#দ্যা_বিউটি_অফ_লাভ
#লেখিকাঃরাকিবা_ইসলাম_আশা
#পর্বঃ১৫
তারপর গাড়ি গিয়ে থামলো বড়ো একটা আইসক্রিম স্টলে।কিনারা আর সাদিত গিয়ে বসলো স্টলের ভিতরে।তারপর ওরা বসতেই একটা ওয়েটার মেনু কার্ড৷ নিয়ে এলো। সাদিত মেনু কার্ডটা হাতে নিয়ে উল্টে-পাল্টে দেখে বলল ।ভ্যানিলা ফ্লেভারের একয়েকটা আইসক্রিম দিতে।
ওয়েটার কিনারা সামনে আইসক্রিম গুলো রাখতেই, কিনারা চট করেই আইসক্রিমের একটা বাটি টা নিয়ে গপ-গপ করে খেতে শুরু করলো।আইসক্রিম একটা খাওয়া শেষ করে আরেকটা হাতে নিয়ে অর্ধেক খাওয়া শেষ হতেই কিনারার মনে হলো পাশে সাদিত বসে আছে।মনে হতেই কিনারা নিজেই নিজেকে বকা দিতে শুরু করলো। এই কিনারা তুই কি রাক্ষস হ্যাঁ।মানলাম তোর আইসক্রিম পছন্দ কিন্তু তাই বলে দুনিয়া ভুলে খেতে শুরু করলি।পাশে যে একটা জলজ্যান্ত মানুষ বসা তার দিকে কি তোর খেয়াল আছে। এমন বেক্কলের মত একা একা গিলছিস।কি ভাবছেন উনি।নিশ্চয়ই রাক্ষস।আর ভাবলেই কি যা করলাম ভাবাটাই স্বাভাবিক।
কিনারা জোর পূর্বক হেসে সাদিতের দিকে তাকিয়ে বলল– আপনি খাচ্ছেন না কেন।খান অনেক মজা।
সাদিত কিনারার বাচ্চামো স্বভাব দেখে একটা মুচকি হেসে বলল বলল আমি আইসক্রিম খাইনা।তার থেকে বরং তুমি খাও আমি দেখি।
কিনারা এক চামচ আইসক্রিম সাদিতের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে বলল– আরে হা করুন খেয়ে দেখুন।আপনিও এই ভ্যানিলা আইসক্রিমের প্রেমে পড়ে যাবেন।
সাদিত কিনারার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে খেয়ে নিলো।তারপর কিনারাকে বলল এবার তুমি খাও।
কিনারা তিন বাটি খেয়ে, আর এক বাটি খেতে নিতেই সাদিত কিনার বাটি টা নিয়ে রেখে দিয়ে,খেতে না করলো বলল একবারে এতো খেলে ঠান্ডা লেগে যাবে।তার থেকে ভালো ভ্যানিলা ফ্লেভারের সব আইসক্রিম বাসায় নিয়ে যাবো তারপর তুমি ফ্রিজ রেখে রেখে খেও কেমন।
সাদিতের কথা শুনে কিনারা হেসে গদগদ হয়ে বলল— ঠিক আছে চলুন এবার বলে উঠতে নিলেই সাদিত কিনারার হাতটা ধরে আাবার চেয়ারে বসিয়ে দিলো।
কিনারা সাদিতের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো—-তারপর চোখ দিয়ে ইশারা করে বলল —কি
আরে কিনারা ওয়েট তোমার মুখে আইসক্রিমের ক্রিম লেগে আছে।এটা আগে ক্লিন করো।
কিনারা সাদিতের কথা শুনে চোখ মুখ কুঁচকে নিজের ফোনটা বের করে দেখলো সত্যিই মুখে আইসক্রিম লেগে আছে। তারপর সাদিতের দিকে তাকিয়ে লজ্জা পেয়ে আমতাআমতা করে বলল আসলে এতোগুলো আইসক্রিম আমার জন্য বাসায় নিয়ে যাচ্ছেন। তাই খুশিতে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম, আর মন শুধু বাড়ি বাড়ি করছিলো।
