স্বামীর অত্যাচার পর্ব ৭

#স্বামীর_অত্যাচার !!
#Part_7

নিলয় এভাবে খাবার টেবিলে কেন নিয়ে আসল বুঝতে পারছে না তাহিন…..

যদি না খেয়ে দশ দিন পরে ও থাকে না তাহলে ওতো নিলয় এভাবে খাওয়াতে নিয়ে আসবে না……নিশ্চয় এর পিছনে কোনো মতলব আছে…

তড়িগড়ি করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে নিলয় তাহিনের হাত টান দিয়ে বসিয়ে দেই..রহিমাকে ডেকে বলল…

-রান্নাঘর একটা স্পেশাল খাবার আছে ওইটা নিয়ে আসতে……

কথাটা শুনে তাহিন চমকে গেল…..কি এমন স্পেশাল খাবার যা নিলয় ওর জন্য আনতে পারে…

-দেখুন আমি একটু আগেই খেয়েছি…..আপনার স্পেশাল খাবার খাওয়ার ইচ্ছে এই মুহূর্তে আমার নেই……

নিলয় একটা বিটকেল হাসি দিয়ে……
-খাবারটা এতটায় স্পেশাল যে তুমি দেখার আগেই খেতে ইচ্ছে করবে……

-কতটা স্পেশাল আর টেস্টি হতে পারে সেটা আপনার হাসি দেখে বোঝায় যাচ্ছে….

-দ্যাটস গ্রেট….

রহিমা থ মেরে এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিলয়ের দিকে….সেই দৃষ্টিতে ও নিলয়কে বুঝতে পারছেনা….কিন্তু দুদিন আগে যেন ছেলেটাকে অন্য রুপে দেখেছিল…আজ কিছুতেই সেটা মেলাতে পারছেনা….চোখের সামনে মেয়েটাকে কষ্ট পেতে দেখে ও কিছু বলার সাহস হচ্ছেনা…মুখ বুঝে সব দেখতে হচ্ছে…নিলয় রহিমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আবার হুঙ্কার দিল বলল খাবারটা নিয়ে আসতে….নিলয়ের গর্জনে রান্নাঘরের দিকে ছুটে গেল রহিমা…..একটু পর খাবার নিয়ে আসার সময় হাতদুটো থরথর করে কাঁপছে রহিমা…..কাঁপা কাঁপা হাতে খাবারটা কোনোমতে টেবিলের উপর রেখে চলে গেল….

প্লেটর উপর থেকে ঢাকনাটা সরাতে….তাহিনের ভিতরের আত্মাটা যেন কেঁপে উঠল……ভাতের কালার তো সাদা হয়….কিন্তু এই কালারটা এত টকটকে লাল কেন?…..

দেখে মনে হচ্ছে মরিচগুড়া মিশেয়েছে…ওহহ মিশেয়েছে,না না মিশানো হয়েছে…মানুষ নিচ হতে পারে কিন্তু এতটা নিচ হতে পারে সেটা এই মানুষটাকে না দেখলে যেন বুঝতেই পারত না…..তাহিন মোটেও জ্বাল খেতে পারে না…তবু ও নিলয়কে বলল…

-ভাতগুলা খেতে হবে তাইতো….

-ওয়াও তুমি দেখি খুব ব্রিলিয়ান্ট না বলার আগেই বুঝে গেছ …

-আমাকে বললেই হত আমি নিজে মেখে খেয়ে নিতাম…আপনাকে এত কষ্ট করতেই হত না…..

যতদিন আছি যা খুশি করে নিন……এর পরে তো আর পাবেন না….কথা গুলো বলছে আর নিজের অজান্তে চোখ দিয়ে পানি বেয়ে পরছে…..

নিলের সামনে স্ট্রং থাকতে চাইলে আরো যেন ভেঙে পড়ে….ছলছল চোখে প্লেটটা টেনে নিল….ভাতের মধ্যে হাত দিতে নিলয় থামিয়ে দিল…..

-ওয়েট ওয়েট……
এত তাড়া কিসের আগে একটা ছবি ক্লিক করে নিই….

