আজও ভালোবাসি তোমায়❤ পর্ব -০৩

#আজও_ভালোবাসি_তোমায়❤
#Writer_মাহিয়া_মিতু
#Part_3
🍁
🍁
মিতু ভার্সিটি পৌঁছে দিনার জন্য ওয়েট করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর দিনা আসলে আবারও কালকের মতো ওকে আগে একটু ইচ্ছা মতো ঝেড়ে নেয়,আর বেচারি দিনা চুপচাপ সব হজম করে নেয়😐
—– কুত্তা, বিলাই, ডাইনির মা তোকে তো পিচ পিচ করে কেটে তেলাপোকার খাবার বানাতে ইচ্ছা করছে😈
—–😫😫😫😫
—— শয়তানি, আজকেও তুই দেরি কইরা আসলি কেন, জানিস কতক্ষণ ধরে এখানে একা একা বসে ওয়েট করছি আমি😠
—— সরি বান্ধুপি, আর হপপে না।
ঠাসসসসস করে একটা চড় পড়লো দিনার গালে, আর দিনা গালে হাত দিয়ে অসহায় চোখে মিতুর দিকে তাকিয়ে আছে।
—– প্রতিদিন এই এক কথা বলিস, আর যদি কোনোদিন এই একই কথা বলিস না, সেদিন বুঝবি👿
—- তাই বলে তুই আমারে মারলি😣
—— হ,মারলাম। এবার চুপচাপ আমার সাথে চল নাহলে আবার মার খাবি।
একথা শুনে দিনা আর কোনো কথা না বলে মিতুর পিছনে পিছনে যেতে থাকে, কারণ ওর আর মার খাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।
ওরা ক্লাসের দিকে যাচ্ছিলো, তার পাশেই ফারহান আর তার বন্ধু রা বসে ছিলো, ওর বন্ধু রোহান মিতুকে দেখতে পেলো।
আর ফারহান কে বললো
—- দোস্ত
—– ভাবি আসতেছে
—— কোথায়😗
—— সামনে তাকা
রোহানের কথা শুনে ফারহান সামনে তাকালো আর মিতুকে দেখে আবার চোখ দুটো মিতুতে আটকে গেল, ও যেন আজ নতুন করে আবার মিতুর প্রেমে পড়ে গেলো।
ফারহান ভেবে পাচ্ছে না যে এই মেয়ের মধ্যে এমন কি আছে, ও যতবারই ওর সামনে আসছে মনে হচ্ছে আবার নতুন কোনো রুপে ওকে দেখছে, যতই দেখছে ততই যেন ওর মনের তৃষ্ণা আরোও বেড়ে যাচ্ছে।
মিতু আজকে সাদা আর হালকা গোলাপি মিক্সি একটা ত্রিপিচ পড়েছে, যাতে ওকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে।
ফারহানকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ওর বন্ধু রা বললো
—– দোস্ত, শুধু কি এভাবে তাকিয়েই থাকবে না তাকে মনের কথাটা বলবে, পরে দেখা গেল তুমি ওকে শুধু এভাবে দেখতেই থাকলে আর অন্য কেউ এসে তোমার পাখিকে নিয়ে উড়াল দেবে😀
—– ওই, চুপ কর তোরা। ও শুধু আমার। আর কেউ যদি ওর দিকে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করে তার এমন অবস্থা করবো না 😉
ওদের কথার মাঝেই মিতু আর দিনা ক্লাসে ঢুকে গেলো
—– এই যাহহ, চলে গেল।
—— হুহহহ, বেশি বিভোর থাকলে এভাবেই চলে যাবে, তাই তো বলছি সময় থাকতে সব বলে দাও।
—— বলবো তো অবশ্যই😆
তারপর ফারহান ওয়েট করতে থাকে কখন মিতুর ক্লাস শেষ হবে আর ও কখন বের হবে।
তারপর মিতু আর দিনা ও সবগুলো ক্লাস শেষ করে বেরিয়ে আসে, তখনই ফারহান এসে ওদের সামনে দাঁড়ায়।
—– হাই
—– আরে আপনি 🙂 কেমন আছেন
—- ওয়েল, তা আপনি কেমন আছেন 🙂
