এ শহরে তুমি নেমে এসো পর্ব -১১+১২+১৩

#এ_শহরে_তুমি_নেমে_এসো 💚
#ইফা_আমহৃদ
পর্ব: ১১

ডাক্তার সাহেব এসেছেন। দরজায় করাঘাত দিচ্ছে। মিহি পোশাক ঝেড়ে গেল দরজা খুলতে। পেরিয়ে গেল কিছু মুহুর্ত। পাশের ঘর থেকে অতিপরিচিত কণ্ঠস্বর শ্রবণ হলো কর্ণপথে। এদিক ওদিক তাকিয়ে নেমে গেলাম গ্রিল হতে। ছোটো ছোটো পা ফেলে অগ্রসর হলাম পাশের ঘরে। দরজা দিয়ে উঁকি দিতেই একটি ছেলেকে দেখতে পেলাম। হালকা গোলাপি রঙের শার্ট, বলিষ্ঠ পুরুষালি শরীর। মাথায় ওড়না টেনে সরে গেলাম। ছেলেটি বেরিয়ে গেল চঞ্চল পায়ে। চিন্তিত লাগল বেশ। ছুটে গেলাম জানালার নিকট। ভয় এক সেকেন্ডে উধাও হয়েছে। সিএনজি ডেকে উঠে যাওয়ার পূর্বে দেখা গেল তার মুখশ্রীর অংশ বিশেষ। ওষ্ঠদ্বয় মৃদু নাড়িয়ে বললাম, “অপূর্ব ভাই।” পরক্ষণেই উচ্চ স্বরে ডাক দিলাম। ততক্ষণে গতিশীল হয়েছে সিএনজি। আমার নম্র ভদ্র গলার আওয়াজ ছয় তলা হতে নিচ তলায় পৌঁছায়নি। দ্রুত গতিতে ছুটে গেলাম নিচে। সিঁড়ি পেরিয়ে নেমে গেলাম রাস্তায়। সিএনজি অদৃশ্য, বহুদূরে। পুনরায় ছুটে এলাম। সিঁড়ি পেরিয়ে উঠলাম ঘরে। হাঁটুতে ভর দিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বললাম, “অপূর্ব ভাই এখানে কেন এসেছিলেন?”

মিহি সন্দিহান গলায় বলে, “কোন অপূর্ব ভাই?”

“একটু আগে ফুফুকে দেখল না? ডাক্তার। সে।”

“মাকে দেখতে এসেছে। বলেছিলাম না, ডাক্তার আসবে?”

“আমি তার কাছে যাবো। প্লীজ ঠিকানাটা দিন আমায়।”

মিহি আমার কথায় উত্তেজিত হয়ে উঠল। হাত টেনে বিছানায় বসিয়ে বলে, “শান্ত হও। আমাদের ব্যাপারটা খুলে বলো। তুমি যাকে খুঁজতে ট্রেনে উঠেছিল, সেই ডাক্তার অপূর্ব আহসান?”

“হম। আমার অপূর্ব ভাই। ঠিকানাটা দিন প্লীজ।” মিহি আমায় অপূর্ব ভাইয়ের ঠিকানা লিখে দিল। পৌঁছাতে পারব কি-না জিজ্ঞাসা করল। আমি সায় দিলাম। গোসল সেরে মিহি-র পোশাক পরিধান করেছিলাম। পাল্টে নিজের পোশাক পরিধান করলাম। অতঃপর বেরিয়ে গেলাম চেম্বারের উদ্দেশ্য। মিহি কিছু টাকা দিল আমায়।

সিএনজিতে চড়ে কাগজের লেখাটা পড়ে বললাম, “শাপলা চত্বরে হুমাইরা ক্লিনিকে যাবো।”

ড্রাইভার ক্লিনিকের উদ্দেশ্য যাত্রা আরম্ভ করল। উত্তেজিত হয়ে হিম হাত জোড়া ঘসতে ঘসতে উষ্ণ করে ফেললাম। সিটের উপর ‘আর্দশলিপি’ একটি বই পেলাম। আমার শৈশবের প্রথম পড়া শুরু। বইটা হাতের মুঠোয় নিয়ে বসলাম। গাড়ি থামল দোতলা একটি ক্লিনিকের সামনে। পঞ্চাশ টাকা ভাড়া মিটিয়ে নেমে গেলাম গাড়ি থেকে। মধ্য বয়স্ক একজন লোকজন লোক আমার দেখে পথ আটকে দাঁড়ালেন। মাটি রঙের পুলিশি পোশাক পরণে। আমাকে ধরে নিয়ে যাবে না-তো? থমথমে গলায় বলেন, “কাকে চাই? কোন ডাক্তার?”

