#কুঞ্জছায়া
#কুঞ্জা_কাবেরী
#পর্ব১৭
(কপি করা নিষেধ)
সময় স্রোতের ন্যায় চলতে থাকে।সময়ের স্রোতের মতোই মানুষের জীবন বহমান।দেখতে দেখতেই পরীক্ষা প্রায় শেষের পর্যায়ে আর মাত্র একটা পরীক্ষা বাকি।
এক্সাম হলে গিয়ে নিজের সিটে বসে ছায়া।কাল বেশ রাত অবধি পড়েছে সে।তাই আজ একটু মাথাটা ধরা।ঘুম মাত্র ২ ঘন্টা হয়েছে।অহনা ক্লাসরুমে প্রবেশ করেই একবার তীক্ষ্ম দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ছায়ার পানে।ছায়া দেখেও যেমন দেখলো না।বেল বেজে গিয়েছে।বেল বাজতেই অরন্য রুমে প্রবেশ করে খাতা আর প্রশ্ন হাতে নিয়ে।ছায়ার কেন জানি অস্বস্তি লাগছে।অরন্যের সাথে সেইদিনের পর আর কথা হয়নি। প্রায় পনেরো দিন হতে চললো।
অরন্য রুমে প্রবেশ করেই ছায়ার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো।মেয়েটা কি রাতে ঘুমায় না।আজ কেমন জানি কিঞ্চিৎ অসুস্থ লাগছে।একদমই নিজের যত্ম নেয় না।এইটা ভাবতেই অরন্য একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।মেয়েটা তার কথা শুনবেও না।তার এখন থেকে আরও কঠোর হতে হবে।যদি একটু ভয় পাইয়ে কথা শুনানো যায়।ক্লাসে আসতেই সবাই দাঁড়িয়ে সালাম দিলো।
অরন্য সালামের জবাব দিয়ে বললো,
-আজ আমি আপনাদের গার্ড দিবো।তাই ভুলেও ক্লাসে টু শব্দ করার সাহস দেখাবেন না।আমার চোখে পড়লে তাকে আর পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না।
সবাই বেশ ভয় পেলো।অরন্য এক কথার মানুষ সবাই জানে।তার কথার হেরফের হয় না।তাই সবাই অরন্যের সাথে সম্মতি জানালো।
সবাই ক্লাসে অরন্যের কথা মেনেই পরীক্ষা দিচ্ছিলো।কিন্তু হঠাৎই অরন্য এসে ছায়ার পাশে এসে দাঁড়ায়।
অরন্য পাশে এসে দাঁড়াতেই ছায়ার হাত থেমে যায়।অস্বস্তির কারনে সে লিখতে পারছে না আর বলতেও পারছে না অরন্যকে সরে দাঁড়াতে।
অরন্য বুঝতে পেরে গিয়ে সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। আর তখনই অরন্য বেশ শান্ত আর ভয়ংকর স্বরে এক ছেলেকে বলে উঠে,
-স্টপ রাইটিং। আউ সেইড স্টপ রাইটিং।
ছেলেটি বুঝতে পেরে কাপা শুরু করলো।আজ তাকে আর পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না বুঝলো।
-প্লিজ স্যার আর কখনো হবে না।এইবারের মতো মাফ করে দিন।
-আরেকজনের থেকে কপি করার সময় মনে ছিলো না।আপনারা কোথা থেকে আসেন বলেন তো। কপি করে করে পাশ করে মানুষের কোন রোগের চিকিৎসা করবেন? এইটা মানুষের জীবন মরনের বিষয়।ডাক্তারি পড়া কোন ছেলে খেলা না।
ছেলেটা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।তার সামনের বন্ধুর থেকে একটা প্রশ্নের উত্তরর জানতে গেলেই তার বন্ধু শব্দ না করেই খাতা খুলে দিলে সে সেইটা দেখে লিখতে থাকে। আর এইটা অরন্যের চোখে পড়ে যায়।
অনুনয় করে আর লাভ হবে না তাই সে অরন্যকে খাতাটা দিয়ে দিলো।
পরীক্ষার আর বেশি সময় ছিলো না।১৫ মিনিট বাকি ছিলো।তাই ছেলেটার ফেইল করার চান্স নেই এইটা ভেবেই স্বস্তি পেলো। পুরো ক্লাস জুড়ে নীরবতা।
পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে ছায়ার ১০ মিনিট আগেই।তাই সে খাতা জমা দিয়ে মাঠে গিয়ে অপেক্ষা করছে নীলা আর মেঘার জন্য।
ঠিক তখনই কেউ একজন ছায়াকে ডাকে।ডাকটা শুনেই ছায়ার অন্তরাত্মা কেপে উঠে।ছায়া ক্ষণপ্রভার ন্যায় পিছনে তাকায়।এতো বছর পর সে কেন এলো।আবার তার জীবনটাকে এলোমেলো করে দিতেই কি তার আগমন?
