#Marriage_With_Benefits
#Part_21
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
আমার পাশেই আমার স্ত্রী।যতই হোক বিয়ে নকল।স্ত্রীর পাশে ঘুমানো এক আলাদাই শান্তি।আমি জানি আমি ওর প্রতি দূর্বল হয়ে যাচ্ছি।কিন্তু কেনো জানি এই দুর্বল হওয়া থেকে নিজেকে বাঁধা দিতে পারছি না।
এইসব ভেবে আভিও ঘুমিয়ে পড়লো।
।
।
অন্যদিকে নিহাল
হ্যালো।(নিহাল বিরক্ত হয়ে)
হ্যালো।(ডালিয়া খুব কিউট করে)
কি হয়েছে তোমার?কেনো বিরক্ত করছো আমাকে?(নিহাল রাগী গলায়)
আমি কই বিরক্ত করলাম!বিরক্ত করলে তো কল ধরতে হয়।আপনি তো আমার কল এই ধরছেন না।(মুখ ভেংচি দিয়ে ডাকিয়া বললো)
কেনো ধরবো আমি তোমার কল!কে তুমি?(নিহাল)
আপনি কথা বলতে থাকুন।কোনো না কোনো দিন কিছু না কিছু তো হয়েই যাবো।(ডালিয়া দুষ্টু হাসি দিয়ে)
এই মেয়ের কাছে থেকে আমার কথা শিখতে হবে।আমি এর সাথে কথায় পেরে উঠবো না।(নিহাল মনে মনে)
কি হলো কোথায় হারিয়ে গেলেন?(ডালিয়া)
আচ্ছা।কেনো তুমি আমার পিছনে পরে আছো বলতো?(নিহাল)
আপনাকে আমার প্রথম দেখাতেই ভালো লেগেছে তাই!(ডালিয়া)
আমার চেহারার প্রেমে পড়ছো নাকি?(নিহাল)
নাহ।আপনার ক্যারেক্টার এর প্রেমে পড়ছি।যখন ওই আন্টি কান্না করছিলো তখন আপনি কি সুন্দর করে উনাকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন?তখন হাফ ফিদা হয়ে গেছি।যখন আপনি খুব আপন করে অনাথ আশ্রমের বাচ্চাদের আপন করে নিয়েছেন তখন আমি পুরো ফিদা হয়ে গেছি।আপনি হয়তো ভাববেন আমি একটা পাগল প্রথম দেখায় কাউকে কি এতো ভালো লাগতে পারে?কিন্তু আমি বলবো যার সাথে মনের মিল থাকে তার সাথে না দেখা করেই সারাজীবন কাটানো যায়।আর যার সাথে মনের মিল নেই তার সাথে এক দিনও নরকের সামিল।আর আমি জানি না আপনার সাথে আমার মনের মিল আছে কি না!কিন্তু আমার মনে হয় আমি কাটাতে পারবো আমার সারাজীবন আপনার সাথে।(ডালিয়া)
নিহাল ডালিয়ার কথা শুনে মুগ্ধ হয়ে গেছে।
এই মেয়েটি কি বলছে?আসলেই কি এই মেয়ে আমাকে ভালোবাসে?না এতো সহজে না।আগে ওকে আরো একটু বাজিয়ে দেখতে হবে।(নিহাল মনে মনে)
দেখো একটা সংসারে শুধু ভালোবাসা থাকলেই চলে না।ভালোবাসা দিয়ে তো আর পেট ভরে না।আমি কিন্তু অনেক গরীব।(নিহাল)
এইবার দেখি তুমি কোথায় যাও?আমি জানি মেয়েরা বড়োলোক ছেলে চায়!তোমার মিষ্টি মিষ্টি কথায় আমাকে পটাতে পারবে না।এখন তোমার জবাবের অপেক্ষায়।(নিহাল মনে মনে)
কোনো চিন্তা নেই।আমার বাবা যথেষ্ট বড়োলোক।আর আমি আমার বাবার এক মাত্র মেয়ে।তাই এইসব নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই।(ডালিয়া)
এই মেয়ে কি?(নিহাল মনে মনে)
আমি কি তোমার বাবার উপর বসে খাবো এমন ছেলে মনে হয় তোমার?(নিহাল)
আচ্ছা তাহলে একটা কাজ করুন।আমি তো যথেষ্ট ভালো স্টুডেন্ট।আমি বিয়ের পর কোনো চাকরি করে নিবো।তখন দুইজনের চাকরি করে সংসার অনায়াসে চলে যাবে।(ডালিয়া)
হায়।এই মেয়ে আমার পিছ ছাড়ার পাত্র না।বিয়ে পর্যন্ত চলে গেলো।আর একটু কথা বললে হানিমুন করে বাচ্চাও পয়দা করে ফেলবে।(নিহাল মনে মনে)
কি হলো নিহাল?আপনি কিছু বলেন?(ডালিয়া)
কি বলবো আমি?তুমি যেই স্প্রিডে যাচ্ছো আমার মনে হচ্ছে অ্যাকসিডেন্ট করে ফেলবে!(নিহাল)
আপনি আছেন না।ধরে ফেলবেন পারবেন না?(ডালিয়া)
নিহাল ডালিয়ার কথা শুনে হেসে দিলো।এইভাবে দুষ্টামির মধ্যে দিয়ে নিহাল আর ডালিয়া সারারাত কথা বলতে থাকলো।একই ছাদের নিচে দুটো লাভ বার্ডস।নিহাল আর ডালিয়া।আস্থা ও আভি।এখন কার ভালোবাসার ফুল আগে ফোটে দেখার পালা।
।
।
সকালে
খুব ভোরে আভির ঘুম ভেংগে গেল।বুকের উপর কিছুর আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে থাকা অনুভব করে।চোখ পিট পিট পিট করে খুলতেই দেখে আস্থা ওকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে খুব আরাম করে ঘুমাচ্ছে।আভি যেনো ওর পার্সোনাল কোল বালিশ।আভি আস্থাকে দেখেই হেসে দিলো।
কি কিউট লাগছে ওকে!একদম বাচ্চাদের মত।মনে হচ্ছে গালে একটা কামড় মেরে বসি।
কপালে থাকা চুল গুলো আলতো করে হাত দিয়ে কানের পিছে গুজে দিল আভি।একধারে আস্থার দিকে তাকিয়ে আছে।যেনো হাজার বছর ধরে দেখলেও এই দেখা আর শেষ হবে না।
কি যেনো বলেছিলে?কোলবালিশ দিবে?কই তোমার কোলবালিশ হা? নিশ্চয়ই লাথি দিয়ে ফেলিয়ে দিয়েছো তাই না?
