Marriage_With_Benefits part 23+24

#Marriage_With_Benefits
#Part_23
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
আমি অফিসের রিসিপশনে বসে কাজ করছিলাম।কাল যেই মহিলার সাথে কথা হয়েছিল আজ উনি ফ্যামিলি সমস্যার কারণে ছুটি নিয়েছে।হয়তো উনার স্বামীর সাথে সব ঠিকঠাক করেই আসবে।

আমি চুপচাপ কাজ করছি তখনই কেউ একজন আমার কাছে এসে বললো বড়ো স্যার আর ম্যাম নাকি আমার সাথে কথা বলতে চায়।আমার তো এইটা শুনে গলার পানি শুকিয়ে গেছে।এখন কি হবে আমার?পার্ট টাইম জবটা কি গেলো?এখন আবার কথা থেকে চাকরি জোগাড় করবো আমি?সব খারাপ কি আমার সাথেই হওয়ার কোনো দরকার ছিলো?যতসব।কিন্তু আমি কি ভুল করছি?
অনেক ভাবার পরও কোনো দোষ পেলাম না নিজের।তবুও বৃথা ভাবনার চিন্তা করতে করতে আমি গেলাম স্যার আর ম্যাম এর কেবিনে।

May I come in (আমি)

আমি কেবিনের দরজা খুলতেই অবাক।কেউ একজন আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমি বুঝতে পারলাম না সে মহিলাটা।কিন্তু স্পর্শটা খুব চেনা চেনা লাগছিলো।অনেকক্ষন পরে উনি আমাকে ছাড়লো।তারপর আমি দেখলাম উনি আর কেউ না কলি আন্টি।

আন্টি আপনি?(আমি অবাক হয়ে)

মা।আমিও আছি(জিসান)

আঙ্কেল আপনিও আছেন?আপনারাই খান গ্রুপের,,, ও অবশ্যই তো আপনারাও তো খানই।(আমি বলদের মত হাসি দিয়ে)

হ্যা।আমরাই। কেনো খুশি হও নি?(জিসান)

খুশি তো জানি না।কিন্তু অনেক অবাক হয়েছি এই আর কি?(আমি)

সারপ্রাইজ ছিলো এইটা তোমার!(কলি হেসে)

সারপ্রাইজ না শক খেলাম।(আমিও হেসে)

আচ্ছা।শুনো তোমাকে যেই জন্য ডেকে এনেছি,,,
আমি কলি আন্টিকে মাঝ পথে থামিয়ে নিজেই বলা শুরু করলাম।
প্লিজ আমাকে এই জব থেকে বের করে দিবেন না।অনেক কষ্ট করতে হয় কোনো জব জোগাড় করতে।আর পার্ট টাইম জব তো খুব মুশকিল হয়ে যায় জোগাড় করতে।আমার কোনো ভুল হলে প্লিজ ক্ষমার চোখে দেখবেন।আমি অনেক দুঃখিত।(আমি মিনতি করে)

আরে আরে কে তোমাকে বের করে দিবে শুনি?(জিসান অবাক হয়ে)

তাহলে আপনারা আমাকে কেনো ডেকেছেন?(আমি কৌতূহল নিয়ে)

আমাদের তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো।(কলি)

কি কথা!আমি চিন্তিত হয়ে)

আমরা তোমাকে দত্তক নিতে চাই(কলি)

কিহ?(আমি অবাক হয়ে)

হ্যাঁ।যদি তুমি রাজি থাকো তবে আমরা তোমাকে কাগজ কলমে দত্তক নিবো।(কলি)

কিন্তু মানুষ দত্তক তো বাচ্চাদের নেয়।(আমি)

কিন্তু আমরা তোমাকে নিবো! আমাদের বাচ্চা তুমিই।আমাদের সন্তান তুমিই!(কলি)

কিন্তু তবুও।এইটা একটু অদ্ভুত লাগে।(আমি)

তুমি যদি রাজি থাকো তাহলে কিছুই অদ্ভুত না।(জিসান)

কিন্তু আমিই কেনো?(আমি)

কারণ তোমার মধ্যে আমি কেনো জানি আমার মেয়ের ঝলক দেখতে পাই।জানি না ও বেচেঁ থাকলে কেমন হতো?ওর স্বভাব কেমন হতো!কিন্তু বিশ্বাস করো। আমার কেনো জানি তোমাকে তারই অংশ মনে হয়।(কলি কান্না করতে করতে)

আমি উনাকে শান্ত করতে করতে বললাম
প্লিজ আপনি কান্না করবেন না।

আমিও কেনো জানি উনার মধ্যে আমার মায়ের ঝলক দেখতে পেতাম।আমি ভাবতাম এইটা হয়তো আমারই মনের ভুল কিন্তু না এখন দেখি উনিও আমার মতই।কেনো ভাগ্য আমাদের এক সুতায় বাঁধছে জানি না।আমি এখন কি করবো?ফ্যামিলি পাওয়ার লোভ তো আমারও আছে।মা বলে ডাকার লোভ তো আমারও হয়।আমি কি উনাদের হা বলে দিবো!দেই বলে।আমিও তো এইটাই চাই তাই না!