-কেমন আছো সুন্দরী? দাঁত গুলো বের করে একটা শয়তানি হাসি দিয়ে আহান জিজ্ঞেস করে ছায়াকে।
হাতের ফুলগুলো ছায়ার দিকে বাড়িয়ে বলে,
-কতো বছর তোমাকে দেখি না।তাই তোমাকে সারাজীবন আমার কাছে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছি।তোমার মনও নিশ্চিয় ছটফট করছে আমার কাছে যাওয়ার জন্য।
ছায়ার শরীর রি রি করে উঠলো রাগে।তার অতীত ধ্বংস করে এখন আবার তার বর্তমান জীবনটাকে শ্মশান বানাতে এসেছে। এইবার ছায়া ছাড়বে না। প্রতিশোধ নিবে।
ছায়া রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলার উপক্রম। আহানের হাতের ফুলগুলো নিয়ে ছিড়ে আহানের মুখের দিকে ছুড়ে দিয়ে বলে,
-আমি আগের ছায়া নই।এইবার লাগতে এসো না।খুব খারাপ হয়ে যাবে।
আহান বেশ মজা পেলো।
-চলো আমরা একটা রেস্টুরেন্টে বসে প্রেম করি।এইটা বলেই ছায়ার হাত ধরতে নিলেই ছায়া ঠাস করে একটা থাপ্পর মারে আহানের গালে।
অপমানে আহানের মুখ লাল হয়ে গেলো।থমথমে মুখে ছায়াকে বললো,
-আজ আমি চলে যাচ্ছি।আবার আসবো।অপমানের হিসাবটা বিয়ের পর নিবো।
ছায়া তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে,
-আমার লাশও তোর মতো জানোয়ারকে বিয়ে করবে না।
আহান একটা হাসি দিয়েই চলে গেলো।
আহান চলে যেতেই ছায়া ধপ করে মাঠে বসে পড়ে।অন্যদিকে পরীক্ষা শেষ হতেই অরন্য করিডোরে দাঁড়িয়ে আহানের সাথে ছায়াকে কথা বলতে দেখছিলো যা তার গায়ে বেশ লাগে।
নীলা আর মেঘা দৌড়ে আসে ছায়ার দিকে।তারা ছায়ার সাথে নিচে বসে পড়ে ছায়াকে জিজ্ঞেস করতে থাকে কি হয়েছে।ছায়া শূন্য দৃষ্টিতে তাকায় তাদের দিকে।ছায়ার কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না।তার শান্তুি চাই।একটু শান্তি।
অরন্য আসে ছায়ার কাছে।ছায়া নিচে তখনো বসে ছিলো।অরন্য নীলা আর মেঘাকে বলে,
-নীলা আর মেঘা আপনারা চলে যান বাসায়।আমার ছায়ার সাথে দরকার আছে।
নীলা আর মেঘা রাজি হচ্ছিলো না। তাদের মন সায় দিচ্ছে না কিন্তু মেঘা কিছু একটা ভেবেই নীলাকে নিয়ে গেইটের দিকে এগোয়।আজ মেঘা নীলার সাথে যাবে তাদের ফ্লাটে।
-উঠুন মিস ছায়া।আসুন আমার সাথে।আপনার সাথে বিশেষ দরকার আছে।
তেজের সাথে ছায়া সাথে সাথেই উত্তর দেয়,
-যাবো না আমি আপনার সাথে।চলে যান এইখান থেকে।ছায়ার কন্ঠে অগ্নি ঝরছে যেনো।
অরন্য আর ছায়ার সম্মতির আশা করলো না।
ছায়ার একহাত ধরে টানতে টানতেই নিয়ে যায় অরন্যের গাড়ির দিকে।ছায়াকে গাড়ির কাছে এনেই ছায়াকে বসতে বলে।ছায়া নাকোচ করে দেয়।সে যেতে রাজি না কোনভাবেই।অরন্য ছায়াকে জোর করেই গাড়িতেই বসালো।
ছায়া কাদঁতে লাগলো।তার উপর সবাই কেন জোর জবরদস্তি করবে।হুয়াই?
