওয়া।

রেনা কারো দিকে না তাকিয়ে তার ভাই সিরাত এর দিকে চলে আসে। তারা দুইজন এক সাথে ভেতরে যায়। লামিয়াকে দেখে সিরাত এগিয়ে এসে আমতা আমতা করে বলে—“আব তোমার বান্ধবী আসে নি? আসলে সে আমার পিএ অবশ্যই সব অতিথিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে থাকে লাগবে।

লামিয়া সিরাত এর কথার হাবভাব বুঝতে পারে। সে সিরাত এর দিকে দাঁত কেলিয়ে আহ্লাদী সুরে বলে—“আসলে বস আমি নিজেও জানিনা সে কোথায়? আমি যখন ঘুম থেকে জাগলাম তখন ইরিনকে বাসায় পাইনি। সে অনেক আগেই বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলো।

সিরাত কথাটা শুনে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে হালকা হেসে বলে—“Oh ok carry on enjoy the party.

সিরাত ড্রিংক ক্যাফে এসে বসে ভাবতে থাকে—“ইরিন যদি আগে থেকে বাসার থেকে বের হয়ে যায় তাহলে গেছে কোথায় মেয়েটা? সে কি কোনো বিপদে আছে নাকি কিছু হয়েছে।

রেনা হুট করে এসে সিরাত এর পাশে বসে বলে—“কই তোমার প্রিন্সেস? দুষ্টুমি হেসে দাঁত কেলাতে লাগলো।

সিরাত—“পাগল? প্রিন্সেস না লো ক্লাস গার্ল।

রেনা—“প্রিন্সেস হতে কতোক্ষণই বা লাগবে।

—“হুম তুমি একদম রাইট কথা বলেছো।

আচমকা কারো কথায় আওয়াজ পেয়ে সিরাত রেনা পাশ ঘুরিয়ে দেখে নায়েম দাড়িয়ে আছে। তার স্টাইল লুক স্পাইকিং চুল কিলিং ফর্সা শরীর ব্লেক শার্ট পেন্ট কলারটা হালকা আলগা করা।

রেনা হা করে তাকায় তাকে। সে কিছুক্ষণ পর খেয়াল করে দেখলো নায়েম দেখতে একদম তাদের মতো ফর্সা। সিরাত এর মতো সুঠাম দেহের অধিকারী।
নায়েম কিছুক্ষণ সিরাত এর সাথে কথা বলে তার নজর পড়ে রেনার দিকে। সে বাঁকা হেসে সিরাত এর কানে ফিসফিসিয়ে বলে।

—“কি রে হুমম কখনো বলিস নি তোর একটা সুন্দরী বোন আছে। দুষ্টুমির ফেস করে সিরাত এর দিকে তাকায়।

সিরাত ভ্রু কুঁচকে বলে—“এই কি বলিস আমার বোন মুখ সামলে কথা বলিস। শান্ত কণ্ঠে মুচকি হাসলো।

নায়েম দুই হাত বুকের উপর গুজে সিরাত এর মুখোমুখি হয়ে বলে—“আমি তোর বোনকে ভালোবাসি। যদি তুই বিয়ে না হতে দিস তাহলে তোর পিএ কে বিয়ে করবো।

সিরাত নায়েম এর প্রথমগুলো শুনে কোনো রিয়েক্ট করলো না ডোন্ট কেয়ার ভাব করে ড্রিংক করছিলো। যখনই নায়েম সিরাত এর পিএ মানে ইরিনকে বিয়ে করার কথা বললো তখনই তার মুখ হিচড়ে ড্রিংকস হালকা বের হয়ে যায়। নায়েম সিরাত এর কান্ডটা দেখে মুখ টিপে হাসতে লাগে।

সিরাত হালকা কেশে বলে—“পিএ মানে ইরিনকে?

নায়েম—“হ্যা তোর পিএ ত একটাই সো তোর বোন না দিলে আমি সিঙ্গেল থেকে কি করবো ইরিনকে বিয়ে করে ঘর সংসার করবো আর বিয়েটা পারলেই এই মুহুর্তই করে নেবো শীতকাল বুঝতে হবে না ব্রো।
দাঁত কেলিয়ে হাসি দে।

সিরাত একজটে বারণ করে দিলো। নায়েম ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে কোমরে হাত রেখে বলে—“কেন রে তোর কি? তুই ত তোর বোনকে দিবি না তুই থাক তোর বোন রে নিয়ে। আমি ইরিনকেই বিয়ৈথ করে ফেলাবো।

সিরাত রাগী সুরে বলে—“ঐ কুকুর আমি কবে বলছি আমার বোনকে দিবো না? তুই আমার বোনকেই বিয়ে করবি। ইরিনকে আমি করবো।

নায়েম হালকা কেশে বলে—“মিয়া তাহলে তলে তলে এসব ভেবে চলছে।

সিরাত লজ্জায় নিজের মাথার চুল নাড়তে লাগে। রেনা তাদের ফুসফুস করতে দেখে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলে—“কি ভাইয়া তোমরা আমার দিকে তাকিয়ে কিসব ফুসর ফুসর করতেছো হুমম?
ঠোঁট বাঁকিয়ে আড়চোখে নায়েমকে এক নজর দেখে সিরাত এর দিকে তাকায়।

নায়েম—“নাআআআআ এটা হতে পারে না তুমি আমায় ভাইয়া ডাকতে পারো না। কখনো না।

সিরাত নায়েম এর কান্ড দেখে মনে মনে বলে—“হুম ছেলেটার ফ্লাটি মুড অন হলো। সে নায়েম এর কানে কাছে এসে বলে—“Carry on brother in law.

