একটি নির্জন প্রহর চাই পর্ব -২৬

#একটি_নির্জন_প্রহর_চাই
২৬
#WriterঃMousumi_Akter.

নিস্তব্ধ পরিবেশ চারদিকে। কোথাও কেউ নেই।গায়ে এ্যাশ কালারের শার্ট, শার্টের হাতা গোটানো,সামনের একটা বোতাম খোলা,পরনে কালো জিন্স,পশ্চিম দিকে মুখ করে আনমনে বসে গান শুনছে তন্ময়।সিল্কি চুল গুলো মৃদু বাতাসে হালকা উড়ছে।ফর্সা মুখে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি, টানা নাকের ডগায় কালো একটা তিল।কী অপূর্ব সুন্দর দেখাচ্ছে তন্ময়কে!দেখেই মনে হয় কোনো হিন্দি সিরিয়ালের নায়ক।এত সৌন্দর্য থাকতেও কারো ভালবাসায় সে অবেহেলিত! ভীষণ অবহেলিত!শত মেয়ের ভালবাসা পাওয়ার পরেও সে নির্দিষ্ট করে যাকে চেয়েছে তাকেই পেল না।নিয়তি কী অদ্ভুত না!যে যা চায় সে তা পায় না।মুখে কোনো হাসি নেই তন্ময়ের।এদিক-সেদিক ও খেয়াল করছেনা।হাতে একটা কলম।কলম দিয়ে বেঞ্চে দাগ কাটছে অন্যমনস্ক হয়ে।নিজের অজান্তেই বেঞ্চে ছোঁয়ার নাম লিখে ফেলেছে।
আমি হুড়মুড় করে এসেই তন্ময়ের পাশে বসে পড়লাম।বেঞ্চে বসতেই একটা ঝাঁকুনি হলো।তন্ময় ঘুরে তাকালো আমার দিকে।আমাকে দেখে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃদু হেসে বলল,

‘বিয়ে করে নিলি,বললি ও না!’

কাঁধ থেকে সাইড ব্যাগ টা রেখে, ওড়নার মুড়ো দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে বললাম,

‘তুই কোনো কথা বলবিনা তন্ময়।তোর সাথে কথা নেই।তুই কোন সাহসে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিলি বল?তোর কিছু হলে কী হতো বলতো?আন্টিকে কে দেখতো?আমি তো জাস্ট ভাবতে পারছি না তুই এমন বোকামো করবি!’

‘কেনো তোরা দেখতিস না আম্মুকে?’

তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে সিরিয়াস মুডে বললাম,

‘আমাদের দেখায় আন্টির কী যায় আসতো?আন্টির বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন তুই।তুই ছাড়া আন্টি বাঁচতো না।কেনো করলি এমন?তোকে আজ কৈফিয়ত দিতেই হবে!’

‘আচ্ছা! বাদ দে সারাহ।ওসব বাদ যাক।আমার ভুল হয়েছে আর এমন হবেনা।এইবার চোখ বন্ধ কর।’

‘কেনো?’

‘বন্ধ কর তুই।’

‘করছি, আগে বল এখন কেমন আছিস তুই?দেখ তন্ময় আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল তোর জন্য!’

‘তোরা থাকতে খারাপ থাকি কীভাবে সেটা বল?আমি জানি তোরা আমাকে কত বেশি ভালোবাসিস!’

‘এই ভুলের জন্য তোকে জরিমানা দিতে হবে।’

‘আচ্ছা দেবো।’

‘নে চোখ অফ করলাম।’

‘হাত টা বাড়া।’

হাত দুটো বাড়িয়ে মেলে ধরলাম।
হাতের উপরে ভারী কিছু একটা মনে হলো।চোখ খুলে দেখি গিফট পেপার দিয়ে সুন্দর ভাবে মোড়ানো কিছু একটা।বেশ ভারী লাগছে।গিফট পেতে বরাবরই আমার ভালো লাগে।আর সেটা খুলে দেখতে ইচ্ছা করে সাথে সাথে।

তন্ময় বলল, ‘চাকরি হলে তোকে গহনা বানিয়ে দিব।এখন সামান্য কিছু দিলাম।তোর বিয়ের গিফট। ‘

সাথে সাথে চোখ খুলে বললাম,

‘গিফট কেনো?আমি তো তোদের দাওয়াত ই দেই নি।তাহলে কিসের গিফট?আসলে না আমার বিয়েটা হুট করেই হয়ে গেছে।সুযোগ ই পাই নি।’

‘ইটস ওকে!খাওয়াটা তোর জামাই এর কাছে পাওনা রইলো।’

আমি গিফট পেপার টা খুলতে গেলেই তন্ময় আমাকে বাঁধা দিয়ে বলল,

‘না,এখন না।বাসায় গিয়ে খুলবি।’

এরই মাঝে দ্বীপ আর মৃন্ময় কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে স্পীড খেতে খেতে এসে হাজির হলো।বেঞ্চের ওপর ব্যাগ খুব জোরে ফেলে বলল,

‘দেখি তন্ময় তোকে কী গিফট দিছে!’

