বর্ষণের সেই রাতে পর্ব ৪৭

#বর্ষণের_সেই_রাতে ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ৪৭
.
অনিমাকে ওভাবে দেখে সম্পূর্ণ স্তম্ভিত হয়ে গেছে অাদ্রিয়ান। আদ্রিয়ানকে দেখে রিক অনেকটা চমকে গেলেও সেদিকে পাত্তা না দিয়ে অনিকে ডাকতে লাগল। আদ্রিয়ান কিছুক্ষণ হতভম্ভ হয়ে তাকিয়ে ছিলো অনিমার দিকে। যখন ওর মস্তিষ্কে এই কথাটার ধাক্কা লাগল যে অনিমা ওভাবে অজ্ঞান হয়ে পরে আছে তখন আর একমুহূর্ত দেরী না করে দ্রত অনিমার কাছে হাটু ভেঙ্গে বসে রিকের কাছ থেকে ওকে নিজের কোলে নিয়ে বলল,

— ” জানপাখি? কী হয়েছে তোমার? দেখো চলে এসছি আমি। এক্ষুনি নিয়ে যাবো আমি তোমাকে। চোখ খোলোনা প্লিজ!”

এটুকু বলে অনিমাকে নিজের সাথে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। আদ্রিয়ান পাগলের মতো করছে। আশেপাশে কী হচ্ছে না হচ্ছে কিচ্ছু খেয়াল নেই ওর। ওর সামনে রিক আছে, স্নিগ্ধা আছে সেসব নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই ওর মধ্যে। রিক একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আদ্রিয়ানের দিকে। স্নিগ্ধা আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” ভাইয়া ওকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। আমি এভাবে কিছুই বুঝতে পারছি না। প্লিজ তাড়াতাড়ি করুণ।”

আদ্রিয়ান নিজেকে সামলে নিয়ে অনিমাকে কোলে নিয়ে দ্রুত চলে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে। স্নিগ্ধাও পেছন পেছন দৌড়ে গেলো। রিক ওখানেই পাথরের মতো বসে আছে। কিছু একটা ভেবে নিজেকে সামলে নিয়ে উঠে বেড়িয়ে গেলো।
আদ্রিয়ান অনিমাকে নিয়ে সিড়ি দিয়ে নামতে গেলেই ওর সামনে একজন লোক এসে দাঁড়ালো। লোকটি বাঙালি। আদ্রিয়ান পাত্তা না দিয়ে নামতে গেলেই লোকটি বলল,

— ” রিক চৌধুরী বাড়িতে আছেন। আসলে একজন পেসেন্ট কে দেখতে আসতে বসেছিলেন।”

আদ্রিয়ান শেষের কথাটা শুনে থেমে গেলো। স্নিগ্ধা এসে বলল,

— ” হ্যাঁ। ভাইয়া ইনিই এখানকার বেস্ট সাইক্রাটিস্ট। ”

আদ্রিয়ান রাগী কন্ঠে বলল,

— ” আরে ওর নাক দিয়ে রক্ত পরছে। হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে ওকে।”

তখনি রিক এসে হাফানো কন্ঠে বলল,

— ” হসপিটালে নিয়ে যেতে সময় লাগবে অনেক। ওতো সময় নেওয়া ঠিক হবেনা। রক্ত পরা বন্ধ হয়ে গেছে তারমানে খুব বেশি মারাত্বক কিছু না। আমি ডক্টরকে ফোন করেছি উনি টিম নিয়ে আসছেন। ততোক্ষণ উনি দেখুক। ওকে নিয়ে রুমে এসো।”

আদ্রিয়ান কিছুক্ষণ রিকের দিকে তাকিয়ে থেকে স্হির কন্ঠে বলল,

— ” রুমটা দেখিয়ে দাও।”

রিক মাথা নামিয়ে নিয়ে বলল,

— ” আমার সাথে এসো।”