তাহিন নিলয়ের কথায় কান না দিয়ে এক গ্রাস মুখে দিতে নিলয় তাহিনের হাত থামিয়ে দিয়ে একটা ছবি ক্লিক করে নিল……একটা মুখে নিতে তাহিনের জ্বালে মুখ জ্বলে যাচ্ছে…..এত মরিচগুড়া মানুষ কি করে মেশাতে পারে……একটা খেয়ে জ্বালে কান ফেটে যাচ্ছে আরেকটা খেলে যেন মরেই যাবে…তবু ও জোর করে আরেকটা মুখে দিতে যাবে এমন সময়

নিলয় চেয়ার টেনে উঠতে গেলে প্লেটটা নিলয়ের হাত লেগে পরে যায়…….

তাহিন ছলছল চোখে নিলয়ের দিকে চেয়ে আছে…..নিলয় তড়িগড়ি করে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে চলে গেল…..

তাহিন বুঝতে পারছেনা নিলয় হঠাৎ এমন কেন করল…..প্লেটটা নিলয়ের হাত লেগে পরেনি….নিলয় সেটা ইচ্ছে কর ফেলে দিয়েছে কিন্তু কেন…?

এত তাড়াতাড়ি ইচ্ছে পূরণ হয়ে গেল……তাহিন ভাবছে আর…. রহিমা দৌড়ে গিয়ে ফ্রিজ থেকে মধু নিয়ে আসল…তারপর ওকে কয়েক চামচ মধু খাইয়ে দিল……..

অনেকক্ষণ যাবৎ তাহিন ভেবে যাচ্ছে নিলয় ওই সময় ছবিটা কেন ক্লিক করল…..?

তখন বিষয়টা ভেবে দেখেনি…..কিন্তু এখন কেন যেন ভাবাচ্ছে..এমন ছবি কাকে বা দিবে…….তৌহিদ আহমেদ কে নয়তো…..কিন্তু ওই লোকটাকে ছবিটা দেখিয়ে কি হবে…….কি শত্রুতা থাকতে পারে ওই লোকটার সাথে……?

লোকটার সাথে আমার তো কোনো যোগাযোগ নেই…. তাহলে…..তবে লোকটা এখন ও আমার সাথে যোগাযোগ রাখতে চাই…কিন্তু আমি তো রাখতে চাই না….. লোকটার নামধারী ভালবাসাকে তো আমি মনে প্রানে লোক ঘৃণা করি……

তনিমার সাথে কখন যে যোগাযোগ করতে পারবে এখন সেই চিন্তায় আছে…
তনিমা পারবে এর উত্তর দিতে…..

বিকেলের দিকে হঠাৎ করে তাহিন মেইন ডোর খোলা দেখে বাইরে বের হল…..অবশ্য জানে গেইটে বাইরে পাঁ রাখতে পারবে না সেখানে নিলয় না থাকলে ও গার্ডরা আছে…….তবু ও বের হল.. জেলখানার ভিতরেই থাকতে থাকতে বেশ ক্লান্ত পড়ছে….আর চারিদিকে ঘুরে দেখার সুযোগটা হয়নি এখনো…..তাই এই সুযোগটা কাজে লাগালে মন্দ কি…..
চারিদিকে ঘুরেঘুরে দেখছে বাড়িটা যেমন বড় এরিয়াটা এর চেয়ে বেশি বড়…..দক্ষিণ দিক দিয়ে একটা বড় বাগান আছে আর তার পাশে সুপিংপুল ও আছে…….চারিদিকটা ফুলে ফুলে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে…মানুষটার মনটা যদি এমন সুন্দর হত….. হঠাৎ করে বাগানের পাশে একটা সুদর্শন দোলনার দিকে চোখ পড়ল…..বসতে যাবে অমনি একজন গার্ড এসে….

-ম্যাম আপনাকে স্যার ভিতরে যেতে বলছে……

-আপনার স্যারকে গিয়ে…..