ছায়াকে অরন্য নিয়ে গেলো একটা নদীর পাড়ে।ছায়া সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে পরোখ করলো সব।তাকে এই খানে কেনো আনলো অরন্য।অরন্য তার সাথে উলটা পালটা কিছু করবে না এতটুকু জানে।
ছায়ার নিজেরও মনে হচ্ছে সব ক্লিয়ার করা উচিৎ। আর কতোদিন এইভাবে?
#কুঞ্জছায়া
#কুঞ্জা_কাবেরী
#পর্ব১৮
(কপি করা নিষেধ)
….
-বলুন কি কথা।আমায় বাড়ি যেতে হবে গাড়ির ভিতর থেকেই ছায়া জানতে চাইলো।
অরন্যের যেনো আজ ধৈর্যের বাধ ভেঙে যাচ্ছে।এই মেয়েটার জন্য সে দেশ,পরিবার সব ছেড়েছিলো।তবুও মেয়েটার মনে একটু জায়গা করতে পারেনি।সে কি এতোটাই তুচ্ছ?
-আমাকে কেনো ভালোবাসলেন না ছায়াকরী? এই যে আমার হৃদয়ে বাসনার তীব্র বহ্নিশিখা জ্বলছে।আমি যে পুড়ে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছি।পরে কিন্তু সেই ছাই কোন এক দমকা হাওয়া উড়িয়ে নিয়ে যাবে বহুদূর।আফসোস বিহীন কিছুই রইবে না।
ছায়া নির্লীপ্ত,কম্পনহীন। তার ভিতরে যেনো কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাচ্ছে।খুব গোপনে তার শুণ্য হৃদয়ে হাহাকার জেগে উঠলো।
এতোদিন এই ভয়টাই পাচ্ছিলো।অরন্য এতোদিন ছায়াকে অরন্যের উপস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াচ্ছিলো।মানিয়ে নিচ্ছিলো।আজ আহানের সাথে ছায়াকে দেখে অরন্যের যেনো ধৈর্যের বাধ ভেঙে গেলো।এইবার অরন্যকে সামলানো মুশকিল হবে।একমাত্র প্রাণ ভাইয়া পারে সব আটকাতে।প্রাণ ভাইয়াকে যে করেই হোক ফোন দিতেই হবে।ছায়া বিচলিত হয়ে হাতড়ে ব্যাগ থেকে ফোন বের করলো। যেই না ফোন দিতে যাচ্ছিলো
অরন্য তৎক্ষনাত ছায়ার ফোনটা নিয়ে সুইচড অফ করে দিলো সাথে নিজের ফোনটাও।
এইবার ছায়া ঘাবড়ে গেলো।
-আমাকে নামিয়ে দিন।লক খুলোন গাড়ির।আমি একাই চলে যাবো।আমি অনুভূতি শুন্য।আগেও বলেছি এখনও বলছি আমাকে একা ছেড়ে দিন।আমার পিছনে সময় কেন নষ্ট করছেন?
