মায়ায় জড়ানো সেই তুমি পর্ব -২১

#মায়ায়_জড়ানো_সেই_তুমি
#পার্ট_২১
জাওয়াদ জামী

দুইদিন কদম তলীতে কাটিয়ে সাদিফ দুপুরের পর বেরিয়ে যায় ঢাকার উদ্দেশ্যে। তানিশারা আরও কয়েকদিন থাকবে তাই সাদিফ একাই যাচ্ছে। যদিও মেয়েকে রেখে যেতে তার খুব কষ্ট হচ্ছিল কিন্তু উপায় নেই ফিরতে তাকে হবেই। বেশ কিছুদিন যাবৎ নিয়মিত অফিস করতে পারছেনা। তাই বাধ্য হয়েই যাওয়া। অবশ্য সে সকাল থেকে এখন যাব, তখন যাব বলে সময়ক্ষেপণ করছিল। যখন তানিশা দেখল এই ভদ্রলোকের মতিগতি সুবিধার নয় তখন ও সাদিফকে বলে, হয় আজ সে থেকে যাক নয়তো বিকেলের আগেই বের হোক। কারন এখান থেকে বেড়োতে দেরি করলে ঢাকায় পৌঁছাতে রাত হয়ে যাবে। তানিশার কথা সাথে সাইরাও একমত হয়ে সাদিফকে তারাতারি রওনা দিতে বলে। সাদিফ ওদের কথা অমান্য না করে দুপুরের পর রওনা দেয়।

বিকেলে সাইরা, তিয়াসা, তৃষ্ণা, তানিশা মিলে গ্রামে ঘুরতে বের হয়। এদিকসেদিক ঘুরে মাগরিবের আজানের সময় বাড়ি ফিরে। মাগরিবের নামাজ আদায় করে আয়েশা খাতুন পিঠা বানানোর আয়োজন শুরু করেন। সাইরা উনার পাশে বসে মনযোগ সহকারে পিঠা বানানো দেখছে। মাঝেমধ্যে টুকটাক এটা সেটা জেনে নিচ্ছে। ওর মনে সাধ জেগেছে রাতুলের সাথে ঝামেলা মিটে গেলে তাকে নানানরকম পিঠা বানিয়ে খাওয়াবে। রাতুলের কথা মনে হতেই বুকের খাঁচায় একরাশ শূন্যতার অস্তিত্ব টের পায়।
দুচোখ ঝাপসা হয়ে আসে। সামনের চুলায় জ্ব*ল*তে থাকা গনগনে আ*গু*নও ঝাপসা লাগছে। অতি সন্তর্পনে ওড়ান কোনা দিয়ে চোখ মুছে। পুরুষেরা এমন কেন হয়! কেন নারীর মন বুঝতে পারেনা! দুনিয়ার কাছে তাদের সকল দ্বায়িত্ব, ভালোবাসা, প্রেম, মায়া, আবেগ উজার করে দিতে পারে ঠিকই কিন্তু তাদের নামে থাকা নিজস্ব নারীর প্রতি কেন এত উদাসীনতা! নিজ নামে একজন ব্যক্তিগত পুরুষ থাকার পরেও নারীরা কেন ভালবাসাহীনতায় ভুগে! চুলায় জ্বলতে থাকা গনগনে আ*গু*নে*র সাথে সাইরারও মনও জ্ব*ল*তে থাকে কষ্টের তীব্রতায়।
” মাগো, এই পিঠাডা খাওতো। খাইয়া কও কেমন লাগে। ” আয়েশা খাতুনের মিষ্টি সম্ভাষণে ভাবনার রাজ্য থেকে বের হয় সাইরা। ওর সামনে বাটিতে রাখা কয়েকটা পিঠা। একটা পিঠা তুলে মুখে দিতেই ভালো লাগায় মনটা ছেয়ে যায়। কি চমৎকার স্বাদ!
