স্মৃতিতে তোমার বন্দনা পর্ব ২১

#স্মৃতিতে_তোমার_বন্দনা
#পর্ব_২১
#Saji_Afroz
.
.
এক গাল হাসি নিয়ে রাফসান বললো-
সারপ্রাইজ….
.
ছোঁয়া মুখে হাসি আনার চেষ্টা করতে থাকলো । রাফসান তার কাছে এসে বললো-
কি? কেমন দিলাম সারপ্রাইজ?
-আপনি এখানে?
-কেনো আসতে পারিনা?
-আপনি তো…
-দেশের বাইরে তো আর ছিলাম না! দেশেই ছিলাম ।
-ভেতরে চলুন ।
.
ছোঁয়ার সাথে ভেতরে এলো রাফসান । আফিয়া জান্নাত ও নয়নতারার সাথে তার কথা শুনে মনে হলো, তারা জানতো রাফসান আসবে । তবে ছোঁয়াকে কেনো জানালো হলোনা!
ছোঁয়া নিজের রুমে হনহনিয়ে এগিয়ে গেলো । নয়নতারা তার পিছু নিলো ।
নয়নতারা এসে বললো-
এভাবে চলে এলি কেনো?
-আপু তুমি কি জানতে উনি আসবে এখানে?
-হু ।
-তবে আমাকে বলোনি কেনো?
-ও সারপ্রাইজ দিবে বলে নিষেধ করেছিলো ।
-যে বিষয়ে খুশি হওয়া যায়না, সে বিষয়ে সারপ্রাইজ এর কথা ভাবলে কি করে আপু?
কে হয় উনি আমার! এসব আর করবেনা ।
-আহ আস্তে ছোঁয়া! শুনতে পাবে ।
-আমি কোনো কথায় বলতে চাইনা ।
-চল ।
-কোথায়?
-ড্রয়িংরুমে । কি মনে করবে বলতো! ও এসেছে আর আমরা ভেতরে বসে আছি! চল ।
.
ছোঁয়াকে নিয়ে আসলো নয়নতারা । রাফসান কথা বলছে আফিয়া জান্নাতের সাথে—
আমার আসার কোনো প্লান ছিলোনা । কিন্তু আপনারা কোথায় থাকছেন এটা জানা আমার দায়িত্ব মনেকরেই এসেছি ।
-বেশ ভালো করেছো! তোমার মতো দায়িত্ববান একটা ছেলে আমার মেয়ের জামাই হবে ভাবতেই খুশি লাগে ।
.
এসব আদিখ্যেতা সহ্য হচ্ছেনা ছোঁয়ার । নাস্তা বানানোর নাম করে রান্নাঘরে এলো ।
রাফসান চোখের সামনে থাকলেই অস্থত্বি কাজ করে তার মনের মাঝে । কেনো যে আসতে গেলো এখানে!
-আমার জন্য নাস্তা বানাতে এসেছো?
.
পেছনে ফিরে রাফসানকে দেখে বিরক্তিভরা মুখ নিয়ে ছোঁয়া বললো-
এখানে কেনো?
-বাসা দেখছিলাম ঘুরে । তোমাকে রান্নাঘরে পেলাম ।
-রান্নাঘর দেখা শেষ?
.
চারপাশে চোখ বুলিয়ে রাফসান বললো-
এখন শেষ ।
-তবে আসতে পারেন এখন ।
-তোমার জন্য একটা জিনিস এনেছিলাম ।
.
একটা ছোট্ট বক্স পকেট থেকে বের করে ছোঁয়ার দিকে এগিয়ে দিলো রাফসান । ছোঁয়া নিতে না চায়লে তার হাতের মুঠোয় ঢুকিয়ে দিয়ে বেরিয়ে পড়লো সে ।
এদিকে রান্নাঘরে রাফসানকে এগিয়ে যেতে দেখে বুকের ভেতরে মোচড় দিয়ে উঠেছে নয়নতারার । ছোঁয়া তার বোন বলেই কি এসব সহ্য করছে সে! অন্যকোনো মেয়ে হলে এতো সহজে রাফসানকে তার কাছে কি যেতে দিতো সে? ভালোবাসায় এতো কষ্ট কেনো!
