কুঞ্জছায়া পর্ব ১৪+১৫+১৬

#কুঞ্জছায়া
#কুঞ্জা_কাবেরী
#পর্ব১৪
(কপি করা নিষেধ)
….
আজকে প্রাণকে দাওয়াত দিয়েছেন আজমির চৌধুরী স্বয়ং। বিশেষ তলব করেছেন।ছেলে যথেষ্ট বুঝদার হলেও বাবা মায়ের সন্তানের প্রতি দায়িত্ব থাকে।তাদের চিন্তা হয়।অরন্যের বিষয়ে কথা বলতেই প্রানের বিশেষ তলব।প্রান আজ যথেষ্ট ব্যস্ত হলেও আজমির চৌধুরীর কথা ফেলতে পারেনি।তাই আজ হাফডের ছুটি নিয়ে চৌধুরী বাড়ি হাজির।
আজমির চৌধুরী প্রাণকে বিশেষ তলব করলেও তিনি ইমারজেন্সি ওটিতে আটকে যাওয়ার জন্য প্রাণকে ১-২ ঘন্টা অপেক্ষা করতে বললেন ফোন দিয়ে।

এইদিকে অনন্যা আজ বেজায় খুশি।মেয়েদের শাড়ি পড়লে নাকি বড় বড় লাগে তাই সে মনে মনে ঠিক করলো আজ সে শাড়ি পড়বে।কিন্তু শাড়িতো তার নেই।আর শাড়ি পড়তে পারে না।সে কিছুক্ষণ ভাবলো।
কিছু একটা ভেবেই মায়ের রুমের দিকে দৌঁড় দিলো।

– মাম্মাম আজকে আমার একটা বান্ধবীর জন্মদিন।সবাই একসাথে প্ল্যান করেছি শাড়ি পড়বো।কিন্তু আমার তো শাড়ি নেই আর আমি পড়তেও পারি না।

জেসমিন বেগম বেশ অবাক হলেন।এই মেয়ে পড়বে শাড়ি! যে মিনিটে মিনিটে রাস্তায় হোঁচট খায়।কোনদিন শাড়ির নাম নেয়নি আজ হঠাৎ করে শাড়ি পড়বে!
তাই তিনি বললো,

-বান্ধবীর জন্মদিন আগে বলিসনি কেন?আকাশকে অথবা তোর বাবাকে একটা গিফট কিনে আনতে বলতাম।এখন কার সাথে মার্কেটে যাবি? আর শাড়ি সামলাতে পারবি এইটুকুন মেয়ে?

অনন্যা তার কথার স্থির।সে পড়বে মানে পড়বে শাড়ি।
তাই জেসমিন বেগম আর মেয়ের সাথে না পেরে আলমারি খুলে খয়েরি রঙের একটা জামদানি শাড়ি বের করলো।শাড়িটির পাড়টা লাল- সোনালি রঙের আর তাতে রয়েছে হালকা কারুকাজ।শাড়ি বের করে মেয়েকে সুন্দর করে পড়িয়ে দিলো নিজ হাতে।আর অনেকগুলা সেফটিপিন দিয়ে আটকে দিলো যাতে না খুলে যায়।শাড়ি পড়িয়ে জেসমিন বেগম যেমন থ মেরে বসে আছেন মুখে হাত দিয়ে।

-মেয়েটাকে শাড়ি পড়ে বড় বড় লাগছে।মেয়েটা কবে এতো বড় হলো!চোখেই পড়লো না।সময় কোন দিক দিয়ে চলে গেলো।সেইদিন না মেয়েটা হলো।একটু একটু করে কথা শিখলো,হাটা শিখলো।স্কুলে গেলো বাবার হাত ধরে,ভাইয়ের কাধে চড়তো,বাজারে গিয়ে এটা খাবে সেটা খাবে বলে কান্না জুড়ে দিতো,আকাশের সাথে দিনে হাজার বার ঝগড়া লাগে।

জেসমিন বেগম চোখে হাসলেন মেয়েকে দেখে।কাছে ডেকে হাতের কনিষ্ঠ আঙুল টেনে নখে কামড় দিয়ে বললেন,

-কারো নজর না লাগুক আমার মিষ্টি পরীটার।

তিনি মেয়েকে সাজিয়ে দিলেন মনের মতো করে।মাথায় একটা গাজরা পড়িয়ে দিলেন,হাতে চুরি,গলায় ক্রিস্টাল পাথরের মালা আর কানে ঝুমকা।ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক খয়েরি রঙের।এর পর মোবাইল বের করে ফটাফট কয়েকটা ছবি তুলে নিলেন বাবা আর ভাইকে দেখাতে হবে তো মেয়েটা আজ সাজলো কি সুন্দর লাগছে।