‘তোদের দেখাব না।’

মৃন্ময় তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে বলল,

‘শা**লা আগে দিলি ক্যান?বললাম না আমরা দোকান থেকে এসে নেই!’

‘তোদের বিশাল প্লান।তোদের প্লানে সারাহ টাস্কি খাবে।আমার নির্ভেজাল গিফট আমি আলাদা ভাবেই দিলাম।’

দ্বীপ বলল, ‘শোন তন্ময়,তোর আশায় অনার্সে পড়ছি।তোর টা দেখে দেখে লিখি আর পাশ করি।তুই যদি ম**র**তেই চাস তাহলে আমার গ্রাজুয়েশন টা শেষ হোক আগে।এর আগে ম**রা**র প্লান বাদ দে।’

মৃন্ময় বলল, ‘তন্ময় এইবার কিন্তু ওরে আর দেখাবি না।সারা বছর কিচ্ছু পড়বেনা তোর টা দেখে লেখার আশায়।’

দ্বীপ বলল, ‘তুমি খুব পড়নেওয়ালা,সারারাত ফেসবুকে হৃদয়ভাঙা রমনী খুজে বেড়াও!’

‘হ খুঁজি।আমি চাই কারো ভাঙা হৃদয় জোড়া লাগাতে।তার সমস্ত অপূর্ণতাকে আমি পূর্ণতায় পরিণত করব।একটা বেরঙিন হৃদয়কে রঙিন করব।’

‘ যদি এমন মেয়ে না পাস?’

‘পেয়ে গেছি, মনে হচ্ছে।শুধু একটু পাত্তা দিলেই হয়।’

‘কই পাইলি রে?’

‘বলব না,আগে সারাহ’র সাথে ঝামেলা আছে মিটাই নেই।’

আমি চোখ বড় করে তাকিয়ে বললাম,

‘আমার সাথে আবার কী ঝামেলা গাইস?’

‘তোর জামাই এর পিক দেখা।কার সাথে বিয়ে হলো,কে এই আপদকে বিয়ে করল তার নিষ্পাপ মুখটা দেখতে চাই।’

‘উনার পিক নেই কাছে।’

‘পিক নেই মানে,ফাইজলামি?আগে পিক দেখা।’

‘আরে উনি যে আনরোমান্টিক,পিক টিক তোলেন না।’

মৃন্ময় অবাক হয়ে বলল,

‘আনরোমান্টিক?’

‘হ!প্রচুর।’

দ্বীপ বলল, ‘এখন তো এসব বলবাই।ছেলেরা বউ পাইলে কত আনরোমান্টিক থাকে আমরা তা বুঝি।যদি কোনদিন বলিস দোস্তো তোরা মামা হতে চলেছিস সেদিন খবর আছে।’

‘ট্রাস্ট মি গাইস।সে ব্যাক্তি এমন আনরোমান্টিক,জীবনে তোরা মামা ডাক শুনতে পাবিনা।’

মৃন্ময় বলল, ‘এতো ভারি টেনশনের বিষয়। সারাহ’র ফিউচার নষ্ট।’ বলেই হোহো করে হাসল দ্বীপ আর মৃন্ময়।হাসি থামিয়ে মৃন্ময় বলল,

‘ওয়েট তোর জামাইকে রোমান্টিক হওয়া মেডিসিন দিচ্ছি।’

‘কী?’

