তুমি_আমার_অধিকার পর্ব ৯

#তুুমি_আমার_অধিকার
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্টঃ9

নদীর পাশে অন্তী মূখ ভার করে বসে আছে কেনো কথা বলছে না নিলয়ের সাথে??

_ কি হলো তুমার হুম..??
_ কিছু না “”
_ঢং দেখে পারি না বাপু । মেয়েদের এতো ঢং কোথার থেকে আসে ( নিলয় এই কথা বলে জিব কামড় দিলো)

_ অন্তী এইবার রেগে কি বললা তুমি আমি ঢং করি হুম..
দাড়া দেখাচ্ছি তুমাকে

অন্তী নিলয়কে কিল ঘুষি যা পারে দিতে থাকলো । নিলয় বেচারার আর কি করবো সে তো রাগ উঠিয়ে দিয়েছে চুপচাপ সহ্য করা ছাড়া আর কেনো উপায় নেই । অনেকক্ষণ ধরে চললো তাদের খুনসুটি ।

এইদিক ওইদিক‌ তাকাচ্ছে নিলয় না কোথাও দেখতে পাচ্ছে না তাকে নিলয়।

অন্তীঃ- কি খুজচ্ছো?
নিলয়ঃ- একজন বাদাম বিক্রেতাকে?? তার সাথে অনেক আগে পরিচয় হয়েছে । তাকে খুজছি, তার কথা বলতে না বলতেই.

মনিরঃ- স্যার আসসালামু ওয়ালাইকুম… কেমন আছুইন ।
নিলয়ঃ- ওয়ালাইকুম আসসালাম । আরে মনির যে কোথায় ছিলে এতোদিন তুমাকে খুজছিলাম ।
মনিরঃ- ওইহানে বাদাম বেচছিলাম পরে আপনাগোরে দেইখা দৌড়ে আসলাম ।
নিলয়ঃ- ও আচ্ছা ।
মনিরঃ- স্যার একখান কথা কইবার আছে??
নিলয়ঃ- কথা বলো..
মনিরঃ- স্যার কথা দিতে হবে যে আপনি আমার কথা শুনবেন.

নিলয়ঃ- আচ্ছা বলো কি কথা??
মনিরঃ- এই‌ মেডাম আপনে আজকে আমাগো বাসায় যাইতে হবে কিন্তু না করতে পারবেন না । যেদিন আপনারে প্রথম দেখছিলাম আপনি একা ছিলেন তাই যেতে চায়ছিলাম । আর আপনি বলছিলেন যে, যেইদিন দুইজন হবেন সেইদিন যাবেন । হিসেব অনুযায়ী আজকে যাবেন!!

নিলয়ঃ- মুচকি হেসে ও আচ্ছা ঠিক আছে সে না হয় যাবো!!
তো এখন বাদাম দেও ত!! আর বসো গল্প করি তারপর যাবো.

মনির তার বউকে কল দিয়ে জানিয়ে দিলো যে আজকে তাদের বাসায় মেহমান আসবে ।

নিলয়ঃ- তো তারপর তুমার বাসার কি অবস্থা তুমার বউ কেমন আছে সব ঠিকঠাক তো হুম..??
মনিরঃ- জি স্যার‌ আপনাগো দোয়ায় ভালো ।

অন্তীর ফোনে কল আসলো ,
. হ্যালো”
মেম আজকে আপনার আসার কথা ছিলো আপনি কি আসবেন না । ছেলে মেয়েরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে?
_ না আজকে আসতে পারবো না । তুমি বরং তাদেরকে বুজিয়ে বলে দিয়ো ওকে!!

ওকে মেম..

নিলয় এতোক্ষণ অন্তীর কথাগুলো খুব মন দিয়ে শুনছে তবে আগা মাথা কিছুই বের করতে পারছে না, বা বুজতে পারছে না

আচ্ছা অন্তী ওইদিন তুমি বলছিলা পরে এক সময়ে তুমার রহস্যের কথা বলবা । তো এখন তো আমরা ফ্রি আছি বলতে পারো..

অন্তীঃ- হুম শুনবা তাহলে শুনো!!

