#তুই_যে_শুধুই_আমার [❤You are only mine❤]
#Part_16
#Writer_Tanzin_Islam_Ishika [Asfiya Islam Jannat]
।
(বিঃদ্রঃ দুইটা নাম এই আমার,, আর এই দুইটা নাম এই একই ব্যক্তির,,)
এক অন্ধকার রুমে রুহানকে চেয়ারের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে,, রুহান বার বার বাঁধন গুলো খুলার চেষ্টা করছে,, কিন্তু প্রতিবারই তার চেষ্টা বিফলে যাচ্ছে,, বার বার বলছে।।
” কেউ আছে,, আমাকে এখানে কেন আনা হয়েছে,, কি চাই আপনাদের”
কিন্তু কাউরো কোন সারাশব্দ নেই,, রুহান সেই বাঁধন গুলোর সাথে অনেকক্ষন ধস্তাধস্তি করার পরও যখন কোন কাজ হলো না তখন সে
হাল ছেড়ে দিয়ে চুপচাপ বসে থাকে,, আর অপেক্ষা করতে থাকে কাউরো আশার,,
প্রায় কিছুক্ষণের মধ্যেই রুহানের অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়,, দরজা ঠেলে কেউ রুমে প্রবেশ করে,,
দরজা খুলার শব্দে রুহান সামনে তাকায়,, কিন্তু এতক্ষন অন্ধকারে থাকার পরে বাইরে আলো তার সহ্য হলো না,, সে চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেললো,, পায়ের কদমের আওয়াজ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে,, রুহান বুঝতে পারে কেউ একজন তার দিকে এগিয়ে আসছে,, হঠাৎ একটি কন্ঠ তার কানে ভেসে আসে,,
” কেমন লাগছে এইখানে ”
।
রুহান অনেক কষ্টে চোখ দুটো খুলে বলে,
রুহানঃ কে আপনি,, কি চাই আপনার,,, কেন এনেছেন আপনি আমাকে এইখানে,, ছেড়ে দেন বলছি,, আপনি হয়তো জানেন না আমি কে,, আর আমি কি কি করতে পারি,,
।
-” আমি ভালো করেই জানি তুই কে আর কি কি করতে পারিস,,আর রইলো তোকে এইখানে কেন এনেছি তা তুই একটু পরই জানতে পারবি”
।
রুহানঃ মা,,মানে ক,,কি ব,,বলতে চাইছেন আপনি,, আর ক,,কে আ,,,আপনি,,, আমতা আমতা করে,,
।
– ” আমি কি বলতে চাইছি তা তুই ভালো করেই বুঝেছিস,, আর জানতে চাস আমি কে তাই না,, তহ শুনে রাখ আমি তোর যম,, দেখতে চাইবি না তোর যম দেখতে কেমন ”
তখনই রুমের সকল লাইট জ্বলে উঠে,,, চোখে আলো পড়ায় রুহান চোখ খিচকে বন্ধ করে ফেলে,, পরে আস্তে আস্তে চোখ সামনে যাকে দেখে তাকে দেখেই রুহানের চোখ ছানা বোরা,,
কেন না সামনে আর কেউ না আরুশ দাড়িয়ে আছে,, তাও আবার তার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে,, যেন এখনই ওর চোখ দিয়ে আগুন ঝোরে পরবে,, আরুশকে এইভাবে দেখে ভয়ে রুহানের গলা শুকিয়ে যায়,, কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে শুরু করে,, রুহান নিজেকে কোন মতে সামলিয়ে বলে,,,
।
রুহানঃ এইসব কি হচ্ছে আরুশ,, আমায় তুই কেন এইখানে এইভাবে বেধে রেখেছিস,, যেতে দেয় আমায়,,,
।
আরুশঃ তোকে এইখানে এক বিশেষ কারনে আনা হয়েছে,,
।
