A_Destination_Wedding part 1

#A_Destination_Wedding
#Part_1
#Writer_Airin_Boshunia(Rose Queen)

The Best Fashion Designer Award Goes To Ms.Aira Ibnat…Plz Come To The Stage….
আজ বিডির সবচেয়ে বড় ফ্যাশন ডিজাইনিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।এখানে আজ টপ10 কন্ট্রিবিউটরদের মধ্যে থেকে একজনকে উইনার ঘোষণা করা হয়েছে।আর সেই একজন হলো চৌধুরি গ্রুপ অফ কোম্পানির অনার মি.আরহাম চৌধুরির বড় মেয়ে আয়রা ইবনাত।
হোস্ট:আয়রা ইবনাত ম্যাম আপনি প্লিজ স্টেজে উঠে আসুন।
এরপর আয়রা স্টেজে উঠে অবাকের চরম পর্যায়ে পৌছে গেলো।কারণ যার কাছে থেকে বাচাঁর জন্য এতগুলো দিন পালিয়ে বেড়ালো।আজ সেই ব্যক্তিটি তার-ই সামনে।আয়রার ধ্যান ভাঙ্গে হোস্টের কথায়।
হোস্ট:এখন আয়রা ম্যামের হাতে বেষ্ট ফ্যাশন ডিজাইনার 2021 অ্যাওয়ার্ড তুলে দিবেন আমাদের প্রধান অতিথি Mr.Nihan Ahmed Arush
আয়রার যেন পা চলছেই না এমন একটা অবস্থা।
হোস্ট:ম্যাম প্লিজ আপনি এখানে চলে আসুন।
আয়রা আস্তে আস্তে হেঁটে যাচ্ছে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে।ওও যেন এখনো একটা ঘোরের মধ্যে আছে।
হোস্ট:এখন আয়রা ইবনাত ম্যামের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দিচ্ছেন আমাদের প্রধান অতিথি Mr.Nihan Ahmed Arush স্যার।এজন্য একটা জোরে করতালি হয়ে যাক।(প্রতিযোগিতায় উপস্থিত সবাই জোরে করতালি দিচ্ছে।)
অ্যাওয়ার্ড তুলে দেয়ার পর হোস্ট আয়রাকে কিছু বলার জন্য আহ্বান জানালো।
আইরা মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলা শুরু করলো,,,,,,,
আয়রা:প্রথমেই আমার পক্ষ থেকে সবাইকে জানায় আস্সালামু আলাইকুম।প্রত্যেকটা মেয়ের জীবনেই এমন একটা প্ল্যাটফর্মে দাড়িয়ে এমন একটা অ্যাওয়ার্ড পাওয়া ভাগ্যের বিষয় বলেই আমি মনে করি।সত্যি বলতে আজ আমার নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে।কারণ এখানে আমার মতো আরো অনেক নাম করা ডিজাইনাররা এখানে পার্টিসিপ্যান্ট করেছিল।তাই এই অ্যাওয়ার্ড পাওয়াটা আমার কাছে অনেক বেশি টাফ ছিলো।আমি আজ এতটাই খুশি যা বলে বোঝাতে পারবো না।তবে আমার এতদূর পর্যন্ত আসার পেছনে আমাকে ইন্সপায়ার করেছে আমার ফ্যামিলি এন্ড ফ্রেন্ডস।যাইহোক,সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতোক্ষণ অবধি আমার কথাগুলো শোনার জন্য।
আয়রার কথা শেষ হতেই চারিদিক সবার হাততালির আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠলো।
স্টেজের পাশে দাঁড়িয়ে এতক্ষণ আয়রার কথাগুলো শুনছিল তার পরিবারের সবাই এবং বন্ধুরা।।।।।
এক পর্যায়ে অনুষ্ঠান শেষে আয়রা ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য বাইরের দিকে পা বাড়ালো।কিন্তু হঠাৎই কেউ একজন আয়রার মুখ চেপে ধরে একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন রুমে নিয়ে গেল।আয়রা তো ইতিমধ্যে হাত-পা ছোড়াছুড়ি করা শুরু করে দিয়েছে।বেচারি এক প্রকার ভয়েই শেষ।আয়রা যতই সাহসী হোক,,,একটা মেয়ের কাছে অজানা একজন ব্যক্তির কাছে এভাবে থাকা আসলেই ভয়ের ব্যাপার।