সাদিত কিনারার কথা শুনে হুহু করে হাসতে শুরু করলো।তারপর হাসি থামিয়ে ঘোর লাগা চোখে কিনারার দিকে তাকিয়ে ভাবলো,,,এই প্রথম কিনারাকে এতো ছেলে মানুষী করতে দেখলাম।সত্যি একদম বাচ্চাদের মতো স্বভাবের।এতোদিন যেনো এক অন্য কিনারাকে দেখেছে,যে সবসময় চুপচাপ থেকেছে,প্রয়োজন ছাড়া কথা বলতো না।কিন্তু আজ এই প্রথম সাদিত অন্যরকম কিনারাকে দেখলো।
কিনারা সাদিতের হাসি দেখে ঠোঁট উল্টে ফেলল।
তারপর একটা টিস্যু দিয়ে মুখটা মুছতে নিলেই সাদিত কিনারার হাতটা ধরে ফেলে।তারপর একটানে কিনারাকে কাছে টেনে নিয়ে কিনার মুখে লেগে থাকা আইসক্রিম গুলো সাদিত ওর ঠোঁট দিয়ে খেতে শুরু করলো।
সাদিতের এমন কান্ডে কিনারা যেনো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো।মুহুর্তেই কিনারা কেঁপে উঠলো।কিনারার হাত থেকে টিস্যুটা পড়ে গেলো,কিনারা চোখ মুখ খিঁচে সাদিতের শার্টটা চেপে ধরলো।সাদিতের ঠোঁট কিনারার ঠোঁটের চারপাশে স্পর্শ করতেই কিনারার সারা শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেনো একটা উষ্ণ শিহরন বয়ে গেলো ।কিনারার বুকের ভিতর হার্টবিটটা বেমাত্রায় ছুটছিলো। ।কিনারা নিশ্বাস এত্ত ঘন হয়ে এলো যে কিনারা যেনো আর দম নিতে পারলো না।
সাদিত বুঝতে পেয়ে কিনারার কাছ থেকে সরে এলো।তারপর একটা টিস্যু নিয়ে সুন্দর করে কিনারার মুখটা ক্লিন করে দিলো।
কিনারা তখনো চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে রেখে দ্রুত শ্বাস ফেলছে।
সাদিত মুচকি হেসে বলল হয়ে গেছে চলো এবার।
কিনারার তখনো জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলছে লজ্জায় সাদিতের দিকে তাকাতে পারলো না।
তারপর ওরা বাসায় ফিরে এলো।
★★★★★★
দুপুরে খাওয়ার পর কিনারার মাথাটা ভিষণ ব্যাথা করছে।তাই সাদিত ওকে ঘুমাতে বলল কিন্তু কিনারার দিনে ঘুমানোর অভ্যাস নেই,, তাই কিনারা ঘুমাতে নারাজ।এক সময় সাদিত কিনারাকে জোর করে কোলে তুলে খাটে শুইয়ে নিজেও কিনারার পাশে শুয়ে বুকের উপর নিয়ে বাধ্য করলো কিনারাকে ঘুমাতে ।সাদিত কিনারার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে নিজেও ঘুমিয়ে পড়লো।
★★★★★
সাদিত আর কিনারা কতক্ষন ঘুমালো ভাবনা অতীত।সন্ধ্যার পর কিনারা অনুভব করলো নরম কিছুর উপর শুয়ে আছে।তারপর কিনারা ভাবলো কই উনার বুক তো শক্ত এতো নরম তো না৷ তাহলে কিসের উপর শুয়ে আছি।কিনারা ঘুম ঘুম চোখে সাদিতকে ধরার চেষ্টা করলো কিন্তু হাত দিয়ে পেলো না।বিষয়টা বুঝার জন্য কিনারা চোখ মেলো তাকালো।চোখ মেলে নিজেকে বালিশের মধ্যে আবিষ্কার করলো কিনারা।