#এক্সিডেন্টলি_প্রেম♥
#পার্ট-৫♥
#Ayanaa_Jahan(Nusraat)♥
ছাদের রেলিং ঘেঁষে থরথর করে কেঁপে চলেছে অন্বিতা। তার দুপাশে রেলিংয়ে হাত দিয়ে উবু হয়ে ঝুঁকে পড়ে উত্তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলছে নিশান্ত। নিশান্তকে এরকম হিংস্ররূপে দেখে বুক ধুকপুক ধুকপুক করছে অন্বিতার। তার মনে হচ্ছে কোনো মানুষ নয় আস্ত একটা ডায়নোসর তার সামনে মুখ থেকে আগুন বের করে চলেছে। খানিক বাদের সেই আগুনে রোস্ট করে টুপ করে গিলে নেবে তাকে।
তখন সেই অনাকাঙ্ক্ষিত এক্সিডেন্টের দরুন পালানোর পথ খুঁজছিলো অন্বিতা। সে জানতো তাকে ধরতে নিশ্চয় তাদের বাসায়ই আসবে নিশান্ত। যেহেতু বাসায় বাবাও ছিলো না সেহেতু বাসায় এসে সোজা হামলা চালানোটা নিতান্তই সহজ ছিলো নিশান্তের পক্ষে। সেই ভেবেই গা বাঁচাতে ছাদে ছুট লাগায় অন্বিতা। তবে ভাগ্য বলে একটা চিরন্তন সত্য রয়েছে। যার চরম পরিহাসে নিশান্ত ঠিক ছাদেই পৌঁছে যায় তার উত্তম-মধ্যম সাধিত করবার উদ্দেশ্যে। ফলশ্রুতিতে লুকোনোর শেষ পন্থা টাও বিফলে ফেলে ছাদের রেলিং চেপে ধরেই দোয়া-দরুদ পড়া শুরু করে দেয় অন্বিতা।
ছাদে উঠেই ঝড়ের বেগে ষাড়ের মতো হংকার ছেড়ে অন্বিতাকে রেলিংয়ের সাথেই ঠেস দিয়ে আবদ্ধ করে ফেলে নিশান্ত। নিজের সবটুকু রাগ পুষিয়ে নিয়ে উত্তপ্ত নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে করতে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় সে অন্বিতার মুখপানে।
নিশান্তের চাহনিতে আবারও শুকনো ঢোক গিললো অন্বিতা। আড় চোখে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিয়ে পালানোর পথ খোঁজার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালিয়ে আবারও হতাশা এসে ভর করে তার মুখে। অন্বিতার অবস্থা এখন চারদেওয়ালে বন্দী টাইপ। সামনে বাঘ, দু পাশে সাপ আর নিচে খোলা মাঠ! যেদিকে যাবে সেদিকেই বিপদ!
অন্বিতার ভয়ার্ত মুখশ্রীর দিকে সরু চোখে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে ধরলো নিশান্ত। কপালের ভাঁজ আরো খানিকটা প্রকট করতেই ঘাড় ঘুরিয়ে উপর থেকে সোজা বাগানের কাঁটাওয়ালা গোলাপের গাছে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো অন্বিতা। এখান থেকে পড়লে যে শুধু হাড়-গোড়ই না সাথে রক্তের বন্যাও বয়ে যাবে এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই আর তার। নিশান্ত অন্বিতার চোখেমুখে ভয়ের ছাপ দেখে ভ্রু কুঁচকালো মনে মনে ভাবলো “এই রাক্ষুসি আবার ভয়ও পায়?” বাক্যটা নিজ মনেই বিস্মিত হয়ে আওড়ে নিয়ে হংকার ছেড়ে বসলো,
—- হেই ইউ, কি সমস্যা টা কি আপনার? দুদিনও হলো না আপনার সাথে আমার দেখা তাতেই লাইফ টাকে পুরো হেল বানিয়ে ছেড়েছেন আপনি। প্রথম দিন নাহয় মেনে নিলাম চোরের পেছনে ছুটতে গিয়ে বাই এনি চান্স এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে বাট কাল দুপুরে?