অনন্যার বেশ খুশি খুশি লাগছে।সে গিয়ে বসার ঘরে উঁকি দিলো।দেখলো প্রান মোবাইলের দিকে চেয়ে আছে।সে গিয়ে কিছুক্ষণ প্রানের আশেপাশে ঘুর ঘুর করলো।একি সে চেয়েই দেখছে না অনন্যাকে।

অনন্যা এইবার প্রাণকে ডাকলো।
– ভাইয়া শরবত খাবে? বানিয়ে দেই।

প্রান এইবারও তাকালো না তার দিকে।মোবাইলের দিকেই দৃষ্টি রেখে বললো,

– আরে পিচ্ছি।কেমন আছিস? শরবর আন্টি আসার সাথেই সাথেই দিয়েছে।আর খাবো না এখন।

অনন্যা বেশ হতাশ হলো।সে এতো কষ্ট করে কার জন্য শাড়ি পড়লো।অথচ সে তাকিয়েই দেখছে না।একটু দেখলে কি হয়।এই যে তার মা তার কতো তারিফ করছে।তাকে কি সুন্দর বলছে।এই সুন্দর এই প্রাণপুরুষ না দেখলে যে বৃথা যাবে। সে কিছুক্ষণ উঁকি ঝুকি দিলো প্রানের মোবাইলের দিলে।কিন্তু প্রাণ তাকালো না।
তাই সে আর কিছু না বলেই চলে গেলো নিজের রুমে।
জেসমিন বেগম প্রানের কাছে এসে বসলেন।

– বাবা তুই তো এখন ফ্রী আছিস।একটু অনুকে মার্কেটে নিয়ে যেতে পারবি।একটা গিফট কিনতো অনু।তার বান্ধবী এর জন্মদিন। একা ছাড়বো না আজ।আকাশ ভার্সিটিতে।অরন্য আর তোর আংকেল হসপিটালে।

-আন্টি আপনি চিন্তা করবেন না।আমি নিয়ে যাচ্ছি এই পুচকিকে।
জেসমিন বেগম নিশ্চিন্ত হলেন।ছেলেটাকে তার অনেক ভালো লাগে।সেই ছোটবেলা থেকে দেখছে।কতো ভদ্র আর বিনয়ী।কোন খারাপ অভ্যাস আজ অবধি চোখে পড়েনি।

অনন্যার এতোক্ষন মন খারাপ থাকলেও প্রানের সাথে যাবে শুনে মনটা বেশ ফুরফুরে হয়ে গেলো।
সে গিয়ে গাড়িতে বসলো আগেভাগেই প্রানের পাশে।সে প্রানকে ডাক দিয়ে বললো,

– ভাইয়া দেখো তো আমার লিপস্টিক নষ্ট হয়ে গিয়েছে নাকি।
এইবার প্রাণ চাইলো।কিন্তু কিছু বললো না।সেই দৃষ্টিতে কি ছিলো জানা নেই।
কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে গাড়ি চালাতে মনোযোগ দিলো প্রাণ।কিন্তু এইটুকু তাকানোতেই অনন্যা ব্যাপক লজ্জা পাচ্ছে।ইশশ তার গাল দুটো যে লাল হয়ে যাচ্ছে।
প্রান এইবার মুখ খুললো,

-কিরে প্রেম টেম করে বেড়াচ্ছিস নাকি রে? দেখে তো তাই মনে হয়।আবার কেমন যেনো তোর গাল টাল একদম লাল হয়ে যাচ্ছে।ব্যাপার কি রে?

অনন্যার এইবার মুখ চুপসে গেলো।সে প্রেম করে বেড়ালো কবে? এই মানুষটা ছাড়া সে কি আর কারো কথা ভাবতে পারে?উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করলো না। কিচ্ছুক্ষণ পরে গুনগুন করে অভিমানী গলায় গাইলো,
” তোমাকে বুঝি না প্রিয়
বোঝোনা তুমি আমায়
দুরত্ব বাড়ে যোগাযোগ নিভে যায়”

প্রাণ মুচকি হাসলো।সেও এলোমেলো কন্ঠে আওড়ালো,

” তুলনাহীনা জলের কিনার
তুলনাহীনা জলের কিনার
খয়েরী কুঁড়ির ফুল
সূর্য খুঁজে বেড়ায়”

অনন্যা যেন খুশিতে বিহ্বল হলো সেই সাথে অবাক, চমৎকার গায় তার প্রানসখা।মুখে চলে এলো এক টুকরা হাসি।জানালার বাইরে তাকালো এইবার।সব যেন মুহুর্তেই পালটে গেলো।সব এতো সুন্দর লাগছে কেনো তার কাছে।এই মুহুর্তটা থমকে যাক।
মানুষ প্রেমে পড়লে তার সব কিছুই ভালো লাগে।তার মনে শতরঙা প্রজাপতিরা উড়ে বেড়ায় যেমনটা অনন্যার মনে উড়ে বেড়াচ্ছে।