আর খাটের এক পাশেই সাদিত বসে ল্যাপটপে কাজ করছে। তা দেখে হঠাৎই কেন জানি কিনারার মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো।আমি উনার বুকে ঘুমিয়ে ছিলাম আর উনি আমাকে বালিশে শুইয়ে দিয়েছে। উনার কাছে উনার কাজ আগে তো, আমি কে।আমি তো কেউ না।কয়দিন পর আমাকে ছুড়ে ফেলে দিবে তা বুঝতে পারছি আমি শুধু উনার মোহ।এসব ভাবতে ভাবতে রেগে গজগজ করতে করতে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
#দ্যা_বিউটি_অফ_লাভ
#লেখিকাঃরাকিবা_ইসলাম_আশা
#পর্বঃ১৬
কিনারা ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখে সাদিত তখনো কাজে ডুবে আছে।
কিনারা আয়নার সামনে গিয়ে চুল টা ঠিক করে ওড়না টা নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।তারপর আবার রুমে উঁকি দিলো—-এইবার কিনারার কান্না পেয়ে গেলো।আমি রুম থেকে বেরিয়ে অব্দি গেলাম আর উনি আমার দিকে একবার ও তাকানোর প্রয়োজন মনে করলেন না।
থাকুন আপনার কাজ নিয়ে মনে মনে সাদিতকে বকতে বকতে চলে গেলো।
★★★★★★★
সাদিত পাশে তাকিয়ে দেখলো কিনারা নেই, মনের ভুল ভেবে আবার তাকালো।দেখলো সত্যিই কিনারা নেই। আশ্চর্য মাত্র কিছুক্ষন আগে বালিশের উপর কিনারাকে শুইয়ে, একটা ইম্পর্টেন্ট মেইল আসছে তা চ্যাক করতে ছিলাম এরমাঝে কই গেলো।ওয়াশরুমে যায়নি তো।কিন্তু না ওয়াশরুমেও নেই। তারপর সাদিত ল্যাপটপ টা অফ করে নিচে চলে গেলো,গিয়ে দেখলো কিনারা কোথাও নেই। তারপর সাদিত ছাদের দিকে পা বাড়ালো।
★★★★★★★
সন্ধ্যে হতেই একে একে ব্যস্ত নগরীর সব আলো গুলো জ্বলে উঠতে লাগলো।।রাস্তা দিয়ে গাড়ি গুলো রঙিন আলোয় ছুটছে।অবশ্য আকাশ আজ মেঘের গুমুট বেঁধে আছে, যেকোনো সময় বর্ষণ হতে পারে।হঠাৎই এতো বাতাস শুরু হলো মনে হচ্ছে উড়িয়ে নিয়ে যাবে।কিনারা ছাদের রেলিং এ দুহাত দিয়ে ধরে দাঁড়ালো। আর গুন গুন করে বলতে শুরু করলো————–
তুমি চাইলে বৃষ্টি, মেঘও ছিলো রাজি,
অপেক্ষা সুদূর বর্ষনের।
মাতাল হাওয়া বইছে, দূরের পাখি গাইছে গান।
বৃষ্টি তোমার আহ্বান।
হঠাৎই কিনারা কাঁধে কারোর ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠলো,তারপর মাথা পিছনে ঘুরে তাকাতেই কারোর বুকের সাথে মাথা টা লেগে আছে।সেই বুকের হার্টবিটের ধুকবুকানো কিনারা শুনতে পাচ্ছে,কিনারার আর বুঝতে বাকি রইলো না মানুষটা কে।
সাদিত বলল কখন ছাদে এলে,আমাকে বললে না কেন আমিও আসতাম তোমার সাথে ।তারপর সাদিত আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল–কিনারার হাত ধরে টেনে বলল– কিনারা বৃষ্টি শুরু হবে নিচে চলো—-
কিনারা কথা শুনে ও না শুনার মতো করে,সাদিতের থেকে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