তাহিন হঠাৎ করে চিন্তা করতে লাগল নিলয় তো বাসায় নেই ও কি করে জানে তাহিন বাইরে বের হয়ছে…….চারিদিকে একবার চোখ ঘুড়াতে নজর পড়ল সিসি ক্যামেরার দিকে……গার্ডে ডাকে তাহিনকে ধ্যান ভাঙে…..

;;;আপনি যান আমি আসছি……….

গার্ড যেতে তাহিন দোলনার উপর বসে সিসি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ইচ্ছেমত কয়েকটা কথা শুনিয়ে দিল নিলয়কে…..

না গেলে তো আর কোলে করে নিয়ে যেতে আসবে না…..নিজের ইচ্ছা শেষে ভিতরে ঢুকল……

হঠাৎ করে রহিমার হাতে মোবাইল দেখে চমকে গেল তাহিন….আগে কেন রহিমার মোবাইলের কথা মনে হল না…তাহলে তো তো নিলয়ের অনুপস্থিতে তনিমার সাথে কথা বলা যেত…..ছুটে গিয়ে রহিমার থেকে মোবাইল নিয়ে তনিমা কে ফোন করতে যাবে এমন সময় নিলয় গাড়ীর আওয়াজ শুনে তড়িগড়ি করে মোবাইলটা রহিমাকে দিয়ে রুমে ছুটে গেল…একটা বই নিয়ে ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে বসল…বাগানের ঘটানাটার জন্য এসে এখন শুরু করে দিবে….মুহূর্ত বইয়ের ভিতরে ডুবে গেলে….বইয়ের ভিতর ডুবে গেলে আর কিছুই যেন খেয়াল থাকে না…….একটু পর
নিলয় এসে তাহিনের বইটা টান দিয়ে নিতে চমকে উঠেল…..ড্যাবড্যাব করে চারচোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে…বেশিক্ষণ বই পরলে তখন চশমা ইউজ করে….কালো ফ্রেমের গোল গোল গ্লাস…চশমা পরলে তখন যেন আরো মায়াবী লাগে……

-দুইটা চোখে কি কম পরছে এখন চারটা চোখ লাগিয়েছ…….

-হুম আটটা চোখ লাগালে ও আপনার মত মানুষকে চিনতে পারব না…….

নিলয় তাহিনের দিকে এগিয়ে যেতে……

-চা না কপি…..

-হোয়াট?

তাহিন একটু একটু সরে গিয়ে……

আচ্ছা আমি আপনার জন্য কপি নিয়ে আসছও কেমন বলে দৌড় দিল……

বেশকিছুক্ষণ পর নিলয়ের জন্য কপি নিয়ে আসল…..নিলয় খাবে কিনা হয়ত তবু ও নিয়ে আসল….নিলয় আজ পর্যন্ত ওর হাতের কোনো খাবার খায়নি…যতবার বানিয়েছে ততবার শুধু এটা ওটা বলে ফেলেছে…….
তাহিন রুমে ঢুকে কপিটা নিলয়ের পাশে রেখে বের হয়ে গেল…….

-মগটা এসে এখন এসে তোমার মাথায় ফাটাব…..ওকি ঝুকি মারা ছাড়া কি আর কোনো কাজ নেই……
স্তব্ধ তাহিন নিলয় কিভাবে বুঝল ও দরজার বাইরে ওকি মারছে তার নজর তো আরেক বউয়ের দিকে……খুব জোরে আওয়াজ করে তো জানান দিল চলে যাওয়ার..তাহলে?এই ছেলেটা মনে হয় সত্যিই শয়তান………..দূর ভেবেছিলাম কোথায় একটু কপিটা খাবে…….

তাহিন মন খারাপ করে চলে যেতে নিলয় কপিটা শেষ করে….সামান্য কপি অবশিষ্ট রেখে তার সাথে পানি মিশিয়ে ফ্লোরে ঢেলে দিল……..