হাতের দুপিঠ দেখিয়ে বললাম, “ডাক্তার দেখাতে আসিনি। মনো চিকিৎসক অপূর্ব আহসান আমার ভাই হয়। তার সাথে দেখা করতে এসেছি। একটু বলুন না আমি এসেছি?”

“অপূর্ব স্যার এখানে একা থাকেন। তার পরিবার গ্ৰামে থাকে। আপনি তার সাথে একটা শর্তে দেখা করতে পারবেন। রোগী দেখার সিরিয়াল চলছে। চার্জ দিয়ে সিরিয়াল কে/টে দেখা করতে পারবেন।”

চার্জ? কৌতুহল নিয়ে বললাম, “চার্জ কী?”

“তার ফি। পাঁচশত লাগবে। আছে?” মুঠো করা হাত খুলে দেখলাম। দুটো একশত টাকার কচকচে নোটস। উপরে ব্রীজ। ভেতরে যাওয়ার প্রয়োজন। একবার অপূর্ব ভাইয়ের কাছে পৌঁছাতে পারলেই হয়। সম্মতি দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলাম। সিটে বসে অতিবাহিত করলাম কিছু মুহুর্ত। অপূর্ব ভাইয়ের চেম্বারের দিকে এক পা এগুলে মহিলারা চ্যাঁচিয়ে বলে, “এই মেয়ে তোমার সিরিয়াল কত? সিরিয়ালে দাঁড়াও। আগে আমার সিরিয়াল?”

কিছুক্ষণ একা একা হাঁটাহাঁটি করে দিলাম এক দৌড়। দরজা খুলে প্রবেশ করলাম ভেতরে। সাদা অ্যাপ্রোন পরিহিতা একজন ডাক্তার বসা। আমাকে দেখামাত্র বললেন, “বসুন। বলুন আপনার সমস্যা?”

অ্যাসিস্ট্যান্ট ছেলেটি মাথানত করে বলে, “স্যার মেয়েটি সিরিয়াল কা/টে নি। সোজা ঢুকে এসেছে।”

“সিরিয়াল কা/টেননি কেন?”

“ডাক্তার সাহেব-কে আমার অতি প্রয়োজন। কোথায় তিনি?”

ডাক্তার হেসে বললেন, “আমিই ডাক্তার বলুন আপনার সমস্যা। বসুন। আপনার মতো একটা বাচ্চার কাছ থেকে চার্জ নাইবা নিলাম। সমস্যার কথা বলুন।”

হাতে আদর্শলিপি বইটা এগিয়ে দিয়ে বললাম, “আমি আরু অপূর্ব ভাইয়ের সাথে দেখা করতে এসেছি। প্লীজ তাকে ডেকে দিন।”

বেজায় বিরক্ত সে। রাগান্বিত হয়ে আদেশ করেন, “আউট। গেট আইট। বের হয়ে যান। দাড়োয়ান-কে বলুন যাকে তাকে ঢুকতে না দেয়”

এসিস্ট্যান্ট আমাকে ধমক দিল, “যান। স্যার রেগে যাচ্ছেন। আপনাকে কিন্তু পুলিশে দিবেন।”

ফিচেল হেসে বেরিয়ে গেলাম। সারিবদ্ধ গাছের নিচে বসে পড়লাম। এশার আযানে মুখরিত চারপাশ। বুকের ভেতরে অনুভব করছি অদৃশ্য ভয়। অন্তরে হাহাকার। তারা কি‌ আমায় ভুল ঠিকানা দিল? না-কি সিএনজি ড্রাইভার দিলেন। মিহিদের বাড়ির ঠিকানাটাও নেই, কোথায় যাবো এতরাতে?

ব্যস্ত রাস্তা দিয়ে গাড়ি দ্রুত গতিতে অতিক্রম করছে। লোকজন ফুটপাত দিয়ে যাচ্ছে। আমার খবর নেই কারো। হাঁটা ধরলাম আপন মনে। চোখজোড়া ছলছলিয়ে উঠেছে। নিজেকে অসহায় লাগছে। স্টেশনে যাবো। হাঁটতে হাঁটতে সন্ধান পেলাম নদীর। লঞ্চ চলাচল করছে। নদীর পাশ ঘেঁষে সরু ব্রীজ। রেলিং-এ উঠে বসলাম। পানির তৃষ্ণা অনুভব করলাম। হাতের করতলে নিয়ে এক ঢোক পান করে তৃষ্ণা মেটালাম। বিকট শব্দ শোনা গেল। অন্তরাত্মা কেঁপে উঠল। ঠকঠক করে কেঁপে উঠলাম। কানে হাত দিয়ে আর্তনাদ করে উঠলাম, “আহ্!”