ওইদিন রাতে আমার জ্ঞান ফেরার পর আমি দেখলাম সুন্দর এক ঘরে‌ আমাকে রাখা হয়েছে । জ্ঞান ফেরার পর আমি শোয়া থেকে উঠলাম বারান্দা গেলাম । রুমটা বেশ সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো । তবে আমার কি হয়েছে বা আমি কে কিছুই বুজতে পারলাম না । আমার মনে হলো আমি সব গুলিয়ে ফেলছি ।

. মধ্য বয়স্ক এক লোক আসলো খুব সুন্দর ভাবে আমার সাথে কথা বললো আমি শুধু চেয়ে থাকলাম । তার কথায় কেনো জবাব দিলাম না ।

দেখলাম একজন মহিলা আসলো হাতে কিছু খাবার নিয়ে.
তারপর ওরা আমায় বসিয়ে দিলো খাবার খাওয়ায় দিলো।

আমাকে ঘুমাতে বললো আর কালকে কথা বলবে বলে চলে গেলো । আমার প্রচন্ড ঘুম ধরছিলো ঘুমিয়ে গেলাম ।

পরের দিন সকালে তারা আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলো ।

_ রোগী আপনাদের কি হয়??
_ আমার মেয়ে আমরা তার বাবা‌ মা!!

আমি শুধু ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে থাকলাম । কিছুই‌ বুজতে পারছি না ।
_ ডাক্তার চেকআপ করে দিলো আর বললো সে ঠিক হতে একমাস সময় লাগবে এই‌ একমাসে তাকে খুব যত্ন নিতে হবে..

ওকে ডাক্তার, সমস্যা নেই আমরা তার ঠিকমতো যত্ন নিবো

বাসায় চলে আসলাম তারা ঠিক একমাস আমাকে খুব যত্ন নিলো । আমি আস্তে আস্তে তাদের বাবা মা ডাকতে শুরু করলাম । আর‌ কেনো ডাকবো না বলো তারা আমায় খুব আদর করছে‌.

নিলয় বললো তারপর কিভাবে তুমার সবকিছু মনে পড়লো ।
অন্তীঃ হুম শুনো, প্রত্যেকদিন আব্বু আমায় ঘুরতে নিয়ে যেতো তবে একদিন আমি নিজ থেকে বের হলাম । অনেক জায়গায় ঘুরলাম ঘুরতে ঘুরতে এই নদীর ধারে আসলাম ।

এই জায়গায় এসে বসলাম, বসতেই মাথাটা ঝিম ঝিম করা শুরু করছে । মাথায় শুধু একটা জিনিস ঘুরপাক খাচ্ছে আমি এখানে এসেছি আরো বহুবার । তবে কার সাথে আসলাম সেটা মনে পড়ছে না । সেখান থেকে বাসায় চলে গেলাম ।

রাতে বাবা আসলে তাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম আমাকে কোথার থেকে পেয়েছে ??
_ তারপর ওনি সব খুলে বললো । আমার কিছুটা মনে পড়ছে
পরের দিন আমি ওই জায়গায় গেলাম, সেখান থেকে হাটতে হাটতে আমাদের ভার্সিটির সামনে চলে এলাম । এরপর আমার সব মনে পড়তে শুরু করছে । আমি সেখানে গিয়ে তুমাকে অনেক খুজলাম কিন্তু পেলাম না ।

_ একটু আগে যে কথা বললাম, আমি একটা এতিমখানা দিয়েছি বাবাকে বলে, অসহায় বাচ্ছাদের ভারণপোষণ পড়াশুনা সব আমি দেখাশুনা করি । কারণ একসময়ে আমি এমন ছিলাম ।

নিলয়ঃ- যাক ভালো‌ উদ্দেগ নিয়েছো তুমি খুব ভালো তারপর?

অন্তীঃ- তারপর আর কী !! প্রত্যেকদিন এই নদীর ধারে আসতাম আর তোমার খুজতাম বসে থাকতাম তুমার অপেক্ষা
আর ভাবতাম একদিন ঠিক তুমার দেখা পাবো ।

পরে একদিন এসে দেখতে পারলাম তুমার মতো কেউ একজন বসে আছে । আমার মন বলছে এটা তুমি দৌড়ে এসে তুমার সামনে আসলাম । আর দেখা হলো আমাদের

নিলয়ঃ- হুম যাক ভালো!!

মনিরঃ- স্যার অনেকক্ষণ হয়ছে, এহেন চলেন বাসায় যেতে হবে??