প্রানের মনে কি চলছে কে জানে।সে কি আদৌ এই আবেগপূর্ণ কিশোরীর মন বুঝতে পারছে নাকি বুঝেও চুপ থাকছে উপযুক্ত সময়ের আশায়।মানুষের মন বুঝা বড্ড মুশকিল।
….
মার্কেটের সামনে আসতেই অনন্যাকে প্রাণ নামতে বলে।
অনন্যাকে একটা ফুলদানি পছন্দ করে দেয় বান্ধবীকে গিফট হিসেবে দিতে।কিন্তু গিফট কিনা শেষ হতেই
অনন্যা শাড়ির কুচি ধরেই দিলো দৌঁড় এক টেডিবিয়ারের দোকানের দিকে।প্রাণ মাথায় হাত দিয়ে বলে,
-এই মেয়ে নাকি বড় হয়েছে।এখনই বাচ্চাদের মতো দৌঁড়াদৌঁড়ি শুরু করে দিলো।এই অনু দাঁড়া। আর দৌঁড়াবি না।যা দরকার আমারে বল তাও দৌঁড়াইস না।তোর কিছু হইলে তোর ভাই মোরে বাঁশ দিবো।

প্রাণও হাতে গিফট নিয়ে অনন্যার পিছনে দৌঁড়।
প্রান দোকানে গিয়ে দেখে অনন্যা একদমই বাচ্চাদের মতোই এই পুতুল সেই পুতুল দেখছে আর মুখে হাসির ফোয়ারা।

প্রাণ এগিয়ে গিয়ে একটা টেডিবিয়ার পছন্দ করলো।সেইটা অনন্যাকে দেখাতেই তারও বেশ পছন্দ হলো।প্রাণ নিজেই অনন্যাকে টেডিবিয়ার কিনে দিলো।
অনন্যা টেডিবিয়ারটা পেয়ে বেশ খুশি হলো।খুশির ঠেলায় প্রানকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠে,

-মেনি মেনি থ্যাংকস প্রান ভাইয়া।আমাকে মোটেই বাচ্চা ভাববেন না।আর এক বছর পরেই আমি প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে যাবো।এই টেডিবিয়ার গুলোর প্রতি আমার বিশেষ দূর্বলতা আছে।তাই এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছলাম একটু।

প্রানের যেনো শ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার জোগান। অনন্যাকে গা থেকে সরিয়েই বলে,

-হইছে হইছে।মোরে ছাড়ি দে।

অনন্যার বিষয়টা বেশ মজা লাগলো।প্রান ভাইয়া কি তবে লজ্জা পাচ্ছে।সে গা দুলিয়ে হাসে।আজকের দিনটি তার আজীবন মনে থাকবে।

আজমির চৌধুরী বেশ সিরিয়াস ভঙ্গীতে সোফায় বসে আছে।
প্রান তার অপর পাশে মুখোমুখি বসে আছে।

-প্রান আমি তোমাকে আমার ছেলের মতোই স্নেহ করি।অরন্যের বেস্ট ফ্রেন্ড তুমি।তার উপর মানুষের মন অন্যদের তুলনায় বেশ ভালো বুঝো।
তাই আমি আশা করছি আমি তোমার থেকে নির্ভুল তথ্য পাবো।

প্রান মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।

-অরন্য কি যেন সবসময় চিন্তা করে।নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চায়।বিয়ের কথা উঠলেই এড়িয়ে চলে।সে আজাকাল অতিমাত্রায় ধূমপান করে।এইভাবে চলতে থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়বে।
সে আমাদের থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে।তুমি তার বন্ধু।কিছু একটা করো।