রিক এগিয়ে গেলো আর আদ্রিয়ান অনিমাকে কোলে নিয়ে ওর পেছনে গেলো, সাইক্রাটিস্ট ও ওদের পেছন পেছন গেলো। স্নিগ্ধা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে দুজনের জন্যে। এখন যেরকম পরিস্হিতি দুজনের মধ্যেতো মারামারি লেগে যাওয়ার কথা। কিন্তু এখন এদের দুজনের মূল ফোকাস শুধু অনির ওপর। আর কোনোকিছুরই খেয়াল নেই এদের মধ্যে। সত্যিকারের ভালোবাসা গুলো হয়তো এমনই হয়। এসব ভেবে মুচকি হাসলো স্নিগ্ধা তারপর ও ওদের কাছে গেলো।

ডক্টর অনিমাকে চেকআপ করছে। ওর হাতে সেলাইন লাগানো। আদ্রিয়ান অনিমার পাশে ওর হাত ধরে বসে আছে। রিক পায়ের দিকটায় মুখ হাত দিয়ে চেপে ধরে বসে আছে, চাইলে ও আর স্নিগ্ধাই চেকআপ করতে পারতো বাট কোনো মেশিন ছাড়া শুধু হাতের সাহায্যে সম্ভব ছিলোনা সেটা। আর স্নিগ্ধা ওপর পাশের কর্ণারে বসে ডক্টরকে হেল্প করছে চেকআপ করতে।আদিব আর অভ্রও চলেছে ওরা এতোক্ষণ বাইরেটাই সামাল দিচ্ছিল। প্রায় আধঘন্টা চেকআপ করার পর ডক্টর উঠে দাঁড়াতেই আদ্রিয়ান আর রিক দুজনেই একসাথে দাঁড়িয়ে বলে উঠলো,

— ” এনিথিং সিরিয়াস ডক্টর।”

ডক্টর অবাক হয়ে দুজনের দিকে তাকালো। তারপর একটা শ্বাস নিয়ে বলল,

— ” নো..বাট ইট কুড বি। ইজ শি হ্যাজ এনি মেন্টাল প্রেশার টু মাছ? ”

স্নিগ্ধা বলে উঠল,

— ” ইয়েস ডক্টর সি হ্যাজ। বাট হোয়াটস্ দ্যা মেটার?”

ডক্টর ওদের দিকে তাকিয়ে বললেন,

— ” একচুয়ালি সামহাউ শি হ্যাড সো মাচ প্রেসার ইন হার ব্রেইন। এন্ড দ্যাটস হোয়াইট শি হ্যাড এ স্মল হিট অন হার নার্ভ এন্ড স্টার্টেড ব্লেডিং। বাট নাও এভরিথিং ইজ ফাইন ডোন্ট ওয়ারী। আ’ম প্রেসক্রাইবিং সাম মেডিসিন। সি উইল বি অলরাইট।”

ওরা সবাই একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল। ডক্টর ওদের বিদায় দিয়ে চলে গেলো। এরপর সেই বাঙালি সাইক্রাটিস্ট ওদের উদ্দেশ্যে বললেন,

— “মিস্টার চৌধুরীর কাছে যেটুকু শুনেছি তাতে এটুকু বুঝতে পেরেছি যে উনি কোনো কারণে প্রচুরভাবে ট্রমাটাইজড আর উনি হাই পাওয়ার এর ঔষধ ও নিতেন হয়তো। ইউসিয়ালি সেই ঔষধ দেওয়া বন্ধ হয়ে গেলেই হঠাৎ এরকম প্রবলেম বেশি হয়।”

আদ্রিয়ান একটা শ্বাস ফেলে বললো,

— ” ইয়েস ডক্টর ঔষধ নিতো ও। আর কিছুদিন যাবত সেটা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ।”

বলেই কঠোর দৃষ্টিতে রিকের দিকে তাকালো।রিক বেশ অবাক হয়ে বলল,

— ” ঔষধ নিতো মানে? কী হয়েছিলো ওর।”

ডক্টর বললেন,

— ” হ্যাঁ। আমাকে প্লিজ শুরু থেকে সব বলুন নইলে আমি কিছূ বলতে পারছিনা।”