নিলয়ঃ- হুম চলো ..

নিলয় অন্তী বাদাম বিক্রেতার বাসায় গেলো খুপড়ি ছনের ঘর তবে রুমটা সুন্দর করে সাজিয়েছে আমাদের জন্য । আমাদের বসতে কষ্ট হলোও মানিয়ে নিলাম । আর রান্নাটা দারুণ হয়েছে । অনেকদিন পর পেটপুরে খেলাম । খেয়ে খুব তৃপ্তি পেলাম ।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে মনিরের হাতে কিছু টাকা গুজে দিলাম আর আমার নাম্বারটা দিয়ে দিলাম । বললাম পরের দিন আমারা ঘুরতে যাবো । তুমাকে কল দিলে বউকে নিয়ে চলে‌ আসো । আর যে টাকা গুলো দিলাম সে গুলো দিয়ে ভালো দেখে তুমার আর বউয়ের জন্য জামা কাপড় কিনো ।

তাদের বাসা থেকে বের হয়ে অন্তীকে একটা রিক্সা উঠিয়ে বাসার দিকে হাটা শুরু করলাম ।

রাতে খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়লাম কালকে খুব সকালে উঠতে হবে সব কিছু গুছাতে হবে ।

_ পরের দিন..

ছয়টা টিকেট কাটলাম, সেন্টমার্টিন এসি বাসের বাসটা ভালো সার্ভিস দিচ্ছে ইদানিং তাই এটার টিকেট কাটলাম ।

আবির অথৈ এক এক করে সবাই চলে আসলো কিন্তু অন্তীর আসার কেনো নাম গন্ধ নেই । মেয়েটা ইদানিং টাইম ওয়েস্ট করা শুরু করছে ।

_ অন্তীর ঘড়ির এলার্ম বেজে উঠলো, সে এতোক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলো । ধড়ফড়িয়ে উঠে দেখলো ও আল্লাহ খায়ছে মাত্র 30 মিনিট সময় আছে তারপর বাস ছেড়ে দিবে । সে উঠে কি করবা‌ না করবে বুজতে পারছে না । এক প্রকার দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিয়েছে বাসায় । আর বাবা মাকে বকা শুরু করছে
সব তুমাদের জন্য তুমরা আমাকে ডাক দিলা‌ না ইচ্ছে করে

হারুনঃ শুনো মেয়ের কথা কত ডাক দিলাম উঠার কেনো নাম গন্ধ নেই তার । আর এখন সব আমাদের দোষ হুম….

_ মেয়ের এই কান্ডে দেখে তার হারুন সাহেব ও‌ তার স্তী হাসতে হাসতে শেষ ।

_ অন্তী কি করবে বুজতে পারছে না । তাড়াতাড়ি ওয়াসরুমে ডুকে ফ্রেশ হয়ে আসলা । মেকআপ করার সুযোগ নেই । ব্যাগে দুই তিনটা কাপড় নিয়ে বেরিয়ে পড়লো ।

অন্তীর ফোনে কলের পর কল আসছে.. ফোন সাইলেন্ট করা তাই বুজতে পারছে না সে ।

অন্তীঃ- বায় বায় মা, বাবা! মুখ ভেংচিয় কাটলো তাদের দিকে চেয়ে অন্তী !! 😏😏😏

হারুন সাহেব ও তার বউ হাসতে হাসতে পুরাই শেষ.. 😂😂😂😂 সাবধানে যাইস মা আর পৌছেয়ে কল দিবি কিন্তু..

বাস ছেড়ে দিয়েছে এখনও অন্তীর আসার কেনো নাম গন্ধ নেই নিলয় বাসের দরজা সামনে দাড়িয়ে আছে কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে তার যে কেউ দেখলে বুজবে ??

আবির অথৈ মনির সবাই চিন্তিত অন্তী কোথায় সে আসছে না কেনো । তাহলে কি অন্তীকে কি না নিয়ে যেতে হবে??

আপনারা কি বলেন.. ?? 🙂

( অন্তীর রহস্যের জট খুলে দিলাম । আর বাদমওয়ালাকে আমাদের সাথে নিয়ে নিলাম) চিল হবে শুধু.

পরের পার্টের জন্য অপেক্ষা করুন ধন্যবাদ.

চলবে..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here