ডাহুক নদীর তীরে পর্ব -০১

তথা সবে গেটের বাইরে পা দিয়েছে।এমন সময় কোথা থেকে একদল ছেলে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো তার সামনে।সাত-আটটা ছেলে।প্রত্যেকের বয়স বোধহয় সতেরো-আঠারোর ঘরে।তথার কপাল কুঁচকে যায়।গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করেঃ” কী চাই?”

—“আসসালামু আলাইকুম। কোথায় যাবেন ভাবি?”—সবার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটা তথার উত্তর না দিয়ে পুনরায় প্রশ্ন করে। সে মনে হয় দলের নেতা।ছেলেটার দৃষ্টি নিচের দিকে।

—” তুমি জেনে কি করবে?”

—” আপনাকে রিকশা ডেকে দেব,ভাবি?অনেক গরম বাইরে।”

—” আমি তোমার কোন ভাইয়ের বউ?ভাবি বলে কেন ডাকছো আমাকে?”

—” ভাই বলছে আপনারে ভাবি ডাকতে।আপনারে ভাবি বলে না ডাকলে ভাই মারবে আমাদের।ভাবি, একটা রিকশা ডেকে দেই? ”

রাগে হাত-পা কাঁপছে তথার।শান্তিতে একটু বাইরে বের হওয়া যায় না।বাড়ির বাইরে বেরোলেই এই যন্ত্রণা। এলাকার কোন না কোন বড়ভাই তথাকে খুব পছন্দ করে।কেউ একজন তথার উপর নজর রাখে,ফুচকা খাওয়ার পর কেউ একজন ভোজভাজির মতো অগোচরে বিল দিয়ে দেয়,টিউশনিতে যাওয়ার আগেই বাড়ির সামনে রিকশা দাঁড়িয়ে থাকে—এসব যে কিসের ইঙ্গিত তা বুঝতে কষ্ট হয় না তথার।আর এলাকার এই পিচ্চি-পাচ্চার কথা না বললেই নয়।তথার ছায়া দেখলেও তারা ভাবি, ভাবি জপ করতে করতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে।বহু গবেষণা করেও আজ পর্যন্ত তথা মানুষটাকে খুঁজে বের করতে পারলো না।সবসময় কারো একজোড়া চোখ তথার উপর ঘুরতে থাকে—এই কথা মনে আসলেও ঘিনঘিন করে উঠে তথার মন-মস্তিষ্ক। সেই অপরিচিত ব্যক্তিটা তাকে কি নজরে দেখছে আল্লাহ মালুম।
তথা খুব বেশি কথা বাড়ায় না।কাঁধের ওড়নাটাকে আরো একটু চেপে ধরে,সামনের দিকে পা বাড়ায়।এদের সাথে সময় নষ্ট করে লাভ নেই।ভার্সিটি,এলাকায় তথার প্রণয় ভিক্ষুকের অভাব নেই।তথার সৌন্দর্যে মোহিত হয় অনেকেই।তার সৌন্দর্যের জুড়ি মেলা ভার।সৃষ্টিকর্তা মেয়েটার শরীরে অসীম রূপ ঢেলে দিয়েছেন।তাই রাস্তা-ঘাটে ভাবি,জান,ময়না,তোতা এসব নিম্নস্তরের সম্বোধন শুনতে হয় প্রায় সময়।তথা নিজেই বিরক্ত এসবের উপর।মাঝে মাঝে চেহারা ঝলসে দেওয়ার তীব্র ইচ্ছে হয় তথার।এই সৌন্দর্য না থাকলেই ভালো হতো।প্রতারণার যুগে আর কেউ তার রূপ দেখে মুগ্ধ হতো না।রাস্তা-ঘাটের উটকো উপদ্রব থেকে বেঁচে যেত তথা।
তথার সামনে একটা খালি রিকশা এসে থামে।ভাবনার সুতো কাটে তথার। ঘাড় ঘুরিয়ে একবার ছেলেগুলোর দিকে তাকায়। তাদের চোখে-মুখে বিনয়ের হাসি।তথার চোখে চোখ পড়তেই ছেলেগুলো মাথা নিচু করে ফেলে।দলনেতা ছেলেটা দাঁত বের করে হাসে।

—” উঠেন ভাবি।হাঁইটা যাওয়ার দরকার নাই।”

তথা ছেলেটার দিকে দু-পা এগিয়ে আসে।কপাল কুঁচকে বলেঃ” একটা প্রশ্ন করব?”