নিচে তাকাতেই দেখে সত্যি কোলবালিশ ফ্লোরে পরে আছে।
এখন ওকে জাগালে ও কাল থেকে আর আমার পাশে ঘুমাবে না।ফ্লোরে ঘুমাবে!না ওকে জানতে দেওয়া যাবে না যে ও আমাকে জড়িয়ে ধরে সারারাত ঘুমিয়েছে। এখন ওকে ঠিক মত ওর জায়গাতে শুয়ে দেই।আর কোলবালিশ মধ্যে দিয়ে দেই।
বলেই আভি আস্থাকে ওর বালিশে নিয়ে গেলো।মাথা বালিশে রাখতেই আস্থার মুখ আভির মুখের সামনে চলে আসলো।আভি কি হলো জানি না! ও ঘুমন্ত আস্থাকে চুমু দিয়ে বসলো।এইদিকে আভি যে ঘুমন্ত আস্থার অ্যাডভান্টেজ নিচ্ছে এই দিকে ওর কোনো খেয়াল নেই। ও শান্তি মত ওর ঘুমে আচ্ছন্ন।
অন্য দিকে প্রায় অনেক ক্ষন আস্থার ঠোঁটের স্বাদ নেওয়ার পর আভির হুশ ফিরল।
কি করছি আমি?কি হয়ে গেছিলো আমার?আমি ওকে পেয়ে ওর অনুমতি ছাড়া ওকে কিস করে ফেললাম।
আমার তো ভাবতেই অবাক লাগছে।ওর কাজে আসলেই আমার কি হয়ে যায়?কেনো ওকে কাছে পাওয়ার নেশা ধরে যায় আমার।কেনো আমি ওর সামনে নিজেকে কাবু করে রাখতে পারি না।দূর অনেক হয়েছে।আমার মাথা থেকে আস্থাকে বের করতেই হবে।আভি তো লক্ষ্য থেকে হটলে চলবে না।
বলেই বিছানা ছেড়েই আভি ওয়াশ রুমে চলে গেলো।
অন্যদিকে আস্থার কোনো খেয়ালই নেই।আভি ওর সাথে কি করেছে?
অনেকক্ষণ পর আস্থার দরজায় খুব জোরে জোরে বারি পড়ছে।এতো জোরে বারি মারার কারণে আস্থা লাফ দিয়ে উঠে পরলো।
কি হলো?বাড়িতে কি ভূমিকম্প হচ্ছে নাকি?(আমি লাফ দিয়ে উঠে)
এই আস্থা না পাস্তা।যেই হও না কেনো?উঠো।(বাহিরে থেকে একটা মেয়ে)
দূর।আগে শুনতাম সকালে মোরগ চিৎকার করে।এখন দেখে মুরগিও চিৎকার করে।এই বাড়িতে না ঠিক মত খেতে পারি না ঠিক মত ঘুমাতে পারি।শান্তি নেই মত কথা আমার।
বলেই মোচরা মুচরি করতে করতে গিয়ে দরজা খুললাম।
খুলতেই একটা মেয়ে আমাকে মারতে আসবে তখনই মিস:সাবিনা ওকে ধরে ফেললো।
এই কোন পাগল?মিস সাবিনা।(আমি মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করে আসলে মেয়েটা হলো আরশি)
তোমার সাহস তো কম না।একে তো তুমি আমাকে সারারাত বাহিরে রেখেছো।তারপর এখন আমাকে পাগল বলছো।(আরশি)
ও তুমি তাহলে আমার ননদিনী?আসলে চুল গুলো এলোমেলো,চোখের নিচে কালি পড়ে আছে।ভুত ও তোমাকে দেখে ভয় পেয়ে যাবে।আর আমি তো মানুষই।(আমি টিটকারি করে)
তুমি আমার মজা নিচ্ছো তোমার তো সাহস কম না।(আরশি)
আমি কি বলছি আমার সাহস কম?আমার সাহস বরাবরই বেশি না বিশ্বাস করলে তোমার ভাইকে জিজ্ঞেস করো।(আমি)
রাখো তোমার ভাই।আমি ওকে তো ভাইই মানি না।আর তোমাকে ভাবি মানার তো প্রশ্নই আসে না।(আরশি)
আমি কি বলছি তোমাকে আমাকে ভাবি মানতে আমাকে মা ভাবো।তোমার মা!ভাবি তো মায়ের মতই হয় তাই না?(আমি)
মা। ম্যাই ফুট।তোমাকে আমি দেখে নিবো।আরশি চৌধুরীকে শিখাবে এতো যোগ্যতা তোমার নেই!(আরশি)
বুঝি না।সব চৌধুরীদের এক ডায়লগ কেমনে হয়।(আমি বিড়বিড় করে)
কি বললে?(আরশি)