অবশেষে হা বলে দেই।

আচ্ছা।যেহেতু তুমি রাজি।তাই আমরা একটা কাজ করি।কালকে অফিসিয়ালি তোমাকে দত্তক নেওয়ার কাজটা সম্পূর্ণ করি।(জিসান)

ঠিক আছে।করো।তুমি খুশি তো মা?।(কলি)

আমি অনেক খুশি অবশেষে আমারও একটা পরিবার হবে।
বলেই আমি কলি আন্টিকে জরিয়ে ধরলাম।আর জিসান আঙ্কেলও আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।


অন্যদিকে
আরে আমি কি এক্সপার্ট নাকি?(আভি)

কেনো তুই কি আগে কোনো সময় তুলির রাগ ভাঙ্গাস নি?
নিহাল বলেই চুপ হয়ে গেল।
শিট আবার মুখ থেকে ফালতু কথা বের করলাম।এখনই সব ঠিক ছিলো আর আমি তুলির কথা টেনেই সব বরবাদ করে দিলাম।(নিহাল মনে মনে)

তুলি,,!তুলি যখন রাগ করতো ওকে ডায়মন্ডের জুয়েলারি বা কোনো দামী গাড়ি,দামী জিনিস দিলেই ওর রাগ হাওয়া হয়ে যেতো।(আভি মুখ গম্ভীর করে)

কারণ ওই মেয়ে ছিলই একটা লোভী।তোর কাছে শুধু তোর টাকার জন্যই ছিলো।কিন্তু আস্থা যে তোর টাকার জন্য তোকে ভালোবাসে না।আর আস্থা যে ওই তুলি মেয়ের মতো না। তা প্রমাণ করার এইটার থেকে ভালো আর কোনো উপযুক্ত সময় নেই।(নিহাল মনে মনে)

তাহলে তো তুই একটা কাজ করতেই পারিস। আস্থাকেও একটা ডায়মন্ডের জুয়েলারি দে।অবশ্য ও নেমে কিনা জানি না!(নিহাল)

নিহাল।মেয়েরা জুয়েলারি দেখলে নিজের স্বামীর কথা ভুলে যায় বুঝলি!আর তার উপর তা যদি ডায়মন্ডের জুয়েলারি হয় তাহলে তো কথাই নাই।(আভি ভাব নিয়ে)

হ্যা।আর সেই মেয়ে যদি হয় তোর প্রেমিকা তুলির মতো তাহলে তো ডায়মন্ড পেয়ে স্বামী কি… দুনিয়াই ভুলে যাবে।কিন্তু সে যদি হয় হয় আস্থা তাহলে তোকে নাকে দড়ি দিয়ে গুড়াবে।(নিহাল মনে মনে)

কি ভাবছিস?(আভি)

তোর যখন এতই কনফিডেন্স তাহলে লাগি একটা শর্ত!(নিহাল ভাব নিয়ে)

কি শর্ত?(আভি ভ্রু কুঁচকে)

যদি আস্থা তোর ডায়মন্ডের জুয়েলারি গ্রহণ করে।তাহলে তুই যা বলবি আমি তাই করবো।আর যদি গ্রহণ না করে।তাহলে আর কোনো দিন তুই আস্থার উপর তুলিকে নিয়ে অযথা রাগারাগি করবি না।যেমন আজ করলি।বল রাজি?(নিহাল হাত বাড়িয়ে)

আমি রাজি।দেখিস আমিই জিতবো।আর আমি জিতলে তুই কখনো তুলির নামে আর খারাপ কিছু বলতে পারবি না।(আভিও হাত মিলিয়ে)

জিতবো আমি শিওর।(নিহাল)


বাড়িতে
আভি আর নিহাল আগেই রুমে ঢুকে বেডে একটা ডায়মন্ডের জুয়েলারি বক্স প্যাকিং করে রেখে বেলকনিতে গিয়ে লুকালো।সেখান থেকে তারা আস্থার ডায়মন্ড জুয়েলারি পাওয়ার পর রিয়েকশনটা দেখবে।

অন্যদিকে আস্থা
আমি আজ অনেক খুশি অনেক।কাল আমিও বলতে পারবো আমার বাবা মা আছে।আচ্ছা আমার কি মি:কোবরা কে জানানো দরকার ছিলো?দূর আজ উনি যা করেছেন তার দ্বারা উনি আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে আমি উনার নকল স্ত্রী।আমার কোনো কাজেই উনার নাক গলাতে হবে না আর আমিও উনার কোনো কাজে নাক গলাবো না।এইটাই এখন আমার লক্ষ্য।
এই সব বিড়বিড় করতে করতে আমি রুমে ডুকলাম।রুমে ঢুকেই আলমারি থেকে কাপড় চোপড় নিয়ে ঢুকে পড়লাম ওয়াশ রুমে।

ধ্যাত।ওর তো চোখেই পড়লো না।আমরা কি রেখেছি?(আভি নিরাশ হয়ে)

এইখানে যদি আস্থার বদলে তোর তুলি থাকতো তাহলে কি করতো জানিস?(নিহাল)

কি করতো?(আভি ভ্রু কুঁচকে)

পিঁপড়া যেমন মিষ্টির গন্ধ পেয়ে সুরসুর করে ছুটে আসে।তেমন তোর তুলি টাকা পেলে সুরসুর করে ছুটে আসে। ও তো আর আমাদের আস্থা।তাই না?(নিহাল গর্ব করে)

মি:নিহাল আহমেদ।একটু অপেক্ষা করুন।আস্থা এখনও ওই গিফট দেখে নি।আগে দেখুক তারপর কথা হবে।(আভি ভাব নিয়ে)

শর্ত তো আমিই জিতবো!(নিহাল)

দেখা যাক।(আভি)