.
ছোঁয়া এসে নয়নতারার দিকে বক্সটা এগিয়ে দিয়ে বললো-
এটা তুই রাখ ।
-কি এতে?
-জানিনা । রাফসান ভাইয়া দিয়েছে ।
-তোকে?
-হ্যাঁ ।
-তাহলে আমি কেনো নিবো?
-আমি রাখবোনা তাই । চুলোয় চা বসিয়েছি ৷ আমি গেলাম ।
.
ছোঁয়া যেতেই নয়নতারা বক্সটা খুললো । এক জোড়া রুপার নুপুর দেখতে পেয়ে মুখের কোণে হাসি ফুটে উঠলো । পরক্ষণেই এসব তার জন্য নয় ভাবতেই মুখের হাসি বিলীন হয়ে গেলো । এই নুপুরে নিশ্চয় রাফসানের ছোঁয়া রয়েছে । তার ভালোবাসায় দেয়া উপহার ছোঁয়া অগ্রাহ্য করতে পারলেও সে পারবেনা । নুপুর জোড়া সে চোখে মুখে লাগাতে লাগলো । এতে যদি রাফসানের ছোঁয়া অনুভব করা যায়!
খুব ইচ্ছে করছে তার পায়ে পরে দেখার জন্য । ইচ্ছে কি আর দমিয়ে রাখা যায়! নুপুর জোড়া পায়ে পরে রুমের মাঝে হাঁটতে লাগলো সে । রাফসান দরজার পাশে দাঁড়িয়ে বললো-
এই জোড়া ছোঁয়ার । তোমার জন্যও এনেছি উপহার ।
.
এ কি! রাফসান এখানে? কিছু দেখে ফেলেনি তো সে!
ভয়ে কাঁপতে থাকলো নয়নতারা । রাফসান ভেতরে এসে বললো-
ছোঁয়ার পায়েই মানাবে এই নুপুর । কেননা রাফসানের ভালোবাসা শুধু ছোঁয়ার জন্য । বিয়ের পরে ছোঁয়া এই নুপুর জোড়া পরে পুরো বাড়ি মাতিয়ে রাখবে ।
-আমি আসলে…
-নুপুর জোড়া ঠিকঠাক আছে কিনা দেখছো?
.
মৃদু হাসলো রাফসান । নয়নতারা বুঝতে পারলো সে কিছু দেখেনি । হাফ ছেড়ে যেনো বাঁচলো সে!
রাফসান তাকে আয়নার সামনে টেনে এনে দাঁড় করালো । এক জোড়া কানের দুল বের করে বললো-
তোমার জন্য কিছু আনবোনা তা হয় নাকি!
.
নিজের হাতে নয়নতারার কানে দুল পড়িয়ে দিচ্ছে রাফসান । তার স্পর্শে না চায়তেও চোখ জোড়া বন্ধ হয়ে আসলো নয়নতারার । বুকের মাঝে ধুকপুকানি শুরু হয়ে গিয়েছে । সময়টা যদি এখানে থেমে যেতো!
কিন্তু এমন কিছু সম্ভব নয়। একটা দুল পরানো শেষেই রাফসান বললো-
ভালো মানিয়েছে তোমায় । এই ধরো এটাও পরে নাও । ওদিকে ম্যাডাম নুপুর জোড়া পরতে রাজি হয় কিনা দেখি ।
.
.
আজ সাফিনা আহম্মেদের কাছে নয়নতারা এসেছে । সে তাদের জানালো, বাসায় মেহমান এসেছে বলে কাজে আসতে পারেনি ছোঁয়া । সাফিনা আহম্মেদ হেসে বললেন-
আমিতো বাচ্চা মানুষ নয়, আমার সাথে সাথে থাকতে হবে কারো । তুমিও যাও মা ।
-আপনার পাশে থাকতেই ভালো লাগছে আমার ।
.
ছোঁয়ার আশেপাশে রাফসানকে এভাবে ঘুরঘুর করে দেখতে কষ্ট হয় তার । তাই রাফসান যেই সময়টুকু আছে সে এখানেই থাকতে চায় । এতে যদি কষ্ট একটু কম হয়!