মিস:সাবিনা।এই মুরগিটাকে নিয়ে যান তো?(আমি বিরক্ত হয়ে)
কি আমি মুরগি!(আরশি)
শুনো।আজ যদি দশটার আগে বাসায় না থাক।তাহলে কিন্তু কাল যেমন সারারাত বাহিরে ছিলে আজও কিন্তু থাকবে।মনে রেখো।আর শুনো।কাল রাতে তোমার মা আর ভাই আমার কিছু করতে পারে নি।আজ যে করতে পারবে তা কিন্তু ভুল।সো বি কেয়ারফুল ননদিনী।মিস:সাবিনা একে নিয়ে যান।
বলেই আমি আরশির মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিলাম।
আর ও বাহিরে থেকে চিৎকার করে যাচ্ছে।কিছুক্ষন পর ওর চিৎকার কমে আসলো মনে হয় মিস:সাবিনা ওকে ধরে নিয়ে গেছে।
সকাল সকাল শুরু করে দিলে?(আভি ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে)
কি করবো বলুন?আপনারা তো মানুষ না!আচ্ছা আপনাদের কি চিড়িয়াখানার লোক দেখে না?(আমি)
তুমি কি আমার ইনসাল্ট করছো?(আভি ভ্রু কুঁচকে)
না। তা কিন্তু আমি করি নি।শুধু সত্য কথা বলছি।আর সত্য কথা আপনার লাগলে আমি কি করবো? যতো হোক আপনি চৌধুরীই তো। উত্তরাধিকার সূত্রে ঝগড়ুটে।(আমি ভাব নিয়ে)
আপনিও কিন্তু এখন চৌধূরী।ভেবে দেখেছেন?(আভি)
না।ভুলি নি।আমি তো ক্ষণিকের অতিথি।আমার কাজ শেষ হলে আমি চলে যাবো।আমি তো আর আসল মিসেস আভি চৌধূরী না।(আমি হেসে হেসে)
আভির আস্থার কথা শুনে কেনো জানি বুকের বা পাশটা চিনচিন ব্যাথা লাগলো।আর আস্থার হাসি যেনো এখন ওর বিষের মত লাগছে!সহ্য হচ্ছে না।
আস্থা তো সত্যি বলছে।একদিন না একদিন তো ওকে আমায় ছেড়ে যেতেই হবে।আমিই তো আস্থাকে আমার কাছে রাখতে চাই না।আমিই তো তার জায়গা কাউকে দিতে পারবো না। আস্থাকেও না।তুমি কেনো আমি আস্থার উপর দূর্বল হয়ে পড়ছি।(আভি মনে মনে)
আভি আভি
আমি চিৎকার করে।
আভি কান ধরে
কি হলো?চিৎকার করে কি কানের পর্দা ফাটানোর ধান্দা তে আছো নাকি তুমি?
কি করবো?তুমি এক ধ্যানে কি ভাবছো?(আমি কৌতূহলী হয়ে)
কি আর ভাববো?এইটাই ভাবছি যে আমার কপালেই ঝুগরেটে বউ জুটছে কেনো?(আভি)
অনেক হয়েছে ভাবা।এখন যাও।রেডি হয়ে নাও।আমি কলেজে যাবো।আর তুমি অফিসে।
বলেই আমি ওয়াশ রুমে ঢুকে পড়লাম।
অন্যদিকে আভি আস্থার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
।
।
আমি বের হয়েই দেখি আভি টাই বাঁধছে।কিন্তু ওর একটু কষ্ট হচ্ছে।তাই আমি গেলাম ওকে সাহায্য করতে।
দাও।আমি করে দিচ্ছি।
বলেই ওর টাই ধরতে যাবো তখনই আভি আমার হাত হেচকা মেরে ফেলে দিলো।
না।ভুলেও আমার টাই বাঁধতে যাবে না।আর তৈরি হাওয়ার সময় কোনো কিছু ধরবে না।আমার থেকে দূরে থাকবে।
আভি আমার দিকে রক্ত চক্ষু দিয়ে তাকিয়ে চিৎকার কথা গুলো বলে।বেরিয়ে গেলো হাতে কোর্ট নিয়ে।
যাওয়ার আগে আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো
তোমার যেটুকু কাজ শুধু সেইটুকু করো।
