কাঠপুতুল পর্ব ৮

#কাঠপুতুল
#লেখনীতে-তানভীন শিলা
#পর্ব-৮
.
“তুই আজকেই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবি।”
“কি বলছো কি পরশ ভাই!! কোথায় যাবো আমি?”
“আমি তোকে বের হতে বলেছি? বের হ এখনি।”
মৃদু কথা না বাড়িয়ে রুম থেকে বের হওয়ার জন্য হাঁটা ধরে। পরশ মৃদুর চলে যাওয়া দেখতেছে। হুট করে মৃদুর সামনে দাড়ায়।
কিছু বুঝে উঠার আগে পরশ খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মৃদুকে। মৃদু মূর্তির মতো দাড়িয়েই আছে, ওর এখন কি করা উচিত সেটা সে জানেনা।
“তুই কি এখন আমার নরম হাতের গরম চড় খেতে চাচ্ছিস?”
মৃদু পরশের কথার মানে বুঝেনা তাই চুপ করেই থাকে। পরশের ধমকে চমকে উঠে মৃদু।
“খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধর আমায় এখনি, রাইট নাও।(চিল্লিয়ে)”
মৃদুও পরশকে পরম আবেশে খুব শক্ত করে ধরে কেঁদে দেয়। এই মানুষটাকেই তো সে কিশোরী মনের এককোণায় ঠায় দিয়েছিলো। ভালোবাসায় জড়ানোর আগেই তার জীবনেই জড়িয়ে যায় সে।
“আহারে…. আমার নতুন শার্টটা বুঝি আমি তোর চোখের পানি শুষে নিতে কিনেছি?”
মৃদু কান্নার কারণে কিছুই বলতে পাচ্ছেনা। পরশ মৃদুকে কোলে তুলে নিয়ে খাটে বসিয়ে দেয়। মৃদু তখনও কান্না করতে করতে হেচকি তুলতে ব্যস্ত।(পরশের আকুলতা-ব্যকুলতা দেখার টাইম কই ম্যাডামের? আর তোমরা কও ওদের রোম্যান্স করাতে?)
“প্লিজ মৃদুপাখি, কলিজা আমার প্লিজ কাঁদিস না। দেখ না আমার কিন্তু খুব কষ্ট হচ্ছে রে জানপাখি, আমাকে প্লিজ রে এতো কষ্ট দিসনা।”
মৃদু কান্নার লেভেল কমায়। পরশ মুচকি হেসে মৃদুর সম্পূর্ণ মুখে উন্মাদের মতো অধরযুগল ছোঁয়ায়। যখন পরশ মৃদুর অধরযুগলের দিকে এগোয় তখন মৃদু নিজেই সব লাজ-লজ্জা ত্যাগ করে সম্মতি দেয়। কিছুক্ষণ পর মৃদুকে ছেড়ে দিয়ে পরশ বলে-
“গিজার অন করে পুরো ১ঘন্টা ভিজবি। মনে থাকে যেনো পুরো ১ঘন্টা। ততক্ষণে আমি চলে আসবো।”
“কোথায় যাবে তুমি? আর ১ঘন্টা শাওয়ার কেন নিবো?”
“কি বললি তুই?”
“নাহ্ সরি আর প্রশ্ন করবো না।”
“সেটা না। আমায় তুই প্রশ্ন করতেই পারিস।”
মৃদু অবিশ্বাস্য দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। যাকে প্রশ্ন করা মানা সে নিজেই বলতেছে প্রশ্ন করতেই পারিস?
“কোনটা কি বললাম?”
“তুই আমায় তুমি করে বলেছিস।”
“ওহ্ সরি ভুল হয়ে গেছে প্লিজ ক্ষমা করে দিন।”
“নাহ্ কোনো মাফ নাই, তোকে শাস্তি পেতে হবে।।”
“কি শাস্তি?(মৃদুর ভয়মাখা দৃষ্টি দেখেই পরশ ঘায়েল, শাস্তি আর কি দিবে?)
“আমায় তুই তুমি করেই বলবি আর নাম ধরে ডাকবি। পারবি না?”
“আলবাত পারবো(খুশি হয়ে) কিন্তু শুধু তখন যখন তুমি আর আমি থাকবো।”
“হুম যা পুরো ১ঘন্টা শাওয়ার নিবি গরম পানি দিয়ে। আমি তাড়াতাড়িই ফিরবো।”
.
.
