প্রেম প্রিয়জন পর্ব ৬

#প্রেম__প্রিয়জন🌸
#Writer_Sumaiya_Karim

~ষষ্ঠ পর্ব~

পূর্ণ হেসে নিজের রুমে চলে আসে। ল্যাপটপ টা নিতে বসে ও। যেখানে পরির ছোট বেলাকার পিক রয়েছে। দেখতে দেখতে একটা পিকের সামনে পড়ে এবং হুট করে দৃষ্টি আটকে যায়। পরির হাতে মিষ্টি একটা পুতুল আর পরির মুখ কুঁচকে কান্না করছে। সেদিনের ঘটনা টা চোখের সামনে দৃশ্যমান রুপ নিলো। পূর্ণ মেবি তখন সপ্তম শ্রেণী তে ছিলো। পরি তার থেকে বয়সে অনেক টা ছোট। বয়সের তুলনায় পাকনা বুড়ি সে। পুতুল টা হাতে নিয়ে পূর্ণের রুমে এসে এদিক ওদিক তাকিয়ে বলে,

–‘পুন্ন ভাই..!’

নিজের নাম টার জগাখিচুড়ি হয়ে যায় প্রতিদিন। তাও পরির মুখে। সঠিক উচ্চারণ পরি করে না বলে রাগ হতো তার। রেগে সেদিন ও তেড়ে আসলো তার দিকে।

–‘পরি তোকে কতো বার বলেছি আমার নাম পুন্ন বলবি না। পূর্ণ হবে বুঝেছিস?’

–‘না পুন্ন হবে!’

–‘পরি ঠিক করে বল!’

–‘এমন করো কেন তুমি আমার সাথে? কেঁদে দিবো!’

–‘তাতে আমার কি?’

–‘কাঁদবো তাহলে?’

–‘হ্যাঁ আমি ও দেখি কতো কাঁদতে পারিস!’

সত্যি ই পরি ঠোঁট দুটো বাকিয়ে সেদিন কেঁদে দিয়েছিলো। যাকে বলে কোনো রকম আঘাত ছাড়া টিপ দিলে চোখের পানি পড়া। পূর্ণ হা হয়ে গিয়েছিলো আর মনে মনে ভাবছিলো এটা মেয়ে নাকি অন্য কিছু! দুষ্টু বুদ্ধি মাথায় উদয় হতেই পূর্ণ তার পছন্দের ক্যামেরা টা নেয় আর পরির কান্নার একটা ফটো তুলে নেয়। মনে করেছিলো পরি একদিন বড় হলে ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে বলবে দেখ তোকে কাঁদলে ছোট বেলায় কেমন লাগতো! পুরা ডায়নি ভূতনি মতো হাহাহা! এটা শুনলে নিশ্চয়ই পরি রেগে যেতো। তক্ষুনি হঠাৎ করে কোথা থেকে পূর্ণের মা চলে আসে আর ছোট্ট পরি পিঠে দুম করে একটা লাগিয়ে দিয়ে চেঁচিয়ে বলেন,

–‘সারাদিন ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কান্না করা ছাড়া আর কিছু পারিস না?’

মুহুর্তের মধ্যেই পূর্ণ বন্ধ চোখ দুটো খুলে ফেললো। ফিলিংস সব দুমড়ে মুচড়ে গেছে। এখন সে আর কিছুই ভাবতে চায় না তাই ঘুমানোর চেষ্টা করলো।

পরের দিন সকালে……….

পরি তাড়াতাড়ি উঠে নাস্তা তৈরি করে নেয় হাতটা এখন মোটামুটি ঠিক আছে। সময় মতো নাস্তা না পেলে জেঠা জেঠি পুষ্পা সবাই চেঁচামেচি শুরু করবে তাই সে ঝটপট সব রেডি করে ফেলে। কি দরকার সময় নষ্ট করে বকাবকি শুনার? তার চেয়ে তৈরি করে নেওয়াই ভালো মনে করলো সে। রান্না সে ভালোই পারে। হোস্টেলে নিজেই রান্না করে খায়। এমনিতে হোস্টেলের খাবারে তার ভালো লাগে না। মূলত তৃপ্তি ই মিটে না।