—” করেন ভাবি?”

—” তোমাদের কোন ভাই আমাকে পছন্দ করে?”

—” বলা যাবে না ভাবি।বললে ভাই মারবে।”

—“তোমাদের ভাই জানতে পারবে না।”

—” আপনে রিকশায় উঠেন ভাবি।”

—” আমার প্রশ্নের উত্তর না দিলে আমি উঠব না।”

তথার অবিচলিত কন্ঠস্বরে খানিকটা ভ্যাবাচেকা খায় ছেলেটা।সাধারণত তথা এতো কথা বলে না তাদের সাথে।

—” ভাবি,আপনে কাউরে বলবেন না তো?”

—” উঁহু,বলব না।”

—” ওই যে ইরফান ভাই আছে না,কাউন্সিলরের ছেলে।চিনছেন?”

—” তিন রাস্তার মাথায় যে বাড়ি,উনি?”

—” হ্যাঁ, ভাবি।এইবার রিকশায় উঠেন প্লিজ।আপনে কিন্তু কাউরে বইলেন না।”

—” আচ্ছা।”

তথা লম্বা একটা দম নিয়ে রিকশার দিকে পা বাড়ায়।মেজাজটা প্রচন্ড খারাপ হয়ে আছে।ইরফানের জন্য মেয়ের অভাব পড়েছিল?কেন তার নজরে তথাকেই ভালো লাগে?এতো বাড়াবাড়ি তথার ভালো লাগে না।তথা রিকশায় চেপে বসে।একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজে যাচ্ছে সে।স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপ।কাজটা ঠিকভাবে হয়ে গেলে খুব ভালো হবে।তথা রিকশার হুড তুলে দেয়।বাইরে প্রচন্ড রোদ।

—” মামা,সাবধানে নিয়া যায়েন। ভাবির যাতে কষ্ট না হয়।”

পিছন থেকে ছেলেটার কন্ঠ শোনা যায়।তথা সেদিকে তাকায় না আর।ভালো কাজের আগে এসব উটকো ঝামেলার দিকে তাকানোর সময় নেই। খুব তাড়াতাড়ি তিন রাস্তার মাথায় পৌঁছে যায় রিকশা।তথাদের বাড়ি থেকে খুব দূরে নয় রাস্তাটা।তথা একবার চোখ ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকায়।ইরফানকে চোখে পড়ে।রাস্তার একপাশে একটা দেয়ালে বসে আছে।চোখে সানগ্লাস থাকায় ইরফানের চোখ নজরে পড়ে না।তবে তার দৃষ্টি যে তথার দিকেই,তা বুঝতে কষ্ট হয় না।আবারো সারা শরীর সংকুচিত হয়ে আসে তথার।সৌন্দর্য সবসময় আশীর্বাদ নয়,কখনো কখনো অভিশাপও হয়।

***

ডাহুক নদীর তীর থেকে একটু দক্ষিণ দিকে গেলেই, সবুজের চায়ের দোকান চোখে পড়ে।ছোট্ট একটা চায়ের দোকান।এই গ্রামকে অজপাড়া গাঁ বলা যায়।এখনে ইলেক্ট্রিসিটি এসেছে বছর কয়েক আগে।গ্যাসের নাম-গন্ধ নেই।রাস্তা -ঘাট এখনো পাকা হয়নি।সবুজ দোকানে বসে চা বানাচ্ছিলো।দোকানে বসে চা খাচ্ছিলো কয়েকজন মানুষ।সবুজের কাস্টমার খুব কম।এই গ্রামে বেশিরভাগ নিম্নবিত্তের বসবাস।সারাদিন ক্ষেত-খামারের কাজ করে চাষিরা ঘরে যেয়ে ভাত খায়।চা নামক বস্তু তাদের কাছে অনেকটা বিলাসিতার মতো।সবুজ অভ্যস্ত হাতে চায়ের কাপে চামচ নাড়ছিল।দোকানের সামনে বসা মতিন মিয়া চায়ের কাপে লম্বা চুমুক দেন।সবুজকে উদ্দেশ্য করে বলেনঃ” সবুজ,খবর হুনছোনি?”