প্রাণ নীরবে তপ্তশ্বাস ফেলে।

-আমি চেষ্টা করবো আংকেল।আমার উপর বিশ্বাস রাখুন।সব ঠিক হয়ে যাবে।অরন্যকে কিছুদিন নিজের মতো ছেড়ে দিন।তার নিজেকে বুঝা প্রয়োজন,জানা প্রয়োজন।যেইদিন পারবে সেই দিনই সব ঠিক হয়ে যাবে।দেখে নিয়েন।আর অরন্যের বিয়ে খুব শীঘ্রই হবে।সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
#কুঞ্জছায়া
#কুঞ্জা_কাবেরী
#পর্ব১৫
(কপি করা নিষেধ)
..
প্রায় এক সপ্তাহ কেটে যায়।এইদিকে কাল থেকে পরীক্ষা শুরু।ছায়া পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী। আশেপাশে তাকানোর সুযোগ কই তার।এইদিকে নীলা হায় হুতাশ করছে। পড়া শুনায় মন কই তার।সেতো সবসময় আড্ডা দেওয়া,ঘুরাঘুরি, গল্প গুজব নিয়েই মেতে থাকে।শুধু পরীক্ষা কাছে আসলেই তার যতো চিন্তা শুরু।পরীক্ষা ব্যবস্থাটা না থাকলেই বোধ হয় ভালো হতো।
ছায়া দুই কাপ দুধ চা বানালো বেশ মজা করে।একটা তার নিজের জন্য আর একটা নীলার জন্য।নীলা তার হাতের দুধ চা বেশ পছন্দ করে।ছায়া নীলার রুমে গিয়ে নীলার টেবলে চা রাখলো।নীলা টেবিলে বইয়ের ভাজে মাথা রেখে ঝিমুচ্ছে।ছায়া মুচকি হাসে।মেয়েটা পারেও বটে। ছায়া আস্তে করে নীলাকে ডাকলো।নীলা হকচকিয়ে উঠলো।

-এই রে সকাল হয়ে গেলো? আমার তো আরও অনেকগুলা চ্যাপ্টার বাকিরে ছায়ু।কি হবে রে আমার।

ছায়া এইবার বেশ জোরেই হেসে দিলো।নীলার মাথায় চাটি মেরে বলে,

-সকাল হয়নি।এখন মাত্র ১০ টা বাজে।এই নে তোর প্রিয় চা।চা খেয়ে শরীরটা চাঙ্গা করতো। দেখবি ঘুম জানালা দিয়ে পালাবে।

নীলা হাফ ছেড়ে বাচলো।সন্ধ্যার পর থেকেই সে ঝিমুচ্ছে।পড়া কিছুই হয়নি ভালো করে।নাহ এইবার একটু সিরিয়াস হওয়া উচিত।

ছায়া নিজের রুমে গেলো নিজের চা টা হাতে নিয়ে।পড়ার টেবিলে যেই না বসবে তখনই মোবাইল বেজে উঠে।মোবাইলের স্ক্রিনে বাবার নামটা জ্বলজ্বল করছে।
ছায়া ফোনটা রিসিভ করে কানে ধরলো।

-কেমন আছো মামুনি? ভালো আছো?শরীর ঠিক আছে?
ছায়া নিঃশব্দে হাসে।বাবা তাকে খুব ভালোবাসে সেটা সে জানে।

-আমি ভালো আছি বাবা।তুমি কেমন আছো? বাসার সবাই ভালো আছে?

-সবাই ভালো আছি আমরা।কাল থেকে তোমার পরীক্ষা শুরু।ভালো করে মাথা ঠান্ডা রেখে পরীক্ষা দিও কেমন।আর ঠিকমতো খেয়ে নিও।এই নাও তোমার মা কথা বলবে।

-পরীক্ষা যাতে ভালো হয়।আর পরীক্ষার হলে যাবার আগে ডিম সিদ্ধ অবশ্যই খাবে।আর নিজের খেয়াল রেখো। মীরা বেগম বেশ চিন্তিত হয়ে বলে উঠলেন।

ছায়া তাদের সবাইকে আশ্বস্ত করে।

-আমি খেয়ে নিবো।তোমরা নিজের খেয়াল রেখো।আর রোজিকে এতো বকাবকি করো না।এতো চাপ দিও না।পড়াশোনা নিয়ে এতো চাপাচাপি করা ঠিক হবে না।কাল পরীক্ষা তাই তোমরা আজ এতো ভালোবাসা দেখাচ্ছো আমাকে বুঝতে পারছি।
কিছুটা তাচ্ছিল্যের স্বরেই বললো মাকে।

-আমাদের ভালোবাসা কখনোই বুঝবে না তুমি।
মীরা বেগম বেশ উচ্চস্বরেই বললেন।

আর কোন কথা হলো না।ছায়া ফোনটা রেখে দিলো।
তার এখন আর পড়তে ভালো লাগছে না।এখন সে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকবে।তার ঠিক ১৫ মিনিট পর উঠে পড়বে।
মোবাইলের মেসেজ টোন বেজে উঠে তখনই।ছায়ার মেসেজটা ওপেন করতে মন চাইলো না।চোখ বন্ধ করেই পড়ে থাকলো।
…..
সকাল ৬:৩০
নীলা বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।মেয়েটা কতো ঘুমায়।পরীক্ষা আসলেই ঘুম দ্বিগুণ বেড়ে যায়।ছায়া ডেকে তুললো নীলাকে।

-ঘুম হয়েছে মহারানীর? এইবার যে উঠতে হয়।

নীলা উঠলো।ঠোঁট ফুলালো।আরেকটু ঘুমালে কি হয়।
নীলা উঠে ফ্রেশ হয়ে পড়ায় বসলো।

এইদিকে ছায়ার পড়া প্রায় শেষের দিকে।সে উঠে ঝটপট নুডলস রান্না করে ফেললো দুইজনের জন্য।
ব্রেকফাস্ট করে মোবাইল হাতে নিতেই দেখে আননোন নাম্বার থেকে মেসেজ।সে ওপেন করলো।