যথারীতি সবাই ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করতে আসে শুধু পূর্ণ নেই। পরি নাস্তায় রুটি পরোটা আর আলু ভাজি ডিম করেছে। বাদ বাকি ফ্রুট টেবিলে আছেই। সব কিছু একবার চেখে নিয়ে দেখেছে একদম ঠিকঠাক আছে তারপর ও সে জানে জেঠি কথা শোনাবে সিউর। খুঁত তো তিনি ধরবেন ই। ঠিক সেটাই হলো রুটি মুখে দিতেই জেঠি রেগে অগ্নিদগ্ধে তপ্ত কন্ঠে বললেন,

–‘এটা কি বানিয়েছিস? মানচিত্র নাকি রুটি? আর মুখে দেওয়া যাচ্ছে না। লবণ এই জন্যই বেশি করে দিয়েছিস যাতে আমরা খেতে না পারি তাই তো?’

–‘জেঠি লবণ তো পরিমাণ মতো দিয়েছি!’

–‘আবারো আমার মুখে মুখে কথা?’

পুষ্পা রুটি খায় না তবুও আজ এক টুকরো মুখে দিয়ে দেখলো লবণ ঠিকমতো ই হয়েছে। শুধু শুধুই কথা শোনাচ্ছে তার মা। তাই সে বলে উঠলো,

–‘মা লবণ বেশি কোথায় হলো? আমি তো দেখছি ঠিক আছে!’

জেঠা বললো,

–‘তোর মা বলছে যখন ঠিক টাই বলেছে!’

–‘না বাবা মা ঠিক বলে নি।’

পুষ্পার কথা শুনে জেঠি যেনো আকাশ থেকে টুপ করেই নিচে পড়লো। চোখ রাঙিয়ে বললো,

–‘পুষ্পা তুই তো রুটি খাস ই না। তাহলে কিভাবে বুঝলি?'[পুষ্পা যে রুটি এক টুকরো খেয়েছে তা উনার চক্ষু এড়িয়েছিলো!]

–‘খাই না তবে খেতে তো বাঁধা নেই। আমি খেয়ে দেখেই বলেছি ঠিক আছে!’

–‘[গান বেসুরে বাজছে দেখে তিনি সতর্কতার সুরে মেয়ে কে ডাক দেন] পুষ্পা?’

–‘হ্যাঁ মা তোমার যদি খেতে ভালো না লাগে তাহলে এই নাও পরোটা! তাও চেঁচিও না প্লিজ। সকাল সকাল এসব ভালো লাগছে না!’

তিনি রিতিমত অবাক হয়ে যান। যেনো নিজের মেয়েকেই চিনতে ভুল হচ্ছে। চুপচাপ খেতে থাকেন তিনি। পরি শক্ড পুষ্পার কথা শুনে। রাতের সেই পুষ্পা আর এই পুষ্পার মধ্যে অনেক বেশি পার্থক্য কিন্তু কেন? উত্তর টা যেনো পরি ঠিক নিজেও মেলাতে পারছে না।

জেঠা জেঠি চলে যায়। পুষ্পা এখনো টেবিলে বসে আছে। আর পরি দাঁড়ানো অবস্থায়।

–‘দাঁড়িয়ে আছিস কেন বস এখানে!’

পরি হা হয়ে যায় পুষ্পার কথা শুনে। পুষ্পা সেটি খেয়াল করে মুচকি হাসে।
–‘আরে বস কোনো সমস্যা নেই!’

–‘মা-নে..!’

–‘[টেনে পরি কে বসিয়ে দিয়ে] বস নাস্তা করবি না তুই?’

–‘আ-মি প-রে ক-রে নিবো!’

–‘আমার সাথেই কর একা একা ভালো লাগবে না!’

–‘পুষ্পা তুমি ঠিক আছো?[ ভয়ে ভয়ে বললো]’

বোকা বোকা কন্ঠে কথা টা শুনে হাসি পেলো বিপরীত জনের। হাসি থামিয়ে বললো,

–‘হ্যাঁ আমি ঠিক আছি! এখন চুপচাপ খাওয়া শুরু কর। দেখি তুই কত খেতে পারিস!’