ওয়েট নিয়ে আসছি।মৃন্ময় আর দ্বীপ দুজনেই সামনের দোকানে গেল।দোকানে গিয়েই র‍্যাপিং করা বড়ো বড়ো কয়েকটা বাক্স নিয়ে এলো।বক্স গুলা বেশ বড়ো।আমার সন্দিহান মন ভাবছে কী আছে এই বক্সে!দুজনে এসে বক্স দুইটা আমার সামনে রেখে বলল,

‘নে তোর বিয়ের গিফট। ‘

আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে বললাম,

‘এত্ত বড় বড় বক্সে কী রাখা আছে ভাই?’
মৃন্ময় বলল, ‘শোন এইগুলা দেখবি না এখন,তুই কিন্তু খুলবিও না।আর এই নে এই প্যাকেট টা সোজা গিয়ে তোর জামাই কে দিয়ে বলবি তোমার জন্য।তাও রাতে দিবি।’

‘এই ছোট প্যাকেটে কী রে?’

‘জামাইকে রোমান্টিক বানানোর মেডিসিন। একবার খেলেই রোমান্টিক হয়ে যাবে।তুই শুধু গিয়ে বলবি, ‘প্রাণের স্বামী এটা খেয়ে নিন।’

‘শোন, কাহিনী নেই তো কোনো?’

‘কোনো কাহিনী নেই।বাট প্রমিস কর খুলবি না।’

‘আচ্ছা খুলব না।’

‘বল আমার জামাই এর কসম খুলব না।’

‘কী হচ্ছে ইয়ার! বললাম তো।’

এইদিকে আমি অনেক অস্থির হয়ে আছি।মনে হচ্ছে ভেতরে কী আছে দেখতে না পেলে প* রা ণ ফেটে যাবে।এরই মাঝে ছোঁয়া এসে উপস্থিত হলো।ছোঁয়ার দিকে আমরা তিনজনেই তাকালাম।মেয়েটা ঠিক আছেতো!ছোঁয়া তন্ময়কে দেখেই বলল,

‘তোকে কতবার ফোন দিয়েছি,রিসিভ করিস নি কেনো?টেনশনে আমার মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল।এইভাবে টেনশন দেওয়ার মানে কী তন্ময়?একবার রিসিভ করে বলবি তো ভালো আছিস!তুই ঠিক আছিস!’

তন্ময় ছোঁয়াকে দেখেই চুপ হয়ে গেল।হাসি মুখটা মলিন হয়ে গেল।অন্যদিকে ঘুরে তাকালো।আমি স্পষ্ট বুঝতে পারলাম তন্ময় ছোঁয়ার সাথে আকাশসমান অভিমান করেছে।ছোঁয়া ও বুঝতে পারল তন্ময় তাকে ইগনোর করছে।ছোঁয়া এটাও জানে তন্ময় যতই রাগ করুক ছোঁয়া জোরাজোরি করলে তন্ময় রাগ করে থাকতে পারবে না। ইগনোর ও বেশি সময় করতে পারবে না।তন্ময়ের ফোনে সেই গানটা ক্রমাগত বেজেই চলেছে।

ছোঁয়া তন্ময়কে দিয়ে কথা বলানোর জন্য বলল,

‘ছ্যাঁকা খাওয়া গান শুনতেছিস।এই নাটকের কিছু স্ক্রিপ্ট তোকে বলি।যদিও নাটকে হলেও এটা সত্য।এই যে তুই এতদিন আমার পিছু পিছু ঘুরছিস, আমি তোর মুখে স্যান্ডেল দিচ্ছি।এরপর আমার পিছে ঘুরলে আমার জামাই তোরে জু**তা দিবে।ছ্যাঁকা খাওয়া গান বাদ দে।’

তন্ময়ের মাঝে তবুও কোনো পরিবর্তন নেই।ছোঁয়ার কথা যেন শোনেই নি।আমরা তিনজন ওদের দু’জনকে দেখছি।আমাদের তিনজনের ই আজ ভাল লাগছে।এমন দিন দীর্ঘদিন ধরে দেখতে চেয়েছি আমরা।ছোঁয়া তন্ময়কে আবার বলল,

‘কী? ব্যাপার কী?আর কতক্ষণ কথা না বলে থাকবি?আমি জানি কষ্ট হচ্ছে।অকারণ কষ্ট পাওয়ার দরকার কী?’

তন্ময় উঠে পেছনে ব্যাগ ঝুলিয়ে হাঁটা দিল।ছোঁয়ার মুখটা কালো হয়ে গেল।চোখে পানি চলে এলো।জীবনে সব থেকে বেশি প্রয়োরিটি পাওয়া মানুষটার অবহেলা সত্যি কষ্টদায়ক!ভীষণ কষ্টদায়ক!ছোঁয়া বোধহয় সেই কষ্টটা পাচ্ছে।এমনিতেই একাকিত্ব আর যন্ত্রণায় ছারখার হয়ে যাচ্ছে সেই মুহূর্তে তন্ময়ের অবহেলা!