সিরাত সেখান থেকে উঠে গেইটের পাশ দিয়ে নিজের কেবিনের দিকে হাঁটা ধরে। হঠাৎ তার পা মাঝপথে থেমে যায় । তার হাতজোড়া কাঁপতে লাগে। নখ বড় হতে লাগে। কপালে বিন্দু বিন্দু পানি এসে জমা হয়। সে দাঁতে দাঁ চেপে নিজের শক্তিকে বশে আনার চেষ্টা করে।যে শক্তি সম্পর্কে তার অজানা। সে পিছে ফিরে তাকাতে দেখে তার সামনে এক লোক দাঁড়ানো। মুখে তার বিশ্রী হাসি চোখজোড়ায় প্রতিশোধ আর হিংস্রতা ভেসে আছে। লোকটা সিরাতকে দেখে তাচ্ছিল্যের হাসি দে।

—“Hi I’m kenel.. the group of blood industry. শয়তানি হাসি দিয়ে কথাটা বলল।

—“Hi I’m Sirat…the group of products factory whose bame hossain industry. কথাটা সে ভাব নিয়ে বলে। (হাত মিলিয়ে)

কেনেল কথাটা শুনে চোখ ঘুরিয়ে বলে—“আপনার সাথে আবারো দেখা করে ভালো লাগল মিস্টার সিরাত।

—“আপনার সাথেও মিস্টার কেনেল। লাগছে পুরানো কোনো শএু আবারো মৃত্যুর দিকে যাওয়ার জন্যে এসেছে। সিরাত কথাটা বলে কিছুক্ষণ থেমে যায়। সে ভাবতে লাগে—“এই আমি কি বললাম? নতুন অতিথীর সাথে কিভাবে কি বলে ফেললাম। কিন্তু মনে ত তাই লাগছে কোনো কানেকশন ত আছেই।

কেনেল এর থেকে সিরাত এর কথায় রাগ চলে আগে সে মুখ ফিরিয়ে পার্টির ভেতরে ডুকে যায়।

সিরাতও বাংলা পেঁচার মতো মুখ না করে পার্টি ইন্জয় করতে লাগে। সে বার বার নিজের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে টাইম দেখতে থাকে আর ভাবে কবে ইরিন আসবে?

এদিকে……

ইরিন তার বক্সটা শাড়ির আচঁল এর সাথে বেঁধে তাদের অফিসে নামাজের রুমে খুঁজতে থাকে। বার বৃর এপ দেখছে আর সেই গোপন দরজাটা বের করার চেষ্টা করছে। কিন্তু কোথাও দরজাটা পাচ্ছে না। সে শাড়ির আঁচল থেকে বক্সটাকে বের করে তার মাথায় টুক টুক টুক করে আঙুল দিয়ে বারি দে। হাথে র্সথে বক্সটা জেগে উঠে বলে—“তোমার ক্লু তোমার হাতের মধ্যমা আঙুলের রিংটা দেখাবে।

বলেই বক্সটা মূতির মতো চুপ হয়ে গেলো। ইরিন বক্সটা কে নিজের আচঁলে বেঁধে হাতের মধ্যে রিংটার দিকে তাকায়। রিংটা দেখতে হবহু সিরাত এর হাতের রিং এর মতো।

—“My daughter this ring you will save in yourself.Never lost it. It will show you the way in your lifes goal. Ok? গির্জার মাদার ফ্রেলিক ইরিন এর অর্পানেজ এর অনার। সে ইরিন এর সাথে খুব মিশতো। এমনকি ইরিন যে এক পিশাচরাণী তাও সে খুব ভালো ভাবে জেনে গিয়েছিলো। এই ব্যাপারে তাকে সে কখনো ইরিনকে মুখ খুলে কিছু বললেন নি শুধু বলতেন সময় আসলে সব জানবে।

ইরিন রিংটার উপর এক চুমু দেই। সাথে সাথে রিংটা আলোকিত হয়ে যায়। ইরিন নিভু নিভু চোখে দেখে রিংটা তাকে ডান দিকে ফেরার জন্যে ইঙ্গিত করছে। সে ডান দিকে ফেরতেই রিংকটা লালবর্ণ হয়ে যায়। এ দেখে সে কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। সে হাঁটা শুরু করে সেদিকে আসতেই রিংটা নীলবর্ণ হয়ে যায়। সে সামনে তাকিয়ে দেখে তিনটা দরজা। এখন সে যে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে সেটায় কিছুই পাওয়া যাবে না বলে ধারণা করছে।

—“রাস্তা দেখায় লালবর্ণ,,,হারালে হয় নীল। হুমম বিপদের কাছে পা বাড়াছি কিন্তু সে এই বিপদই আমার রহস্য এর বইয়ের পাতা খুলবে। কে কি কেন সবগুলির কারণ এই তিন দরজার মধ্যে যেকোনো একটার মধ্যে পাবোই।

