#সোহাগী
#পর্ব:২+৩
Lutful mehijabin (লেখা)
— এই আদরীনি দাঁড়া তো।
কন্ঠস্বর শুনে লোকটাকে চিনতে এক মুহুর্ত ও অতিবাহিত হলো না সোহাগীর। বার দুয়েক নিঃশ্বাস গ্রহণ করে পিছন ফিরে ঘুরলো। সামনে থাকা ব্যক্তির দিকে ভীতি ভঙ্গিতে তাকিয়ে কাঁপা গলায় বলে উঠলো,
— জাফর ভাই আমার হাত ছেড়ে দেন। আমি বাড়ি যাব।
সোহাগীর কথার প্রেক্ষিতে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো জাফর। হাতের বাঁধন ছেড়ে ঠোঁটের কোণে তীর্যক হাসির রেখা টেনে বললো,
— এই ভর সন্ধ্যায় এইখানে কি করতেছিস? কোন পোলার সাথে এইহানে আইছিস?
— জাফর ভাই আমি বাড়ি যাই।
— দাঁড়া কইতেছি। বড় হইছাস এখন। এই বয়সে এমনে ঘুইরা বেড়াইতে নাই আদরীনি। পরে কোন ছেমরা তোরে বিয়া করতে চাইবো না। বুঝছাস? আর এইখানে আইবি না। আমি তোর ভালো চাই তাই কইতেছি।
জাফরের কথাগুলো শ্রবণ করার মতো বোকামি করে নি সোহাগী। ছাড়া পেয়ে এক মুহুর্তের জন্যও অপেক্ষা করলো না। ভোউ দৌড় দিয়ে ছুটতে লাগলো বাড়ির উদ্দেশ্যে। তাদের গ্রামের উত্তর দিকে জাফরের মুদির দোকান। এই জাফর লোকটা কে মোটেও পছন্দ হয় না তার। দেখা হলেই অদ্ভুত ভাবে কথা বলে তার সঙ্গে। পয়সার গরম দেখিয়ে ইতোমধ্যে তার মায়ের সাথে বেশ ভাপ জমিয়ে ফেলেছে এই লোক।
__________
বাড়ির সামনে এসে ঠাই দাঁড়িয়ে পড়লো সোহাগী। ভেতরে ঢোকার সাহস পেল না। মাগরিবের আযানের ধ্বনি কানে যেতেই বুকের ভেতর ধ্বক করে উঠলো। টিনের গেইটের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, জিহ্বা দ্বারা ঠোঁট জোড়া ভিজিয়ে ধীরে পা বাড়িয়ে টিনের গেইটের উপর হাত রাখলো। স্বল্প ভর দিয়ে ধাক্কা দিতে মৃদু স্বরে আওয়াজ বের হলো। বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে গেইট খোলা রেখে পা টিপে টিপে কলপাড়ের উদ্দেশ্য পা চালালো সে। কলপাড়ে এসে ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে রাখা অবস্থায়, কল চেপে হাত মুখ ধুয়ে নিলো। অতঃপর কলপাড় থেকে বেরিয়ে জল সিক্ত হাত মুখ মুছতে ওড়নার আঁচল উঁচু করতে তার দৃশ্যমান হলো কোন এক ছায়ামানবী কে! মুহুর্তেই সোহাগীর ডান গালে কেউ ঠা’স করে থা’প্পড় বসিয়ে দিলো। সোহাগী গালে হাত দিয়ে মাথা উঁচু করতেই তার দৃশ্যমান হলো অগ্নিমূর্তি ধারণকৃত মানবী কে। ঝাঁপসা, অস্ফুট আলোতে মাকে চিনতে মোটেও তার অসুবিধা হলো না। সোহানা গরম চাহনি নিক্ষেপ করে কাঁপছে! অতিরিক্ত রাগলে সোহানা কাঁপতে আরম্ভ করে।
— এই মাইয়া! এতোক্ষণ কার লগে কেলেংকারি করতে ছিলি?