তাহিন এসে রুমের মধ্যে ফ্লোরে চিপচিপে দেখে মন খারাপ করে ফেলল….কেন জানেনা চোখ দিয়ে এক ফোঁটা জল বেয়ে পরল…….খায়নি তো কি হয়েছে তার জন্য এত কষ্ট হচ্ছে কেন বুঝতেই

পারছেনা…..কেন আগ বাড়িয়ে কপি বানতে গেল…?এটা হল তার শাস্তি…ভিজা একটা কাপড় দিয়ে ফ্লোরটা পরিষ্কার করে চলে গেল……..

রাতে খাবারের টেবিলে তাহিনের ব্যবহারে নিলয় চমকে উঠল…….

-এসব কি……….?

-দেখতেছেন না……

নাকি আপনার ও তিনটা চারটা চোখ লাগবে… অবশ্য আমার মত পিওর মানুষদের দেখার জন্য একট চোখিই যথেষ্ট……

নিলয় দাঁতে দাঁতে চেপে

-স্টপ ইট…….

-কেনো চুপ থাকব…সত্যিটায় তো বললাম…..

-আমার প্লেট থেকে হাত সরাও….

-সরাব না আজ আমি আপনার প্লেট থেকে খাব……
এতে নাকি ভালবাসা বাড়ে……..

-হোয়াট রাবিশ……

যত ইচ্ছা বকুন আমার কোনো সমস্য নেই তারপরে ও আমি খাব……..

নিলয় দাঁতে দাঁতে চেপে উঠে যেতে তাহিন আচমকা নিলয়ের হাত ধরে বসিয়ে নিলয়ের মুখে এক গ্রাস নিয়ে পুরে দিল…..নিলয় যেন বোকা বনে গেল……মুখে ভাত নিয়ে বাচ্চাদের মত এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তাহিনের দিকে……..

-এভাবে কারো উপর অত্যাচার করলে কি তার সমস্যার সমাধান বেরিয়ে আসবে…আমার তো মনে হয় কক্ষনো না….যদি আমার কারণে কোনো সমস্যায় পড়ে থাকেন….তাহলে তার সমাধান এভাবে না করে আল্লাহর দরবারে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে সেই সম্যসার সমাধান খু্ঁজুন।আল্লাহ নিশ্চয় আপনাকে নিরাশ করবে না…….

কিন্তু এভাবে আর কত?

তাহিন নিলয়ের হাতের উপর নিজের একটা হাত রেখে আরেকটা হাত দিয়ে ওকে খাওয়ে দিচ্ছে।নিলয় কেমন যেন শান্ত হয়ে গেল চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে একটা কথা ও বলছে না….পিচ্ছি একটা মেয়ে সব কিছু সহ্য করে নিলয়কে যেন একটু একটু করে দুর্বল বানিয়ে দিচ্ছে… মস্তিষ্কটা এই মুহূর্তে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছ নিলয়ের…………

নীলিমা……
তাহিনের কানে শুধু এই নামটায় বাজছে……..কিন্তু কে এই নীলিমা?যার নাম শুনতেই নিলয় পাগলের মত ছুটে গেল…….

খাবারের শেষ মুহূর্তে হঠাৎ একজন গার্ড এসে…..

-স্যার নীলিমা ম্যাম
চমকে উঠল নিলয়…..চোখে মুখে চিন্তার চাপ ভেসে উঠল নামটা শুনে…

-হোয়াট…?কি হয়েছে….?

-স্যার নীলিমা ম্যামের
তাহিনের দিকে তাকিয়ে তড়িগড়ি করে হাতের ইশারায় গার্ডকে চুপ করিয়ে দিল…তারপর চেয়ার ছেড়ে দ্রুতগতিতে বেড়িয়ে পরল….

তাহিন বুঝতে পারছেনা কে এই নিলীমা…?তবে তাহিন যতদূর জানে নিলীমা নিলয়ের মায়ের নাম কিন্তু নিলয়ের বাবা,মা দুজনে তো অনেক বছর আগে একটা এক্সিডেন্ট মারা গেছে….তাহলে এই কোন নীলিমা….?

যাকে গার্ড মেম বলে সম্বোধন করল…আর নিলয় পাগলের মত ছুটে গেল………….কিছই বুঝতে পারছে না তাহিন……..