নদীর জলে ধপাস করে ফেলল কাউকে। একটি জীবন্ত প্রাণ। ডুবে গেল অবিলম্বে। বেশ কয়েকজন যুবক। আমাকে দেখে হতভম্ব তাঁরা। চ্যাঁচিয়ে বলে, “ধর মেয়েটিকে। তন্ময়-কে মা/রার সাক্ষী মেয়েটি।”

ছুটে এগিয়ে এলো একদল যুবক। আমি দৌড় আরম্ভ করলাম। পায়ে সত্তর টাকা দামের স্যান্ডেল। কিছুটা পথ অতিক্রম করতেই ছিঁ/ড়ে গেল। জুতো জোড়া রাস্তায় ফেলে সালোয়ার উঁচু করে দ্রুত গতিতে ছুটলাম। রাত তখন এগারোটা ছাড়িয়েছে। নির্জন পথঘাট। পেছন থেকে মুঠো করে ধরল চুলের মুঠি। টান দিল। মুখ থুবড়ে গাছের সাথে আঘাত পেলাম। মাথা ঘুরে উঠল। টেনে তুলে দাঁড় করালো। মা/তালদের ন্যায় ভারসাম্য হারিয়ে টলছি। পরপর বসিয়ে দিল দুই চ/ড়। গাছের সাথে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছি। গাল জোড়া অগ্নিরুদ্ধ। মাটিতে ফেলে এবড়ো থেবড়ো লা/থি দেওয়া শুরু করল। হাতে ছিল মোটা লা/ঠি। বাদ যায়নি দেহ। আ/ঘা/তগুলোতে জর্জরিত দেহ। ব্যথায় গোঙানি শুনতে লাগলাম। শহরের মানুষের মনে দয়া মায়া হয়না? ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে ধরল গলা। গলায় হাত দিয়ে কাঁ/টা মুরগির মতো ঝটপট করতে লাগলাম। শ্বাস কষ্ট শুধু হলো। কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম হলো নেত্রযুগল। জীবনের শেষ বুঝি এখানেই।

তীর্যক আলোর রেখা পতিত হলো মুখশ্রীতে। কুঁচকে গেল চোখ মুখ। যুবকেরা ছুটে গেল অদূরে। ঝাঁপসা চোখে অবলোকন করলাম সবকিছু। কাশি উঠল। গাড়িটা চা/পা দিয়ে যাবে বুঝি এক্ষুনি। তেমন কিছু ঘটল না। সামনে থামল, নিকটে এসে। সুদর্শন সুপুরুষ নেমে এলো গাড়ি হতে। মাথাটা আলতো কোলে নিল। উৎকণ্ঠার সাথে প্রকাশ করল, “আরু, তুই? তুই এখানে কী করছিস? বাড়ির সবাই তোর জন্য কত চিন্তা করছে, আর তুই এখানে?”

হাতটা বন্ধনহীন শক্তির চেপে ধরে বললাম, “অ..পূ..র্ব ভা..ই।”

অতঃপর চেতনাশক্তি হ্রাস পেল। পুরোপুরি হারালো না। ক্ষণে ক্ষণে কাশি ছাড়া অপূর্ব ভাই ডেকেও সাড়া পেলেন না আমার। পাঁজাকোলা করে চলল গাড়ির ভেতর। মুখে পানির ঝাপটা দিল। ওষ্ঠদ্বয়ের মধ্যিখান দিয়ে পানি গলিয়ে দিলেন ভেতরে। গালে হাত রেখে উদাসীন হয়ে বললেন, “আরু শুনতে পারছিস? তাকিয়ে দেখ পাখি। এইতো আমি।”

[চলবে.. ইন শা আল্লাহ]

রেসপন্স করার অনুরোধ রইল#এ_শহরে_তুমি_নেমে_এসো 💚
#ইফা_আমহৃদ
পর্ব: ১২

“অপূর্ব ভাই, আপনি এসেছেন? কোথায় ছিলেন আপনি?” ভেঙে ভেঙে উচ্চারণ করলাম প্রতিটি বর্ণ। অপূর্ব ভাই কিছুক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললেন, “এই তো আমি। শান্ত হ।”

একটু এগিয়ে ঠেস দিয়ে বসলাম তার বুকের সাথে। যেখান থেকে হৃৎপিণ্ডের রক্ত চলাচল শ্রবণ হয়। গলায় হাত বুলিয়ে বললাম, “এখানে খুব ব্যথা করছে অপূর্ব ভাই।”

“বেশ হয়েছে। এসেছিলি কেন?” দৃঢ় কণ্ঠে বললেন অপূর্ব ভাই। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে সরে আসার প্রয়াস করলাম। ওড়না খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠলাম। নেই। গাড়ির দরজা ঠেলে নামার প্রচেষ্টা করলাম। দরজাই খুলতে পারছি না। রাগান্বিত গলায় বললাম, “অপূর্ব ভাই ফাঁক কোথায়? আমি নামব।”

“নেমে কী করবি? নড়তেই তো পারছিস না। ছেলেরা ওখানে ওঁত পেতে আছে। যা!”