আমি অবাক হয়ে গেলাম।এইটা তো কমন।যেকোনো কাপল তাদের তৈরি হওয়ার জন্য একে অপরকে সাহায্য করে।এতে এতো রাগের কি আছে?আর উনিই বা কেনো আমার উপর রাগ করবে আমি কি ভুল কিছু করেছি? যাই হোক।কথা গুলো আমার খুব লেগেছে।আমিও উনার সাথে কথা বলবো না।উনার সাথে আর ক্লোজ হবো না।আমার কাজ যেটুকু তে আমি এই কাজ গুলোই করবো।আর কিছু না।উনিও আস্থাকে চেনে না।
বলেই আমি নিচে নামলাম।দেখি উনি না খেয়েই নিহাল ভাইয়াকে নিয়ে চলে গেলো।দাদু টেবিলে বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।টেবিলে চাচু, চাচি আর দাদুই ছিলো।আরশি রুমে ঘুমাচ্ছে।আর আয়ুশ কলেজে গেছে।আমিও না খেয়ে কলেজে চলে গেলাম।
দাদু সব দেখেও না দেখার ভান করলো।আর বাকি সবাই কে বললো আভির কোনো এক ইম্পর্ট্যান্ট মিটিং আছে তাই আগে চলে গেছে।তাই আর কেউ কিছু সন্দেহ করে নি।
দাদু কেনো আমাকে সাহায্য করছে আমি তা জানি না?উনি তো সুযোগ খুঁজছে আমাকে তাড়ানোর।কিন্তু উনি এতো ভালো সুযোগ পেয়েও হাত ছাড়া করে দিলো।আমি আর সেইদিকে মনোযোগ না দিয়ে কলেজে যাওয়ার জন্য বের হলাম।
রাজপ্রসাদে থেকেও আমার পায়ে হেঁটে কলেজে যেতে হচ্ছে।এইটা আমার দরকার।ওই রাজত্বর পর আমার এই জায়গাতেই স্থান।এইটাই আমার আসল ঠিকানা।ওইটা শুধু আমার প্রয়োজন।আর কিচ্ছু না।কিন্তু আজ মি:কোবরার ব্যাবহারের জন্য আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি।
অনেক ক্ষণ ধরে হাঁটছি। হাতে একটা টাকাও নেই।পাঁচশো টাকা ছিলো এই মাস টা চালানোর জন্য না।কিন্তু তাও এখন আর নেই।আজ ডালিয়ার থেকে হাওলাদ নিতে হবে।
হেঁটে হেঁটে অবশেষে পৌঁছে গেলাম।ভার্সিটিতে।
।
।
অন্যদিকে
আভি।কি হয়েছে তোর?এতো রেগে আছিস কেনো?(নিহাল)
আমি রেগে আছি কারণ আজ আস্থা ওর লিমিট ক্রস করতে চেয়েছিলো।(আভি রাগে গজগজ করছে)
কেনো?আজ কি করেছে ও?(নিহাল কৌতূহলী হয়ে)
তুই জানিস।যখন আমি তৈরি হই।তখন কেউ আমাকে টাই বেঁধে দিক বা কোর্ট পরিয়ে দিক এইটা আমার পছন্দ না।(আভি)
তো!এতে আস্থা কি করে লিমিট ক্রস করলো?(নিহাল)
আজ আস্থা আমার টাই বাঁধার চেষ্টা করছিলো।তুই তো জানিস এক মাত্র ও ছাড়া আমি আমার টাই কাউকে বাঁধতে দেই না।(আভি)
আভি।এইটা আমি জানি আস্থা না। ও কৌতূহলের বশে করে ফেলেছে।এই জন্য কি তুই ওর উপর চিৎকার করছিস?(নিহাল)
আভি চুপ।
আভি প্লিজ।আর কত। ও তোকে ছেড়ে চলে গেছে। ওর জন্য তুই আস্থাকে কিছু বলতে পারিস না।(নিহাল)
ও চলে যায় নি।আরমান চৌধূরী বাধ্য করছেন ওকে আমার কাছ থেকে দূরে চলে যেতে।ঠিক যেমন উনি আমার মার সাথে করেছেন।আমি এই জন্য উনাকে কখনও ক্ষমা করবো না।(আভি দাত চেপে)
নিহাল চুপ করে আছে।যেই ভয় ও পেয়েছিল।সেইটাই ঘটতে চলেছে।
তুই কি করে জানলি দাদু ওইসব করেছে?(নিহাল)
ও যাওয়ার আগে একটা ভিডিও রেকর্ড আমার কাছে পাঠিয়েছে। যেইটাতে দাদু ওকে ধামকি দিচ্ছিলো।আর সেই কারণে ও আমাকে ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়ে ছিলো।কিন্তু আমি ওকে পাতাল থেকে হলেও খুঁজে বের করবো!