রহিমার জোরাজুরিতে রুমে এসে শুয়ে পরেছে ঠিকিই…….কিন্তু কিছুতেই দুচোখের পাতা এক করতে পারছে না চোখের মধ্যে রাজ্যের ঘুম থেকে ও……..নিলয়ের চোখে মুখে নীলিমাকে নিয়ে যে ভয়টা দেখেছিল সেটা ক্রমশ ভাবাচ্ছে…..এই নীলিমা কি কোনেভাবে নীলিমা আন্টি নায়তো….এমন ও তো হতে পারে নীলিমা আন্টি বেঁচে আছে…..হয়ত ভাগ্যক্রমে হায়াতের জোরে সেদিন মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরে এল……যদি এমনি বা হতো তাহলে তো সবাই জানতে পারত…সেটা এভাবে গোপনিই বা কেন রাখবে….গোপন রাখার মত তো কিছুই নেই……….তাহলে?

কিছুর সাথে কিছুই মিলাতে পারছেনা আর দুদিন এমন প্রশ্নের মধ্যে থাকলে যেন পাগল হয়ে যাবে…..

অপেক্ষার প্রহর গুনছে সকালের সূর্যের আলোর….তারপর এই বাড়ী ছেড়ে যে করে হোক চলে যাবে…….নিলয়কে নিয়ে আর ভাববে না…..অনেক তো ভেবেছে…..

নিজেকে মাতাল মাতাল মনে হচ্ছে তাহিনের….ঘুমের ঘোরে এভাবে ঢুলছে কেন বুঝতে পারছেনা….চোখে রাজ্যর ঘুম নেমে এসেছে…চোখ খুলতে চেয়ে ও খুলতে পারছেছেনা…..হঠাৎ করে ঝটকা খেয়ে কিছু একটা সাথে বারি খেতে….আঁৎকে চিৎকার দিয়ে উঠল উঠল তাহিন…….চোখ খুলতে মনে হল গাড়ীর সিটে শুয়ে আছে……আর গাড়ীটা ব্রেক করাতে মাথাটা সামনে দিকে ঝুঁকে পরল……কিন্তু গাড়ীতে কি করছে বুঝতে পারছেনা….আর এখানে কি করে বা এল…..ভয়ে হাত পা কাঁপছে…চারিদিকে অন্ধকার সকালের আলো এখন ফুটতে শুরু করে নি….গাড়ীটা নিস্তব্ধ একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু কেউ নেই……ধম বন্ধ হয়ে আসছে ভয়ে কপাল বেয়ে ঘাম পারছে…নিলয়ের অনুপস্তিতে এত গার্ডদের মাঝে এভাবে ঘুমের মধ্যে কে তুলে নিয়ে আসতে পারে….?

আর সেটা টের পাইনি কেউ?এমনটা কি করে হতে পারে না… কাঁপা কাঁপা হাতে দরজা খুলতে চেয়ে ও খুলতে পারছেনা লকড করা…তখনি ঠাস করে কেউ একজন দেখে দরজা খুলে ড্রাইবিং সিটে বসতে

তাহিনের কলিজাটা মোচড় দিয়ে উঠল……মানুষটাকে দেখে…………

কালো জ্যাকেট পরিহিত…আর কালো মাক্স দিয়ে মুখটা ডাকা…..তাহিন দরজা ধাক্কা বের হতে চাইলে লোকটি বলে উঠল…..

-কোনো লাভ হবে বলে তো মনে হচ্ছে না…….
তাহিন চমকে উঠল ভয়েসটা শুনে কেমন যেন চেনা চেনা মনে হচ্ছে…..

-কে….কে আপনি….
লোকটা তাহিনের কথার উত্তর না দিয়ে গাড়ী স্টার্ট দিয়ে দিতে……তাহিন চিৎকার করে করে বললয়….

-কে…কেন আপনি কিছু বলছেনা কেন….এভাবে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?

-মধুচন্দিমায়…..তোমার সাথে মধ্যরাতে মধুচন্দিমায় যাওয়ার খুব শখ হয়েছে তাই….