তার ফ্যাকাশে মুখটা দেখে সাফিনা আহম্মেদ বললেন-
তোমাকে এমন মনমরা লাগছে কেনো? কোনো সমস্যা?
-না আন্টি ।
-চাকরী নিয়ে ভাবছো? ছোঁয়ার বেতনেই হয়ে যাবে । ছোট ফ্যামিলি তোমাদের ।
-না এসব না ।
-তাহলে?
.
মৃদু হেসে নয়নতারা বললো-
কিচ্ছুনা । কি খাবেন বলুন তো এখন ।
.
.
ছোঁয়া কারো বাসায় কাজ করছে এটা তার মা জানাতে নিষেধ করেছে রাফসানকে ।
তাই সে আজ সাফিনা আহম্মেদের কাছে যেতে পারেনি । রাফসানের কথাতে বাগানে হাঁটতে এলো তার সাথে ।
এদিকে পরশ জানার জন্য অস্থির হয়ে আছে, এমন কোন মেহমান এসেছে? যার জন্য আজ সকাল থেকেই ছোঁয়ার দেখা পাচ্ছেনা সে!
নিচে এসে পরশ তাকাতে থাকলো ছোঁয়াদের ফ্ল্যাটের দিকে । কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে বেরিয়ে আসলো সে । বাগানে ছোঁয়ার সাথে একটি ছেলেকে দাঁড়ানো দেখতে পেলো পরশ । ছেলেটি ছোঁয়ার সাথে হেসে হেসেই কথা বলছে, যদিও ছোঁয়া চুপচাপ ।
কে এই ছেলেটি? যার জন্য সে একবারের জন্যও এলোনা তাদের বাসায়?
রাগ হতে থাকলো পরশের । তাদের দিকে এগিয়ে এসে বললো-
আজ কাজে আসলেনা কেনো ছোঁয়া?
.
রাফসান ভ্রু-জোড়া কুচকে বললো-
আপনি কে? আর কি কাজ?
-আমি এই বাড়ির মালিকের ছেলে । আর কি কাজের কথা বলছি তা সে জানেই ।
.
রাফসান বললো-
ছোঁয়া কি বলছে উনি?
.
শান্তস্বরে ছোঁয়া বললো-
আপনারা পরিচিত তো হোন একে অপরের সাথে!
উনি ডাক্তার পরশ ৷ এই বাড়ির মালিকের ছেলে ।
আর উনি রাফসান । আমার বাবার বন্ধুর ছেলে ।
.
দুজনে হ্যান্ডশেক করার পর পরশের উদ্দেশ্যে ছোঁয়া বললো-
আমি কাজে যাইনি, কিন্তু আপুতো গিয়েছে ।
-কাজ কিন্তু তোমার । অন্য কারো নয় ।
-আন্টির কি আপুকে অপছন্দ? আমার জানামতে তিনি আপুকেও পছন্দ করেন ।
.
নিশ্চুপ হয়ে গেলো পরশ । রাফসান বললো-
ছোঁয়া ভেতরে আসবে একটু? তোমার সাথে আমার কথা আছে ।
.
রাফসান এগিয়ে গেলে ছোঁয়া বললো-
আপনি যেটা আজ করেছেন ঠিক করেননি । অন্তত কারো সামনে এভাবে কথা বলা ঠিক হয়নি আপনার । হতে পারি আপনার বাসায় কাজ করছি, তাই বলে আত্নসম্মান নেই এটা ভাবা ভুল হয়েছে আপনার ।
.
ছোঁয়াও ভেতরে চলে গেলো ।
পরক্ষণেই রাফসানের নামটা মনে পড়লো পরশের । হাসপাতালে তার সম্পর্কে রুপালিকে বলা সবটা শুনেছিলো সে । এইতো সেই ছেলে, যে তাদের বিপদে পাশে ছিলো । সে আসাতে ছোঁয়া কাজে নাই আসতে পারে ।
পরশ এটা কি করে ফেললো! ছোঁয়ার পাশে রাফসানকে দেখে মাথাটা ঠিক রাখতে পারেনি সে । তাই বলে এভাবে কথা বললো সে তার ভালোবাসার মানুষের সাথে! প্রেমে পড়ে পরশ পালটে যাচ্ছে । এমন তো সে ছিলোনা!
