একগুচ্ছ কালো গোলাপ পর্ব -১৮+১৯+২০+২১

একগুচ্ছ_কালো_গোলাপ🖤
লাবিবা_তানহা_লিজা
#পর্ব_১৮+১৯

🍁
{উদাসী দিন}
প্রতিদিনকার মতো আরেকটি সকাল । শীতের হালকা আমেজ এসেছে প্রকৃতিতে । হালকা শিশির লেগে আছে ফুল গুলোর উপর । এই সকাল গুলোতে ঘুমোতে ইচ্ছা করে না । মনে হয় অনেক বড় লীলা মিস করে ফেললাম । ঠান্ডা বাতাসে চোখ বন্ধ করে মিষ্টি ছোয়া গুলো অনুভব করছি । পেছন থেকে আম্মুনি এসে জড়িয়ে ধরলো – গুড মর্ণিং মাই বেবি।
– গুডু গুডু ঠান্ডা সু অর্থ সুন্দর প্রভাতি অর্থ ভার সকাল আম্মুনি ।
– একটা কথাও ঠিক করে বলতে পারিস না তাইনা ? রাগ দেখিয়ে চলে গেলো ।
কেউ ভালুপাসেনা😒
বিছানায় বসে একটু পড়ে নিয়ে আম্মুনির কাছে গিয়ে গুড়া দুধের প্যাকেট নিয়ে বসলাম । হাতের তালুতে নিয়ে দেখিয়ে দেখিয়ে চেটে চেটে খাওয়া শুরু করলাম । একটু আগেই ঝাড়ি খেয়েছি । এখন গুড়া দুধ চেটেচেটে খাবো । আম্মুনি ভ্রু কচকে তাকিয়ে থেকে বললো – ওহ দুধ খাবি । আগে বলবিতো । এখনি গরম করে দিচ্ছি । আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে চাটতেই থাকলাম । আম্মুনি গ্লাসে ডেলে যেই আমার দিকে আসছে সেই দৌড় দিয়ে রুমে এসে দরজা লক করে দিলাম । ডায়রি নিয়ে লিখতে বসলাম —