রুহানঃ ক,,ক,,কি ক,,,কা,,র,,ন,, আমতা আমতা করে,,
।
আরুশঃ আরেহ আরেহ তুই এত ঘামছিস কেন,, আজ তহ এত গরমও নয়,, তার উপর রুমে তহ ফ্যান চলছেই,,
।
রুহানঃ তেমন কিছু না,, তার আগে তুই বল কেন আমায় এইখানে এইভাবে আটকে রেখেছিস,, যেতে দেয় আমায়,,
।
আরুশঃ ওহহ তাই তহ,, কেন এনেছি তোকে আমি এইখানে,, (একটু ভাবার অভিনয় করে,, পরে ভেবে বলে,,) হুম মনে পরেছে,, তোকে তোর সকল অপকর্মের শাস্তি দিতে,,আসলে তোর পাপের খড়া না এখন ভরে গেছে,,
তাই তোকে তহ এখন শাস্তি পেতেই হবে,,
।
রুহানঃ কি বলছিস এইসব,, কিসের শাস্তি কিসের কি,,
।
রুহানের এমন কথায় আরুশ রেগে যায়,, আর ধাপ করে রুহানের হাতের উপর নিজের হাত দুটো চেপে ধরে বলে,,
আরুশঃ কিসের কি তাই না,, এত ইনোসেন্ট কিভাবে সাজতে পারিস তুই,, যেন তুই কিছুই করস নি,, কেন করলি তুই এইসব আমার আর সায়রার সাথে,, কেন আলাদা করলি আমাদের বল,,,
।
হঠাৎ রুহান হু হু করে হেসে উঠে,, আর তারপর বলে,,,
রুহানঃ তাহলে শেষ পর্যন্ত সায়রা তোকে সত্যিটা বলেছে,, কিন্তু তাতেও কি,, আমরা যা করার ছিল আমি করে ফেলেছি,, তোদের দুইজনের মাঝে এত ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি করেছি যে এখন সম্পর্কে ফাটল ধরে গিয়েছে,,
।
আরুশ রুহানের হাত দুটো আরও চেপে ধরে বলে,,,
আরুশঃ কেন করলি এমন বল,,, কেন করলি এমন,,
।
রুহানঃ শুধু মাত্র তোর আর সায়রা থেকে প্রতিশোধ নিতে,, তোর জন্য আমি সায়রাকে নিজের করতে পারি নি,, নিজের করে পাই নি,, সেই কলেজ লাইফ থেকে আমি ওকে ভালবাসি কিন্তু ও তোকে ভালবাসতো,, তুই বাদে অন্য কাউকে পাত্তা দিত না,, সে জন্য ও আমায়ও পাত্তা দেয় নি,, ইগনোর করেছে আমায়,, রুহান চৌধুরীকে ইগনোর করেছে সে ভাবা যায়,, এইটা আমার ইগোতে লাগে তাই চেয়েছিলাম ওকে পটাতে,, তাই তোর সাথে বন্ধুত্বের নাটক করি,, কিন্তু যখন আমি ওকে প্রাপস করি তখন তুই আর সায়রা মিলে আমায় পুরো ভারসিটির সামনে অপমান করলি,, আর আমায় মারলি,, তখনই জীদ চেপে বসেছিল যে তোকে আর সায়রাকে আমি আলাদা করে রাখবই,, তাই তহ আমি সায়রাকে ভয় দেখাই যে যদি ও আমার কথা না মানে তাহলে আমি তোকে শেষ করে ফেলব,, আর সায়রা মেনেও যায়,, সক্ষম হই তোদের আলাদা করতে,, কিন্তু তাতেও আমার মন ভরে নি,,, আমার যে তখন সায়রার উপর প্রতিশোধ নেওয়া শেষ হয়নি,,, তাই তহ ওকে নিজের করতে চেয়েছিলাম আর নিজের কাছ থেকে শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম,, কিন্তু মাঝে তুই এসে আবার সায়রাকে কেড়ে নিলি,, তাই তহ তোদের দুইজনকে আবার আলাদার করার চেষ্টা করি,, আর তোর কানে ওর নামে বিষ দিতে থাকি,,
।
আরুশঃ তোকে তহ আমি,,,