—– আমি ও ভালো☺
—— তা মিস…, আহহ, এই দেখুন আপনার নামটাই তো শোনা হলো না।
—– হা হা, আমি মিতু, আর আপনার নাম
—– মিতু, ওয়াও নাইচ নেইম, এনিওয়ে আমি ফারহান। তো আপনারা কি বাসায় যাচ্ছেন।
—– জি
—– ওওও, তাহলে আমার সাথে যেতে পারেন আমি ড্রপ করে দিচ্ছি 🙂
—– নো থাংকস, আমরা যেতে পারবো, আসছি বাই🙂
—– ওকে,বাই🙂
তারপর মিতু আর দিনা যে যার বাসায় চলে গেলো।
এভাবে কিছুদিন পার হয়ে গেল আর এর মধ্যে ফারহানের সাথে মিতুর সম্পর্কটা আগের থেকে অনেকটা এগিয়ে গেছে।
আর মিতুর আর ফারহানের এমন মেলামেশা দেখে একজন জলে পুড়ে ভোম হয়ে যাচ্ছে, সে হলো টিনা। বড়োলোক বাবার মেয়ে টিনা, খুব জেদি আর অহংকারি,মিতুর সাথে সেইম ইয়ারে পড়ে, স্টুডেন্ট হিসেবে খুব একটা ভালো না, কিন্তু বাবার টাকার জোরে কোনোরকমে ক্লাসে ওঠে।
ওহো ফারহানকে ভালোবাসে, অবশ্য সেটা ওর ভালোবাসা নাকি মোহ, সেটা ওই ভালো জানে।
কিন্তু ও কিছু তেই মেনে নিতে পারছে না যে, ফারহান ওর সামনে মিতুর সাথে এভাবে মিশবে, কারণ ও ফারহান কে প্রোপজ ও করেছিলো কিন্তু ফারহান ওকে রিজেক্ট করেছিলো, এজন্য ওর জেদ টা আরো বেশি।
তাই ও কিছু তেই ফারহানের সাথে মিতুর সম্পর্ক ঠিক থাকতে দেবে না, তাই ও খুব চেষ্টা করছে ওদেরকে আলাদা করার।
সেদিন মিতুর ক্লাস শেষ করে বেরিয়ে আসে তখন ফারহানের সাথে দেখা হয়, আর ওদের কথা বলতে দেখে টিনা দূর থেকে রাগে ফুসতে থাকে।
ফারহান চলে যাওয়ার টিনা মিতুর সামনে আসে আর ওকে অনেক আজেবাজে কথা শুনায়।
—– এই যে, যতসব মিডিল ক্লাস ফ্যামেলির মেয়ে,বড়োলোকের ছেলে দেখলে লোভে চোখ চিকচিক করে ওঠে, তাই না।
—— মানে! কি বলতে চায়ছো তুমি।
—— হা হা হা, বুঝতে পারছো না, তাই না। এই যে তুমি ফারহান কে পটিয়ে ওকে বিয়ে করে ভিখারি থেকে রাজরানী হওয়ার সপ্ন দেখছো, আমরা বুঝি না ভেবেছো😏
—— মুখ সামলে কথা বলো, ফারহানের সাথে আমার এমন কোন সম্পর্ক নেই যে, যারজন্য তুমি এসব বলবে।
—– নেই! তাহলে ওর সাথে এতো কিসের মেলামেশা তোমার।
—— সেটা নিশ্চয়ই তোমার কাছে কৈফিয়ত দিতে যাবো না।
—— হ্যা, তা যাবে কেন। কি জানি বাবা, হয়তো আরো না জানি কি কি করেছো, তোমাদের মতো লো ক্লাস ফ্যামেলির মেয়েরা তো এসবের জন্য নিজের শরীর টাকেও বিলিয়ে দিতে পিছপা হয় না।
টিনার কথা শুনে মিতু নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারলো না, ও যেন কথা বলার শক্তি পাচ্ছি না, শুধু চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।
দিনা এতক্ষণ চুপ করে থাকলেও এবার আর পারলো না
—— কি যাতা বলছো তোমরা, মিতু ওরকম মেয়ে নয়, বরং তোমরা যে কথা টা বললে না, এটা তোমাদের দ্বারা সম্ভব মিতুর নয়।
——😈😈😈😈😈😈
—— আর কখনো যেচে পড়ে আমাদের সাথে এসব বলতে আসলে না, সেদিন বুঝতে পারবে আমরা কি জিনিস😠, চল মিতু।