সে সামনে আগাতে যাবে তার আগেই ফোন আসে। সে ফোন উঠাতেই সিরাত রাগের কণ্ঠে বলে—“তোমার সাহস কতো বড় এভাবে আমাকে মিথ্যা কথা বলে ফাংশন এটেন্ট না করার।

ইরিন বুঝে গেলো সিরাত ফুলঅফ রাগী মুডে আছে যেকোনো সময় ব্লাস্ট হতে পারে।

সে চার পাঁচ না ভেবে রুম থেকে বের হয়ে তালা মেরে দৌড় দেই। সে যেতেই দরজার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে বিষপাতা। সে নিজের ঘাড় উল্টিয়ে বলে—“করো রহস্য খুলো অতীতে যাও। আমাকেও পাবে সেখানে। বিষপাতার মায়াবী রাণী বানাতে চেয়ে ছিলাম। কিন্তু কিছু বদনজর আর তোমার অহংকারে আমার বিষময় পাতার জগত আগুনে ধেবে যায়। দোষটা কি ছিলো তোমাকে ভালোবাসার ফল দিলো। আরে আমাকে বললেই ত পারতে আমি খুশি খুশি সরে আসতাম এভাবে আমাদের বংশসদোর নষ্ট করে দিলে। আমিও দেবো আমার পরিবার আমার পুরো বংশের প্রতিশোধ আমি নিবোই তোমার আর তোমার প্রেমিক শ্রেয় থেকে। রেডি থাকো।

জট করে সে উধাও হয়ে গেলো।

ইরিন গেইটের থেকে ভেতরে ডুকতেই ধাক্কা খেয়ে পড়তে লাগে তখনই সিরাত তাকে হিচড়ে টান মেরে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে। ইরিন তার বুকে মাথে রেখে ভয়ে জোরে জোরে শ্বাস নেই। সিরাত ইরিন কে হালকা করে ধরে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে।

—“রিলেক্স আমি ধরে ফেলেছি। তুমি পড়ো নি। মুচকি হেসে সে ইরিনকে সরিয়ে নিজে কলার ঠিক করতে লাগে।

ইরিন সিরাতকে দেখতেই হা হয়ে যায়। সুট পেন্ট ব্লেজার স্পাইকিং চুল কিলার লুক জোস স্মাইল সব মিলিয়ে এক হ্যান্ডসাম বয় লাগছে তাকে। সিরাত বাঁকা হেসে বলে।

—“এভাবে হা করে থেকো না মাছি ডুকবে।

তার কথায় ইরিন বিষম খাই। সে ব্যবলাকান্তের মতো হয়ে বলে—“ইসস আমার ঠেকা লাগে নাই তোমাকে দেখার।

সিরাত এই ফাংশনে ঝগড়া করতে চাইছে না। সে পাশ ঘুরে নায়েম এর সাথে কথা বলতে চলে যায়। ইরিন এর কাঁধে লামিয়া হাত রেখে বলে—“জামাই ওর সাথে কথা বলা শেষ হলে এখন কি যাওয়া যাবে।

ইরিন চোখজোড়া গোল গোল করে বলে—“জামাই?

লামিয়া—“না বস আমাদের এখন চল তো।

লামিয়া ইরিনকে এক প্রকার টেনে টেনে তার স্পেশাল গেস্ট এর কাছে নিয়ে যায়। যেতে যেতে বলে—“তার সাথে দেখা করলে তোরও ভালো লাগবে খুবই মজার মানুষ।

ইরিন শুনে কিছু বলল না চুপচাপ তার সাথে যাচ্ছে। লামিয়া এসে মানুষটার কাছে দাঁড়িয়ে ডাক দে।

—“মিস্টার কেনেল মিট মাই বেস্ট ফ্রেন্ড ইরিন।

কেনেল লামিয়ার দিকে মুচকি হেসে পিছে ফিরতেই ইরিনকে দেখতেই তার চোখজোড়ায় নেশার ঘোর লেগে যায়।

ইরিন কেনেল এর গাড় নজর দেখে কিছুটা অস্বস্তি অনুভব করে একপা পিছিয়ে যায়। কেনেল এসে………
#My vampire lover comes again

#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স

#লেখিকা_তামান্না
#পর্ব_19(ধামাকা )

কেনেল এর এভাবে কাছে আসাটা ইরিন এর থেকে খুবই ভয়ের লাগছে। সে পিছিয়ে গিয়ে পড়তে লাগলেই সিরাত এসে তার কোমর জড়িয়ে ধরে। সে তাকে দেখেই এক শান্তির নিশ্বাস ফেলল।

কেনেল দুই হাত মুঠোবদ্ধ করে নিজের রাগ দমানোর চেষ্টা করছে। সে অন্যদিকে ফিরে ক্যাফে গিয়ে বসল।

সিরাত—“দেখো পার্টিতে গেস্ট আছে। সাবধানে থাকো। সবার নজর আর আমার মতো না। শান্ত ভাবে বলে সে অতিথিদের সাথে কথা বলতে লাগে।

ইরিন ভেংচি মেরে বিরবির করে বলে—“ইসস নিজেকে ডিটেক্টিভ এজেন্ট মনে করে। আসছে আমার উপর নজরদারি চালাতে। উহহ বজ্জাত বেডা খটাশ।