চুপ চুপ আভি।আস্থা বের হচ্ছে।(নিহাল আভিকে থামিয়ে)


আমি ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়েই মাথা মুছতে মুছতে আয়নার সামনে গেলাম।তখনই বেডে নীল রঙের কাগজে মোড়া কিছু দেখতে পেলাম।

ওইটা আবার কি?আভি কি কিছু এনেছে নাকি?এই লোকও কি জায়গার জিনিস জায়গাতে রাখতে পারে না।যতসব ফালতু লোক।

আমি মনে মনে একশোটা গালি দিয়ে ওই বক্সটা হাতে নিলাম।দেখে মনে হচ্ছে কোনো জুয়েলারি বক্স। মি: কোবরা কি জুয়েলারি পরে নাকি?(আমি খুব কৌতূহল নিয়ে দেখছি)


বেলকনিতে
দেখলি।জুয়েলারি বক্স হাতে নিয়েই কি রকম ভাবে দেখতে শুরু করলো!(আভি ফিসফিস করে)

ওইটা যে কেউই করবে।তুইও যদি দেখিস একটা বক্স তোর বেডে পরে আছে তুইও তাই করবি!(নিহাল ফিসফিস করে)

তুই বিশ্বাস করবি না তো?থাক শুধু দেখ কি হয়?(আভি)

তাই তো দেখছি তুই চুপ থাক।(নিহাল আভি কে থামিয়ে)


রুমে
অনেক ভাবলাম আমি।
যাই হোক।মানুষের জিনিসে হাত দাওয়া খারাপ অভ্যাস।তাই আর সাতপাঁচ না ভেবে জোরে আরিফকে ডাক দিলাম।

আরিফ।প্লিজ এখানে আসুন তো!(আমি)


বেলকনিতে
এই মেয়ে আরিফকে ডাকে কেনো?(আভি ফিস ফিস করে)

আমি কি করে বলবো?আমিও তোর সাথেই এখানে দাড়িয়ে আছি।দেখ কি হয়?(নিহাল ফিসফিস করে)


অন্যদিকে আরিফ এসে
কি হলো ম্যাম?(আরিফ)

এইটা কি?আপনি কি জানেন?(আমি)

আপনার হাতে ওইটা কি?আমি কি করে জানবো ম্যাম?আপনিই তো জানবেন।আপনারই তো জানার কথা(আরিফ)

অফোঁ।এই লোকটাকে নিয়ে আমি পারি না।আচ্ছা আমি জানি এইটা আমার হাতে আছে।আর আমি জানিনা এইটা আমার বিছানায় কি করে এসেছে।কিন্তু আপনি কি জানেন এইটা আমার বিছানায় কে রেখেছে?(আমি)

আপনার বিছানা আপনি জানবেন কে রেখেছে আমি কি করে জানবো?(আরিফ)

হায় আল্লাহ!তাহলে এইটা তো জানবেন এর মধ্যে কি আছে?(আমি)

ম্যাম এইটা প্যাকিং করা।আমি কি করে জানবো এইটার ভিতরে কি আছে?আমি তো আর জ্যোতিষ না।(আরিফ)

আমি চুপ করে আছি।কি এই মানুষ! যাই বলছে তারই অন্য কিছু উত্তর দিচ্ছে।এই লোককে কি করে দাদু সামলায়।আমি কি উনার কথায় হাসবো না কাদবো তাই বুঝতে পারছি না।

অন্যদিকে আরিফ আর আস্থার কথোপথনটি শুনে আভি আর নিহালের হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে।

একদম ঠিক জবাব গুলো দিচ্ছে।(আভি হাসতে হাসতে)

আরিফ।ভাই একটা মানুষও।(নিহাল হাসতে হাসতে)


তাহলে একটা কাজ করুন এইটাকে নর্দমায় ফেলে দিয়ে আসুন।(আমি আরিফকে বক্সটা দিয়ে দিয়ে)

এই মেয়ে কি বলছে?আমার 70 লাখ টাকার ডায়মন্ড ও নর্দমায় ফেলে দিবে?(আভি অবাক হয়ে)

ও আস্থা।সব কিছুই করতে পারে এতে এতো অবাক হয়ে লাভ নেই।বরং এইটা ভাব 70 লাখ টাকা নর্দমায় গেলে তোর কি অবস্থা হবে?(নিহাল আভির অবস্থায় আফসোস করতে করতে)

ম্যাম।এইটা খুলে দেখুন কি আছে এতে?হয়তো আপনার জন্য কেউ পাঠিয়েছে?(আরিফ)

আমার এতো আপন কেউ নেই যে এতো সুন্দর করে প্যাকিং করে কিছু আমাকে দিবে!(আমি অন্যমনস্ক হয়ে)

আস্থার এই কথা শুনে কেনো জানি আভির খুব খারাপ লাগলো।
এমনি মেয়েকে অকারণে বকার জন্য অনুতপ্ত তার উপর আবার এই কথা শুনে খারাপ লাগছে।(আভি মনে মনে)

ম্যাম।কিন্তু এইটা তো আপনার জন্যই এসেছে!(আরিফ)

তুমি কি করে জানলে?(আমি অবাক হয়ে)

এইযে লিখা আছে।আস্থা ইয়াসমিন।(আরিফ আমাকে লেখাটা দেখিয়ে)

আমি তো এইটা খেয়ালই করি নি।দাও তো দেখি
বলেই আরিফের কাছ থেকে বক্সটা নিলাম।

খুলি?(আমি)