“মিস ছায়া কাল থেকে এক্সাম তাই এতো রাত জেগে পড়বেন না।সারা বছর পড়েছেনই।একদিন রাতে পড়ে বিদ্যাসাগর হয়ে যাবেন না।পর্যাপ্ত গ্লুকোজ আর মিনারেল জাতীয় খাবার খাবেন।”
ছায়া বুঝলো এটা কে পাঠিয়েছে।কিন্তু রিপ্লাই দিবার প্রয়োজনবোধ করলো না।
খাবার খেয়ে রেডি হয়ে গেলো আর প্রয়োজনীয় সব গুছিয়ে ফেললো।
নীলা আর ছায়া বের হয়ে গেলো এক্সামের উদ্দেশ্যে।
রাস্তায় বিজয় দাঁড়িয়ে ছিলো।ছায়া আর নীলাকে দেখেই মুচকি হেসে বললো,

-কেমন আছো আপুরা?আজ থেকে বুঝি পরীক্ষা শুরু?
ছায়া আর নীলা সম্মতি জানালো।

-হ্যা বিজয়।আজ আমাদের পরীক্ষা শুরু।তোমার পড়াশুনার কি অবস্থা?নীলা জিজ্ঞেস করলো

-পড়াশুনা ভালোই চলছে।এইতো সামনেই অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা।

-আংকেল আন্টি ভালো আছে?রিফা আপুর কি অবস্থা?ছায়া জানতে চাইলো বেশ সাবলীলভাবেই।

-আম্মা আব্বা ভালোই আছে।আর রিফা আপুও বেশ ভালো আছে।
উত্তর দিয়েই বিজয় রিকশা ডেকে আনলো আর ছায়া নীলাকে সাবধানে পৌছে দিতে বললো।
ছেলেটা আজকালকার যুগের মতো না।বেশ ভদ্র।এই বয়সী ছেলেমেয়েরা কতোটা অশান্ত আর বেপরোয়া হয়।কিন্তু সেই জায়গায় ছেলেটা বেশ মার্জিত।

মেডিকেল কলেজের সামনে নামতেই অরন্যের মুখোমুখি হয় ছায়া।অরন্য গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।নীলা সালাম দিলেও ছায়া তাকালো না অবধি অরন্যের দিকে।ছায়া নিজের পরীক্ষার হলে চলে গেলো।প্রথম বর্ষের স্টুডেন্ট দের সাথে তাদের সিট পড়েছে।ছায়ার সিট পড়েছে বাম দিকের সারির সাইডের দিকে।নীলার সিট ছায়ার থেকে দুই বেঞ্চ পিছনে।আর মেঘা পড়েছে মাঝের সারিতে।
পরীক্ষা শুরু হলো।ছায়া বেশ শান্তভাবেই পরীক্ষা দিলো।নীলাকে আর মেঘাকেও একটু হেল্প করলো যতটুকু করা যায়।

-কেমন হয়েছে রে তোদের পরীক্ষা?
দাত কেলিয়ে জিজ্ঞেস করলো মেঘা।

-হিহিহি আমিতো ভেবেছিলাম আজই আমার কেল্লাফতে। কিন্তু বেঁচে গেলাম।
নীলাও হাসতে হাসতে জবাব দিলো।
এই দিকে ছায়াও আজ বেশ হাসিখুশি।পরীক্ষা আজ তারও খুব ভালো হয়েছে।

-তোরা তো দেখছি ফাটিয়ে দিয়েছিস মেঘা আর নীলা।আজ কিন্তু প্রশ্ন স্ট্যান্ডার্ড হয়েছে।এই শুননা আমার একটা বই লাগবে।লাইব্রেরিতে যাবো।তোরা একটু অপেক্ষা কর মাঠে।আজ একসাথে ফুচকা খেতে যাবো আমরা পরীক্ষা ভালো হবার খুশিতে।

নীলা জোরে লাফিয়ে উঠলো ইয়াহু বলে।আর মেঘাতো ছায়াকে জড়িয়েই ধরলো।কতোদিন পর আজ ছায়া হাসছে।আবার নিজ থেকে ঘুরতে যেতে চাইছে।

-আজ ট্রিট আমি দিচ্ছি গাইস।তোদের দুলাভাই এসেছে লন্ডন থেকে।
একটু লাজুক হেসে কথাটি বললো মেঘা।
ছায়া আর মেঘা চোখ বড় বড় করে ফেললো।
দুজনেই উচ্চস্বরে বলে উঠলো,