৫মিনিট হলো শাওয়ার নিয়ে বসে আছি। আজ আয়নাবিলাসের ইচ্ছে নেই। অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করতেছে।
“আমি জানতাম পরশ ও আমায় ভালোবাসে। ওর কেয়ারগুলোয় ভালোবাসা তখনও ছিলো আর এখনও আছে।”
মৃদুর ভাবনার মধ্যেই আগমন হয় পরশের। পরশের হাতে পলিথিনের ব্যাগ, তাতে কাগজের ঠোঙা আর ঠোঙার ভিতরে কি তা জানার উপায় নেই। মৃদুকে কিছুক্ষণ দেখে গেট লাগিয়ে দিয়ে পাশে এসে বসে। কিছুক্ষণ হ্যাবলার মতো দেখার পর অনুনয়ের সূরে বলে-
“মৃদু গতকাল যেগুলো দিয়েছিলাম ওগুলো পরে আয় ইন 5মিনিটস্।”
“আমি ভয়ে একটা শুকনো ঢোক গিললাম। আবার ঐসব জিনিস কেনো? আমায় ভাবার সুযোগ না দিয়ে আবারো গতকালকের বুলি আওড়ালেন তাই আমি বাধ্য হয়েই চেঞ্জ করতে গেলাম। টপ-টা আমার ভালোলাগেনি তাই আজও তোয়ালা পেঁচিয়ে আছি। হয়তো তোয়ালা পেঁচানো পরশের পছন্দ হলোনা তাই ঘোর লাগা কন্ঠে বললেন-
“বউ কি খুব বেশি লজ্জা পাচ্ছে নাকি? এতো চিন্তা করো কেন বলতো? তোমারি তো স্বামী আমি।”
পরশের তুমি করে বলাতে বেশ অবাক মৃদু। তোয়ালা সড়িয়ে দিতেই মৃদুকে বাহুডোরে আবদ্ধ করে পরশ। আর কানে ফিসফিসিয়ে বলে-
“এখন আমি যা করবো তা করতে বাঁধা দিবেনা আমায়।”
মৃদু নিজেকে ছাড়িয়ে ডিমের মতো চোখ বড় করে পরশকে দেখতে লাগে।পরশ মৃদুকে শুইয়ে দেয়। তার আনা জিনিসগুলো বের করে, তেলের বেশ কয়েকটা বোতল বের করে একটি বাটিতে সব তেল কিছুটা করে নিয়ে মিক্সড্ করে। মৃদুর হাতে খুব সুন্দর করে মালিশ করে দিতে থাকে পরশ।
“তোমাকে আগের মতো করে দিবো মৃদুপাখি। আমি জানি এইসব আমার জন্য হয়েছে। যে করেছে তাকে হয়তো আমি আমার স্টাইলে শাস্তি দিতে পারবোনা কিন্তু তোমার স্টাইলে দিবোই।”
পরশ কি বলে মাঝে মাঝে কিছুই বুঝা যায়না। পাজ্জেল একটা।
“আমার স্টাইলে মানে?”
“সেটা বুঝতে হবেনা তোমার।”
পরশ মৃদুকে দুহাতে ও দুপায়ে (হাঁটু অব্দি) সুন্দর করে মালিশ করে দেয়। মৃদুকে ওভাবেই শুয়ে থাকতে বলে পরশ ওয়াশরুম থেকে হাত ধুয়ে আসে। মৃদু শুয়ে শুয়ে পরশের ফল কাঁটা দেখতেছে। একটা স্লাইসে মৃদুকে একটা বাইট দিয়েই বাকীটুকু নিজে খেয়ে নিচ্ছে। খাওয়া শেষে অন্নেকককক গুলোন ঔষধ খাওয়াতে লাগলো। ঔষধে মৃদুর এলার্জি থাকায় গিলে নিয়েও বের করে দিচ্ছে। এটা মৃদুর পুরোনো মহা-বদ-অভ্যাস সেটা পরশ ভালো করেই জানে। তাই ধৈর্য্য সহকারে খাওয়ালো। মৃদু কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে গেলো।
.
‘মাথা ব্যথা করতেছে। ঐসময়ে কেন ঘুমালাম জানিনা। আর এখন মাথা ব্যথা সাথে নড়তেও পারতেছি না। আধো আধো চোখ খুলে দেখি পরশ আমায় জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেছে। আমি একটু নড়তেই লাফ দিয়ে ওঠে পরশ।’
“ঘুম ভাঙ্গলো তোমার? জলদি উঠে খেয়ে নাও তো। সেই দুপুরে ঘুমিয়েছো আর এখন রাতের ২:৩০মিনিট।”
পরশের কথায় মাথায় বাজ ভেঙ্গে পরে আমার। আমি তো নাস্তা বানানোর পর রান্নাই করিনি তাহলে কে করলো? আমাকে হাসফাঁস করতে দেখে পরশ বিচলিত হয়ে প্রশ্ন ছুড়লেন-
“কি হয়েছে মৃদুপাখি? এমন করছো কেন?”