” ভেবেছিলাম শীতল হাওয়ায় ভেসে ফুরফুরা মেজাজে দিন কাটাবো । কিন্তু ঝাড়ি খেয়ে মুড অফ । আব্বু আজ সারাদিন থাকবেনা। তাই মনের মতো খুশি খুশি সেড দিন সেলিব্রেট করবো আজ । যা ইচ্ছা তাই করবো । বিকজ কেউ ভালুপাসে না 😒।”
ব্যাগ থেকে সব বই বের করে একটা খাতা আর কলম ডুকিয়ে চকলেট বক্স , কয়েকটা প্রান চাটনি ডুকিয়ে নিলাম । আব্বুর রুমে এসে ড্রয়ার থেকে দশ টাকার দশটা চকচকে নোট নিলাম । ফ্লোর টাচ একটা সবুজ গাউন পড়ে চুলগুলা ছেড়ে দিলাম । আচড়াবো না । আওলা ঝাওলা চুল দেখতে সুন্দর লাগে আমার কাছে । তাই আরো আওলা ঝাওলা করে ফুলিয়ে দিলাম । দেখে মনে হইতেছে কাঙ্গানা রাওনাট এর তুহি মেরি সাব হে ..সুবাহে ..তুহি মেরি দুনিয়া .. গানের শুটিং করতে যাইতেছি । বাট ওয়াইন পাবো কই? ঠোটে মেরিল দিয়ে গালে পাউডার দিলাম ইচ্ছামতো । এখন পুরো বিলাই লাগতাছে। বাপরে আমি তো এত্তোগুলা সুন্দর । ব্যাগ কাধে ঝুলিয়ে ডাইনিং থেকে ধনিয়া নিয়ে বের হলাম চিবুতে চিবুতে । সামনে পড়লো জেম্মা । এগিয়ে এসে বলে – কই যাস পাগলির মতো? স্কুল ড্রেস কই ? ড্রেস ছাড়া স্কুলে যাবি না ।
– এইযে আসছে হেডু কাকা স্যারের শাশুমা । শোন জেম্মা স্কুলটা কার ? আমার দুলাভাই কাকুর । সো যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে যাবো ।
– দুলাভাই কাকু বলিস কেনো তুই প্রায়ই বোঝিনা?
– তোমার বোঝার বয়স হয় নাই । চুল পাকলেই বয়স হয় না বুঝলে । দুলাভাই কাকুর একটা চুল ও পাকে নাই বয়স কিন্তু ঠিকি হইছে । কি দেখে যে আমার দুধের শিশু বোনটারে বিয়ে দিছিলা আমি জানিনা । বাই ।
পেছন থেকে সাবিনা দৌড়ে আসতেছে ভাত খেয়ে যা ভাত খেয়ে যা বলে । দিলাম এক দৌড়ে মেইন রোড়ে এসে থামলাম । সামনের দোকান থেকে আধা হাফ লিটারের একটা কোকা কোলা কিনলাম । দোকানদার বেটা দেখি তাকায়ে আছে আমার দিক । ভাব নিয়ে বললাম – জানি তাকাইয়া থাকবেন ই । সুন্দরী মেয়ে দেখলে যা হয় ।
দোকানদার আরো হা করলো । আমার কি ? হাটতে লাগলাম সামনের দিক। বাহ আমিতো ভালোই ভাব নেই । কিন্তু এই ডায়লগ কোন জানি সিনেমা থেকে শিখছিলাম 🤔। মনে নাই । মনে পড়লে বলমুনি । শুধু মনে আছে নায়কা পপির ডায়লগ । আমি আজ সকাল থেকে জোরে জোরে বক বক করতাছি কেন ? ঠিকি আছে তাই করমু আজকে😁। বাজারে ঢুকতেই সবাই যেনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে দেখতেছি । সেটা বড় কথা না । কথা হচ্ছে যে ঘাড়ের মধ্যে চুলে কাতুকুতু লাগতাছে । উফফ অসহ্যকর । এগুলারে টাইট দিতে হবে । কিন্তু বাধমু কই ? চিরুনি আছে , ব্যন্ড আছে মিরর তো নাই । আরেকটু এগিয়ে দেখি একটা ব্লাক কালার ছোট প্রাইভেট কার । চার সিটের । কেরাবেরা করে নাম লিখছে পড়তে পারি না । সামনে গিয়ে গ্লাসের দিকে তাকিয়ে ব্যাগটা দু হাটুর চিপায় রেখে চিরুনি দিয়ে চুল আচড়ে ছোট ছোট চুলের যেমন শিংয়ের মতো ঝুট্টি করে তেমন ঝুট্টি করলাম । কিন্তু কাঙ্গানা রেওনাট কি কখনো এরোকম ঝুট্টি করছিলো 🤔 । হটাৎ দেখি গ্লাস খুলে গেল । ভিতর থেকে আওয়াজ এলো – দুষ্টু পুতুল ….।
ওমা এতো দেখি স্যার । হাত নাড়িয়ে বললাম
– হাই😅। বাই😅। হন হন করে চলে এলাম । আমি কি এখন দুষ্টু পুতুল নাকি ? আমি এখন কাঙ্গানা রেওনাট ।
তানভীর ভ্রু কুচকে তাকায় । এমন লাগছে কেন সব ? গাড়ি থেকে নেমে লাবিবার পিছু পিছু যায় । মাঝরাস্তায় লাবিবা দাড়িয়ে পড়ে ।
আচ্ছা আলালের টায় যাবো নাকি নোটনের টায় ? নোটনের টায় তো নীল চা নাই । আলালের টায় যাই । হোটেলে ডুকেই আলালের সামনে যেয়ে বললাম
– আলাল ভাই নীল চায়ের দাম কতো ? আচ্ছা তুমি নীল চায়ে কি কি উপকরন দাও ? নীল রং টা কোনটা দাও ? কাপড়ের নীল দাও নাকি দেয়ালের রং দাও নাকি কলমের নীল কালি দাও ? আচ্ছা এটা কি চিনি দিয়ে বানাও নাকি নুন দিয়ে ? এটা গরম পানি দিয়ে করো নাকি ঠান্ডা পানি দিয়ে ? এটা তুমি বানাও নাকি ঐ ছেলেগুলা বানায় ?
“সেট আপ দুষ্টু পুতুল। স্টপ ইউর নন স্টপ বকবকুনি।”
” উফফ আমার ডিস্টাব নষ্ট করলো কে ?”
পেছন ফিরে দেখি স্যার দাড়িয়ে ।
” আজাইরা বকবকানি রাখো । চা খাবে তো । মামা দুধচা দেন ”
” আমি নীল চা খাবো ”
আলাল-” আমিতো নীল চায়ের নাম ই শুনিনী কখনো ”
” কিহ… এরা তো দেখি এখোনো কলি যুগেই হামাগুড়ি খাচ্ছে । মঙ্গল গ্ৰহে বাস করেও পৃথিবীর নাম জানে না । হুস হুস ”
রাস্তা দিয়ে হাটা ধরলাম । স্কুলে এসে ক্লাসে না গিয়ে বারান্দায় পা ঝুলিয়ে বসে চকলেট খাচ্ছিলাম । এক লোক আগে কখনো দেখি নি সামনে এসে দাড়িয়ে হাসতেছে । পান খাওয়া লাল কালা দাত দেখে রাগ উঠে গেলো ।
” দাত কেলান কিলা ?
” এই ভাবে কথা বলো কেন ? মাথার উপরে পাখির বাসা বানাইছো নাকি ?”
পেছন থেকে হি হি শব্দ পেয়ে তাকিয়ে দেখি সবাই ক্লাসে । জানি এখানেই ছিলো সবগুলা। আমার সামনে কিছু বলার সাহস নেই তাই চলে গেছে । পান দাত ওয়ালা দেখি এখনো ভেটকাইতাছে ।
” কাকু এইটা নিউ স্টাইল । প্রথমে নাম ছিলো nest style . আমি আপডেট কইরা দিছি monkey style. যদিও নামের সাথে কোন মিল নাই ।
ক্লাসে চলে এলাম । নুপুর এসে রাগ দেখিয়ে আমার ঝুটি খুলে আচরিয়ে পেছনে খুলে দিলো । যদিও এখনো কাঙ্গানা রেওনাট লুক পাইতেছি😎। দুই ক্লাস করে আর করতে ইচ্ছা করলো না । লিপি মেডামের সামনে গিয়া পেট ধরে দাড়িয়ে থাকলাম । উনি পাড়াপড়শি বৌদি লাগে আমার । হিন্দু মানুষ। আমার কাধে হাত রেখে বলতেছে
– হায় ভগবান ..লাবি মনি কি হইছে তোমার হে ? তুমি পেট ধরে দাড়িয়ে আছো কেন হু?তোমার পেট ব্যথা করতেছে হ ? তুমি ঠিক আছো তো হা?
উনার হে হু হ হা শুনলেই আমার প্রচুর হাসি পায় । কিন্তু এখন হাসা যাবে না । না হাসতে পেরে সরি ফিল করে দিলাম কেদে ।
– বাড়ি যাবো হ ।
– যাও যাও হা । মুক্তা স্যারকে বলমু হে ?
– বলা লাগবে না হ। আমি একাই যেতে পারবো হা ।
চলে এলাম স্কুল থেকে । ব্যপার টা হলো যে কোন ব্যপার ই না এগুলো মেনেজ করা আমার পক্ষে । রাস্তায় দেখি ঐ পান দাত ওয়ালা কাকু গাড়ির সামনে দাড়িয়ে । তার মানে ঐটা তার ই গাড়ি । উচিত শিক্ষা দিবো এটাকে । আমাকে দেখে দাত কেলানো । সামনে দেখি মাথায় করে কলার ঝুড়ি নিয়ে যাচ্ছে । সম্ভবত আমাদের বাগানের কলাই । সাইজ দেখেই বোঝা যাচ্ছে । লোকটার সামনে এসে জিজ্জাসা করলাম
– which the দাম of কলা ?
লোকটা বত্রিশ পাটি খুলে
– কলা কিনবা ? এক হালি দশ টাকা ।
– দেও me দুই হালি banana of কলা ।
– কি কও এগ্লা ?
– উগান্ডার ইংরেজি শুদ্ধ বানানিকা ।
বিশ টাকা দিয়ে দু হালি কলা নিলাম। কলা গুলা ছুলে ছাল গাড়ির সামনে সমান করে লাইন করে রাখলাম । কলা গুলা পাশের ক্ষেতে ফেলে দিলাম সারের কাজ করবো ।দেখছো আমি কতো ভালা মানুষের কপোকার করি🤠। কিন্তু একি ?? ছালের উপর দিয়ে বেটায় প্রাইভেট কার নিয়ে চলে গেলো একটুও পিছলাইলো না । হায়রে মন্দ luck আমার । ছাল গুলো খুটে খুটে তুলে ক্ষেতে ফেলে দিলাম নয়তো আবার আমিই পিছলামু । হাত ধুয়ার জন্য মালেকের দিঘির উদ্দেশ্যে ছুটলাম । হাত ধুয়ে ঘাটেই বসলাম । পাশেই হিন্দু বাড়ি । তাই দিঘির ধার ঘেসে তুলসি , জবা, বেলি, পাতাবাহার খুব সুন্দর লাগতেছে । আহা এখানে যদি কালো গোলাপের একটা গাছ হতো ফুল গুলো সব আমিই নিতাম । মনটা খারাপ হয়ে গেলো । কয়েকটা পাথর কুড়িয়ে এনে পানিতে মারতে লাগলাম আর আচুর বের করে খেতে লাগলাম। আনমনে নিজের কাজ করে যাচ্ছি । হটাৎ পাশে কে যেন ধপ করে বসে পড়লো । ভয় পেয়ে তাকিয়ে দেখি স্যার । আল্লাহ আল্লাহ করে বুকে থু থু দিলাম ।
তানভীর ঝালমুড়ি সামনে ধরলো ।
” ঝাল মুড়ি …ইয়াম্মি…মিস করছিলাম । ঝাল দিয়েছেতো বেশি করে ..”
” হুম । ময়না মামা বললো তার এক রেগুলার কাস্টমার নাকি আজ মিসিং তাই নিয়ে এলাম ।”
” হু”
ঝালমুড়ি নিয়ে খেতে থাকলাম । ঝাল ঝাল মুড়ি আমার বেশ ফেভারিট।
” উদাস কেন ?
উদাসী দিনে ভাবো কি তুমি
দিক দিগান্তের মুখ করে ?
শুকনো মুখে তপ্ত দুপুরে
দিঘীর জলে নিজ ছায়ার
ঢেউ খেলানো দেখে দেখে ।”