—” কী কাকা?”

—” ভূতের বাড়ির থেকা কালকে আবারো মাইয়াগো কান্দার আওয়াজ পাওয়া গেছে।”

—” কে আওয়াজ পাইসে?”

—” মন্দিরের পুরোহিত আছে না?কি নাম যেন?”

—” হরিলাল?”

—” হ,হ।ওই ব্যাডায় মন্দির থেকা বাড়ি ফিরার পথে ওই বাড়ির পথ ধরছিল।হেয় হুনছে।হরিলাল ওইহানেই ফিট।পরে সকালে হের পোলায় খুঁইজ্জা বাইর করছে বাপেরে।হরিলালের অবস্থা নাকি খুব খারাপ।ভয়ে ডায়রিয়া হইছে।”

—” বলদের মতো রাত্তির বেলা ওইদিকে যায় ক্যান?জানে না ওই বাড়িতে আত্মা আছে।কত বছরের পুরানো বাড়ি।সেই জমিদার আমলের বাড়ি।কত মানুষ মরছে এইহানে।এই বাড়ির ছায়া মারানোও পাপ।”

—” আচ্ছা ওই ম্যানেজারটা ক্যামনে থাকে?এতো বড় বাড়ি পাহারা দিতে ভয় করে না?”

—” টাকার মায়ায় থাকে, কাকা।নাইলে ওই বাড়িতে কে যাইব?ওই বাড়ির মালিক নাকি ঢাকায় থাকে।মাসে মাসে মোটা অংকের বেতন দেয় ম্যানেজাররে।আমার মনে হয় ম্যানেজার ব্যাডাও একটা আত্মা।নাইলে, টাকার মায়ায় এই বাড়িতে থাকে! আমারে লাখ টাকা দিলেও আমি থাকতাম না।ওই বাড়ির দিকে তাকাইলেও গায়ে কাটা দেয়।”

মতিন মিয়া চা শেষ করে সোজা হয়ে বসেন।বাঁশের বেঞ্চিতে বসে,গলা বাড়িয়ে একবার ভূতুড়ে বাড়ির দিকে তাকান।সবুজের দোকান থেকে বাড়ির একটা অংশ চোখে পড়ে।ব্রিটিশ আমলের বাড়ি।জমিদার যুগ যাওয়ার পর বাড়িটা সংস্কার করা হয়েছে।বাড়ির মালিক বেশ প্রতাপশালী জমিদার ছিল।তাদের অত্যাচারের শিকার হয়েছে অনেক গ্রামবাসী।জমিদার যুগ যাওয়ার পর আসলো পাকিস্তান আমল।তখনো বাড়িতে মানুষ থাকতো।যুদ্ধের সময় পর্যন্ত অনেক প্রভাব ছিল এই বাড়ির মানুষদের। যুদ্ধের সময় এই বাড়ি ছিল শান্তি কমিটির অফিস।কত মেয়েদের আহাজারি শোনা যেত তখন! কত বীর যোদ্ধা শহীদ হয়েছে এই বাড়ির অশ্বত্থ গাছের গোড়ায়।এসব মনে পড়লেও মতিন মিয়ার চোখ ভিজে আসে।জমিদার বাড়ির মানুষ ছিল রাজাকার।তাদের অত্যাচারে টিকতে না পেরে মতিন মিয়া ভারতে পাড়ি জমিয়েছিলেন। সবকিছুর শেষ আছে।জমিদার বাড়ির অত্যাচারও শেষ হয়েছিল। একাত্তরের বিশে ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিতে হামলা করে এই বাড়ির উপর।এক রাতেই হত্যা করেছে সবাইকে।পুরো বংশ নির্বংশ যাকে বলে।শুধু এক দম্পতিকে মারতে পারেনি।তারা যুদ্ধের শেষেই ঢাকায় পালিয়ে গিয়েছিলো। মোট পনেরো জন মানুষকে হত্যা করেছে মুক্তিযোদ্ধারা।পরে সকালবেলা জমিদার বাড়ির আঙিনায় সবাইকে গণকবর দিয়েছে গ্রামবাসী।তারপর থেকে বাড়িটা পরিত্যক্ত। কেউ ছায়াও মারায় না।কেউ কেউ নাকি রাতের বেলা কান্নার আওয়াজ পায়।কখনো কখনো সাদা অবয়ব দেখা যায়।বছর কয়েক আগে এই বাড়ির নতুন মালিক উদয় হয়েছে।সে কখনো গ্রামে আসেনি।গ্রামবাসী তাকে কখনো দেখেনি আর দেখার ইচ্ছেও নেই।সেই মালিক বহু টাকা ব্যয় করে একজন ম্যানেজার ঠিক করেছে। ম্যানেজার থাকছে,বাড়ি পাহারা দিচ্ছে।সে গ্রামবাসীর সাথে খুব বেশি কথা বলে না।গ্রামবাসীও বলে না।কি দরকার ভূতের বাড়ির সাথে সখ্যতা গড়ার???