নিজেই দোষ করে নিজেই ভাব দেখিয়ে চলে গেলেন! এতোটুকু গিল্টি ফিল হলো না আপনার! ওকে মানলাম সবাই এক ধাঁচের হয় না। বাট আজ এটা কি করলেন আপনি? কেউ এভাবে কারো গায়ের ওপর থেকে পানি ছুড়ে মারে? জাস্ট সি, পুরো ভিজিয়ে ফেলেছেন আমায় আপনি!
নিশান্তের চিৎকারে কেঁপে উঠলো অন্বিতা। ভয়ে ভয়ে চোখ তুলে তাকাতেই কপালের সাথে ব্রাউন সিল্কি ভেজা চুলগুলো লেপ্টানো অবস্থায় আবিষ্কার করলো সে। আর কিছু পর্যবেক্ষণ করবে তার আগেই আবারও গর্জে উঠলো নিশান্ত,
—- কি হলো টা কি? চুপ করে আছেন কেনো জবাব দিন?
নিশান্তের ধমকে চোখ খিঁচে বন্ধ করে ঠোঁট কামড়ে ধরলো অন্বিতা। মনে মনে প্রচন্ড পরিমাণে যেখানে রেগে যাওয়ার কথা সেখানে আজ তার মন ভয়ে সিক্ত, চরমভাবে নিপীড়িত! নিজের অদ্ভুত সব প্রতিক্রিয়ার জন্য নিজেই কনফিউশনে ভুগছে সে। তবে এর উত্তর পরেও খোঁজা যাবে, আপাতত এই ডায়নোসরের থেকে রক্ষা পেতে হবে তাকে। তাই নিজের মনকে শক্ত করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে অন্বিতা মুখে বুলি ফোটালো। মিনমিন করে সে বললো,
—- দে..দেখুন আ..আমি পানিগুলো ই..ইচ্ছে করে ফেলি নি। আসলে আনন্দর গায়ে মারতে গিয়ে আরকি একটু গন্ডগোল হয়ে আপনার ওপর পড়ে গিয়েছে। ট্রাস্ট মি, এটা শুধুই একটা এক্সিডেন্ট।
অন্বিতার এমন হাবলা টাইপ উত্তরে মেজাজটা আগের থেকেও বেশি বিগড়ে গেলো নিশান্তের। রাগের বশে নিজেকে কন্ট্রোলে রাখতে না পেরে অন্বিতার দুবাহু শক্ত করে চেপে ধরলো নিশান্ত। দুহাতে তাকে ঝাঁকিয়ে চোখ থেকে রক্তিম আভা ছড়াতে ছড়াতে সে কর্কশ গলায় বলে উঠলো,
—- এখান থেকে যদি তোমাকে ফেলে দেই তবে কেমন হবে বলো তো? আই থিংক সেটাই বেটার হবে। সো……
আর কিছু বলার আগেই নিশান্তকে শক্ত করে চেপে ধরলো অন্বিতা। তার ভেজা শার্টের হাতা খাঁমচে ধরে কাঁপাকাঁপা গলায় চোখ বন্ধ করে বলে উঠলো,
—- না..না..প্লিজ এমন করবেন না। আমার বাবা ভাই, ক্লাবের ছোট ছোট বাচ্চাগুলো, আমার মোটু-পাতলু বান্ধবীগুলো আমার শোকে কেঁদে কেঁদে নাকের জলে এক করে বৃষ্টি ছাড়াই বানের জলে পৃথিবী ভাসিয়ে ফেলবে।
এমনি সময় অন্বিতার এমন স্টুপিড মার্কা কথাবার্তা শুনলে নিশান্তের গা জ্বলে উঠলেও কথাটা সেভাবে গায়ে মাখলো না সে। তার মনের কোণে অদ্ভুত এক অনুভূতি নাড়া দিতে শুরু করলো অবলীলায়। তার মনে হতে লাগলো এই স্পর্শ তার চেনা। খুব করে চেনা! এই স্পর্শ আগেও অনুভব করেছে সে। কিন্তু তা কি করে সম্ভব? অন্বিতাকে তো সে আগে কখনোই দেখে নি বা কখনো পথ চলার পথে সংঘর্ষও হয়নি। তবে?