” কেউ ভালুপাসে না ।”
” কিহহ?? কে বললো তোমাকে ? তুমি জানো তোমার আব্বু, আম্মুনি ,জেঠু ,জেম্মা ,আপু, দুলাভাই , নুপুর , আমার ফেমেলি কতো ভালোবাসে ?”
” আপনি ভালুপাসেন ? আপনি একটুও ভালুপাসেন না
। একটা রোজ দিলে কি হয় আপনার ? একটাই তো কালো গোলাপ চেয়েছিলাম । একগুচ্ছ কালো গোলাপ তো চাইনি । আপনি একটা ডেভিল। ”
ব্যাগ নিয়ে চলে আসলাম ।

তানভীর দেখলো লাবিবা চাটনি টা ফেলে গেছে । হাতে নিয়ে যেখান দিয়ে লাবিবা খেয়েছে সেখানেই একটা চাট দিলো। লাবিবার রেখে যাওয়া পাথর গুলো এক এক করে পানিতে ফেললো ।
” তুমিতো একটা কালো গোলাপ চেয়েছো । একটা গোলাপ কাউকে দিয়ে নিজের ক্ষতি করতে চাইনা আমি । সমস্ত গোলাপ শুধু একজনের জন্য । যা আজ ফুটছে তাও তার নামেই দিয়েছি আমি । যা পরে ফুটবে তাও তার নামেই দিয়েছি । তুমি হয়তো সেই একজন হতে পারবেনা । কারন তোমার আমার ব্যবধান আজো সর্বোচ্চ। যদি হয়েও যাও তবুও তোমায় দিবোনা আমি যতোক্ষন পর্যন্ত তুমি #একগুচ্ছ কালো গোলাপ আমার থেকে না চাইবে । যদি কখনো একগুচ্ছ কালো গোলাপ চাইতে পারো .. তাহলে আমি তোমায় পুরো গাছটার রানী করে দিবো সাথে আমার রানীও। ”

To be continue _____

#একগুচ্ছ_কালো_গোলাপ🖤
#লাবিবা_তানহা_লিজা
#পর্ব_১৯

🍁
ক্লাস শেষ হওয়ার পর স্যার রা বলে গেলো কিছুক্ষন ওয়েট করতে । আজ কমিটির সবাই এসেছে কি নাকি সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের বলবে । বসে থাকতে থাকতে জান যায় তবুও স্যাররা আসে না । জানালায় উঠে বসে পেছন দিকে প্রকৃতি দেখছে লাবিবা । পেছনেই সরকারি হাসপাতাল । দু তালায় কোয়াটার সেদিকে তাকাতেই জানালা দিয়ে দেখে টিভিতে সিসিমপুর হচ্ছে । চোখ দুটো উপরে উঠে যায় লাবিবার ।
মানে টা কি ? আজ তো মঙ্গলবার তাহলে সিম সিম পুর হচ্ছে কেন ? আবার একদিন এগিয়ে দিলো । তারমানে এখন মঙ্গল আর বুধবার হবে । আমি এখনো স্কুলে .। আর এক মুহূর্ত নয় দুলাভাই কাকুর স্কুলে । নুপুর তুই থাক আমি উলাল্লা উলাল্লাই এক দৌড়ে পালাই ।
– জানু…উলাল্লা উলাল্লা আমাক সাথে নিয়েই পালা । বলে নুপুরো পিছু পিছু দৌড় ।
কিন্তু বিপত্তি বাজলো মাঠ পেরুতেই । সামনে কামরুল স্যার এসে দাড়ানো তা দেখে লাবিবা নুপুর দুজনেই ব্রেক কষলো । কামরুল স্যার -কিরে কোথায় যাওয়া হচ্ছে হ্যাড স্যারের শালিকারা ?
লাবিবা- স্যার আজকো টিভি পে আছে না ..সিম সিম পুর দেখালিয়া । মে উসকো নেহি মিস কর চাতিহু । আর ইউ বুঝতিহু ? আগার মে নেহি যাতি হিনু ..উসকো সিম সিম পুর সাইসুইড খানালিয়া । সিম সিম পুর সাউট কারতিহু মেনে লাবিবা কেন নেহি দেখলিয়া ..কেন নেহি দেখলিয়া । আর ইউ বুঝতিহু ? টিভিকা সামনে বেঠিহে প্লেস আছিসা উসকো কানতাহু মেরে লিয়া ।মে যাহিতু দেন বঠিহু দেন প্লেস কান্না বন্ধ করতিহু । আর ইউ বুঝতিহু ?
কামরুল মাথা থেকে কেপ খুলে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে – কি বলস ? কিছুই তো বুঝতেছিনা ।
নুপুর – আর ইউ নেহি হিন্দি বুঝতাহু ? তো যাও পানিতে সাকিং করে মরতাহু । আপনা বিচলিকেলিয়ে নেহি অধিকার আতিহু ।
লাবিবা ন্যড়া মাথার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ফিক করে হেসে দিয়ে বলে – জাম্বুরা ।
কামরুল স্যারের জাম্বুরার কথা শুনে জিবে জল চলে আসে ।
– কি জাম্বুরা ? আছেনি তগো গাছে ?
লাবিবা- হ্যা জিয়ে । আপনি দুই মিনিট খারিয়ে মে আপনাকা লিয়ে হামারা বসত ভিটা থেকে জাম্বুরা আনিয়ে । দেন আপনার মুখে মারিয়ে আপ দাত কেলিয়ে পড়ে যাইয়ে । মে আনিয়ে ।
– অয় অয় জাম্বুরা আনবি ।
– হ জাম্বুরা । আনতাছি । আপনি অপেক্ষা করুন । নুপু চল । বলেই হাত ধরে দুটোই দৌড় । এক দৌড়ে লাবিবাদের বাসা । নুপুর দের বাড়ি যেতে অনেক টাইম লাগবে তাই লাবিবার বাসায় এসেছে ।
এদিকে কামরুল স্যার শহীদ স্যারের কাছে গিয়ে বলতাছে – আজকে জাম্বুরা নিয়ে বাসায় যাবো স্যার ।আপনার মেডামের অনেক পছন্দ।
– বাজারে জাম্বুরা উটছে নাকি স্যার ?
– না লাবিবা বলে গেছে জাম্বুরা দিবে ওদের গাছের । তাই বাসায় গেলো জাম্বুরা আনতে ।
পেছন থেকে মুক্তা শুনে অবাক । সাথে সাথে হেসেও ফেললো । কারন লাবিবা ন্যাডা মাথাকে জাম্বুরা বলে । আর আসল ফল জাম্বুরাকে বাতাবী লেবু বলে । শহীদ আর কামরুল মুক্তা স্যারের হাসির দিকে তাকিয়ে থাকে ।

বাসায় এসেই দুজনে চেঞ্জ না করে আগে সিমসিমপুর শেষ করে । তারপর ফ্রেশ হয়ে খেতে বসে ।দুজনেই খাবারে হাত নাড়ছে আর চোখে চোখ রেখে বসে থাকে । নুপুর – জানু ..এগুলাতো বাসাতেও খাই । তুইও এসবি খাওয়াবি ?
– একদম না । স্পেশাল মজা করে খাবো । চল ।
হাত ধুয়ে একটা হরলিক্সের বোয়াম নিয়ে যেটা তানভীর এনেছিলো সেটা নিয়ে বারান্দার কোনে গিয়ে দুজনে ফ্লোরে বসে চেটে চেটে খেতে থাকে । এদিকে আনিস এসে হাজির মেয়েকে খুজতে খুজতে । ইসমাইল ও এসেছে । দুই বন্ধু খুজতে এসে দেখে দুই বান্ধুবী মুখে হাতে হরলিক্স দিয়ে বিড়াল রুপ ধরে আছে । আনিস নুপুরকে নিয়ে চলে যায় ।