আমি ছোঁয়ার কাঁধে হাত রেখে বললাম,
‘কষ্ট হচ্ছে তোর?’
‘এর থেকে হাজারগুন কষ্ট তন্ময় পাচ্ছে।কিন্তু চেপে যাচ্ছে।’

‘তন্ময় তোর সাথে রাগ করে থাকতেই পারবে না।’

মৃন্ময় আর দ্বীপ বলল, ‘ছোঁয়া ওর কলার ধরে টেনে নিয়ে আয়তো।আমরা তো ওর আশায় এক্সাম দিতে এসছি।চলে যাচ্ছে কই?’

‘ওর তো মুড অফ হলে পৌরপার্কে যায়।’

আমি সবার উদ্দেশ্য বললাম, ‘আজ এক্সাম বাদ,চল আজ পৌরপার্কে আড্ডা হবে।এত পড়ে কী হবে একদিন তো ম**রে**ই যাব।’

তন্ময়ের পিছু পিছু সবাই পৌর পার্কের দিকে গেলাম।এখান থেকে পাঁচ মিনিটের রাস্তা মাত্র।গিফট বক্স গুলা সবাই মিলে ভাগ করে ক্যারি করলাম।তন্ময় পার্কের এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে।আমি ছোঁয়াকে বললাম,

‘যা তন্ময়ের সাথে কথা বল।’

ছোঁয়া তন্ময়ের পাশে গিয়ে দাঁড়াল।তন্ময়ের হাত ধরে বলল, ‘প্লিজ তন্ময় এইভাবে ইগনোর করিস না।আমার কষ্ট হচ্ছে খুব!’

তন্ময় ছোঁয়ার হাত ঝাড়া মেরে বলল,

‘না ছোঁয়া, প্লিজ না!আমাকে তুই আর ছুঁয়ে দেখিস না!তুই একবার আমায় ছুঁয়েছিলি চারটা বছর জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে গেলাম।আর একবার ছুঁয়ে দেখলে আমি পুরোটাই শেষ হয়ে যাব।আমাকে কখনো আর স্পর্শ করিস না।’

‘আমাকে এত ভালবাসলি কেনো তন্ময়?যে তোকে ভালবাসে তোর উচিত তাকে ভালবাসা, যাকে তুই ভালবাসিস তাকে নয়।তাহলে কেনো আমাকে ভালবাসলি তুই?’

‘বাহ!উপদেশ টা দারুণ ছোঁয়া।কিন্তু তুই ও আমার মতোই ভুল করলি।তোকে যে ভালবাসে তাকে ভালোবাসলিনা।’

‘আমি তোর যোগ্য নই তন্ময়।’

‘প্লিজ ছোঁয়া।কে কার যোগ্য আমি এটা শুনতে চাচ্ছিনা।আমার কিছুই ভালো লাগছেনা।প্লিজ লিভ মি!কখনো আমার কাছে আসিস না!’

‘তুই জানিস তন্ময় ওশান কী করেছে?’
‘জানি।’

‘তাও আমার সাথে এভাবে কথা বলবি।’

‘কোনভাবেই বলতে চাচ্ছিনা।’

‘আমি ঠকে গেছি তন্ময়, কিন্তু তোকে ঠকায়নি!তোর সাথে ভালবাসার অভিনয় করে তোর মন ভাঙিনি!ফ্রেন্ড হিসাবে তোকে মন প্রাণ দিয়েই ভালবেসেছি।শুধু প্রেমিক বলে মেনে নিতে পারিনি।সরি তন্ময় তোকে সারাজীবন কষ্ট দিয়ে এসছি!”

ছোঁয়া কাঁদছে,ভীষণ কাঁদছে।

তন্ময় কিছু না বলে আমার কাছে এগিয়ে এসে বলল,

‘ওকে কাঁদতে নিষেধ কর প্লিজ।আমার ভাল লাগছে না।’

আমি আর মৃন্ময় তরীকে নিয়েই কথা বলছিলাম এত সময়।মৃন্ময় তন্ময়কে বলল, ‘ ছোঁয়া লাইফের সব থেকে বাজে সিচুয়েশনে আছে।তোকে দরকার ওর পাশে।এই টাইমে ওকে ছেড়ে যাস না।’

‘ও আমাকে ভালবাসেনা।এবং পাশে ও চায়না।’