ওকে। ম্যাম খুলেন।আমি আছি আপনার পাশে।(আরিফ স্লোগান দিয়ে)

আরিফ আমি বক্স খুলছি ভোটে দাড়াচ্ছি না।
বলেই চটপট করে বক্সটা খুলে ফেললাম।

বক্সটার ভিতর একটা নেকলেস,এক জোড়া কানের দুল,এক জোড়া চুরি ছিলো।

আরিফ এইগুলো কি পাথরের?(আমি জুয়েলারি হাত দিয়ে)

ম্যাম সত্যিই করে বলুন তো।আপনি কি ডায়মন্ড কোনো দিন দেখেছেন?(আরিফ কৌতূহল হয়ে)

না।তবে টিভি তে দেখেছি।তবে তত ভালো করেও না।(আমি কনফিউজ হয়ে)

ম্যাম এইটা ডায়মন্ডের জুয়েলারি।হয়তো কেউ আপনাকে গিফট করছে।(আরিফ)

এতো ক্ষন আমার মাথায় আসলো।আমাকে ডায়মন্ড একজনই দিতে পারে আর সে হলো মি:কোবরা!হয়তো উনি সেই আগের মত আজও সরি কিনার চেষ্টা করছে তাই যখন আজ সকালে রাগ করছে তার জন্য এখন আমাকে ডায়মন্ড দিয়ে ভুলানোর চেষ্টা করছে।কিন্তু আমিও আস্থা।আজ সকালের অপমান আমার মানসম্মানে লেগেছে।আর তা কখনও ডায়মন্ডের জুয়েলারি নিয়ে মিটবে না।আর হয়তো মি:কোবরা এইখানেই কোথাও লুকিয়ে আছে। দাড়াও ইঁদুরকে কি করে গর্ত থেকে বের করতে হয় তা আমি আস্থা ভালো করেই জানি।(আমি মনে মনে)

ম্যাম।আপনি কি ভাবছেন?(আরিফ)

যাই হোক না কেনো।আপনি এইটাকে নর্দমায় ফেলে দিয়ে আসুন।আমাকে ডায়মন্ড দেয়ার মত কোনো লোক নেই।কেউ হয়তো আমার সাথে মজা করছে।(আমি জোরে জোরে কথা বলছি যাতে মি:কোবরা যেখানেই থাকুক না কেনো আমার কথা যেনো ঠিক শুনতে পায়।)

এই মেয়ে আমার টাকা নর্দমায় ফেলতে চলেছে?(আভি অবাক হয়ে)

আরে এখনও তো ফেলে নি।চুপ হয়ে দেখ তো।(নিহাল)

কিন্তু ম্যাম।এইটা সত্যিই ডায়মন্ড।কেউ মজা করছে না।(আরিফ)

আমি বলছি ফেলুন।না হলে আমাকে দিন আমি ফেলে দেই।
বলেই জুয়েলারি বক্স নিয়ে বেলকুনি দিয়ে বাহিরে ফেলতে যাবো তখনই ইঁদুরের মতো করে আভি আর নিহাল ভাইয়া বেলকুনি থেকে বেরিয়ে আসলো।

তোমরা এখানে কি করছো?(আমি এমন ভাব করছি যেনো আমি কিছুই জানি না)

আরিফ তুমি যাও।(আভি)

ওকে স্যার।
বলেই আরিফ চলে গেলো।

এই মেয়ে আরিফ যখন বলেছে এইটা সত্যিই ডায়মন্ড তাহলে নর্দমায় ফেলতে যাচ্ছো কেন?(আভি)

নিহাল ভাইয়া।উনাকে বলে দিন।যেহেতু গিফটটা আমার নামে আমি যা খুশি করতে পারি।(আমি আভিকে ইগনোর করে)

নিহাল কি হা?আমি এখানে আছি তুমি তো সরাসরি আমাকেই বলতে পারো।(আভি)

নিহাল ভাইয়া।উনাকে বলে দিন আপনার সামনে আমাদের হাসবেন্ড ওয়াইফ অ্যাকটিং করতে হবে না।তাই আমার কোনো প্রয়োজন নেই উনার সাথে অযথা কথা বলার।(আমি)

ওকে।বলতে হবে না তোমার।এখন এইটা রাখো।(আভি)

আমি এইটা নর্দমায় ফেলে দিবো।(আমি)

আচ্ছা।কি করলে তোমার রাগ ভাঙবে শুনি?(আভি দাত চেপে)

আমি যা বলবেন করবেন তো?(আমি ভ্রু উঁচু করে)

।#Marriage_With_Benefits
#Part_24
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
হুম।করবো।আভি চৌধুরী নিজের কথার খেলাপ করে না।(আভি ভাব নিয়ে)

ভাব মাস্টার।তোমার ভাব ছুটাচ্ছি।(আমি মনে মনে)

আপনি কান ধরে 50 বার উঠবস করবেন।আর বলবেন সরি আস্থা আর কোনো দিন আমি তোমাকে বকবো না।(আমি বেডে উপর পায়ের উপর তুলে বসে)

নিহাল ফিক করে হেসে দিলো।

আস্থা এইটা কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে।(আভি রেগে)

মাই ইচ্ছা ইজ মাই ইচ্ছা নান আফ ইউর ইচ্ছা।এখন ইউর ইচ্ছা ইউ করবে কি না?(আমি ভাব নিয়ে)