আভির রক্ত চক্ষু দিয়ে।
ও যদি তোর জীবনে আসে তাহলে আস্থার কি হবে??আস্থা তোর জীবনে কি?(নিহাল মনে মনে)
।#Marriage_With_Benefits
#Part_22
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
ভার্সিটিতে
আমি পা দিতেই আমাকে কেউ ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দিলো।
আরে কেরে তুই?(আমি মাটিতে বসেই)
আমি চোখ উঠেই তাকাতেই হা হয়ে গেলাম।কারণ সামনে যে সে আমার ধারণার বাইরে।আমার গুনধর দেবর।
তুমি?(আমি অবাক হয়ে)
কেনো?তখন তো খুব লাফা ছিলে?এখন কি?দেখেছো যে যতো বেশি লাফায় সে ততবেশি পরে।(আয়ুশ)
অনেক শান্তি লাগছে না? আমি পরে গেছি বলে?(আমি)
কলিজাটা ঠান্ডা হয়ে গেল।(আয়ুশ)
তা এখন আমাকে তুলো।
আমি আয়ুশের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম।
যেই আয়ুশ আমার হাত ধরে উঠাতে গেলো ওমনি আমি ওর হাত ধরে টেনে নিচে ফেলে দিলাম।
আয়ুশ নিচে বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
কি হলো? জানো এখন আমার কলিজা ঠান্ডা হয়ে গেছে।যে আমাকে ফেলেছে সেও এখন আমার সাথে পরে আছে। একেই বলে টিট ফর টাট।
বলেই উঠে জামা ঝাড়া দিলাম।
আয়ুশ এর দিকে বিজয়ের হাসি দিলাম।দিয়েই সেখান থেকে চলে গেলাম।
আয়ুশ মনে মনে ভাবছে
কেমন মেয়ে ও।আমার জন্য মেয়েরা পাগল আর এখন একটা মেয়ে এখন আমাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলে গেলো।দাড়াও আস্থা তোমাকে আমি শিক্ষা দিয়েই ছাড়বো।(আয়ুশ)
আয়ুশ ওই মেয়েটাকে কে?ওকে কেনো তুই ওর পিছনে লাগছিস?তুই কখনো মেয়েদের পিছনে লাগতি না।তুই তো মেয়েদের অনেক সম্মান করিস। তাহলে কেনো আজ ওই মেয়ের পিছনে লেগে আছিস?(আয়ুশ এর একটা ফ্রেন্ড)
এই মেয়ের সাথে আমার অনেক বুঝা পড়া আছে।
বলেই আয়ুশ সেখান থেকে উঠে চলে গেলো।
।
।
কি হলো তোর কাপড়ে ময়লা লাগলো কি করে?(ডালিয়া)
কিছু না।ওই একটু পরে গেছিলাম।এখন কি করার আর।আর শোন আমার কিছু টাকা ধার লাগবে।(আমি)
হ্যা।তা দিবো নি।এখন চল ক্লাস করি।
বলেই আমি আর ডালিয়া ক্লাস করতে গেলাম।
আচ্ছা।ডালিয়া আমাদের ভার্সিটিতে কি কোনো আয়ুশ আছে?(আমি)
সেকি তুই জানিস না?আর তুই জানবি কি করে?তুই তো ভার্সিটি থেকে ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ দৌড় দিস।আয়ুশ হচ্ছে আমাদের ক্লাস মেট উনি মেয়েদের হার্ট বিট।কতো মেয়ে উনার জন্য পাগল।কিন্তু উনি কোনো মেয়ের দিকে নজর দেয় না।(ডালিয়া)
বাহ! দেবর কে যতো খারাপ ভাবছি উনি ততটাও খারাপ না। সোজা করাই যেতে পারে।(আমি মনে মনে)
কি হলো?তুই কি ভাবছিস?আয়ুশের প্রেমে ট্রেমে পড়ে গেলি না তো?(ডালিয়া)
আরে পাগল নাকি।তার আগে আমাকে এইটা বল।তোর চোখের নিচে কালো দাগ পড়েছে কেনো?(আমি কৌতূহলী হয়ে)
ক,,,কই না তো?(ডালিয়া জোরপূর্বক হাসি দিয়ে)
রাত জাগাপাখি হয়ে গেছিস না তুই?(আমি ভ্রু কুঁচকে)
আরে না।তুই যে কি বলিস?চল চল গিয়ে ক্লাস করে আসি।
বলেই ডালিয়া আমাকে টেনে ক্লাসে চলে গেলো।
আমরা ক্লাস করছি।তখনই কিছু দলবল আসলো।আর সেই দলবল আর কারোর না আমারই আদরের দেবরের।নিশ্চয়ই উনি উনার আদরের ভাবী মানে আমার সমাদর করবে।উনি উনার দলবল নিয়ে এসে আমাদের পিছনে বসলো।আর আমার খারাপ ফিলিংস আসা শুরু হয়ে গেলো।
।
।
অন্যদিকে
আস্থার পালিত বাবাকে আভি তার কেবিনে নিয়ে এসে বসিয়ে রেখেছে।
আমাকে এইখানে কেনো আনা হয়েছে?(বাবা)
আপনি আস্থার ব্যাপারে কি জানেন?(আভি)
আস্থাকে আমি হসপিটাল থেকে নিয়ে এসেছি!(বাবা)
আমরা জানি।কিন্তু সত্যি করে বলুন।আসল ঘটনা কি?(নিহাল)
আসল ঘটনা মানে?(বাবা)
আস্থাকে তো আর কেউ আপনাআপনি আপনার হাতে তুলে দিবে না?(আভি)
বাবা চুপ করে আছে।
চুপ করে থাকবেন না।এইটা আপনার মেয়ের পরিচয়ের উপর প্রশ্ন।(আভি)
আপনি যা যা জানেন প্লিজ আমাদের বলুন!(নিহাল)
আমি বলতে পারি কিন্তু এক শর্তে!(বাবা)
কি শর্ত? আমরা আপনার সব শর্তেই রাজি এখন আপনি বলুন।(আভি)
আস্থা যেনো এই ব্যাপারে কিছু জানতে না পারে। মেয়েটা খুব কষ্ট পাবে জানলে।(বাবা)
আপনি নিশ্চিত থাকুন আস্থা কখনও কিছু জানতে পারবে না।(নিহাল)
আসলে আমি আস্থাকে হসপিটাল থেকে আনি নি।ওকে আমি মাটির তল থেকে খুঁড়ে পেয়েছি!(বাবা কাদতে কাদতে)
নিহাল আভি দুইজনেই অবাক বাবার কথা শুনে।
কি বললেন?খুলে বলুন।(আভি)
যখন আস্থার জন্ম হয় তখন আমি একজনকে বলতে শুনি
।
।
অতীত
ডক্টর।ওদের বলবেন মেয়ে বাচ্চা হয়েছে কিন্তু সে মৃত্যু।আর ওই বাচ্চার সাথে এই মৃত্যু বাঁচার অদলবদল করে দিবেন!(লোকটা)
কিন্তু এইটা তো বেয়ানি!(ডক্টর)
আপনার কতো টাকা লাগবে শুনি?