আকস্মিক সোহানার চিৎকার শুনে কেঁপে উঠলো সোহাগী। তার মুখ দিয়ে টু শব্দ ও নির্গত হলো না। মাথা নিচু করে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
সোহাগীর উত্তর না পেয়ে দ্বিগুণ ক্ষেপে গেল সোহানা। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আচমকা সোহাগীর চুলের মুঠি শক্ত করে চেপে ধরলো। দাঁতে দাঁত চেপে আহ শব্দ করে উঠলো সোহাগী। ছোট মেয়েটার যন্ত্রনা সোহানার পাষাণ হৃদয় কোমল করতে ব্যর্থ! সে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চুল ঝাঁকিয়ে ফির কর্কশ গলায় বললো,
— বল কোথায় গেছিলি? সেই বিয়ান বেলা বাইর হয়ছিস স্কুলে যাওয়ার জন্যে! আর বাড়ি ফিরলি এই ভর সন্ধ্যায়। বিশ্বাস কর শেরি তোরে বিশ্বাস হয়না। ম’ইরা আমারে শান্তি দে।
সোহানার চিৎকার শুনে দ্রুত বের হয়ে এলো আমেনা। মেয়ের হিংস্রতা দেখে খানিকক্ষণ চুপ থাকলো।
— এই মাইয়া আমার অন্ন ফুরাইয়া তোর হয় না? এখন আমার মানসম্মান ধুলাই মিশাইতে চাইছিস? বল কোথায় গেছিলি? তোর জন্য তোর বাপ কতো কষ্ট করে দেখছিস? লোকটা তোর জন্যে অসুখ নিয়া গঞ্জে গেছে।
সোহাগী নিরবে চোখের জল ফেলতে লাগলো। আমেনা দ্রুত এসে সোহানা কে ছাড়িয়ে সোহাগী কে আগলে ধরলো বুকের সাথে। নানীর ছোঁয়া পেয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ফেললো সোহাগী। আমেনা সোহাগীর মাথায় হাত রেখে বলে উঠলো,
— কাদিস না সোনা। চল ঘরে চল। তোর আব্বা আইসা তোরে কানতে দেখলে কষ্ট পাইবো।
সোহানা আমেনার মুখশ্রীতে গরম চাহনি নিক্ষেপ করে কটমট করে বললো,
— আজ এই মাইয়ার পা গজাইছে তোমাগো উস্কানি পাইয়া। সত্যি বলতেছি মা ভালোই ভালোই ওরে আমার ঘার থেকে নামাও। আমার আর এই মাইয়ারে সহ্য হয় না। আজ থাইকা ওর খাবার আমি আর রাঁধবের পারুম না। ওরে বলো যেন বাপ বুঝাই। আর পড়ালেখা করতে হইবো না। পড়ালেখার নামে পোলা গো লগে ডলাডলি!
হুদাই আমার পয়সা নষ্ট হইতেছে।
কথাগুলো বলেই দ্রুত ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়লেন সোহানা। শব্দ করে দোর দিয়ে দিলেন। আমেনা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সোহাগী কে ঘরে নিয়ে এলেন। মেয়েটার মুখশ্রীতে জল চিকচিক করছে! আলনা থেকে গামছা এনে যত্ন সহকারে সোহাগীর মুখ মুছিয়ে দিলেন। সোহাগীর হাত ধরে টেনে নিয়ে চৌকি তে বসালেন। মেয়েটা নির্বাক হয়ে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে! সেই সকাল থেকে সে মুখে ভাত তুলে নি! যার দরুন তার মুখশ্রী মলিন হয়ে উঠেছে।
আমেনা সোহাগী কে ঘরে রেখে রান্নাঘরে এলেন। রান্না ঘরের ছনের চালের সঙ্গে ঝুলন্ত হ্যারিকেনটা জ্বলিয়ে নিলেন। অতঃপর কাঠের তাক থেকে ধোঁয়া টিনের থালা বের করে মাটিতে রাখলেন। ভাতের হাঁড়ি থেকে ভাত বেড়ে নিলেন। তরকারির কড়াই থেকে ঢাকনা উঁচু করতেই আশাহত হলেন। সামান্য পরিমাণ আলুর ঝোল অবশিষ্ট রয়েছে। সোহানা রাশেদের জন্য রেখে দিয়েছে। আমেনা কে পইপই করে বলে দিয়েছে সে যেন তরকারি তবে হাত না দেয়। আমেনা কড়াইয়ে ঢাকনা চেপে উঠে দাঁড়ালেন। কৌটা থেকে স্বল্প লবণ বের করে থালার এক কোণে রেখে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন। ইতিমধ্যে চারপাশ অন্ধকারে ছেয়ে গেছে। দূর দূরান্তের বাড়ির ঘর থেকে কিঞ্চিৎ আলোকরশ্মি তাদের উঠান আলোকিত করে তুলেছে! যার ফলে অন্ধকারে কোন মতে হাঁটতে পারছেন তিনি। আমেনা ঘরে ঢোকার পূর্বে ঘরের সঙ্গে গা ঘেঁষে লাগানো মরিচ গাছ থেকে একটা মরিচ ছিঁড়ে নিলেন। এই গাছটা বছর তিনেক পূর্বে সোহাগী নিজের হাতে বপন করছে।
আমেনা ভাতের প্লেট নিয়ে সোহাগীর সামনে রাখলেন। মেয়েটা এক ধ্যানে জানালার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে চোখের জল ফেলছে।
— এ ধর সোহা ভাত খাইয়া নে। সারাদিন কিছু খাস না।
সোহাগী সোজা হয়ে বসে ভাতের প্লেট দূরে ঠেলে দিয়ে আমেনার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো,
— নানী আব্বা আসে নাই?