-দুলায়ায়ায়ায়াভাইইইই?এই মেঘা তোর বিয়ে হলো কবে?
মেঘা এইবার কেবলা মার্কা হাসি দিলো

-আরে বান্ধবীর বিএফ কে তো দুলাভাই ডাকে।জানস না।হাদারামগুলা।

নীলা আর ছায়া গা দুলিয়ে হাসলো।হাসতে হাসতে দুইজনই শেষ।
ছায়া লাইব্রেরির দিকে পা বাড়ালো।আর নীলা মেঘা মাঠের দিকে গেলো।
লাইব্রেরিতে আজ তেমন কেউ নেই।সবারই পরীক্ষা চলছে।তাই লাইব্রেরির দিকে তেমন কেউ আসেনি।লাইব্রেরির ভিতর একজন বই খুজছিলো।সেটা কে ছায়া দেখার ইচ্ছা পোষণ করেনি।
ছায়া একটা বই খুজছিলো যেই বইটা একটু পেছনের সারিতে লাইব্রেরির ভিতরের দিকে।একটা বইয়ের বেশ কিছু অংশ তার ছিড়ে গিয়েছে।ছিড়ে গিয়েছে বলতে কেউ ছিড়ে ফেলেছে।সেই বইটাই লাগবে।ছায়া খুঁজতে খুঁজতেই অনুভব করলো কেউ ছায়ার পিছনে আছে।আর সে কাছে আসছে ধীরে ধীরে।ছায়া পিছনেই ঘুরবে সেই মুহুর্তে কেউ তার গা ঘেষে দাড়ালো।তার গা থেকে কড়া মেন পারফিউম এর ঘ্রাণ আসছে।ছায়ার কেমন জানি লাগছে।ছায়ার পিঠ গিয়ে ঠেকলো লোকটির সুঠাম বক্ষে ।লোকটির উষ্ণ নিঃশ্বাস ছায়ার কাধে আছড়ে পড়ছে।ছায়া শিউরে উঠেছে।
তখই কানে আসে,
আপনার মোবাইল কোথায় মিস?
ছায়ার বুক ধক করে উঠে।অরন্য একটা বই তাক থেকে বের করলো ছায়ার মাথার উপর দিক দিয়ে।আর সেটা ছায়ার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
-কাল তো এই সাবজেক্ট এর পরীক্ষা।নিশ্চয় এই বইটাই খুজঁছিলেন।দেখুন তো।
এইটা বলেই অরন্য সরে যায়।ছায়া হাফ ছাড়ে।তার দমটা এখনই বের হয়ে যেতো।ঘটনাটি খুব দ্রুত হয়ে যায় যার জন্য ছায়া রিয়েকশন দেওয়ার সময় পায়নি।
এইবার ছায়া পিছনে ফিরে রয়ে সয়ে।অরন্যের দিকে তাকায়।তার শরীর কিঞ্চিৎ কাঁপছে।
সে দেখলো এই বইটাই খুজছিলো সে এতোক্ষণ।আর মনে মনে অরন্যের বেশ তারিফ করলো যে অরন্যের সিক্সথ সেন্স খুব ভালো।
অরন্য এইবার ছায়ার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায়।

-আমি কি আপনাকে ছুঁয়েছি মিস? আপনি কাপছেন কেন?হুয়াই আর ইউ গিভিং মি নেগেটিভ ভাইব?
ছায়া একটা ঢোক গিললো।বলে কি সে? পাগল হয়ে গেলো নাতো আবার।

-কি হলো মিস? আপনার মোবাইল কোথায়? এদিকে দিন দেখি?

ছায়া একটু ভড়কে গেলো।সে কোন কথা না বলেই অরন্যের হাতের বইটা নিতে চাইলো।কিন্তু অরন্য বেশ শক্ত করেই বইটা ধরে রেখেছিল।

অরন্য ছায়ার এই মৌনতা দেখে অরন্য বললো,

-আপনার কাছে কিছু জানতে চেয়েছি আমি।আপনার মুখে কি কিছু হয়েছে?এদিকে আসুন তো দেখি।

অরন্যকে কাছে আসতে দেখেই ছায়া হাতের বইটা জোর করে টেনে নিয়ে দ্রুত পায়ে লাইব্রেরি ত্যাগ করলো।

অরন্য বেশ মজা পেলো মেয়েটাকে ভড়কে দিতে পেরে।সে ঠোঁট চেপে হাসলো।
#কুঞ্জছায়া
#কুঞ্জা_কাবেরী
#পর্ব১৬
(কপি করা নিষেধ)
..
ছায়া দ্রুত পায়ে মাঠে গেলো নীলা আর মেঘার কাছে।
-কিরে ছায়ু এইভাবে হাপাচ্ছিস কেন?
নীলা কৌতূহলী হয়ে জানতে চাইলো
-হ্যা রে ছায়ু নীলু ঠিক বলছে।কি হয়েছে রে? বই পেয়েছিস?