বলেই লোকটা ডক্টরকে একটা চেক ধরিয়ে বাচ্চাটাকে নিয়ে চলে গেলো।
বাহির গিয়ে ডক্টর মৃত্যু বাচ্চাকে তাদের হাতে দিয়ে ওই লোকটার শিখিয়ে দেয়া সব কিছু বললো।
অন্যদিকে আমি ওই লোকটার পিছু নিতে লাগলাম।লোক বাচ্চাটাকে কোথায় নিয়ে যায় তা দেখার জন্য।তখনই আমি দেখতে পেলাম।বাচ্চাটাকে একটা কবরস্থানে নিয়ে গিয়ে আগে থেকেই খুঁড়ে রাখা কবরে উনি মাটি চাপা দিয়ে চলে গেলো।উনি কিছু দূর যেতেই আমি মাটি খুঁড়ে সেই বাচ্চাটাকে বের করলাম।বেশি ক্ষন কবরে না থাকায় ওই বাচ্চার তেমন কোনো ক্ষতি হয় নি।তারপর ওকে আমি যে হসপিটালে কাজ করি সেই হসপিটালে নিয়ে এসে চিকিৎসা করে সুস্থ করি।ওর বাঁচার লড়াইয়ের উপর এতো আস্থা দেখে আমি ওর নাম দেই আস্থা।
।
।
বর্তমান
তারমানে আপনি ওকে আপনি যেই হসপিটালে কাজ করতে সেই হসপিটালে পাননি?(নিহাল)
নাহ।আমি অ্যাম্বুল্যান্স করে একটা রুগী দিয়ে আসার সময় ওই হসপিটাল থেকে পাই।আর ওইটা একটা প্রাইভেট হসপিটাল।(বাবা)
কি হসপিটাল ছিলো ওইটা?(নিহাল)
হেলথ কেয়ার হসপিটাল।(বাবা)
তাহলে আপনি পুলিশ কে জানান নি কেনো?(আভি)
আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম।যে একজন ডক্টর কে কিনে একটা দুধের শিশুকে মাটিচাপা দিয়ে দিতে পারে সে আমার মত একজন সাধারণ মানুষকে যে কিছু করবে না তার কি ভরসা আছে?উনি যদি আমাকেই বাচ্চা চুরির দায়ে ফাঁসিয়ে দিতো তখন?(বাবা)
তাও ঠিক।যে একটা দুধের শিশুকে মারতে পারে সে সব কিছুই করতে পারে!(নিহাল)
আপনি আস্থাকে এইসব কেনো বলেন নি?(আভি)
আস্থা এইসব জানলে অনেক কষ্ট পাবে। বেচেঁ থাকার জন্য ওর এতো লড়াই করতে হয়েছে।এইটা জানলে ওর খুব খারাপ লাগবে।আর ও যেই জেদী মেয়ে এইসব শুনলে এই ঘটনার শেষ দেখে ও দম নিবে।যে ওকে মারার প্ল্যান করেছে যতক্ষণ না পর্যন্ত ও জানবে ততক্ষণ পর্যন্ত ও শান্ত হবে না।যা করার দরকার ও করবে শুধু সত্যি বের করতে।(বাবা)
আপনি সত্যিই বলেছেন!এই জন্যই ও marriage with benefits এ রাজি হয়েছে।শুধু মাত্র ওর বাবা মাকে খুঁজে বের করবে বলে।(আভি মনে মনে)
এই জন্যই আমি ওকে কিছু বলি নি।কিন্তু তোমরা কেনো ওর এই ব্যাপারে জানতে চাও।(বাবা)
আসলে আঙ্কেল ও হচ্ছে আস্থার স্বামী।(নিহাল আভিকে দেখিয়ে দিয়ে)
কি? আসু বিয়ে করে ফেলেছে?কবে?(বাবা)
কিছুদিন আগেই।আমার আর আস্থার বিয়ে হয়েছে।(আভি)
আস্থা তো এমনি এমনি কিছু করার মানুষ না।ও যা করে তার পিছনে কোনো কারণ থাকে।(বাবা)
বাবা।আপনি ঠিক ধরেছেন।কারণ আছে।তবে আমি এখন আপনাকে সেইসব কিছু বলতে পারবো না।(আভি)
থাক।আমিও জানতে চাইবো না।কিন্তু বাবা(আভির সামনে গিয়ে)আমার মেয়ে কিন্তু খুব জেদী।তবে কি জানো ও মনের অনেক ভালো।কেউ ওর সাথে ভালো ব্যবহার করলে ও তার জন্য আগুনেও ঝাঁপ দিতে পারে কিন্তু ও অনেক অভিমানী ও যদি ওকে কেউ কষ্ট দেয় সেটা খুব সহজেই ওর মনে গেঁথে যায়।কারণ ছোটো বেলা থেকেই ও কষ্টে থেকেছে। আমার স্ত্রী ওকে কখনো নিজের সন্তানের মতো আদর যত্ন করে নি।তাই যেই ওকে কষ্ট দেয় ও তা সহজে ভুলতে পারে না।তুমি বাবা ওকে কোনো দিন কষ্ট দিও না।আর যদি পারো ওর আসল বাবা মাকে খুঁজে বের করো।(বাবা আভির হাত ধরে কাদতে কাদতে)