-আচ্ছা তাই? আপনি অনুভূতি শুন্য?দেখি তো একটু।
অরন্যের হাবভাব একদম ভালো ঠেকছে না ছায়ার।
ছায়া ডোর খুলার চেষ্টা করলো।
অরন্য ছায়ার কাছে আসলো।মুখোমুখি হলো।ছায়ার মুখের উপর তপ্ত নিঃশ্বাস পড়ছে।ছায়া শিহরিত হলো।অসস্থির মাত্রা ক্রমে বাড়লো। বুকের ভিতর হাপরের ন্যায় উঠা নামা করছে।অরন্য আরো কাছে গেলো ছায়ার।ছায়া হাত দিয়ে সরাতে চাইলো অরন্যকে।অরন্য ছায়া হাত দুটো ধরে পিছনের সিটের সাথে আকড়ে ধরলো।এরপর ছায়ার মুখের উপর ফু দিলো।গলার কাছে খুব কাছে মুখ নিলো।সেইখানেও একটা সুদীর্ঘ ফু দিলো।ছায়াকে নতুন অনুভূতির সাথে পরিচয় করাচ্ছে।কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,
-কে বললো আপনি অনুভূতিহীন এই যে আমার ভিতর যা হচ্ছে আপনার ভিতরেও তা হচ্ছে।বন্য অনুভূতিরা রক্তের প্রতি শিরায় শিরায় চলাচল করছে।এই যে দেখুন আমার হার্ট বিটের আওয়াজ।ছায়াকে অরন্যের বুকের কাছে নিয়ে গেলো।ছায়ার কান অরন্যের সুঠাম বক্ষের সাথে চেপে ধরলো।ছায়া অরন্যের হৃদপিন্ডের ধুক পুক আওয়াজ বেশ শুনতে পাচ্ছে।এইবার অরন্য নিজের কান ছায়ার হৃদপিন্ডের কাছে নিতেই ছায়া চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে নেয়।নিঃশ্বাসের মাত্রা না চাইতেও তীব্র হতে তীব্রতর হচ্ছে।ছায়া আর নিতে পারছেনা।অরন্য বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনতে লাগলো প্রিয়তমার হৃদপিন্ডের লাব ডাব ধ্বনি।
ছায়া হাত দুটো ছাড়াতে চাইছে যতই ততই যেন অরন্য শক্ত করে ধরলো তার হাত।অরন্যের নজর যায় ছায়ার তিরতির করে কম্পনরত ঠোঁটের দিকে।অরন্য একবার ঢোক গিললো।আজ যদি সে একটু অবাধ্য হয় খুব বেশি ক্ষতি হিয়ে যাবে?প্রিয়তমা অধরসুধার অমৃত সে একটু হলেও পান করতে চায়।তাতে তার মৃত্যু হলেও সানন্দে গ্রহণ করবে।
ছায়া অরন্যকে ডাকলো,তাকে ছাড়তে বলো।অরন্য যেনো নিজের মধ্যেই নেই।তার চোখে মুখে অন্যরকম নেশা।মাদকতাপূর্ণ এই চোখ দুটির সেই চাহনি সে আর নিতে পারছে না।এইটা কেমন দমবন্ধকর করা অনুভূতি? সে মুক্তি চায়।হতপ্রায় ছায়া বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো।
-আমাকে ছেড়ে দিনননন প্লিজজজ
ছায়ার দ্রুততম নিঃশ্বাসের সাথে পাল্লা দিয়ে তার বক্ষ উঠা নামা করছে।অরন্য সেই দিকে একবার তাকিয়ে মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে ফেললো।সে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যাচ্ছে।চোখ বন্ধ করে বুক ফুলিয়ে একটা শ্বাস নেয়।নাহ আর পারছে না।
ছায়াকে অরন্য ছাড়তেই ছায়া সজোরে অরন্যকে থাপ্পড় মারে।
অরন্য এই প্রিয়তমার সমস্ত আঘাত সয়ে নিতে পারবে।সেই রাতে তার বুকের বাম পাশে বেশ যত্ন করে আঘাত করতে দিয়েছিল ছুরি দিয়ে।এই থাপ্পড় তার গায়েই লাগেনি।সে হাসে ঠোঁট এলিয়ে।ইশশ কতো টুকু দুঃখ মিশে আছে সেই হাসিতে।ব্যথাতুর তার চাহনি।
ছায়া ঠোঁট কামড়ে কান্না থামানোর বৃথা চেষ্টা চালায়।
-আমাকে মুক্তি দিন ডক্টর অরন্য চৌধুরী।আমি যে আর সইতে পারছি না।
অরন্যের বেশ রাগ হলো এইবার।এই মেয়েটাকে সে ভালোবাসে।ছায়া যেইদিন বলবে সেইদিনই তাকে সসম্মানে পুরো শহর জানিয়ে তার প্রনয় রাজ্যের রানী বানিয়ে নিয়ে যাবে।
ছায়া কি করে বলবে তার ভয়ংকর অতীতের কথা।ছায়া এইবার নিজেই চলে যাবে।আগের বার অরন্য গিয়েছিলো এইবার ছায়া যাবে।ছায়া এইবার অরন্য ডাকলেও আসবে না। আগে এইখান থেকে বেরোতে হবে।
-আপনি যা চেয়েছিলেন তা পেয়েছেন।এইবার আমাকে যেতে দিন।
-আমি আপনাকে চেয়েছি ছায়াকরী। আমি পেলাম কোথায় আপনাকে?দিয়ে দিন আপনাকে। দেখে নিয়েন খুব যত্নে আগলে রাখবো।ধরণীর স্বর্বসুখ আপনার ঐ দুটো চরণে এনে দিবো।
ছায়া কি করবে এইবার। কতোবার ফিরিয়ে দেবে এই ভয়ংকর প্রেমিককে?