ইরিন রাগে ফুসে লামিয়ার কাছে চলে গেলো। সিরাত তার স্টাফদের সাথে কথাবার্তা বলতে থাকে।
ইরিন আড়চোখে সিরাত এর দিকে দেখছে আর মনে মনে বলে—“শালা এক নাম্বাবের লুচ্চু পরোটা। কিভাবে মেয়েদের সাথে চুইংগামের মতো চিপুক হয়ে আছে।

লামিয়া ইরিনকে নাড়া দিয়ে বলে—“কেউ জ্বলছে বুঝি! মুচকি হেসে সিরাত এর দিকে একনজর তাকিয়ে।

ইরিন থতমত খেয়ে বলে—“ন..না ত কি বলিস আমি কেনো সিরাত এর কারণে জ্বলবো? উহ খেয়ে দেয়ে কাম নাই।

লামিয়া দুই হাত বুকের উপর গুজে শয়তানি হেসে বলে—“আমি ত সিরাত এর নাম নেই নি! তাহলে তুই হুটহাট বসের নাম মুখে কেন নিস?

ইরিন পড়লো লজ্জায়। সে আমতা আমতা করে বলে—“ঐ মিথুক ত…তুই মাএই বললি বসের নাম।

লামিয়া নিজের মাথা ডানেবামে নাড়িয়ে না জানায়। মুখে খুশির হাসি। সে বলে—“তুই মান ইয়া না মান পেয়ার তো তুযে হো সুকা হে হিহিহি।

ইরিন লজ্জায় অন্য স্টাফের সাথে কথা বলতে লাগে। লামিয়া দেখে বলে—“যাহ ফাজিল মাইয়া তুই না বললে মনে হয় আমি বুঝবো না। এতোও অবুঝ হয়নি।

সবাই নাস্তা করতে লাগল। নাস্তার আয়োজন শেষ হতেই অল লাইটস অফ হয়ে যায়। সবাই একে অপরের দিকে তাকাছে। সিরাত মুচকি হেসে শান্ত ভাবে সোফায় বসে থাকে। কারণটা সে জানে।

ইরিন ভয়ে কাঁপছে কিন্তু কাউকে বুঝতে দিচ্ছে না। তার পাশেই আড়াল করে দাঁড়িয়ে থাকে বিষপাতা। সে লাইটস অফ দেখে ইরিন এর ড্রিংক এর গ্লাসে নিজের নখ রেখে একফুট নিজের পাতার মিষ্টি বিষ মিশিয়ে দিলো।

ইরিন অন্ধকারে কাউকে দেখতে পাচ্ছে না। সে হুট করে গ্লাসটা নিয়ে খেয়ে ফেলল। সে লামিয়ার হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু হঠাৎ তার খারাপ লাগতে থাকে। সে লামিয়ার হাত ছেড়ে দুলতে দুলতে বের হবে তার আগেই কেউ একজন তার হাত ধরে টান দেই।

ইরিন তার বুকে লেগে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। তখনই ডিপ ফেরি লাইট জ্বলে উঠে। ওয়াইট কালারের মাঝে নীল কালার টিপ টিপ করছে।

সেখানের মিউজিসিয়ান গান লাগায়। তারা ইংলিশ গান লাগাতে চেয়েছিলো। কিন্তু সিরাত এর কথায় হিন্দি গান লাগাল। অনেক কাপলস স্টেজের মধ্যে চলে আছে। সিরাত আর ইরিন কে একসাথে স্টেজে দেখে।

হ্যাঁ সিরাতই ইরিনকে ড্রাংক হতে দেখে তাকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করল।

গান বেজে উঠলো🎶

Thodi jaga de de mujhe
Tere pass khahi reh jahun mein🎵
Khamoshiya teri shuno
Or dhur khahi na jahun mein🎼

সিরাত ইরিনকে উল্টা ঘুরিয়ে তার পিঠ নিজের সাথে লাগিয়ে দিয়ে তার চুলের ঘ্রাণ শ্বাসতে থাকে। সে এতোক্ষণ ইরিনকে ঠিকভাবে খেয়ালই করে নি। এখন খেয়াল করতেই তার চোখজোড়া যেনো সরছে না। ডিপ ব্লু কালারের শাড়ি তার সাথে মেসিং জুয়েলি,,চুলগুলি খোপা করে রাখা,, মুখে হালকা সাজ,, ঠোঁটে লাইট পিংক কালার লিপস্টিক,, এক হাতে ঘুড়ি আরেক হাতে নীল কালারের কাঁচের চুড়ি। সিরাত অপলকহীন ভাবে ইরিনকে দেখছে আর নিজেকে তার মাঝে হারিয়ে ফেলা থেকে চেষ্টা করছে।

সিরাত ভাবছে সাথে ইরিনের কোমর চেপে ধরে রাখছে যেনো না পড়ে যায়। গানের তালে নাচতেও লাগল।

Apni khusi dheke mein tujhe
Tere dard se jur jawahun mein

এবার ইরিনকে দূরে ঠেলে কাছে নিয়ে আসে নিজের হাটু গেড়ে কুলে বাঁকিয়ে নিলো। ইরিন সব দেখছে করছে তবে কিছু বলছে না কেনো না তার খুব ভালো লাগছে সিরাত এর সাথে মোমেন্টটা। সে সিরাত এর দিকে নিভু নিভু চোখে তাকায়। সিরাত ইরিন এর সেই অপলক চোখজোড়ায় অলরেডি হারিয়েছে।