সাদিত কিনারার হাতটা আবার ধরে বলল—-কি হলো চলো, বৃষ্টি নামবে —- ভিজবা তো তখন আবার তোমার ঠান্ডা লেগে যাবে ।কিছুটা রাগ নিয়ে কিনারাকে বলল—সাদিত রেগে বললেও কিনারার মুখের দিকে তাকিয়ে থেমে গেলো।
কিনারা রাগী লুক নিয়ে বলল— আমি যাবো না।
সাদিত কিনারার হাতটা ছেড়ে বলল— আচ্ছা ঠিক আছে যেতে হবে না।
কিনারা মনে মনে ভাবলো আজব লোক তো আমি যাবোনা বলেছি জন্য উনি আমাকে জোর করবে না।ওকে করতে হবে না।কেন করবেন কে হয় আমি। বুঝি তো ওসব ভালোবাসা টালোবাসা কিচ্ছু নেই, সব মিথ্যে।উনি এসব মৌহের জন্য বলে, মৌহ যতদিন আছে উনি আমার কাছে ততদিনই আসবে।তারপর মৌহ যেদিন শেষ হয়ে যাবে তখন উনি চলে যাবেন।এসব ভাবতেই কিনারার চোখ ছলছল করতে লাগলো।
তারপর কিনারা আবার ভাবলো আমি এতো ইমোশনাল হয়ে পড়ছি কেন।উনি যা ইচ্ছে করুক আমার কি।আমার যতটুকু দায়িত্ব সেটাই না হয় পালন করি। এতো ভেবে আমার কাজ নেই ।উনি আমাকে এতোগুলো টাকা দিয়ে হেল্প করলো আমি উনার জন্য এইটুকু করতেই পারি।বলে আবার রেলিং ধরে সামনে আকাশের দিকে তাকিয়ে হাতের পিঠ দিয়ে চোখের পানিটা মুছলো।
সাদিত কিনারার কাছে গিয়ে কিনারাকে দুহাতে কোমড় আঁকড়ে ধরে কিনারার কাঁধে,পিঠে ঠোঁট বুলিয়েই যাচ্ছে।
ঠান্ডা বাতাস তার সাথে সাদিতের উষ্ণ স্পর্শ, কিনারা আর সহ্য করতে না পেয়ে চোখ বন্ধ করে রইলো।কিনারা কিছু না বলে চুপ করে রইলো।
সাদিত কিনারার কাঁধে মুখ ডুবিয়ে দিতেই, কিনারা আস্তে আস্তে ওর চোখ দুটো খুলল—-
কিনারার হৃদস্পন্দন টা তখনো এতো জুড়ে ছুটছিলো যে,এর থেকে বেশি ছুটলে হয়তো কিনারা তা সহ্য করতে পারবে না।একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে সামনের আকাশে দিকে তাকিয়ে সাদিতকে উদ্দেশ্য করে বলল —-
মিস্টার চৌধুরী আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে পারি।
সাদিত কিনারাকে আঁকড়ে ধরেই বলল— হুম সিওর।হোয়াই নট।
কথাটা শুনে কিনারা একটু আড় চোখে পিছনে দেখে আবার আকাশের দিকে তাকালো।এতো জন থাকতে আপনি কেন আমাকেই কেন বেছে নিলেন বিয়ে করার জন্য। হোয়াই মি।কিনারার চোখে মুখে তখনো ভাবনা আর কৌতুহলের ছাপ——–
কিনারা আবার প্রশ্ন করলো —-আপনার মতো সম্মানীয় ব্যক্তির কাছে আরও অনেক অপশন রয়েছিলো।তার সত্বেও কেন আমাকেই বিয়ে করলেন???? কিনারা নিজের মনে মনে ভাবতে লাগলো মিস্টার চৌধুরী কেনই বা ওকে বেছে নিলো,এর পিছনে কারণ টা কি ছিলো।মিস্টার চৌধুরী জায়গায় যদি অন্য কেউ থাকতো তাহলে কোনো রেন্ডম মেয়েকে বেছে নিতো।