ছায়া ওদের একটু আগের ব্যাপারে কিছু বললো না।

-আরে বইটা খুজঁতে খুঁজতে হাপিয়ে গিয়েছিলাম।চল ফুচকা খেয়ে আসি।অনেক দিন খাই না।
মেঘা উচ্ছ্বাসিত কন্ঠে বললো,
-আজ তোদের আমি ট্রিট দিবো আর একটা কথাও বলবো।
ছায়া আর নীলা প্রশ্নবিদ্ধ নয়নে শুধালো,
-কি হয়েছে বল না।এখনই বল না।আমার আর তর সইছে না।
মেঘা ওদের ফুচকার দোকানে নিয়ে গেলো।
ওরা গোল হয়ে বসলো।ছায়া আর নীলার চোখে মুখে আগ্রহ খেলা করছে।
মেঘা তিন প্লেট ফুচকার অর্ডার দিলো।
মেঘা গলা পরিষ্কার করে বললো,
-আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে অভিকের সাথে।পরীক্ষার পরই এংগেজমেন্ট।
এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলে শেষ করলো।
ছায়া আর নীলা কি প্রতিক্রিয়া করবে ভুলে গিয়েছে।মেঘা ওদের মুখের উপর চুটকি বাজাতেই ওদের হুশ আসে আর ওরা চিৎকার দিয়ে উঠে,
-ইয়ায়ায়ায়াহু।আমাদের ন্যাকা রানীর বিয়ে।কতোদিন পর বিয়ে খাবো।
-এই মেঘা জিজুর সাথে দেখা কবে করাবি বল।পকেট খালি করানোর একটা ব্যাপার স্যাপার আছে।
নীলা চোখ টিপ দিয়ে বললো।
ছায়া খিল খিল করে হাসতে লাগলো।
মেঘাও সায় জানালো যে সেও তাদের সাথে আছে।হবু জামাই বলে সে ছাড় দিবে না।
হাসি ঠাট্টায় জমে উঠলো পরিবেশ।
খাওয়া দাওয়া শেষে মেঘা চলে গেলো।ছায়া নীলাও বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।হেটে একটু সামনে আগাতেই একজন ডেকে উঠে,
-হেই মিস ঝগড়াওয়ালি।ইয়েলো ড্রেস।
নীলা ভ্রু কুচকে তাকালো।তাকেই ডাকছে সে বুঝতে পারছে।কারণ সেই আজ হলুদ ড্রেস পড়েছে।ছেলেটিকে চেনার চেষ্টা করতেই সেইদিনে ধাক্কা দেওয়া ছেলেটার কথা মনে পড়লো।আজ ছায়া সাথে আছে।আজ খুব ঝগড়া লাগবে।পারলে গনধোলাই দিবে বেশি বাড়াবাড়ি করলে।এইসব ভাবতে ভাবতেই ছেলেটি তার সামনে এসে দাঁড়ালো।
-আমি আকাশ চৌধুরী।এইবার ইঞ্জিনিয়ারিং ৩য় বর্ষের ছাত্র।নাইস টু মিট ইউ ম্যাডাম।আপনার নামটা জানতে পারি?
নীলা কথা বলতেই চাইলো না।
-আমার নাম দিয়ে কাম কি?ফুট।
নীলা মুখ ভেংচি দিয়ে দিলো একটা।ছায়া নীলার এই ব্যবহার দেখে সে নিজেই পরিস্থিতি ঠিক করলো।
ছায়া একটা হাসি দিয়ে আকাশকে বললো,
-কিছু মনে করবেন না।ও একটু ছেলে মানুষ টাইপের।
আকাশ একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,
-ব্যাপার না।আপানাদের পরিচয়?
-আমার নাম কমলীনি ছায়া আর ওর নাম মুনতাহা নীলা।আমরা এইবার মেডিকেল থার্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট।
আকাশ ছায়ার নাম শুনেই কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো।কিছু মনে করার চেষ্টা করলো।পরেই আবার নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,
-ওয়াও তাহলে তো দেখছি আমরা সেইম ইয়ারের।ইনশাল্লাহ আবার দেখা হবে।যাচ্ছি।ভালো থাকবেন।

নীলা খালি একটু ঠোঁট বাকালো আকাশের পানে চেয়ে।
আকাশ তৎক্ষনাত নীলাকে একটা চোখ টিপ দিয়ে প্রস্থান করলো।