🎶Mila jo tum yahan mujhe
Dilao hun main
yakin tujhe
Rahu ho keye tara sada
bass nitna sahti hun mein🎵

ইরিন উঠার চেষ্টা করতে সিরাত তাকে ডিপলি লিপ কিস করতে লাগে। সবাই দেখে হতভম্ব হয়ে যায়।
অনেকে হাত তালি দিয়ে উঠে।

কেনেল দূর থেকে এই দৃশ্য দেখতেই তার রক্ত মাথায় চেপে উঠে। সে নিজেকে অদৃশ্য করে নিজের রুমে চলে আসে। সে আসতেই দেখল দুই রুমে রক্তাক্ত দেহ। এদের দেখেই বুঝতে পারল ড্রেনিক আর এলেজ নিজেদের পিপাশা মিটিয়েছে। সে হলে গিয়ে দেখে দুইজন শান্তি ভাবে বসে অাছে। সে গিয়ে বলে—“বিষপাতা কে ডাক এখনই!

এলেজ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে—“এখন কেন? ওর সাথে ত ডিল হয়ছিল…….বাকি কিছু বলতে পারলো না।

কেনেল এর রাগান্বিত চোখজোড়া দেখে। সে একসেকেন্ড এর মধ্যে বিষপাতা কে তার বিষের কুড়েঘর থেকে ধরে নিয়ে আসল।

কেনেল বিষপাতার মুখ চেপে ধরে বলে—“শুয়োরের পাতা তোর বাঁচার কোনো সাধ্য নেই। তোর মতো তুচ্ছ পাতার আমার কোনো দরকার নেই। এক মেয়ে কে তুই বশ করতে পারলি না। তোদের মতো অকর্ম এর জায়গা কেনেল এর দরবারে নেই। মৃত্যুর দরবারে তোদের লেখা মৃত্যু।

সে নিজের হাতের মুঠোই করে বিষপাতার চারপাশে আগুনের চক্র বানিয়ে দিলো।

বিষপাতা ছলছল চোখে কেনেল এর দিকে তাকিয়ে বলে—“ম…মহাশয় আমি আপনার সেই আদিম যুগ থেকে গোলামি করে আসছি। আর আপনি আমাকেই? আমাকে আরেকটা সুযোগ দেন অনুরোধ করছি। এবার ভুল হবে না। ওই পিশাচরাজকে ত আমিও মেরে ফেলতে চাই। সে আমার পরিবারকে মেরে ছিলো। এইরকরম আগুনের ধাবানলে নিক্ষিপ্ত করেছিল।

কেনেল বিষপাতার কথা শুনতেই তার মনে শয়তানি বুদ্ধি চাপে। সে নিজেকে বলে—“এই আমি কি করতে যাচ্ছিলাম। এতো বড় মাল আমার কাছে আসে আগে তো জানতাম না। যতোই হোক পিশাচরাজ কে হারাতে এর দরকার আর তার জন্যে এর বেঁচে থাকাটা ও। পরে সুদে আসলে কাজ হয়ে গেলে পিশাচরাজের সাথে উপর থেকে আমাদের আশির্বাদ করবে। উহহ তুচ্ছ পাতা তুই কি জানিস তোর পরিবারকে মেরে ফেলেছিলাম আমিই। কারণ তোরা ছিলি পিশাচরাজ এর এক রক্ষাকবচের বংশধর। শ্রেয়কে মারতে তোদেরই মেরে ফেলেছিলাম। আর যা হয় তার মাঝে তুই শ্রেয়কে সামনে দেখলি। যা দেখলি তাই ভাবলি হাহাহাহা।

সে ভেবে বাঁকা হেসে বলে—“যাহ তোরে আরেক সুযোগ দিবো। এবার কাজ না হলে তোর জীবন নিতেও পিছপা হবো না মনে রাখিস।

এলেজ ড্রেনিক কেনেল এর মনের কথা জেনেই গেল। এক পিশাচের মনের কথা আরেক পিশাচ ঠিকিই শুনতে পাই। তারাও শয়তানি হাসি দিল।

_________________

মায়াবিনী পার্টির মধ্যে অর্নব এর সাথে অদৃশ্য হয়ে হাঁটছে। হঠাৎ তার পা থেমে যায়। সে চোখ বন্ধ করতে তার চোখজোড়ায় ড্রেনিক এর ছবি ভেসে উঠল।

সে হুট করে চোখ খুলে অর্নব কে বলে—“ড্রেনিক আছে।

অর্নব—“তাহলে কাজ শুরু করে দেই একে দিয়েই।

মায়াবিনী নিজের মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানায়।

ড্রেনিক ওয়াশরুমে গিয়ে নিজের মুখ ধুয়ে নিল। মুখে সব রক্তের চাপ লেগে ছিল। মুখ মুছে সে সাজতে লাগে। তখনই আয়নার মধ্যে মায়াবিনীকে দেখতে পেয়ে পিছে ঘুরে থাকায়। মায়াবিনী জট করে তার গলা চেপে ধরে। আচমকা এমন হওয়ায় ড্রেনিক নিজের মনকে কানেকশন করার চেষ্টা করে এলেজ কেনেল এর সাথে।