পড়তে বসেছে লাবিবা আর নুপুর । সামনে বসা তানভীর । বইয়ের থেকে তানভীরের দিকে চোখ বেশি পড়ছে লাবিবার । তানভীর যখন খেয়াল করে লাবিবা তার দিকে তাকিয়ে তখন ভ্রু কুচকে তাকায় । লাবিবা ঠোট প্রশস্ত করে মিকি হাসি দেয় ।
– স্যার । আজকে আমি সব পড়া শিখছি ।
– সেটা আমি এখানে বসেই তোমাকে শিখিয়ে দেই ।
লাবিবা মাথা নেড়ে পড়ায় মন বসায় ।
কিছুক্ষন পর লাবিবা আবার তাকিয়ে আছে দেখে তানভীর চোখ উপড় করে কি জিজ্জাসা করে ।
– স্যার আপনি কোন স্কুলের টিচার ?
– আমি লাবিবার স্কুলের টিচার । যে স্কুলে মাত্র তিন জন স্টুডেন্ট। লাবিবা নুপুর আর তানিয়া ।
– স্যার আরো কোন স্টুডেন্ট নিবেন ? আর বন্ধু নাঈম পড়বে ।
– জি না । সিট ফিল আপ ।
লাবিবা পড়ায় মন দেয় । পড়া শেষ করে বের হতে নেয় তখন আবার ঘুরে এসে বলে
– ও স্যার স্যার ।
– বলো ।
– আপনার বয়স কতো ?
– তুমি যখন ক্লাস ওয়ানে পড়ো তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি । বুঝলে ?
– আপনিতো বুইড়া ।
– কিহ ??
– না স্যার কিছুনা । স্যার আপনি বিয়ে কবে করবেন ?
– কেনো ?
– লাবিবা এগিয়ে এসে ব্যাগ থেকে ফোন বের করে গ্যালারিতে ঢুকে একটা ছবি বের করে সামনে ধরে ।
তানভীর দেখে একটা মেয়ের ছবি । বয়স কম ।
– কে এটা ?
– তিথী । আমার ফ্রেন্ড। আপনি সেদিন যখন স্কুলে গিয়েছিলেন তখন আপনার প্রতি ক্রাসিতো হয়েছে । ও অনেক সুন্দর । ফর্সা লম্বা সুন্দর । দেখুন স্যার ছবিতে দেখুন ।
– তো এখন কি করবো আমি ?
– ওর বিয়ের দেখাশুনা চলছে । ও আপনাকে পছন্দ করে । এখন আপনি ওকে বিয়ে করুন ।
তানভীর চুপ ।
ছবি চেঞ্জ করতেই লাবিবার একটা ছবি আসে । তানভীর দেখিয়ে বলে – দুষ্টু পুতুল দেখো তিথীর থেকে এই মেয়েটাকে বেশি ভালো লাগছে । আমি একে দেখে ক্রাসিত । তুমি বরং এক কাজ করো তুমি তিথীর ঘটকালি না করে আমারটা করো । আমি তোমায় অনেক গুলো চকলেট দিবো ।
– ও আমার আল্লাহ ..স্যার এইটাতো আমি ।
– কে বলছে এইটা তুমি ? তুমি দেখতে পাওনা ? এই মেয়েটা কেমন আর তুমি কেমন দেখোনা ।
– না স্যার এটা সত্যি আমি।
– আরে এটা তো বড় একটা মেয়ে । তুমিতো আম্মুনিকা হরলিক্স খাওয়াকা বাচ্চিকা ।
– না স্যার এটা আমি ।
– না এটা তুমি না । আমি একে বিয়ে করবো ।
– স্যার এইটা আমি ।
– না এইটা আমার হবু বউ । নাম্বার দাও আমার হবু বউয়ের । আজি বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবো।
– না । এইটা আমি বিশ্বাস করুন স্যার ।
– না এইটা আমার বউ।
এবার লাবিবা কেদে ফেলে
– স্যার এইটা আমি😭
– কাদেনা । তুমি বসে বসে কাদলে আমার বিয়ের ঘটকালি কে করবে বলো।
– এইটা আমি😭।
কান্না শুনে সোহানা আসে । লাবিবাকে নিয়ে উপরে যেতে থাকে । লাবিবা বার বার পিছু ফিরে ভেজা চোখে পিট পিট করে তানভীর কে দেখে।
লাবিবা চলে যেতেই তানভীর হো হো করে হেসে ফেলে ।
উপরে এনে লাবিবাকে খাটে বসিয়ে একটা শপিং ব্যাগ এনে দেয় সোহানা ।লাবিবা বের করে দেখে একটা রেডিমেট সেলোয়ার কামিজ ।
– এইটা আমার ?
– হ্যা। পছন্দ হয়েছে মা ?
– শাশুমা আমি তো সেলোয়ার কামিজ পড়ি না ।
– পড়িস না তো পড়বি । বড় বড় লাগবে তোকে।
– পড়ে এসে দেখিয়ে যাবি আমাকে ।
– আচ্ছা । এখন বাই।

To be continue ____একগুচ্ছ_কালো_গোলাপ🖤
লাবিবা_তানহা_লিজা
#পর্ব_২০+২১

🍁
লাবিবা প্যাকেট থেকে থ্রি পিচটি বের করে আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজের উপর ধরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে । এইটা পড়লে কেমন লাগবে চিন্তা করতে করতে একসের । মনের সাথে অনেক দ্বিধা দন্দ চুকানোর পর সেলোয়ার আর কামিজ পড়ে ফেললো। ওমা ভালোই তো লাগছে আমাকে । একদম বিনাপুর মতো লাগছে । কিন্তু বিনাপুর তো বেবি হবে আমার তো বেবি নেই । বেবি পেটে জন্য বিনাপু কতো সুন্দর হয়ে গেছে । আমিও সুন্দর হবো । আমারো পেটে বেবি চাই । এক দৌড়ে বিনার রুমে এসে বিনার পাশে ধপ করে বসে পড়ে । বিনা জেমির চুল বেধে দিচ্ছিল সমস্যা হওয়ায় লাবিবার দিকে ফিরে
– এতো লাফালাফি কিসের তোর ? একটা সময় কি একটু শান্তু থাকতে পারিস না ?
– আমাকে কি ছেলে মনে হয় যে ইমি শান্ত হবো ? শান্তর ফিমেল ভার্সন কি হবে ? শান্তি ? হুস হুস ..শান্তি ভালো লাগে না । শান্তির মাও মরছে জেম্মা বলছে ‌ । এটা হবে শান্তিনী । উফ লাভলি😍।
– বক বক বন্ধ কর। আর এটা কি পড়েছিস ? থ্রি পিচ কই পেলি ? ওড়না কই ? কে দিয়েছে এতো সুন্দর থ্রি পিচ ?
– শাশুমা দিয়েছে ।
– তুই আবার কার সাথে শাশুমা পাতালি ?
– বাদ দাও তো । আগে বলো আমি কি খেলে বেবি পেটে হবে?
– কিহহ? লাবি শোন তোর আজাইরা কথা বলবিনা আমাকে ।
– আমি কি শেখ পাড়ার হাগুরী মুতুরী ছেমড়ি যে আজাইরা কথা বলি😠। আগে বলো কি খেয়ে বেবি পেটে হয়ছে । আমি ও খামু । আমারো পেটে হবো । আমিও তোমার মতো সুন্দর হবো ।
– তুই এমনিতেই সুন্দর । বেবি লাগবেনা তোর । আমারটা হলে তোকে দিয়ে দিবো ।
– ওমা তাই ? উফ লাভলি😍। আচ্ছা।

