#আমায়_একটু_ভালবেসো
#জান্নাতুল_ফেরদৌস_কেয়া
(১২)
অর্ণা শুধু চোখ দুটো দিয়ে চেয়ে আছে। মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না।মা-বাবার মুখটা চোখের সামনে ভাসছে। অর্ণা নিজেকে ধিক্কার দিল।কোনো সে দুদিনের পরিচিত মেয়ের সাথে আসতে গেল।
,জরুরী কিছু কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিল ওয়াহিদ চৌধুরী। পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় বেশ ধীর গতিতে গাড়ি চলছে। রাত খুব একটা বেশি হয়নি। তবুও মনে হচ্ছে অনেক রাত। গাড়িটা আরেকটু এগোতেই। সামনে একটা গাড়ি থেমে থাকতে দেখা গেল।
ওয়াহিদ সাহেব অবাক হলো। সচারাচর এই জায়গা গুলোতে কোনো গাড়ি থামে না।কারণ এখানে ডা কা তের উৎপাত অনেক বেশি। আর যারা থামায় তারা হয় বখাটে ছেলে।
একটা গাড়ির আসছে দেখে ওরা ঘাবড়ে যায়। সবাই একদম চুপ মে রে যায়। অর্ণা যেন আশার আলো দেখে। বাম হাতের রশিটা খুলে, মুখে থাকা টেপটা আস্তে করে খুলে।
মনে,মনে অপেক্ষা করে কখন গাড়িটা কাছে আসবে। অর্ণার বেঁচে যাওয়ার এটায় শেষ উপায়। একবার যদি ভুল হয় তবে আর বাঁচতে পারবে না।
ওয়াহিদ চৌধুরীর গাড়িটা যখন অর্ণাদের গাড়ির মাঝ বরাবর এলো,তখনই নিজের শরীরের সব শ ক্তি দিয়ে চি ৎ কার করলো।
অর্ণার চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি তার মুখ চেপে ধরলো নাঈম। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ওয়াহিদ সাহেব কারো চিৎকারের আওয়াজ পেয়ে দ্রুত গাড়ি থেকে নামলো।তার সাথে, সাথে তার দুজন দেহর ক্ষী ও নেমে পড়লো।
অর্ণা নাঈমের হাতে জোরে একটা কা,ম,ড় মারলো।নাঈম মাগো,মাগো বলে অর্ণার মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিল।অর্ণা আরো জোরে চিৎকার করলো,
,কেউ আছেন? প্লিজ সাহায্য করুন। এরা আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে!
একটা ছেলে এসে অর্ণার গালে থা প্পড় মা র লো।সে ছিঁটকে গিয়ে বেঞ্চের সাথে বারি খেয়ে নিচে পড়লো।
ওয়াহিদ সাহেব গাড়ির দরজা ধরে ধাক্কাতে লাগলো। তার দুই বডিগার্ড এসে ড্রাইবারের কলার ধরে নিচে নামলো।
,এই ওদের কে বল, পিছনের দরজা খুলতে। আর নয়তো এই রিভালবারের সবকটা বু লে ট তোর মাথায় ঢুকবে।
ওয়াহিদ সাহেব একহাত দিয়ে দরজা ধাক্কাচ্ছে, অপরহাত দিয়ে পুলিশ স্টেশনে ফোন করলো।
চেয়ারম্যানের ফোন পেয়ে সেই থানার ওসি। দ্রুত টিম নিয়ে রওনা হলো।
অবস্থা বেগতিক। দরজা এমন ভাবে ধাক্কানো হচ্ছে। যে মনে হয় এখুনি তা ভে ঙে যাবে।
কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে। জুথি দরজাটা খুলে দিল।
ততক্ষণে পুলিশ এসে উপস্থিত হয়েছে। ওয়াহিদ সাহেব অর্ণাকে গাড়ি থেকে নামালো। মেয়েটার ঠোঁট বেয়ে র ক্ত পড়ছে। কপালের একপাশটা ফুঁলে গেছে।