.
.
-কি কাজের কথা বললো পরশ?
.
ছোঁয়া শুরু থেকে সবটা খুলে বললো রাফসানকে । সবটা শুনে সে নিজেকে স্বাভাবিক করে বললো-
আমাকে একবারো জানানোর প্রয়োজন মনে করোনি? মানুষের বাসায় কাজ করার কি দরকার তোমার?
-বাসার কাজ আমি করিনা । আন্টির দেখাশোনা করি ।
-আয়া?
-নাহ । আন্টি আমাকে অনেক ভালোবাসেন ।
-তোমার মাথা কি খারাপ হয়ে গিয়েছে ছোঁয়া?
.
নিশ্চুপ ছোঁয়াকে দেখে রাফসান বললো-
ওকে ফাইন এসব ছাড়ো । তুমি আর এই কাজ করতে যাবেনা ।
-আপনার এই কথাটি আমি শুনতে পারবোনা ।
-কেনো?
-অনেক করেছেন আপনি আমাদের জন্য । এবার প্লিজ আমাদেরকে আমাদের মতোই চলতে দিন, ভালো থাকতে দিন ।
-এসব কি বলছো তুমি? আমি তোমাদের পর? ফিউচারে আমি তোমাদের…
-ফিউচারের টা ফিউচারে দেখা যাবে । আমি আর কোনো হেল্প নিতে চাইনা আপনার । নিজের মতো চলতে চাই, ভালো থাকতে চাই । আপনার কাছে এতোটুকু আশা অন্তত করতে পারি, আমার কাজকে সম্মান করে আপনি বাঁধা দিবেন না ।
.
রাফসান চুপ করে রইলো । ছোঁয়া বললো-
সবটা যখন জেনেই গিয়েছেন আমি ওখানে যাচ্ছি । আপুকে পাঠিয়ে দিচ্ছি ।
.
.
ধীরপায়ে বাসায় আসলো নয়নতারা । ছোঁয়া বলেছে, রাফসান সবটা জেনে গিয়েছে ।
নয়নতারার ভয়ে গলাটা শুকিয়ে গেলো । রাফসান তার উপরে রাগ ঝাড়বে এটা তার অজানা নয় । যেটা ভয় পেয়েছে সেটাই হয়েছে । তাকে দেখেই রাফসান প্রশ্ন ছুড়লো-
আমাকে জানাওনি কেনো ছোঁয়া কারো বাসায় কাজ করে?
-আসলে তুমি ভুল বুঝছো রাফসান । ওর কাজ করতে হয়না…
.
রাগে গিজগিজ করতে করতে রাফসান আবারো বললো-
তুমি আমাকে জানাওনি কেনো?
-তুমি রাগ করবে বলে ।
-সিরিয়াসলি? তোমার মনেহচ্ছেনা এই কথাটি একেবারেই বেমানান! তোমার চাকরী নাই ইটস ওকে! আমি টাকা পাঠাতাম মাসে মাসে, ছোঁয়ার কেনো অন্যের বাসায় কাজ করে তোমাদের খাওয়াতে হবে? কেনো তুমি আটকালে না?
উত্তর দাও নয়ন?
.
নয়নতারার কান্না পাচ্ছে ভীষণ । রাফসানের সামনে কাঁদতেও পারছেনা সে । এভাবে কেনো তাকেই সবকিছুতে দোষারোপ করে রাফসান?
নয়নতারার কাছে কোনো জবাব না পেয়ে টেবিলের উপরে থাকা পানির গ্লাসটা হাতে তুলে, মেঝেতে ছুড়ে মারলো রাফসান ।
নয়নতারা কয়েক পা পিছিয়ে গেলো । আফিয়া জান্নাত ভেতর থেকে এসে বললেন-
কি হলো? কি হলো?
.
রাফসান একই প্রশ্ন করলো আফিয়া জান্নাতকে । তিনি নয়নতারার দিকে তাকিয়ে বললেন-
মুখে কি তালা লাগিয়েছিস? কেনো রাফসানকে জানাসনি এটা বলতে পারছিস না?
-আহ মা ছাড়ো ।
.