কিন্তু কিনারা জানে ওকে সুন্দর দেখতে,সেটা নিয়ে বরাবরই কিনারা আত্মবিশ্বাসী। তা সত্বেও কিনারার মনে হয়নি ওর এমন সৌন্দর্য দেখে সাদিতের মতো অতো হ্যান্ডসাম একটা ছেলে কিনারার মতো একটা মেয়েকে প্রথম দেখেই প্রেমে পড়তে পারে।সাদিতের মতো এমন পার্সোনালিটির মানুষের অসংখ্য সুন্দরী মেয়ে থাকার কথা। তাহলে তো৷ মিস্টার চৌধুরী অনেক সুন্দরী মেয়ে দেখেছে।তা সত্বেও মিস্টার চৌধুরী আমাকে কেন বেছে নিলো।কিনারার মনে এসব চিন্তা ঘুরপাক খেতে লাগলো।
কিনারার কথা শুনে সাদিত কিনারার দিকে আড় চোখে তাকালো —- তুমি সত্যিই জানতে চাও।
কিনারা মাথা নেড়ে বলল হ্যাঁ জানতে চাই —-
সাদিত বলতে শুরু করলো—-তুমি একমাত্র মেয়ে যাকে দেখে আমার ভালো লেগেছিলো।আমি আমার লাইফে যতগুলো সুন্দরী ও যোগ্যতা সম্পূর্ণ মেয়ে দেখেছি সবাই,আমার দিকে অন্য চোখে তাকিয়ে থাকতো,এবং আমার সুযোগ খোঁজার চেষ্টা করতো।কিন্তু তুমি যেদিন আমার এনজিও হয়ে আমার অফিসে সাহায্যের জন্য এলে,একমাত্র তুমিই যে মেয়ে যার সামনে এত্তো হ্যান্ডসাম ও এত্ত হাই প্রফেশনাল ব্যক্তি থাকা সত্বেও, সে ব্যক্তিকে দেখেও তুমি একবারও আমার দিকে সেভাবে তাকিয়ে কথা বলোনি।প্রত্যেকটা কথা তুমি আমার সামনে মাথা নিচু করে বলেছো। তারপর হুট করে আমার মাথায় বিয়ের ব্যাপারটা এলো আর তোমাকে আমাকে বিয়ে করার কন্ডিশন দেয়। এখন তুমি ছাড়া অন্য কোনো মেয়ে আমার কাছে এলে ভালো লাগে না। এরকম আমি আগে কখনো ফিল করিনি।
তাই বলে টাকার এমাউন্ট ধরার মতো একটা কন্ডিশন দিলেন।যে আমি আপনাকে বিয়ে না করলে আমার ভাইয়ের অপারেশন করতে সাহায্য করবেন না এরকম একটা কন্ডিশন কেন??আপনি তো এটাও বলতে পারতেন আপনি আমাকে ভালোবাসেন বা প্রথম দেখাই আমাকে ভালো লেগেছে আমাকে কিংবা বিয়ে টা তো পরেও করতে পারতেন তাই না।
কারণ আমার এটা মনে হয়নি, আমি যদি বলতাম তোমাকে,, আমি এক দেখায় তোমাকে ভালো লেগেছে, এটা তুমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে না,ভাবতে আমার মৌহ এটা।আর পরে তোমাকে বিয়ে করতে চাইলেও তুমি রাজি হতে না।যেমন এখন তোমার মনে হয় তুমি আমার শুধু মোহ।আমি এটা বুঝতে পারি যে তুমি আমার থেকে দূরে সরে যাও এই সব ভেবেই তাই না।
কথা গুলো শুনে কিনারা চুপ করে রইলো — ওর মুখ থেকে একটা কথা ও বের হলো না।কিনারা নিরব হয়ে ভাবলো তাহলে সত্যিই মিস্টার চৌধুরীর আমাকে ভালো লাগে।একটু চুপ থেকে কিনারার আবার বলল — আপনার আমাকে বিয়ে করা উচিত হয়নি।আপনার উচিত আপনার মনের মতো কাউকে বিয়ে করার।এখন আপনি সেরকম কাউকে না পেলেও—-ভবিষ্যতে আশা করি পেয়ে যাবেন।
সাদিত কিনারার কথা শুনে রেগে গেলেও সেটা প্রকাশ করলো না তাই চাপা ঠোঁটে বলল মনের মতো সেটা আবার কিরকম —-আর বুঝবো কি করে সে আমার মনের মতন।কিনারাকে ছেড়ে হাত দুটো পকেটে ঢুকিয়ে কিনারার দিকে প্রশ্নসূচক করে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো।