কাঁচুমাচু মুখ করে বসে রইলাম। ঠান্ডায় ব্লেজার জ্যাকেট খুলে আমার শরীরে পরিয়ে দিলেন। আলতো করে গলায় হাত বুলিয়ে বললেন, “বাড়িতে চল। তখন দেখব কোথায় ব্যথা পেয়েছিস।”

আলতো ঝুঁকে এলেন। সিট বেল্ট লাগিয়ে দিলেন। হৃৎপিণ্ডের থুকপুকানির শব্দ গানের তালে বেজে যাচ্ছে। মৃদু স্বরে বললাম, “অপূর্ব ভাই আপনি তো মনের ডাক্তার। আপনি কাছে এলে হৃৎপিণ্ডের রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকে না। কেন এমন হয়, বলুন না?”

অপূর্ব ভাই ‘এসির’ মতো যন্ত্রটা চালু করলেন। ঠান্ডায় শরীরের ব্যথায় বরফের মতো কাজ করল। গাড়ি চলল নিজ গতিতে। অপূর্ব ভাই একহাতে জড়িয়ে নিয়ে বলেন, “আল্লাহ আমাদের সবাইকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন। আদম (আঃ) থেকে চলছে। আমার পাঁজর দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে এক রমনী। হয়তো সে তুই। তাই এমন অদ্ভুত শিহরণ অনুভব করিস।”
___

পরণের পোশাক ছিঁড়ে হয়েছে কয়েক টুকরো। জায়গায় জায়গায় ছিঁ/ড়েছে। নড়তে পারছি না ব্যথায়। অপূর্ব ভাই ধূসর রঙের ট্রাউজার ও টি শার্ট এনে দিলেন। বললেন, “পাশের ফ্লাটের আপাকে বলেছি। তিনি তোকে সাহায্য করবে। তাড়াতাড়ি গোসল করে পোশাক পাল্টে নে।”

“না। এই ঠান্ডার ভেতরে গোসল করতে পারব না।”

“তাহলে ঠান্ডার ভেতরে নিচে শুয়ে পড়। শরীরে ময়লা আবর্জনার অন্ত নেই। আমার বিছানা নষ্ট করতে পারব না।”

পাশের ঘর থেকে এক তরুণী ও মধ্য বয়স্ক মহিলা এলো। আমাকে দেখিয়ে অপূর্ব ভাই বললেন, “ও আমার ফুফাতো বোন। গোসল করে একটু শেক দিয়ে দিয়েন।”

দুজন আমাকে ধরে ধরে ওয়াশরুমে নিয়ে গেল। ক্লান্ত শরীর নিয়ে সবকিছু নজরবন্দি করলাম। অসম্ভব সুন্দর সবকিছু। সাদা রঙের শক্ত বস্তু দেয়ালে। আঙুলের ইশারায় বললাম, “ওগুলোকে কী বলে?”

“টাইলস।”

সাদা রঙের ডোবার ভেতরে বসতে দিল। পানি গুলো গরম। এমন ডোবায় গরম পানি থাকলে প্রতিদিন গোসল করতাম আমি। বড়ো বড়ো চোখ করে বললাম, “এই ডোবা কোথায় পাওয়া যায়? আমি গ্ৰামে নিবো।”

“এটা ডোবা না, বাথটাব। অপূর্বকে বলো, তোমাকে গ্ৰামে দিয়ে আসবে। আপাতত চুপ থাকো।”
বলেই তারা নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল। দশ মিনিটে গোসল সেরে বিছানায় এসে শুয়ে পড়লাম। গরম পানিতে শেক দিলেন। ব্যথা নিমজ্জিত হয়েছে। রাত বাড়ছে। তারা ঘরে গেলেন। অপূর্ব ভাই খাবারের থালা নিয়ে আসলেন। লাল শাক ও ঢেড়স। আমাকে উঠিয়ে নিলেন। পেছনে বালিস রেখে আধশোয়া করে রাখলেন। এক লোকমা মুখে তুলে বললেন, “বিকেলে আমার চেম্বারে গিয়েছিলিস?”