আয়রা:উমমমমমম,,,,,,উমমমম(কথা বলার চেষ্টা করছে)
অজানা ব্যক্তি:এই মেয়ে,,,,এইভাবে মোচরা-মুচরি করছো কেন হ্যা(ধমক দিয়ে)
আয়রার মোচরা-মুচরি অটোমেটিকলি বন্ধ হয়ে গেছে এই ব্যক্তির কথা শুনে।কারণ ব্যক্তিটা আর কেউ নাহ,,,,বরং স্বয়ং “আরুশ”
আয়রা তারাতারি করে ওর মুখ থেকে আরুশের হাতটা সরিয়ে অবাক চোখে আরুশের দিকে তাকালো।।আয়রা মনে মনে ভাবছে,,,,,,,
আয়রা:এই কি সেই আরুশ যাকে আমি চিনতাম,,,,চেহারার কি হাল বানিয়েছে।ভার্সিটি লাইফের সেই চকলেট বয়ের সাথে আজকের এই আরুশের আকাশ-জমিন তফাত।কতোটা শুকিয়ে গেছে।কিন্তু আজও ওকে আমার কাছে সেই আগের মতোই কিউট লাগছে।।।।(মনে মনে)
আরুশ:এই কি ভাবছো তুমি(চুটকি বাজিয়ে)
আয়রা:হু,,,,হুম,,,কিছু নাহ।কিন্তু তুমি,,,নাহ মানে আপনি আমাকে এখানে কেন নিয়ে আসলেন??(আরুশের দিকে তাকিয়ে)
আরুশ:অবাক হচ্ছো কেন তুমি,,,,ছয়টা মাস তো আমার থেকে পালিয়ে পালিয়ে বেড়ালে,,,,কিন্তু শেষমেস সেই আমার কাছে ধরা দিতে হলো তো,,,,,বলেছিলাম না তুমি আমার,,,,শুধুই আমার,,,তাই আর কখনো আমার থেকে পালানোর চেষ্টা করো না কেমন,,,,কারণ তুমি পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকো না কেন আমি তোমাকে সেখান থেকেই আমার কাছে নিয়ে আসবো।।।।(আয়রার চোখের দিকে তাকিয়ে)
আয়রা:আমি এটায় তো বুঝতে পারতেছিনা যে কেন আপনি আমার পেছনে পড়ে আছেন,,,,পৃথিবীতে কি মেয়ের অভাব হয়েছে???
আরুশ:বিলিভ মি সায়ু,,,,,আমিও না এইটা বুঝতে পারি না যে তুমি কেন আমাকে এতটা ইগনোর করো।যেখানে এই নিহান আহমেদ আরুশের জন্য শত শত মেয়ে পাগল,,,,আমার সাথে শুধুমাত্র একটা রাত কাটানোর জন্য কত কত মেয়ে মুখিয়ে থাকে,,,,যেখানে আমি শুধু তোমাকেই ভালবাসি আর শুধুমাত্র তোমাকেই চাই,,,,(নেশাক্ত কন্ঠে)
আয়রা:হাহ,,,,আমি আপনাকে ভালোবাসিনা,,,,হয়তো একসময় বাসতাম কিন্তু সেটা শুধুমাত্র অতীত।আর আমি পুরনো দিনের কোন কথায় মনে করে নিজেকে কষ্ট দিতে চাইনা।আপনার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো আমার কাছে যতটা সুখময় ছিল,,,,তার থেকে বেশি বেদনাদায়ক সেই মুহূর্তগুলো যখন আমি জানতে পেরেছিলাম আপনি আসলে কি,,,আপনার আসল রূপটা কি(তাচ্ছিল্যের সুরে)
আরুশ:সায়ু প্লিজ ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড,,,,তুমি শুধুমাত্র অর্ধেক সত্যিটা জানো,,,,জানো তো পুরো সত্যির থেকে অর্ধেক সত্যিটা খুবই ভয়ানক হয়,,,,তুমি এখনো সেই ভুল ধারণা নিয়ে পড়ে আছো যার জন্য আমি এখনো প্রতিটা মুহূর্তে শেষ হয়ে যাচ্ছি।প্লিজ আমার পুরো কথাটা তো শোনো(অনুনয়ের সুরে)
আয়রা:ব্যাসসসসস!!!!আমি আপনার আর কোন কথায় শুনতে চাই নাহ্(চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে)
আরুশ:একি,,,তুমি কাঁদছো কেন,,,তুমি তো জানো যে আমি তোমার চোখের পানি সহ্য করতে পারি নাহ।
এই বলে আরুশ আমার চোখের পানি মুছে দেওয়ার জন্য ওর হাত আমার কাছে আনতেই আমি ঝটকা মেরে হাত সরিয়ে দেই।