আপনি কাদবেন না। প্লিজ।আমি আস্থার খেয়াল রাখবো। কথা দিলাম আপনাকে।নিহাল উনাকে হসপিটালে নিয়ে যা।(আভি)
হসপিটালে কেনো বাবা?(বাবা)
আপনার অপারেশন হবে।খুব শীঘ্রই তাই।(আভি)
ও।আস্থা বলেছে নিশ্চয়ই।(বাবা)
আভি মুচকি হাসি দিলো।
আমি জানি আমার মেয়েকে।বাবা শুনো আমি আস্থাকে এই তারিখে নিয়ে আসছিলাম।জানিনা এই ডেট তোমার লাগবে কি না তবুও তোমাকে বলে দিলাম।
বলেই বাবা নিহালের সাথে চলে গেলো।
আভি বসে বসে ডেট এর কথা ভাবছে।
এই ডেটটার সাথে কিছু একটা ইম্পর্ট্যান্ট জিনিস জড়িয়ে আছে ।কিন্তু কি ইম্পর্ট্যান্ট তাই তো বুঝতে পারছি না।দূর দরকারের সময় মাথা কাজই করতে চায় না।(আভি মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
।
।
অন্যদিকে
আমি আর ডালিয়া বসে আছি।পিছন থেকে কেউ আমার চুল ধরে টান মারলো।
তাকিয়ে দেখি আমার গুণধর দেবর মশাই মিট মিট করে হাসছে।এইদিকে ক্লাস না চললে থাপ্পড় মারে দাত ফেলে দিতাম।
পিছন থেকে একের পর এক পদ্ধতি বের করে আমাকে বিরক্ত করেই যাচ্ছে।অবশেষে ক্লাস শেষ হতে না হতেই আমি ওর উপর গর্জে উঠলাম।
এই ছেলে।সমস্যা কি তোর?শান্তিতে ক্লাসও কি তোর জন্য করতে পারবো না?(আমি রেগে)
এই মুখ সামলে কথা বলো। অশিক্ষিত মূর্খ কোথাকার?(আয়ুশ)
আমি যখন অশিক্ষিত মূর্খ তাহলে যাও না অন্য কাউকে গিয়ে বিরক্ত করো।আমার কাছে কেনো এসেছো?(আমি)
আমি আসি নি।তুমিই এসেছো আমাদের লাইফে।আর যখন থেকে এসেছো তখন থেকে শান্তি নেই আমাদের!(আয়ুশ)
বেশ করেছি এসেছি।এখন দেখো কি করে তোমাদের বারোটা বাজাই
বলেই ব্যাগ থেকে পানির বোতলটা বের করে আয়ুশ এর উপর সব পানি ঢেলে দিলাম।
আয়ুশ তো আমার এই কান্ড দেখে রেগেমেগে ওর চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে।
রাগে ও আমার বহু চেপে ধরে নিজের একদম কাছে নিয়ে আসলো।এতো কাছে আসাতে আমি খুব অবাক হয়ে গেলাম।
তোমাকে বলছি আমাকে রাগাতে না।এখন আমার রাগের আগুনে তুমি নিজেও পুরো।
বলে হাত বাড়িয়ে একটা পানির বোতল নিলো।
আমি ভিজেছি তুমি বাদ থাকবে কেনো?তুমিও ভিজবে।
বলেই আমার উপর পানি দিবে তখনই আমি ওকে জোরে ধাক্কা দিয়ে এক হাতে আমার ব্যাগ আরেক হাতে ডালিয়ার হাত ধরে দৌড়।
এক দৌড়ে একদম তিন তোলা বিল্ডিং হতে গেটের বাইরে।
হাপাতে হাপাতে
আস্থা আস্থা।থাম।(ডালিয়া হাপাতে হাপাতে)
থেমেই তো গেলাম।আর দৌড় দিতে পারবো না।(আমিও হাপাতে হাপাতে)
কি করেছিস? ঠিক করে বলতো।(ডালিয়া)
কি করেছি মানে?(আমি)
আয়ুশ তোর পিছনে কেনো লেগেছে বলতো?(ডালিয়া)
ওইটা আমাদের দেবর ভাবির ব্যাপার!(আমি)
কিহ!তুই বিয়ে করলি কবে?আয়ুশ তোর দেবর!আর তুই বিয়ে করলি ওর বড়ো ভাইকে?(ডালিয়া অবাক হয়ে চিৎকার করে)
আরে আস্তে আস্তে।চল বাহিরের কোনো কফি শপে গিয়ে কথা বলি!(আমি)
পরেই আমি ডালিয়াকে সব বললাম।ডালিয়া শুনে খুব রাগ করলো।আমি কেনো ওকে আগে বলিনি।এতো কিছু হয়েছে।কি করবো এখন?খুব টেনশন?এই সব আর কি?