গলা ব্যথায় খাবার গিলতে কষ্ট হলো। দু’হাতে গলা ধরে গরম পানি পান করলাম। অপূর্ব ভাই হট ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে বললেন গলায় চেপে রাখতেন। মুঠোফোন বেজে উঠল। নাম্বার চেক করে বললেন, “মা ফোন করেছে। তোর জন্য কাঁদতে কাঁদতে অবস্থা নাজেহাল। কথা বলতে দিলে। গোঙানি না করে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলবি।”

রিসিভ করে কানে ধরলেন, “আসসালামু আলাইকুম মা।”

ওপাশ থেকে বিচলিত কণ্ঠ শোনা গেল, “বাবা আরুকে এখনো পেলাম না। তোর বাবা চাচারা হৈন্য হয়ে খুঁজে চলেছি। আব্বা তো আমাদের রাগারাগী করেছে। কোথায় পাবো।”

“ঢাকায় আছে। আমার সাথে। সে লম্বা ঘটনা। আপাতত কিছু বলতে পারব না। আরুর সাথে কথা বলো।” অপূর্ব ভাই ফোনটা এগিয়ে দিলেন। ইশারায় হাতে নেওয়ার নির্দেশ দিলেন। কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা আয়ত্বে নিয়ে অস্ফুট স্বরে বললাম, “মা-মি।

“আলহামদুলিল্লাহ। খুঁজে পেয়েছি তোকে। না বলে কেউ এতদূর যায়? অপুর সাথে শহরে যাবি আমাদের বললেই হতো। তোর মামারা প্রচুর রেগে আছে।”

বুলি হারিয়ে ফেললাম। এক ফোঁটা অশ্রু বিসর্জন দিলাম। মৃদু স্বরে বললাম, “দুঃখিত মামি। আমি ভুলে ট্রেনে উঠেছিলাম। ট্রেন ছেড়ে দিয়েছিল। নামতে পারিনি। তোমাদের ফোন নাম্বার ছিল না যে জানাবো।”

“এখন কী করছিস?”

“খাচ্ছি। রক্ত ও সর্দি দিয়ে। অপূর্ব ভাই নিজে রান্না করে.. বাক্য শেষ করার পূর্বেই ওয়াক ওয়াক থু থু করে উঠলেন অপূর্ব ভাই। ফোন বিছানায় রেখে ওয়াশরুমে ছুটে গেলেন। এপাশের ঘটনা মামি ওপাশ থেকে অনুমান করতে সক্ষম হলেন। অশান্ত গলায় বললেন, “এখন তুই অপুর কাছে আছিস। উল্টা পাল্টা কথা বলিস না। ও কিন্তু ডাক্তার। মুখ সেলাই করে দিবে।”

মামি লাইন বিচ্ছিন্ন করলেন। জিভ দিয়ে অধর ভিজিয়ে ভীত ঢোক গিলে নিলাম। সেলাই করলে রক্ত ঝরবে। অপূর্ব ভাই ততক্ষণে ফিরে এসেছেন। মাথায় পানি দিয়েছেন। বজ্রকণ্ঠে বলেন, “আমি কী রান্না করেছি? রক্ত? তোর রক্ত রান্না করেছি বুঝি? সর্দি? আলু দিয়ে সর্দি। খেয়েছিস কখনো?”

“ওমা! তুমি ধাঁধা জানো না। মামা বাড়িতে গেলাম রক্ত দিয়ে ভাত খেলাম। এই ধাঁধার সমাধান হচ্ছে লাল শাক। মামা বাড়িতে গেলাম সর্দি দিয়ে ভাত খেলাম। এই ধাঁধার সমাধান হচ্ছে ঢেড়স। বাগান থেকে এলো এক তুঁতে, ভাতে দিল মুতে। এই ধাঁধার সমাধান হচ্ছে..

অপূর্ব ভাই হাত দেখিয়ে বলে, “আমার ধাঁধা লাগবে না। তোর জন্য রাতের খাবার আমার জন্য শেষ। পরবর্তীতে লাল শাক, ঢেড়স কিংবা লেবু খাওয়ার আগে এই কথাটা মনে পড়বে।”

গাছ গাছালির ফাঁক দিয়ে গ্ৰামের সূর্য্যি মামা উঁকি দেয়। কিন্তু শহরে দালান কোঠার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেয়। আলোকিত হয় পৃথিবী। হাই তুলে উঠে বসলাম আমি। জানালার পর্দা সরিয়ে অনুমান করলাম সময়। সূর্য মাথার উপরে অবস্থান করছে। অর্থাৎ মধ্যাহ্ন পেরিয়েছে। বিছানার উপরে একটা চিরকুট পেলাম। উড়ে যেতে না পারে সেজন্য বরাদ্দ করা অপূর্ব ভাইয়ের মুঠোফোন। সময় ১২:৪৫। সাদা রঙের চিরকুট হাতে নিলাম। কাকের ঠ্যাং, বকের ঠ্যাং লিখে রেখেছে। অপূর্ব ভাই আমাকে ভেঙায়, অথচ এতবড় ডাক্তার হয়ে সে ভালোভাবে লিখতে পারে না।