নিহাল ভাইয়া আমার কথা শুনে বেঁহুশ হবার কান্ড।

আস্থাকে অকারণে বকা।দেখো কি হাল করি তোমার আভি চৌধূরী।তোমার আর তোমাদের চৌধুরীদের ইগো যদি আমি না গুড়িয়ে দেই তাহলে আমিও আস্থা না।(আমি মনে মনে)

কি হলো? করবেন?নাকি আমি ভাববো আভি চৌধুরী নিজের কথা খেলাপ করে।(আমি ভাব নিয়ে)

আভি যে খুব রেগে আছে তা আমি ঠিকই বুঝতে পারছি।ওর মাথার রগ ফুলে যাচ্ছে রাগে।কিন্তু আমার কিছু করার নেই।মানুষের এতো অহংকার তাকে পতনের দিকে নিয়ে যায়।আমি চাই না মি:কোবরা অহংকারে চোখ বন্ধ করে ফেলুক।টাকা দিয়ে সব কিছু কিনা যায় না।মানুষের কষ্টের সাময়িক সমধান হচ্ছে টাকা।টাকা দিয়ে ক্ষত গুলো ভরা যায় না।উনাকে এইটা বুঝাতে হবে।(আমি মনে মনে)

পরেই মি: কোবরা শুরু করে দিলো উঠাবসা।50 টা উঠাবসা উনার জন্য কোনো ব্যাপারই না।জিমে নাকি উনার এর চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হয়।উনি 50 বার উঠবস করার সাথে সাথেই আমার বলা কথা গুলো তোতা পাখির মতো বলতে শুরু করলো।আমার উনাকে হাসি পাওয়ার কথা ছিল কিন্তু আমার হাসি পাচ্ছে না।বরং কষ্ট হচ্ছে উনি যখন আমাকে বকা দিয়েছিলো তখনও এতো কষ্ট হয় নি যতটা উনাকে এই অবস্থায় দেখে হচ্ছে।

উনি 50 টা উঠবস করে এসে আমার পাশে বসলো।

হইছে?(আভি মুড নিয়ে)

জ্বি হইছে!(আমি বেড থেকে উঠে)

আরে আস্থা তুমি তো অসাধ্য সাধন করেছ!যেই আভি চৌধুরীকে স্যাররা ও কানে ধরাতে পারতো না আজ তাকে সেই তুমি একবার না 50বার কান ধরে উঠবস করালে মানতে হবে তোমাকে বস।(নিহাল হাসতে হাসতে)

আমি নিহাল ভাইয়ার কথা শুনে কিছু বললাম না।উনার সামনে গিয়ে ডায়মন্ড জুয়েলারি নিয়ে বললাম।

এইটা নিন।আমার লাগবে না।(আমি)

উনি আবার কথায় অনেক অবাক হয়ে
কেনো?তুমি ডায়মন্ড পছন্দ করো না?(আভি)

করবো না কেনো!অবশ্যই করি।কিন্তু আমার এইটা লাগবে না।(আমি)

কেনো?আমি তোমাকে এইটা দিয়েছি!তুমি নিতে পারো।(আভি)

সরি।কিন্তু আমি এইটা নিতে পারবো না।এইটার উপর সম্পূর্ণ অধিকার আপনার আসল স্ত্রীর।আমার না।
বলেই উনার হাতে বক্স দিয়ে আমি বেরিয়ে গেলাম।

আভি সেখানেই দাড়িয়ে আছে।

কিরে বলেছিলাম না।আস্থা নিবে না।(আভি)

মাঝে মধ্যে আমি মেয়েকে বুঝি না।কখনও নিজের বেনিফিটস্ ছাড়া পা দেয় না।আবার কখনও তার আত্মসম্মান দেখে অবাক না হয়ে আর পারি না।কিন্তু ও তো বলেই গেলো না।রাগ ভেঙেছে নাকি?(আভি)

যাইহোক।যেহেতু আমি জিতেছি আর শর্ত অনুযায়ী তুই আর কখনও আস্থাকে বকা দিবি না।(নিহাল)

আচ্ছা।চল চল।
বলেই আভি আর নিহাল নিচে নামলো ডিনার করবে বলে।


নিচে
ডাইনিং টেবিলে খাবার খেতে বসলাম।আমি আসার একটু পরেই আভি আর নিহাল ভাইয়া আসলো।আমার কথামত আজ আমার আদরের ননদিনী বাসায়ই ছিলো।চাচা শশুর আর চাচী শাশুড়ি সবাই নিচে নেমেছে খাবে বলে।কিন্তু বাধ সাধে আমার দেবর যে করেই হোক একে সোজা করতেই হবে।সবাই খাবার এক টেবিলে খাবার খাচ্ছে ভালোবাসা নেই তো কি এক সাথে তো আছে।বিপদে পড়লে যে বাঘে হরিণে এক ঘাটে জল খায় তা এই চৌধূরীদের দেখে বুঝা যায়।

আমি খাবার খাচ্ছি তখনই দাদু বলে উঠলো।
আভি আর মেয়ে।তোমরা হানিমুনে যাও নি।তো কবে যাওয়ার প্ল্যান আছে।(দাদু খেতে)

আমি দাদুর কথায় কাশি দিয়ে উঠলাম।এদের কি হা?একজন না একজন আমার পিছে লেগেই থাকবে।হয়তো দাদা আর নয়তো নাতি।এরা নিয়ম করে আমার পিছনে লাগবে।কেনরে আমি কি আজ হানিমুনে গেলি কালকেই উনি বড়ো দাদু হবে?
(আমি খাওয়া বাদ দিয়ে মুখ উল্টে কথা গুলো ভাবছি)