এরই মাঝে আমার ফোন বেজে উঠল।ফোনের স্ক্রিনে রোশান স্যারের নাম্বার ভাসছে।মুহূর্তের মাঝেই মনটা ভালো হয়ে গেল আমার।হাজার টা দুশ্চিন্তার মাঝে আমার জন্য উনি এক প্রশান্তি! অনেক সময় হয়ে গিয়েছে আমরা আড্ডা দিচ্ছি।উনি নামাজে যাবার আগে আমাকে একটা দোকানে বসিয়ে রেখে যাবেন বলেছিলেন।নামাজের আগেই আমাদের এক্সাম শেষ হবার কথা।তন্ময়,মৃন্ময়,দ্বীপ ওরাও নামাজে যাবে।সবাইকে বিদায় জানিয়ে একটা অটোতে উঠলাম গিফট গুলো নিয়ে।
কী আছে গিফট বক্সে জানিনা।ওরা কী মেডিসিন দিলো উনাকে রোমান্টিক বানাতে সেটাই ভাবছি,!আসলেই কি কোনো ওষুধ আছে যা খেলে কেউ দারুণ রোমান্টিক হয়ে যায়।ইশ কী লজ্জা!উনি রোমান্টিক হয়ে যাবেন।কী হবে তখন ভেবেই লজ্জা লাগছে!এরই মাঝে অটো এসে থামল নির্দিষ্ট গন্তব্যে।অটো থেকে মুখে বাড়িয়ে বাইরে তাকিয়েই মুগ্ধ হলাম। বাইক হেলান দিয়ে বুকে হাত বেঁধে দাঁড়িয়ে আছেন আমার অপেক্ষায়।আমাকে দেখেই সোজা হয়ে দাঁড়ালেন আর এগিয়ে এলেন আমার কাছে।কাছে এসে বললেন,

‘এক্সাম কেমন হলো?’

‘খুব ভালো।’

‘দেখি প্রশ্ন?’

‘বাসায় গিয়ে দেখাব।’

‘এগুলা কিসের বক্স নামাচ্ছো?’
‘ফ্রেন্ড্ররা গিফট দিয়েছে।’

‘জন্মদিন ছিল তোমার?’
‘না আপনার সর্বনাশের দিন ছিল।’

‘মানে।’

‘বিয়ের গিফট।আপনি না বলেন বিয়ে করে সর্বনাশ হয়েছে।’

উনি ভ্রু কুঁচকে তাকালেন আর বললেন, ‘আধাঘন্টা কোথাও যাবেনা এখান থেকে।বৌদির চায়ের দোকানে বসে থাকবে।’

‘ওই মহিলার দোকানে বসব,কিছু খাব না?এত কিপ্টা কেনো আপনি?শ্যামসুন্দর পুরুষ কৃপণ হবে কেনো?’

‘খেতে নিষেধ করেছি?’

‘খেতেও তো বলেন নি।’

‘যা ইচ্ছা খেও। ‘

দোকানে বসে চিপস খেয়েই যাচ্ছি।১২ প্যাকেট চিপ্স খেয়ে শেষ করে ফেললাম।বৌদিকে বললাম, ‘উনি আসুক টাকা দিচ্ছি।’

‘টাকা দিয়ে গেছে।’

‘কত?’

‘চা খেয়েছিল,২০০ টাকার নোট দিয়ে গেছিল।বলেছিল আপনার যা যা লাগে দিতে।এসে বাকি টাকা দিবে।’

‘আর কিছু খাব না।বাকি টাকা ফেরত দিন।’
‘এই নিন টাকা।’

‘এক টাকা কম দিছেন।’

‘একটা শ্যাম্পু দিচ্ছি, এক টাকা তো চলেনা।’

শ্যাম্পু নিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে এলাম।উনার নামাজ শেষ।আমাকে এসে বললেন, ‘কিছু খেয়েছ?’
‘বেশি কিছু খাইনি,আপনার টাকা খরচ করলে পরের দিন আর এভাবে খাওয়ার অফার দিবেন না।’

‘এমন উদ্ভট চিন্তা যে তোমার মাথায় কীভাবে আসে!’

বাড়িতে ফেরার পরে বসে আছি কখন রাত হবে আর উনাকে রোমান্টিক হওয়া মেডিসিন টা দিব!
চলবে?

(আজ মনে হচ্ছে এলোমেলো লিখেছি।টানা লিখে গেছি,কী যে লিখেছি জানিনা।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here