ছায়া গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো।চারিদিকে সুনসান নীরবতা।
-আহান কেনো এসেছিলো?
-আহান আসলে আপনার কি?
অরন্য এইবার বিনা বজ্রপাতে হুংকার ছুড়লো ছায়ার দিকে,
-কেন এসেছিলো জানতে চাইছি।
ছায়া অনেক শান্তস্বরে জবাব দিলো,
-আমরা বিয়ে করছি।
অরন্য যেন কিছু মুহুর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেলো।কর্ণগহ্বরে যেনো কেউ গলিত সীসা ঢেলে দিয়েছে।মনের কোণে জ্বলে উঠলো বহ্নির মশাল।
আর কিছু না বলেই গাড়ি স্টার্ট দিলো।
….
নীলা বারবার ঘড়ি দেখছে।চার ঘন্টা হয়ে গেলো এখনও ছায়ার কোন খবর নেই।মেঘা ছায়ার আসা অবধি অপেক্ষা করছে।বাসায় গিয়ে শান্তি পাবে না।অস্থির লাগবে।নীলা আর মেঘা বেশ চিন্তায় পড়ে গেলো।
-অরন্য ভাইয়া এইবার আবার আগের মতো হয়ে গেলে বেশ ঝামেলা পোহাতে হবে ছায়াকে।এইবারতো আমরা কেউই দমাতে পারবো না।ভাইয়া সেই ফাইনাল ইয়ারে থাকতে এমন করতো।
মেঘা বেশ চিন্তিত হয়ে বললো।
নীলাও কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছে না কি করবে।প্রাণ ভাইকে একটা কল দিলে কেমন হয়?
নীলা তৎক্ষনাত প্রাণকে কল লাগায়।দুইবার রিং হয়ে থেমে গেলো।অপর পাশ থেকে রিসিভ হলো না।নীলা কি করবে বুঝতে পারছে না।
ঠিক ১০ মিনিট পর প্রাণ ব্যাক করে নীলা সাথে সাথে ফোন ধরে উদ্বিগ্ন স্বরে প্রাণকে সব খুলে বলে।
-তুমি এখন আমাকে বলছো এতো কিছু হবার পরে?
-ভাইয়া আমরা কি করবো বুঝতে পারছি না।আসলে অরন্য ভাইয়া যে হঠাৎ করেই গায়েব হয়ে যাবে ছায়াকে নিয়ে ভাবতে পারিনি।আর ছায়ার ফোন অফ বলছে।
-আচ্ছা চিন্তা করো না। অরন্য ছায়ার কখনোই ক্ষতি করবে না।কোন ক্ষতি হতেও দিবে না।
ফোনটা কেটেই অরন্যকে ফোন দেয় প্রাণ।অরন্যের ফোন সুইচড অফ বলছে।প্রাণ চেম্বার থেমে বের হয়ে অভিককে ফোন দেয়।অভিক সলিমুল্লাহ মেডিকেলে আছে।সে এই খানেই জয়েন করেছে।প্রাণ ফোন দিয়ে সব বলতেই সে বেশ চিন্তায় পড়ে যায়।রাগের বশে ভুল স্টেপ আবার না নিয়ে নেয়।
প্রাণ অরন্যের লোকেশন ট্রেস করানোর চেষ্টা করলো। পাওয়া গেলো তাকে।সে ব্যাক করছে বুঝতে পারলো।এইবার ঘটনা অরন্য আসলেই বুঝা যাবে।
…
অরন্য ছায়াকে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিলো।কোন কথাই আর কেউ বললো না কারো সাথে।
#চলবে
(