তখনই আভি বলে উঠলো
অবশ্যই আমাদের নিজেদের প্ল্যান আছে।(আভি খেতে খেতে)

ব্যাস! একটু আগের হার্ট অ্যাটাক করা অবস্থা এখন পুরাই হার্ট অ্যাটাকে পরিণীত হলো।(আমি মনে মনে)

তা কোথায় যাবে?(দাদু)

আমরা ভাবছি কক্সবাজার যাবো!(আভি)

কবে ভাবলাম?(আমি মনে মনে 🙂)

ও।(দাদু)

আস্থার নাকি সমুদ্র সৈকত ভালো লাগে।(আভি)

ওই মিয়া।আমি কি বলছি আমার সমুদ্র সৈকত ভালো লাগে!আমার সমুদ্র একটু ভালো লাগে না।(আমি উনাকে ইশারা দিয়ে)

আমাকে 50 বার উঠবস করানো।এইবার দেখো তোমাকে জব্দ করি কি করে আস্থা!(আমি ইশারা করে)

শুরু হয়ে গেছে এদের সাপ নেউলে সম্পর্ক।(নিহাল মনে মনে)

আচ্ছা।তাহলে তৈরি হও।আমি সব ব্যবস্থা করছি।(দাদু)

আরমান চৌধূরী আমাদের হানিমুনের ব্যবস্থা করবে ভাবা যায়।(আভি টিটকারি মেরে)

সত্যিই ভাবা যায় না।নাতির হানিমুনে দাদার এতো ইন্টারেস্ট।বলার বাহিরে!(আমি মনে মনে)

তুমি কি বলো ছোটো বউ মা!(দাদু)

আমি কি বলবো বাবা?আপনি যা করবেন তাতেই আমরা রাজি!(ঈশানি)

তাহলে রোহান ওদের যাওয়ার ব্যবস্থা তুমি করো।(দাদু)

আচ্ছা।বাবা কোনো চিন্তা নেই।(রোহান)

আমি চুপ করে খালি দেখেই যাচ্ছি।

এদের যে এক সাথে পাঠাবে!বিশ্ব যুদ্ধ না হলেই হলো!(নিহাল মনে মনে)

অবশেষে ঠিক করা হলো আমরা পনেরো দিন পর হানিমুনে যাবো।

অন্যদিকে উপর থেকে কেউ একজন আমাদের হানিমুনের কথা শুনে খুব খেপে গেছে সেইটা আমার অজানা।আর সেইটা আর কেউ না আমারই দেবর।

হানিমুন না।করাচ্ছি তোমাদের।
বলেই আয়ুশ তার রুমে চলে গেল।
আমি হতাশা নিয়ে বসে আছি বেডে।কি হচ্ছে?হানিমুন?হায় আল্লাহ।

কি হলো?সরি বললাম।কানে ধরে উঠবস করলাম।তবুও মুখ পেঁচার মতো করে বসে আছো কেনো?(আভি ভ্রু কুঁচকে)

হানিমুনে ধরছে তো তাই!(আমি এক বুক হতাশা নিয়ে)

আচ্ছা।ওই ভেবে এখন আর লাভ নেই।আরমান চৌধূরী এই রকম করবেই।(আভি)

ও আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম।(আমি চিৎকার করে)

কি ভুলে গেছো?(আভি অবাক হয়ে)

আমি আপনাকে কখন বলেছি আমি সমুদ্র ভালোবাসি?(আমি বেডে দাড়িয়ে কোমরে হাত দিয়ে)

ও তুমি বলো নি!হয়তো।কিন্তু কি আর করার এখন বলে দিয়েছি সমুদ্র আর তো কিছু করার নেই।(আভি ভাব নিয়ে)

আমি উনার কান্ড দেখে হেসে দিলাম।
আপনিও না।

আচ্ছা অনেক হয়েছে ঘুমাও।(আভি)

আচ্ছা।নিহাল ভাইয়া কি চলে গেছে?(আমি শুতে শুতে)

হুম।চলে গেছে।ওর বাবা ওকে ফোন করে যেতে বললো।(আভি ওপাশে শুতে শুতে)

ও আচ্ছা।
বলেই চোখ বুঝে ফেলি।


সকালে আবারও আভি চোখ খুলে দেখে আস্থা আজও ওকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে।

আভি আস্থার এই কান্ড দেখে আবারও হেসে দিলো।হায়রে এই মেয়ে।আজও জড়িয়ে ধরে ঘুমালো।কিন্তু আজও ওকে জানতে দিলে চলবে না।তাই আবারও ওকে ঠিক করে ওর জায়গায় শুয়ে দিলাম।আজ আর ওর ঘুমের অ্যাডভান্টেজ নিলাম না।নিজেই উঠে ফ্রেশ হতে চললাম।

অন্যদিকে আস্থাও মোচরা মুচরি করতে করতে ঘুম থেকে উঠে গেলো।

কি হলো বুঝতে পরলাম না।ইদানিং ঘুমটা ভালোই হচ্ছে।(ভালো হবে না আভিকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাও — লেখিকা)

উঠেই জানালা থেকে পর্দা সরিয়ে দিলাম।আজ রোদ ভালোই উঠবে মনে হচ্ছে।কিছুক্ষন পর আভি বের হলো।তারপর আমি ফ্রেশ হতে গেলাম।
বের হয়ে দেখি আভি কালকের মতো টাই বাঁধছে।কিন্তু আজ আর আমি কালকের মতো ভুল করলাম না।আমি আমার কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম।

আস্থা।আস্থা।(আভি)

হুম?(আমি অবাক হয়ে)

এই দিকে আসো!(আভি)

আমি আভির সামনে গিয়ে বললাম
কি হলো?