নাচতে নাচতে রুমে এসে ব্যাগ গুছায় । চুল আচড়ে পিঠের উপর ফেলে দেয় । আজ আর ঝুট্টি করে না । ঠোটে চিলমিলে লিপলজ দেয় । মুখে হালকা পাউডার । ওড়নাটা একপাশ দিয়ে এনে বুকের উপর রাখে । আয়নায় নিজেকে দেখে দু গালে হাত দিয়ে অবাক হয়ে দাড়ায় । ও আমার আল্লাহ , আমিতো বড় হয়ে গেছি । ব্যাগ নিয়ে এক দৌড়ে সাবিনা আর সখিনার সামনে এসে ঘুরে ঘুরে দেখায় । দেখো আম্মুনি তোমার মেয়ে বড় হয়ে গেছে । এখন আর মারবেনা ।বড় মেয়েদের মারতে হয় না । সখিনা হেসে এসে গাল টেনে দিয়ে বলে – আমাদের এলিজা তো সত্যি বড় হয়ে গেছে । এখনতো বিয়ে দিতে হবে ।
-তিথীকেও বিয়ে দিবে । আমাকেও তোমরা বিয়ে দিবে ? কবে দিবে ? কার সাথে ? পাত্র দেখতে কেমন ? আমি কিন্তু বলে দিচ্ছি আগেই ..পাত্রের ঠোট আমার মতো গুটু গুটু পিলপিলে ছোট সফট সুন্দর হতে হবে নয়তো আমি কিন্তু পাপ্পি দিবো না 😒। ভেটকানো ঠোট আমার একদম ভালো লাগে না ।
সাবিনা রেগে মেগে দৌড়ানি দেয় -ঐ তুই গেলি এখান থেকে ? এই মেয়েকে নাকি দিবো বিয়ে 🙄

লাবিবা রাস্তায় নুপুরের দেখা পায় । নপুর ও আজ থ্রিপিচ পড়েছে । দুজনে মিলিয়ে মিলিয়ে জামা পড়ে । হেলতে দুলতে নতুন জামা পড়ে এগুচ্ছে দুজনে । মোরে দুটো দোকান । একটা চায়ের আরেকটা হার্ডওয়ারের । চায়ের দোকানের সামনে একদল এলাকার অসভ্যরা বসে আছে । নজরে পড়ে নুপুর লাবিবার দিকে । একজন চেলা লিডারকে বলছে ওস্তাদ দেখেন ঐটা আখির বোন নুপুর যাচ্ছে । লিডার সিগারেটে ফু দিয়ে বলে
– তাইতো দেখি । ওরে আখি .. আমার পাখি ..। এক রাইতেই উইড়া গেলি .। ছোট বোনটারে রাইখা গেলি । এইটাও তো দেখি কচি মাল রুপসী। একটা পাখি পাই নাই ,এই পাখিটারে নজরে রাখি সুযোগ পেলে ধরে নিবো। চল একটু কথা বলে আসি কচি পাখির সাথে।

নুপুরের সামনে দাড়িয়ে যায় । নুপুর লাবিবা পিছিয়ে যায় । লিডার বলে উঠে
– কিগো সুন্দরী কেমন আছো ? সুন্দরী ওড়না এইভাবে নেও কেন ? তোমার বোন তো গলায় ঝুলিয়েছে । তুমি কেন ঝুলাও না ?
নুপুর ভয়ে শেষ । এরা যে আখির পিছু সবসময় ঘুরতো তা খুব ভালো করে জানা । লাবিবা অবাক। এগিয়ে গিয়ে বলে – গলায় উড়না নিলে কি হয় ? আর পেচিয়ে উড়না নিলে কি হয় ?
একজন হেসে উঠে বলে – ওস্তাদ এইটা আমাদের চেয়্যার ম্যানের মাইয়া ।।ইসমাইল চেয়্যারমেন ফিরোজ এমপির কলিজা । বোকার হাড্ডি🤣
লিডার -🤓 হুম শত্রুপক্ষ। শোন মামুনি তোমাদের তো ওড়নাই নিতে হয় না । তোমরা তো ছোট । ওড়নাতো বড়রা নেয় ।
এক জন হেসে বলে – মামুনি আমাদের ওড়নার ভীষন প্রয়োজন ।
লাবিবা – কি করবে ?
একজন – এক মহিলাকে দিবো । মহিলাটা ওড়নার জন্য নিজেকে ঢাকতে পারছেনা । ভীষন গরীব।কাপড়ের বড়ই অভাব ।
লাবিবা – আহারে …গরীব মানুষের কতো কষ্ট। আমার টা নিয়ে যাও উনাকে দিয়ে দিও। বলেই লাবিবা ওড়না খুলে চুল গুলো দু ভাগ করে সামনে এনে বুকের উপর ফেলে দেয় । নুপুর বলতে থাকে জানু দিস না। ওরা খারাপ । মিথ্যা বলে । লাবিবা না শুনে ওদের হাতে উড়না দিয়ে দেয় । লোকগুলোও অবাক ।এইভাবে কেউ ওড়না খুলে দিবে ভাবতেই পারেনি যেখানে সবাই ভয়ে দূরে চলেযায় সেখানে এতো ফ্লিলি কিভাবে এরকম ব্যবহার করছে ? এই মেয়ে কি সত্যিই এতো বোকা?
লাবিবা নুপুরকে নিয়ে হাটা দেয় । পিছু ফিরে দেখে লোকগুলো হা করে তাকিয়ে আছে । নুপুর এখনো বুকে হাত দিয়ে আছে । লাবিবা হাসতে হাসতে শেষ । নুপুর রেগে যায় ।
– হাসবিনা একদম কুত্তি । তুই ভয় পেলি না কেন ?
– কজ আই এম সাহসী😎
-সাহসী না ছাই । ওড়না দিলি কেন ?
– ওড়না না দিলে এখনো ওখানেই পড়ে থাকতি । তোকে ছাড়তোই না ।
– তাও ঠিক ।