কথা গুলো ঠিক হজম হচ্ছিল না পরির। তাই দোটানায় পড়ে যায় খাওয়া ঠিক হবে কিনা তাই ভেবে। পুষ্পার বিহেবিয়ার একদম চেঞ্জ হয়ে গেছে। ভয়ে ভয়ে এক টুকরো মুখে দেয় পরি। কিন্তু খাবার তো গলা দিয়ে যাচ্ছে না। কারণ সে খাচ্ছে কম ভাবছে বেশি। তা লক্ষ্য করে পুষ্পা।

–‘আচ্ছা আমি চলে যাচ্ছি তাও তুই নার্ভাস ফিল করিস না। রিল্যাক্স হয়ে বস!’

–‘আ-স-লে..

পুষ্পা উঠে চলে যেতে লাগলো। পেছন ফিলো পুনরায়।

–‘পরি?’

–‘হ-হ-হ্যাঁ?’

–‘আমি তোর সাথে অনেক খারাপ কাজ আর খারাপ ব্যবহার করি তাই নারে?’

–‘ম-মা-মানে?’

–‘আই এম সরি পরি। আমাকে মাফ করে দিস!’

পুষ্পা চলে যায়। পরি এতোটাই অবাক যে সে আসলে কি শুনলো? কেমন যেনো লাগলো বিষয় টা তার কাছে! ক্ষুধা যেনো দৌড়ে পালিয়েছে। অনেক্ষণ ভাবনা চিন্তা করেও কোনো কুল খুঁজে পায় না ও। তাই খাবার গুলো রান্না ঘরে রেখে দেয়। রুমে চলে আসে সে।

চুলে শ্যাম্পু করে আর তেল দেওয়া হয়নি বলে চুল গুলো উসখুস করছে পরির! আঁচড়ানো উচিত। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াতে নেয়। জট পাকিয়ে বসে আছে। ছুটাতে গিয়ে দে বিরক্ত হয়ে গেলো। পুরো হাত ব্যথা হয়ে গেলো যে। আর না পেরে পরি হাত নামিয়ে পেলে। আয়নায় নিজেকে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। আসলে কি ঘুরছে এই বাসার সকলের মাথায়? সে কেন কিছু বুঝতে পারছে না! আর পুষ্পা? তার ই বা কি হয়ে গেলো হঠাৎ করে যে নিজ থেকে এসে সরি বলছে? ভালো ব্যবহার ও করছে! কারণ টা কি?

–‘পরি আমার নাস্তা টা আমার রুমে নিয়ে আয় তো কুয়িক!’

ব্যাস এই টুকু কথা বলেই পূর্ণ নিজের রুমে চলে যায়। তার কন্ঠ শুনে বাস্তবে ফিরে আসে পরি। তাড়াহুড়ো করে নিচে যায়। দেরি হলেই পূর্ণ রেগে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলবে। সব কিছু ট্রেতে করে নিয়ে রুমে আসতেই দেখে পূর্ণ নেই।

–‘আমাকে তাড়াতাড়ি নাস্তা নিয়ে আসতে বলে উনি কোথায় গেলো? এমনিতে তো যেভাবে বলবে যেনো এক্ষুনি যা চাই তা না পেলে সবাই কে গিলে খাবে হুহ!'[মনে মনে]

কথা গুলো নিজের মধ্যে ই আওড়ায়। রুম টা ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে পরি। বেলকনির দরজা টা খোলা থাকায় আচমকাই তার দৃষ্টি আটকে যায় বেলকনির টবে থাকা গোলাপ গাছ টার দিকে। গোলাপ গাছ টায় সুন্দর ফুটন্ত একটা গোলাপ ড্যাব ড্যাব করে যেনো তার দিকে তাকিয়ে আছে। তাকে ডাকছে। বলছে,

–‘গুড মর্নিং ডিয়ার। কাছে এসো সুন্দরী! দেখো আমি তোমার মতোই রূপবতী। সবার কাছেই প্রিয়! এই সুন্দর সকালে তোমার দেখা পেয়ে ভালো লাগলো। আচ্ছা তুমি কি আমাকে উপড়ে ফেলবে? না না এটা করো না। আমাকে ব্যথা দিতে এলে তুমি ও যে ব্যথা পাবে। আমার গা যে কাটা যুক্ত!’