অর্নব এসে ড্রেনিক এর মুখে কাঁচের ক্রিমি পাউডার ঢেলে দে।

মায়াবিনী সেভাবেই তার গলা চেপে ধরে। ড্রেনিক এর গলায় কাঁচের টুকরা ঢুকতেই গলা ছিঁড়ে সেই কাঁচ বেরিয়ে আসতে লাগে। তার চোখজোড়ায় পানি এসে লালবর্ণ হয়ে গেল। মুখ দিয়ে ততোক্ষণে রক্ত ঝড়তে লাগে। মায়াবিনী তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে অর্নব এর হাত ধরে সেখান থেকে চলে যায়।

ড্রেনিক চিৎকার করতে পারছে না তার গলা থেকে কাঁচ বের হচ্ছে। সে মনে মনে ডাক দে। এলেজ ড্রেনিক এর ডাক শুনতে পেয়ে কেনেলকে সাথে নিয়ে সেখানে হাজির হয়ে দেখে ড্রেনিক এর লাশ পড়ে আছে। এলেজ দেখে কেনেল এর দিকে তাকায়। কেনেল রাগে দাত কটমট করে বলে—“শ্রেয় এখন পিশাচরাজে পূর্ণ হয় নি। নিশ্চিত এই কাজ তার তিন সাথিরই হবে।

এলেজ ড্রেনিকের লাশে আগুন জ্বালিয়ে দিল। কেনেল লাশটাকে আগুনে পুড়তে দেখে বলে—“যাও নরকে গিয়ে দোয়া করিও কেমন যেনো তোমার সাথে সেখানে দেখা না করি।

লাশটা ছাই ছাই হয়ে গেলে তারাও চলে যায়।

________________

ইরিন রাগে লজ্জায় সিরাত এর দিকে তাকাছে না। কিন্তু সিরাত মুচকি মুচকি হাসছে। এমন ভাব নিচ্ছে যেনো কিছুই হয় নি।

সে ইরিনকে কুলে নিয়ে সবার সামনে থেকে চলে আসে এক রুমে। এসেই তাকে বেডে শুয়ে দিয়ে নিজে তার পাশে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরে বলে—“আজ আমি বলছি সত্যি বলছি খুব ভালোবাসি খুব। কখনো ছেড়ে যাবো না।

ইরিন মুচকি হেসে বলে—“সত্যি।

সিরাত—“হুমম।

মধ্যরাত প্রায় সিরাত এর হাত পা কাঁপতে শুরু করে। সে উঠে দেখে পাশে ইরিন নেই। সাথে রুমের দরজাও খুলা। সে উঠে ওয়াশরুম চেক করে কিন্তু কাউকে পাইনা।

সিরাত এর রাগ উঠতে থাকে তার হাত পা এর নখ বড় হতে লাগে চোখজোড়া লাল নীলচে বর্ণ হতে লাগে। সে এক জটে গেইটের বাইরে করিডোরে আসতেই ফ্লোরে কানের দুল দেখতে পাই। এ দেখে সে কানের দুলটা উঠিয়ে নিশ্বাসে নেই। নেওয়ার সাথে সাথেই সে দেখতে পাই পাঁচ ছেলে মিলে ইরিনকে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছিলো সেখান থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।

সিরাত চোখ খুলতেই পিশাচের চোখে রুপ নেই। আর বির বির করে বলে—“তোরা তোদের মরণ কে আমন্ত্রণ করেছিস আমার কলিজায় হাত দিয়ে।

ইরিনকে পাঁচজন ছেলে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায় পাহাড়ের দিকে। ইরিন তাদের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্যে চিৎকার করতে থাকে। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন তার মুখ বেঁধে দে।

তখনই তাদের গাড়ির উপর জাপিয়ে পড়ে সিরাত।

গাড়ি থামিয়ে তারা ইরিনকে ধরে বের হয়। সিরাত মানুষরুপী থেকেই বলে—“ইরিনকে ছেড়ে দে। না হলে তোদের মরণ নিশ্চিত।

ছেলের মধ্যে একজন বলে—“এই একজন মানুষ আমাদের কে খুঁজে পেলো কিভাবে? এত সহজে কোনো মানুষ খুঁজে পাওয়ার কথা না।

ইরিন ছেলেটার কথায় ভাবান্তর এ পড়ল। আরেক ছেলে বলে—“বস একে আমার মানুষ লাগছে না। এই মানুষ হবে না অন্যকিছু। এর চোখ দেখো। একজন স্বাভাবিক মানুষের এমন চোখ হতেই পারে না।

ইরিন ও ছেলেটার কথা বাস্তব প্রমাণ পাই। সিরাত দেখল তারা ইরিনকে ছাড়ছে না এবার সে লাফ দিয়ে একজন ছেলের উপর জাপিয়ে পড়ে। জোরে হংকার দিল। তার হংকারে পুরো পরিবেশটাই থমকে গেলো। জোরে জোরে বৃষ্টি আর গর্জন হয়ে পরিবেশটা চমকাতে লাগে। আকাশে মেঘজোড়া এমনভাবে জমাট বেঁধেছে যেনো পুরো আকাশ কালো তে ভরে গেলো।