এই নাও।বেধে দাও।
আভি আমার দিকে টাইটা এগিয়ে দিয়ে।

কি করবো আমি এইটা দিয়ে?(আমি)

আমাকে বেধে দাও।(আভি আমার সামনে দাঁড়িয়ে)

কেনো?কালকে না বললেন আমি রেডি হওয়ার সময় আমি যাতে আপনার ধারের কাছেও না আসি,(আমি মুখ ভেংচি দিয়ে)

হইছে হইছে।এখন যখন বেধে দিতে বললাম।দাও না কেনো?(আভি)

আমি আর উনার সাথে তর্কে গেলাম না।আমি উনার কাছ থেকে টাইটা নিয়ে বেধে দিলাম।

এই নাও!
উনি আবার আমার দিকে কোর্টটা এগিয়ে দিয়ে।

এইটাও?(আমি অবাক হয়ে)

হুম।(আভি)

আমি উনার কাছ থেকে কোর্টটা নিয়ে পরিয়ে দিলাম।

এখন থেকে আমার তৈরি হওয়ার সময় সব সময় আমার পাশে থাকবে।

আমি আভির কথা শুনে কিছু বললাম না।
তারপর নিজেও তৈরি হতে গেলাম।

আভি আয়নার দিকে তাকিয়ে
কালকে অনেকক্ষন ভেবে দেখলাম।অতীত ধরে বেচেঁ থেকে লাভ নেই।নিহাল সত্যিই বলছে আস্থা আর তুলি একদম আলাদা।তুলির জন্য আস্থাকে কষ্ট দেয়া একদম ঠিক না।ওরা একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।ওদের তুলনা করা আমার ঠিক হয় নি।কিন্তু আমি জেনেই দম নিবো কেনো তুলি আমাকে ছেড়ে চলে গেলো।কি ছিলো ওর যাওয়ার পিছনে কারণ?(আভি মনে মনে)

কি হলো?আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কি ভাবছেন আপনি অনেক সুন্দর!(আমি ভ্রু কুঁচকে)

ম্যায় ইতনি সুন্দার হুঁ মেয় কেয়া কারু।(আভি ভাব নিয়ে)

আমি উনার কথা শুনে হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা করে ফেললাম।
আপনি এই কথা বললেন?এইটা তো মেয়েদের বলার কথা।(আমি হাসতে হাসতে)

শুনো আমার কাছে ছেলে আর মেয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই বুঝলে।আর তোমার মন কাল খারাপ করিয়ে ছিলাম আজ ভালো করিয়ে দিলাম।তুমি হেসেছো এতেই আমি খুশি।এখন রেডি হয়ে নিচে নামো আমি অপেক্ষা করছি।
বলেই আমার গালে হাত দিয়ে উনি চলে গেলো।

আমি সেখানেই দাড়িয়ে আছি।কি এই লোকটা।এক সময় মন খারাপের কারণ হয় অন্য সময় মন ভালো করার মন্ত্র দিয়ে মন ভালো করে চলে যায়।উনার কখনও কেয়ার কখনও রেগে বকা দেওয়ার ক্যারেক্টারটা কেনো জানি সব সময় আমার মাথার উপর দিয়ে যায়।তবুও কেনো জানি ভালো লাগে।খুব ভালো লাগে।


ডাইনিং টেবিলে
আজ আরশি বাদে সবাই আছে আর তার সাথে আছে আমার গুণধর দেবর মশাই।

আচ্ছা।ভাইয়া তোদের প্রেম কাহিনাটা তো জানতে পারলাম না।(আয়ুশ)

হায়।এই পোলা কি শান্তি করে খেতেও দিবে না।(আমি মুখে খাবার দিতে দিতে)

খুব আগ্রহ তো তোর।ভাইয়ের লাভ স্টোরি নিয়ে।(আভি খেতে খেতে)

আভি বাবা বলো আমরাও শুনতে চাই।(রোহান)

আরে কিছু লাভ স্টোরি থাকলে তো শুনবে!এখন বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।দেখি মি:কোবরা কি মিথ্যা কথা বলে(আমি মনে মনে)

কি আর বলবো চাচু।একদিন এক ইভেন্টে গেছিলাম।সেই ইভেন্টে ওর পারফরম্যান্স ছিলো। পারফরম্যান্স আমার এতই ভালো লাগলো যে সোজা স্টেজে গিয়ে প্রপোজ করে বসি।(আভি খেতে খেতে)

আমি উনার কথা শুনে খাওয়া ছেড়ে হা করে তাকিয়ে রইলাম।কি সুন্দর মিথ্যা বলছে!!মুখে একটু আটকায় না।(আমি মনে মনে)

অন্যদিকে দাদুও কেনো জানি মিটমিট করে হাসছে।

ও তাই নাকি।তারপর কি হলো?(আয়ুশ আমার দিকে তাকিয়ে)