পরি পা ফেলে সেদিকে এগিয়ে যায়। গাছ টার ডালে ডালে আরো কয়েক টা কলি দেখা যাচ্ছে। এই ফুটলো বলে। পরি খুব সাবধানে গোলাপ টার পাপড়ি তে হাত বুলিয়ে দেয়। গোলাপের ঘ্রাণ টা তার মারাত্মক প্রিয়। ভাগ্যিস ঘ্রাণ খাওয়া যায় না। নাহলে সে এতোদিনে সব ঘ্রাণ খেয়ে হজম করে ফেলতো। এটা ভেবে নিজে নিজেই হাসছিলো পরি।

পূর্ণ ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে সোফার পাশেই টেবিল টায় নাস্তা রাখা। সে ভাবলো এসব আবার কখন রেখে গেলো? ডাকলো না কেন! ভাবতে ভাবতে বারান্দার দিকে যায় পূর্ণ। বারান্দার দরজা ক্রস করার আগেই থমকে দাঁড়াতে বাধ্য হলো সে। তার সামনে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ টিকে চিনতে বেশ একটা সময় লাগলো না তার। বাহিরের মৃদু বাতাস তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ টার চুল গুলো কে নিয়ে এক দারুণ খেলায় মত্ত হয়েছে। চুল গুলো বাতাসে থেমে থেমে উড়ছে। পরির সামনে দিকে মুখ করে দাঁড়ানো। একবার এদিক ওদিক হেলদোল করছে। পূর্ণ কে যেনো এসব চুম্বকের মতো টানছে সামনের মানুষ টার দিকে। এক পা এক পা ফেলে পূর্ণ নিরবে নিভৃতে এগিয়ে চলছে সেদিকে। দূরত্ব টা ঘুঁচে গেছে পুরোপুরি।

পূর্ণ চোখ টা আপোষে বন্ধ করে পরির উড়ন্ত চুলে মুখ গুঁজে দেয়। আর পরির কোমড় জড়িয়ে ধরে পেছন থেকে। হঠাৎ করে কারো এমন করায় আকস্মাৎ ভয় পেয়ে যায় পরি। শ্যাম্পুর ঘ্রাণ টা পাগল করার মতো। উন্মাদ বানিয়ে দিচ্ছে যেনো পূর্ণ কে। যাতে সে নিজেই নিজের সেন্সে থাকতে পারছে না। নিজের ব্যালেন্স টা হারাতে বসেছে ক্রমাগত। পরির ঘাড়ে কারো গরম নিশ্বাস পড়ছে। পরি শিউরে উঠলো। গলা দিয়ে একটা টু শব্দ ও বের হচ্ছে না। গতকালের সেই সেন্টের ঘ্রাণ নাকে আসতেই পরি বুঝতে পারে এটা পূর্ণ। শরীরে কাঁপুনি ধরে গেছে তার। আচমকা পূর্ণ পরির ঘাড়ে কিস করে বসে। পরির নিশ্বাস ভারী হয়ে আসে। এসব কি হচ্ছে? পূর্ণ কে তার বাঁধা দেওয়া উচিত! কিন্তু সে যেনো তা পারছে না। শরীর টা নিথর অকেজো হয়ে গেছে। পূর্ণ নিজের কাজে থেমে নেই। তার কাছে পরি এখন আফিমের থেকে নেশালো কিছু। যার নেশায় সে মাতাল হয়ে গেছে।

–‘পরি পূর্ণ কে বাঁধা দে। এভাবে চুপ করে থাকিস না। পূর্ণ এসব করতে পারে না! বারবার তোর কাছে আসলে তুই ওকে প্রশ্রয় দিস কেন? কি চাস তুই?’

নিজের মন ই যেনো নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছে। পরি নিজেকে শক্ত করে পেছন ফিরে যায়। পূর্ণ বাঁধা পেতেই চোখ খুলে। ভ্রুঁ যগল কুঁচকে রাখা। কিঞ্চিত বিরক্তি ভাব প্রকাশ পাচ্ছে তার মুখে। পরি পূর্ণের চোখের দিকে তাকাতেই দেখলো এই চোখ অনেক কিছুই বলছে। এই চোখের দিকে তাকিয়ে নিজেও হারিয়ে গেলে চলবে না তাই সে নিজেকে আরো স্ট্রং করে বলে,

–‘পূর্ণ ভাই..আ..!’