টেবিলের উপর দুটো রুটি ও সবজি ভাজি রাখা। সোফায় শুয়ে খেতে আরম্ভ করলাম। টেলিভিশন চালু করলাম। পাশে একটা রিমোট পেলাম। চ্যানেলের নাম ‘এটিএন বাংলা’ বাহ্! বিটিভির বাইরে কোনো চ্যানেল আছে আজ জানলাম। এড শেষ হতেই দেখতে পেলাম ‘আম্মাজান’ সিনেমা চলছে।

খবর সম্প্রচার শুরু হলো। মেয়েটি পড়ছেন,
ঘড়িতে তখন ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিট। সীমান্তের দুই দিকে তুরস্ক ও সিরিয়ার বাসিন্দারা ঘুমাচ্ছিলেন। এ সময় শক্তিশালী এক ভূমিকম্প আঘাত হানে ওই জনপদে।

ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পের পরে আরও অর্ধশতবার পরাঘাত অনুভূত হয়। ভূমিকম্পে দুই দেশের সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার। বহু মানুষ নিখোঁজ। অসংখ্য ভবন ও অবকাঠামো ধসে পড়েছে। আহত ব্যক্তিদের আহাজারি চলছে হাসপাতালে।”

দরজায় তালা ঝুলিয়ে বের হলাম। হাতে ফোন আর চিরকুট। উদ্দেশ্য মাঠে যাওয়া। গতকাল আমাকে সাহায্য করেছিল সেই মেয়েটিকে পেলাম। সেঁজুতি নাম মেয়েটির। চৌদ্দ তলা বিল্ডিং-এর পুরোটা সিঁড়ি পেরিয়ে নামা অসম্ভব। সেঁজুতি আমায় লিফটে নিয়ে গেল। উঠলাম লিফ্টে। বাটন ক্লিক করে দাঁড়াল। দরজা বন্ধ হতেই দিল এক কাঁপুনি। সমস্ত শরীর কেঁপে উঠল। বসে পড়লাম সেখানে। মাথা ঘুরছে। চিৎকার করে বললাম, “কাঁপা ঘর থেকে আমাকে বের করো। মাথা ঘুরছে। মাগো। ভূমিকম্প হচ্ছে। আমিও মা/রা যাবো।”

[চলবে.. ইন শা আল্লাহ]

রেসপন্স করার অনুরোধ রইল#এ_শহরে_তুমি_নেমে_এসো 💚
#ইফা_আমহৃদ
পর্ব: ১৩

বিছানায় হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে আছি। অপূর্ব ভাই বসে আছেন শিউরে। ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকালাম। মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, “কেমন লাগছে এখন?”

হাতটা খপ করে ধরে ফেললাম। ঠোঁট উল্টে কেঁদে বললাম, “আপনি এসেছেন অপূর্ব ভাই। আমি আপনার সাথে থাকব‌। কোথাও যাবো না। প্লীজ আমাকে নিয়ে যান। ঐ ঘরের সেঁজুতি আপু আমাকে কাঁপা ঘরে আটকে রেখেছিল।”

অপূর্ব ভাই মাথায় হাত দিয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিলেন। অধৈর্য স্বরে বললেন, “ওটা লিফট। যাতায়াতের বাহন। একটু কাঁপুনি দেয়।”

“জানালা নেই কেন?”

অপূর্ব ভাই আমাকে ব্যঙ্গ করে বললেন, “কারণ তোর মতো পা/গ/ল যদি একবার লিফটে উঠে। কাঁপা ঘর মনে করে জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে উপরে চলে যাবে। তাই জানালা নেই।”

বিছানার পাশে কিছু ব্যাগ দেখতে পেলাম। শফিক ফ্যাশন। ব্যাগগুলো নিয়ে বের করলেন জামা কাপড়। নতুন কিছু জামা কাপড়। নেড়েচেড়ে বললাম, “কার এগুলো?”

একটা লাল রঙের থ্রি পিস বের করে বলেন, “তোর। যা লালটা পরে আয়।”

থ্রি পিসের চেয়ে টি শার্টে আরাম লাগছে। মুখ ঘুরিয়ে বললাম, “না! এটাই থাকি। পারলে আপনার টি শার্ট গুলো দিয়ে দিয়েন। বাড়িতে গিয়ে পরব।”

ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই বললাম, ” সেঁজুতি আপুও পরে। তাই বললাম।”
হাতা‌ গুলো বেশ বড়ো। অপূর্ব ভাই ফোল্ড করে দিলেন। সন্দিহান গলায় বলেন, “ব্যথা কমেছে?”