সোহাগীর কথার প্রত্যুত্তরে আমেনা মলিন স্বরে বললেন,
— না আসে নাই। তুই খা। তোর বাপ মনে হয় গঞ্জে গেছে।
— না, নানী আমি খাব না। তুমি ভাত নিয়ে যাও। ভালো লাগছে না। খিদে নেই।
আমেনা সোহাগীর উত্তর পেয়ে হঠাৎ ক্রোধে ফুঁসতে লাগলেন। সোহাগীর সামনে থেকে থালা সরিয়ে নিয়ে তীক্ষ্ম স্বরে বললেন,
— তোরে দরদ দেখানো ভুল হইছে আমার। তুই সত্যিই মানুষ হবি না। বেটা ছাওয়ালদের সাথে থাইকা তোর দেমাক বাইরা গেছে। সোহানা ঠিক ই কয়। তুই আমাগো মানসম্মানের শেষ রাখবি না। আমাগো কথা না হয় বাদ দে বাপের কথা চিন্তা কইরা বেটা গো সাথে মিশা বাদ দে। রফিকরা ছাওয়াল আর তুই মাইয়া মানুষ। এখন ওদের সাথে থাকবি না বুঝছিস?
সোহাগী মাথা উঁচু করে আমেনার মুখশ্রীতে ফ্যালফ্যাল করে দৃষ্টিপাত ফেললো। প্রতিবাদ স্বরে বলে উঠলো,
— কেন নানী? কয়েক দিন আগেও তো কিছু বলতে না। এখন কি এমন হয়েছে যে ওদের সাথে মিশতে পারব না। আঁখিও তো আমাদের দলের। কই ওকে তো কেউ কিছু বলে না।
আমেনা বেগম তীক্ষ্ম কন্ঠে বললেন,
— কয়েক দিন আগে তুই ছোট ছিলিস। আর এহন বড় হয়ছিস তা কী তুই বুঝোস না? আর আঁখি তোগে চেয়ে কতো ছোট দেখছিস! ও পাঁচ ক্লাসে আর তোরা আট ক্লাসে। কয় দিন পড় দেখবি ও আর ঘর থাইকা বাইর হইবো না।
সোহাগী আহত দৃষ্টিতে আমেনার মুখশ্রীতে স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো।
— কেন নানী। ওদের সাথে মিশলে কি হবে?
আমেনা মুখ ভেংচি কেটে দোর খুলে সোহানার ঘরের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালেন। যাওয়ার পূর্বে বললেন,
— তুই এখন গাই গতরে বড় হয়ছিস। মাইনষে তোরে গ্রেরাম ঘুরতে দেখলে কাহিনী রটাইবো। মাস খানিক ধইরা সবাই গুজব ছড়াইনা শুরু করছে। তোর নাদুসনুদুস দেইখা কোন মানুষের মাথা ঠিক থাকব! আর ছেরি এইডা গ্রেরাম। গ্রেরামের আকাশ বাতাস মোটেও ভালা না কিশোরী মাইয়া গো জন্যে। তাছাড়া এই বয়সের মাইয়া গো দিয়া বিশ্বাস করা ঠিক না। তুই যে নিজেরে ঠিক রাখবি এর কোন ঠিক নাই! এই বয়সে মাইয়ারা বসন্তের ডাকে নিজের মানসম্মান খুয়াই ফেলায়।
_______________________
ঘড়ির কাঁটা সাতে গিয়ে ঠেকেছে। সূর্যে পুরোপুরি অস্ত গিয়েছে। চারপাশে ঘোলাটে আঁধার। ঝি ঝি পোকার চিৎকারে ভেসে আসছে ঝোপ ঝার থেকে। চৌদ্দি ডাংগি গ্রাম শুনশান নীরবতা পালন করতে ব্যস্ত! কয়েক টা মুদির দোকান ব্যতীত বাকি সব সামগ্রীর দোকান বন্ধ। এই নির্জন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে গ্রামের সবচেয়ে মেধাবী ছেলে জুবায়ের মাস্টার। বছর পাঁচেক পূর্বে রোড এক্সিডেন্টে ছেলেটা ডান পায়ের অর্ধেক অংশ হারিয়ে ফেলছে। সুঠাম দেহের অধিকারী ছেলেটার গায়ের বড্ড কালো। বুয়েট থেকে পড়ালেখা করে গ্রামের বিদ্যালয়ের চাকরি নিয়েছে সে। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বেশ দরিদ্র পরিবার থেকে এ পর্যন্ত এসেছে জুবায়ের। বিদ্যালয় ব্যাতীত ভুঁইয়া বাড়ির দু’টো মেয়ে কে বাধ্য হয়ে পড়াতে হয় তাকে। বর্তমানে ভুঁইয়া বাড়ির উদ্দেশ্যে হেঁটে যাচ্ছে সে। বার বার হাত ঘড়ির দিকে দৃষ্টি ফেলছে। আজ বেশ দেরি হয়ে। এই পথ দিয়ে রাতে যাওয়া আসা মোটেও সুখকর নয় তার জন্য। কিছুদিন যাবত গ্রামের এক নাম না জানা হিংস্র প্রাণী আক্রমন শুরু হয়েছে। যার দরুন স্বল্প ভয় হচ্ছে জুবায়েরের। বিশেষ করে এই পা নিয়ে ভয়ঙ্কর প্রাণীর আক্রমণ থেকে বাঁচতে পারবে না তা নিশ্চিত।
ভুঁইয়া বাড়ির অন্দরমহলে প্রবেশ করতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো জুবায়ের মাস্টার। নিত্যদিনের মতো গেইটের বাইরে থাকা দারোয়ানরা তাকে সালামের সঙ্গে মুচকি হাসি উপহার দিলেন। জুবায়ের ড্রইং রুমে প্রবেশ করতেই একজন বলিষ্ঠ দেহের পুরুষ তাকে সঙ্গে করে চিলেকোঠার ঘরে নিয়ে এলেন। জুবায়ের লাঠি ভর দিয়ে ভেতর প্রবেশ করলো। মাঝে মাঝে সে ভেবে পাই না এতো বড় অন্দরমহলের এতো গুলো কক্ষ থাকা সত্ত্বেও কেন বাড়ির দু’টো মেয়ে কে চিলেকোঠার ছোট ঘরে পড়তে হয়!
জুবায়ের উপস্থিতি টের পেয়ে তার শিক্ষার্থী সালাম দিল। জুবায়ের সালামের উত্তর নিয়ে টেবিলের সামনে পেতে রাখা চেয়ারে বসে পড়লো। একপলক শিক্ষার্থীর দিকে দৃষ্টিপাত ফেললো। মুহুর্তেই জুবায়ের বুকের ভেতর দুমড়ে মুচড়ে গেল। মেয়েটার চোখ মুখ ফ্যাকাসে বর্ণ ধারণ করেছে! আজ প্রথম জুবায়ের লক্ষ্য করলো তার শিক্ষার্থী প্রিয়া শাড়ি পড়েছে। মেয়েটার হাতে পায়ে নানান অলংকার দ্বারা ভরপুর। বয়স ছুঁই ছুঁই সতেরো হলেও প্রিয়া বেশ বুদ্ধিমতি। নিঃসন্দেহে মেয়েটা ভদ্র এবং অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী! মনে মনে নিজেকে ধিক্কার জানিয়ে জুবায়ের। নিজের দৃষ্টি সংযত রেখে স্বভাবিক ভাবে বললো,
— তা প্রিয়া, তোমার বোন কে যে দেখছি না। রিমা পড়বে না আজ?
জুবায়ের কথাই শুকনো ঢোক গিললো প্রিয়া। নিজেকে ধাতস্থ রেখে ভাঙা কন্ঠে বলে উঠলো,
— না ,আফা পড়বে না। মাস্টার মশাই একটা কথা বলি? দয়া করে রাগ করবে না।
শেষোক্ত বাক্যটা উত্তেজিত হয়ে বললো প্রিয়া। হঠাৎ মেয়েটার সংকোচ হীন আচরণ বেশ সন্দেহ জনক লাগছে জুবায়ের নিকট! একে তো সেজেগুজে পড়তে বসছে আবার মেয়েটার চোখ জোড়া জল টলমল করছে! জুবায়ের নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রেখে গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
— কী হয়েছে? বলো।
প্রিয়ার চোখ থেকে দু ফোঁটা জল বিসর্জিত হলো। ঠোঁট কামড়ে ধরে বলে উঠলো,
— মাস্টার মশাই আমি কী দেখতে একটুও সুন্দর না? আমাকে কী আপনার সঙ্গে বেঁধে নেওয়া যাবে না?