কথাগুলো নিজের মনে প্রতিধ্বনির আলোড়ন সৃষ্টি করে জোয়ার এনে থামলো তবে। অন্বিতাকে নিজের থেকে ছিটকে সরিয়ে দিলো নিশান্ত। দু হাত পিছিয়ে এসে আঙুল তুলে সে বললো,
—- দেখুন, ভালোভাবে বলছি আমায় কোনো ভাবেই বিরক্ত করতে আসবেন না আপনি। আপনার জন্য যদি আমায় আর বিন্দুমাত্রও ক্রাইসিস এর মধ্যে পড়তে হয় তবে ফল কিন্তু ভালো হবে না।
কথাগুলো বলে নিয়েই বড়বড় পা ফেলে ভেজা চুলগুলোর মাঝে হাত চালিয়ে পানি ঝাড়তে ঝাড়তে ছাদ থেমে নেমে পড়লো নিশান্ত। তার যাওয়ার দিকে বেশ কিছুক্ষণ অবিশ্রান্ত দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে হুশে ফিরলো অন্বিতা। নিজেই নিজের কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে বলে উঠলো,
—- হায় আল্লাহ! এটা কি করলাম আমি? অবশেষে বাঁচার জন্য এই ডায়নোসর কে চেপে ধরলাম? ছিঃ! ব্যাটার জাস্ট নাক বরাবর একটা পাঞ্চ মেরে দিয়ে লং জাস্প মেরে সরে গেলেই তো পারতাম! ওহ গড! সেম অন ইউ অন্বিতা!
কথাগুলো আনমনেই বলতে বলতে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলো অন্বিতা। সময়ের খবরাখবর মাথায় আসতেই ঘড়ির দিকে তাকালো সে। এখন সময় ৮ টা বেজে ৩২ মিনিট….! এতোক্ষণে ক্লাবের বাচ্চা গুলো নিশ্চয় তার অপেক্ষা করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ইশশস! কেনো যে রাতটা এই আমেরিকান ডায়নোসরকে গালি দিয়েই পাড় করে দিলো ভেবেই চরম বিরক্ত অন্বিতা।
___________________
আজো অগত্যাই অন্বিতাকে শাড়ি পড়তে হলো শুধুমাত্র ক্লাবের বাচ্চাগুলো কথা রাখার জন্য। তাদের নাকি অন্বিতাকে শাড়ি তে দেখার খুব শখ ছিলো, সেই শখ পূরণ করতেই অসুবিধে হলেও গতকাল শাড়ি পড়ে ক্লাবে গিয়েছিলো সে। কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো আরো জোড়ালো ভাবে। বাচ্চারা অন্বিতাকে শাড়ি পরে দেখার পর আগের সেই স্কার্ট অথবা সালোয়ার কামিজ পরিহিত অবস্থায় দেখতে নারাজ। তাদের একটাই জেদ, অন্বিপু শাড়ি পড়বে মানে প্রতিদিনই পড়বে! যার দরুন চরম বিরক্ত হলেও হাসি মুখে এক হাতে শাড়ির আঁচল ঠিক করতে করতে অন্য হাতে ব্যাগে টাকা হিসেব করে ঢুকাতে ঢুকাতে অন্বিতা তমাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
—- হ্যাঁ রে তমা, তোকে বাসায় পাঠাতে গেলো কেনো গ্রানি? গেলে তো এমনিতেই যেতাম না গেলে তাও তোরা বুঝেই যেতি! কষ্ট করে পায়ে হেটে এতোদূর আসতে গেলি কোন দুঃখে?
তমা অন্বিতার কথায় কিছু মনে পড়ার ভঙ্গি করে হকচকিয়ে উঠে বললো,
—- এইলে যেতা দিতে গ্লানি আমায় পাতালো সেতাই তো দিতে বুলে গেতি!