পরেই ওকে শান্ত করলাম।ওকে বুঝিয়ে সব কিছু বললাম।এখন ও আর তেমন টেনশন করছে না।কিন্তু ওর বায়না ও নাকি ওর দুলাভাইকে দেখবে।কিন্তু সমস্যা হলো আমি এখন আভির উপর রেগে আছি।আভি আজ সকালে আমার সাথে যা করলো টা নিয়ে।কিন্তু আমি তা ডালিয়াকে বলতে পারবো না। ও অযথা টেনশন করবে।তাই ওর কাছে কিছুদিন সময় চেয়েছি।যাতে আমি সব কিছু স্বাভাবিক করতে পারি।
অবশেষে অনেক বুঝিয়ে ওকে বাসায় পাঠিয়ে দিলাম।আর আমি সোজা কাজে গেলাম।
।
।
অন্যদিকে
কি হলো তোর?মুখ গোমড়া করে বসে আছিস কেনো?(নিহাল এসেই সোফায় বসে)
আস্থার সাথে আজ ওমনটা না করলেই পারতাম।(আভি অনুতপ্ত)
যাক।কেউ তাহলে অনুতপ্ত অনুভব করছে।(নিহাল বিড়বিড় করে)
কিছু বললে স্পষ্ট করে বল।এমনি এমনি পেঁচাল পারিস না।(আভি)
আমি কি বলবো?তুই করেছিস।তুই বল।তুই জানিস!(নিহাল ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
আরে তখন রাগের মাথায় মেয়েটাকে না বললেই হতো। ও তো জেনে বুঝে কিছু করেনি।আর আমি অযথাই ওকে বকা গুলো দিলাম।(আভি)
তো?(নিহাল টিটকারি করে)
তো তো কি?শুনলি না বাবা কি বললো।আস্থা অনেক অভিমানী মেয়ে।(আভি)
তোর কি?আস্থার অভিমান নিয়ে তুই কি করবি?(নিহাল সন্দেহর দৃষ্টিতে)
ও তো আমার উপরও অভিমান করে থাকবে।(আভি ঠোঁট উল্টে)
তোর কি তাতে?তুইই তো বলেছিলি তুই কারোর পরোয়া করিস না! কারো ফিলিংস এর পরোয়া করিস না।তাহলে আস্থা অভিমান করে থাকুক আর নাই থাকুক এইটা নিয়ে তো আর তোর মাথা ব্যাথা থাকা ঠিক না!তাই না?(নিহাল)
আভি যেনো নিজের কথায় নিজেই ফেঁসে গেছে।ওর তো এইটাই ইচ্ছা ছিলো।
আমি তো এইটাই চেয়েছিলাম।আমি তো কারো পরোয়া করি না ।তবুও আস্থা আমার উপর অভিমান করে থাকবে জেনে আমার এতো খারাপ লাগছে কেনো?মনটা ভার হয়ে আছে আমার।আমার মনটা কেনো আমার নিজেরই কথা শুনছে না।(আভি মনে মনে)
আআআভিইইই আআআভিইইই।(নিহাল সুর দিয়ে ডাকছে)
কি হলো?তুই আমাকে এইভাবে ডাকছিস কেনো?(আভি ভ্রু কুঁচকে)
না।এমনি তা গভীরভাবে ভেবে তুই এত ক্ষন কি ভাবছিলি?(নিহাল টিটকারি দিয়ে)
তুই কি আমার সাথে মজা করছিস?(আভি রাগী কন্ঠে)
ভুলেও না।আমি খুব সিরিয়াস।এই দেখ।
বলেই আভি সিরিয়াস ভাব নিয়ে।
হয়েছে হয়েছে।এখন ও রাগ করে থাকলে আমাদের কাপল পারফর্মেন্স খারাপ হবে তাই কিছু ভাব ওর রাগ কি করে ভাঙ্গানো যায়!(আভি কাশি দিয়ে)
কাপল পারফর্মেন্সের চিন্তা?নাকি ওর রাগ তোর সহ্য হবে না এই চিন্তা?আমি কি বুঝি না।(নিহাল বিরবির করে)
তুই আবার বিরবির করা শুরু করলি?বল কিছু?(আভি)
তোর বউ!তুই রাগিয়েছিস।তুই ভাব।(নিহাল)
আভি আস্থার রাগ ভাঙ্গানো নিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন।
এইবার বুঝবি তুই আস্থা কি?(নিহাল মনে মনে)
।
।
চলবে…..
।
চলবে,,,,,
Part 20