রিড়িং রুমে এসে দেখে লাবিবা আর নুপুর চলে আসছে । দুজনেই সেলোয়ার কামিজ পড়া কিন্তু লাবিবার ওড়না নেই । চুল সামনে রাখা । কিছু বলে না । পড়ানো শুরু করে ।পড়ার মাঝে লাবিবা বলে
– ও স্যার স্যার ..আমাকে নাকি বিয়ে দিবে । এডভান্স দাওয়াত আপনাকে।
নুপুর আর তানভীর চোখ কুচকে লাবিবার দিকে তাকায় । লাবিবা দাত গুলো বের করে দেয় । তানভীর ও হেসে ফেলে । দুষ্টু পুতুলকে নাকি বিয়ে দিবে এটা জোকস ছাড়া কিছুই নয় । পড়ায় মন দেয় । পড়া শেষে নুপুর বলে – জানু ..আজ আমি অটো দিয়ে বাসায় যাবো । ছেলে গুলো এখনো থাকবে জানি ।
তানভীর চোখ কুচকে বলে – কোন ছেলে ?
নুপুর আমতা আমতা করে । লাবিবা ধাক্কা দিয়ে বলে বলতে । নুপুর সব বলে । তানভীর এক মনে লাবিবাকে কিছুক্ষন দেখে । তারপর নুপুর কে বসতে বলে লাবিবার হাত ধরে সিড়ি দিয়ে উপরে চলে আসে । লাবিবা কিচ্ছু বলে না । মনে মনে ভাবে সিউর বকা খাবে এখন । তানভীর লাবিবাকে সোহানার রুমে এনে বসায় । আলমারি থেকে একটা ওড়না বের করে এনে লাবিবার মাথায় ঘোমটার মতো করে দিয়ে দেয় । বউ বউ লাগছে । মুচকি হাসে তানভীর ।
– তো দুষ্টু পুতুল ..কবে তোমার বিয়ে ?
– জানিনা । জেম্মা বললো আমি বড় হয়ে গেছি বিয়ে দিয়ে দিবে ।
– তো কেমন ছেলে তোমার পছন্দের ? মানে কেমন ছেলে বিয়ে করবে ?
– লম্বা ছেলে । ঠোট সুন্দর ছোট্ট পিলপিলে নরম হলেই চলবে ।
– ও আচ্ছা । আমার ঠোটের মতন কি ?
লাবিবা ঠোটে চোখ আটকায় । তানভীর মুখের সামনে মুখ এনে বলে – ছুয়ে দেখো সফট কিনা ?
লাবিবা আঙুল ছোয়ায় ঠোটে । হালকা স্লাইড করে বলে – হুম অনেক সফট । এরোকম ঠোট হতে হবে ।
সোহানা রুমে চলে আসে । লাবিবাকে দেখে এগিয়ে যায় । – বাহ খুব সুন্দর লাগছে তো আমার মা টাকে । বউ বউ লাগছে ।
লাবিবা- 😊😊 শাশুমা আমাকে বি___
তানভীর – যেতে হবে । দুষ্টু পুতুল চলো নুপু ওয়েট করছে । মম আমি পৌছে দিয়ে আসছি ।
লাবিবাকে কথা না বলতে দিয়ে টেনেই নিয়ে চলে আসে ।

মোরের সামনে এলে দেখে এখনো টং এ একদল ছেলে বসে আড্ডা দিচ্ছে । হাতে লাবিবার উড়না দেখে বুঝতে দেরী হয় না যে এরাই ওরা । নুপুর লাবিবাকে ড্রপ করে মোরে চলে আসে । গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে যায় । ছেলে গুলি তানভীর কে দেখে দাড়িয়ে পড়ে । এগিয়ে আসে তানভীরের দিকে ।
– আরে তানভীর ভাই যে ‌। মামা চা বানাও তারাতাড়ি । ভাই আসেন আমাদের পক্ষ থেকে আপনার জন্য চা ।
– চায়ে লিকার নেই । কড়া করে লিকার টা দিতে এলাম । মহিলাটার জন্য ওড়না কে চেয়েছে ?
– কেন ভাই ? আপনি কি ..
রেগে গিয়ে -কে চেয়েছে ওড়না ?
– ওড়না ওড়না করছেন ওড়না পরবেন নাকি ?
নাক বরাবর এক ঘুসি দেয় রেগে । লিডার নাক ধরে পিছিয়ে যায় ।
– কে চেয়েছিলি ওড়না 😠 বলেই তানভীর সব গুলোকে আচ্ছা মতো মারতে থাকে । যে ছেলেটি চেয়েছিলো সেই ছেলেটি পা ধরে বলে – ভাই ভাই । মাফ করে দেন আর হবে না । আর চাইবো না ।
– তুই তাহলে সেই মহিলা । শার্ট খুল ।
– ভাই ভাই ..।
– শার্ট খুলতে বলছি তোক । ঐ একজন ওর শার্ট খুল ।
একজন ওর শার্ট খুলে দেয় ।
– এবার প্যান্ট খুল ।
– ভাই ভাই মাফ করে দেন । আর হবে না ভাই ।
– কোন মাফ নেই । ঐ খুলিশনা কেন শালা বলে দেয় এক লাথি ।
লাথি খেয়ে পটা পট প্যান্ট খুলে নেয় । আন্ডার ওয়্যার ছাড়া গায়ে আর কিছুই নেই । রাস্তায় এতোক্ষনে ভিড় জমে গেছে। লোকজন দেখে হাসাহাসি করছে । কেউ কেউ ক্যামেরা ধরে রেখেছে ।
তানভীর গাল চুলকে বলে – এবার শাড়ির মতো করে ওড়না পরা ।
শাড়ির মতো করে ওড়না পরিয়ে তানভীর কয়েকটা ছবি তুলে নেয় । তারপর ঐ ছেলেকে ঐভাবেই লোকজনকে বলে বাজারে নিয়ে গিয়ে ঘোড়াতে । তানভীরের কথা মানে সবাই শুনতে বাধ্য । গাড়িতে বসে লাবিবার বাড়ির পেছনের রাস্তায় আসে । ফোন
দেয় ছাবিনার ফোনে । সাবিনা ফোন তুলতেই বলে
– আসসালামু আলাইকুম কাকি ।
-ওয়ালাইকুম আসসালাম । তানভীর বাবা বলো ।
– কাকি ঐযে দুষ্টু পুতুল ওর একটা বই ফেলে গেছে আমার গাড়ীতে । আমি পেছনের রাস্তায় আছি । ওকে একটু পাঠিয়ে দেন নিয়ে যাক বই। লাবিবাকে বললে লাবিবা আসতে থাকে । আমিতো কোন বই ফেলে আসিনি । তাহলে ? ভাবতে ভাবতেই চলে আসে । পেছনে জঙ্গল তাই একটু ভয় লাগছে । মাগরীবের আযান হয়ে গেছে । গাড়ির পাশে আসতেই তানভীর গেট খুলে ভিতরে আসতে বলে । লাবিবা উঠে বসে । বাইরে থেকে যেন দেখা না যায় তার জন্য লাইট অফ করে দেয় ।

To be continue ___

#একগুচ্ছ_কালো_গোলাপ🖤
#লাবিবা_তানহা_লিজা
#পর্ব_২১

🍁
তানভীর একটানে লাবিবাকে কোলে বসিয়ে দেয় । দুহাতে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।
আহহ..
চুপ। আমিইতো ভয় পাও কেন ?
ও স্যার আপনিতো ভালো না ।
কিহ ??
হুম।আপনি মারামারি করেন । আমাকে মারেন বকেন।
এখনকি আমি তোমাকে মারতেছি নাকি বকতেছি😡।
এইতো রেগেও যান । রাগ করা ভালো না ।
আচ্ছা আমি ভালো না তুমি ভালো হও তাতেই চলবে ।
আমার বই? আমিতো বই ফেলে যায়নি ।
ওটা মিথ্যা বলে তোমাকে এনেছি নয়তো কি আর আসতে দিতো নাকি ?
😱স্যার আপনি মিথ্যাও বলেন ? এটাতো আরো খারাপ কাজ । মিথ্যা বলা মহাপাপ। মিথ্যাবাদীকে আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না ।
আচ্ছা ওকে যাও মিথ্যাবাদীর সাথে থাকতে হবে না । নাম গাড়ি থেকে ।
স্যার ও স্যার রাগ করেন কেন🤔।
কিছু কিছু ব্যপারে মিথ্যা বলতে হয় । বুঝলে ?
হুম । স্যার লাইট অন করুননা …আমি আপনাকে ঠিকঠাক দেখতে পাচ্ছি না ।
আপাদত অন্যকিছু দেখো। বলেই তানভীর ফোন বের করে পিক বের করে লাবিবাকে দিলো । লাবিবা দেখে হাসতে হাসতে মরে যাই যায় অবস্থা । তা দেখে তানভীর ও হেসে ফেলে । নিজের ওড়না দেখে তো আরো হাসি ।
স্যার ..একটা গান আসতেছে । গাই ??
তোমার গান😂 আচ্ছা গাও।