বলেই খাটের ওপর থেকে সুতার কাজ করা ব্যাগ থেকে একটা টিফিনবক্স বের করে অন্বিতার দিকে এগিয়ে ধরলো তমা। অন্বিতা টিফিনবক্স টার দিকে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই দাঁত বের করে লম্বা হাসির রেশ টানলো সে। টিফিনবক্সটা অন্বিতার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো,
—- তোমাল আমসত্ত্ব তা তো তুলি হয়ে গেতিলো তাই গ্লানি আবালও তোমাল দন্য পাতাইছে।
তমার কথায় খুশিতে চোখ চিকচিক করে উঠলো অন্বিতার। অবশেষে আমসত্ত্ব খেয়ে তৃপ্তি মেটাতে পারবে ভেবেই বিশ্বজয়ের হাসি হাসলো সে। খুশিতে গদগদ হয়ে তমার গাল টেনে দিয়ে বক্সটা খুলতে নিলেই আনন্দ ব্যাগ ঘাড়ে নিতে নিতে ব্যস্তস্বরে বলে উঠলো,
—- আপু তুমি আমায় নিয়ে যাবা নাকি আমি একাই চলে যাবো?
আনন্দর কথায় টনক নড়লো অন্বিতার। টিফিনবক্সটা সাইডে রেখে চটজলদি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে তমাকে উঠতে ইশারা করে সে বললো,
—- আরে আমি তো যাচ্ছিই, তোকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে ক্লাবে ঢুকবো। আবার ১১ টার দিকে ভার্সিটি যেতে হবে আমায়।
আনন্দ বোনের কথায় মুখ বাঁকালো, নিজের ঘন কালো চুলগুলোর মাঝে হাত চালিয়ে সে বললো,
—- তো জলদি চলো না আপু, লেইট হয়ে যাচ্ছে তো! আমার আবার বান্ধবীরা লেইট করে গেলে রাগ করবে।
আনন্দের কথায় বিস্ময়ে চোখ বড়বড় করে ফেললো অন্বিতা। আলতো করে ভাইয়ের মাথায় চাটি মেরে দিয়ে সে বললো,
—- ইহহ! এইটুকুনি একটা ছেলে, সবে ক্লাস সিক্সে পড়তেই গার্ল ফ্রেন্ড বানিয়ে ফেলেছিস?
মাথার পেছন দিকে অন্বিতার চাটি মারা জায়গায় হাত বুলাতে বুলাতে আনন্দ ঠোঁট উল্টালো। চুলগুলো ঠিক করতে করতে বললো,
—- ওহহ আপু ওরা গার্লফ্রেন্ড কেনো হতে যাবে? জাস্ট বান্ধবী!
আনন্দের সব জানতা টাইপ উত্তরে হু হা করে বাম গালে টোল ফেলে হাসতে লাগলো অন্বিতা। আনন্দর পকেটে টিফিন পিরিয়ডে খাবার টাকা ঢুকিয়ে দিয়ে হাসতে হাসতেই সে বললো,
—- আরে আমার বুদ্ধু হাদারাম! গার্লফ্রেন্ড আর বান্ধবী দুটো শব্দই একই মিনিং করে। তাই না রে তমা?
বিনিময়ে নিজের ছোট্ট মস্তিষ্কের দরুন কিছু না বুঝেও বোকাবোকা চাহনি নিক্ষেপ করে মাথা দোলালো তমা। অন্বিতা মিষ্টি হেসে বললো,
—- দেখলি ক্লাস ৪ এ পড়া তমাও জানে যে গার্লফ্রেন্ড এন্ড বান্ধবী দুটোই একই অর্থ প্রকাশ করে বাট তুই সিক্সে পড়েও জানিস না! হাদারাম একটা!