আদ্রিয়ান কিছুক্ষণ চুপ থেকে তারপর শূরু সবটাই খুলে বললো ডক্টরকে। সবটা শুনে রিক পুরো হতভম্ব হয়ে গেলো। বেড ধরে বসে পরলো ও। ডক্টর বললেন,

— ” এমনিতেই এরকম অবস্হা তারওপর ঔষধ বন্ধ করে দিয়েছেন? আবার এতোটা মেন্টাল প্রেশার দিয়েছেন। আপনাদের ভাগ্য ভালো মেয়েটা এখনো পাগল হয়ে যায়নি। যাই হোক ঔষধগুলো কনটিনিউ করুন আর একটু খেয়াল রাখুন তাতেই হবে।”

বলে উনিও চলে গেলেন। রিক নিজের মাথা চেপে ধরে ভাবতে শুরু করলো যে কী কী করেছে ও? যেখানে আগে থেকেই মেয়েটার লাইফ এতোটা কম্প্লিকেটেড হয়ে আছে সেখানে ও গিয়ে সেই জীবণটাকে আরো কম্প্লিকেটেড করে দিয়েছে। বারবার অনিমার গায়ে হাত তোলা ওকে কষ্ট দেওয়া সব চোখে ভেসে উঠছে। হঠাৎ অর্ক অনির সাথে এরকম কিছু করেছে মনে পরতেই ওর রক ফুলে উঠলো। উঠে দাঁড়িয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

— ” আজ ওর শেষ দিন।”

বলে বেড়োতে নিলেই আদ্রিয়ান ওর হাত ধরে আটখে ওকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বুকে জোরে একটা ধাক্কা মেরে বলল,

— ” ওকে শাস্তি দেবে তুমি? হ্যাঁ? আর তোমাকে? তোমাকে কে শাস্তি দেবে? ওদের চেয়ে কোন অংশে কম ছিল তুমি? হ্যাঁ বলো? ভালোবাসার নাম করে ওর ওপর কী কী ধরণের অত্যাচার করতে সেটা নিশ্চই ভুলে যাওনি তাইনা? ওর এই অবস্হার জন্যে যেসকল মানুষ দায়ী তার মধ্যে তুমি অন্যতম। আর এখন নাটক করছো। নাটক!”

রিক কিছু না বলে দেয়াল ঘেসে বসে পড়ল ওখানেই। আদ্রিয়ান পেছন থেকে গানটা বেড় করে বলল,

— ” ওর কপালে দাগ দেখে বোঝাই যাচ্ছে যে এখানে এনেও ওর গায়ে হাত তুলেছো? আজ তো আমি।”

আদ্রিয়ান শুট করতে গেলেই স্নিগ্ধা এসে আটকে দিয়ে বলল,

— ” প্লিজ ভাইয়া এখন এসব কিছু করোনা। অনি অসুস্হ। প্লিজ।”

আদ্রিয়ান অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়ে গানটা পকেটে ভরে নিলো। আর রিক একদৃষ্টিতে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। আজ ওর নিজেকেই নিজের কাছে সবচেয়ে বেশি নিকৃষ্ট মানুষ মনে হচ্ছে। আদ্রিয়ান অনিমার কাছে গিয়ে বসলো। রিক উঠে সোজা ওর রুমে চলে গেলো। স্নিগ্ধাও রিকের পেছন পেছন গেলো। স্নিগ্ধা রিকের রুমের গিয়ে দেখে রিক ফ্লোরে বসে খাটের সাথে হেলান দিয়ে একদৃষ্টিতে অনিমার ছবিটার দিকে তাকিয়ে আছে। বিয়ারের বোতলটা খুলে চুমুক দিতে যাবে তখনি স্নিগ্ধা এসে হাত ধরে আটকে দিলো। রিক স্নিগ্ধার দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” যা এখান থেকে এখন।”

স্নিগ্ধা একটা নিশ্বাস ফেলে বলল,

— ” এখন এতো কষ্ট পেয়ে কী হবে বলোতো? আমি তোমাকে আগেও বলেছিলাম নিজের রাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে শেখো। কিন্তু তুমি তো কোনোদিন সেটা পারলেই না।”