,ওসি সাহেব। আপনি এদের কে নিয়ে চলে যান। কাল সকালে এসে সব কিছু শুনবো। আর হ্যা এরা কেউ যাতে ছাড়া না পায়।
,জ্বি স্যার।
পুলিশ ওদেকে নিয়ে চলে গেল। ওয়াহিদ সাহেব দেখলেন,অর্ণা অবস্থা খুব একটা ভালো না। তাই তিনি সিদ্ধান্তে নিলেন। আগে বাড়িতে যাবেন। তারপর মেয়েটার থেকে সবকিছু বিস্তারিত শুনবেন।
অর্ণাকে নিয়ে গাড়িতে তোলা হলো।
সে গাড়ির সিটে গা এলিয়ে দিল।ক্লান্তিতে তার দেহ ভে ঙে আসছে। এমন ঘটনার স্বীকার। জীবনে এই প্রথম।
চৌধুরী বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামতেই। ওয়াহিদ সাহেব নেমে পড়লো।
ভিতরে গিয়ে ছোট মেয়ে তানিয়া কে পাঠালো। অর্ণা ধরে নিয়ে যেতে। তানিয়া এসে অর্ণার হাত ধরে ভিতরে নিয়ে গেল ।
বাড়ির সবাই ড্রয়িংরুমে বসে আছে। অর্ণাকে নিয়ে একটা সোফায় বসানো হলো।
ওয়াহিদ সাহেবের বড় ভাই জিজ্ঞেস করলো,
,এই মেয়েটা কে ওয়াহিদ?কোথায় পেলে তাকে?
ওয়াহিদ সাহেব সমস্ত ঘটনা খুলে বললো।শুরুর তারা খুবই দুঃখ প্রকাশ করলো।
চুলগুলো সামনে এসে থাকার কারণে কেউ অর্ণার মুখ দেখতে পারছিল না।
তানিয়া যখন চুলগুলোকে খোঁপা করে দিল। তখন সবাই অবাক চোখে তাকালো।
,আরে ও তো, নাজমুল সাহেবের বউ মারিয়া বেগমে ভাইজী।ঐদিন যে তাহমিদ এ ক্সি ডেন্ট হলো। ওরাই তো বাঁচালো।
তাহমিদের ছোট চাচির কথায় সবাই অর্ণার দিকে তাকালো।
,হ্যা ওই মেয়েটায় তো।
ওয়াহিদ সাহেব সবাইকে শান্ত করলো,
,আচ্ছা ঠিক আছে। তোমরা সবাই চুপ করো। মা তোমার নাম কি?
অর্ণা দূর্বল কন্ঠে বলল,
,অর্ণা আহমেদ।
,তোমার সাথে কি হয়েছিল, তা কি এখন বলতে পারবে?
অর্ণা মাথা দুলালো।তারপর একে,একে বলতে লাগলো, কি থেকে কি হয়েছে।
অর্ণার কথা শুনে সবাই অর্ণাকে শাসন করতে লাগলো,
,হ্যা এরকম কেউ করে। চেনা নেই,জানা নেই।একটা অপরিচিত মেয়ে বলল, আর তুমি চলে গেল।
,তোমার এই একটা ভুলের কারণে, এখন তোমার প্রান দিতে হতো৷ সেই খেয়াল আছে।
,আর কখনো এমন করো না। এখন থেকে সাবধানে চলাফেরা করবে।
,আহ্ তোমরা কি শুরু করে দিয়েছো। মেয়েটাকে এভাবে বলছো কেন? ও তো আর বেশি বড় হয়ে যায়নি। যে সব বিষয় বুঝে ফেলবে। মা তুমি কিছু মনে করো না। ওরা তোমার ভালোর জন্য বলছে (ওয়াহিদ সাহেব)
,না,না আংকেল! আমি কিছু মনে করিনি।
মারিয়া বেগম কে ফোন দিয়ে সব জানানো হ’য়েছে। খবর পেয়ে তিনি ছুটে এসেছে ভাইজীর কাছে। অর্ণা দুই হাত ধরে অঝোরে কাঁদছে তিনি। আর বিলাপ করেছেন,
,আজ যদি তোর কিছু হয়ে যেত। তবে কি জবাব দিতাম আমি ভাইয়ের কাছে।সন্ধ্যা থেকে কতগুলো কল দিয়েছি তোকে। ফোন ধরছিস না দেখে কলেজে গিয়েছি।সেখানে ও নেই। তারপর কত জায়গায় যে খুঁজেছি। কিন্তু কোনো হদিস পায়নি । চিন্তায় অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম।