“আ…মি তো রান্নাই করিনি কাকিমা কিছু বলেনি? আমায় ডাকেনি?”
“এটার জন্য এতো ভয় পাওয়ার কি আছে? আমি একজন মেইড এনেছি সে-ই এখন থেকে সব করবে।”
“আমি তো সব ঠিক-ঠাক মতোই করতেছিলাম তাহলে মেইড কেনো?”
এখন হয়তো পরশের হাতে থাকলে ভোকাল কর্ড ছিড়ে ফেলতো মৃদুর কিন্তু আফসোস নিজের জানটা দিতে পারলেও মৃদুকে এখন থেকে ফুলের টোকাও লাগতে দিবেনা সে। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলিয়ে বলল-
“তোরে কি কাজের বেডি বানানোর লাইগা বিয়া কইরা বাড়িত আনছি??”
পরশের এমন গেয়োভাবে কথা বলা পছন্দ হলো না মৃদুর। কিছু একটা ভেবে জড়িয়ে ধরলো পরশকে।
“ওহো ঘুষ, রিসওয়াত, ব্রাইব দেয়া হচ্ছে? কিন্তু এসব যে চলবে না মৃদুপাখি।”
পরশকে ছেড়ে দিয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি নিয়ে প্রশ্ন করে-
“কি চলবে?”
পরশকে নেশাভরা চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে নিজেও নিজের দিয়ে তাকিয়ে দেখে তখনকার সেই কাপড়ই পরিধানরত সে। লজ্জার চাদরে মুড়িয়ে যায় মৃদু। মৃদুকে লজ্জা পেতে দেখে কোমড় জড়িয়ে কাছে টেনে এনে বলে-
“হবে কি আমার লজ্জাবতী?”
মৃদু কি বলবে ভেবে পায়না। যেই ভালোবাসা পাওয়ার জন্য এতোগুলো বছর অপেক্ষা করলো সেটাকে এতো কাছে পেয়েও তাকে দূরে থাকতে হচ্ছে।
“আমি শাওয়ার নিয়ে আসি, কেমন যেন বাজে গন্ধ তেলগুলোর।”
“প্রয়োজন নেই আমার সাথেই থাকো। আর অনেকগুলো তেল হওয়ায় এমন গন্ধ করতেছে।”
মৃদুর কাছে বাহানা অবশিষ্ট নেই। দিনের বেলায় হলে কিছু একটা বলে রুম থেকে বের হওয়া যেত কিন্তু এখন সেটাও সম্ভব না।
.
ফোনের রিংটোনের আওয়াজে ঘোর কাটে পরশের। এতো রাতে কে কল দিলো চেক করতেই দেখে আন্বিষ। আন্বিষকে এখন মোটেও ভালোলাগেনা পরশের। অতিরিক্ত সাহস ছেলেটার পরশের মৃদুকে বিয়ে করতে চায়? সময় হলে কলিজা কেঁটে ফেলবে লুইচ্চাটার। দুই বস্তা বিরক্তি নিয়ে রিসিভ করে-
“প্রবলেম কি তোর? গার্লফেন্ড জুটাইছিস? বেড পর্যন্ত যাইতে চায়নি?”
“উফ্ পুরাতন কথা তুলে কেন মাথা আউলাচ্ছিস? নতুনটাকে নিয়ে কথা বলবো। গেট খুল কথা আছে তোর সাথে। ভাবতেছি কালকে মৃদুলাকে সারপ্রাইজ দিবো। ইমপ্রেস করা শুরু করতে হবেনা? আইডিয়া নিবো গেট খুল, তোর রুমের সামনে আমি। ১০মিনিট হলো নক করতেছি কিন্তু তুই তো রেসপন্স-ই করতেছিস না তাই কল দিলাম।”
পরশের রাগে শরীর কাঁপতেছে। মৃদু ভয় পেয়ে যায় পরশের চোখ দেখে। পরশ দেখে মৃদু ওর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এতে সে আরো হিংস্র হয়ে ওঠে। মৃদুকে টেনে শুইয়ে দিয়ে নিজেও মৃদুর উপরে উঠে ভর ছেড়ে দেয়। আর কি লাগে? এতেই মৃদু ফ্রীজড্। মৃদু পরশের থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ঠেলতে শুরু করে যেটা দেখে পরশ চোখ রাঙ্গালে মৃদু শান্ত হয়ে যায়।
“আর একটা বাজে কথা বললে মেরে দেবো তোকে। ঘরে যেয়ে চুপচাপ ঘুম দে।(ফোন রেখে দেয় পরশ)”
মৃদু দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছে। পরশ হাত সড়াতে চায় কিন্তু মৃদু হাত শক্ত করে ধরে রাখে তাই প্রথমবার অসফল হয়ে মৃদুর দুইহাত এক ঝাটকায় সড়িয়ে দেয়। হাতদুটোকে মাথার পাশে চেপে ধরে।
“ভয় কেন পাচ্ছো??” (বলেই গলায় মুখ ডুবায় মৃদুর। মৃদু কেঁপে উঠলে মাথা উঠিয়ে কিছুক্ষণ চোখের মাধ্যমে কথা বিনিময় করে মৃদুকে টেনে বসিয়ে দেয়।)
.