___________________________
আনন্দকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে ক্লাবের কাছাকাছি পৌঁছোতেই আবারও আকাশের বুকে জমলো ঘন কালো মেঘ। মেঘে মেঘে ঘর্ষণ লাগায় সৃষ্টি হলো তাদের আর্তনাদ, যার দরুন কান্না রূপে নেমে এলো ঝুম বৃষ্টি।
অন্বিতা বুঝলো ভারী বর্ষণ হবে বেশ, তাই চটজলদি রিক্সার ভাড়া মিটিয়ে তমা কে নিয়ে নেমে পড়লো সে। গা ভিজে যাওয়ার থেকে বাঁচাতে দ্রুত পায়ে ক্লাবে ঢুকতে নিলেই থমকে দাঁড়ালো দুজনেই। ক্লাবের প্রত্যেকে বৃষ্টিতে ভিজে পানির সাথে খেলা করতে বেড়িয়ে এসেছে আজ। অন্বিতাকে দেখেই তারা এক ছুটে গোল হয়ে ভিড় জমালো তাকে ঘিরে। আজ এতো দেড়ি করে আসায় একেকজনের একেক অভিযোগ তার প্রতি। যার জানান দিচ্ছে তাদের অভিমানে মাখা আধো আধো বুলির মিশ্রণ।
ভার্সিটিতে এসাইনমেন্ট জমা দিয়েই আজ বেড়িয়ে এসেছে নিশান্ত, সাথে রিভানও সঙ্গ দিতে বেড়িয়েছে বিনা বাধায়। বাড়ি থেকে ভার্সিটিতে আসার পথে আকাশে হাল্কা কালো মেঘের অস্তিত্ব আবিষ্কার করে বুদ্ধি খাটিয়ে বাইকের বদলে প্রাইভেট কার নিয়েই বেড়িয়েছিলো নিশান্ত। আবারও বৃষ্টি এলে কাকভেজা হওয়া থেকে বাঁচতেই প্রাইভেট কার নিয়ে বেড়োতে হয়েছে তাকে। নয়তো বাইকের বদলে দমবন্ধ কর গাড়িতে চড়ে বেড়োতে একেবারেই নারাজ সে।
গাড়ি চালাতে চালাতে অর্ধেক রাস্তা পাড় করতেই বর্ষণ নেমে আসায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো নিশান্ত। ভাজ্ঞিস বুদ্ধি খাটিয়ে বাইক নিয়ে বেড়োয় নি সে। ভেবেই নিজের প্রতি প্রাউড ফিল হলো তার। হঠাৎ এগোতে এগোতে রাস্তার পাশে এতো বাচ্চার ভিড় জমতে দেখায় জোরেশোরে ব্রেক কষলো নিশান্ত। আচমকা এভাবে ব্রেক কষায় টাল সামলাতে না পেরে গ্লাসের সাথে ঠাস করে মাথায় বাড়ি খেলো রিভান। কপালে হাত চেপে ধরে রেগে “ওই ব্যাটা ব্রেক মারলি কেন…..!” এটুকু বলতেই নিশান্তের মতো সেও থমকে গেলো বাচ্চাদের ভিড়ে শাড়ি পরিহিত হাস্যজ্বল সেই তরুণীতে। বৃষ্টির পানিতে বাচ্চাদের সাথে সে কি দারুন খেলায় মেতেছে সেই রূপসী কন্যা! তার বামগালে সৃষ্ট টোলের গর্তে এক অদ্ভুত আকর্ষণ টানতে বাধ্য যেকোনো হৃদয়কেই।
নিশান্ত মুগ্ধ চোখে অপলক চেয়েই অন্বিতাকে পর্যবেক্ষণ করতে লেগে পড়লো। না চাইতেও চোখ দুটো যেনো অন্বিতাতেই আটকে গিয়েছে তার।
এই কপাল কুঁচকে ঝাঁঝালো গলায় ঝগড়া করা মেয়েটাও বুঝি হাসতে জানে? আচ্ছা এই মেয়েটা কি কোনো বহুরূপী? না কি কোনো পরী? একটা মানুষ এতোগুলো চরিত্র বহন করে কিভাবে?
.
.
.
চলবে…………………..💕