🎶 দেখিলাম প্রথম বার …
বান্দরের গায়ে
থাক গামুনা ।
কেন ? গাও ।
না থাক । আমার শরম করে ।
সিরিয়াসলি ?? তুমি শরম কি বুঝ ?😂ওরা যা করেছে এটাকে কি বলে জানো ? ইভটিজিং করা । খুব বাজে কাজ ।
ওও এটাই ইভটিজিং 😱 paragraph পড়েছিতো ।
হুম । নাও তোমার চকলেট ।
তানভীর চকলেট বের করে লাবিবার মুখের সামনে ধরে । লাবিবা চেচিয়ে উঠে ।
হায় হায় অনেকগুলা ব্যকটেরিয়া আছে হাতে । আগে জীবানু দিয়ে হাত ধুয়ে নেন । চলুন বাসায় চলুন ।
আমি স্যনিটাইজার ইউজ করি । বাসায় যাবো না জন্য ই তো এখানে ডাকলাম বুঝনা ?
লাবিবা চকলেট মুখে তুলে নেয় ।
স্যার বইতো নেই । এখন আম্মুনিকে কি বলবো ?
তোমার তো অনেক বুদ্ধি । বলে দিবে কিছু একটা ।
স্যার আমাকে এগিয়ে দিয়ে আসুন না । সামনে জঙ্গল ভয় করে ।
তুমি না সাহসী ? ভুত ধরে বেড়াও ?
হুম । কিন্তু এখন তো রাত হয়ে গেছে । সাপ পোকা মাকড় বের হবে ।
ওকে চলো । নামো ।
লাবিবা নামতে গেলে তানভীর আটকে দেয় । আবার কাছে এনে বলে – শোন!! থ্রি পিচ পড়তে হবে না । তুমি যাতে কমফরটেবল সেটাই পড়বে । আর পারলে হিযআপ পড়া শিখে নিবে । বুঝলে ?
লাবিবা মাথা নাড়িয়ে চকলেট বক্স নিয়ে নেমে যায় । তানভীর গাড়ি লক করে লাবিবার নরম হাত টা নিজের হাতের মাঝে নিয়ে হাটতে থাকে । সত্যিই জঙ্গলটা রাত হওয়ার জন্য গভীর লাগছে । গেইটে থেমে বললো – দুষ্টু পুতুল ….আমি দুই দিনের জন্য ঢাকা যাচ্ছি । নুপুরকে বলে দিও । সাবধানে থেকো ।
লাবিবা মাথা নাড়িয়ে দৌড়ে ভিতরে ঢুকে যায় । তানভীর সেই রাস্তা ধরেই গাড়ির কাছে আসতে থাকে । জঙ্গল পেরুতেই কাধে লাঠি জাতীয় কিছুর আঘাত পায় । আঘাতটা মাথাতেই করা হয়েছিলো কিন্তু ফসকে গিয়ে লাগে কাধে । আহহ শব্দ করে পেছনে তাকাতেই মাথা সহ কপালে আরেকটা আঘাত পায় । পিছিয়ে মাটিতে বসে পড়ে তানভীর । মোরের সেই ছেলেগুলো সাথে হাসানের দলের অনেকজন । বুঝতে আর বাকি নেই যে ছেলে গুলো হাসানের দলের ছিলো । এরা অচমকা অন্ধকারে তানভীরকে বধ করতে এসেছে । তানভীর কোন রকম উঠে গাড়ির দিকে দৌড় দিয়ে ফোন বের করে আন্দাজে ইমাজেন্সি কল দেয় । ছেলে গুলো তানভীরকে ধরে ফেলতেই তানভীর ওদের সাথে লড়তে থাকে । মাথায় আগেই আঘাত পাওয়ার জন্য মাথা ঘুরতে থাকে । মাথা চেপে বসে পড়ে । আঘাত করতে গেলে ফিরোজের লোকেরা এসে ধরে ফেলে ।

লাবিবা চকলেট বক্স বুকের সাথে দু হাতে চেপে পা টিপে টিপে ভিতরে যেতে থাকে । তবুও ধরা পড়ে যায় । সোহানা বলে – বই কোথায় ? এটা তো চকলেট বক্স।
– উফফ আম্মুনি ..এটা বই । চকলেট বক্সের মতো দেখতে । এই জন্য ই তো বলি আগের আমলের মানুষ তোমরা কিচ্ছু চিনো না ।
এক দৌড়ে রুমে এসে দরজা লাগায় । খাটের উপর আয়েশ করে বসে ছবি গুলোর কথা মনে করে খিল খিল করে হাসছে আর চকলেট খাচ্ছে । শেষ হলে হাত মুখ ধুয়ে এসে পড়তে বসে ।

দূর থেকে আওয়াজ আসছে । লোকজন ও রাস্তা দিয়ে আওয়াজ তুলে জোরে জোরে হেটে যাচ্ছে । সাবিনা আর সখিনা গেইটে এসে দাড়ায় এতো রাতে কি হয়েছে বুঝার জানার জন্য । রাস্তায় পাশের বাড়ির শেফার মা আর রুপার মা কে দেখে ডাক দেয়
– কি হয়েছে গো ? এইভাবে ঐদিকে সবাই ছুটছে কেনো ?
– আমাগো এমপির পোলারে মারছে হাসান এমপির লোকেরা । এখন দুই দলে মারামারি করতাছে । ফিরোজের দল ই জিতবো দেইখো । চেয়্যারমেন ও আছে ঐখানে দেখলাম ।
– তানভীর কে মারছে । ভাবী চলেন তো।
সাবিনা সখিনা দুজনেই ভিতরে আসে । লাবিবাকে ডাক দিয়ে বলে – তোর স্যাররে নাকি মারছে । বিনার কাছে গিয়ে বস । আমরা আসতেছি ।
তানভীরকে মারছে শুনেই যেন লাবিবা কেদে ফেলবে । এক দৌড়ে বেড়িয়ে যায় । সাবিনা ডেকেও থামাতে পারে না । যে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ভয় পাচ্ছিলো সেই জঙ্গল দিয়েই একাই চলে আসে । পিছু পিছু সাবিনা আর সখিনাও আসে । ওরা দাড়িয়ে পরে ইসমাইল আর ফিরোজকে দেখে । মারামারি শেষ ভাব । হাসান দলের লোক বেশি আহত । রাতের অন্ধকারে আবছা টর্চের আলোয় ঘটনা টি ঘটে গেলো ।