লোকটি দাঁতে দাঁতে চেপে কথাগুলো বলল……

-রিয়েলি আমরা হানিমুনে যাচ্ছি……ভালই করেছেন আপনি আমাকে তুলে নিয়ে এসে…..আসলে আমার স্বামী হানিমুন তো দূর পানিমুনে ও নিয়ে যাবে না…….এক নাম্বারের একটা খচরু……রাত দিন কিভাবে অত্যাচার করা যাবে শুধু সেই চিন্তায় থা

-স্টপ ইট……

-আস্তে এভাবে গর্জন করতেছেন কেন?আপনি ও তো দেখি আমি স্বামীর থেকে কোনো অংশে কম না………

-চুপ একদম চুপ আরেকটা কথা বললে………..মুখে টেপ মেরে বসিয়ে রাখব…….

-আমার উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত তো চুপ করে থাকতে পারবে না……..
-সেটা সময় হলে দেখতে পারবে…

এখন জাস্ট চুপ থাক… মুখ থেকে যেন আরেকটা শব্দে ও বের না হয়……..

নিলয় রক্তচক্ষু নিয়ে লুকিং গ্লাসের দিকে চেয়ে কথাটা বলতে তাহিন চুপ করে গেল…..তাহিন অনেক আগে বুঝতে পেরেছে সেটা নিলয়……কিন্তু নিলয় ওকে রাতের অন্ধকারে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে বুঝতে পারছে না…..কি চাই নিলয়……?আপাতত চুপচাপ ভেবে যাচ্ছে………

কুয়াশায় চারিদিক ঢেকে আছে…..সূর্যের আলো সবেমাত্র তার কিরণ দিতে শুরু করেছে…..গাড়ী এসে থামল একটা বড় বাড়ীর সামনে……এই বাড়ীর নকশাটা ঠিক ও বাড়ীর মত……কিন্তু এটা কোন জায়গায় নিয়ে আসল নিলয়…..কিছুই চিনতে পারছে না….এমন অচেনা জায়গায় কি পালিয়ে না যাওয়ার জন্য নিয়ে আসছে তাহলে….তাহিন চুপ করে বসে আছে….. দেখে নিলয় দরজা খুলে টেনে বের করে ভিতরে নিয়ে যেতেই…….

-কেন মুক্তি দিচ্ছেন না আমায়……

থমকে দাঁড়ায় নিলয় ঘুরে তাহিনের দিকে তাকাতে……..

-মুক্তি না দিলে অত্যন্ত আমার আম্মুর সাথে একবার দেখা করে নিয়ে আসতেন…..অনেকদিন হল আমার আম্মুকে একটু জড়িয়ে ধরে ঘুমোয় নি…….কেন এমন অচেনা জায়গায় আটকে রাখার জন্য নিয়ে আসছেন…..মনের মধ্যে আপনার জন্য যে জায়গাটা তৈরি হয়েছে সেটা ক্রমশ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে……আমি এবার মুক্তি পেতে চাই চাইনা আর এখানে থাকতে…..

নিলয় চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে…..নিয়য় তাহিনের দিকে এগিয়ে যেতে কয়েকপা পিছেয়ে গেল…..দরজার সাথে লেগে যেতে নিলয় হাত মুটো করে সজোরে একটা ঘুষি মারল তাহিন ভয়ে চোখ মুখ বন্ধ করে নিল…..নিলয় আঘাত নিজের হাতেয় করল…

-কেন বারবার এই প্রশ্নটা করছে…..উত্তরটা তোমার না জানার কথা নই……..যা হচ্ছে সব তোমারিই জন্য হচ্ছে……..তোমাকে মুক্তি দিলে সব থেকে ক্ষতি আমারিই বেশি হবে…..সেটা তো না জানার কথা নই……….
তোর বাবা আর তুই মিলে যা করেছিস সেটা কি করে ক্ষমা করে দিই………

_আমি আমার বাবা আপ্নার ক্ষতি অবাক হয়ে

– – – – চলবে……

Wait for the next part of #স্বামীর_অত্যাচার!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here