নেশা ২ পর্ব ৩

নেশা
সিজন 2
Ayusha Akter Usha
“”3″”
অবশেষে অনেক চেষ্টার পর দুজনে মিলে শাড়ি পরতে সফল হয়।শাড়ি পরা শেষে সম্রাট কাবার্ডের কাছে গিয়ে কাপড় বের করতে করতে বলল
-রাতে বেহুঁশ হয়ে আমার ফার্স্ট নাইট নষ্ট করে এখন আমাকে পাগল করা হচ্ছে।
সম্রাট এর কথা শূনে কুয়াশা ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকায়।তারপর ধীরে ধীরে নিজের দিকে তাকাতেই সাথে সাথে শাড়ির আঁচল দিয়ে নিজের পেট ঢেকে নিল।সম্রাট তা দেখে মুচকি হেসে বলল
-এখন ঢেকে আর কি হবে যা দেখার তা তো অনেক আগেই দেখে নিয়েছি।
বলেই ওয়াশরুমের দিকে রওনা হলো।কুয়াশা সম্রাটের কথায় লজ্জায় মাটিতে মিশে যাচ্ছে।সম্রাট কে ওয়াশরুমে যেতে দেখে চট করে বলে উঠল
-sorry…..
সম্রাট কুয়াশার দিকে ফিরে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল
-কিসের জন্য ফার্স্ট নাইট spoil করার জন্য।
-না সকালে বেড থেকে ফেলে দেওয়ার জন্য সরি।
কুয়াশার কথা শুনে সম্রাট বাঁকা হেসে তার দিকে এগোতে এগোতে বলল
-শুকনো সরি তে কাজ চলবে না ম্যাডাম।
সম্রাট কে এগোতে দেখে কুয়াশার আত্মারাম হাওয়া হয়ে যায়।
-মমনেএএ।।।
সম্রাট কুয়াশার কাছে এসে তার কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে নাকে নাক ঘষে বলল
-ম্যাডাম তোমার হাতে এক কাপ কফি পেতে পারি কি।
কফির কথা শুনে কুয়াশা হাফ ছেড়ে বাঁচল।সম্রাট মুচকি হেসে কুয়াশাকে ছেড়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।আর কুয়াশা নিচে গেল।সম্রাটের পরিবারে শুধু সম্রাট আর তার বাবা ছাড়া আর কেউ নেই।এখন কুয়াশা এসেছে তাঁদের ছোট্ট পরিবারের এক সদস্য হয়ে।যদিও তাঁদের পরিবার খুব ছোট তবুও বাড়িতে লোকের সংখ্যা কম নয়।কতগুলো সার্ভেন্ট দিনে রাতে নিজের কাজ করে চলেছে।আর বাড়ি চারপাশে গার্ড এর অভাব নেই।এসব দেখে কুয়াশা খুব অবাক হচ্ছে।দুজন মানুষ থাকতো তার ওপর সম্রাটের বাবা নানান কাজে সবসময় দেশের বাইরেই থাকেন তবুও এতো গার্ডস দিয়ে হয় টা কি।এইসব কথা ভাবতে ভাবতে কুয়াশা কিচেন খুঁজে সেখানে চলে গেল সম্রাটের জন্য কফি বানাতে।

আজ সন্ধ্যায় একটা পার্টি রাখা হয়েছে তাঁদের বিয়ে উপলক্ষে ।কুয়াশাকে দুটো পার্লারের মেয়ে এসে সাজিয়ে দিয়ে গেছে।সেজেগুজে কুয়াশা নিজের রুমে একা বসে আছে।আর সম্রাট নিচে পার্টির এরেন্জমেন্ট নিয়ে ব্যাস্ত।গেস্টরা সব চলে আসতে শুরু করল।তাই সম্রাট নিজের রুমে এসেছে কুয়াশা কে নিতে।রুমে এসেই সম্রাট থমকে যায়।কালো রঙের লেহেঙ্গাটা যেন কুয়াশার ফর্সা গায়ে ফটফট করছে।ডার্ক মেকাপ চুল গুলো বাধা।সম্রাট তার কুয়াশাকে মুগ্ধ নয়নে দেখছে।এই অপূর্ব সুন্দর মেয়ে টা যে শুধূই তার।একে যে সামলে রাখতে হবে।নাহলে যখন তখন যে কেউ এক দিকে হাত বাড়াবে।কিন্তু সম্রাট তা কখনওই হতে দেবে না।যেই তার কুয়াশার দিকে হাত বাড়াবে তার হাত সম্রাট কেটে ফেলবে।সম্রাট ওইভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কুয়াশা বেড থেকে উঠে দাঁড়ালো।সম্রাটকে দেখে কুয়াশা তার ওপর আর দফা ক্রাশ খেল।এই লোকটা তার বর ভাবতেই কেমন একটা ফিলিংস হচ্ছে কুয়াশার।কিন্তু সম্রাট এইভাবে চোখমুখ কুঁচকে দাঁড়িয়ে আছে কেন।তাঁকে কি আজ সুন্দর লাগছে না নাকি।নাও লাগতে যেই ভাবে ভুতের মতো মেকাপ করিয়েছে সম্রাট বুঝি তাকে চিনতেই পারছে না।কুয়াশা ঠোট ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে রইল।সম্রাট কুয়াশা কে দাঁড়াতে দেখে তার কাছে গেল।একটু ঝুঁকে কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলল
-আজ তোমাকে একদম আমার কুয়াশা কুয়াশা লাগছে।ইচ্ছে করছে আমার এই কুয়াশাকে আমার বুকের বাম পাশের হৃদপিন্ডের খাঁচায় বন্দিনি করে নেই।যেন পালাতে না পারে।
সম্রাটের গরম ভাব কুয়াশার কানে লেগে তার দম বন্ধ হয়ে আসছে।তার ওপর সম্রাটের এমন ভালোবাসায় ভরা কথা গুলোতে কুয়াশা কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে।সম্রাট কুয়াশার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল।
-নিচে সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
কুয়াশা সম্রাটের হাতে হাত রাখল।এ যেন কোনো স্বর্গীয় সুখে কুয়াশার বুক কেপে উঠল।পার্টির সবাইকে দেখে মনে হচ্ছে তার সবাই প্রোফেশনাল।ছেলে মেয়ে উভয়ই।সবাই ওয়াস্টার্ন ড্রেস পিরিহিত।সবাই ড্রিঙ্কস ডান্স নিয়ে ব্যাস্ত।কেউ কেউ এসে সম্রাট আর কুয়াশা কে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।এসব কিছুই কুয়াশার ভালো লাগছে না।তার মন ছটফট করছে।আজ সে ভীষণ ভাবে তার পরিবারকে মিস করছে।আজ যদি তার পরিবার থাকতো তাহলে হয়তো বিয়ের নিয়ম অনুযায়ী সে আর সম্রাট এখন তার বাবার বাড়ি যেত।কত ভালোই না হত।কুয়াশার এই মন খারাপ সম্রাটের চোখ এড়ালো না।তাই সে পার্টি শেষ করে কুয়াশার হাত ধরে তাঁকে গাড়িতে এনে পেছনের সিটে বসায় আর নিজেও বসে।সামনের সিটে দুজন গার্ডস বসে আছে একজন ড্রাইভ করছে।কুয়াশা অবাক হয়ে প্রশ্ন করল
-আমরা কোথায় যাচ্ছি এই রাতের বেলা।
-হুশশশ কোনো কথা বলো না।এটা তোমার জন্য সারপ্রাইজ।
কুয়াশাও আর কিছু বলল না।তাঁদের গাড়ি একটা অনাথ আশ্রমের সামনে এসে দাঁড়ালো।তা দেখে কুয়াশা লাফিয়ে উঠল।
-আপনিইইই..
সম্রাট মুচকি হেসে গাড়ি থেকে নেমে কুয়াশা কেও নামালো।কুয়াশা কিছু না বলে আশ্রমের দিকে দৌড় দিল।সম্রাট তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।মেয়েটা খুব খুশি হয়েছে তা সম্রাট খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছে। সম্রাট ও চলল আশ্রমের দিকে। কুয়াশা আশ্রমে ঢুকতেই সব ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরল।সবাই খুব খুশি কুয়াশা কে দেখে।কুয়াশাও তাঁদের কাছে পেয়ে অনেক খুশি।ছোট বাচ্চাদের কাছে পেয়ে সেও ছোট বাচ্চা হয়ে গেছে।আশ্রমের আরো অনেকে এগিয়ে এলো তার কাছে।তাঁরাও ভীষন খুশি।সম্রাট শুধু দূর থেকে কুয়াশাকেই দেখছে।একটা গার্ডস এসে সম্রাটের দিকে কিছু ব্যাগ এগিয়ে দিল।সম্রাট সেগুলো নিয়ে গার্ডসদের চলে যেতে বলল।গার্ডসরা মানা করলেও সম্রাটের কথার ওপর কথা বলতে পারেনি তাই তারা চলে গেল।সম্রাট ব্যাগ গুলো নিয়ে গিয়ে কুয়াশার হাতে দিল।কুয়াশা সেগুলো হাতে নিয়ে অবাক দৃষ্টিতে সম্রাটের দিকে তাকালো।সম্রাট কুয়াশার চাহনি বুঝতে পেরে বলল
-প্রথমবার শশুর বাড়ি এসেছি।খালি হাতে কি করে আসি।তাই সবার জন্যে কিছু গিফ্ট নিয়ে এসেছি।
সম্রাটের কথা শুনে কুয়াশার চোখ ছলছল করে উঠল।
to be continue…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here