” খালাম্মা, এই পিঠার নাম কি? খুব মজার হয়েছে। আমি কখনো এত স্বাদের পিঠা খাইনি। ইনফ্যাক্ট আপনার তৈরী সব পিঠাই মজার। ”
” এই পিঠার নাম লবঙ্গ লতিকা। তুমি আরেকটা খাওতো মা। ”
সাইরা আরেকটা পিঠা হাতে নেয়।

তূর্ণাকে ঘুমিয়ে দিয়ে ওর পাশে শুয়ে আছে তানিশা। আজ ঘুমেরা কিছুতেই ধরা দিচ্ছেনা। এ যেন অসহ্য অনুভূতি। চোখভর্তি ঘুমের রাজ্য নিয়ে শুয়ে আছে অথচ মন-মস্তিস্ক বলছে তুই ঘুমাস না। বারবার সাদিফের কথা মনে হচ্ছে। লোকটা পাশে থাকলে কতইনা দুষ্টুমি করে। তানিশা বাজে ভাবে সেই দুষ্টুমিগুলো মিস করছে। কিন্তু সেই লোকটারই কোন খবর নেই । ঢাকায় পৌঁছেই নাকি অফিসে ঢুকেছে! বলেছে বাসায় গিয়ে ফোন দিবে কিন্তু এখনো কোন ফোন আসেনি। তানিশা যখন নানান ভাবনায় ডুবে আছে ঠিক তখনই রাতের নিস্তব্ধতাকে চূর্ণ করে বেজে ওঠে মোবাইল। আলোআঁধারি বিছানা হাতড়ে ফোন নিয়ে দেখল সাদিফের নাম।
” বউ, কিছুক্ষণ আগে বাসায় এসেছি। এরপর ফ্রেশ হয়ে তোমাকে ফোন দিয়েছি। আমার প্রিন্সেস কেমন আছে? ও কি ঘুমিয়েছে? তোমাদের ছাড়া আমার ভালো লাগছেনা। রুম, বিছানা একদম ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। ” তানিশাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সাদিফের সরল স্বীকারোক্তি। তানিশার নিজেরও ভালো লাগছেনা। কিন্তু সে সাদিফকে বুঝতে দেয়না।
” খেয়েছেন আপনি? নাকি না খেয়েই শুয়েছেন? ”
” হুম, খেয়েছি। শ্বাশুড়িমার দেয়া পিঠা, পায়েসের কিছুটা অফিসে নিয়েছিলাম। কয়েকজন মিলে সেগুলো খেয়েছি। খুব টেষ্টি ছিল। ”
” এখন কিছু খাননি! না খেয়ে ঘুমাবেননা কিন্তু। ”
” ঘুম আসলে তো ঘুমাব। এই, তুমি এখনও ঘুমাওনি কেন! নাকি আমার মতই আমাকে মিস করছ? সত্যি করে বল। ” সাদিফের গলায় দুষ্টুমির আভাস। তানিশা একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়, কি জবাব দিবে সে। বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টার পরেও কোন জবাব খুঁজে পায়না।
” আমার বউ দেখি লজ্জা পেয়েছে! ও বউ, বলনা ঘটনা কি? আমাকে কতটুকু মিস করছ? ” সাদিফ নাছোড়বান্দার ন্যায় করছে। বাধ্য হয়ে তানিশা বলে, ” অনেক মিস করছি আপনাকে। কিছুই ভালো লাগছেনা। ” ব্যাস সাদিফকে আর পায় কে। শোয়া থেকে লাফ দিয়ে উঠে বসে।
” বউ কয়েকঘন্টা অপেক্ষা কর, আমি আসছি। আমার একটামাত্র বউ আমাকে মিস করছে আর এখন তার পাশে আমি থাকবনা এটা হতেই পারেনা। বউয়ের সব কিছু ভালো রাখার দ্বায়িত্ব আমার। ” সাদিফের কথায় বুক ধক করে উঠে। সে সত্যি সত্যিই আসবে নাকি!