–‘[পূর্ণ পরির ঠোঁটে হাত দিয়ে বলে] শিসস চুপপপ!’

মাতালের মতো কন্ঠ তার। পরি ভয় পেয়ে যায়।

দেওয়ালের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়ায় সে। পূর্ণ তার কাঁধের উপর দেয়লে নিজের এক হাত রাখে। পরির ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে। পূর্ণ তার তর্জনী আঙ্গুল টা দিয়ে পরির কপাল থেকে ঘুরিয়ে সোজা ঠোঁটের উপর নিয়ে আসে। কাঁপা কাঁপা ঠোঁট জোড়া দেখে যেনো মোহো আরো কাছে টানছে তাকে। তর্জনী টা ঘুরিয়ে সে ঠোঁটে স্লাইড করতে থাকে। যেই না ঠোঁটের দিকে এগোতে নিবে পরি বলে উঠে,

–‘নাহ…!’

আবারো চোখ খুলে পূর্ণ। এবার হিতাহিত জ্ঞানে ফিরে আসে ও। নিজেকে রেগে বলে,

–‘কন্ট্রোল পূর্ণ কন্ট্রোল!’

পূর্ণ সঙ্গে সঙ্গে পেছন ফিরে দূরে সরে দাঁড়ায় পরির থেকে। আর মনে মনে বলে,

–‘কি করছিলাম আমি এসব? কেন করছিলাম? কেন বারবার পরির এতো কাছে চলে যাই আমি? একবার ও কি আমি জানতে চেয়েছি এতে ওর মত আছে কি নেই? আমি ই বা কি করবো! পরি হুটহাট এমন ভাবে আমার সামনে আসে যে ওকে দেখলে আমি নিজেই নিজের মধ্যে থাকি না! অন্য কেউ হয়ে যাই! নিজেকে পুরোপুরি বেসামাল লাগে! আউট অফ কন্ট্রোল এ চলে যাই আমি! আর আজ তো ওড়না ছাড়া চুলে শ্যাম্পু করে তা ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! ও কি জানে না একটা ছেলেকে আকর্ষণ করতে এর বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই?'[মনে মনে]

পরির দৃষ্টি নিচের দিকে। অজানা এক কোনো এক কারণে সে স্থির থাকতে পারছে না। পূর্ণ দূরে সরতেই যেনো হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। কিন্তু চোখ উঠিয়ে পূর্ণের দিকে তাকাতে ভীষণ লজ্জা করছে। মনে হচ্ছে ফ্লোর টা ফাঁকা হয়ে যাক তার ভিতরে সে ঢুকে পড়লেই জানে বেঁচে যেতো। কিন্তু তা তো হওয়ার নয়। পূর্ণ আবার পেছন ফিরে পরির দিকে এগিয়ে আসে। পরি ভয়ার্ত দৃষ্টি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। দুজনের আই কন্টাকের মাধ্যমে যেনো কতো শত কথা হচ্ছে। পূর্ণ চোয়ালে শক্ত করে বললো,

–‘ওড়না ব্যতিত আর কখনো আমার সামনে আসবি না!’

পূর্ণ আর না দাঁড়িয়ে চলে যায় সেখান থেকে। ইনট্যাক্ট সে রুম থেকেই বেরিয়ে যায়। পরির নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে তার বুকে ওড়না মিসিং। তার মানে সে পূর্ণের সামনে ওড়না বিহীন এই ভাবেই ছিলো। তাড়াহুড়োর কারণে খেয়াল ই ছিলো না যে সে ওড়না ফেলে এসেছে। পূর্ণ তাকে কি ভাবলো? ছিঃ ছিঃ!

(চলবে)

মন্তব্য না পেলে আমি ও গল্প ছোট করে শর্টকাটে কুয়িকলি এন্ডিং টেনে দিবো!😒 কারণ লেখক/লেখিকার গল্প লিখায় আগ্রহ বাড়াতে সহায়তা করে আপনাদের মন্তব্য!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here