***

বিলাসবহুল রেস্টুরেন্টের এককোনে বসে আছে তথা।তার হাতে সাদা কাগজের এগ্রিমেন্ট পেপারটা।তথা কিছুটা হতভম্ব। এটা কি সত্যি?সবটা এতো সহজ?তথার মুখোমুখি চেয়ারে বসে আছেন ডিরেক্টর আখতার হোসেন।শতদল মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার তিনি।শতদল মাল্টিমিডিয়া খুব বেশি পরিচিত নাম নয়।চলচ্চিত্র জগতে অনেকটাই নতুন। আখতার হোসেনের ইচ্ছে, এবার খুব ভিন্ন রকমের একটা নাটক তৈরি করবেন।তাই,কতগুলো নতুন মুখ খুঁজছেন তিনি।যারা সহজ-সুন্দর অভিনয় করবে আবার ডিমান্ডও কম হবে।কয়েক সপ্তাহ আগে,তথা একটা স্ক্রিনটেস্ট দিয়েছিল এখানে।অনেক প্রতিযোগি,অনেক প্রতিভা।অন্যদিকে,তথার অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে।এর আগে একটা শর্টফিল্মে কাজ করেছে।নায়িকার বান্ধবীর চরিত্রে।কয়েক মিনিটের জন্য তাকে পর্দায় দেখা গেছে।তথা ধরেই নিয়েছিল সে টিকবে না।এতো এতো মানুষের ভীরে কে তাকে মনে রাখবে?কিন্তু তথার ধারণা পুরোই মিথ্যে হলো আজ সকালে।আখতার সাহেবের পিএ ফোন দিয়েছিল তাকে।তথা পুরোই অবাক। এও কি সম্ভব?

—” মিস তথা,তুমি কি শর্তগুলো পড়েছ?”

—” জ্বি।কিন্তু আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।সামান্য একটা স্ক্রিনটেস্টেই আপনি সিলেক্ট করে ফেললেন?”

—” আমাদের জহুরির চোখ।প্রতিভা চিনতে সময় লাগে না।”—-মুখে হাসির রেখা টেনে উত্তর দেন আখতার সাহেব।

—” আমাকে কি করতে হবে এখন?”

—” বেশি কিছু না।কস্টিউম ডিজাইনারের কাছে ড্রেসের মাপ দিয়ে যাবে,বিউটিশিয়ানের কথা মতো স্ক্রিনের যত্ন নিবে,কিছু স্ক্রিপ্ট দেয়া হবে তোমাকে- সেগুলো প্রেকটিস করবে।”

—” আমি কোন চরিত্রে অভিনয় করব?”

—” নাটকে একটা বিধবা বউয়ের চরিত্রে অভিনয় করবে।তোমার চরিত্র হবে অনেকটা বিনোদিনীর মতো।চোখের বালি উপন্যাসটা পড়েছ?”