” এই, কি বলছেন আপনি এসব! এত রাতে আসবেন মানে! রাত বারোটা বাজে এখন! এই রাতে কোথাও বেরোবেননা বলে দিলাম। সারারাত আমাকে দুশ্চিন্তায় রাখার মতলব করছেন আপনি। চুপচাপ শুয়ে পড়ুন। ” তানিশার ধমক খেয়ে চুপসে যায় সাদিফ।
” একটু যাইনা, গেলে কি হয়! আচ্ছা এখন থাক কাল সকালে আসি? ”
” আপনি না আজই গেলেন। এভাবে অফিস ফাঁকি দিলে এমপ্লয়িরা কি শিখবে তাদের সিইও’র কাছ থেকে। আর এখানে সবাইকে জি জবাব দিবেন! সবাই হাসাহাসি করবেনা। ”
” তুমি সবার হাসাহাসির চিন্তায় চিন্তিত আমার কথা একবারও ভাবলেনা! আমি যে তোমাকে ছাড়া শেষ হয়ে যাচ্ছি, তার বেলায় কি! খুব নি*ষ্ঠু*র তুমি। ” তানিশা হাসতে থাকে সাদিফের কথা শুনে। কিন্তু ও বেশ বুঝতে পারছে সাদিফের কষ্ট। তবুও করার কিছুই নেই। এতরাতে কিছুতেই সাদিফকে কদম তলী আসতে বলতে পারেনা। বেশ কিছুদিন থেকেই নিয়মিত অফিসও করছেনা সে। তাই তানিশার এই কঠোরতা।
দু’জন মিলে আরও অনেকসময় ধরে কথা বলে।

দেখতে দেখতে সাতদিন কেটে যায়। তানিশা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওরা ঢাকা ফিরবে আগামীকাল। সাইরাও বলছে ফিরে যাওয়ার কথা। ওদের যাওয়ার কথা শুনেই সবার মন খারাপ হয়ে গেছে। আয়েশা খাতুন কাঁদছে। তানিশার দাদিও কেঁদেই চলেছে। তাদের একটাই কথা, কতদিন পর আসল আর পনেরটা দিন থাকবেনা। কিন্তু তানিশা নিরুপায়। সাদিফ প্রতিদিনই আসার জন্য পাগলামি করে। সারারাত নিজেও ঘুমায়না আবার তানিশাকেও ঘুমাতে দেয়না। এভাবে চলতে থাকলে সে অসুস্থ হয়ে যাবে। তাই তানিশা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাইরার সাথে মিলে তানিশা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাদিফকে সারপ্রাইজ দিবে। তাই তারা কেউ সাদিফকে জানায়না যাওয়ার কথা।
তালিব শেখ পাশের বাজার থেকে প্রাইভেট কার ভাড়া করেছে ওদের যাওয়ার জন্য।
আগামীকাল সকাল এগারোটার দিকে গাড়ি আসবে। সাইরা চায় তিয়াসাকে ওদের সাথে ঢাকা নিয়ে যেতে। এখন তিয়াসার ভার্সিটি বন্ধ। তৃষ্ণাকে নিতে চেয়েছিল কিন্তু ওর সামনে পরিক্ষা তাই যেতে পারবেনা। তালিব শেখকে রাজি করিয়েছে সাইরা। ওরা গোছগাছ শুরু করে। আর আয়েশা খাতুন শুরু করেন মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে কি কি পাঠাবেন তার লিষ্টের আয়োজন।
সন্ধ্যায় দেখা গেল তিনি নিজের জমির পোলাওর চাল, ডাল, নানান সবজি, পুকুরের মাছ , বাড়ির হাঁস-মুরগি সব কেটে বেছে রেডি করেছেন। রাতে তৈরী করবেন পিঠাপুলি। সাইরা অবাক হয়ে দেখছে একজন মায়ের ব্যস্ততা। অথচ একদিন সে এইসব মানুষদের নিয়েও তানিশাকে কত কটু কথা শুনিয়েছে!