লাবিবা এদিক ওদিক ছুটে তানভীরকে দেখতে পেলো না । দূরে তানভীরের গাড়ি থামানো দেখতে পায় । দৌড়ে সেখানেযায় । গাড়ির গেইট খুলে সিটের কিনারায় চোখ বন্ধ করে হেলান দিয়ে আছে তানভীর । গাড়ির লাইট জালানো । কপালে মুখে রক্ত দেখে কেদে ফেলে লাবিবা । কেনো কাদছে তা সে জানে না । পেছনের গেইট খুলে গাড়িতে উঠে । ভিতর দিয়ে সামনের সিটে এসে বসে । স্পষ্ট আঘাত দেখে কেদে ফেলে । তানভীর কান্নার আওয়াজে চোখ মেলে । ব্যথায় তাকাতেও সমস্যা হচ্ছে । গালে কোমল স্পর্শ পায় । বুঝতে আর বাকি নেই এটা তার দুষ্টু পুতুল । লাবিবা দু হাতে মুখটা নিজের দিকে ঘুরায় । একদম সোহানার মতো ফেস ফেস করে কাদছে । লাবিবার কান্নার স্টাইল ও পাল্টে যায় দেখছি । তানভীর অশ্রুশিক্ত সেই কিউট মায়াবী ফেসটা দেখে চোখ বন্ধ করে । গাল থেকে হাত দুটো মুখের সামনে এনে চুমু একে দেয় দুটো হাতে ।
লাবিবার দিকে তাকিয়ে বলে
– কাদছো কেনো ? কিছুই হয় নি আমার । সামান্য ব্যথা করছে ।
– আমারো খুব ব্যথা করছে কলিজায় আপনার ব্যথা দেখে ।
– ও হে দেখোতো ঐখানে একটা বক্স আছে । নিয়ে এসো ।
লাবিবা দেখলো এইটা ফাস্ট এইড বক্স । বক্স খুলে স্যাভলন আর তুলো দিয়ে নিজেই উচু হয়ে ক্ষত স্থান পরিস্কার করতে থাকে । সমস্যা হয় দেখে সামনে উঠে বসে পরিস্কার করতে থাকে ।
তানভীর মৃদু হেসে বলে – পারবে তুমি ?
– হামম। অনেক বার করেছি ।
তানভীর চোখ দুটো বন্ধ করে দেয় । ফিরোজ ইসমাইল সাবিনা এসে দেখে লাবিবা ওষূধ লাগাচ্ছে । ফিরোজ ছেলের মাথা ঘাড়ে হাত বুলিয়ে দেয় । একটা মাত্র ছেলে তার । লাবিবার মাথায় ও হাত বুলায় । সবাই মারামারি দেখতে ব্যস্ত আর লাবিবা তার ছেলেকে দেখতে ব্যস্ত। একটু শান্তি বয়ে যায় বুকে । ইসমাইল বলে তানভীর কে বাসায় নিয়ে যেতে । তানভীর চোখ খুলে লাবিবার দিকে তাকায় । অনেকটা সময় দেখা হবে না তার এই মায়ার বাগিচাটাকে । সাবিনার হাত ধরে লাবিবা নেমে আসে । মায়ের সাথে চলে আসে । তানভীর সেই অন্ধকারে লাবিবার অবয়ব দেখতে থাকে যতোক্ষন দেখা যায় ।

লাবিবা একাই চলে আসছে খান বাড়িতে । আজ যে করেই হোক তাকে গোলাপ নিতেই হবে । সাবিনাকে বলেনি তানভীর নেই । ইসমাইল ও নিজের কাজে বিজি । নুপুর আখির বাসায় বেড়াতে গিয়েছে । রাস্তা থেকে লাবিবা একটা বাশের পাকা কিছুটা লম্বা কোটা নিয়ে এসেছে । বাড়ির ভিতরে ঢুকেই চোখে পড়ে আকবর মিয়াকে । লাবিবাকে দেখে এগিয়ে এসে বলে – ছোট সাব ঢাকা গেছে ।
– আমি জানি । শাশুমার কাছে আসছি ।
বলেই লাবিবা চলে আসে । আকবর বুঝতে পারে না শাশুমা টা কে ?
গাছের নিচে এসেই ব্যাগটা ঘাসের উপর ফেলে দিলো । দু হাত তুলে মোনজাত ধরে বলে – ও আমার আল্লাহ আজকে আমাকে ফুল পাইয়ে দিও । চুরি করতেছি মাফ সাফ করে দিও । কাধের ফেরেসতা দুইটাকে লিখতে না করে দিও । আমিন ।
কোটা দিয়ে অনেক চেষ্টা করছে । কিন্তু পারছেই না । জানালা দিয়ে তানিয়া দেখে ডাক দেয় -লাবিপু..।
তানিয়ার ডাকে কোটা দিয়ে নিজের কপালে নিজেই বারি খায় । হাতের তালু দিয়ে ঘসে তানিয়াকে ঠোটে আঙুল চেপে চুপ করতে বলে আবার কাজে নেমে পড়ে । তানিয়া লাবিবার পাশে এসে দাড়ায়। – লাবিপু ..তুমি চুরি করছো ? ভাইয়াকে বলবো ? তুমি চোর ।
– চুপ কর তো । ব্যাগ খুলে দেখ চকলেট আছে । ডেইরি মিল্ক😋। খা বসে বসে ।
তানিয়া চকলেট নিয়ে খেতে থাকে আর লাবিবার লাফানো দেখতে থাকে। একসময় একটা শুকনা কাটা ওয়ালা গোলাপের ডাল লাবিবার গাউনের উপর পরে । লাবিবা ভয় পেয়ে দু তিনটে লাফ দিয়ে ই ডাল ছাড়ানোর চেষ্টা করে । টিস্যু নেটের গাউন হওয়ায় কাটাও নাছোড় বান্দা হয়ে লেগেছে। তানিয়াও হাত লাগায়। একসময় দুজনের ঘাম ছুটে যায় তাও ছাড়াতে পারে না । লাবিবা কেদে ফেলে । তানিয়া দৌড়ে বাড়ির ভিতরে গিয়ে সোহানাকে ডেকে আনে ।
সোহানে এসে হাসতে হাসতে কাটা ছাড়িয়ে দেয় । মাথায় গাট্টা মেরে বলে – কি যে কি কখন করিস না তুই ..। এই ফুল গুলো তোর না । তাই তোর কাছে আসবেনা বুঝলি ? মন খারাপ করে না মা । ডুডুলস খাবিতো ? চল ।
লাবিবা হাটতে হাটতে পেছনের সুইমিং পুলে এসে পা ডুবায় গাল ফুলিয়ে । তানভীরের কথা ভাবতে থাকে । সেদিন উদাম গায়ে এখানে সুইমিং করছিলো । কি বডিরে বাবা । ভয় করে দেখলেই । ডলফিন একটা ।সোহানা এসে লাবিবার পাশে বসে চামচ দিয়ে লাবিবাকে খাওয়াতে থাকে । খেতে খেতে লাবিবা বলে
– ও স্যার …মিস ইউ ভুরিভুরি ।
সোহানা শুনতে পেয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় ।
– শাশুমা তুমি পচা । অসুস্থ ডলফিন টাকে থুক্কু মানে মানুষের না মানে আবার থুক্কু তোমার ছেলেটাকে কেনো যেতে দিলে ?
– বাব্বাহ আমার থেকে তো তোর বেশি চিন্তা।
– মোটেও না তুমি আম্মুনি আর আমি ছাত্রী । রাত দিন তফাত । তবুও কষ্ট লাগে তো । তুমিতো দেখোনি রক্তে কেমন হয়ে ছিলো । আমি দেখেছি । তুমিতো ব্যন্ডেজ করা দেখেছো ।
– হুম । এখন বক বক না করে খেয়ে বাসায় যা । তোর স্যার আরো একদিন থাকবে । পরশু আসবে ।
লাবিবা খেয়ে বাসায় ফিরে আসে ।

To be continue ______

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here