—” জ্বি। ”

—” গুড।তাহলে শর্তগুলো মানতে রাজি আছো তুমি?নাটক অন এয়ার হওয়ার আগ পর্যন্ত আর কোথাও কাজ করতে পারবে না কিন্তু।”

—” জ্বি,বুঝতে পারছি।শর্তগুলো মানতে আমার সমস্যা নেই।কিন্তু একটা কথা,আমি কোনো ক্লোজ সিনে কাজ করতে পারব না।”

—” তুমি তো আর নায়িকা না।তোমার চরিত্রে কোনো ক্লোজ সিন নেই।তাহলে ডিল ফাইনাল। সাইন করে দেও।”

তথা কাঁপা হাতে কাগজে সাইন করে।এতো সহজে সিলেক্ট হবে তা কল্পনার বাইরে ছিল।অভিনয়ের নেশা সেই ছোট থেকে।কিন্তু সেরকভাবে কখনো সুযোগ হয়নি।তথাকেও এখন মানুষ টিভিতে দেখবে!তার অভিনয়েও মানুষ হাততালি দিবে! ভাবতেই হৃৎপিণ্ডের গতি তীব্র হয়।এগ্রিমেন্ট পেপার ফিরিয়ে দেওয়ার সময় চোখে পানি চলে আসে তথার।গলায় আওয়াজ আসে না।তীব্রভাবে কাঁপে কন্ঠস্বর।তথার চোখের পানি নজরে আসে আখতার হোসেনের।তিনি শব্দ করে হেসে উঠেন।

—” ডোন্ট ক্রাই,ডোন্ট ক্রাই ব্রেভ গার্ল।তুমি একদিন অনেক বড় হবে।এটা তো বিগিনিং মাত্র।”

—” দোয়া করবেন স্যার।”

—” অবশ্যই।”

তথা উঠে চলে গেলেও আখতার হোসেন ঠায় বসে থাকেন।তার চোখের দৃষ্টি যেন মুহূর্তেই বদলে যায়।অর্ধশত বছর বয়সী ডিরেক্টরের ঠোঁটের কোনে ফুটে উঠে ফিচেল হাসি।মেয়েটাকে সুন্দরী বললে কম বলা হবে।সে আসলে ভয়ংকর সুন্দরী।খুব বেশি তাকিয়ে থাকা যায় না।চোখ যেন ঝলসে যায়।অবশ্য সুন্দরী না হলে আহমেদ ইউসুফের নজরে পড়ে!
আখতার হোসেন কল করেন কাঙ্ক্ষিত নম্বরে।দু’বার রিং হওয়ার পর ওপাশের মানুষটি ফোন ধরে।আখতার হোসেন গলা পরিষ্কার করে নেন।বিনয়ী গলায় বলেনঃ” কাজ হয়ে গেছে, স্যার।ম্যাডামের সাথে ডিল ফাইনাল হয়েছে।তিনি এখন আমাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ। ”

—” ভেরি গুড।সমস্যা হয়েছে কোনো?”

—” না স্যার।”

—” বাকি মেয়েদের কি খবর?”

—” কাজ গোছানো শেষ।অতিদ্রুত আমরা ডাহুক নদীর দিকে যাত্রা করব।”

—” ওকে।তাহলে ডাহুকের পাড়েই দেখা হচ্ছে তোমাদের সাথে।”

—” জ্বি স্যার।”

—” তথার যাতে কোনো কষ্ট না হয়।”

—” ঠিক….”

খট করে লাইন কেটে দেয় আহমেদ ইউসুফ।ডিরেক্টরের সাথে লেনদেনের বাইরে বাড়তি কথা বলতে ইচ্ছে হয় না।নরম তুলতুলে বালিশে হেলান দেয় ইউসুফ। মোবাইলের গ্যালারি থেকে তথার হাস্যোজ্জ্বল ছবি বের করে।তথার মুখের দিকে আটকে যায় কটকটে সবুজ রঙের একজোড়া চোখ।ইউসুফ আঙুল চালায় তথার ছবির উপর।খুঁটে খুঁটে দেখে তথার চোখ,মুখ,ঠোঁট। সে যেন তথার চেহারার দৈর্ঘ্য-প্রস্থ মাপে।ছবির উপর একবার ঠোঁট বুলিয়ে দেয় ইউসুফ।ফিসফিসিয়ে বলেঃ” তোমার অপেক্ষায় আছি, কামিনী ফুল।দেখা হবে ডাহুকের পাড়ে।”

চলবে….

# ডাহুক নদীর তীরে (পর্ব-১)
# হালিমা রহমান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here