রিক কিছু না বলে একদৃষ্টিতে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। স্নিগ্ধা আবার বলল,

— ” তুমি বলতেনা যে অনিমা কেনো এতো আদ্রিয়ান আদ্রিয়ান করে? ওনার মধ্যে এমন কী আছে যেটা তোমার মধ্যে নেই? জানো কী পার্থক্য তোমাদের? অনিমা যখন তোমাকে এভোয়েট করতো বা কথা শুনতো না তখন তুমি ওর গায়ে হাত তুলে জোর করে ওকে নিজের কথা শোনাতে বাধ্য করাতে। অথচ তোমার ভয়ে ও আদ্রিয়ান ভাইয়াক এভোয়েট করছিলো কথা শুনছিলো না। তখনও কিন্তু আদ্রিয়ান ভাইয়া জোর করেই ওকে দিয়ে নিজের কথা শুনিয়েছে। কিন্তু মারধোর করে নয়, নিজের ভালোবাসা দিয়ে। ভালোবেসেই জোর খাটাতো অনিমার ওপর। ওনার কাছে সবচেয়ে বেশি ইমপরটেন্ট ভালোবাসার মানুষের ভালো থাকা আর তোমার কাছে সবচেয়ে বেশি ইম্পরটেন্ট ওকে নিজের কাছে রেখে দেওয়া। এটাই পার্থক্য তোমাদের মধ্যে।”

রিক কিছু না ভেবেই স্নিগ্ধাকে জরিয়ে ধরল। স্নিগ্ধাতো পুরো শকড হয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর ও বুঝতে পারলো যে রিক কাঁদছে। স্নিগ্ধা আরেকবার অবাক হলো। রিক এমনই একজন যে সহজে সবার সামনে নিজেকে দুর্বল দেখাতে চায়না, স্নিগ্ধাও এই প্রথম রিককে কাঁদতে দেখছে। ও কী করবে, কীভাবে রিক কে সামলাবে কিছুই জানে না ও। শুধু কাঁপা কাঁপা হাতে রিকেল পিঠে হাত রাখলো।

______________________

আশিস নানা ভাবে নিজেকে ব্যস্ত রাখছে। আদ্রিয়ানের না থাকায় ওর ওপর চাপটা খুব বেশি তারজন্যেই নিজেকে ব্যাস্ত রাখতে পারছে ও। তবে কিছুতেই মনকে স্হির করতে পারছেনা। আরুমিতার ওপরেরেই মাইন্ড পুরো সেট হয়ে আছে ওর। অরুমিতার বোকামো, ইনোসেন্ট ফেস, বাচ্চামো সবকিছুই বারবার মনে পরছে ওর আর তারচেয়েও বেশি মনে পরছে শেষে অরুমিতার বলা কথাগুলো। বুকের ভেতরে হটাৎ করেই এক অসহ্য যন্ত্রণা হয় ওর কিন্তু এরকম কেনো হচ্ছে এমন তো হওয়ার কথা ছিলোনা।

আর এদিকে অরুমিতা বাইরে দিয়ে স্ট্রং থাকলেও ভেতরে ভেতরে প্রতিনিয়ত গুমরে মরে। যতই হোক প্রথম ভালোবাসা ছিলো আশিস ওর। তবে ও ঠিক করে নিয়েছে ওর যতো কষ্টই হোক আশিসকে কোনোদিন ক্ষমা করবে না ও কোনোদিনও না।

______________________

অনিমা আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালো। নাকের ভেতর জ্বালা করছে, মাথাটাও ব্যাথা করছে। ভালোভাবে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখতে পেলো আদ্রিয়ান ওর হাত ধরে বসে আছে। অনিমা অবাক হয়ে গেলো। ওর মনে হচ্ছে ও স্বপ্ন দেখছে। উঠে বসার চেষ্টা করতেই আদ্রিয়ান ওকে ধরে উঠিয়ে বসালো। অনিমা এখোনো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আদ্রিয়ানের দিকে। আদ্রিয়ান মুচকি হেসে ভ্রু নাচিয়ে বলল,

— ” কী ব্যাপার ম্যাডাম? আমাকে দেখতে কী ভুতের মতো লাগছে যে এভাবে তাকিয়ে আছো?”