আমি:আমার এই চোখের পানির কারণ শুধুমাত্র আপনি।আপনি আমার জীবন থেকে আমার সবথেকে প্রিয় মানুষদের কেড়ে নিয়েছেন।আর কি চান,,,এখন কি আমার জীবনটাকেও শেষ করে দিতে চান(চিৎকার করে)
আরুশ:সায়ুউউউউউ,,,এইসব কি বলছো তুমি?আমি তোমাকে শেষ করার কথা তো কল্পনাতেও ভাবতে পারি নাহ।(আরুশের চোখে পানি চিকচিক করছে)
আমি আর কোনো কিছু না বলে ছুটে বেরিয়ে আসি ঐ রুম থেকে।আমি যে আর পারছি নাহ।আবারও কেন ওর সাথে আমার দেখা হলো।আমি তো ওকে ভুলে যেতে চাই।তাহলে কেন আবার ও আমার সামনে আসলো।কেন কেন কেন?(এইসব ভাবতে ভাবতেই আমি বেরিয়ে আসি অডিটোরিয়াম থেকে।এরপর আমি কাউকে কিছু না বলে নিজেই কার ড্রাইভ করে চলে যায় বাসায়।বাসায় যেয়ে রুম লক করে আমি বাথরুমে গিয়ে ঝর্না ছেড়ে তার নিচে বসে অঝোর ধারায় কাঁদতে থাকি।আর ভাবতে লাগি আমাদের প্রথম পরিচয়ের কথা,,,,,
আজ থেকে দুই বছর আগে,,,,,
আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে একদিন ঘুরতে যায়।তো ঘুরাঘুরির এক পর্যায়ে আমরা যায় বসুন্ধরা সিটিতে শপিং করার জন্য।শপিং করতে যেয়ে আমার একটা ঘড়ির শো-রুমে একটা ঘড়ির উপরে চোখ আটকে যায়।ঘড়িটা খুব সুন্দর।তাই আমি ঐ শো-রুমে ঢুকে যেই ঐ ঘড়িটা বের করতে বলবো ওমনি একজন ইয়াং ছেলে এসে ঐ ঘড়িটা বের করতে বলে,,,,,
আমি:এই যে মি.ঐ ঘড়িটা আগে আমি দেখেছি,,,তাই ওটা আমি নিবো(আমি ছেলটার দিকে তাকিয়ে)
আরুশ:আমি যখন শো-রুমটা পাস করে যাচ্ছিলাম তখন আমার একটা ঘড়ির উপরে নজর যায়।ঘড়িটা আমার পছন্দ হওয়ায় আমি ঘড়িটা সেলসম্যানকে বের করতে বলি,,,,তখন-ই পাশ থেকে একটা মেয়ের কথায় আমি পাশে তাকায়।
আমি:কি হলো,,,ঘড়িটা আমাকে দিন,,,
আরুশ:আরে আজিব,,,ঘড়িটা আগে আমি দেখেছি,,,তাই ঘড়িটা আমিই নিব।
আমি:নাহ,,,ঘড়িটা আমি আগে দেখেছি,,,তাই ঘড়িটা আমিই নিব।
আরুশ:আচ্ছা,,,এই রকম আরেকটা ঘড়ি বের করুন(সেলসম্যানকে বল্লাম)
সেলসম্যান:স্যরি স্যার,,,এই ঘড়িটি এক পিস-ই আছে।
আমি:তো ঘড়িটা আমাকে দিন(আমি ছেলেটার দিকে তাকিয়ে)
আরুশ:নাহ,,,এইটা আমিই নিব ওকেহ্।
আমি:বললাম তো ঘড়িটা আমাকে দিন(আমি রেগে)
আরুশ:একদমই নাহ্
আমাদের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমার বন্ধুরা এসে আমাকে ওখান থেকে এক প্রকার টেনে নিয়ে আসলো।
আমি:এই তোরা আমাকে এইভাবে নিয়ে আসলি কেন হ্যা(আমি ওদের দিকে রেগে তাকিয়ে)
ইভা:তুই কি এই ঝগড়া করা ছারবি নাহ বোন?
ঐশি:আর সামান্য একটা ঘড়ির জন্য কেউ এইভাবে ঝগড়া করে নাকি?
আমি:এই তোরা চুপ কর তো,,,জানিস,,ঐ ঘড়িটা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল,,,আর আমিই আগে দেখেছিলাম ঘড়িটা(কাঁদো কাঁদো হয়ে)
আয়মান:আহা বাবু কাঁদিস নাহ্
সাদাফ:আমি তোকে এর থেকেও ভালো ঘড়ি এনে দিবো কেমন,,,
ঝিনুক:হ্যা সোনা,,,,তাও তুই মন খারাপ করিস নাহ্
এইসব অনেক কিছু বুঝিয়ে ওরা আামাকে নিয়ে বাসায় আসলো।তারপর আমাকে রেখে সেদিনের মতো ওরা চলে গেলো…….

চলবে?????

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here