প্রিয়ার কথাগুলো শুনে বিস্ফোরণ নয়নে উঠে দাঁড়ালো জুবায়ের। চেয়ার ধরে উঁচু স্বরে বলে উঠলো,
— ওয়াট ননসেন্স! দিন দিন বেয়াদব হচ্ছে? শিক্ষকদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয় তা ভুলে গিয়েছ?
জুবায়ের কথার প্রেক্ষিতে হাউমাউ করে কেঁদে দিল প্রিয়া। কান্নারত অবস্থা বলে উঠলো,
— মাস্টারমশাই ওরা আমাকে জেন্ত মে’রে ফেলবে। আমাকে বাঁচান। আপনি তো জানেন না ওরা,,,
বাক্যটা শেষ করতে পারলো না প্রিয়া। কারো পায়ের বুট জুতোর খট খট আওয়াজ পেয়ে স্তব্ধ হয়ে পড়লো। আকস্মিক জুবায়েরের দিকে দৃষ্টিপাত ফেলে অদ্ভুত কান্ড করে বসলো।
(চলবে)
[আজকে পর্ব কেমন হয়েছে জানাবেন। বানান ভুল ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]
#সোহাগী
#পর্ব:৩
Lutful mehijabin (লেখা)
— ওয়াট ননসেন্স! দিন দিন বেয়াদব হচ্ছো? শিক্ষকদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয় তা ভুলে গিয়েছ?
জুবায়ের কথার প্রেক্ষিতে হাউমাউ করে কেঁদে দিল প্রিয়া। কান্নারত অবস্থা বলে উঠলো,
— মাস্টার মশাই ওরা আমাকে জেন্ত মে’রে ফেলবে। আমাকে বাঁচান। আপনি তো জানেন না ওরা,,,
বাক্যটা শেষ করতে পারলো না প্রিয়া। কারো পায়ের বুট জুতোর খট খট আওয়াজ পেয়ে স্তব্ধ হয়ে পড়লো। আকস্মিক জুবায়েরের দিকে দৃষ্টিপাত ফেলে অদ্ভুত কান্ড করে বসলো। হাতের উল্টো পিঠ দ্বারা চোখের জল মুছে চেয়ার ছেড়ে নিচু হয়ে বসে পলকের মধ্যে জুবায়েরের পা ছুঁয়ে সালাম করে নিলো। পুনরায় চেয়ারে বসে সজল চোখে মুচকি হেসে ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো,
— কখনো কোনদিন বেয়াদবি করে থাকলে মাফ করে দিবেন। আজই আমাদের শেষ দেখা। আর কোনদিনই আমাদের দেখা হবে কি সন্দেহ! আমার জন্য আপনার প্রার্থনার দোয়ার চিরকাল উন্মুক্ত রাখবেন এই কামনায় রইলাম।
প্রিয়ার কথাগুলো শুনে জুবায়েরের বুকের মাঝে ধ্বক করে উঠলো নিমিষেই। অজানা আশঙ্কায় হৃদয় স্পন্দন ছটফট করতে শুধু করলো। জুবায়ের শুকনো ঢোক চেপে প্রিয়ার মুখশ্রীতে দৃষ্টিপাত ফেললো। না, এখন আর ভয় নেই। জুতোর খট খট আওয়াজ হাওয়া মিলে গিয়েছে। অর্থাৎ কেউ এদিকে আসছে না। হয়তো চলে গিয়েছে। তৎক্ষণাৎ প্রিয়ার বা চোখ থেকে এক ফোঁটা অশ্রু টপ করে গড়িয়ে পড়লো মাটিতে। জুবায়ের লক্ষ্য করলো মেয়েটার ঠোঁটের কোণে রহস্যময় হাসি ফুটে উঠেছে। অদ্ভুত! ভয় পেয়ে গেল জুবায়ের। নিজকে নিয়ন্ত্রণ রেখে কাঁপা গলায় বললো,
— আমার পা ছুঁলে কেন? পাগল হয়ে গেছে তুমি? আর আজ শেষ দেখা মানে?
জুবায়েরের কথার প্রেক্ষিতে ফির রহস্যময় মুচকি হাসি উপহার দিল প্রিয়া। প্রশ্নের উত্তরে, ঠোঁট জোড়া জিহ্বা দ্বারা ভিজিয়ে বললো,
— জানেন মাস্টারমশাই সবাই আমাকে রূপবতী বলে। এই সৌন্দর্যের যে আমার কাল তা আজ বুঝি! কিন্তু আফসোস একটাই আমার সৌন্দর্য আপনাকে আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ! আমি কেন আপনার যোগ্য হলাম না? আল্লাহ কী আমাকে আর একটু সৌন্দর্য দিতে পারতো না যাতে আপনি মুগ্ধ হতেন!