রাতে সাদিফের সাথে কথা বললেও তাকে ডাকা যাবার কথা জানায়না তানিশা। সাদিফ বলে আগামীকাল তার কনফারেন্স আছে একটা বিদেশি কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে। তাই সে খুব ব্যস্ত থাকবে। তাই রাতের আগে তার কোন অবসর থাকবেনা। দুজন আরো কিছুক্ষণ কথা বলে ফোন রাখে।

সকালে খাওয়ার পর ওরা রওনা দেয়ার তোড়জোড় করছে। আয়েশা খাতুন আরেকবার করে তার বেঁধে দেয়া জিনিসপত্র দেখে নিচ্ছেন সব ঠিকঠাক আছে কিনা। তানিশা ওর দাদির পাশে বসে আছে। ওদের দুজনের চোখেই পানি। দাদি ওকে বারবার করে বলছে আবার কিছুদিন পর আসার কথা। তানিশাও দাদিকে প্রতিশ্রুতি দেয় সে কিছুদিন পর আবার আসবে। গাড়ি এসে গেলে ওরা সবার কাছ থেকে বিদায় নেয়। আয়েশা খাতুন নাতনিকে বুকে জরিয়ে ধরে রেখেছেন সেই কখন থেকে। তৃষ্ণা জড়িয়ে রেখেছে তানিশাকে। তানিম ওর মায়ের কাছ থেকে তূর্ণাকে নেয়। সাইরার খুব খারাপ লাগছে এই মানুষগুলোর অসহায়ত্ব দেখে। মেয়েকে জন্ম দিয়েছেন, লালনপালন করেছেন, পড়াশোনা শিখিয়েছেন অথচ বিয়ের পর সম্পূর্ণ অন্যের জন্য নিজেকে চালিত করতে হয়! আরেকটা সংসারের মায়ায় নিজের পিতামাতার বাড়ি ছাড়তে হয়! আরেকটা সংসার আলোকিত করতে অনেকসময় নিজেই অন্ধকারে ডুবে যায়! সংসারের প্রতি থাকে কতইনা দায়বদ্ধতা! এসব ভাবতে ভাবতে নিজের মেয়েকে বুকের মাঝে আঁকড়ে ধরে। একদিন এই মেয়েও অন্যের ঘর আলোকিত করবে! ওর বুক শূন্য করে অন্যের বুকে বসত গড়বে! দীর্ঘশ্বাসের সাথে একটাই কথা বেরিয়ে আসে, ” হায়রে নারীজীবন! ”
অশ্রুসজল চোখে তানিশা বিদায় নেয়। সারাটা পথ মনমরা হয়ে থাকে।
ওদের বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে ছয়টা বেজে যায়।
কলিংবেলের আওয়াজ শুনে শায়লা চৌধুরী দরজা খুলে ওদের দেখেই অবাক হয়ে গেছে।
” বউমা, তোমরা আজ আসবে জানাওনি তো! ” তূর্ণাকে কোলে নিয়ে আদর করতে থাকেন।
” সারপ্রাইজ দিলাম মা। ”
তিয়াসা এসে সালাম দেয় শায়লা চৌধুরীকে। তিনি সালামের উত্তর নিয়ে প্রশ্নবোধক চোখে তাকান তানিশার দিকে। তানিশা বুঝতে পারে তিনি তিয়াসাকে চিনতে পারেননি।
” ও আমার বোন তিয়াসা। ”
শায়লা চৌধুরী এবার হেসে উঠে তিয়াসাকে একহাতে জড়িয়ে ধরেন।
” কি মিষ্টি দেখতে! একবারে যেন পুতুল! ” তিনি উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন। তিয়াসা উনার এমন স্বীকারোক্তিতে লজ্জা পায়।
” জানো মম, ও তো আসতেই চাইছিলনা। আমি জোড় করে সবাইকে রাজি করিয়েই তবে ওকে রাজি করিয়েছি। ” সাইরা সোফায় ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দিয়েছে।