অর্ণা মারিয়া বেগম কে শান্ত করলো। ওয়াহিদ সাহেব আর এতো রাতে তাদের বাড়ি ফিরতে দিল না। তাদের বাড়িতে রেখে দিল।
গভীর রাত। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে সবাই শুয়ে পড়েছে। অর্ণা আর মারিয়া বেগম একসাথে ঘুমিয়েছে। হঠাৎ অর্ণাদের রুমে একটা জানালা খুলে গেল। তা দিয়ে কেউ একজন রুমে প্রবেশ করলো। অর্ণা সামনে দাঁড়িয়ে কি যেন বিরবির করে বলল।তারপর আবার চলে গেল। যাবার আগে অর্ণার হাতের কাছে একটা কাগজ রেখে গেল।
প্রচন্ড ভ য় পাবার কারণে।রাতেই গা কাঁপিয়ে জ্বর এলো অর্ণার গায়ে। ভোর রাতের দিকে জ্বরের ঘোরে আবলতাবল বলতে লাগলো। মারিয়া বেগমের ঘুম ভেঙে গেল। অর্ণার এই অবস্থা দেখে। তিনি জলদি মাথায় পানি ঢালতে লাগলো। পানি ঢালার কারণে জ্বর বেশ কমে গেল। অর্ণা পিটপিট করে তাকালো। মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে। সে উঠে বসলো।
,কি হয়েছে অর্ণা?পানি খাবি?
অর্ণা উপর-নীচ মাথা দুলালো।মারিয়া বেগম পানি আনতে গেল।এতকিছুর মাঝে ও চিঠি টা মারিয়া বেগম দেখতে পায়নি। আসলে অর্ণার জ্বর দেখে তার মাথা এলোমেলো হয়ে গেছে। তাই কি থেকে কি করবে। তা বুঝে উঠতে পারছিলনা। মারিয়া বেগম চলে যাবার পর, অর্ণার চোখ পড়লো ফ্লোরে পড়ে থাকা কাগজটার উপর। সে হাত বাড়িয়ে সেটা তুলে নিল। অর্ণা চিঠিটা খুলতেই দেখলো, সেখানে লেখা,
“প্রেয়সী! রা গ করবেন না আপনি। জানি ওরা অনেক কষ্ট দিয়েছে আপনাকে।
আপনি চিন্তা করবেন না। খুব শ্রীঘই আমার কাছে নিয়ে আসবো আপনাকে তখন আর কেউ আচড় ও লাগাতে পারবে না আপনার গায়ে। আর যারা আপনার এই অবস্থা করেছে। তাদের একটাকে ও ছাড়বো না আমি। ভালো থাকবেন। আর নিজের যত্ন নিবেন।
চলবে,,#আমায়_একটু_ভালবেসো
#জান্নাতুল_ফেরদৌস_কেয়া
(১৩)
পরদিন সকালে অর্ণারা তাদের বাড়িতে ফিরলো। অর্ণা আর মারিয়া বেগম যখন গেট দিয়ে বের হচ্ছিল। তখন তাহমিদ কে দেখা যায় বাড়িতে প্রবেশ করতে। অর্ণাদের দিকে একবার তাকিয়ে, তারপর গটগট করে বাড়ির ভিতরে চলে গেল।
অর্ণার আজকাল কিছুই ভালো লাগে না। বাড়ি থেকে বের হয়না আর। কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বাড়িতে যা পড়ার পড়ে। অর্ণা বিষন্ন মুখে ছাদে বসে আছে। এখান থেকে পাহাড়ের সারিগুলো দেখা যায়। দেখতে চমৎকার লাগে। তবে এইসবে আর মন ভালো হয় না অর্ণা। নিজের প্রতি বিরক্ত এখন। মাঝে মাঝে মনে চাই, শেষ করে দেই নিজেকে।
নিচ থেকে মারিয়া বেগম চেঁচিয়ে ডাকছে। অর্ণা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ওঠে দাঁড়ালো। নিচে যেতে হবে।
নিচে নামতেই বেশ অবাক হলো অর্ণা। আশোক সাহেব আর পাপিয়া বেগম এসেছে। মা-বাবা কে দেখে,দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো তাদের।
আশোক সাহেব মেয়ের মাথায় হাত রেখে বলল,
,কেমন আছো মা?