কথাগুলো শেষ করে কিছুক্ষণ নিরব রইলো প্রিয়া। মাস্টার মশাইয়ের চোখে স্থির দৃষ্টিপাত ফেলতে তার ভীষণ ভয় হচ্ছে! সোহাগী চোখ জোড়া বন্ধ করে,জোরে জোরে নিশ্বাস নিয়ে ফির বলে উঠলো,
— আমাকে বিয়ে করা যায় না যায় না মাস্টার মশাই? কথা দিচ্ছি কোনোদিন আপনার কথার অবাধ্য হবো না। আপনাকে ভুলে ও কষ্ট পেতে দিব না। শুধু দিন শেষ আপনার মুখশ্রীতে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রাত্রির আঁধার পাড়ি দিব। আমি যে একটু প্রশান্তিতে বাঁচতে চাই আপনার সঙ্গে। এই বদ্ধ জীবন আমার আর ভালো লাগে না। আমি ম’রে যাব। আমাকে কী বাঁচাতে পারবেন না মাস্টার মশাই।
প্রিয়ার বলা প্রতিটি বাক্য জুবায়েরের বুকের ভেতর ঝড় তুলতে সক্ষম হলো। কি বলছে এই মেয়েটা? নিশ্চিত পাগল হয়ে গিয়েছে! জুবায়ের আত্মগ্লানিতে ফেটে পড়লো। মনে মনে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান পুরুষ হিসেবে ঘোষণা করলো! তার মতো কালো, পা হীনা মানুষের জন্য কোন মেয়ের চোখ থেকে জল পড়ছে। মেয়েটা তাকে নিয়ে হাজারো স্বপ্ন বুনছে! তাও যাকে সে ভয়ঙ্কর ভাবে ভালোবাসে! গ্রামের প্রত্যক অবিবাহিত যুবক যেই রূপসী কে ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখে। যাকে একপলক দেখে প্রতিটি নর-নারী মুগ্ধ হতে বাধ্য! সেই প্রিয়া আজ তাকে আকৃষ্ট করতে নিজের অপরুপ সৌন্দর্য কে নগন্য করলো? জুবায়েরের নিঃশ্বাস নিতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। আর এখানে থাকতে পারবে না সে। দ্রুত তাকে বিদায় নিতে হবে। নয়তোবা এই কিশোরী মেয়ের পাগলামী তাকে যুবক থেকে কিশোরে পরিনত করে তুলবে। জুবায়ের লাঠি ভর করে উঠে দাঁড়ালো। দীর্ঘশ্বাস ফেলে কাঁপা গলায় বলে উঠলো,
— পাগলামী বন্ধ করো প্রিয়া। তুমি এখনো অনেক ছোট। নিজের ভালো মন্দ বোঝার বয়স হয়নি তোমার। এই বয়সে সবাই আবেগ প্রবণ থাকে। বুঝেছ প্রিয়া কৈশোর কাল মানুষের জীবনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কাল। কিশোর কিশোরীরা এই বয়সে নিজেকে সংযত রাখতে পারে না। হঠাৎ বসন্তের আগমনে উন্মাদ হয়ে পরে। কিশোরীরা পুরুষের প্রতি অকারণে আকৃষ্ট হয়। কিশোররা ও ব্যাতিক্রম নয়! যাকে দেখে তার প্রতিই মুগ্ধ হয়। কিন্তু এই মুগ্ধতা সাধারণ বেশি দিন স্থায়ী হয় না। সেই মুগ্ধতার খাতিরে যারা ভুল পদক্ষেপ নিয়ে বসে। তারা অবশ্যই সময়ের তালে তালে একসময় আফসোস করবেই। ঠিক তুমিই একদিন আফসোস করবে, কেন আমার মতো ব্যক্তির জন্য নিজের মূল্যবান চোখের জল ফেললে? বড় হতে হবে তোমাকে। আমার স্বপ্ন তুমি একজন বড় ডক্টর হও। যাকে নিয়ে আমি বুক ফুলিয়ে গর্ব করতে পারি। সবাইকে যেন বলতে পারি, হ্যাঁ আমার প্রিয় ছাত্রী একজন ডক্টর।
কথাগুলো শেষ করে হাঁপাতে লাগলো জুবায়ের। ইতোমধ্যে তার শরীর কাঁপতে আরম্ভ করেছে! আর এক মুহূর্তও এখানে থাকতে পারবে না সে। জুবায়ের তৎক্ষণাৎ প্রিয়ার চোখ মুখে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো প্রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে ব্যর্থ হলো সে! মেয়েটা নিরবে অশ্রু বিসর্জন দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে নিজেকে ধাতস্থ রাখার শক্তি পাচ্ছে না। জুবায়ের লাঠি ভর করে এক পা বাড়ালো ঘর থেকে প্রস্থান করার উদ্দেশ্যে। পরক্ষণে পিছু ঘুরে প্রিয়ার খানিক নিকটে এগিয়ে এলো।
— আজ আর পড়াতে পারব না। ছোট মানুষ ভুল করেছ তাই সংশোধন করার সুযোগ দিলাম তোমায়। কান্না কাটি বাদ দিয়ে কোমর বেঁধে পড়ালেখা শুরু করো। আজ রিমা আসে নি সেই সুযোগে নিলে তো! কিন্তু রিমা কেন পড়তে এলো না? আর তুমি ই বা কেন নতুন বউ সেজে রয়েছ?