তানিশা রহিমা খালার সাথে কুশল বিনিময় করে তাকে গাড়ির কাছে যেতে বলে। উনিও দৌড়ে যান বাইরে। দারোয়ান চাচা আর তিনি মিলে ধরাধরি করে সব প্যাকেট নিয়ে আসেন। শায়লা চৌধুরী তানিশাদের গাড়ির ড্রাইভারকে বাইরের রেষ্টরুমে উঠতে বলেন। তারা রেষ্ট নিয়ে খাওয়াদাওয়া করে তবেই যাবে।
তানিশা শ্বশুরের কাছে আসে তিয়াসাকে নিয়ে। কিছুক্ষণ দুই বোন মিলে শ্বশুরের পাশে বসে থাকে। তূর্ণাও দাদুর গলা জড়িয়ে কোলে বসে আছে। সাইরা এসে বাবার সাথে দেখা করে গেছে।
কিছুক্ষণ রেষ্ট নিয়ে তানিশা রান্নাঘরে যায়। নিচে এসে জানতে পারে তাদের গাড়ির ড্রাইভার খেয়েদেয়ে রওনা দিয়েছে। তাদের ফিরতে রাত হবে তাই দেরি করেনি।
রান্না শেষ করে রুমে এসে দেখে তিয়াসা আর তূর্ণা মিলে খেলছে। নিরো,নোয়েলও আছে। ওদেরকে আদর করে গোসল করতে যায়।
রাতে সবাই একসাথে খেলেও তানিশা খায়না। সাদিফের অপেক্ষায় আছে সে।

সাদিফ অফিস থেকে ফিরে তানিশাদের দেখে অবাক হয়ে গেছে। ড্রয়িংরুমে তিয়াসা, তানিশা, সাইরা আড্ডা দিচ্ছে। সাদিফ এগিয়ে এসে তিয়াসার সাথে কথা বলে তড়িঘড়ি করে রুমে এসে দেখে তার মেয়ে ঘুমাচ্ছে। মনটা খারাপ করে ঘুমন্ত চুমু দেয়। আজ আর মেয়ের সাথে খুনসুটিতে মেতে উঠা হবেনা। ফ্রেশ হয়ে নিচে নামে। ওর জন্য খাবার নিয়ে বসে আছে তানিশা।
সাদিফ খেতে বসে সাইরা, তিয়াসাকেও খেতে ডাকলে ওরা জানায় ওদের খাওয়া শেষ।
সাদিফ খাবার পর কিছুক্ষণ ওদের সাথে গল্প করে।

তানিশা নিচের সব কাজ সেরে রুমে আসতেই কেউ হ্যাঁচকা টানে বুকে জরিয়ে ধরে। তানিশা শরীরের গন্ধেই বুঝে যায় সে কে।
” বউ আমাকে এভাবে সারপ্রাইজ দিবে ভাবতেই পারিনি। কিযে শান্তি লাগছে। চারদিকে আজ শান্তি শান্তি গন্ধ। ” তানিশার গলায় ছোট ছোট চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে সাদিফ।
” কই, আমিতো শান্তি শান্তি গন্ধ পাচ্ছিনা। আচ্ছা শান্তির গন্ধ কেমন হয়? ”
” সে তুমি বুঝবেনা। এটা এমন এক জিনিস যা দেখা যায়না শুধু অনুভব করতে হয়। ”
” আমার জামাইয়ের অনুভূতি একটু বেশিই মনে হয়! এত অনুভূতি নিয়ে থাকেন কেমন করে শুনি ? ”
” আমার অনুভূতিদের আশ্রয়স্থলই তো তুমি। আমার সকল আবেগ, অনুভূতি তোমাতে বিরাজমান। যা কিছু আমার, সবই তোমার। তোমাতেই আমি পূর্ণ। ” মাদকতায় জড়ানো গলা সাদিফের।
উফ, এত নেশা কেন এই গলার স্বরে! যা তানিশাকে পাগল করে দেয়। এত শিহরণ জাগায় কেন এই মানুষটার ছোঁয়া! এত আদরে মাখা কেন হাসি! তানিশা আজ এই রাতে কিছু বলার ভাষা হারিয়েছে। ওর সকল অনুভূতিরা জড়ো হয়েছে শরীরের প্রতিটি কোনায়, প্রতিটি লোমকূপে। আজ বাধ্য সে এই মানুষটার ছোঁয়ায় সাড়া দিতে। আজ বাধ্য সে নিজেকে সমর্পন করতে।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here