বলে মিতুর হাত ধরে টেনে দিনা ওখান থেকে চলে আসে।
মিতু বাড়ি এসে কাউকে কিছু না বলে নিজের ঘরে যেয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়, আর বিছানায় শুয়ে কাঁদতে থাকে।
ও কিছু তেই মানতে পারছে না যে ওকে এসব কথা শুনতে হলো, আজ অবধি ওকে কেউ এরকম বাজে কথা বলেনি।
ও রাগে দুঃখে মনে মনে ঠিক করে নেয় যে ও আর কোনোদিন ফারহানের সাথে কথা বলবে না।
তারপর দু-তিন দিন কেটে যায়, মিতু একয় দিন কলেজে যায় নি।আর ওদিকে ফারহান মিতুকে না দেখতে পেয়ে পাগল প্রায় অবস্থা।
চারদিনের দিন মিতু দিনার সাথে ভার্সিটি যায়, মিতুকে দেখে ফারহান যেন তার দেহে প্রাণ ফিরে পায়।
ও ছুটে এসে মিতুর সামনে দাঁড়ায়। মিতু ফারহানের দিকে একবার তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নেই তারপর দিনার সাথে সামনের দিকে পা বাড়ায়।
কিন্তু তার আগেই ফারহান মিতুর হাত ধরে টান দিয়ে ওর সামনে এনে দাড় করাই আর বলে
—– কি হলো, আমার সাথে কথা না বলে কোথায় যাচ্ছো, আর এই তিন দিন কোথায় ছিলে,যানো তেমাকে না দেখে আমার কি অবস্থা হয়েছিল, আর আজ তুমি এসেও আমার সাথে কথা না বলে আমাকে ইগনোর করে চলে যাচ্ছো, ওয়াই ডেমেট।😡
—— কেন, আপনি কে হোন আপনার যে আপনার সাথে কথা না বলে যাওয়া যাবে না, সবকিছু আপনাকে কেন বলতে যাবো আমি 😠
——- মানে! মিতু কি হয়েছে তোমার। তুমি এভাবে কেন কথা বলছো আমার সাথে 😱
—— তো কিভাবে কথা বলবো, দেখুন আমার হাত ছাড়ুন আর আমাকে যেতে দিন, প্লিজ ডোন্ট ডিসর্টাব মি।
—– কি! আমি তোমাকে ডিসর্টাব করছি!!!!
—— হ্যা, করছেন, এবার আমার পথ ছাড়ুন।
——- ওকে, ফাইন। আজকের পর থেকে আর কেউ তোমাকে ডিসর্টাব করবে না, এতোদিন ভাবতাম তুমি ও হয়তো আমার ফিলিংস গুলো বোঝো বাট আই ওয়াজ রং, সরি এতোদিন তোমাকে ডিসর্টাব করার জন্য। ডোন্ট ওয়ারি, আজ থেকে আর করবো না, বাই।
এই বলে ফারহান ওখান থেকে চলে আসে আর মিতুও ও কাঁদতে কাঁদতে ওখান থেকে চলে যায়, কারণ ফারহান কে কষ্ট দিয়ে ওর ও যে খুব কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু ওর ও যে কিছু করার নেই।
ফারহান রাগে কলেজ থেকে বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে জোরে ড্রাইভ করতে থাকে, পিছনে থেকে ওর বন্ধুরা এতো ডাকে কিন্তু ও কারো কথা শোনে না।
মিতুও বাড়ি চলে আসে, কারণ ওর পক্ষে আজ চর ক্লাস করা সম্ভব নয়।
আর এদিকে এসব দূর থেকে দেখে টিনা তো খুব খুশি হয়, ওর মুখে ভেসে ওঠে শয়তানি হাসি।
.
.
.
.
চলবে………
…..
….
(রি-চেক করার সময় পায়নি, তাই সবাই ভুল- ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙂)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here