এই বলে আরুশ রুহানকে ছেড়ে দিয়ে একটা স্টিক হাতে নেয়,, আর ওইটা দিয়ে রুহানকে ইচ্ছা মত পিটাতে থাকে,, আর বলতে থাকে,,
।
আরুশঃ আজ তোর জন্য আমার দুইজন এত কষ্ট পাচ্ছি,, তোর জন্য আমি আমার সায়রাকে এত কষ্ট দিয়েছি,, ওকে ভুল বুঝেছি,, ওর সাথে বাজে বিহ্যাভ করেছি,, তোকে তহ আমি ছাড়বো না,,, আজ তহ তোকেই মেরেই ফেলব আমি,,
।
এই বলে আবার মারতে থাকে,, মারতে মারতে একসময় ওকে রক্তাক্ত করে ফেলে,, পরে একসময় ওকে ছেড়ে দেয়,, আর কাকে যেন ফোন করে আসতে বলে,, কিছুক্ষণের মধ্যেই কয়েক জন পুলিশ এসে হাজির,, আরুশ তাদের কিছু টাকা দিয়ে বলে রুহান যেন কঠিন থেকে কঠিন শাস্তি পায়,, কোন ভাবেই যেন ছাড়া না পায়,, পুলিশরা আরুশের কথার মত রুহানকে নিয়ে যায়,, আর কঠিন থেকে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে,,
।
।
এইদিকে,,
দেখতে দেখতে আজ প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গেল,, সায়রা এখন বেশ সুস্থ,, সবই আরুশের কারনে,,এই কয়দিন আরুশ সায়রার সাথে একদম ফ্যাভিকলের মত চিপকে ছিল,, সায়রা এর সকল কাজ সে নিজে করে দিয়েছে,, সায়রার কখন কি প্রয়োজন তার দিকে খেয়াল রেখেছে,, এর মধ্যে অনেক বার সায়রা এর রাগ ভাঙ্গার ট্রাই করেছে,, কিন্তু পারে নি,, তাও আরুশ নিজের প্রচেষ্টা চালিয়ে চলেছে,,
।
আজ সায়রাকে রিলিজ দেওয়া হবে,, আরুশ সকল ফোরমালিটিস পুরোন করে সায়রার কেবিনে আসে,, তারপর সায়রাকে নিজের সাথে নিয়ে যেতে নিলে সায়রা তার সাথে যেতে মানা করে দেয়,, সে নাকি আরুশের সাথে আরুশের বাসায় যাবে না,, বরং নিজের বাসায় যাবে,,, অনেক জোরাজোরির পরও আরুশ সায়রাকে মানাতে পারলো না,, আর সায়রার বাবা মাও বলছিল ওদের সাথে যেতে তাই কিছু বলতে পারলো না,, সায়রা চলে গেল ওর বাবা মার সাথে,,
গাড়ির চলছে আপন গতিতে,, সায়রা চোখ বন্ধ করে সিটে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে,, এমন সময় গাড়িটি জোরে ব্রেক মারে,, যার ফলে সায়রা সামনের দিকে ঝুঁকে পরে,, সামনে একটি গাড়ি দাড়িয়ে আছে,, সায়রার বাবা বাইরে যায় দেখতে কি হয়েছে সাথে তার মাও,, কিন্তু অনেকক্ষন যাবৎ তারা আর ফিরে আসে না,, তাই সায়রা বাধ্য হয়ে বাইরে যায়,, বাইরে গিয়ে দেখে তার বাবা মা নেই,, সায়রা এইদিক ওইদিক খুঁজতেই থাকে তখন একজন মাস্ক পরা লোক সামনে এসে দাড়ায়,, সায়রা কিছু বুঝে উঠার আগেই ওর মুখে কি যেন স্প্রে করে,, হঠাৎ সায়রার মাথা ঘুরতে থাকে আর চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসে,, সায়রা যখন পরে যেতে নেয় তখন সেই ব্যক্তিটি ওকে ধরে ফেলে,, আর তারপর ওকে নিজের গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয়,,
।
।
।
#চলবে