সিরাত এর হংকার এ দুই দাঁত বেরিয়ে আসে। সে একনাগাড়ে ছেলেটার ঘাড় থেকে রক্ত চুষে নিতে থাকে। চারজন ছেলে ভয়ে ইরিনকে ছেড়ে পালাতে লাগে। ইরিন ভয়ার্ত ফেস নিয়ে সিরাত এর দিকে তাকিয়ে আছে। সিরাত খেয়াল করল বাকি চারজন পালাছে। সে এক লাফে তাদের ঘাড় চেপে ধরে একসাথে চারজনের মাথা ঠাঙিয়ে রক্ত খেয়ে ফেলে। খাওয়ার পর পর সে আবার হংকার দিয়ে উঠে। তার পুরো রুপ পরিবর্তন হয়ে যায়।

সে পিছে তাকিয়ে দেখে ইরিন নেই। এমনকি তার ছিঁটেফোটাও নেই। সে চিৎকার দিল।

—“ইরিনইইইইই। কান্নাজড়িত চোখ নিয়ে নিজেকে দেখছে।

বৃষ্টির পানির সাথে তার মুখ শরীর থেকে রক্ত বেয়ে বেয়ে পড়ছে। হঠাৎ সিরাত অনুভব করল তার ঘাড়ে কেউ হাত রেখেছে। সে তার দিকে ফিরে তাকায়।

পিছে তাকাতেই দেখে নায়েম আর রেনা। রেনাকে দেখেও আরেক দফা অবাক হয়। তার শরীরেও রক্ত লেগে আছে। সে তড়িঘড়ি তাকে ধরে বলে—“রেনা তোর শরীরে রক্ত কেন? ত…..তোরে কেউ কিছু করছে?

রেনা তার ভাইয়ের ভয়ার্ত ফেস দেখে তাকে ধরে বলে—“ভাইয়া আমি একদম ঠিক আছে। তোমার মতোই হয়েছি। মুচকি হেসে শান্ত ভাবে কথাটা বলল।

নায়েম—“শ্রেয় রেনা ও তোর মতো পিশাচের রুপ লাভ করছে।

সিরাত নায়েম এর মুখে এমন কথা শুনার জন্যে মুটেও প্রস্তুত ছিল না। সে তাকে বলে—“তুই কিভাবে জানিস?

নায়েম দুই হাত পকেটের মধ্যে গুজে বলে—“তোর বাপ দাদা চৌদ্দ গৌষ্ঠি সম্পর্কে জানি আর এমনকি আমি কে সেটা কিন্তু জানোস না! আমিও তোদের মতো। তবে অন্যকিছু এটা পরে আগে তোকে তোর আসল জায়গায় নিয়ে যায়। যে জায়গা তোর জন্যে এতোবছর ধরে ওয়েট করছিল।

নায়েম তাদেরকে মায়াবিনীর শক্তির মাধ্যমে সেই জায়গায় নিয়ে আসে।

মায়াবিনী আগেই তাদের আসার খবর জেনে গিয়েছিল। সে দরজার এখান দাঁড়িয়ে আকে অর্নব এর সাথে।

সিরাত এসেই মায়াবিনীকে দেখে। মায়াবিনী নিজের ভাইকে এতো বছর পর দেখতে পেয়ে তার চোখের জল যেনো থামল না টপ টপ করে পড়তে শুরু করে। সে তার কাছে তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে—“এসেছিস তাহলে তোর আপ্পির কাছে।

মায়াবিনীর হাত বুলানোতে আলোকিত ভাব ফুটে উঠে।সিরাত তার স্বপ্নে এক মেয়েকে দেখতো যে কিনা তার মাথায় মায়াবিনীর মতো হাত বুলিয়ে দিত। সে চোখবন্ধ করে অনুভব করতেই মায়াবিনীর মুখখানি দেখতে পাই। সে জট করে চোখ খুলি তাকে জড়িয়ে ধরে।

মায়াবিনী সিরাত এর ঘাড়ে হাত রেখে বলে—“কিছু মনে পড়েছে?

সিরাত নিজের মাথা ডানেবামে নাড়িয়ে না জানায়। তখন মায়াবিনী বলে—“কিছু হবে না ওয়েট একটা বই আনব। সেটা পড়। পড়লেই তোর অতীতের কথা সব মনে পড়বে সাথে (নায়েম অর্নব এর দিকে একনজর তাকিয়ে)

সিরাত—“সাথে? ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে সন্দেহ এর চোখে।

মায়াবিনী কিছু না বলে তার শক্তির মাধ্যমে বইটা তার হাতে নিয়ে আছে। সে সিরাত এর হাতে দিয়ে বাকিদের নিয়ে শ্রেয়-র রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

__________________

ইরিন ভয়ে হোটেলে না উঠে লামিয়ার বাসায় চলে আসে তার দাদির বাসায়। লামিয়া কে আগেই বলে রেখেছিল পার্টি শেষ হলেই নিজের দাদির বাসায় চলে যেতে। সে তাদের বাসায় এসে ধরফড়াতে থাকে। লামিয়া এসে বলে—“কি হয়ছে তুই এভাবে ধরফড় করছিস কেন?