বাবার স্নেহময় আদরে হু,হু করে কেঁদে ফেলল অর্ণা। পাপিয়া বেগম মেয়ে কে জড়িয়ে ধরলো।
,কাঁদছো কেন অর্ণা! আমরা তো এসে পড়েছি তাই না। কান্না থামাও! একটু হাসো।
অর্ণা হাসলো। প্রান খোলা হাসি। কতদিন পর যে এমন করে হাসছে, তা অর্ণা নিজেও জানে না।
সারাদিন বাবা-মায়ের সাথে গল্প করেই দিন গেল অর্ণা।
রাতে ঘুমুতে যাবে এমন সময় আশোক সাহেব এলো মেয়ের রুমে।
,অর্ণা মা কি করছিস?
,কিছু না বাবা। ব্যস্ ঘুমানোর জন্য বিছানা তৈরি করছি।
,ওহ আচ্ছা।
অর্ণা বিছানা ঝাড়তে,ঝাড়তে বলল,
,কিছু বলবে বাবা?
আশোক সাহেব কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে । তা দেখে অর্ণা বলল,
,এমন করছো কেন বাবা?বল না কি হয়েছে!
,না আসলে, আমাদের তো বয়স হয়েছে রে মা। আমরা তো আর সারাজীবন বেঁচে থাকবে না, তোদের দেখে রাখার জন্য। তাই না?
,হ্যা! কিন্তু এই কথা এখন বলছো কেন?
আশোক সাহেব ঘামতে লাগলো। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। তিনি পানি খেয়ে গলা ভিজালো।অর্ণা বাবার এহেন আচরণ দেখে, অবাক না হয়ে পারলো না। আশোক সাহেবের হাত ধরে বিছানায় বসালো। তারপর নরম সুরে বলল,
,ও বাবা!তুমি এমন করছো কেন?আমায় বলো কি হয়েছে। কারো কি কিছু হয়েছে। বাড়ির সবার শরীর ভালো তো। তখন তোমায় জিজ্ঞাসা করলাম, হঠাৎ কি কারণে এসেছে! তুমি তো কিছু বললে না।
আশোক সাহেব এবার ভরসা পেলেন। মেয়ের হাতটা শক্ত করে ধরে বলল,
,অর্ণা, সেই ছোট থেকে আজ অব্দি তোমাদের কোনো ইচ্ছে অপূর্ণ রেখেছি?অর্ণা মাথা দুলালো। যার অর্থ,না।
,আমি আজ তোমার কাছে একটা জিনিস আবদার করবো।তুমি কি আমার সেই আবদার রাখবে?
,কি আবদার বলো না বাবা?
,না আগে বল রাখবে?
,আচ্ছা ঠিক আছে রাখবো! এবার তো বলো কি?