কিনারা৷ মাথা নিচু করে বলল— আজ্ঞে মনের মতোন মানেএএএ —-আপনি যখন তাকে মিস করবেন, তাকে দেখার পর আপনি এতোটাই খুশি হবেন, সেটা আপনার চোখে মুখে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠবে।তাকে দেখা মাত্রই আপনি তার কাছে আসতে চাইবেন।আপনি যখন কোনো ব্যাপারে খুব খুশি হবেন।সেটা আপনি আগে তাকে জানাতে চাইবেন।যখন আপনি খুশি থাকবেন না।সেটাও আপনি সবার আগে তাকে জানাবেন।আপনার সমস্ত সুখ দুঃখের কথা তার সাথে শেয়ার করবেন।যদি আপনার তাকে মন থেকে ভালো লাগে তাহলে তাকে দেখলেই আপনার হার্টবিট বেড়ে যাবে।আপনি নার্ভাস হয়ে যাবেন।তখন আপনার চোখ মুখ ব্লাস করতে করতে লাল হয়ে যাবে।এতোগুলো কথা একসাথে বলতে বলতে কিনারার গলা শুকিয়ে উঠলো।ও কাশতে শুরু করলো।
সাদিত কিনারার কাছে গিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল রিলেক্স, দম ফেলে কথা বলো।আমি আছি এখানে কোথাও যাচ্ছি না যে সব এখনি বলে ফেলতে হবে।বলে মুচকি হাসলো।
কিনারা কাশতে কাশতে ভাবলো—-এ কথা গুলো আমি কি মরতে যে বলতে গেলাম।কারণ মিস্টার চৌধুরীকে দেখে তো আমার নিজেরই হার্টবিট বেড়ে যায়।উনাকে দেখলেই আমি নার্ভাস হয়ে যায়।তার মানে কি আমি মিস্টার চৌধুরী কে পছন্দ করি—-এসব ভেবে কিনারা আরো কাশি বাড়তে শুরু করলো। না না না এ হতে পারে না।কাশতে কশতে একটু শান্ত হতেই সাদিতের হ্যান্ডসাম মুখের দিকে তাকাতেই আবার কিনারার হার্টবিট বেড়ে গেলো।তারপর আমতাআমতা করে বলল আমি কিছু মিন করে বলতে চাই নি।আমি নিজের মনে এতো গুলো কথা বলে ফেলেছি।ডোন্ট টেক এ পার্সোনালিটি। আপনি এটা নিয়ে এতো ভাববেন না প্লিজ।
সাদিত মুচকি হাসতে হাসতে কিনারার দিকে তাকিয়ে ছিলো।তারপর খুব গম্ভীর ভাবে বলল —তোমার কথা যদি কিছু হলেও সত্যি হয় —- তাহলে এটাই দাঁড়ায়, আমার তাকে মন থেকে ভালো লাগে। তাই তো।
সাদিত কিনারার কাছে গিয়ে ওর হাত দুটো মুঠোয় নিয়ে কিনারার চোখের দিকে তাকিয়ে বললল —– আমি তোমাকে মিস করি।তোমার কাছে গেলেই আমার হার্টবিট বেড়ে যায়। যখন তোমাকে আমার সামনে দেখতে পায়না তখন অস্থির হয়ে যায়।তোমাকে দেখলেই আমার তোমার কাছে যেতে ইচ্ছে করে, আদর করতে ইচ্ছে করে,, ভালোবাসতে ইচ্ছে করে যতোটা ভালো বাসা যায় তার থেকেও বেশি উজাড় করে ভালোবাসতে মন চাই। তাহলে কিনারা এর মানে কি তোমাকে আমার মন থেকে ভালো লাগে।প্লিজ বলো।আমি তোমার মুখ থেকে এই উত্তর টা জানতে চাই।আমার প্রশ্নের উত্তর কি আছে তোমার কাছে??
#চলবে
#চলবে