“না, দহলি হয়ে গেছে। আমাদের গ্ৰামে যেমন কোনো কিছু এক যুগ না ধরলে দহলি হয়ে যায়। তেমন হয়েছে।”

“ওষুধ খেয়েছিলি?” ছোটো করে প্রশ্ন করেন। আমতা আমতা করে বললাম, “আসলে হয়েছে কী, ঐ ট্যাবলেট গুলো গলা দিয়ে নিচে নামে না। দহলি হয়ে গেছে। হ্যাঁ সত্যি বলছি।” অপূর্ব ভাই তাকাতেই শেষ বাক্যটি করলাম দুহাত তুলে।”

__

টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন চলছে। মনযোগী হয়ে দেখছি বিড়াল ইঁদুরের শ/ত্রুতা। হাতে চিপসের প্যাকেট। খাচ্ছি আর হাসছি। অপূর্ব ভাই রান্নাঘরে খাবার তৈরি করছেন। আমার হাসির শব্দ শুনে বললেন, “যত হাসি তত কান্না। তাই চুপচাপ থাক। কখন জানি তোকে কাঁদিয়ে দেই।”

আমি দরজাটা ভিড়িয়ে দিলাম। যাতে শব্দগুলো অপূর্ব ভাইয়ের কানে না পৌঁছায়। ফোন চার্জে দেওয়া। আড়চোখে তাকিয়ে টিভিতে মনযোগী হলাম। পুনরায় বেজে উঠল। ফোনের কাছে গেলাম। ‘জাহাঙ্গীর সাহেব’ নামটা জ্বলজ্বল করছে। চ্যাঁচিয়ে বললাম, “অপূর্ব ভাই আপনার ফোন এসেছে। জাইঙ্গা ফোন করেছে।”

অবিলম্বে উপস্থিত হলেন অপূর্ব ভাই। হাতে দুধের গ্লাস। গ্লাসটা টেবিলে রেখে অন্যহাতে ফোন নিলেন। একটু দূরে গিয়ে কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। মিনিট পাঁচেক পর ফিরে এলেন। চার্জে দিতে দিতে বলেন, “তোকে পড়াশোনা করাই শুধুই। ক্লাস টেনের ছাত্রী জাহাঙ্গীর নামটা জাঙ্গিয়া উচ্চারণ করে।”

ভেংচি দিয়ে বললাম, “আমাদের ওখানে সবাই জাহাঙ্গীরকে জাইঙ্গা বলে ডাকে। সামনে থেকে সরুন। কার্টুন দেখতে দিন।”

দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বেরিয়ে গেলেন তিনি। পূর্বে দুধ পানের আদেশ করলেন। এক ঢোক পান করে চিনির সাদ পেলাম। সবাই আমাকে বলে আমার বুদ্ধি বেশি। আরও বুদ্ধি বাড়াতে চিনি দিয়েছেন। উপরে তুলে পর্যবেক্ষণ করলাম। নিচে চিনি জমে আছে। উপর থেকে পান করে বিছানার উপর রেখে দিলাম। রিমোট হাতে নিতে গেলেই অসাবধানতায় হাত লাগল গ্লাসে। অবশিষ্ট দুধ টুকু বিছানায় পড়ল। জিভ ভিজিয়ে বললাম, ” অপূর্ব ভাই..

অতঃপর কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখলাম জায়গা। অপূর্ব ভাই জানতে পারলেন না তার শখের বিছানার বারোটা করেছি।

খাবার টেবিলে সাজিয়ে ডাকলেন। আদেশ মেনে আমি গেলাম। নুডুলস বানিয়েছে। আমার দিকে এক বাটি দিয়ে বললেন, “এটা খেয়ে কোক খেয়ে নিস। আধ ঘণ্টা পর ডিনার করবি।”

নিজের অংশের নুডুলস টুকু খেতে লাগলেন। কাঁটা চামচ দিয়ে নুডুলস তুলে বললাম, “এগুলো কী? কেঁচো..