লহমায় প্রিয়া জুবায়েরে চোখে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলো। পূর্বের ন্যায় রহস্যময় মুচকি দিয়ে উঠলো। ঠোঁটের কোণে ভয়াবহ হাসি ঝুলিয়ে বলে উঠলো,
— বেঁচে থাকলে তো পড়তো আসবে!
কেঁপে উঠলো জুবায়ের। কি বলছে মেয়েটা মাথা ঠিক আছে তো! উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো,
— কি বলছো! মাথা ঠিক আছে ?
— হুম। যা সত্যি তাই বলছি মাস্টারমশাই।
স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছে জুবায়ের। মিনিট খানিক চোখ জোড়া বন্ধ করে নিরবতা পালন করলো সে। চোখ খুলতেই লক্ষ্য করলো প্রিয়া হাতে সাদা খাম। তার বুঝতে রইলো না যে খামের ভেতর চিঠিপত্র রয়েছে। জুবায়ের শুকনো ঢোক গিললো। মুহুর্তেই তার কর্ণকুহরে ভেসে উঠলো প্রিয়ার অদ্ভুত কন্ঠস্বর,
— মাস্টার মশাই এটা একটু পড়ে দেখবেন। আমি কিছু বলতে চাইছি না। কাল আমাদের দেখা হবে কিনা তাও অজানা! তবুও শেষ নিঃশ্বাস বের হওয়ার আগ পর্যন্ত আপনার জন্য অপেক্ষা করবো। শেষ বারের মতো আবারো বলছি আমাকে বিয়ে করবেন?
জুবায়ের এবার নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে ব্যর্থ হলো। এক হাতে লাঠি ভর করে অন্য হাত দিয়ে সজোরে থা’প্পড় মেরে বসলো প্রিয়ার শুভ্র, স্বচ্ছ গালে! মেয়েটার এমন ব্যবহার মোটেও প্রত্যাশা করা যাচ্ছে না। যে প্রিয়া কখনোই তার সঙ্গে প্রয়োজন ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ের আলোচনা করে না। সেই ভদ্র মেয়ের মুখে নিশ্চিত এসব কথা বেমানান! তৎক্ষণাৎ জুবায়ের লাঠি ভর করে দ্রুত প্রিয়ার ঘর থেকে প্রস্থান করলো। না, এই মেয়ের মুখের দিকে তাকানো তার পক্ষে সম্ভব নয়। নিশ্চই মেয়েটার চোখে অশ্রু এসে জমেছে। এখন তাকালে নির্ঘাত তার বুকের ভেতর অদৃশ্য রক্ত ঝরতে শুরু করবে!
জুবায়ের ঘর থেকে বের হতেই চোখের জল মুছে ফেললো প্রিয়া। নিজেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক রেখে বইয়ের পাতায় মুখ গুজে সেই ভয়াবহ রহস্যময় হাসি দিয়ে উঠলো মুহুর্তেই!