আমিও ওর দিকে তাকিয়ে ওকে একটা মুখ ভেংচি দিলাম।

পরে আর কি?প্রথমে রাজী হয় নি।তারপর তুলে নিয়ে বিয়ে করে ফেলি।তারপর যখন বাসর রাত হয়ে গেলো।তারপর আর তো না রাজি হয়ে পারা যায় না।(আভি নির্লজ্জের মতো বলে ফেললো)

আমি উনার কথা শুনে কাশি দিয়ে উঠলাম।তারপর উনি আমার দিকে পানি এগিয়ে দিলো।
মুখে কি কিছু আটকায় না?(আমি ফিসফিস করে)

না।আটকায় না।হইছে।এখন নাও পানি খাও না হলে কাশতে কাশতে জান বের করে দিবে।(আভি)

আয়ুশ হাতের মুষ্টি বদ্ধ করে
তা তো দেখাই যাচ্ছে।কতো ভালোবাসা তোমাদের একে অপরের মধ্যে।(আয়ুশ)

লজ্জা সরম বলতে কিছু নেই।বড়োদের সামনে কি করে চলা ফেরা করতে হয় তাও জানা নেই।(ঈশানি)

আমার তো মা নেই আর বাবা থেকেও নেই।তাই আমাকে লজ্জা সরম শিখানোর মানুষ ছিলো না। কিন্তু আপনি তো থেকেও নিজের ছেলে মেয়েকে কিছু শিখাতে পারলেন না।(আভি)

খুব ভালো।সবার সামনে আমাকে অপমান।তোমার দিন ফুরিয়ে এসেছে আভি!(ঈশানি মনে মনে)

চলো।
বলেই আভি আমাকে সেখান থেকে নিয়ে চলে আসলো।


আমি আর আভি বসে আছি।
আচ্ছা।আপনার কি লজ্জা সরম আল্লাহ কিছু দেয় নাই?(আমি)

কেনো?(আভি)

আরে কি ভাবে ওই খানে ওইসব বলে ফেললেন?(আমি)

ওইটা আভির নিঞ্জা টেকনিক।(আভি ভাব নিয়ে)

আমি হাসছি উনার কথা শুনে।কে জানতো যার সাথে আমার সাপ নেউলে সম্পর্ক আজ তারসাথে আমার এতো ভালো সম্পর্ক তৈরি হবে।

এই নাও।তোমার কলেজে এসে পড়েছি।এই কলেজে কিন্তু আয়ুশও আছে।তাই সাবধানে থেকো।(আভি)

আপনি বলতে দেরি করে ফেলেছেন।ওর সাথে আমার বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।(আমি)

তাই নাকি?বেশি সমস্যা হলে আমাকে বলবা!(আভি)

না আমি সামলে নিবো।(আমি)

ওকে।তাহলে আমি আসি।
বলেই আভি গাড়ি স্টার্ট দিলো তখনই আমি বলে উঠলাম
এই থামুন।

কি হলো?(আভি)

আমার একটা বেস্টফ্রেন্ড আছে ওর সাথে একটু দেখা করবেন প্লিজ।(আমি)

আরে এতে প্লিজ বলার কি আছে!চলো গিয়ে দেখা করে আসি।
বলেই আভি গাড়ি থেকে নামলো।
আমি আভিকে নিয়ে ক্যাফেতে ঢুকলাম।আর ডালিয়াকে ফোন করে সেখানেই আসতে বললাম।

ডালিয়া এসেই
ভাইয়া?

জ্বি!(আভি)

আসসালমুআলাইকুম।কেমন আছেন?(ডালিয়া)

অলাইকুম আসসালাম। আলহাদুলিল্লাহ।তুমি?

এইতো আলহাদুলিল্লাহ।আচ্ছা আপনি ওই অনাথ আশ্রমে এসেছেন সেই ভাইয়া না?(ডালিয়া)

হুম।তোমার পারফরম্যান্স খুব ভালো ছিলো।(আভি)

বাহ!দুই বন্ধুই এক জায়গা থেকেই ভালোবাসার মানুষ পেয়ে গেলাম।(ডালিয়া)

কি বললি?(আমি কৌতূহল নিয়ে)

কিছু না কিছু না।
বলেই ডালিয়া কথা পাল্টে দিলো।
অনেকক্ষণ খোশগল্প করার পর আভি বিদায় নিলো আর আমরাও ক্লাসে চলে গেলাম।আমি ভাবতেও পারিনি আভি এতো ভালো করে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলবে।

জানিস আসু আমি অনেক খুশি তোর জন্য!ভাইয়া মনে হয় তোকে অনেক ভালোবাসে!(ডালিয়া এক গাল হেসে)

আমি ওর কথা শুনে সেখানেই দাড়িয়ে গেলাম।ভালোবাসা?তাই না?কিন্তু ভালোবাসা আমাদের মধ্যে নেই।যা আছে তা শুধু বেনিফিটস্।এছাড়া আর কিছু কোনো দিন ছিলো না আর কোনো দিন কিছু হবেও না।

কিরে দাড়িয়ে পড়লি কেনো?(ডালিয়া)

ডালিয়ার কথা শুনে আমি আমার ধ্যান ভাঙলো।
আমি ডালিয়াকে কিছু বলতে যাবো।তখনই কথা থেকে যেনো আয়ুশ এসে আমার সামনে এসে হাঁটু গেড়ে বসলো আর ওর হাতে অনেক গুলো টাটকা লাল গোলাপ।আর সেগুলো দিয়েই আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো,,

আই লাভ ইউ। উইল ইউ বি মাই গার্লফ্রেন্ড।


চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here