রাফসানের ঠিক সামনে এসে আফিয়া জান্নাত বললেন-
তোমার মা নিষেধ করেছে । আমরা নিরূপায় ছিলাম । তোমার মা চাননি তুমি এসব শুনে আমাদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ো । মা হিসেবে উনার চাওয়াটা ভুল নয় । কিন্তু কিছু না জেনে অন্যকে দোষারোপ করাও তোমার উচিত হয়নি ।
.
আফিয়া জান্নাতকে দুঃখিত বলে বেরিয়ে পড়লো রাফসান । আফিয়া জান্নাত বুঝতে পারলেন, আজ বাসায় গিয়ে মায়ের সাথে ঝগড়া করবে সে । কিন্তু সত্যিটা না জানালে তাদের উপরে রেগে থাকতো রাফসান । তাই তাকে জানাতেই হলো ।
নয়নতারা মেঝেটা পরিষ্কার করতে গিয়ে হাতে কাচ লেগে কেটে রক্ত বেরিয়ে এলো । অঝর ধারায় তার চোখ দুটি বেয়ে পানি পড়তে লাগলো । এই পানি যেনো জমে ছিলো এতোক্ষণ! কোনো বাহানা খুঁজছিলো ঝড়ে পড়ার জন্য । আফিয়া জান্নাত বললেন-
খুব বেশি লেগেছে কি?
.
না সূচকভাবে মাথাটা নাড়লেও নিজের মনে নয়নতারা বললো-
খুব বেশিই লেগেছে । তবে বুকের মাঝে । এতো কথা শোনানোর পরেও রাফসান আমাকে একটা সরিও বললোনা! ওর জীবনে আমার কোনো মূল্যই নেই । তবুও বেহায়া মনটা ওর নামই জপে কেনো?
.
.
অনেকক্ষণ যাবৎ ছোঁয়াকে সরি বলার চেষ্টা করে চলেছে পরশ । কিন্তু ছোঁয়াকে একটিবারের জন্যও একা পাচ্ছেনা সে । কখনো শফিউল আহম্মেদের সাথে বসে আছে আবার কখনো বা সাফিনা আহম্মেদ । মা বাবার সামনে সরি কিভাবে বলবে পরশ!
ড্রয়িংরুমে বসে তার মা বাবার সাথে টিভি দেখছে ছোঁয়া । পরশ এসে বসলো তার ঠিক সামনের সোফাটায় । দুজনের চোখাচোখি হতেই পরশ ইশারা করলো, ছোঁয়াকে উঠে আসার জন্য ।
কিন্তু ছোঁয়া না বোঝার ভান করে টিভির দিকে মন দিলো । পরশও হার মানার পাত্র নয় ।
সবার টিভির দিকে নজর ও মন থাকলেও তার দুটোই ছোঁয়ার দিকে । একপর্যায়ে ছোঁয়ার দৃষ্টি তার দিকে আসতেই নিজের
দুইকান দুহাত দিয়ে ধরে ফিসফিসিয়ে সরি বললো সে । তা দেখে ছোঁয়া শব্দ করে হেসে ফেললে শফিউল আহম্মেদ বললেন-
সিনেমা দেখাকালীন এমন দুঃখজনক একটা ঘটনায় হাসতে পারো কিভাবে? আমি জানতাম মেয়েরা ইমোশনাল হয় । ওই দেখো, সাফিনা তো একেবারেই টিভির ভেতরে ঢুকে গিয়েছে । তার চোখে পানিও ।
.
ছোঁয়া মুচকি হেসে বললো-
আমি সহজে ইমোশনাল হইনা আঙ্কেল । আবার সহজে রাগও করিনা ।
-তাহলে নিশ্চয় রাগ সহজে ভাঙেওনা তোমার?
-জ্বি ।
.
পরশ বুঝতে পারলো, ছোঁয়া কথাটি তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে । আজ ছোঁয়া রাগ করাতেও সে খুশি । কেননা যাকে আমরা প্রাধান্য দিই তার সাথেই আমরা রাগ করি । ছোঁয়ার জীবনে পরশের গুরুত্ব আছে । এটাও কম কিসের!
যেভাবেই হোক, ছোঁয়ার রাগ পরশ ভাঙাবেই ।
.
চলবে
.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here