,দেখো মা,তোমার মায়ের শরীরটাও ভালো না। হার্টের প্রব্লেম দেখা দিয়েছে। এদিকে আমার শরীরও ভালো থাকে না। পর্ণাকে তো বিয়ে দিয়ে ফেলেছি।এবার তোমার পালা। আমি চাই এখন তোমাকে একটা যোগ্য পাত্র দেখে বিয়ে দিতে।
আশোক সাহেবের কথা শুনে, স্তব্ধ হয়ে গেল অর্ণা। কি বলবে ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না। বাবার মুখের উপর কোনো কথা বলার সাহস হচ্ছে না অর্ণার। সে মাথাটা নত করে ফেলল।আশোক সাহেব বিচলিত কন্ঠে বলল,
,না মা। তুমি যদি না চাও, তবে জোর করবো না আমি। আমি তো প্রথমেই বলেছি,যে আমি একটা আবদার রাখবো। এর বেশি কিছু না।
অর্ণা নিজেকে শান্ত করলো। বাবা-মা যে তার খা রা প চায় না। তা সে ভালো করেই জানে । তাই কম্পিত কণ্ঠে বলল,
,তোমার আবদার আমি রাখবো বাবা! তুমি যা বলবে তাই।
আশোক সাহেব যেন এই কথারই অপেক্ষায় ছিল। মেয়ের কথা শুনে, খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলেন।
,কই গো অর্ণা মা। দেখে যাও, আমার অর্ণা আমার কথা রেখেছে। তুমি তো বলেছিলে, মেয়ে আমার কথা রাখবে না। এখন দেখো কি হয়েছে।
পাপিয়া বেগম, আর মারিয়া বেগম দরজার আড়ালেই ছিল। অর্ণার কথা শুনে তারাও বেরিয়ে এলো। মারিয়া বেগম অর্ণাকে জড়িয়ে ধরলো। আজ সবাই খুশি। বিয়ে দিলে অন্তত মেয়েটা সুখে থাকবে।
আশোক সাহেব, তার তিন ভাই কে ফোন করে আসতে বলে দিয়েছে। কাল অর্ণাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে। অর্ণা অবাক হচ্ছে এদের কর্মকান্ড দেখে। এখন বুঝতে পারছে, যে এসব আগে থেকে প্ল্যান করা। শুধু অর্ণার মতামতের জন্য এসব।
রাত বাড়তেই সবাই যে যার রুমে চলে গেল। মারিয়া বেগম থাকতে চেয়েছিল, অর্ণার সাথে। কিন্তু সে মানা করে দিয়েছে।
গভীর রাত। অর্ণার চোখে ঘুম নেয়।সে বারান্দার দোলনায় বসে, আকাশের তারা দেখছে। হঠাৎই তার মাথায় এলো, সেদিনের চিঠিটার কথা। ওই দিনের পর আর চিঠি আসেনি। অর্ণা ভেবেছিল, লোকটা হয়তো মজা করছিল। কিন্তু এখন বুঝতে পারছে সব। আচ্ছা ঐ লোকটার সাথেই কি বিয়ে হবে আমার? অর্ণা চিন্তায় মশগুল। দুইয়ে, দুইয়ে চার যেন মিলে গেল।
পরদিন খুব ভোর থেকে, কাজ শুরু করে দিল পাপিয়া,ও মারিয়া বেগম। বিভিন্ন পদের রান্না হচ্ছে। বাড়িতে উৎসব, উৎসব আমেজ।মারিয়া বেগমের মেয়ে ও এসেছে বিদেশ থেকে। আসলে তার বাড়িতে আসার তারিখ আজকেই ছিল।
অর্ণার ঘুম ভাঙলো নয়টায়। ঘড়িতে নজর দিতেই তার চোখ চড়কগাছ। এত বেলা হয়ে গেছে, তা খেয়াল করেনি। দ্রুত তৈরি হয়ে নিচে এলো। নিচে আসতেই দেখলো, তার কাকা-জেঠারা নিচে বসে আড্ডা দিচ্ছে। অর্ণার মন ভালো হয়ে গেল । আজ কতদিন পর সবাই কে একসাথে দেখছে।
হঠাৎই কেউ পেছন থেকে চোখ বন্ধ করে ধরলো অর্ণার,,,
চলবে,,,