এটা শোনার পর আস্তে আস্তে অনিমা বুঝতে পারলো যে সপ্ন দেখছে না সত্যিই আদ্রিয়ান ওর সামনে আছে। অনিমা ছলছলে চোখে আস্তে আস্তে অনিমার গালে হাত রাখলো। আদ্রিয়ান অনিমা হাতটা ধরে তাতে ছোট্ট করে একটা কিস করলো। অনিমা হুট করেই আদ্রিয়ান জরিয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে দিলো। আদিব আর অভ্র একে ওপরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। অনিমা কেঁদেই যাচ্ছে একনাখারে। আদ্রিয়ান অনিমাকে শক্ত করে নিজের সাথে জরিয়ে ধরে বলল,

— ” জানপাখি? প্লিঠ স্টপ ক্রাইং তুমি জানো আমার এটা সহ্য হয়না তবুও তুমি কাঁদবে?”.

অনিমার কান্না থামার বদলে আরো বেড়ে গেলো। আদ্রিয়ান অনিমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

— ” আচ্ছা এখনতো আমি এসে গেছি তাইনা? তবুও এভাবে কাঁদবে? আমার কষ্ট হচ্ছে তো।”

অনিমা ভাঙ্গা গলায় বলল,

— ” প্লিজ আপনি আমাকে ছেড়ে কথাও যাবেননা প্লিজ।”

আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বলল,

— ” তোমাকে ছাড়ার জন্যে কী কষ্ট করে এতোদূর এসছি নাকি? বাঁচা ছাড়তে পারলেও তোমাকে ছাড়তে পারবোনা জানপাখি।”

ওদের দুজনকে দরজায় দাঁড়িয়ে একদৃষ্টিতে দেখছে রিক। তবে ওর আজ একটুও রাগ হচ্ছে না, তবে কষ্ট হচ্ছে এক অদ্ভুত কষ্ট হচ্ছে। ভেতরটা জ্বলে যাচ্ছে ওর। রিকের কাধ কেউ হাত রাখতেই রিক গুরে দাড়িয়ে দেখলো স্নিগ্ধা। স্নিগ্ধা বলল,

— ” কী ভাবছো?”

রিক অনিমা আর আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” ওদেরকে দেখছি, সত্যিই খুব ভালোবাসে একে ওপরকে। আমি ই এতোদিন ওদের লাভস্টোরির ভিলেন হয়ে ছিলাম। তবে আর সবো না। আজ থেকে ওদের জীবণের কোনো বাধা হয়ে থাকবোনা আমি। ওরা যেভাবে থাকতে চায় সেবাবে থাকুক।।

স্নিগ্ধা অবাক হলো রিকের কথায়। অবাক হয়েই বলল,

— ” ভেবে বলছো তো?”

রিক মুচকি হেসে চোখের কোণের হালকা জলটা মুছে বলল,

— ” প্রথমবার মন থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভুল করবো না। আজ যখন অনির ওরকম অবস্হা হলো ঠিক তখনি বুঝতে পেরেছি ভালোবাসার মানুষটার ভালো থাকাই সবচেয়ে বেশি ইমপর্টেন্ট আর কিছু না। ও আদ্রিয়ানের সাথে ভালো থাকবে এটাই বড় কথা। আমি নাহয় ওয়ান সাইডার লাভার হয়েই জীবণটা কাটিয়ে দেবো। এতো বছর ধরে ভালোবেসেছি ঠিকি কিন্তু ভালোবাসার আসল মানেটা আজকে বুঝেছি। আর আমি চাই ও ভালো থাকুক। ও ভালো আছে এটুকু জেনেই নিজে ভালো থাকার চেষ্টা করবো। কী করবো সবকিছুতো সবার ভাগ্যে থাকেনা। আর আমিতো নিজের দোষেই নিজের ভাগ্যকে হারিয়ে ফেলেছি।

#চলবে…

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here