ইরিন—“সি….সিরাত মানুষ না সে সে এক পিশাচ।
ভয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলল।

লামিয়া বিকুট হাসি দিতে লাগে। তার হাসার কারণটা ইরিন বুঝতে পারছে না। সে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে—“অামি সিরিয়াস কথা বলতেছি আর তুই মজা করতেছিস।

লামিয়া নিজের রুপে চলে আসে। তাকে দেখে ভয় প্লাস অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে যায়। লামিয়া কে লামিয়া লাগছে না সে একজন নেকড়েতে রুপ নিল।

ইরিন দুই কদম পিছিয়ে জোরে চিৎকার দিল। লামিয়া হংকার দিয়ে বলে—“চুপ একদম চুপ। এতো অবাক হওয়ার কিছুই নেই। আমি এমনই। এতোদিন অপেক্ষা করছিলাম অম্যাবসার রাত এর জন্যে। কখন তুই পিশাচে রুপ নিবি। কিন্তু তুই পিশাচে রুপ নিলি না তার মানে তুই আমার কোনো কাজের নাহ।

ইরিন লামিয়ার কথা বুঝতে পারছে না কিসের রুপ নেওয়ার কথা বলতেছে। সে জট করে পালানোর জন্যে অন্যদিকে যেতেই একজনের লাশের সাথে পা লেগে পড়ে যায়। সে দেখল লামিয়ার দাদি ফ্লোরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সে আরো একবার চিৎকার দিয়ে পিছে তাকাতেই দেখে নেকড়েটা তার মুখের কাছে চলে আসছে। লামিয়া মুখ বড় করে দাঁত সামনে আগাবে তার আগেই পিছ থেকে একজন বুলেট চালায়। ঠাসঠাসঠাস তিন বুলেট এসে নেকড়ের শরীরে ঢুকে পড়ে।

লামিয়ার শরীর নেকড়ে থেকে মানুষে রুপে নে। সে ইরিন এর দিকে তাকিয়ে বলার চেষ্টা করে—“সবকিছু এক জা….জা…জাল।

বলেই লামিয়া মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ইরিন লামিয়ার মুখখানি দেখে শোকাহত হয়ে গেল। সে লামিয়ার মাথা নিজের কোলে রেখে বলে—“দোস্ত এভাবে কেউ ঘুমাই? এভাবে কেউ ঘুমাই না চোখ বন্ধ করে ঘুমাতে হয়। আমি তোকে কিছু হতে দেবো না। তু….তুই আমার সাথে থাকবি রে দোস্ত।
ইরিন তার আর লামিয়ার পুরোনো সব স্মৃতি মনে করছে আর চোখ দিয়ে অজস্র পানি ফেলছে। তার মনে এখন শুধু একটা কথায়ই আসছে।

—“লামিয়া যাই ছিল সে ছিল তো তার একমাএ কলিজার বন্ধু। শুয়তে জাগতে ঘুমাতে সবকিছু তার বন্ধুকে বলে করতো।

—“আইম সরি আমি আপনার বন্ধুকে মেরেছি।নইতো সে আপনার ক্ষতি করত। নিজের মুখে দুঃখিত হওয়ার ভাব এনে কষ্ট দেখানো শুরু করে।

ইরিন মানুষটার দিকে তাকিয়ে দেখে বলে—“আপনি?
আপনি কি করে জানলেন আমি এখানে!

মানুষটা আহ্লাদী কণ্ঠে বলে—“কেনেল এর পক্ষে খুঁজে বের করা কোনো কঠিন ব্যাপার নাহ।
আপনার অফিসের স্টাফ থেকে জেনে যায়।

সে ইরিনকে ধরে নিজের বাসায় নিয়ে আসে তাকে রুম দেখিয়ে নিজের রুমে এসে খুশির ঠেলায় জোরে জোরে হাসতে লাগে।

ইরিন ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ে। কিন্তু তার চোখ লাগছে না তার চোখে ভেসে আছে সিরাত এর করা নিষ্ঠুর কাজগুলি। সে কিভাবে মানুষের রক্তগুলো খেয়ে ফেলল। পরক্ষণেই তার মনে পড়ে সিরাত রুমের মধ্যে তাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল—“খুব ভালোবাসি খুব ছেড়ে যাবো না।
ইরিন এসব কথা ভাবছে আর নিজের চোখের জল ফেলাছে। দেখতে দেখতে সে কান্না করেই ঘুমের দেশে পাড়ি দিল।

সিরাত বেলকণিতে এসে বইয়ের প্রথম পাতা খুলতেই পিশাচবংশ এর শ্রেষ্ঠ পিশাচরাজ এর ছবি দেখতে পাই। তার নিচেই লেখা–“শ্রেয়।
সে নিজেকে বইয়ের মধ্যে দেখে অবাক সাথে পরের পৃষ্ঠা উল্টাতেই দেখে………….

……………চলবে…………..

[বিঃদ্র—“কেমন লেগেছে ধামাকা🌚? প্রপোজ হয়েও শেষমেষ ব্রেকআপ 😆। তবে লামিয়ার জন্যে খারাপ লাগছে! কেন হলো এমন কেউ বলতে পারবেন? লামিয়া কিসের ব্যাপারে ইরিনকে বলতে চাচ্ছিলো। আর সিরাত তো বই পেয়ে গেছে এবার সামনের পার্টে রহস্য আসতেছে। বি রেডি টু রিড গাইস😁। হেপ্পি রিডিং]
……………চলবে……………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here