____________________
রাশেদ বাড়ি ফিরেছেন মিনিট পাঁচেক পূর্বে। এসেই ভ্যান বারান্দায় খাড়া বাঁশের সঙ্গে বেঁধে রেখে কলপাড়ে এসে দ্রুত হাত মুখ ধোয়া বার কয়েক আমেনা বেগম কে ডাকলেন।
— আম্মা,,
রাশেদের কন্ঠস্বর পেয়ে দ্রুত সোহানার ঘরের দোর খুলে বেরিয়ে এলেন আমেনা। রাশেদ কে দৃশ্যমান হতেই অদূরে থেকে উচ্চ কন্ঠে বলে উঠলেন,
— জী আব্বা। তুমি আইছো। খাড়াও আমি গামছা নিয়া আয়তেছি।
রাশেদ গিয়ে কাঠের চৌকির উপর বসলেন। আমেনা দ্রুত গামছা এনে রাশেদের হাতে দিয়ে দৌড়ে রান্না ঘরের দিকে ছুটলেন। রাশেদ মুখ মুছে গামছাটা কাঁধের সঙ্গে ঝুলিয়ে নিলেন।
আমেনা থালা ভর্তি খাবার সাজিয়ে এনে চৌকির উপর রাখলেন। বারান্দায় হ্যারিকেন জ্বলছে। তার খানিকটা আলো গিয়ে কলপাড়ে পড়ছে। আমেনা টিনের গ্লাস হাতে করে কলপাড়ে ছুটলেন। মুহুর্তেই রাশেদের কন্ঠস্বর পেয়ে থেমে গেলেন।
— আম্মা।
— খাড়াও আমি কল থাইকা ঠান্ডা পানি নিয়া আহি। ভাত খাওয়ার আগে একটু ঠান্ডা পানি মুখে দিলে তোমার পরান জুরাই যাইবো।
— আম্মা সোহাগী রাতে খেয়েছে?
আমেনা ফাঁকা গ্লাস থালার পাশে রাখলেন। অতঃপর নিম্ন স্বরে বললেন,
— না খাই না। আমাগো খাওয়া শ্যাষ।
রাশেদ চৌকি থেকে উঠে পড়লেন। আমেনা কে পানি আনতে বলে সোহাগীর ঘরে ঢুকে পড়লেন।
সোহাগী চৌকির উপর বসে পড়ছিল। হঠাৎ দরজা চাপানোর আওয়াজ কানে যেতেই বইয়ের পাতা থেকে মুখ তুললো। বাবাকে দেখে নিমিষেই তার বুকের ভেতর প্রশান্তি হাওয়া বইলো।
রাশেদ খাবারের থালা হাতে করে বিছানার উপর বসলেন।
— রাতে খাও নি কেন আম্মাজান?
রাশেদের আদুরে মাখা বাক্য শুনে ক্রন্দন নিবারণের প্রয়াস চালালো সোহাগী। অধর জোড়া একবার কামড়ে ধরলো। অতঃপর ঠোঁট জোড়া সংকুচিত করে বলে উঠলো,
— আচ্ছা আব্বা আমাকে বিয়ে দিলে কী তোমার কষ্ট কমে যাবে? আমার খরচ চালাতে তুমি তো অনেক কষ্ট করো। আমি তো শুধু খাই আর কিছু করি না। আব্বা বলো না কি করলে তোমার কষ্ট আমি দূর করতে পারবো?
রাশেদ মেয়ের কথা শুনে চমকে উঠলেন। পরক্ষণে নিজেকে সংযত রেখে ভাতের সঙ্গে আলুর ঝোল মাখতে লাগলেন। এক লোকমা ভাত সোহাগীর মুখের সামনে ধরে বলে উঠলেন,
— দূর পাগলী, কি যে বলিস! আমার কষ্ট যদি কমাতে চাস তাহলে মন দিয়ে পড়ালেখা কর। সর্বদা সত্যের পথে অটল থেকে মানুষের মতো মানুষ হ। সবসময়ই মনে রাখবি মা শিক্ষার মতো ধারালো অস্ত্র এ পৃথিবীতে আর দু’টো নেই। একমাত্র শিক্ষাই তোর জীবনের অন্ধকার দূরে ঠেলে আলোর প্রবেশ করাতে সক্ষম। পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারলে একসময় তুই সাবলম্বী হয়ে উঠবি। তোর পথে বাঁধা দেওয়ার মতো কেউ থাকবে না। তোর নিজের অস্তিত্ব তৈরি হবে। অন্যের উপর নির্ভর করতে হবে না তোকে। জানিস মা এই পৃথিবীতে একটা ভাতের দানা পেটে দিতে কতো পরিশ্রম করতে হয়! ধরনীর বুকে এমন কোন মানুষের জন্ম হয় নি যে তোর মুখে বিনা স্বার্থে অন্ন তুলে দিবে। কেউ নেই যে কিনা তোকে শান্তি তে বাঁচার পথ তৈরি করে দিবে। কিন্তু একমাত্র শিক্ষাই তোকে মুক্তি দিবে, শান্তিতে বাঁচতে দিবে। প্রতিটি মানুষের জীবনে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।
(চলবে)
[রিচেক দেই নি। ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]