-এই ছায়া দেখলি ছেলেটা আমাকে চোখ টিপ দিলো।এতো ভালো করে কথা বলার কি দরকার ছিলো।কই ভাবলাম আজ তুই সাথে আছিস। দুজনে মিলে ঝগড়া করবো। তা না করে উল্টা আরো কি সুন্দর করে কথা বললি।নীলা রাগে দুঃখে ফুঁসতে লাগলো।তার প্রাণ প্রিয় বান্ধবীও তাকে বুঝলো না। এতো এতো দঃখ সে কোথায় রাখবে।
ছায়া এইদিকে অন্যকিছু ভাবছে।আকাশের চেহারাটা খুব চেনা চেনা লাগছে।কারো চেহারার সাথে খুব মিল আছে।নীলার বকবকে ছায়া আর কিছু ভাবতে পারলো না।নীলাকে নিয়ে রিকশায় উঠে বাসায় রওনা দিলো।
….
-পরীক্ষা কেমন দিচ্ছিস ?মীরা বেগম ফোন করে জানতে চাইলেন।
-ভালো।
-বাসায় কবে আসছিস?
-পরীক্ষার পরে।
ফোনটা রেখেই ছায়া গোসল করতে গেলো।তার মা একটা বার কেন জানতে চায় না সে কেমন আছে?খালি পরীক্ষা,ক্যারিয়ার,সম্মান।এইসবের যাতাকলে যে সে পিষে যাচ্ছে সেই খবর কি কেউ রেখেছে?কেউ না।
…..
অরন্য ছায়াকে কল দিয়ে যাচ্ছে বাট কেউ রিসিভ করছে না।
গোসল করে বের হয়েই দেখে অরন্যের ৪ টা মিসড কল।ছায়া একটু ঘাবড়ালো।তখনই আবার কল আসলে সে সাথে সাথেই রিসিভ করে।
-আপনি কোথায় মিস?কাইন্ডলি একটু কেবিনে আসুন।এইটা বলেই ফোন কেটে দেয়।
ছায়া ভাবতে লাগলো কি এমন হলো যে এতো জরুরি তলব।অরন্যের কন্ঠে ছিলো রাগ।ছায়ার একটু ভয় লাগলো সে কি এমন করলো।
ছায়া জলদি রেডি হয়ে হসপিটালে গেলো।
-মে আই কাম ইন স্যার।
-ইয়েস কাম।
কিছুটা গম্ভীর হয়েই বললো অরন্য।
-তা মিস এইসব আবার কবে থেকে চলছে? আপনার প্রেমলীলা?
ছায়া কিছুই বুঝতে পারছে না।সে আবার প্রেম কবে থেকে করছে।যদি করেও থাকে তবে অরন্যের সমস্যা কোথায়।
-আমি আপনার কথা বুঝতে পারছি না স্যার।কিছুটা গম্ভীর হয়েই বললো ছায়া।
অরন্য এইবার আসলো ছায়ার কাছে খুব কাছে।অরন্যের নিঃশ্বাসের উত্তাপ ছায়া অনুভব করতে পারছে।ছায়া পিছালো।মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলো।
-কিপ ডিসটেন্স স্যার।
অরন্য তাচ্ছিল্য হাসলো।
-আপনার প্রেমিক আপনাকে খুজঁতে এসেছিলো।
ছায়া চমকে উঠে।তাকে কেউ খুজঁছে?
ছায়া অরন্যের দিকে এইবার তাকালো আর জানতে চাইলো কে?
-মিস্টার আহান হক।
ছায়া যেন এই নামটা শুনার জন্য প্রস্তুত ছিল না।সে এইখানে কেন আসবে? আবার কোন বিপদ আসছে তার সামনে।
ছায়াকে মৌনতা অবলম্বন করতে দেখে অরন্য এইবার ছায়াকে বললো,
-মিস ছায়া প্রেম করবেন হসপিটালের বাইরে। ক্যাম্পাসের ভিতরে এইসব চলবে না। এইটা লাস্ট ওয়ার্নিং। মনে থাকে যেনো।
কিছুটা চিল্লিয়েই বলে অরন্য।ছায়া কেপে উঠে।সে অরন্যকে রাগতে দেখে আর কিছু বললো না। সে কেনো অরন্যকে কৈফিয়ত দিতে যাবে।কখনো দিবে না। কখনো না।
ছায়ার এইরকম নীরবতা অরন্যের ভালো লাগছে না।মেয়েটা কেনো নিজে থেকে কিছু বলে না। এই যে সে তাকে এতো রাগ দেখাচ্ছে তার বদলে ছায়ার দরকার কিছু একটা বলা,বিষয়টা ক্লিয়ার করা।অবশ্য সে সব এমনিতেও জানতে পারবে।
-ইউ ক্যান গো।
অরন্য বেশ বিরক্ত হয়েই বললো।
ছায়া এই কথাটারই অপেক্ষায় ছিলো।সাথে সাথেই বেরিয়ে যায়।

#চলবে

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here