প্লেটে এত্তোওওওওওও গুলো খাবার।সব মৃদুকে খেতে হবে। রাত গভীর হওয়ায় খাওয়ার ইচ্ছা+শক্তি কোনোটাই নেই মৃদুর।
মৃদু ঠোঁট উল্টিয়ে বলে-
“আমি এগুলো খাবোনা। সকালে খাবো প্লিজ।”
“মানে কি? তোমার জন্য আমি না খেয়ে থাকলাম আর তুমি আমাকে না খাইয়ে রাখবে? আমার তো ক্ষুধা লেগেছে রে বউ।”
দেখা হওয়ার পর থেকে মৃদুর জন্য জমিয়ে রাখা সব ভালোবাসা একসাথে ঢেলে দিচ্ছে পরশ। দেড়টা বছর অন্যের কথা শুনে নিজেকে পুড়িয়ে আড়াই বছর ছটফট করেছে সে, তাই ভালোবাসার কোনো কমতি রাখার মানেই হয়না। অর্ধেক সত্য দুজনের জীবনের গতিপথটাই পাল্টে দিয়েছে।
“ওহ্ সরি সরি চলো খেয়ে নেই।”
মৃদু পরশকে খাইয়ে দেয়। আর পরশ নিজের ভুলের কথা ভেবে কষ্ট পায়। মৃদুর চোখে পরশের জন্য অসীম ভালোবাসা অথচ পরশ নিচের রাগ আর জিদের জন্য নিজের সাথে মৃদুকেও কতগুলো কষ্ট দিয়েছে তা দুজনের একজনও বলে বুঝাতে পারবেনা।
“এখন কি করবো? আমার তো ঘুম আসবেনা।”
“তাহলে একটু ভালোবাসি?”
“কি হয়েছে তোমার বলোতো? ৪বছর আগে তোমার যাওয়ার পর কতো রিকুয়েষ্ট করছিলাম কিন্তু তুমি কথাই বলতে চাইতে না। আসার পর থেকে এক অন্য তুমিকে দেখতে পাচ্ছি।”
এই মূহুর্তে চিল্লিয়ে কান্না করতে ইচ্ছে হচ্ছে পরশের। কেন সে অন্য কে বিশ্বাস করলো? তার ভালোবাসা এতোটাই বেশি ঠুনকো ছিলো যে অন্যের কথায় সেটা গুড়িয়ে গেলো?
উদ্বিগ্ন হয়ে মৃদুর গালে হাত রেখে বলে পরশ-
“বিশ্বাস কর মৃদুপাখি আমি তোকে খুব ভালোবাসি রে। খুব ভালোবাসি তোকে। প্লিজ আমায় ভুল বুঝিস না। আমি নিজের জিদের কারণে ভুল করে ফেলেছি, আর কখনো তোকে ভুল বুঝবো না।”
“কিসব বলছো? আমায় তুমি ভুল বুঝতে মানে? আমি কি কিছু করেছিলাম?”
“নাহ্।।।।।ভুল আমি করেছি, আসলে ভুল না পাপ ছিলো ওটা। আমায় মাফ করে দে প্লিজ।”
“আচ্ছা ঠিক আছে সব ভুলে যাও। চলো ঘুমোবে।”
“তুমি যে বললে ঘুম এখন ধরা দিবেনা তোমায়।”
“শুয়ে থাকলে ঘুম নিজে থেকে ধরা দিবে।”
“ওকে।”
‘মৃদু বালিশে মাথা রাখতেই কাছে টেনে নেয় পরশ। মৃদু জিজ্ঞাসু দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে পরশ মুচকি হেঁসে নিজের বুকে মাথা রাখে মৃদুর।ঘুমের শহরে পাড়ি জমায় দুজনে।
.
.
.
এক সপ্তাহ থেকে নিখোঁজ পরশ।
.
চলবে-
.
.
*

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here