অপূর্ব ভাই শব্দ করে কাঁটা চামচ রাখলেন টেবিলে। থেমে গেলাম আমি। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলেন, “কেঁচো হোক আর যাই হোক। চুপচাপ খেয়ে ফেল। এমন কিছু বলিস না, যাতে জীবনের মতো আমার নুডুলস খাওয়া শেষ হয়ে যায় লাল শাক ও ঢেড়সের মতো। কারণ সারাদিনের কাজ শেষে এক বাটি নুডুলস খেয়ে দিন পার করি আমি।”

অপূর্ব ভাই তৃপ্তি সহকারে খেলেন। আমিও খেলাম।‌ খাওয়া শেষে বাসন ধুতে গেলেন অপূর্ব ভাই। আমিও কাজে হাত দিলাম। ঘর ঝাড়ু দিলাম।

রান্নাঘর থেকে বের হয়ে মুচকি হেসে বলেন, “পাকা বুড়ি একটা। যা ঘুমিয়ে পড়। দেখছি ছুটি নিতে পারি কি-না। একদিনের ছুটি নিয়ে গ্ৰামে তোকে রেখে আসব।”

“আপনি আমায় ট্রেনে তুলে দিন। আমি নিজেই চলে যেতে পারব।”

“জানি‌। এতদূর যে বিনা টিকেটে আসতে পারে, সে যেতেও পারবে।” বলেই অন্য ঘরে চলে গেলেন। আমিও গেলাম পাশের ঘরে। বিছানায় শুয়ে মনটা খা/রা/প হয়ে গেল। তুর ও শেফালীকে দেখতে মন চাইছে। তিনজনে শুয়ে কী আনন্দটাই না করতাম। দু’দিনে কত মিস্ করছি। বালিশ মাথায় ঠেকিয়ে শুয়ে পড়লাম। বাম চোখ থেকে একফোঁটা জল পড়ল। চোখের পাতাটা প্রচুর জ্বলছে। পাশের ঘরের বারান্দা থেকে পাখির কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম। আমার পোষা ময়না পাখিটার কথা খুব মনে হচ্ছে। অপূর্ব ভাই তাকে ফিরত দেয়নি। হয়তো সে নেই। ভাঁজ করা কম্বলটা গায়ে জড়িয়ে চোখ বুজে নিলাম। ঘুমটা যখন গভীর হলো মশার দল জড়িয়ে ধরল আমায়। রক্ত চুসে খাচ্ছে। এতটা উঁচুতে উঠতে মশার ডানা ব্যথা করে না। ধৈর্য আছে বলতে হবে। গালে দু’টো চ/ড় দিলাম। মশার রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল। এটা মোটেও মশার রক্ত নয়। এটা আমাদের রক্ত। মশার সন্তানও আমাদের। কারণ আমাদের ডিএনএ ও তাদের ডিএনএ একই।

মাথার ভেতরেও চুলকাচ্ছে। অপূর্ব ভাইয়ের ঘরে গেলাম। তিনি ঘুমিয়ে আছেন কম্বল মুড়ি দিয়ে। মশার চিহ্ন নেই। সব মশা আমার ঘরে। আশেপাশে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলাম। ছোটো একটা ব্যাগ নজরে এলো। নাম ‘ম্যাজিক মশারি’। ব্যাগটা নিয়ে মশারি বের করলাম। আমার পুরনো জামাটা ছিঁড়ে কয়েক টুকরো করলাম। মশারির কোণায় কোণায় গিট দিয়ে দেয়ালে টাঙিয়ে নিলাম।

‘আরু পাখি’ নামটা শুনতে পেলাম। ময়না পাখি আমায় আরু পাখি বলে ডাকে। দরজা খুলে বারান্দায় গেলাম। খাঁচার ভেতরে ময়না পাখি বসে আছে। চোখ জোড়া ছলছলিয়ে উঠল। ছোটো দরজাটা খুলে দিলাম। ময়না পাখি সামনে ডানা ঝাপটাতে লাগল। দু’হাতে ধরে চুমু খেলাম ডানায়। গালের সাথে পাখিটে লেপ্টে নিয়ে আদরে আদরে ভরিয়ে দিলাম।

“ময়না তুই বেঁচে আছিস?

“আরু পাখি, আরু পাখি। আমি বেঁচে আছি। আমি বেঁচে আছি।”

বারান্দায় মশার উপদ্রব। পাখিকে মশায় কামড়াবে। ঘরে এলাম। মশারির ভেতরে ঢুকে গেলাম। বালিশ মাঝখানে রেখে অন্যপাশে শুয়ে পড়লাম। পাখিটা কম্বলের ভেতরে নিয়ে দিলাম ঘুম।

মনে মনে বললাম, “শোন ময়না। অপূর্ব ভাইয়ের কাছে আমি দুই লক্ষ টাকার বেশি পাই। যখনই দুই টাকা চাইতায় তখনই বলে, পরে দিবো, পরে দিবো‌। এমন বাকি রাখতে রাখতে দুই লক্ষের বেশি জমেছে। কবে যে পরিশোধ করবে। তখন তোকে একটা মশারি কিনে দিবো।”

[চলবে.. ইন শা আল্লাহ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here